HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ে সাওম
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন আল-আযহারী
সিয়াম বা রোযা নাম ও ধরণভেদে বিভিন্ন জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে বহুল প্রচলিত একটি ধর্মীয় বিধান, যা মুসলমানদের জন্য অবশ্য পালনীয় (ফরজ) একটি ইবাদত। শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরী‘য়তে যেমন আল্লাহর পক্ষ থেকে সিয়ামের বিধান দেয়া হয়েছে, তেমনি সিয়ামের বিধান দেয়া হয়েছিল পূর্ববর্তী নবীদের শরী‘য়তেও; পূর্ববর্তী জাতিগুলোর ধর্ম-কর্মেও। আসমানী ধর্ম ছাড়াও মানব রচিত বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ে সাওমের বিধান রয়েছে। আল্লাহ তায়া‘লা বলেন:
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣ ﴾ [ البقرة : ١٨٣ ]
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সাওম ফরজ করা হয়েছে। যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার” [সূরা বাক্বারা: ১৮৩]।
এই আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়, পূর্ববর্তী প্রত্যেক নবী ও প্রত্যেক জাতির মধ্যেই প্রচলিত ছিল ‘সিয়াম’ বা রোযা নামের এই ধর্মানুষ্ঠান।
তাফসীরে কুরত্ববীতে উক্ত আয়াতের ব্যাখায় বলা হয়েছে,
الْمَعْنَى :" كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيامُ " أَيْ فِي أَوَّلِ الْإِسْلَامِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَيَوْمَ عَاشُورَاءَ، " كَما كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ " وَهُمُ الْيَهُودُ- فِي قَوْلِ ابْنِ عَبَّاسٍ- ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ وَيَوْمَ عَاشُورَاءَ . ثُمَّ نُسِخَ هَذَا فِي هَذِهِ الْأُمَّةِ بِشَهْرِ رَمَضَانَ . وَقَالَ مُعَاذُ بن جبل : نسخ ذلك " ب أَيَّامٍ مَعْدُوداتٍ " ثُمَّ نُسِخَتِ الْأَيَّامُ بِرَمَضَانَ .
অর্থাৎ আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসের রাদিয়াল্লাহু আনহুর মতে, ইসলামের প্রাথমিক যুগে প্রত্যেক মাসে তিন দিন ও আশুরার দিনে সাওম ফরজ ছিল, যেমনি ভাবে তোমাদের পূর্ববর্তী ইহুদি সম্প্রদায়ের উপর মাসে তিন দিন ও আশুরার দিনে সাওম ফরজ ছিল। পরবর্তীতে রমাদান মাসের দ্বারা এ সাওম রহিত হয়। মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, উক্ত তিন দিনের সাওম নির্দিষ্ট কয়েক দিনের সাওমের দ্বারা রহিত হয়, অতঃপর উক্ত কয়েক দিনের সাওম আবার রমাদানের সাওম দ্বারা রহিত হয়। [দেখুনঃ তাফসীরে ক্বুরতবী: ২/২৭৫।]
عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ : «صَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَاشُورَاءَ، وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا فُرِضَ رَمَضَانُ تُرِكَ»، وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ لاَ يَصُومُهُ إِلَّا أَنْ يُوَافِقَ صَوْمَهُ
ইবন ‘উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আশুরার দিন সিয়াম পালন করেছেন এবং এ সিয়ামের জন্য আদেশও পালন করেছে। পরে যখন রমাদানের সিয়াম ফরজ হল তখন তা ছেড়ে দেওয়া হয়। ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু এ সিয়াম পালিন করতেন না, তবে মাসের যে দিনগূলোতে সাধারন সিয়াম পালন করতেন, তাঁর সাথে মিল হলে করতেন। [বুখারী, হাদীস নং ১৮৯২।]
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، : أَنَّ قُرَيْشًا كَانَتْ تَصُومُ يَوْمَ عَاشُورَاءَ فِي الجَاهِلِيَّةِ، ثُمَّ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِصِيَامِهِ حَتَّى فُرِضَ رَمَضَانُ، وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «مَنْ شَاءَ فَلْيَصُمْهُ وَمَنْ شَاءَ أَفْطَرَ»
‘আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহার থেকে বর্নিত যে, জাহিলী যুগে কুরায়শগন ‘আশূরার দিন সাওম পালন করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও পরে এ সাওম পালনের নির্দেশ দেন। অবশেষে রমাদানের সিয়াম ফরজ হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যার ইচ্ছা ‘আশুরার সিয়াম পালন করবে এবং যার ইচ্ছা সে সাওম পালন করবে না। [বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৩।]
আমরা এখানে আদি পিতা আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত বিভিন্ন আসমানী ধর্মে ও মানব রচিত অন্যান্য ধর্ম ও সম্প্রদায়ের যুগে যুগে সাওমের বিধান ও ধরণ নিয়ে আলোচনা করব।
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣ ﴾ [ البقرة : ١٨٣ ]
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সাওম ফরজ করা হয়েছে। যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার” [সূরা বাক্বারা: ১৮৩]।
এই আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়, পূর্ববর্তী প্রত্যেক নবী ও প্রত্যেক জাতির মধ্যেই প্রচলিত ছিল ‘সিয়াম’ বা রোযা নামের এই ধর্মানুষ্ঠান।
তাফসীরে কুরত্ববীতে উক্ত আয়াতের ব্যাখায় বলা হয়েছে,
الْمَعْنَى :" كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيامُ " أَيْ فِي أَوَّلِ الْإِسْلَامِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَيَوْمَ عَاشُورَاءَ، " كَما كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ " وَهُمُ الْيَهُودُ- فِي قَوْلِ ابْنِ عَبَّاسٍ- ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ وَيَوْمَ عَاشُورَاءَ . ثُمَّ نُسِخَ هَذَا فِي هَذِهِ الْأُمَّةِ بِشَهْرِ رَمَضَانَ . وَقَالَ مُعَاذُ بن جبل : نسخ ذلك " ب أَيَّامٍ مَعْدُوداتٍ " ثُمَّ نُسِخَتِ الْأَيَّامُ بِرَمَضَانَ .
অর্থাৎ আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসের রাদিয়াল্লাহু আনহুর মতে, ইসলামের প্রাথমিক যুগে প্রত্যেক মাসে তিন দিন ও আশুরার দিনে সাওম ফরজ ছিল, যেমনি ভাবে তোমাদের পূর্ববর্তী ইহুদি সম্প্রদায়ের উপর মাসে তিন দিন ও আশুরার দিনে সাওম ফরজ ছিল। পরবর্তীতে রমাদান মাসের দ্বারা এ সাওম রহিত হয়। মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, উক্ত তিন দিনের সাওম নির্দিষ্ট কয়েক দিনের সাওমের দ্বারা রহিত হয়, অতঃপর উক্ত কয়েক দিনের সাওম আবার রমাদানের সাওম দ্বারা রহিত হয়। [দেখুনঃ তাফসীরে ক্বুরতবী: ২/২৭৫।]
عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ : «صَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَاشُورَاءَ، وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا فُرِضَ رَمَضَانُ تُرِكَ»، وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ لاَ يَصُومُهُ إِلَّا أَنْ يُوَافِقَ صَوْمَهُ
ইবন ‘উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আশুরার দিন সিয়াম পালন করেছেন এবং এ সিয়ামের জন্য আদেশও পালন করেছে। পরে যখন রমাদানের সিয়াম ফরজ হল তখন তা ছেড়ে দেওয়া হয়। ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু এ সিয়াম পালিন করতেন না, তবে মাসের যে দিনগূলোতে সাধারন সিয়াম পালন করতেন, তাঁর সাথে মিল হলে করতেন। [বুখারী, হাদীস নং ১৮৯২।]
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، : أَنَّ قُرَيْشًا كَانَتْ تَصُومُ يَوْمَ عَاشُورَاءَ فِي الجَاهِلِيَّةِ، ثُمَّ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِصِيَامِهِ حَتَّى فُرِضَ رَمَضَانُ، وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «مَنْ شَاءَ فَلْيَصُمْهُ وَمَنْ شَاءَ أَفْطَرَ»
‘আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহার থেকে বর্নিত যে, জাহিলী যুগে কুরায়শগন ‘আশূরার দিন সাওম পালন করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও পরে এ সাওম পালনের নির্দেশ দেন। অবশেষে রমাদানের সিয়াম ফরজ হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যার ইচ্ছা ‘আশুরার সিয়াম পালন করবে এবং যার ইচ্ছা সে সাওম পালন করবে না। [বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৩।]
আমরা এখানে আদি পিতা আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত বিভিন্ন আসমানী ধর্মে ও মানব রচিত অন্যান্য ধর্ম ও সম্প্রদায়ের যুগে যুগে সাওমের বিধান ও ধরণ নিয়ে আলোচনা করব।
প্রথম নবী আদম আলাইহিস সালামের শরী‘য়তে সিয়ামের বিধান দেয়া হয়েছিল বলে তাফসির গ্রন্থে উল্লেখ পাওয়া যায়। অবশ্য সেই সিয়ামের ধরণ ও প্রকৃতি কেমন ছিল তা আমাদের জানা নেই। এ বিষয়ে বাইবেল, কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদীসের কিতাব একেবারে নিশ্চুপ। বলা হয়ে থাকে, পূর্ববর্তী প্রত্যেক নবীর শরী‘য়তেই চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে সিয়ামের বিধান ছিল। এই সিয়াম আইয়্যামি বীদ বা বেজোড় সংখ্যক দিনের সাওম নামে খ্যাত।
তাফসীরে ইবনে কাসীরে এসেছে,
قَدْ كَانَ هَذَا فِي ابْتِدَاءِ الْإِسْلَامِ يَصُومُونَ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ، ثُمَّ نُسِخَ ذَلِكَ بِصَوْمِ شَهْرِ رَمَضَانَ، كَمَا سَيَأْتِي بَيَانُهُ . وَقَدْ رُوي أَنَّ الصِّيَامَ كَانَ أَوَّلًا كَمَا كَانَ عَلَيْهِ الْأُمَمُ قَبْلَنَا، مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ -عَنْ مُعَاذٍ، وَابْنِ مَسْعُودٍ، وَابْنِ عَبَّاسٍ، وَعَطَاءٍ، وَقَتَادَةَ، وَالضَّحَّاكِ بْنِ مُزَاحِمٍ . وَزَادَ : لَمْ يَزَلْ هَذَا مَشْرُوعًا مِنْ زَمَانِ نُوحٍ إِلَى أَنْ نَسَخ اللَّهُ ذَلِكَ بِصِيَامِ شَهْرِ رَمَضَانَ .
অর্থাৎ প্রসিদ্ধ তাফসিরবিদ হযরত মুয়াজ, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু, আতা, কাতাদা ও দহহাক (রহ.) বর্ণনা করেন, নূহ আলাইহিস সালাম থেকে শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত প্রত্যেক নবীর যুগেই প্রতি মাসে তিনটি করে সিয়ামের বিধান ছিল। পরবর্তীতে ইহা রমজানের সাওমের দ্বারা রহিত হয়। [দেখুনঃ তাফসীরে ইবনে কাসীরঃ (১/৪৯৭), তাফসীরে কুরতবীঃ (২/২৭৫), তাফসীরে ত্বাবারীঃ (৩/৪১১), তাফসীরে মানারঃ (২/১১৬।]
عن عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو، يَقُولُ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : «صَامَ نُوحٌ الدَّهْرَ، إِلَّا يَوْمَ الْفِطْرِ وَيَوْمَ الْأَضْحَى»
হযরত নূহ আলাইহিস সালাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন বাদে সারা বছর সাওম রাখতেন। [ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১৭১৪, আলবানী রহ. বলেছেন হাদীসটি দ‘য়ীফ। কেননা এর সনদে ابن لهيعة রয়েছেন, যিনি দ‘য়ীফ।]
قَدْ كَانَ هَذَا فِي ابْتِدَاءِ الْإِسْلَامِ يَصُومُونَ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ، ثُمَّ نُسِخَ ذَلِكَ بِصَوْمِ شَهْرِ رَمَضَانَ، كَمَا سَيَأْتِي بَيَانُهُ . وَقَدْ رُوي أَنَّ الصِّيَامَ كَانَ أَوَّلًا كَمَا كَانَ عَلَيْهِ الْأُمَمُ قَبْلَنَا، مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ -عَنْ مُعَاذٍ، وَابْنِ مَسْعُودٍ، وَابْنِ عَبَّاسٍ، وَعَطَاءٍ، وَقَتَادَةَ، وَالضَّحَّاكِ بْنِ مُزَاحِمٍ . وَزَادَ : لَمْ يَزَلْ هَذَا مَشْرُوعًا مِنْ زَمَانِ نُوحٍ إِلَى أَنْ نَسَخ اللَّهُ ذَلِكَ بِصِيَامِ شَهْرِ رَمَضَانَ .
অর্থাৎ প্রসিদ্ধ তাফসিরবিদ হযরত মুয়াজ, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু, আতা, কাতাদা ও দহহাক (রহ.) বর্ণনা করেন, নূহ আলাইহিস সালাম থেকে শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত প্রত্যেক নবীর যুগেই প্রতি মাসে তিনটি করে সিয়ামের বিধান ছিল। পরবর্তীতে ইহা রমজানের সাওমের দ্বারা রহিত হয়। [দেখুনঃ তাফসীরে ইবনে কাসীরঃ (১/৪৯৭), তাফসীরে কুরতবীঃ (২/২৭৫), তাফসীরে ত্বাবারীঃ (৩/৪১১), তাফসীরে মানারঃ (২/১১৬।]
عن عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو، يَقُولُ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : «صَامَ نُوحٌ الدَّهْرَ، إِلَّا يَوْمَ الْفِطْرِ وَيَوْمَ الْأَضْحَى»
হযরত নূহ আলাইহিস সালাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন বাদে সারা বছর সাওম রাখতেন। [ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১৭১৪, আলবানী রহ. বলেছেন হাদীসটি দ‘য়ীফ। কেননা এর সনদে ابن لهيعة রয়েছেন, যিনি দ‘য়ীফ।]
মুসলিম মিল্লাতের পিতা সহিফাপ্রাপ্ত নবী ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের যুগে ৩০টি সিয়াম ছিল বলে কেউ কেউ লিখেছেন।
তাফসীরে মানারে আল্লামা রশিদ রেজা ইমাম মুহাম্মদ আব্দুর সূত্রে উল্লেখ করেন,
قَالَ الْأُسْتَاذُ الْإِمَامُ : أَبْهَمَ اللهُ هَؤُلَاءِ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا، وَالْمَعْرُوفُ أَنَّ الصَّوْمَ مَشْرُوعٌ فِي جَمِيعِ الْمِلَلِ حَتَّى الْوَثَنِيَّةِ، فَهُوَ مَعْرُوفٌ عَنْ قُدَمَاءِ الْمِصْرِيِّينَ فِي أَيَّامِ وَثَنِيَّتِهِمْ، وَانْتَقَلَ مِنْهُمْ إِلَى الْيُونَانِ فَكَانُوا يَفْرِضُونَهُ لَا سِيَّمَا عَلَى النِّسَاءِ، وَكَذَلِكَ الرُّومَانِيُّونَ كَانُوا يُعْنَوْنَ بِالصِّيَامِ، وَلَا يَزَالُ وَثَنِيُّو الْهِنْدِ وَغَيْرُهُمْ يَصُومُونَ إِلَى الْآنِ، وَلَيْسَ فِي أَسْفَارِ التَّوْرَاةِ الَّتِي بَيْنَ أَيْدِينَا مَا يَدُلُّ عَلَى فَرْضِيَّةِ الصِّيَامِ، وَإِنَّمَا فِيهَا مَدْحُهُ وَمَدْحُ الصَّائِمِينَ، وَثَبَتَ أَنَّ مُوسَى عَلَيْهِ السَّلَامُ صَامَ أَرْبَعِينَ يَوْمًا، وَهُوَ يَدُلُّ عَلَى أَنَّ الصَّوْمَ كَانَ مَعْرُوفًا مَشْرُوعًا وَمَعْدُودًا مِنَ الْعِبَادَاتِ، وَالْيَهُودُ فِي هَذِهِ الْأَزْمِنَةِ يَصُومُونَ أُسْبُوعًا تِذْكَارًا لِخَرَابِ أُورْشَلِيمَ وَأَخْذِهَا، وَيَصُومُونَ يَوْمًا مِنْ شَهْرِ آبَ . [ تفسير المنار : (2/116)]
তাফসীরে মানারে আল্লামা রশিদ রেজা ইমাম মুহাম্মদ আব্দুর সূত্রে উল্লেখ করেন,
قَالَ الْأُسْتَاذُ الْإِمَامُ : أَبْهَمَ اللهُ هَؤُلَاءِ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا، وَالْمَعْرُوفُ أَنَّ الصَّوْمَ مَشْرُوعٌ فِي جَمِيعِ الْمِلَلِ حَتَّى الْوَثَنِيَّةِ، فَهُوَ مَعْرُوفٌ عَنْ قُدَمَاءِ الْمِصْرِيِّينَ فِي أَيَّامِ وَثَنِيَّتِهِمْ، وَانْتَقَلَ مِنْهُمْ إِلَى الْيُونَانِ فَكَانُوا يَفْرِضُونَهُ لَا سِيَّمَا عَلَى النِّسَاءِ، وَكَذَلِكَ الرُّومَانِيُّونَ كَانُوا يُعْنَوْنَ بِالصِّيَامِ، وَلَا يَزَالُ وَثَنِيُّو الْهِنْدِ وَغَيْرُهُمْ يَصُومُونَ إِلَى الْآنِ، وَلَيْسَ فِي أَسْفَارِ التَّوْرَاةِ الَّتِي بَيْنَ أَيْدِينَا مَا يَدُلُّ عَلَى فَرْضِيَّةِ الصِّيَامِ، وَإِنَّمَا فِيهَا مَدْحُهُ وَمَدْحُ الصَّائِمِينَ، وَثَبَتَ أَنَّ مُوسَى عَلَيْهِ السَّلَامُ صَامَ أَرْبَعِينَ يَوْمًا، وَهُوَ يَدُلُّ عَلَى أَنَّ الصَّوْمَ كَانَ مَعْرُوفًا مَشْرُوعًا وَمَعْدُودًا مِنَ الْعِبَادَاتِ، وَالْيَهُودُ فِي هَذِهِ الْأَزْمِنَةِ يَصُومُونَ أُسْبُوعًا تِذْكَارًا لِخَرَابِ أُورْشَلِيمَ وَأَخْذِهَا، وَيَصُومُونَ يَوْمًا مِنْ شَهْرِ آبَ . [ تفسير المنار : (2/116)]
আসমানি কিতাব ‘যবুর’প্রাপ্ত বিখ্যাত নবী দাউদ আলাইহিস সালামের যুগেও সাওমের প্রচলন ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ «صُمْ أَفْضَلَ الصِّيَامِ عِنْدَ اللهِ، صَوْمَ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلَام كَانَ يَصُومُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا»
‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় সাওম দাউদ আলাইহিস সালামের সাওম তিনি এক দিন সাওম পালন করতেন এবং এক দিন বিনা সাওমে থাকতেন। [মুসলিম, হাদীস নং ১১৫৯।]
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ «صُمْ أَفْضَلَ الصِّيَامِ عِنْدَ اللهِ، صَوْمَ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلَام كَانَ يَصُومُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا»
‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় সাওম দাউদ আলাইহিস সালামের সাওম তিনি এক দিন সাওম পালন করতেন এবং এক দিন বিনা সাওমে থাকতেন। [মুসলিম, হাদীস নং ১১৫৯।]
ইহুদিদের ওপর প্রতি শনিবার, বছরের মধ্যে মহররমের ১০ তারিখে আশুরার দিন এবং অন্যান্য সময় সাওম ফরজ ছিল।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ : قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَدِينَةَ فَرَأَى اليَهُودَ تَصُومُ يَوْمَ عَاشُورَاءَ، فَقَالَ : «مَا هَذَا؟»، قَالُوا : هَذَا يَوْمٌ صَالِحٌ هَذَا يَوْمٌ نَجَّى اللَّهُ بَنِي إِسْرَائِيلَ مِنْ عَدُوِّهِمْ، فَصَامَهُ مُوسَى، قَالَ : «فَأَنَا أَحَقُّ بِمُوسَى مِنْكُمْ»، فَصَامَهُ، وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, “রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিজরত করে ইহুদিদের আশুরার দিনে সাওম অবস্থায় পেলেন। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘আজকে তোমরা কিসের সাওম করছ?’ তারা বলল, ‘এটা সেই মহান দিন যেদিন আল্লাহ তা‘আলা মূসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর কওম বনী ইসরাইল ফেরাউনের কবল থেকে মুক্ত করেছিলেন। ফলে শুকরিয়াস্বরূপ মূসা আলাইহিস সালাম ওই দিনে সাওম রেখেছিলেন, তাই আমরা আজকে সাওম করছি।’ এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমি তোমাদের অপেক্ষা হযরত মূসা আলাইহিস সালামের অধিক নিকটবর্তী। এরপর তিনি এ দিন সওম পালন করেন এবং সবাইকে সাওম রাখার নির্দেশ দেন”।’ [বুখারী, হাদীস নং ২০০৪, ও মুসলিম, হাদীস নং ১১৩০।]
মূসা আলাইহিস সালাম তুর পাহাড়ে আল্লাহর কাছ থেকে তাওরাতপ্রাপ্তির আগে ৪০ দিন পানাহার ত্যাগ করেছিলেন। ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতে বর্ণিত আছে, মূসা আলাইহিস সালাম তুর পাহাড়ে ৪০ দিন পানাহার না করে কাটিয়েছিলেন। তাই ইহুদিরা সাধারণভাবে মূসা আলাইহিস সালামের অনুসরণে ৪০টি সাওম রাখা ভালো মনে করত। তন্মধ্যে ৪০তম দিনটিতে তাদের ওপর সাওম রাখা ফরজ ছিল। যা ইহুদিদের সপ্তম মাস তিসরিনের দশম তারিখে পড়ত। এ জন্য ওই দিনটিকে আশুরা বা দশম দিন বলা হয়। এ ছাড়া ইহুদি সহিফাতে অন্যান্য সাওমেরও সুস্পষ্ট হুকুম রয়েছে। ইহুদিরা বর্তমানে ৯ আগষ্ট ইহুদী হাইকাল বাইতুল মুকাদ্দাস ধ্বংস দিবসে সাওম রাখে, এদিন তারা খাদ্য, স্ত্রী সহবাস ও জুতা পরিধান থেকে বিরত থাকে। এছাড়াও ১৩ নভেম্ভর, ১৭ই জুলাই, ১৩ই মার্চ ও বিভিন্ন দিবসে সাওম পালন করে।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ : قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَدِينَةَ فَرَأَى اليَهُودَ تَصُومُ يَوْمَ عَاشُورَاءَ، فَقَالَ : «مَا هَذَا؟»، قَالُوا : هَذَا يَوْمٌ صَالِحٌ هَذَا يَوْمٌ نَجَّى اللَّهُ بَنِي إِسْرَائِيلَ مِنْ عَدُوِّهِمْ، فَصَامَهُ مُوسَى، قَالَ : «فَأَنَا أَحَقُّ بِمُوسَى مِنْكُمْ»، فَصَامَهُ، وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, “রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিজরত করে ইহুদিদের আশুরার দিনে সাওম অবস্থায় পেলেন। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘আজকে তোমরা কিসের সাওম করছ?’ তারা বলল, ‘এটা সেই মহান দিন যেদিন আল্লাহ তা‘আলা মূসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর কওম বনী ইসরাইল ফেরাউনের কবল থেকে মুক্ত করেছিলেন। ফলে শুকরিয়াস্বরূপ মূসা আলাইহিস সালাম ওই দিনে সাওম রেখেছিলেন, তাই আমরা আজকে সাওম করছি।’ এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমি তোমাদের অপেক্ষা হযরত মূসা আলাইহিস সালামের অধিক নিকটবর্তী। এরপর তিনি এ দিন সওম পালন করেন এবং সবাইকে সাওম রাখার নির্দেশ দেন”।’ [বুখারী, হাদীস নং ২০০৪, ও মুসলিম, হাদীস নং ১১৩০।]
মূসা আলাইহিস সালাম তুর পাহাড়ে আল্লাহর কাছ থেকে তাওরাতপ্রাপ্তির আগে ৪০ দিন পানাহার ত্যাগ করেছিলেন। ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতে বর্ণিত আছে, মূসা আলাইহিস সালাম তুর পাহাড়ে ৪০ দিন পানাহার না করে কাটিয়েছিলেন। তাই ইহুদিরা সাধারণভাবে মূসা আলাইহিস সালামের অনুসরণে ৪০টি সাওম রাখা ভালো মনে করত। তন্মধ্যে ৪০তম দিনটিতে তাদের ওপর সাওম রাখা ফরজ ছিল। যা ইহুদিদের সপ্তম মাস তিসরিনের দশম তারিখে পড়ত। এ জন্য ওই দিনটিকে আশুরা বা দশম দিন বলা হয়। এ ছাড়া ইহুদি সহিফাতে অন্যান্য সাওমেরও সুস্পষ্ট হুকুম রয়েছে। ইহুদিরা বর্তমানে ৯ আগষ্ট ইহুদী হাইকাল বাইতুল মুকাদ্দাস ধ্বংস দিবসে সাওম রাখে, এদিন তারা খাদ্য, স্ত্রী সহবাস ও জুতা পরিধান থেকে বিরত থাকে। এছাড়াও ১৩ নভেম্ভর, ১৭ই জুলাই, ১৩ই মার্চ ও বিভিন্ন দিবসে সাওম পালন করে।
আসমানি কিতাব ‘ইঞ্জিল’ প্রাপ্ত বিশিষ্ট নবী ঈসা আলাইহিস সালামের যুগে সাওমের প্রমাণ পাওয়া যায়। ঈসা আলাইহিস সালামের অনুসারী সম্প্রদায় সাওম রাখতেন। বর্তমানে তাদের দু'ধরণের সাওম আছে। প্রথম হলো, তাদের পিতার উপদেশে নির্দিষ্ট কয়েকদিন খাদ্য পানীয় থেকে বিরত থাকা, আর ইফতার হবে নিরামিষ দিয়ে, মাছ, মাংস ও দুগ্ধজাত জিনিস খাওয়া যাবেনা। যেমন: বড় দিনের সাওম, তাওবার সাওম যা ৫৫ দিন পর্যন্ত দীর্ঘায়ীত হয়, এমনিভাবে সপ্তাহে বুধ ও শুক্রবারে সাওম। দ্বিতীয় ধরণের সাওম হলো খাদ্য থেকে বিরত থাকা, তবে মাছ ভক্ষণ করা যাবে। এ সাওমের মধ্যে ছোট সাওম বা জন্মদিনের সাওম, ইহা ৪৩ দিন দীর্ঘায়িত হয়, দূতগণের সাওম, মারিয়ামের সাওম ইত্যাদি। তবে তাদের ধর্মে কোন সাওমই ফরজ নয়, বরং কেউ ইচ্ছা করলে রাখতে পারে।
তাফসীরে ত্বাবারীতে এসেছে,
حدثني موسى بن هارون قال، حدثنا عمرو بن حماد قال، حدثنا أسباط، عن السدي :" يا أيها الذين آمنوا كُتب عليكم الصيام كما كتب على الذين من قبلكم " ، أما الذين من قبلنا : فالنصارى، كتب عليهم رمضان، وكتب عليهم أن لا يأكلوا ولا يشربوا بعد النوم، ولا ينكحوا النساءَ شهر رمضان . فاشتد على النصارى صيامُ رمَضان، وجعل يُقَلَّبُ عليهم في الشتاء والصيف . فلما رأوا ذلك اجتمعوا فجعلوا صيامًا في الفصل بين الشتاء والصيف، وقالوا : نزيد عشرين يومًا نكفّر بها ما صنعنا ! فجعلوا صيامهم خمسين . فلم يزل المسلمون على ذلك يَصنعون كما تصنع النصارى، حتى كان من أمر أبي قيس بن صرمة وعمر بن الخطاب، ما كان، فأحل الله لهم الأكل والشرب والجماعَ إلى طُلوع الفجر . [ تفسير الطبري : (3/411)]
ঈসা আলাইহিস সালাম তাঁর ধর্ম প্রচার শুরুতে ইঞ্জিল পাওয়ার আগে জঙ্গলে ৪০ দিন সিয়াম সাধনা করেছিলেন। একদা ঈসা আলাইহিস সালামকে তাঁর অনুসারীরা জিজ্ঞেস করেন যে, ‘আমরা অপবিত্র আত্মাকে কী করে বের করব?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘তা দু‘আ ও সাওম ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে বের হতে পারে না।’ [মথি ৭-৬৬, সিরাতুন নবী, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৮৭-২৮৮।]
তাফসীরে ত্বাবারীতে এসেছে,
حدثني موسى بن هارون قال، حدثنا عمرو بن حماد قال، حدثنا أسباط، عن السدي :" يا أيها الذين آمنوا كُتب عليكم الصيام كما كتب على الذين من قبلكم " ، أما الذين من قبلنا : فالنصارى، كتب عليهم رمضان، وكتب عليهم أن لا يأكلوا ولا يشربوا بعد النوم، ولا ينكحوا النساءَ شهر رمضان . فاشتد على النصارى صيامُ رمَضان، وجعل يُقَلَّبُ عليهم في الشتاء والصيف . فلما رأوا ذلك اجتمعوا فجعلوا صيامًا في الفصل بين الشتاء والصيف، وقالوا : نزيد عشرين يومًا نكفّر بها ما صنعنا ! فجعلوا صيامهم خمسين . فلم يزل المسلمون على ذلك يَصنعون كما تصنع النصارى، حتى كان من أمر أبي قيس بن صرمة وعمر بن الخطاب، ما كان، فأحل الله لهم الأكل والشرب والجماعَ إلى طُلوع الفجر . [ تفسير الطبري : (3/411)]
ঈসা আলাইহিস সালাম তাঁর ধর্ম প্রচার শুরুতে ইঞ্জিল পাওয়ার আগে জঙ্গলে ৪০ দিন সিয়াম সাধনা করেছিলেন। একদা ঈসা আলাইহিস সালামকে তাঁর অনুসারীরা জিজ্ঞেস করেন যে, ‘আমরা অপবিত্র আত্মাকে কী করে বের করব?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘তা দু‘আ ও সাওম ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে বের হতে পারে না।’ [মথি ৭-৬৬, সিরাতুন নবী, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৮৭-২৮৮।]
গ্রীস ও রোমানরা যুদ্ধের আগে সাওম রাখত যাতে ক্ষুধা ও কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। খ্রিষ্টান পাদরিদের ও পারসিক অগ্নিপূজকদের এবং হিন্দু যোগী ইত্যাকার ধর্মাবলম্ব্বীদের মধ্যে সাওমের বিধান ছিল। পারসিক ও হিন্দু যোগীদের সাওমের ধরন ছিল এরূপ—তারা সাওম থাকা অবস্থায় মাছ-মাংস, পাখি ইত্যাদি ভক্ষণ করা থেকে বিরত থাকত বটে; কিন্তু ফল-মূল এবং সামান্য পানীয় গ্রহণ করত। মূর্তিপূজক ঋষীরা সাওমের ব্যাপারে এতোই কঠোর ছিল যে, এরূপ—তারা সাওম থাকা অবস্থায় মাছ-মাংস, পাখি ইত্যাদি ভক্ষণ করা থেকে বিরত থাকত, স্ত্রী সহবাস করতনা। সারা বছর সাওম রেখে আত্মার কষ্ট দিত আর এভাবে তারা পবিত্রতা অর্জনের সাধনা করত।
প্রাচীন চীনা সম্প্রদায়ের লোকরা একাধারে কয়েক সপ্তাহ সাওম রাখত।
প্রাচীন চীনা সম্প্রদায়ের লোকরা একাধারে কয়েক সপ্তাহ সাওম রাখত।
ইবন নাদিম তার ‘ফিহরাসাত’ কিতাবের নবম খন্ডে উল্লেখ করেন, সাবেয়ী সম্প্রদায়ের লোকেরা (যারা গ্রহ নক্ষত্র পূঁজা করে) ত্রিশ দিন সাওম পালন করত। আযার মাসের ৮দিন অতিবাহিত হলে এ সাওম শুরু হতো, কানুনে আউয়াল মাসে ৯টি, শাবাত মাসে ৭টি সাওম। এ সাত সাওম পালনের পরে তারা ঈদুল ফিতর উদযাপন করত। সাওমবস্থায় তারা খাদ্য, পানীয় ও স্ত্রী সহবাস ইত্যাদি থেকে বিরত থাকত।
বেদের অনুসারী ভারতের হিন্দুদের মধ্যেও ব্রত অর্থাৎ উপবাস ছিল। প্রত্যেক হিন্দি মাসের ১১ তারিখে ব্রাহ্মণদের ওপর ‘একাদশীর’ উপবাস রয়েছে। এ হিসাবে তাদের উপবাস ২৪টি হয়। কোনো কোনো ব্রাহ্মণ কার্তিক মাসে প্রত্যেক সোমবার উপবাস করেন। কখনো হিন্দু যোগীরা ৪০ দিন পানাহার ত্যাগ করে চল্লিশে ব্রত পালন করেন। হিন্দু মেয়েরা তাদের স্বামীদের মঙ্গল কামনায় কার্তিক মাসের ১৮তম দিবসে "কারওয়া চাওত" নামে উপবাস রাখে।
তারা তাদের চন্দ্রমাসের Upisata মাসে ১,৯,১৫ ও ২২ তারিখে ৪ দিন উপবাস পালন করে। এছাড়া বৌদ্ধ গুরুরা দুপুরের খাবারের পর থেকে সব ধরণের খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকে। তারা এভাবে খাদ্য থেকে বিরত থেকে সংযম ও শারীরিক নিয়ন্ত্রণ করে।
মংগোলীরা প্রতি ১০ দিন অন্তর ও যারাদাশতিরা প্রতি ৫ দিন অন্তর সাওম পালন করত।
মংগোলীরা প্রতি ১০ দিন অন্তর ও যারাদাশতিরা প্রতি ৫ দিন অন্তর সাওম পালন করত।
আল্লাহ তায়া‘লা বলেন:
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣ ﴾ [ البقرة : ١٨٣ ]
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সাওম ফরজ করা হয়েছে। যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার” [সূরা বাক্বারা: ১৮৩]।
ইসলামে সাওমের রয়েছে করিপয় শর্ত ও বৈশিষ্ট্য। সুর্যোদয় থেকে সুর্যাস্ত পর্যান্ত যাবতীয় পানাহার, স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকার নাম সাওম। সেহেরী খাওয়া ইসলামী শরিয়তের সাওমের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ইসলামে রমাদানের সাওম ফরজ, অন্যান্য সাওম মুস্তাহাব, যেমন, আরাফার সাওম, মহররমের সাওম, শবে বরাতের সাওম, প্রতি চন্দ্র মাসে ১৩.১৪.১৫ তারিখ সাওম ইত্যাদি।
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣ ﴾ [ البقرة : ١٨٣ ]
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সাওম ফরজ করা হয়েছে। যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার” [সূরা বাক্বারা: ১৮৩]।
ইসলামে সাওমের রয়েছে করিপয় শর্ত ও বৈশিষ্ট্য। সুর্যোদয় থেকে সুর্যাস্ত পর্যান্ত যাবতীয় পানাহার, স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকার নাম সাওম। সেহেরী খাওয়া ইসলামী শরিয়তের সাওমের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ইসলামে রমাদানের সাওম ফরজ, অন্যান্য সাওম মুস্তাহাব, যেমন, আরাফার সাওম, মহররমের সাওম, শবে বরাতের সাওম, প্রতি চন্দ্র মাসে ১৩.১৪.১৫ তারিখ সাওম ইত্যাদি।
সাওমের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে যে বিষয়টি বেরিয়ে আসে তা হচ্ছে সংযম। মূলত সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে যুগে যুগে বিভিন্ন ধর্ম ও সমাজে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য সাওমের প্রচলন ছিল। ইসলামী শরীয়তে ফরজকৃত সাওম সেই লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সহায়ক। তাই প্রতিটি মুমিনের জন্য কর্তব্য হলো সাওমের মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভে ব্রতী হওয়া।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, রমাদান মাস হলো ধৈর্যের মাস, আর ধৈর্যের প্রতিদান হলো জান্নাত। এই মাসেই আমাদেরকে পরিপূর্ণভাবে ধৈর্যের প্রশিক্ষণ নিতে হবে। যাতে রমাদান পরবর্তী সময়ে প্রতিটি মুহূর্তে, কথায় কাজে ও জীবনের সকল ক্ষেত্রে এর বাস্তব প্রতিফলন ঘটানোর জন্যই সাওম।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, রমাদান মাস হলো ধৈর্যের মাস, আর ধৈর্যের প্রতিদান হলো জান্নাত। এই মাসেই আমাদেরকে পরিপূর্ণভাবে ধৈর্যের প্রশিক্ষণ নিতে হবে। যাতে রমাদান পরবর্তী সময়ে প্রতিটি মুহূর্তে, কথায় কাজে ও জীবনের সকল ক্ষেত্রে এর বাস্তব প্রতিফলন ঘটানোর জন্যই সাওম।
সাওমের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লাহ তায়া'লা বলেছেন,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣ ﴾ [ البقرة : ١٨٣ ]
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সাওম ফরজ করা হয়েছে। যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার” [সূরা বাক্বারা: ১৮৩]।
( لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ) যাতে তোমরা তাকওয়াবান হও। এখানেই সমাজ গঠনে সাওমের ভূমিকা স্পষ্ট হয়ে উঠে। তাকওয়ার ভিত্তির উপর যে সমাজ গঠিত হবে সেখানে থাকবে না কোন হিংসা বিদ্বেষ, মারামারি, কাটাকাটি, দুর্নীতি ও রাহাজানি। সাওমের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাকওয়া অর্জন করা। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সকল প্রকার নাফরমানি কাজ থেকে দূরে থাকার নামই তাকওয়া। মানুষের মনের গোপন কোণে যে কামনা-বাসনা আছে, আল্লাহ তা‘আলা সে সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল। আল্লাহর কাছে বান্দার মান-মর্যাদা নির্ধারণের একমাত্র উপায় তাকওয়া। এ তাকওয়াই মানুষের মনে সৎ মানবিক গুণাবলি সৃষ্টি করে। সুতরাং যাবতীয় অন্যায় কাজ থেকে বিরত থেকে ভালো কাজ করতে পারলেই সাওম পালন সফল ও সার্থক হবে। এভাবে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অর্জিত প্রশিক্ষণ দ্বারা নিজেদের একজন সৎ, আল্লাহভীরু নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হতে হবে।
সাওম থেকে তাকওয়া শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহভীতি অর্জন করার ক্ষেত্রে সাওমের কোনো বিকল্প নেই। সাওমের শিক্ষা নিয়ে তাকওয়ার গুণাবলি অর্জনের মধ্য দিয়ে মানুষ ইহকালীন কল্যাণ ও পারলৌকিক মুক্তি লাভ করতে পারে। ঈমান ও আত্মবিশ্লেষণের সঙ্গে সাওম রাখলে জীবনের সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়। এ শিক্ষা যদি বাকি ১১ মাস কাজে লাগানো যেত, তাহলে পৃথিবীতে এত অশান্তি, অনাচার থাকত না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে
﴿ قَدۡ أَفۡلَحَ مَن تَزَكَّىٰ ١٤ ﴾ [ الاعلا : ١٤ ]
“যে সংশোধিত হলো, সেই সফলকাম হলো”। (সূরা আল-আ‘লা, আয়াত-১৪)
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣ ﴾ [ البقرة : ١٨٣ ]
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সাওম ফরজ করা হয়েছে। যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার” [সূরা বাক্বারা: ১৮৩]।
( لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ) যাতে তোমরা তাকওয়াবান হও। এখানেই সমাজ গঠনে সাওমের ভূমিকা স্পষ্ট হয়ে উঠে। তাকওয়ার ভিত্তির উপর যে সমাজ গঠিত হবে সেখানে থাকবে না কোন হিংসা বিদ্বেষ, মারামারি, কাটাকাটি, দুর্নীতি ও রাহাজানি। সাওমের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাকওয়া অর্জন করা। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সকল প্রকার নাফরমানি কাজ থেকে দূরে থাকার নামই তাকওয়া। মানুষের মনের গোপন কোণে যে কামনা-বাসনা আছে, আল্লাহ তা‘আলা সে সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল। আল্লাহর কাছে বান্দার মান-মর্যাদা নির্ধারণের একমাত্র উপায় তাকওয়া। এ তাকওয়াই মানুষের মনে সৎ মানবিক গুণাবলি সৃষ্টি করে। সুতরাং যাবতীয় অন্যায় কাজ থেকে বিরত থেকে ভালো কাজ করতে পারলেই সাওম পালন সফল ও সার্থক হবে। এভাবে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অর্জিত প্রশিক্ষণ দ্বারা নিজেদের একজন সৎ, আল্লাহভীরু নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হতে হবে।
সাওম থেকে তাকওয়া শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহভীতি অর্জন করার ক্ষেত্রে সাওমের কোনো বিকল্প নেই। সাওমের শিক্ষা নিয়ে তাকওয়ার গুণাবলি অর্জনের মধ্য দিয়ে মানুষ ইহকালীন কল্যাণ ও পারলৌকিক মুক্তি লাভ করতে পারে। ঈমান ও আত্মবিশ্লেষণের সঙ্গে সাওম রাখলে জীবনের সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়। এ শিক্ষা যদি বাকি ১১ মাস কাজে লাগানো যেত, তাহলে পৃথিবীতে এত অশান্তি, অনাচার থাকত না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে
﴿ قَدۡ أَفۡلَحَ مَن تَزَكَّىٰ ١٤ ﴾ [ الاعلا : ١٤ ]
“যে সংশোধিত হলো, সেই সফলকাম হলো”। (সূরা আল-আ‘লা, আয়াত-১৪)
সাওম মানুষের ভেতর ও বাহির—দুই দিকের সংশোধন করে। মানুষের বাতেন বা ভেতরের অবস্থা পরিবর্তন করা অর্থাৎ আলোকিত করা এবং তার স্বভাব, চরিত্র, আচার-আচরণ সংশোধনপূর্বক প্রকাশ্যভাবে সুন্দর করে গড়ে তোলা সাওমের গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। এ পরিপ্রেক্ষিতে সাওম মানুষকে পার্থিব লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, পরচর্চা, পরনিন্দা, মিথ্যাচার, প্রতারণা, অতিরিক্ত সম্পদ অর্জনের আকাঙ্ক্ষা প্রভৃতি থেকে দূরে সরিয়ে রেখে আত্মসংযমের শিক্ষা দেয়।
মানুষের শারীরিক অবকাঠামো ঠিক রাখতে বর্তমানে চিকিৎসকেরা সাওম রাখার নির্দেশ দিয়ে থাকেন। শরীর ঠিক মন ঠিক। সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শারীরিক সুস্থতা অত্যাবশ্যকীয়।
ইবনে সিনা সাওমকে দুরারোগ্য সব রোগের চিকিৎসা বলতেন।
মিশরে নেপোলিয়ানের আগ্রাসন পরবর্তী যুগে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার জন্য সাওম রাখলে বলা হতো।
মানুষের শারীরিক অবকাঠামো ঠিক রাখতে বর্তমানে চিকিৎসকেরা সাওম রাখার নির্দেশ দিয়ে থাকেন। শরীর ঠিক মন ঠিক। সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শারীরিক সুস্থতা অত্যাবশ্যকীয়।
ইবনে সিনা সাওমকে দুরারোগ্য সব রোগের চিকিৎসা বলতেন।
মিশরে নেপোলিয়ানের আগ্রাসন পরবর্তী যুগে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার জন্য সাওম রাখলে বলা হতো।
সাওমের মাধ্যমে দরিদ্র ও অভুক্ত মানুষের দুঃখ দুর্দশা অনুধাবন করা যায়, ফলে সমাজে এর প্রভাব সুদূর প্রসারী। সিয়াম সাধনা সহমর্মিতা শিক্ষা জাগ্রত করার কার্যকর মাধ্যম। অনাহার কাকে বলে, খাদ্যাভাব কাকে বলে যারা অনুভব করেনি, তারা সমাজের বঞ্চিত ও পীড়িত মানুষের কষ্ট কীভাবে বুঝবে? সাওম রাখার কারণে এই মানুষগুলো ক্ষুধার যন্ত্রণা সম্পর্কে সামান্য হলেও ধারণা পাবে। ফলে প্রতিবেশী ও কাছে অবস্থানকারীদের কষ্টের জীবন কিছুটা অনুধাবন করা সহজ হবে। সাওম রাখার কারণে শরীরের শক্তি কমে আসবে। তখন অধীনস্থদের কাজের ভার লাঘব করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হবে। আর এতে মনিব-ভৃত্যের দূরত্ব কমে একে অপরের পরিপূরক মনে করার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। মালিক পক্ষ ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে বৈরিতা থাকবে না।
সিয়াম সাধনার দ্বারা মানুষের মধ্যে পারস্পরিক স্নেহ, ভালোবাসা, মায়া-মমতা, আন্তরিকতা, দানশীলতা, বদান্যতা, উদারতা, ক্ষমা, পরোপকারিতা, সহানুভূতি, সমবেদনা প্রভৃতি সদাচরণ জন্মায়। সাওমের এ মহান শিক্ষা গ্রহণ করে আমাদের সমাজ ও পারিবারিক জীবনে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রমাদান মাস আসলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি বেশি দান সদাকা করতেন। যেমন হাদীসে এসেছে,
عَنْ ابْن عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ : «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَجْوَدَ النَّاسِ بِالخَيْرِ، وَكَانَ أَجْوَدُ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ حِينَ يَلْقَاهُ جِبْرِيلُ، وَكَانَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ يَلْقَاهُ كُلَّ لَيْلَةٍ فِي رَمَضَانَ، حَتَّى يَنْسَلِخَ، يَعْرِضُ عَلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ القُرْآنَ، فَإِذَا لَقِيَهُ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ، كَانَ أَجْوَدَ بِالخَيْرِ مِنَ الرِّيحِ المُرْسَلَةِ»
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধন সম্পদ ব্যয় করার ব্যাপারে সকলের চেয়ে দানশীল ছিলেন। রমাদানে জিবরীল আলাইহিস সালাম যখন তাঁর সাথে দেখা করতেন, তখন তিনি আরো অধিক দান করতেন। রমযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি রাতেই জিবরীল আলাইহিস সালাম তাঁর একবার সাক্ষাৎ করতেন। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে কুরআন শোনাতেন। জিবরীল আলাইহিস সালাম যখন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন তখন তিনি রহমত প্রেরিত বায়ূর চেয়ে অধিক ধন-সম্পদ দান করতেন। [বুখারী, হাদীস নং ১৯০২।]
তাই সাওম পালনের দ্বারা সমাজের দারিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
প্রকৃতপক্ষে সাওম প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিগত জীবন থেকে পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক জীবনসহ সর্বস্তরে অনুশীলনের দীক্ষা দিয়ে যায়। তাই আসুন, সাওমের প্রকৃত শিক্ষা ও উদ্দেশ্যের প্রতি যত্নবান হয়ে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে নিজেদের মনুষ্যত্ববোধকে জাগ্রত করি, মানবিক গুণাবলিতে জীবনকে আলোকিত করি; তাহলে আমাদের সিয়াম সাধনা অর্থবহ হবে। তখন মানুষের মধ্যে গড়ে উঠবে সুমধুর সম্পর্ক, বিদায় নেবে অরাজকতা, অন্যায়-অনাচার এবং দুর্নীতি ও ভেজালমুক্ত হয়ে আদর্শ জাতি হিসেবে আমরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারব। সাওমের মাসের পরিসমাপ্তি বয়ে আনুক সমাজ জীবনে আমূল পরিবর্তন, খোদাভীতি, আত্মসংযম ও মানবপ্রেম। সাওমের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের আলোকে যেন সারা জীবন সৎভাবে অতিবাহিত করে আল্লাহর অশেষ করুণা ও ক্ষমা লাভ এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে পারি, আল্লাহ পাক আমাদের সেই তাওফিক দান করুন। আমীন।
সিয়াম সাধনার দ্বারা মানুষের মধ্যে পারস্পরিক স্নেহ, ভালোবাসা, মায়া-মমতা, আন্তরিকতা, দানশীলতা, বদান্যতা, উদারতা, ক্ষমা, পরোপকারিতা, সহানুভূতি, সমবেদনা প্রভৃতি সদাচরণ জন্মায়। সাওমের এ মহান শিক্ষা গ্রহণ করে আমাদের সমাজ ও পারিবারিক জীবনে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রমাদান মাস আসলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি বেশি দান সদাকা করতেন। যেমন হাদীসে এসেছে,
عَنْ ابْن عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ : «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَجْوَدَ النَّاسِ بِالخَيْرِ، وَكَانَ أَجْوَدُ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ حِينَ يَلْقَاهُ جِبْرِيلُ، وَكَانَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ يَلْقَاهُ كُلَّ لَيْلَةٍ فِي رَمَضَانَ، حَتَّى يَنْسَلِخَ، يَعْرِضُ عَلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ القُرْآنَ، فَإِذَا لَقِيَهُ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ، كَانَ أَجْوَدَ بِالخَيْرِ مِنَ الرِّيحِ المُرْسَلَةِ»
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধন সম্পদ ব্যয় করার ব্যাপারে সকলের চেয়ে দানশীল ছিলেন। রমাদানে জিবরীল আলাইহিস সালাম যখন তাঁর সাথে দেখা করতেন, তখন তিনি আরো অধিক দান করতেন। রমযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি রাতেই জিবরীল আলাইহিস সালাম তাঁর একবার সাক্ষাৎ করতেন। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে কুরআন শোনাতেন। জিবরীল আলাইহিস সালাম যখন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন তখন তিনি রহমত প্রেরিত বায়ূর চেয়ে অধিক ধন-সম্পদ দান করতেন। [বুখারী, হাদীস নং ১৯০২।]
তাই সাওম পালনের দ্বারা সমাজের দারিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
প্রকৃতপক্ষে সাওম প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিগত জীবন থেকে পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক জীবনসহ সর্বস্তরে অনুশীলনের দীক্ষা দিয়ে যায়। তাই আসুন, সাওমের প্রকৃত শিক্ষা ও উদ্দেশ্যের প্রতি যত্নবান হয়ে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে নিজেদের মনুষ্যত্ববোধকে জাগ্রত করি, মানবিক গুণাবলিতে জীবনকে আলোকিত করি; তাহলে আমাদের সিয়াম সাধনা অর্থবহ হবে। তখন মানুষের মধ্যে গড়ে উঠবে সুমধুর সম্পর্ক, বিদায় নেবে অরাজকতা, অন্যায়-অনাচার এবং দুর্নীতি ও ভেজালমুক্ত হয়ে আদর্শ জাতি হিসেবে আমরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারব। সাওমের মাসের পরিসমাপ্তি বয়ে আনুক সমাজ জীবনে আমূল পরিবর্তন, খোদাভীতি, আত্মসংযম ও মানবপ্রেম। সাওমের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের আলোকে যেন সারা জীবন সৎভাবে অতিবাহিত করে আল্লাহর অশেষ করুণা ও ক্ষমা লাভ এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে পারি, আল্লাহ পাক আমাদের সেই তাওফিক দান করুন। আমীন।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন