HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকীদা

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ আস-সালেহ আল-উসাইমীন

রাসূলদের উপর ঈমান
আমরা ঈমান আনি যে, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সৃষ্টিকুলের প্রতি রাসূল পাঠিয়েছেন—

﴿مُّبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ لِئَلَّا يَكُونَ لِلنَّاسِ عَلَى ٱللَّهِ حُجَّةُۢ بَعۡدَ ٱلرُّسُلِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمٗا﴾ [ النساء : 165]

“সুসংবাদ দাতা ও ভয় প্রদর্শনকারী হিসেবে। যেন রাসূল পাঠাবার পর আল্লাহর বিরুদ্ধে লোকদের কোন যুক্তিই না থাকে। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।” [নিসা: ১৬৫]

আমরা ঈমান আনি, সর্বপ্রথম রাসূল হচ্ছেন নূহ [আলাইহিস সালাম] আর সর্বশেষ হচ্ছেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

﴿إِنَّآ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ كَمَآ أَوۡحَيۡنَآ إِلَىٰ نُوحٖ وَٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ مِنۢ بَعۡدِهِۦۚ﴾ [ النساء : 163]

“আমি তোমার প্রতি অহী পাঠিয়েছি যেমনভাবে আমি নূহ এবং তাঁর পরবর্তী নবীদের প্রতি অহী পাঠিয়েছি।” [নিসা : ১৬৩]

﴿مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَآ أَحَدٖ مِّن رِّجَالِكُمۡ وَلَٰكِن رَّسُولَ ٱللَّهِ وَخَاتَمَ ٱلنَّبِيِّ‍ۧنَۗ﴾ [ الأحزاب : 40]

“মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের পুরুষদের মধ্যে কারো পিতা নন। বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং সর্বশেষ নবী ।” [আহযাব : ৪০]

নবীগণের মধ্যে সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী হচ্ছেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তারপর পর্যায়ক্রমে ইবরাহীম, মূসা, নূহ এবং ঈসা ইবন মারইয়াম। তাঁরা বিশেষ মর্যাদা প্রাপ্ত। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন:

﴿وَإِذۡ أَخَذۡنَا مِنَ ٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ مِيثَٰقَهُمۡ وَمِنكَ وَمِن نُّوحٖ وَإِبۡرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَى ٱبۡنِ مَرۡيَمَۖ وَأَخَذۡنَا مِنۡهُم مِّيثَٰقًا غَلِيظٗا ٧﴾ [ الأحزاب : 7]

“হে নবী স্মরণ করো, সে ওয়াদা ও প্রতিশ্রুতির কথা যা আমরা সব নবীর কাছ থেকে গ্রহণ করেছি এবং তোমার কাছ থেকেও এ প্রতিশ্রুতি নিয়েছি। তাদের সবার কাছ থেকেই আমরা খুব পাকাপোক্ত ওয়াদা গ্রহণ করেছি।” [আহযাব : ৭]

আমরা দৃঢ়তার সাথে এ বিশ্বাস পোষণ করি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শরী‘আত এসব বিশেষ মর্যাদা প্রাপ্ত নবীদের শরী‘আতের মর্যাদাকে অন্তর্ভুক্ত করে। এ ক্ষেত্রে আল্লাহর বাণী হচ্ছে:

﴿۞شَرَعَ لَكُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِۦ نُوحٗا وَٱلَّذِيٓ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ وَمَا وَصَّيۡنَا بِهِۦٓ إِبۡرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰٓۖ أَنۡ أَقِيمُواْ ٱلدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُواْ فِيهِۚ﴾ [ الشورى : 13]

“তিনি তোমাদের জন্য দ্বীনের সেই নিয়ম বিধান নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন যান উপদেশ তিনি নূহ [আলাইহিস সালাম] কে দিয়েছিলেন। আর আমি তোমার প্রতি অহীর মাধ্যমে যা পাঠিয়েছি, যার নির্দেশ আমি ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকেও দিয়েছিলাম। তা হচ্ছে, তোমরা দ্বীন কায়েম করো এবং এতে বিচ্ছিন্ন হয়ো না।” [শূরা: ১৩]

আমরা ঈমান আনি যে, সব রাসূলই মানুষ ছিলেন। মাখলুক ছিলেন। রুবুবিয়াতের কোন গুণ বা বৈশিষ্ট্য তাঁদের মধ্যে ছিলো না। সর্বপ্রথম রাসূল নূহ [আলাইহিস সালাম] সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন :

﴿وَلَآ أَقُولُ لَكُمۡ عِندِي خَزَآئِنُ ٱللَّهِ وَلَآ أَعۡلَمُ ٱلۡغَيۡبَ وَلَآ أَقُولُ إِنِّي مَلَكٞ﴾ [ هود : 31]

“আমি তোমাদের বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ধনভাণ্ডার রয়েছে। আমি গায়েব জানি একথাও বলি না। আমি একথাও বলি না, ‘আমি একজন ফিরিশ্‌তা।” [হূদ: ৩১]

শেষ রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আল্লাহ তা‘আলা একথা বলতে নির্দেশ দিয়েছেন:

﴿لَّآ أَقُولُ لَكُمۡ عِندِي خَزَآئِنُ ٱللَّهِ وَلَآ أَعۡلَمُ ٱلۡغَيۡبَ وَلَآ أَقُولُ لَكُمۡ إِنِّي مَلَكٌۖ﴾ [ الأنعام : 50]

“আমি তোমাদেরকে একথা বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ধন-ভান্ডার আছে। আমি গায়েব জানি একথা ও আমি বলি না। আমি একজন ফিরিশ্‌তা এটাও তোমাদেরকে আমি বলি না।” [আন‘আম : ৫০]

একথা বলার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন:

﴿لَّآ أَمۡلِكُ لِنَفۡسِي نَفۡعٗا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَآءَ ٱللَّهُۚ﴾ [ الأعراف : 188]

“আল্লাহ যা চান তাছাড়া নিজের কোন লাভ বা ক্ষতি করার ক্ষমতা আমার নেই।” [আ‘রাফ : ১৮৮]

আল্লাহ তা‘আলা নবীকে একথা বলতে নির্দেশ দিয়েছেন:

﴿قُلۡ إِنِّي لَآ أَمۡلِكُ لَكُمۡ ضَرّٗا وَلَا رَشَدٗا ٢١ قُلۡ إِنِّي لَن يُجِيرَنِي مِنَ ٱللَّهِ أَحَدٞ وَلَنۡ أَجِدَ مِن دُونِهِۦ مُلۡتَحَدًا ٢٢﴾ [ الجن : 21-22]

“বলুন, আমি তোমাদের কোন ক্ষতি করার ক্ষমতাও রাখিনা, কোন কল্যাণ করারও ক্ষমতা রাখি না। বল: আমাকে আল্লাহর পাকড়াও হতে কেউ রক্ষা করতে পারবে না। তাঁর আশ্রয় ছাড়া আমার আর কোন আশ্রয়স্থল দেখি না।” [জিন : ২১-২২]

আমরা ঈমান আনি, নবীগণ সবাই আল্লাহর বান্দাহ। আল্লাহ তা‘আলা তাঁদেরকে রিসালাতের মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন। তাঁদের সর্বোচ্চ মর্যাদা ও প্রশংসা বর্ণনার ক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলা তাঁদেরকে দাসত্বের গুণে গুণান্বিত করেছেন। প্রথম রাসূল নূহ [আলাইহিস সালাম] সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿ذُرِّيَّةَ مَنۡ حَمَلۡنَا مَعَ نُوحٍۚ إِنَّهُۥ كَانَ عَبۡدٗا شَكُورٗا ٣﴾ [ الإسراء : 3]

“তোমরা তো তাদেরই সন্তান যাদেরকে আমরা নূহ [আলাইহিস সালাম] এর সাথে [নৌকায়] বহন করেছিলাম। আর নূহ [আলাইহিস সালাম] ছিল আল্লাহর একজন শোকরগুজার বান্দাহ।” [ইসরা : ৩]

সর্বশেষ রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করছেন:

﴿تَبَارَكَ ٱلَّذِي نَزَّلَ ٱلۡفُرۡقَانَ عَلَىٰ عَبۡدِهِۦ لِيَكُونَ لِلۡعَٰلَمِينَ نَذِيرًا ١﴾ [ الفرقان : 1]

“অতীব বরকতপূর্ণ সেই সত্তা যিনি এ ফুরকান স্বীয় বান্দাহর উপর নাযিল করেছেন; যেন সে সমগ্র সৃষ্টিকুলের জন্য ভয় প্রদর্শনকারী হতে পারে।” [ফুরকান: ১]

অন্যান্য নবীগণের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করছেন:

﴿وَٱذۡكُرۡ عِبَٰدَنَآ إِبۡرَٰهِيمَ وَإِسۡحَٰقَ وَيَعۡقُوبَ أُوْلِي ٱلۡأَيۡدِي وَٱلۡأَبۡصَٰرِ ٤٥﴾ [ص: 45]

“আমার বান্দাহ ইবরাহীম, ইসহাক এবং ইয়াকুবের কথা স্বরণ করো। তারা বড় কর্মক্ষমতা সম্পন্ন এবং দৃষ্টিমান লোক ছিলো।” [ছোয়াদ : ৪৫]

﴿ وَٱذۡكُرۡ عَبۡدَنَا دَاوُۥدَ ذَا ٱلۡأَيۡدِۖ إِنَّهُۥٓ أَوَّابٌ ١٧﴾ [ص: 17]

“আমার বান্দাহ দাউদের কথা বর্ণনা করো, সে বড় শক্তি সামর্থের অধিকারী ছিলো। সব ব্যাপারেই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী ছিলো।” [ছোয়াদ :১৭]

﴿وَوَهَبۡنَا لِدَاوُۥدَ سُلَيۡمَٰنَۚ نِعۡمَ ٱلۡعَبۡدُ إِنَّهُۥٓ أَوَّابٌ ٣٠﴾ [ص: 30]

“আর দাঊদকে আমরা সুলাইমান [এর মত বিচক্ষণ পুত্র] দান করেছি। সে কতইনা উত্তম বান্দাহ। সে [বার বার আল্লাহর দিকে] প্রত্যাবর্তনকারী।” [সোয়াদ: ৩০]

ঈসা আলাইহিস সালাম এর ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করছেন:

﴿إِنۡ هُوَ إِلَّا عَبۡدٌ أَنۡعَمۡنَا عَلَيۡهِ وَجَعَلۡنَٰهُ مَثَلٗا لِّبَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ ٥٩﴾ [ الزخرف : 59]

“সে [ঈসা] আল্লাহর বান্দাহ ব্যতীত আর কিছুই নয়। তাঁর প্রতি আমরা নিয়ামত দান করেছি এবং তাকে বনী ইসরাইলের জন্য এক বিশেষ দৃষ্টান্ত বানিয়েছি।” [যুখরুফ :৫৯]

আমরা ঈমান আনি যে, আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে “রিসালত” সমাপ্ত করেছেন। তাঁকে গোটা মানব জাতির কাছে রাসূল হিসেবে পাঠিয়েছেন আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন:

﴿قُلۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنِّي رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيۡكُمۡ جَمِيعًا ٱلَّذِي لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ يُحۡيِۦ وَيُمِيتُۖ فَ‍َٔامِنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِ ٱلنَّبِيِّ ٱلۡأُمِّيِّ ٱلَّذِي يُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَكَلِمَٰتِهِۦ وَٱتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ١٥٨﴾ [ الأعراف : 158]

“হে মুহাম্মদ! বলো হে লোকসকল, আমি তোমাদের সবার প্রতি নবী হিসেবে সেই মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত হয়েছি, যিনি আসমান ও যমীনের একচ্ছত্র মালিক। তিনি ছাড়া আর কোন হক ইলাহ নেই। তিনিই জীবন দান করেন। তিনিই মৃত্যু দেন। অতএব তোমরা আল্লাহর প্রতি এবং তাঁরই প্রেরিত উম্মী নবীর প্রতি ঈমান আনো যিনি আল্লাহ এবং তাঁর কথাকে মেনে চলেন তোমরা তাঁর আনুগত্য করো; যাতে করে তোমরা হিদায়াত লাভ করতে পারো।” [আ‘রাফ : ১৫৮]

আমরা ঈমান আনি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শরী‘আত হচ্ছে “দ্বীন ইসলাম”, যে দ্বীনকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাহদের জন্য পছন্দ করেছেন। একমাত্র ইসলাম ছাড়া অন্য কিছুই কারও কাছ থেকে তিনি দ্বীন হিসেবে গ্রহণ করবেন না। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন:

﴿إِنَّ ٱلدِّينَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلۡإِسۡلَٰمُۗ﴾ [ آل عمران : 19]

“আল্লাহর কাছে ইসলামই একমাত্র দ্বীন।” [আলে-ইমরান :১৯]

﴿ٱلۡيَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِينَكُمۡ وَأَتۡمَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ نِعۡمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ ٱلۡإِسۡلَٰمَ دِينٗاۚ﴾ [ المائدة : 3]

“আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে তোমাদের জন্য সম্পূর্ণ করে দিলাম। আমার নিয়ামত তোমাদের প্রতি পরিপূর্ণ করে দিলাম। আর ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে গ্রহণ করে সন্তুষ্ট হলাম।” [মায়েদা : ৩]

আরও ইরশাদ করেন:

﴿وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥﴾ [ آل عمران : 85]

“যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কিছুকে দ্বীন হিসেবে গ্রহণ করতে চায়; তার কাছ থেকে তা কখনোই গ্রহণ করা হবে না। আর আখেরাতে সে হবে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত।” [আলে-ইমরান: ৮৫]

আমরা মনে করি বর্তমানে যে ব্যক্তি দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্যান্য মতাদর্শ যেমন ইয়াহূদীবাদ, খৃষ্টবাদ ইত্যাদিকে দ্বীন হিসেবে আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করবে সে কাফের। একাজ থেকে যাদি সে তাওবা করে তার তাওবা গ্রহণ করা হবে। অন্যথায় মুরতাদ হিসেবে তাকে হত্যা করতে হবে। কারণ সে কুরআনে মিথ্যারোপ করল।

আমরা মনে করি, যে ব্যক্তি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গোটা মানব জাতির রাসূল হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করে সে মূলত: দুনিয়ার সব নবীকেই অস্বীকার করে। এমনকি সে নিজে যাকে নবী হিসেবে বিশ্বাস করে এবং অনুসরণ করে, প্রকারান্তরে তাকেও সে অস্বীকার করে। এর প্রমাণ হচ্ছে:

﴿كَذَّبَتۡ قَوۡمُ نُوحٍ ٱلۡمُرۡسَلِينَ ١٠٥﴾ [ الشعراء : 105]

“নূহের কওম রাসূলগণের উপর মিথ্যারোপ করেছে”। [শু‘আরা : ১০৫]

এ আয়াতে নূহ [আলাইহিস সালাম] এর জাতিকে সমস্ত রাসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অথচ নূহ [আলাইহিস সালাম] এর পূর্বে কোন রাসূলই আসেননি। এর অর্থ হলো, একজন নবীকে অস্বীকার করা, গোটা নবীকুলকে অস্বীকার করার শামিল।

﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ يَكۡفُرُونَ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَيُرِيدُونَ أَن يُفَرِّقُواْ بَيۡنَ ٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَيَقُولُونَ نُؤۡمِنُ بِبَعۡضٖ وَنَكۡفُرُ بِبَعۡضٖ وَيُرِيدُونَ أَن يَتَّخِذُواْ بَيۡنَ ذَٰلِكَ سَبِيلًا ١٥٠ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡكَٰفِرُونَ حَقّٗاۚ وَأَعۡتَدۡنَا لِلۡكَٰفِرِينَ عَذَابٗا مُّهِينٗا ١٥١﴾ [ النساء : 150-151]

“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণকে অস্বীকার করে এবং তাঁদের মধ্যে পার্থক্য করতে চায়, আর বলে, আমরা কাউকে মানবো আর কাউকে মানবো না এবং ঈমান ও কুফরের মাঝখানে কোন পথ বের করার ইচ্ছা পোষণ করে তার নিঃসন্দেহে কাফের। কাফেরদের জন্য আমি অপমানকর শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছি।” [নিসা: ১৫০-১৫১]

আমরা ঈমান আনি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরে আর কোন নবী আসবে না। তাঁর পরে যে কেউ নবুয়তের দাবী করবে অথবা নবুয়তের মিথ্যা দাবীদারকে সত্য বলবে সেও কাফের। কারণ সে আল্লাহ তা‘আলা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং মুসলিমদের ‘ইজমা’ অর্থাৎ মুসলিম উম্মার সর্বসম্মত রায় ও সিদ্ধান্তকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে।

আমরা ঈমান আনি যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের জন্য রেখে গিয়েছেন, খোলাফায়ে রাশেদীনকে। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরে উম্মতের মধ্যে জ্ঞান ইসলামের প্রচার, প্রসার এবং নেতৃত্বের ক্ষেত্রে তাঁরই প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী মর্যাদাবান এবং খেলাফতের সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি ছিলেন আবূ বকর [রাদিয়াল্লাহু আনহু] তারপর ওমর [রাদিয়াল্লাহু আনহু], তারপর হযারত ওসমান [রাদিয়াল্লাহু আনহু] অত:পর আলী [রাদিয়াল্লাহু আনহু]।

মর্যাদার দিক থেকে তাঁদের অবস্থান যেমন ছিলো, খিলাফতের দিক থেকেও ছিলো তাদের তেমনই অবস্থান।

মহান হাকীম আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য এটা কোনক্রমেই শোভনীয় নয় যে, সর্বোত্তম যুগেও তিনি এমন লোককে খিলাফতের দায়িত্ব দিবেন যার চেয়ে উত্তম এবং খিলাফতের অধিক যোগ্য ব্যক্তি উম্মতের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে।

আমরা আরও ঈমান আনি যে, সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে থেকে (মাফদুল) ব্যক্তি কোন কোন ক্ষেত্রে (আফদল) ব্যক্তির চেয়েও অধিক গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন। কিন্তু (আফদাল) ব্যক্তিকে নিরঙ্কুশভাবে (মাফদুল) ব্যক্তির চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলা ঠিক নয়। কেননা মর্যাদার কারণ ও বিষয়বস্তু অনেক এবং বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। এ প্রসংগে বলা যেতে পারে আবূ বকর “তাকওয়া” ওমর শাসন, ওসমান লজ্জা ও বিনয় এবং আলী [রাদিয়াল্লাহু আনহুম] সাহসিকতা ও বীরত্বের দিক থেকে শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী ছিলেন।

শ্রেষ্ঠ উম্মত

আমরা ঈমান আনি যে, উম্মতে মুহাম্মদী হচ্ছে সর্বোত্তম উম্মত।

﴿كُنتُمۡ خَيۡرَ أُمَّةٍ أُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَتَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَتُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِۗ﴾ [ آل عمران : 110]

“তোমরা সর্বোত্তম উম্মত। মানুষের জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের আদেশ করবে। অন্যায় কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখবে, আর আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখবে।” [আলে ইমরান : ১১০]

আমরা ঈমান আনি যে, উম্মতে মুসলিমার মধ্যে সর্বোত্তম মানব গোষ্ঠী ছিলেন সাহাবায়ে কেরাম [রাদিয়াল্লাহ আনহুম] তারপর তাবেয়ীন তারপরে তাবে-তাবেয়ীন।

আমরা আরও ঈমান আনি যে, কেয়ামত পর্যন্ত এ উম্মতের মধ্য থেকে এমন একটি দল হকের উপর অবিচল থাকবে যাদেরকে কোন অপমানকারী কিংবা বিরোধিতাকারী কোন ক্ষতি করতে পারবে না। তাদেরকে হকের পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না।

আমরা ঈমান আনি যে, সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে যেসব ফিতনা অর্থাৎ ভুল বুঝা-বুঝির কারণে মতানৈক্য, সংঘাত ও সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছে তা তাঁদের ব্যাখ্যা ও ইজতিহাদের কারণে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যারা সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তাঁদের জন্য দু’টি পরস্কার। যারা ভুল করেছেন তাদের জন্য রয়েছে একটি পুরষ্কার। আর ভুল-ত্রুটিগুলো আল্লাহ তা‘আলা মাফ করে দিয়েছেন।

আমরা মনে করি তাঁদের প্রতি কোন অন্যায় আচরণ থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিৎ। এমনিভাবে তাঁরা যে মর্যাদা ও প্রশংসার অধিকারী, তা ছাড়া অন্য কিছু আলোচনা করা আমাদের অনুচিৎ। তাঁদের কারো প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ ও ঈর্ষা পোষণ করা থেকে আমাদের অন্তরকে পবিত্র রাখা উচিৎ। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন:

﴿لَا يَسۡتَوِي مِنكُم مَّنۡ أَنفَقَ مِن قَبۡلِ ٱلۡفَتۡحِ وَقَٰتَلَۚ أُوْلَٰٓئِكَ أَعۡظَمُ دَرَجَةٗ مِّنَ ٱلَّذِينَ أَنفَقُواْ مِنۢ بَعۡدُ وَقَٰتَلُواْۚ وَكُلّٗا وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلۡحُسۡنَىٰۚ﴾ [ الحديد : 10]

“তোমাদের মধ্যে যারা মক্কা বিজয়ের পরে দান করেছে এবং জিহাদ করেছে তারা কখনো তাদের সমান হতে পারে না যারা মক্কা বিজয়ের আগে দান করেছে এবং জিহাদ করেছে। বস্তুত: তাদের মর্যাদা পরে দানকারী ও জিহাদকারীদের তুলনায় অনেক বেশী। আল্লাহ উভয়ের জন্যই উত্তম ওয়াদা করেছেন।” [আল হাদীদ : ১০]

আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সম্পর্কে বলেন:

﴿وَٱلَّذِينَ جَآءُو مِنۢ بَعۡدِهِمۡ يَقُولُونَ رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لَنَا وَلِإِخۡوَٰنِنَا ٱلَّذِينَ سَبَقُونَا بِٱلۡإِيمَٰنِ وَلَا تَجۡعَلۡ فِي قُلُوبِنَا غِلّٗا لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ رَبَّنَآ إِنَّكَ رَءُوفٞ رَّحِيمٌ ١٠﴾ [ الحشر : 10]

“যারা এই অগ্রবর্তী লোকদের পরে এসেছে তারা বলে: হে আমাদের রব, আমাদেরকে এবং আমাদের সেসব ভাইদেরকে ক্ষমা করে দাও যারা আমাদের ঈমানদার লোকদের প্রতি কোন হিংসা ও শত্রুতার ভাব রেখো না। হে আমাদের রব, তুমি বড়ই অনুগ্রহকারী করুণাময়।”[হাশর: ১০]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন