HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
ইসলামে সালাতের গুরুত্ব
লেখকঃ জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের
(সালাত ত্যাগকারীর বিধান ও জামাতে সালাত পড়ার গুরুত্ব)
আল্লাহ মানুষকে তার এবাদতের জন্যেই সৃষ্টি করেছেন। শুধু মানুষ নয় ; মানুষ ও জ্বীন—উভয় জাতিকে আল্লাহ তার এবাদত তথা তার দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করেছেন।
আল্লাহ বলেন-
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
অর্থাৎ ‘‘আমি মানব ও জ্বীন জাতিকে একমাত্র আমার এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।’’
ফলে তিনি মানুষের জন্য কিছু দৈহিক, আত্মিক ও আর্থিক এবাদতের প্রচলন করেছেন।
দৈহিক এবাদতের মাঝে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও মহান এবাদত হল সালাত। সালাত এমন একটি এবাদত যাকে আল্লাহ তার মাঝে এবং তার বান্দার মাঝে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যম সাব্যস্ত করেছেন।
সালাতের মাধ্যমে একজন মানুষ আল্লাহর সাথে দেয়া প্রতিশ্রুতির বার বার প্রতিফলন ঘটায়। সে তার প্রভু বা স্রষ্টাকে বুঝাতে সক্ষম হয় যে, সে তার প্রতিশ্রুতি পালন করে যাচ্ছে। এ সালাতের মাধ্যমেই মানুষ আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে। আল্লাহর সাথে মানুষের সম্পর্কের বন্ধন সুদৃঢ় ও মজবুত হয়। ইহকাল ও পরকালের মুক্তির পথ কংটকমুক্ত হয়। সালাত ব্যক্তি, পরিবার, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি, শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ব ও মমতাবোধ ফিরিয়ে আনে। গড়ে উঠে সামাজিক ঐক্য। সালাতের মাধ্যমে ছগীরা তথা ছোট ছোট গুনাহগুলো হতে পরিত্রাণ লাভ করে এবং দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লাভ হয়।
আল্লাহ মানুষকে তার এবাদতের জন্যেই সৃষ্টি করেছেন। শুধু মানুষ নয় ; মানুষ ও জ্বীন—উভয় জাতিকে আল্লাহ তার এবাদত তথা তার দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করেছেন।
আল্লাহ বলেন-
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
অর্থাৎ ‘‘আমি মানব ও জ্বীন জাতিকে একমাত্র আমার এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।’’
ফলে তিনি মানুষের জন্য কিছু দৈহিক, আত্মিক ও আর্থিক এবাদতের প্রচলন করেছেন।
দৈহিক এবাদতের মাঝে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও মহান এবাদত হল সালাত। সালাত এমন একটি এবাদত যাকে আল্লাহ তার মাঝে এবং তার বান্দার মাঝে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যম সাব্যস্ত করেছেন।
সালাতের মাধ্যমে একজন মানুষ আল্লাহর সাথে দেয়া প্রতিশ্রুতির বার বার প্রতিফলন ঘটায়। সে তার প্রভু বা স্রষ্টাকে বুঝাতে সক্ষম হয় যে, সে তার প্রতিশ্রুতি পালন করে যাচ্ছে। এ সালাতের মাধ্যমেই মানুষ আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে। আল্লাহর সাথে মানুষের সম্পর্কের বন্ধন সুদৃঢ় ও মজবুত হয়। ইহকাল ও পরকালের মুক্তির পথ কংটকমুক্ত হয়। সালাত ব্যক্তি, পরিবার, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি, শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ব ও মমতাবোধ ফিরিয়ে আনে। গড়ে উঠে সামাজিক ঐক্য। সালাতের মাধ্যমে ছগীরা তথা ছোট ছোট গুনাহগুলো হতে পরিত্রাণ লাভ করে এবং দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লাভ হয়।
সালাত এমন এক এবাদত যা সারা বছর দৈনিক পাঁচ বার আদায় করতে হয়।
মৃত্যু ছাড়া আর কোন অবস্থাতেই সালাত মাফ হয় না এমনকি মৃত্যুশয্যাতেও সালাত হতে বিরত থাকার কোন বিধান নেই।
আল্লাহ তাআলা প্রথমে পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করেন। তারপর আল্লাহ মানুষের প্রতি দয়া করে তা কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্তে নিয়ে আসেন। তবে সওয়াব ও বিনিময় পঞ্চাশ ওয়াক্তেরই জারী রাখেন। সুতরাং যে ব্যক্তি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবে আল্লাহ তাকে পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের সওয়াব প্রদান করবে।
সালাত একমাত্র এবাদত যা আল্লাহ তাআলা সাত আসমানের উপরেই ফরজ করাকে শ্রেয় মনে করেছেন। তাই রাসূল (সা:) যখন মেরাজে গমন করেন তখন আল্লাহ তাআলা সরাসরি—কোন প্রকার মাধ্যম ছাড়াই রাসূল (সা:)-কে সালাতের দায়িত্ব দেন।
এতে সালাতের মহত্ত্ব, মর্যাদা ও গুরুত্বের প্রতিফলন ঘটে। রব ও স্রষ্টার সাথে সম্পর্ক স্থাপনে অভিপ্রায়ী একজন মুসলমানের কর্তব্য হল, সে এ মহান এবাদতটির মর্যাদা ও গুরুত্ব অনুধাবন করবে। এবং তার যথার্থতা বজায় রাখতে সচেষ্ট হবে।
এছাড়া ও সালাতের অনেক লাভ ও ফজিলত আছে। নিম্নে এর কয়েকটি ফজিলত আলোচনা করা হল।
মৃত্যু ছাড়া আর কোন অবস্থাতেই সালাত মাফ হয় না এমনকি মৃত্যুশয্যাতেও সালাত হতে বিরত থাকার কোন বিধান নেই।
আল্লাহ তাআলা প্রথমে পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করেন। তারপর আল্লাহ মানুষের প্রতি দয়া করে তা কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্তে নিয়ে আসেন। তবে সওয়াব ও বিনিময় পঞ্চাশ ওয়াক্তেরই জারী রাখেন। সুতরাং যে ব্যক্তি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবে আল্লাহ তাকে পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের সওয়াব প্রদান করবে।
সালাত একমাত্র এবাদত যা আল্লাহ তাআলা সাত আসমানের উপরেই ফরজ করাকে শ্রেয় মনে করেছেন। তাই রাসূল (সা:) যখন মেরাজে গমন করেন তখন আল্লাহ তাআলা সরাসরি—কোন প্রকার মাধ্যম ছাড়াই রাসূল (সা:)-কে সালাতের দায়িত্ব দেন।
এতে সালাতের মহত্ত্ব, মর্যাদা ও গুরুত্বের প্রতিফলন ঘটে। রব ও স্রষ্টার সাথে সম্পর্ক স্থাপনে অভিপ্রায়ী একজন মুসলমানের কর্তব্য হল, সে এ মহান এবাদতটির মর্যাদা ও গুরুত্ব অনুধাবন করবে। এবং তার যথার্থতা বজায় রাখতে সচেষ্ট হবে।
এছাড়া ও সালাতের অনেক লাভ ও ফজিলত আছে। নিম্নে এর কয়েকটি ফজিলত আলোচনা করা হল।
১- আল্লাহর একাত্ববাদ ও মুহাম্মদ (সা.) এর রেসালাতের স্বাক্ষ্য দেয়ার পর সালাত হল ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুকন। রাসূল (সা:) ঈমাননের পরেই সালাতের কথা উল্লেখ করেন। অত:পর তিনি বলেন—
بني الإسلام علي خمس شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمد رسول الله وإقام الصلاة وإيتاء الزكاة و صوم رمضان وحج البيت ( رواه البخاري :৭ و مسلم :১৯)
ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি:—
১-এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লহ ছাড়া আর কোন সত্যিকার ইলাহ নেই এবং মোহাম্মদ (সা:) আল্লাহর রাসূল।
২-সালাত কায়েম করা।
৩-জাকাত প্রদান করা।
৪-রমজানের রোজা রাখা।
৫-বাইতুল্লাহর হজ করা। (বোখারি : ৭ মুসলিম : ১৯)
তিনি আরো বলেন—
رأس الأمر الإسلام وعموده الصلاة و ذروة سنامه الجهاد . ( رواه الترمذي :৩৫৪১)
সবকিছুর মূল হল ইসলাম, আর ইসলামের খুঁটি সালাত, আর ইসলামের শীর্ষ পীঠ হল জিহাদ। (তিরমিযি:৩৫৪১)
২-সালাত আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় ও সর্বোত্তম আমল। রাসূল (সা:) বলেন :—
استقيموا ولن تحصوا واعملوا وأن خير أعمالكم الصلاة ولن يحافظ على الوضوء إلا مؤمن . ( رواه ابن ماجة :২৭৩)
তোমরা অটুট ও অবিচল থাক, গণনা করো না, তোমরা কাজ করো, আর মনে রাখবে তোমাদের সর্বোত্তম আমল হল সালাত, একজন মোমিন অবশ্যই সর্বদা ওজুর সংরক্ষণ করতে থাকে। (ইবনে মাজাহ :২৭৩)
৩- সালাত নুর—যেমন রাসূল (সা:) বলেন:—
الطهور شطر الإيمان والحمد لله تملأ الميزان و سبحان الله والحمد لله تملان أوتملأ ما بين السماء والأرض والصلاة نور والصدقة برهان و الصبر ضياء و القران حجة لك أو عليك . رواه مسلم :৩২৭)
পবিত্রতা ইমানের অর্ধেক আর আলহামদুলিল্লাহ পাল্লাকে সম্পূর্ণ করে, সুবহানাল্লহ ও আলহামদুলিল্লাহ আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পূর্ণ করে। সালাত নূর-আলো। দান খয়রাত প্রমাণ স্বরূপ। ধৈর্য উজ্জলতা আর কোরআন তোমার পক্ষে প্রমাণ অথবা তোমার বিপক্ষে প্রমাণ। (মুসলিম:৩২৭)
৪- সালাত আল্লাহর নৈকট্য ও উচ্চ-মর্যাদা লাভের উপকরণ। সাওবান (রা:) নবী (সা:)-কে এমন আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন যা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে—রাসূল (সা:) উত্তরে বললেন, তুমি বেশি করে আল্লাহর জন্য সেজদা-সালাত আদায় করতে থাক, কারণ তোমার প্রতিটি সেজদার কারণে আল্লাহ তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং তোমার গুনাহ মাপ করবেন। (মুসলিম:৭৩৫ )
তিনি-সা. আরো বলেন—
أقرب ما يكون العبد من ربه وهو ساجد فأكثروا الدعاء ( رواه مسلم :৭৪৪)
বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নৈকট্য লাভ করে যখন সে সেজদারত থাকে। সুতরাং তোমরা সেজদার অবস্থায় বেশি বেশি প্রার্থনা কর। (মুসলিম:৭৪৪)
৫-সালাত পাপ মোচনকারী এবং ছোট ছোট গুনাহের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ। রাসূল (সা:) বলেন:—
الصلوات الخمس و الجمعة إلي الجمعة كفارة لما بينهن مالم يغش الكبائر ( رواه مسلم :৩৪৪)
পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, এক জুমা হতে আরেক জুমা মধ্যবর্তী গুনাহ সমূহের প্রায়শ্চিত্ত করে, যতক্ষণ পর্যন্ত সে কবিরা গুনাহে লিপ্ত না হয়। (মুসলিম:৩৪৪)
এবং রাসূল (সা:) গুনাহ প্রায়শ্চিত্তের একটি দৃষ্টান্ত এভাবে বর্ণনা করেন ; তিনি বলেন—
أرأيتم لوأن نهرا بباب أحدكم يغتسل فيه كل يوم خمس مرا ت هل يبقي من درنه ؟ قالوا لا يبقي من درنه شيئ قال فكذالك مثل الصلوات الخمس يمحو الله بهن الخطايا ) رواه مسلم :৪৯৭)
যদি তোমাদের কারো বাড়ির দরজায় একটি পুকুর থাকে আর তাতে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে, তার শরীরে কোন ময়লা আবর্জনা অবশিষ্ট থাকে ? সাহাবিরা উত্তরে বললেন, না। রাসূল সা. বলেন—অনুরূপ ভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ; আল্লাহ তাআলা দৈনিক পাঁচবার সালাত আদায় করা দ্বারা গুনাহ-পাপাচারগুলো ধুয়ে মুছে ফেলেন। (মুসলিম:৪৯৭)
তিনি আরো একটি দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে বলেন—
إن العبد المسلم ليصلي الصلاة يريد بها وجه الله فتهافت عنه ذنوبه كما يتهافت هذا الورق عن هذه الشجرة . رواه أحمد :২০৫৭৬)
মুসলিম বান্দা যখন একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করে তখন তার গুনাহ এমনভাবে ঝরে পড়তে থাকে যেমন এই বৃক্ষের পাতা ঝরে পড়ে। (আহমদ : ২০৫৭৬)
৬-সর্ব প্রথম বান্দার সালাতের হিসাব নেয়া হবে। তাতে হয় সে মুক্তি পাবে অথবা ধ্বংস হবে। নবী করিম (সা:) বলেন :—
أول ما يحاسب به العبد يوم القيامة الصلاة فإن صلحت صلح سائر عمله وإن فسدت فسد سائر عمله . ( رواه الترمذي :২৭৮)
কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার সালাতের হিসাব হবে। যদি সালাত ঠিক হয় তবে তার সকল আমল সঠিক বিবেচিত হবে। আর যদি সালাত বিনষ্ট হয় তবে তার সকল আমলই বিনষ্ট বিবেচিত হবে। (তিরমিযি:২৭৮)
৭-সফলতা ও সম্মানিত স্থান জান্নাতে প্রবেশকে আল্লহ তাআলা সালাতের উপরই স্থাপন করেছেন। তিনি বলেন:—
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ ﴿1﴾ الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ ﴿2﴾. سورة المؤمن :১,২
মোমিনগণ সফলকাম, যারা তাদের সালাতে নম্রতা ও ভীতির সাথে দন্ডায়মান হয়। (সুরা আল-মোমিন : ১-২) অতঃপর বলেন :—
وَالَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ ﴿9﴾ أُولَئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ ﴿10﴾ الَّذِينَ يَرِثُونَ الْفِرْدَوْسَ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ ﴿11﴾
‘‘আর যারা তাদের সালাতে যত্নবান, তারাই জান্নাতের ওয়ারিশ—যারা ফিরদাউসের ওয়ারিশ হবে এবং তথায় তারা চিরকাল থাকবে।’’ (সুরা আল-মোমিন:৯,১০,১১)
মনে রাখতে হবে সালাত যেহেতু আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় আমল আল্লাহর নৈকট্য লাভের ও মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ, সালাতের হেফাজত করলে মুক্তি, অন্যথায় ধ্বংস ইত্যাদি—তাই নি:সন্দেহে বলা যায় যে সালাত একটি মহান কাজ যার গুরুত্ব দেয়া অতীব জরুরি। আর তা বাস্তবায়িত হয় সালাত, তার বিধানাবলী তথা রুকন ও ওয়াজিবসমূহ শিক্ষা, সালাতে একাগ্রতা ও পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যমেই।
بني الإسلام علي خمس شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمد رسول الله وإقام الصلاة وإيتاء الزكاة و صوم رمضان وحج البيت ( رواه البخاري :৭ و مسلم :১৯)
ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি:—
১-এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লহ ছাড়া আর কোন সত্যিকার ইলাহ নেই এবং মোহাম্মদ (সা:) আল্লাহর রাসূল।
২-সালাত কায়েম করা।
৩-জাকাত প্রদান করা।
৪-রমজানের রোজা রাখা।
৫-বাইতুল্লাহর হজ করা। (বোখারি : ৭ মুসলিম : ১৯)
তিনি আরো বলেন—
رأس الأمر الإسلام وعموده الصلاة و ذروة سنامه الجهاد . ( رواه الترمذي :৩৫৪১)
সবকিছুর মূল হল ইসলাম, আর ইসলামের খুঁটি সালাত, আর ইসলামের শীর্ষ পীঠ হল জিহাদ। (তিরমিযি:৩৫৪১)
২-সালাত আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় ও সর্বোত্তম আমল। রাসূল (সা:) বলেন :—
استقيموا ولن تحصوا واعملوا وأن خير أعمالكم الصلاة ولن يحافظ على الوضوء إلا مؤمن . ( رواه ابن ماجة :২৭৩)
তোমরা অটুট ও অবিচল থাক, গণনা করো না, তোমরা কাজ করো, আর মনে রাখবে তোমাদের সর্বোত্তম আমল হল সালাত, একজন মোমিন অবশ্যই সর্বদা ওজুর সংরক্ষণ করতে থাকে। (ইবনে মাজাহ :২৭৩)
৩- সালাত নুর—যেমন রাসূল (সা:) বলেন:—
الطهور شطر الإيمان والحمد لله تملأ الميزان و سبحان الله والحمد لله تملان أوتملأ ما بين السماء والأرض والصلاة نور والصدقة برهان و الصبر ضياء و القران حجة لك أو عليك . رواه مسلم :৩২৭)
পবিত্রতা ইমানের অর্ধেক আর আলহামদুলিল্লাহ পাল্লাকে সম্পূর্ণ করে, সুবহানাল্লহ ও আলহামদুলিল্লাহ আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পূর্ণ করে। সালাত নূর-আলো। দান খয়রাত প্রমাণ স্বরূপ। ধৈর্য উজ্জলতা আর কোরআন তোমার পক্ষে প্রমাণ অথবা তোমার বিপক্ষে প্রমাণ। (মুসলিম:৩২৭)
৪- সালাত আল্লাহর নৈকট্য ও উচ্চ-মর্যাদা লাভের উপকরণ। সাওবান (রা:) নবী (সা:)-কে এমন আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন যা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে—রাসূল (সা:) উত্তরে বললেন, তুমি বেশি করে আল্লাহর জন্য সেজদা-সালাত আদায় করতে থাক, কারণ তোমার প্রতিটি সেজদার কারণে আল্লাহ তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং তোমার গুনাহ মাপ করবেন। (মুসলিম:৭৩৫ )
তিনি-সা. আরো বলেন—
أقرب ما يكون العبد من ربه وهو ساجد فأكثروا الدعاء ( رواه مسلم :৭৪৪)
বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নৈকট্য লাভ করে যখন সে সেজদারত থাকে। সুতরাং তোমরা সেজদার অবস্থায় বেশি বেশি প্রার্থনা কর। (মুসলিম:৭৪৪)
৫-সালাত পাপ মোচনকারী এবং ছোট ছোট গুনাহের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ। রাসূল (সা:) বলেন:—
الصلوات الخمس و الجمعة إلي الجمعة كفارة لما بينهن مالم يغش الكبائر ( رواه مسلم :৩৪৪)
পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, এক জুমা হতে আরেক জুমা মধ্যবর্তী গুনাহ সমূহের প্রায়শ্চিত্ত করে, যতক্ষণ পর্যন্ত সে কবিরা গুনাহে লিপ্ত না হয়। (মুসলিম:৩৪৪)
এবং রাসূল (সা:) গুনাহ প্রায়শ্চিত্তের একটি দৃষ্টান্ত এভাবে বর্ণনা করেন ; তিনি বলেন—
أرأيتم لوأن نهرا بباب أحدكم يغتسل فيه كل يوم خمس مرا ت هل يبقي من درنه ؟ قالوا لا يبقي من درنه شيئ قال فكذالك مثل الصلوات الخمس يمحو الله بهن الخطايا ) رواه مسلم :৪৯৭)
যদি তোমাদের কারো বাড়ির দরজায় একটি পুকুর থাকে আর তাতে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে, তার শরীরে কোন ময়লা আবর্জনা অবশিষ্ট থাকে ? সাহাবিরা উত্তরে বললেন, না। রাসূল সা. বলেন—অনুরূপ ভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ; আল্লাহ তাআলা দৈনিক পাঁচবার সালাত আদায় করা দ্বারা গুনাহ-পাপাচারগুলো ধুয়ে মুছে ফেলেন। (মুসলিম:৪৯৭)
তিনি আরো একটি দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে বলেন—
إن العبد المسلم ليصلي الصلاة يريد بها وجه الله فتهافت عنه ذنوبه كما يتهافت هذا الورق عن هذه الشجرة . رواه أحمد :২০৫৭৬)
মুসলিম বান্দা যখন একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করে তখন তার গুনাহ এমনভাবে ঝরে পড়তে থাকে যেমন এই বৃক্ষের পাতা ঝরে পড়ে। (আহমদ : ২০৫৭৬)
৬-সর্ব প্রথম বান্দার সালাতের হিসাব নেয়া হবে। তাতে হয় সে মুক্তি পাবে অথবা ধ্বংস হবে। নবী করিম (সা:) বলেন :—
أول ما يحاسب به العبد يوم القيامة الصلاة فإن صلحت صلح سائر عمله وإن فسدت فسد سائر عمله . ( رواه الترمذي :২৭৮)
কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার সালাতের হিসাব হবে। যদি সালাত ঠিক হয় তবে তার সকল আমল সঠিক বিবেচিত হবে। আর যদি সালাত বিনষ্ট হয় তবে তার সকল আমলই বিনষ্ট বিবেচিত হবে। (তিরমিযি:২৭৮)
৭-সফলতা ও সম্মানিত স্থান জান্নাতে প্রবেশকে আল্লহ তাআলা সালাতের উপরই স্থাপন করেছেন। তিনি বলেন:—
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ ﴿1﴾ الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ ﴿2﴾. سورة المؤمن :১,২
মোমিনগণ সফলকাম, যারা তাদের সালাতে নম্রতা ও ভীতির সাথে দন্ডায়মান হয়। (সুরা আল-মোমিন : ১-২) অতঃপর বলেন :—
وَالَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ ﴿9﴾ أُولَئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ ﴿10﴾ الَّذِينَ يَرِثُونَ الْفِرْدَوْسَ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ ﴿11﴾
‘‘আর যারা তাদের সালাতে যত্নবান, তারাই জান্নাতের ওয়ারিশ—যারা ফিরদাউসের ওয়ারিশ হবে এবং তথায় তারা চিরকাল থাকবে।’’ (সুরা আল-মোমিন:৯,১০,১১)
মনে রাখতে হবে সালাত যেহেতু আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় আমল আল্লাহর নৈকট্য লাভের ও মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ, সালাতের হেফাজত করলে মুক্তি, অন্যথায় ধ্বংস ইত্যাদি—তাই নি:সন্দেহে বলা যায় যে সালাত একটি মহান কাজ যার গুরুত্ব দেয়া অতীব জরুরি। আর তা বাস্তবায়িত হয় সালাত, তার বিধানাবলী তথা রুকন ও ওয়াজিবসমূহ শিক্ষা, সালাতে একাগ্রতা ও পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যমেই।
যার সালাতে নিম্ন বর্ণিত বিষয় পাওয়া যাবে, সেই একমাত্র উক্ত ফজিলত লাভের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে।
১-শরয়ি পদ্ধতি—যে পদ্ধতিতে রাসূল (সা:) সালাত আদায় করতেন। শর্ত পূর্ণ করা, সালাতের রুকন ও ওয়াজিব যথাযথ ভাবে আদায় করা এবং সুন্নতগুলো গুরুত্বের সাথে আদায় করতে চেষ্টা করা।
২- সালাত খুশু ও একাগ্রতার সাথে আদায় করা। আল্লাহ বলেন:—
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ ﴿1﴾ الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ ﴿2﴾. سورة المؤمن :১,২
‘‘মোমিনগণ সফলকাম, যারা তাদের সালাতে নম্রতা ও ভীতির সাথে দাঁড়ায়।’’ (সুরা আল-মোমিন:১,২)
রাসূল (সা:) বলেন :—
ما من مسلم تحضره صلاة مكتوبة فيحسن وضوءها وخشوعها وركوعها إلا كانت كفارة لما قبلها من الذنوب ما لم تؤت كبيرة وذالك الدهر كله . رواه مسلم :৩৩৫)
‘‘যে কোন মুসলমানের জন্য যখন ফরজ সালাতের সময় উপস্থিত হয়, অত:পর সে সুন্দরভাবে ওজু করে এবং সুন্দরভাবে রুকু সেজদা করে, এতে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়। যদি সে কোন কবিরা গুনাহ না করে, আর এভাবে সর্বদা চলতে থাকে।’’ (মুসলিম:৩৩৫)
৩-সময় মত সালাত আদায় করা—
وقدسئل النبي صلي الله عليه وسلم أي العمل أحب إلى الله ؟ فقال الصلاة علي وقتها قيل ثم أي؟ قال بر الوالدين قيل ثم أي؟ قال الجهاد في سبيل الله ) رواه البخاري :৪৯৬)
রাসূল (সা:)-কে জিজ্ঞাসা করা হল, আল্লাহর নিকট কোন আমল সবচেয়ে বেশি প্রিয় ? তিনি বলেন—সময়-মত সালাত আদায় করা, আবার জিজ্ঞাসা করা হল তার পর কোনটি? উত্তরে তিনি বলনে—মাতা পিতার সাথে সদাচরন করা। আবার জিজ্ঞাসা করা হল তার পর কোনটি? উত্তরে বললেন আল্লাহর পথে জিহাদ করা। (বোখারি:৪৯৬)
৪-মসজিদে জামাতের সাথে সালাত আদায় করা। জামাতে সালাত আদায় ওয়াজিব। (জামাতের বিস্তারিত আলোচনা পরবর্তীতে করা হবে।)
১-শরয়ি পদ্ধতি—যে পদ্ধতিতে রাসূল (সা:) সালাত আদায় করতেন। শর্ত পূর্ণ করা, সালাতের রুকন ও ওয়াজিব যথাযথ ভাবে আদায় করা এবং সুন্নতগুলো গুরুত্বের সাথে আদায় করতে চেষ্টা করা।
২- সালাত খুশু ও একাগ্রতার সাথে আদায় করা। আল্লাহ বলেন:—
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ ﴿1﴾ الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ ﴿2﴾. سورة المؤمن :১,২
‘‘মোমিনগণ সফলকাম, যারা তাদের সালাতে নম্রতা ও ভীতির সাথে দাঁড়ায়।’’ (সুরা আল-মোমিন:১,২)
রাসূল (সা:) বলেন :—
ما من مسلم تحضره صلاة مكتوبة فيحسن وضوءها وخشوعها وركوعها إلا كانت كفارة لما قبلها من الذنوب ما لم تؤت كبيرة وذالك الدهر كله . رواه مسلم :৩৩৫)
‘‘যে কোন মুসলমানের জন্য যখন ফরজ সালাতের সময় উপস্থিত হয়, অত:পর সে সুন্দরভাবে ওজু করে এবং সুন্দরভাবে রুকু সেজদা করে, এতে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়। যদি সে কোন কবিরা গুনাহ না করে, আর এভাবে সর্বদা চলতে থাকে।’’ (মুসলিম:৩৩৫)
৩-সময় মত সালাত আদায় করা—
وقدسئل النبي صلي الله عليه وسلم أي العمل أحب إلى الله ؟ فقال الصلاة علي وقتها قيل ثم أي؟ قال بر الوالدين قيل ثم أي؟ قال الجهاد في سبيل الله ) رواه البخاري :৪৯৬)
রাসূল (সা:)-কে জিজ্ঞাসা করা হল, আল্লাহর নিকট কোন আমল সবচেয়ে বেশি প্রিয় ? তিনি বলেন—সময়-মত সালাত আদায় করা, আবার জিজ্ঞাসা করা হল তার পর কোনটি? উত্তরে তিনি বলনে—মাতা পিতার সাথে সদাচরন করা। আবার জিজ্ঞাসা করা হল তার পর কোনটি? উত্তরে বললেন আল্লাহর পথে জিহাদ করা। (বোখারি:৪৯৬)
৪-মসজিদে জামাতের সাথে সালাত আদায় করা। জামাতে সালাত আদায় ওয়াজিব। (জামাতের বিস্তারিত আলোচনা পরবর্তীতে করা হবে।)
আল্লাহ সালাতকে তার ও বান্দার মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যম সাব্যস্ত করেছেন, আল্লাহ অবশ্যই তার বান্দাদের মুখাপেক্ষী নন। তিনি তার বান্দাদের অবস্থা ও স্বভাব সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখেন। তিনি মহা মর্যাদাবান-পরাক্রমশীল তিনি বান্দার ডাকে সাড়া দেন এবং তাদের দোয়া কবুল করেন।
আল্লাহ মানুষের স্বভাব সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখেন, কারণ তিনি তাদের স্রষ্টা। তিনি বলেন—
أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ ( الملك ১৪ )
‘‘যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কি জানেন না ? তিনি সূক্ষ্মদর্শী সম্যক অবগত।’’ (সুরা মুলুক )
আল্লাহ মানুষের দুর্বলতা, অক্ষমতা, দরিদ্রতা ও অভাব—সবই জানেন। তিনি এও জানেন যে, তাদের এমন এক মহা শক্তি বিদ্যমান থাকা প্রয়োজন, যার নিকট তারা বিপদে আশ্রয় নিবে, তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে, অতপর আল্লহ নিজেই তার বান্দাদের জন্য এর পথ ও প্রবেশদ্বার খুলে দেন—দৈনিক পাঁচ বার নির্দিষ্ট সময়ে বান্দা সে পথ ও প্রবেশদ্বারের ফটক খুলবে এবং এ ছাড়াও যখন ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে।
যেমন বলেন বকর আল মুযানী (রহ:)—
হে বনী আদম-আদম সন্তান ! তোমার মত আর কে হতে পারে ? তোমার মাঝে আর মিহরাবের ও পানির মাঝে কোন বাধা অবশিষ্ট রইল না। যখনই তুমি চাও আল্লাহর দরবারে প্রবেশ করতে পার তোমার ও প্রভুর মাঝে কোন মধ্যস্থতা কারী নেই।
মুসলিম বিন ইয়াছার বলেন, এমন স্বাদ আর কোন স্বাদগ্রহনকারীই উপভোগ করতে পারেনি, যেমনটি উপভোগ করেন ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহর সাথে নির্জনে কথোপকথন করে।
আল্লাহর- স্বীয় বান্দার প্রতি -অপার অনুগ্রহ হল, তিনি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের বিনিময়ে পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের সওয়াব দান করবেন। এ মানুষের জন্য একটি মহান প্রতিদান, যাতে মানুষ এ সালাতকে স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করে এবং একে অধিক মনে না করে এবং তা আদায়ে কোন প্রকার অলসতা না করে।
উলেখিত বিষয়গুলো অনুধাবন করা ছাড়াও সালাত ফরজ হওয়ার হিকমত ও কিছু উপকারিতা জানা অতীব জরুরি। আর তা নিম্নরূপ—
১-আল্লাহর জিকিরের প্রতিষ্ঠা করা। সালাত মানুষকে তার স্রষ্টার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সুতরাং সালাতে অন্তরের উপস্থিতি প্রয়োজন। সালাত শুধু প্রাণহীন নড়াচড়ার নাম নয়
এই সালাত সম্পর্কে রাসূল সা: বলেন :—
( وجعلت قرة عيني في الصلاة ) رواه النسائي :৩৮৭৮)
সালাতেই আমার চোখ জুড়ানো ও শীতলতা নিহিত। (নাসাঈ:৩৮৭৮)
এবং বেলাল রা: তিনি বলেন:
أقم الصلاة وأرحنابها رواه أبوداود :৪৩৩৩)
তুমি সালাতের ব্যবস্থা কর এবং তার মাধ্যমে আমাকে তৃপ্ত কর। (আবু দাউদ:৪৩৩৩)
মূলত প্রকৃত মোমিনের জন্য সালাত এমন, মাছের জন্য পানি যেমন। মাছ পানি ছাড়া বাঁচতেই পারে না। অপর দিকে মুনাফেক দুর্বল ইমানদার সে সালাতে খাঁচায় আবদ্ধ পাখির মত, যে কোন উপায়ে সে তা হতে মুক্তি চায়।
২-সালাত একজন মুসলমানের মনোবল চাঙ্গা করে এবং শক্তি বৃদ্ধি করে। ফলে সে তার জন্য ইহকালীন জীবনের কষ্ট ক্লেশ এবং জাগতিক সকল প্রকার বিপদ আপদ মোকাবিলা করা সহজ হয়।
আল্লাহ বলেন :—
وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى الْخَاشِعِينَ ﴿45﴾ الَّذِينَ يَظُنُّونَ أَنَّهُمْ مُلَاقُو رَبِّهِمْ وَأَنَّهُمْ إِلَيْهِ رَاجِعُونَ ﴿46﴾( البقرة ৪৫.৪৬)
‘‘এবং তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। অবশ্যই তা কঠিন কিন্তু বিনীতগণের জন্যে নয়। যারা ধারণা করে যে নিশ্চয় তারা তাদের প্রতিপালকের সাথে মিলিত হবে এবং তারা তারই দিকে প্রতিগমন করবে।’’ (সুরা বাকারাহ : ৪৫,৪৬)
একারণেই যখন রাসূল সা: কোন বিষয়ে চিন্তিত হতেন তাড়াতাড়ি সালাতে মগ্ন হতেন। সালাতের মাধ্যমে একজন মোমিন সরাসরি তার প্রভুর সান্নিধ্য পৌঁছে। এবং আল্লাহর নিকট বিপদাপদ ও দু:শ্চিন্তার কারণ গুলো তুলে ধরেন। তার রহমতের ফটক উন্মুক্ত বা খুলে দেয়ার জন্য আকুতি পেশ করেন। একজন সত্যিকার মোমিন অবশ্যই সালাতে তৃপ্তি, প্রশান্তি ও সন্তুষ্টি অনুভব করে। সে আল্লাহ আকবর বলে সালাত আরম্ভ করার সময় অনুভব করে নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা সব কিছু হতে বড়। এবং সুরা ফাতেহা পড়ার সময় যখন—(আলহামদুলিল্লাহ) বলে তখন আল্লাহর নেয়ামতের অনুভূতিতে তার মন ভরে যায়। আর যখন সে الرحمن الرحيم ) ( পড়ে তখন সে অনুভব করে যে আমি রহমানের প্রতি কতই না মুখাপেক্ষী। তখন তার মানস্পটে আশা আরো বিশাল আকার ধারণা করে। আর যখন পড়ে ( مالك يوم الدين ) তখন আল্লাহর বড়ত্ব ও ইনসাফের কথা তার অন্তরে ফুটে উঠে আর ভয়ভীতি অনুভূত হয়। অত:পর সে স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে, এবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য, আর তা আদায় করতে হলে প্রয়োজন আল্লাহর সাহায্য। সে প্রার্থনা করে এ বলে ( إياك نعبد وإياك نستعين ) অতঃপর সে স্মরণ করে যে, সে সর্বদা সঠিক পথের সন্ধান পাওয়ার মুখাপেক্ষী। তাই সে আল্লাহর নিকট দোয়া করে - إهدنا الصراط المستقيم
রাসূল সা: জিকির পবিত্রতা ও সালাতের ভূমিকা ও প্রভাবের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন—
يعقد الشيطان على قافية أحدكم إذا هو نام ثلاث عقد يضرب على كل عقدة عليك ليل طويل فارقد فإن إستيقط فذكر الله انحلت عقدة فإن توضأ انحلت عقدة فإن صلى انحلت عقدة فأصبح نشيطا طيب النفس وإلا أصبح خبيث النفس كسلان . ( رواه البخاري :১০৭৪) ٍ
শয়তান ঘুমন্ত মানুষের ঘাড়ের পশ্চাতে তিনটি গিরা দেয়। আর প্রতিটি গিরায় সে বলে—আরে এখনও অনেক রাত বাকি তুমি ঘুমাও। আর যখন লোকটি ঘুম থেকে উঠে আল্লাহর জিকির করে তখন একটি ঘিরা খুলে যায়। আর যখন ওজু করে তখন তার আর একটি গিরা খুলে যায় আর যখন সালাত পড়ে আর একটি গিরা খুলে যায়। ফলে সে সকাল করে আলস্য অকর্মা এবং অপবিত্র মন নিয়ে (বোখারি:১০৭৪ )
এবং কাফেররাও সালাতের পর আত্মতৃপ্তি ও অধিক কর্মোদ্যমী হওয়ার কথা স্বীকার করে। তাদের সালাতের যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে মুসলমানদের সালাতের অবস্থা কেমন হওয়া উচিত ?
৩- সালাত মোমিনের অন্তর ও মনুষত্বকে শক্তিশালী করতে সহযোগিতা করে এবং তাকে কল্যাণকর কাজে উৎসাহ জোগায় ও খারাপ কাজ হতে বিরত থাকার জন্য শক্তি জোগায়। এছাড়া সালাত অন্তরে আল্লাহর ধ্যানকে বদ্ধমূল করে এবং ওয়াক্ত সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি পূরণে সমর্থন দেয় এবং প্রবৃত্তির চাহিদা ও আলস্যকে পরাজিত করে। আল্লাহ বলেন :—
إِنَّ الْإِنْسَانَ خُلِقَ هَلُوعًا ﴿19﴾ إِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ جَزُوعًا ﴿20﴾ وَإِذَا مَسَّهُ الْخَيْرُ مَنُوعًا ﴿21﴾ إِلَّا الْمُصَلِّينَ ﴿22﴾ الَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَاتِهِمْ دَائِمُونَ ﴿23﴾ ( المعارج ১৯-২৩)
মানুষ তো সৃজিত হয়েছে অতিশয় অস্থির চিত্তরূপে। যখন বিপদ তাকে স্পর্শ করে তখন সে হয় হা-হুতাশকারী। আর যখন কল্যাণ তাকে স্পর্শ করে তখন হয় অতি কৃপণ। তবে নামাজিরা ব্যতীত, যারা তাদের সালাতে সদা নিষ্ঠাবান। (সুরা মাআরিজ ১৯-২৩)
আল্লাহ আরো বলেন—
وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ ( العنكبوت ৪৫)
এবং সালাত কায়েম কর। নিশ্চয় সালাত অন্যায় ও অশ্লীল কাজ হতে বিরত রাখে। (সুরা আনকাবুত -৪৫)
আল্লাহ মানুষের স্বভাব সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখেন, কারণ তিনি তাদের স্রষ্টা। তিনি বলেন—
أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ ( الملك ১৪ )
‘‘যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কি জানেন না ? তিনি সূক্ষ্মদর্শী সম্যক অবগত।’’ (সুরা মুলুক )
আল্লাহ মানুষের দুর্বলতা, অক্ষমতা, দরিদ্রতা ও অভাব—সবই জানেন। তিনি এও জানেন যে, তাদের এমন এক মহা শক্তি বিদ্যমান থাকা প্রয়োজন, যার নিকট তারা বিপদে আশ্রয় নিবে, তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে, অতপর আল্লহ নিজেই তার বান্দাদের জন্য এর পথ ও প্রবেশদ্বার খুলে দেন—দৈনিক পাঁচ বার নির্দিষ্ট সময়ে বান্দা সে পথ ও প্রবেশদ্বারের ফটক খুলবে এবং এ ছাড়াও যখন ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে।
যেমন বলেন বকর আল মুযানী (রহ:)—
হে বনী আদম-আদম সন্তান ! তোমার মত আর কে হতে পারে ? তোমার মাঝে আর মিহরাবের ও পানির মাঝে কোন বাধা অবশিষ্ট রইল না। যখনই তুমি চাও আল্লাহর দরবারে প্রবেশ করতে পার তোমার ও প্রভুর মাঝে কোন মধ্যস্থতা কারী নেই।
মুসলিম বিন ইয়াছার বলেন, এমন স্বাদ আর কোন স্বাদগ্রহনকারীই উপভোগ করতে পারেনি, যেমনটি উপভোগ করেন ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহর সাথে নির্জনে কথোপকথন করে।
আল্লাহর- স্বীয় বান্দার প্রতি -অপার অনুগ্রহ হল, তিনি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের বিনিময়ে পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের সওয়াব দান করবেন। এ মানুষের জন্য একটি মহান প্রতিদান, যাতে মানুষ এ সালাতকে স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করে এবং একে অধিক মনে না করে এবং তা আদায়ে কোন প্রকার অলসতা না করে।
উলেখিত বিষয়গুলো অনুধাবন করা ছাড়াও সালাত ফরজ হওয়ার হিকমত ও কিছু উপকারিতা জানা অতীব জরুরি। আর তা নিম্নরূপ—
১-আল্লাহর জিকিরের প্রতিষ্ঠা করা। সালাত মানুষকে তার স্রষ্টার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সুতরাং সালাতে অন্তরের উপস্থিতি প্রয়োজন। সালাত শুধু প্রাণহীন নড়াচড়ার নাম নয়
এই সালাত সম্পর্কে রাসূল সা: বলেন :—
( وجعلت قرة عيني في الصلاة ) رواه النسائي :৩৮৭৮)
সালাতেই আমার চোখ জুড়ানো ও শীতলতা নিহিত। (নাসাঈ:৩৮৭৮)
এবং বেলাল রা: তিনি বলেন:
أقم الصلاة وأرحنابها رواه أبوداود :৪৩৩৩)
তুমি সালাতের ব্যবস্থা কর এবং তার মাধ্যমে আমাকে তৃপ্ত কর। (আবু দাউদ:৪৩৩৩)
মূলত প্রকৃত মোমিনের জন্য সালাত এমন, মাছের জন্য পানি যেমন। মাছ পানি ছাড়া বাঁচতেই পারে না। অপর দিকে মুনাফেক দুর্বল ইমানদার সে সালাতে খাঁচায় আবদ্ধ পাখির মত, যে কোন উপায়ে সে তা হতে মুক্তি চায়।
২-সালাত একজন মুসলমানের মনোবল চাঙ্গা করে এবং শক্তি বৃদ্ধি করে। ফলে সে তার জন্য ইহকালীন জীবনের কষ্ট ক্লেশ এবং জাগতিক সকল প্রকার বিপদ আপদ মোকাবিলা করা সহজ হয়।
আল্লাহ বলেন :—
وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى الْخَاشِعِينَ ﴿45﴾ الَّذِينَ يَظُنُّونَ أَنَّهُمْ مُلَاقُو رَبِّهِمْ وَأَنَّهُمْ إِلَيْهِ رَاجِعُونَ ﴿46﴾( البقرة ৪৫.৪৬)
‘‘এবং তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। অবশ্যই তা কঠিন কিন্তু বিনীতগণের জন্যে নয়। যারা ধারণা করে যে নিশ্চয় তারা তাদের প্রতিপালকের সাথে মিলিত হবে এবং তারা তারই দিকে প্রতিগমন করবে।’’ (সুরা বাকারাহ : ৪৫,৪৬)
একারণেই যখন রাসূল সা: কোন বিষয়ে চিন্তিত হতেন তাড়াতাড়ি সালাতে মগ্ন হতেন। সালাতের মাধ্যমে একজন মোমিন সরাসরি তার প্রভুর সান্নিধ্য পৌঁছে। এবং আল্লাহর নিকট বিপদাপদ ও দু:শ্চিন্তার কারণ গুলো তুলে ধরেন। তার রহমতের ফটক উন্মুক্ত বা খুলে দেয়ার জন্য আকুতি পেশ করেন। একজন সত্যিকার মোমিন অবশ্যই সালাতে তৃপ্তি, প্রশান্তি ও সন্তুষ্টি অনুভব করে। সে আল্লাহ আকবর বলে সালাত আরম্ভ করার সময় অনুভব করে নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা সব কিছু হতে বড়। এবং সুরা ফাতেহা পড়ার সময় যখন—(আলহামদুলিল্লাহ) বলে তখন আল্লাহর নেয়ামতের অনুভূতিতে তার মন ভরে যায়। আর যখন সে الرحمن الرحيم ) ( পড়ে তখন সে অনুভব করে যে আমি রহমানের প্রতি কতই না মুখাপেক্ষী। তখন তার মানস্পটে আশা আরো বিশাল আকার ধারণা করে। আর যখন পড়ে ( مالك يوم الدين ) তখন আল্লাহর বড়ত্ব ও ইনসাফের কথা তার অন্তরে ফুটে উঠে আর ভয়ভীতি অনুভূত হয়। অত:পর সে স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে, এবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য, আর তা আদায় করতে হলে প্রয়োজন আল্লাহর সাহায্য। সে প্রার্থনা করে এ বলে ( إياك نعبد وإياك نستعين ) অতঃপর সে স্মরণ করে যে, সে সর্বদা সঠিক পথের সন্ধান পাওয়ার মুখাপেক্ষী। তাই সে আল্লাহর নিকট দোয়া করে - إهدنا الصراط المستقيم
রাসূল সা: জিকির পবিত্রতা ও সালাতের ভূমিকা ও প্রভাবের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন—
يعقد الشيطان على قافية أحدكم إذا هو نام ثلاث عقد يضرب على كل عقدة عليك ليل طويل فارقد فإن إستيقط فذكر الله انحلت عقدة فإن توضأ انحلت عقدة فإن صلى انحلت عقدة فأصبح نشيطا طيب النفس وإلا أصبح خبيث النفس كسلان . ( رواه البخاري :১০৭৪) ٍ
শয়তান ঘুমন্ত মানুষের ঘাড়ের পশ্চাতে তিনটি গিরা দেয়। আর প্রতিটি গিরায় সে বলে—আরে এখনও অনেক রাত বাকি তুমি ঘুমাও। আর যখন লোকটি ঘুম থেকে উঠে আল্লাহর জিকির করে তখন একটি ঘিরা খুলে যায়। আর যখন ওজু করে তখন তার আর একটি গিরা খুলে যায় আর যখন সালাত পড়ে আর একটি গিরা খুলে যায়। ফলে সে সকাল করে আলস্য অকর্মা এবং অপবিত্র মন নিয়ে (বোখারি:১০৭৪ )
এবং কাফেররাও সালাতের পর আত্মতৃপ্তি ও অধিক কর্মোদ্যমী হওয়ার কথা স্বীকার করে। তাদের সালাতের যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে মুসলমানদের সালাতের অবস্থা কেমন হওয়া উচিত ?
৩- সালাত মোমিনের অন্তর ও মনুষত্বকে শক্তিশালী করতে সহযোগিতা করে এবং তাকে কল্যাণকর কাজে উৎসাহ জোগায় ও খারাপ কাজ হতে বিরত থাকার জন্য শক্তি জোগায়। এছাড়া সালাত অন্তরে আল্লাহর ধ্যানকে বদ্ধমূল করে এবং ওয়াক্ত সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি পূরণে সমর্থন দেয় এবং প্রবৃত্তির চাহিদা ও আলস্যকে পরাজিত করে। আল্লাহ বলেন :—
إِنَّ الْإِنْسَانَ خُلِقَ هَلُوعًا ﴿19﴾ إِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ جَزُوعًا ﴿20﴾ وَإِذَا مَسَّهُ الْخَيْرُ مَنُوعًا ﴿21﴾ إِلَّا الْمُصَلِّينَ ﴿22﴾ الَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَاتِهِمْ دَائِمُونَ ﴿23﴾ ( المعارج ১৯-২৩)
মানুষ তো সৃজিত হয়েছে অতিশয় অস্থির চিত্তরূপে। যখন বিপদ তাকে স্পর্শ করে তখন সে হয় হা-হুতাশকারী। আর যখন কল্যাণ তাকে স্পর্শ করে তখন হয় অতি কৃপণ। তবে নামাজিরা ব্যতীত, যারা তাদের সালাতে সদা নিষ্ঠাবান। (সুরা মাআরিজ ১৯-২৩)
আল্লাহ আরো বলেন—
وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ ( العنكبوت ৪৫)
এবং সালাত কায়েম কর। নিশ্চয় সালাত অন্যায় ও অশ্লীল কাজ হতে বিরত রাখে। (সুরা আনকাবুত -৪৫)
সালাত ত্যাগ করার মত আর কোন বড় গুনাহ হতে পারে না। সালাত ত্যাগ করার মানে হচ্ছে ইসলামের স্তম্ভ-খুঁটি ভেঙে চূর্ণবিচুর্ণ করা। ইসলামের মাঝে সালাত সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা সত্ত্বেও সালাত পরিত্যাগ করা যে কত বড় গুনাহ তা বর্ণনা দেয়ার অবকাশ রাখে না। আমরা কোরানের আয়াতগুলোর প্রতি লক্ষ্য করলে দেখতে পাই যে আল্লাহ সালাত ত্যাগকারীদের নয়, বরং ভুলে সালাত আদায় করেনি এমন ব্যক্তিকে কঠিন হুমকি দিয়েছেন, আর যারা নামাজ ত্যাগকারী ও সালাত নষ্টকারী, তাদের কি পরিণতি হবে, তা বলাই বাহুল্য।,দেখুন আল্লাহ সালাত ভুলে যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে বলেন—
فَوَيْلٌ لِلْمُصَلِّينَ ﴿4﴾ الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ ﴿5﴾ ( الماعون )
‘‘আর পরিতাপ সেই নামাজিদের জন্য, যারা তাদের সালাতে অমনোযোগী।’’ (সুরা মাঊন:৪-৫)
সালাত বিনষ্টকারীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন—
فَخَلَفَ مِنْ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلَاةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا ( مريم :৫৯)
‘‘তাদের পর আসল অপদার্থ পরবর্তীগণ—তারা সালাত নষ্ট করল ও লালসা পরবশ হল ; সুতরাং তারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। (সুরা মারয়াম :৫৯)
অসংখ্য হাদিস দ্বারাও সালাত ত্যাগ কারীর ক্ষতি প্রমাণিত হয় এবং কোন কোন হাদিসে সালাত ত্যাগকারীকে কাফেরও বলা হয়। যেমন, রাসূল সা: এর বাণী, তিনি বলেন:—
بين الرجل و بين الشرك و الكفر ترك الصلاة ) رواه مسلم :১১৬)
ব্যক্তি ও কুফর-শিরকের মাঝে ব্যবধান হল সালাত ত্যাগ করা। (মুসলিম:১১৬ )
তিনি আরো বলেন—
العهد الذي بينناوبينهم الصلاة فمن تركها فقد كفر . ) رواه أحمد :২১৮৫৯)
‘‘আমাদের মাঝে আর অমুসলিমদের মাঝে চুক্তি হল সালাত, যে ব্যক্তি সালাত ছেড়ে দিল সে কাফের হয়ে যাবে।’’ (আহমদ:২১৮৫৯)
রাসূল সা: জামাতে সালাত পড়া হতে বিরত থাকে এমন লোকদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। সমগ্র ওলামায়ে কেরাম ঐক্যমত পোষণ করেন যে, যারা নামাজ ফরজ হওয়াকে অস্বীকার করে তারা কাফের, আর যারা সালাতের প্রতি উপহাস-বিদ্রূপ ও সালাতকে গুরুত্বহীন মনে করে ছেড়ে দেয় তারাও কাফের।
ওলামাগণ বলেন—আর যে ব্যক্তি সালাত ওয়াজিব হওয়াকে স্বীকার করে কিন্তু অলসতা বা অমনোযোগী হওয়ার কারণে সালাত ত্যাগ করে, তখন কর্তৃপক্ষ তাকে তওবা করার জন্য আদেশ দেবে। যদি সে তাওবা করে তাকে ক্ষমা করা হবে আর যদি তওবা না করে এবং সালাত ত্যাগের উপর অটল থাকে—তাকে হত্যা করার ব্যাপারেও সকলে ঐক্যমত পোষণ করেন।
তার এ হত্যা করাটা কি হদ হিসেবে নাকি মুরতাদ বা কাফের হিসাবে ?—এ বিষয়ে ওলামাদের মাঝে মত পার্থক্য আছে। যারা বলেন হদ হিসাবে হত্যা করা হবে তাদের মতানুসারে তার জানাজা পড়া হবে, মুসলমানদের কবরে তাকে দাফন করা হবে, এবং মুসলমান উত্তর সুরীরা তার সম্পত্তিতে মীরাছ পাবে। আর যেসব ওলামা বলেন—তাকে কাফের হিসেবে হত্যা করা হবে, তাদের মতে তার উপর জানাজা পড়া হবে না, তাকে মুসলমানদের কবরে দাফন করা হবে না এবং তার সম্পত্তি মুসলমানদের বাইতুল মালে ‘মালে ফাই’ বলে গণ্য হবে তার পরিবার পরিজন কেউ ওয়ারিশ হতে পারবে না।
সালাত ত্যাগের পরিণতির বিষয়ে বিশেষ ভাবে চিন্তা করে দেখুন। সালাত ত্যাগী অবশ্যই প্রদীপ্ত আগুন তথা জাহান্নামের সন্নিকটেই অবস্থান করছে। তাই আমাদের উচিত খুব তাড়াতাড়ি তওবা করা এবং দ্রুত সালাত প্রতিষ্ঠা করা এবং সালাতে যত্নবান হওয়া।
فَوَيْلٌ لِلْمُصَلِّينَ ﴿4﴾ الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ ﴿5﴾ ( الماعون )
‘‘আর পরিতাপ সেই নামাজিদের জন্য, যারা তাদের সালাতে অমনোযোগী।’’ (সুরা মাঊন:৪-৫)
সালাত বিনষ্টকারীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন—
فَخَلَفَ مِنْ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلَاةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا ( مريم :৫৯)
‘‘তাদের পর আসল অপদার্থ পরবর্তীগণ—তারা সালাত নষ্ট করল ও লালসা পরবশ হল ; সুতরাং তারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। (সুরা মারয়াম :৫৯)
অসংখ্য হাদিস দ্বারাও সালাত ত্যাগ কারীর ক্ষতি প্রমাণিত হয় এবং কোন কোন হাদিসে সালাত ত্যাগকারীকে কাফেরও বলা হয়। যেমন, রাসূল সা: এর বাণী, তিনি বলেন:—
بين الرجل و بين الشرك و الكفر ترك الصلاة ) رواه مسلم :১১৬)
ব্যক্তি ও কুফর-শিরকের মাঝে ব্যবধান হল সালাত ত্যাগ করা। (মুসলিম:১১৬ )
তিনি আরো বলেন—
العهد الذي بينناوبينهم الصلاة فمن تركها فقد كفر . ) رواه أحمد :২১৮৫৯)
‘‘আমাদের মাঝে আর অমুসলিমদের মাঝে চুক্তি হল সালাত, যে ব্যক্তি সালাত ছেড়ে দিল সে কাফের হয়ে যাবে।’’ (আহমদ:২১৮৫৯)
রাসূল সা: জামাতে সালাত পড়া হতে বিরত থাকে এমন লোকদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। সমগ্র ওলামায়ে কেরাম ঐক্যমত পোষণ করেন যে, যারা নামাজ ফরজ হওয়াকে অস্বীকার করে তারা কাফের, আর যারা সালাতের প্রতি উপহাস-বিদ্রূপ ও সালাতকে গুরুত্বহীন মনে করে ছেড়ে দেয় তারাও কাফের।
ওলামাগণ বলেন—আর যে ব্যক্তি সালাত ওয়াজিব হওয়াকে স্বীকার করে কিন্তু অলসতা বা অমনোযোগী হওয়ার কারণে সালাত ত্যাগ করে, তখন কর্তৃপক্ষ তাকে তওবা করার জন্য আদেশ দেবে। যদি সে তাওবা করে তাকে ক্ষমা করা হবে আর যদি তওবা না করে এবং সালাত ত্যাগের উপর অটল থাকে—তাকে হত্যা করার ব্যাপারেও সকলে ঐক্যমত পোষণ করেন।
তার এ হত্যা করাটা কি হদ হিসেবে নাকি মুরতাদ বা কাফের হিসাবে ?—এ বিষয়ে ওলামাদের মাঝে মত পার্থক্য আছে। যারা বলেন হদ হিসাবে হত্যা করা হবে তাদের মতানুসারে তার জানাজা পড়া হবে, মুসলমানদের কবরে তাকে দাফন করা হবে, এবং মুসলমান উত্তর সুরীরা তার সম্পত্তিতে মীরাছ পাবে। আর যেসব ওলামা বলেন—তাকে কাফের হিসেবে হত্যা করা হবে, তাদের মতে তার উপর জানাজা পড়া হবে না, তাকে মুসলমানদের কবরে দাফন করা হবে না এবং তার সম্পত্তি মুসলমানদের বাইতুল মালে ‘মালে ফাই’ বলে গণ্য হবে তার পরিবার পরিজন কেউ ওয়ারিশ হতে পারবে না।
সালাত ত্যাগের পরিণতির বিষয়ে বিশেষ ভাবে চিন্তা করে দেখুন। সালাত ত্যাগী অবশ্যই প্রদীপ্ত আগুন তথা জাহান্নামের সন্নিকটেই অবস্থান করছে। তাই আমাদের উচিত খুব তাড়াতাড়ি তওবা করা এবং দ্রুত সালাত প্রতিষ্ঠা করা এবং সালাতে যত্নবান হওয়া।
সালাত আল্লাহ তাআলার মহান আদেশ এবং ঈমানের পরই সালাতের গুরুত্ব। আর সালাত মহা মর্যাদার অধিকারী এবং সালাত ত্যাগকারীর উপর অনেক বিধানই কার্যকর হয়। এ কারণেই আল্লাহ তার বান্দাদেরকে জামাতের সাথে মসজিদে সালাত আদায় করার নির্দেশ প্রদান করেন। সুতরাং, আমরা নিশ্চিন্তে বলতে পারি যে সালাত জামাতের সাথে আদায় করা ওয়াজিব। জামাতে সালাত আদায় করা ওয়াজিব হওয়ার উপর একাধিক প্রমাণ বিদ্যমান আছে।
১-আল্লাহ রুকুকারীদের সাথে রুকু করার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন:—
وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآَتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ ( سورة البقرة :৪৩)
‘‘তোমরা সালাত কায়েম কর, জাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু কর।’’
অর্থাৎ- সালাত আদায়কারীর সাথে সালাত আদায় কর।
২- আল্লাহ তাআলা ভীষণ ভয়ের সময় জামাতে সালাত পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তার নবীকে বলেন:—
وَإِذَا كُنْتَ فِيهِمْ فَأَقَمْتَ لَهُمُ الصَّلَاةَ فَلْتَقُمْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ مَعَكَ وَلْيَأْخُذُوا أَسْلِحَتَهُمْ فَإِذَا سَجَدُوا فَلْيَكُونُوا مِنْ وَرَائِكُمْ وَلْتَأْتِ طَائِفَةٌ أُخْرَى لَمْ يُصَلُّوا فَلْيُصَلُّوا مَعَكَ وَلْيَأْخُذُوا حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ . . . ( النساء :১০২) .
এবং যখন তুমি তাদের মাঝে থাক, তখন তাদের জন্য নামাজ প্রতিষ্ঠিত কর, যেন তাদের একদল তোমার সাথে দন্ডায়মান হয় এবং স্ব-স্ব অস্ত্র গ্রহণ করে: অতঃপর যখন সেজদা সম্পন্ন করে তখন যেন তারা তোমার পশ্চাদ্বর্তী হয় এবং অন্যদল, যারা নামাজ পড়েনি, তারা যেন অগ্রসর হয়ে তোমার সাথে নামাজ পড়ে এবং স্ব-স্ব সতর্কতা এবং অস্ত্র গ্রহণ করে। (সুরা নিসা:১০২)
উল্লেখিত আয়াতটি صلاة الخوف সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। এ বিষয়ে ইজমা বিদ্যমান আছে।
আর এ কথা নি:সন্দেহে বলা যায় যে, ভয়ের সময় যদি জামাত ওয়াজিব হয়, তবে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যের সময় ওয়াজিব হওয়া অধিক যুক্তিযুক্ত।
৩-নবী করিম সা: জামাতে সালাত আদয়ের নির্দেশ দেন তিনি বলেন—
إذا كانوا ثلاثة فليؤمهم أحدهم واحقهم بالإمامة أقرأهم ) رواه مسلم : ১০৭৭)
‘‘যখন তারা তিন জন হবে তখন তাদের একজন ইমামতি করবে আর তাদের মাঝে যিনি ভাল পড়তে পারবে সেই ইমাম হওয়ার জন্য অধিক বিবেচ্য।’’ (মুসলিম:১০৭৭ )
৪- অন্ধ সাহাবি আব্দুলহ ইবনে উম্মে মাকতুম রা. জামাতে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকার অনুমতি চাইলে রাসূল সা: তাকে অনুমতি দেননি। তিনি রাসূলের দরবারে এসে বলেন:—
يا رسول الله إني رجل ضرير البصر شاسع الدار ولي قائد لا يلائمني فهل لي رخصة أصلي في بيتي قال هل تسمع النداء قال نعم قال لا أجد لك رخصة . ( رواه أبوداود :৪৬৫)
ইয়া রাসুলুল্লাহ ! আমি একজন অন্ধ মানুষ, আমার বাড়িও অনেক দূরে এবং আমার একজন পথচালক আছে সে আমার পছন্দনীয় নয়। আমার জন্য ঘরে সালাত পড়ার অনুমতি আছে কি ? রাসূল সা: বললেন তুমি কি আজান শুন ? বললেন হ্যাঁ। তার পর রাসূল সা. বললেন, তাহলে আমি তোমার জন্য জামাতে অনুপস্থিত থাকার কোন অনুমতি দিচ্ছি না। (আবুদাউদ:৪৬৫)
অন্যান্য বর্ণনায় বর্ণিত আছে তার বাড়ি ও মসজিদের মাঝে খেজুরের বাগান ও অন্যান্য গাছের বাগান বিদ্যমান। শহরটিতে অধিক হারে হিংস্র পশু, কীট, পতঙ্গ বসবাস করত। তিবরানীর বর্ণনায় এসেছে—
إنه قال له ( ما أجد لك رخصة ولو يعلم هذا المتخلف عن الصلاة في الجماعة ما لهذا الماشي إليهالأتوها ولو حبوا ( الطبراني )
তিনি বলেন আমি তোমার জন্য অনুমতি দিতে পারছি না। জামাতে সালাত পড়া হতে বিরত ব্যক্তি যদি বুঝতে পারতো জামাতে সালাত পড়ার কি গুরুত্ব, তাহলে সে নিতম্ব, দুই হাত ও দুই পায়ে চড়ে হলেও সালাতে উপস্থিত হত। (তিবরাণী)
৫-কোন প্রকার অপারগতা ছাড়া জামাত হতে বিরত থাকলে তার সালাতই হয় না। রাসূল সা: বলেন-
من سمع النداء فلم يأته فلا صلاة له إلا من عذر )) رواه ابن ماجة :৭৮৫)
যে ব্যক্তি আজান শ্রবণ করার পর সালাতে উপস্থিত হয় না তার সালাতই হয় না। (ইবনে মাজাহ:৭৮৫ )
৬-জামাতে সালাত হতে বিরত থাকা মুনাফেকের নিদর্শন। রাসূল সা: বলেন—
ليس صلاة أثقل علي المنا فقين من الفجر والعشاء ولو يعلمون ما فيهما لأتوهما ولو حبوا ( رواه البخاري :৫৮০)
মুনাফেকের জন্য ফজর আর এশার সালাত যত কষ্টকর অন্য আর কোন সালাত অনুরূপ কষ্টকর নয়, তারা যদি এ দুটি সালাতের সওয়াব সম্পর্কে জানতো, তাহলে নিতম্বে ভর করে হলেও এ দুই সালাতে উপস্থিত হত। (বোখারি:৫৮০)
৭-জামাত বাদ দেয়া বান্দার উপর শয়তানের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার কারণ। রাসূল সা: বলেন:
مامن ثلاثة في قرية ولابدو لا تقام فيهم الصلاة إلا قد استحوذ عليهم الشيطان فعليك بالجماعة فإنما يأكل الذئب من الغنم القاصية ( رواه أبوداود :৮৩৮)
‘‘কোন গ্রাম বা উপত্যকায় তিন জন লোক বিদ্যমান, অথচ সেখানে জামাতে সালাত হয় না তাদের উপর শয়তান প্রাধান্য বিস্তার করবে। সুতরাং, তুমি জামাতকে জরুরি মনে কর। কারণ, বাঘ সাধারণত পাল হতে বিচ্ছিন্ন বকরিটাকেই আক্রমণ করে।’’ (আবু দাউদ:৮৩৮)
৮-জামাত ত্যাগ করা আল্লাহর ক্রোধের কারণ হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
لينتهين أقوام عن ودعهم الجماعة أو ليختمن الله على قلوبهم ثم ليكونن من الغافلين . ( رواه ابن ماجة :৭৮২ )
সম্প্রদায়ের লোকেরা হয় জামাত ত্যাগ করা হতে বিরত থাকবে, অন্যথায় আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেবেন অত:পর তারা গাফেল লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (ইবনে মাজাহ:৭৮৬)
৭- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জামাতে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত লোকদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছা করেছেন। তিনি বলেন :—
لقد هممتت أن أمر المؤذن فيقيم ثم أمر رجلا يؤم الناس ثم أخذ شعلا من النار فأحرق على من لا يخرج إلى الصلاة بعد . ( رواه البخاري :৬১৭ )
‘‘আমার ইচ্ছা হয় মুয়াজ্জিনকে নির্দেশ দিই সে সালাতের একামত বলে আর একজনকে আদেশ করি সে সালাত পড়াবে অত:পর একটি অগ্নিকুন্ড নিয়ে বের হই এবং যারা সালাতে উপস্থিত হয়নি তাদের বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দিই।’’ (বোখারি:৬১৭)
হাদিসে রাসূল ঐ সকল লোকদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছা করেছেন, যারা মসজিদে আসেনি, তারা ঘরে সালাত পড়ুক, অথবা নাই পড়ুক।
জামাতে সালাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য এটাই সব চেয়ে বড় দলিল। আর যদি জামাত মোস্তাহাব হত তাহলে এ ধরনের পুড়িয়ে দেয়ার মত সংকল্প করা কোনভাবেই সম্ভব হত না। ছলফে ছালেহীন জামাতের সালাতকে সীমাহীন গুরুত্ব দেন। এমনকি জামাত তরক করাকে মুনাফেকের নিদর্শন হিসাবে গণ্য করেন।
আব্দুহ বিন মাসঊদ (রা:) বলেন—
من سره أن يلقى الله غدا مسلما فليحافظ علي هؤلاء الصلوات حيث ينادي بهن فإن الله شرع لكم سنن الهدى ولو أنكم صليتم في بيوتكم كما يصلي هذا المتخلف في بيته لتركتم سنة نبيكم ولوتركتم سنة نبيكم لضللتم .... ثم يقول و لقدرأيتنا وما يتخلف عنها إلا منافق معلوم النفاق و لقد كان الرجل يؤتي به يهادي بين الرجلين حتي يقام في الصف . ) رواه مسلم :১০৪৬)
যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে সে আগামী দিন আল্লাহর সাথে একজন মুসলমান হিসাবে সাক্ষাৎ করবে, সে যেন সালাত সংরক্ষণ করে, যখন তার প্রতি আহবান করা হয়। কারণ, আল্লাহ তোমাদের নবীর জন্য হেদায়াতের পদ্ধতি চালু করেছেন, আর সালাত তার অন্যতম, যদি তোমরা পশ্চাৎগামী লোকটির ন্যায় ঘরে সালাত আদায় কর, তবে তোমরা তোমাদের নবীর আদর্শকে ত্যাগ করলে। আর যদি তোমরা তোমাদের নবীর আদর্শকে ছেড়ে দাও, তাহলে তোমরা পথভ্রষ্ট হবে। অত:পর তিনি বলেন, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যুগে দেখেছি নামাজে উপস্থিত হওয়া থেকে একমাত্র পরিচিত মুনাফেক ছাড়া আর কেউ বিরত থাকতো না, এমনকি কোন কোন লোককে দেখা যেত দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর করে তাকে নিয়ে আসা হত তারপর তাকে সালাতের কাতারে দাঁড় করানো হত। (মুসলিম:১০৪৬)
এবং ইবনে ওমর রা. বলেন :—
كنا إذا فقدنا الرجل في صلاة العشاء و صلاة الفجر أسأنا به الظن . رواه ابن أبي شيبة
আমরা যখন দেখতাম কোন লোক ফজর ও এশার নামাজে অনুপস্থিত তখন তার প্রতি আমরা খারাপ ধারণা করতাম। (ইবনু আবীশাইবা )
ইব্রাহীম তাইমী (রহ:) বলেন:—
যখন দেখবে কোন ব্যক্তি নামাজে প্রথম তাকবীরকে গুরুত্ব দেয় না তুমি তার থেকে হাত ধুয়ে নাও। অর্থাৎ তাকে এড়িয়ে যাও।
সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাহ বলেন:—
সালাতের সুন্নত হল সালাতে ইকামত দেয়ার পূর্বেই উপস্থিত হওয়া।
আদি বিন হাতিম (রা:) বলেন:—
ইসলাম গ্রহণ করার পর যখনই সালাতের ইকামত হত, আমি ওজু অবস্থায় থাকতাম। ইব্রাহীম বিন মাইমুন—তিনি রঙের কাজ করতেন,—তার অভ্যাস ছিল, যদি তিনি তুলি উঠানো অবস্থায় আজান শুনতেন তুলিটি ফিরিয়ে নিতেন না বরং তা ঐ অবস্থায় নিক্ষেপ করে দিতেন এবং সালাতে দাঁড়াতেন।
বশার বিন হাসান, পঞ্চাশ বৎসর পর্যন্ত প্রথম কাতার ছাড়েননি এমন কি তার নামও ছফ্ফী (কাতারবন্দী) হয়ে যায়।
সুলাইমান বিন মাহরান সত্তুর বৎসর জীবিত থাকেন কিন্তু একবার ও তার তাকবীরে উলা-প্রথম তাকবীর -ছুটেনি।
অনুরূপ আমাশ (র:) সাইদ বিন আব্দুল আজীজ (রহ:) যখন জামাতে সালাত ছুটে যেত কান্নাকাটি করতেন।
ইবনে ওমর রহ:-এর যখন এশার সালাতের জামাত ছুটে যেত, তিনি অবশিষ্ট রাত ঘুমাতেন না, সারা রাত এবাদত বন্দেগিতে কাটিয়ে দিতেন।
সাহাবিরা যে কোন ধরনের প্রতিকুল অবস্থা-অসুস্থতা, ভয়—ইত্যাদি সত্ত্বেও জামাতে উপস্থিত হওয়ার জন্য আকাংখা করতেন।
আবু আব্দুর রহমান আসসুলামী মসজিদে রওয়ানা দিলে পথ মাঝে তার মৃত্যু উপস্থিত হলে লোকেরা তাকে বাড়ি নিয়ে আসতে চাইলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন, যাতে তার রূহ ক্ববজ করার সময় তাকে নামাজের প্রতীক্ষা অবস্থায় পাওয়া যায়।
সাহাবিরা তাদের সন্তানদেরও নামাজের জামাতের জন্য উৎসাহ দিতেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেন এবং অলসতার দরুন তাদের শাস্তি দিতেন।
খুলাফায়ে রাশেদীনও জামাতের বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। যারা জামাতে উপস্থিত হতেন না তাদেরকে হুমকি দিতেন। তৎকালে অক্ষম প্রতিবন্দিদের জন্য একজন লোক নিয়োগ করা হত যিনি জামাতে উপস্থিত হতে তাদের সাহায্য করতেন। যেমন ওমর রা: হতে বর্ণিত, তিনি একজন অন্ধকে সালাতে নিয়ে আসার জন্য একজন গোলাম নিয়োগ করেন।
وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآَتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ ( سورة البقرة :৪৩)
‘‘তোমরা সালাত কায়েম কর, জাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু কর।’’
অর্থাৎ- সালাত আদায়কারীর সাথে সালাত আদায় কর।
২- আল্লাহ তাআলা ভীষণ ভয়ের সময় জামাতে সালাত পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তার নবীকে বলেন:—
وَإِذَا كُنْتَ فِيهِمْ فَأَقَمْتَ لَهُمُ الصَّلَاةَ فَلْتَقُمْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ مَعَكَ وَلْيَأْخُذُوا أَسْلِحَتَهُمْ فَإِذَا سَجَدُوا فَلْيَكُونُوا مِنْ وَرَائِكُمْ وَلْتَأْتِ طَائِفَةٌ أُخْرَى لَمْ يُصَلُّوا فَلْيُصَلُّوا مَعَكَ وَلْيَأْخُذُوا حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ . . . ( النساء :১০২) .
এবং যখন তুমি তাদের মাঝে থাক, তখন তাদের জন্য নামাজ প্রতিষ্ঠিত কর, যেন তাদের একদল তোমার সাথে দন্ডায়মান হয় এবং স্ব-স্ব অস্ত্র গ্রহণ করে: অতঃপর যখন সেজদা সম্পন্ন করে তখন যেন তারা তোমার পশ্চাদ্বর্তী হয় এবং অন্যদল, যারা নামাজ পড়েনি, তারা যেন অগ্রসর হয়ে তোমার সাথে নামাজ পড়ে এবং স্ব-স্ব সতর্কতা এবং অস্ত্র গ্রহণ করে। (সুরা নিসা:১০২)
উল্লেখিত আয়াতটি صلاة الخوف সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। এ বিষয়ে ইজমা বিদ্যমান আছে।
আর এ কথা নি:সন্দেহে বলা যায় যে, ভয়ের সময় যদি জামাত ওয়াজিব হয়, তবে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যের সময় ওয়াজিব হওয়া অধিক যুক্তিযুক্ত।
৩-নবী করিম সা: জামাতে সালাত আদয়ের নির্দেশ দেন তিনি বলেন—
إذا كانوا ثلاثة فليؤمهم أحدهم واحقهم بالإمامة أقرأهم ) رواه مسلم : ১০৭৭)
‘‘যখন তারা তিন জন হবে তখন তাদের একজন ইমামতি করবে আর তাদের মাঝে যিনি ভাল পড়তে পারবে সেই ইমাম হওয়ার জন্য অধিক বিবেচ্য।’’ (মুসলিম:১০৭৭ )
৪- অন্ধ সাহাবি আব্দুলহ ইবনে উম্মে মাকতুম রা. জামাতে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকার অনুমতি চাইলে রাসূল সা: তাকে অনুমতি দেননি। তিনি রাসূলের দরবারে এসে বলেন:—
يا رسول الله إني رجل ضرير البصر شاسع الدار ولي قائد لا يلائمني فهل لي رخصة أصلي في بيتي قال هل تسمع النداء قال نعم قال لا أجد لك رخصة . ( رواه أبوداود :৪৬৫)
ইয়া রাসুলুল্লাহ ! আমি একজন অন্ধ মানুষ, আমার বাড়িও অনেক দূরে এবং আমার একজন পথচালক আছে সে আমার পছন্দনীয় নয়। আমার জন্য ঘরে সালাত পড়ার অনুমতি আছে কি ? রাসূল সা: বললেন তুমি কি আজান শুন ? বললেন হ্যাঁ। তার পর রাসূল সা. বললেন, তাহলে আমি তোমার জন্য জামাতে অনুপস্থিত থাকার কোন অনুমতি দিচ্ছি না। (আবুদাউদ:৪৬৫)
অন্যান্য বর্ণনায় বর্ণিত আছে তার বাড়ি ও মসজিদের মাঝে খেজুরের বাগান ও অন্যান্য গাছের বাগান বিদ্যমান। শহরটিতে অধিক হারে হিংস্র পশু, কীট, পতঙ্গ বসবাস করত। তিবরানীর বর্ণনায় এসেছে—
إنه قال له ( ما أجد لك رخصة ولو يعلم هذا المتخلف عن الصلاة في الجماعة ما لهذا الماشي إليهالأتوها ولو حبوا ( الطبراني )
তিনি বলেন আমি তোমার জন্য অনুমতি দিতে পারছি না। জামাতে সালাত পড়া হতে বিরত ব্যক্তি যদি বুঝতে পারতো জামাতে সালাত পড়ার কি গুরুত্ব, তাহলে সে নিতম্ব, দুই হাত ও দুই পায়ে চড়ে হলেও সালাতে উপস্থিত হত। (তিবরাণী)
৫-কোন প্রকার অপারগতা ছাড়া জামাত হতে বিরত থাকলে তার সালাতই হয় না। রাসূল সা: বলেন-
من سمع النداء فلم يأته فلا صلاة له إلا من عذر )) رواه ابن ماجة :৭৮৫)
যে ব্যক্তি আজান শ্রবণ করার পর সালাতে উপস্থিত হয় না তার সালাতই হয় না। (ইবনে মাজাহ:৭৮৫ )
৬-জামাতে সালাত হতে বিরত থাকা মুনাফেকের নিদর্শন। রাসূল সা: বলেন—
ليس صلاة أثقل علي المنا فقين من الفجر والعشاء ولو يعلمون ما فيهما لأتوهما ولو حبوا ( رواه البخاري :৫৮০)
মুনাফেকের জন্য ফজর আর এশার সালাত যত কষ্টকর অন্য আর কোন সালাত অনুরূপ কষ্টকর নয়, তারা যদি এ দুটি সালাতের সওয়াব সম্পর্কে জানতো, তাহলে নিতম্বে ভর করে হলেও এ দুই সালাতে উপস্থিত হত। (বোখারি:৫৮০)
৭-জামাত বাদ দেয়া বান্দার উপর শয়তানের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার কারণ। রাসূল সা: বলেন:
مامن ثلاثة في قرية ولابدو لا تقام فيهم الصلاة إلا قد استحوذ عليهم الشيطان فعليك بالجماعة فإنما يأكل الذئب من الغنم القاصية ( رواه أبوداود :৮৩৮)
‘‘কোন গ্রাম বা উপত্যকায় তিন জন লোক বিদ্যমান, অথচ সেখানে জামাতে সালাত হয় না তাদের উপর শয়তান প্রাধান্য বিস্তার করবে। সুতরাং, তুমি জামাতকে জরুরি মনে কর। কারণ, বাঘ সাধারণত পাল হতে বিচ্ছিন্ন বকরিটাকেই আক্রমণ করে।’’ (আবু দাউদ:৮৩৮)
৮-জামাত ত্যাগ করা আল্লাহর ক্রোধের কারণ হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
لينتهين أقوام عن ودعهم الجماعة أو ليختمن الله على قلوبهم ثم ليكونن من الغافلين . ( رواه ابن ماجة :৭৮২ )
সম্প্রদায়ের লোকেরা হয় জামাত ত্যাগ করা হতে বিরত থাকবে, অন্যথায় আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেবেন অত:পর তারা গাফেল লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (ইবনে মাজাহ:৭৮৬)
৭- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জামাতে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত লোকদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছা করেছেন। তিনি বলেন :—
لقد هممتت أن أمر المؤذن فيقيم ثم أمر رجلا يؤم الناس ثم أخذ شعلا من النار فأحرق على من لا يخرج إلى الصلاة بعد . ( رواه البخاري :৬১৭ )
‘‘আমার ইচ্ছা হয় মুয়াজ্জিনকে নির্দেশ দিই সে সালাতের একামত বলে আর একজনকে আদেশ করি সে সালাত পড়াবে অত:পর একটি অগ্নিকুন্ড নিয়ে বের হই এবং যারা সালাতে উপস্থিত হয়নি তাদের বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দিই।’’ (বোখারি:৬১৭)
হাদিসে রাসূল ঐ সকল লোকদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছা করেছেন, যারা মসজিদে আসেনি, তারা ঘরে সালাত পড়ুক, অথবা নাই পড়ুক।
জামাতে সালাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য এটাই সব চেয়ে বড় দলিল। আর যদি জামাত মোস্তাহাব হত তাহলে এ ধরনের পুড়িয়ে দেয়ার মত সংকল্প করা কোনভাবেই সম্ভব হত না। ছলফে ছালেহীন জামাতের সালাতকে সীমাহীন গুরুত্ব দেন। এমনকি জামাত তরক করাকে মুনাফেকের নিদর্শন হিসাবে গণ্য করেন।
আব্দুহ বিন মাসঊদ (রা:) বলেন—
من سره أن يلقى الله غدا مسلما فليحافظ علي هؤلاء الصلوات حيث ينادي بهن فإن الله شرع لكم سنن الهدى ولو أنكم صليتم في بيوتكم كما يصلي هذا المتخلف في بيته لتركتم سنة نبيكم ولوتركتم سنة نبيكم لضللتم .... ثم يقول و لقدرأيتنا وما يتخلف عنها إلا منافق معلوم النفاق و لقد كان الرجل يؤتي به يهادي بين الرجلين حتي يقام في الصف . ) رواه مسلم :১০৪৬)
যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে সে আগামী দিন আল্লাহর সাথে একজন মুসলমান হিসাবে সাক্ষাৎ করবে, সে যেন সালাত সংরক্ষণ করে, যখন তার প্রতি আহবান করা হয়। কারণ, আল্লাহ তোমাদের নবীর জন্য হেদায়াতের পদ্ধতি চালু করেছেন, আর সালাত তার অন্যতম, যদি তোমরা পশ্চাৎগামী লোকটির ন্যায় ঘরে সালাত আদায় কর, তবে তোমরা তোমাদের নবীর আদর্শকে ত্যাগ করলে। আর যদি তোমরা তোমাদের নবীর আদর্শকে ছেড়ে দাও, তাহলে তোমরা পথভ্রষ্ট হবে। অত:পর তিনি বলেন, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যুগে দেখেছি নামাজে উপস্থিত হওয়া থেকে একমাত্র পরিচিত মুনাফেক ছাড়া আর কেউ বিরত থাকতো না, এমনকি কোন কোন লোককে দেখা যেত দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর করে তাকে নিয়ে আসা হত তারপর তাকে সালাতের কাতারে দাঁড় করানো হত। (মুসলিম:১০৪৬)
এবং ইবনে ওমর রা. বলেন :—
كنا إذا فقدنا الرجل في صلاة العشاء و صلاة الفجر أسأنا به الظن . رواه ابن أبي شيبة
আমরা যখন দেখতাম কোন লোক ফজর ও এশার নামাজে অনুপস্থিত তখন তার প্রতি আমরা খারাপ ধারণা করতাম। (ইবনু আবীশাইবা )
ইব্রাহীম তাইমী (রহ:) বলেন:—
যখন দেখবে কোন ব্যক্তি নামাজে প্রথম তাকবীরকে গুরুত্ব দেয় না তুমি তার থেকে হাত ধুয়ে নাও। অর্থাৎ তাকে এড়িয়ে যাও।
সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাহ বলেন:—
সালাতের সুন্নত হল সালাতে ইকামত দেয়ার পূর্বেই উপস্থিত হওয়া।
আদি বিন হাতিম (রা:) বলেন:—
ইসলাম গ্রহণ করার পর যখনই সালাতের ইকামত হত, আমি ওজু অবস্থায় থাকতাম। ইব্রাহীম বিন মাইমুন—তিনি রঙের কাজ করতেন,—তার অভ্যাস ছিল, যদি তিনি তুলি উঠানো অবস্থায় আজান শুনতেন তুলিটি ফিরিয়ে নিতেন না বরং তা ঐ অবস্থায় নিক্ষেপ করে দিতেন এবং সালাতে দাঁড়াতেন।
বশার বিন হাসান, পঞ্চাশ বৎসর পর্যন্ত প্রথম কাতার ছাড়েননি এমন কি তার নামও ছফ্ফী (কাতারবন্দী) হয়ে যায়।
সুলাইমান বিন মাহরান সত্তুর বৎসর জীবিত থাকেন কিন্তু একবার ও তার তাকবীরে উলা-প্রথম তাকবীর -ছুটেনি।
অনুরূপ আমাশ (র:) সাইদ বিন আব্দুল আজীজ (রহ:) যখন জামাতে সালাত ছুটে যেত কান্নাকাটি করতেন।
ইবনে ওমর রহ:-এর যখন এশার সালাতের জামাত ছুটে যেত, তিনি অবশিষ্ট রাত ঘুমাতেন না, সারা রাত এবাদত বন্দেগিতে কাটিয়ে দিতেন।
সাহাবিরা যে কোন ধরনের প্রতিকুল অবস্থা-অসুস্থতা, ভয়—ইত্যাদি সত্ত্বেও জামাতে উপস্থিত হওয়ার জন্য আকাংখা করতেন।
আবু আব্দুর রহমান আসসুলামী মসজিদে রওয়ানা দিলে পথ মাঝে তার মৃত্যু উপস্থিত হলে লোকেরা তাকে বাড়ি নিয়ে আসতে চাইলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন, যাতে তার রূহ ক্ববজ করার সময় তাকে নামাজের প্রতীক্ষা অবস্থায় পাওয়া যায়।
সাহাবিরা তাদের সন্তানদেরও নামাজের জামাতের জন্য উৎসাহ দিতেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেন এবং অলসতার দরুন তাদের শাস্তি দিতেন।
খুলাফায়ে রাশেদীনও জামাতের বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। যারা জামাতে উপস্থিত হতেন না তাদেরকে হুমকি দিতেন। তৎকালে অক্ষম প্রতিবন্দিদের জন্য একজন লোক নিয়োগ করা হত যিনি জামাতে উপস্থিত হতে তাদের সাহায্য করতেন। যেমন ওমর রা: হতে বর্ণিত, তিনি একজন অন্ধকে সালাতে নিয়ে আসার জন্য একজন গোলাম নিয়োগ করেন।
জামাতে সালাত আদায় কারীদের জন্য মহান আল্লাহ যে সব ফজিলতের ঘোষণা দিয়েছেন, তা জানা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, যখন কোন কাজের লাভ ও উপকারিতা জানা থাকে, তখন সে কাজ করার প্রতি আগ্রহ জাগে এবং কাজটি করতে উৎসাহ পাওয়া যায়। মনে রাখতে হবে, জামাতে সালাত আদায়ের অনেক ফজিলত ও লাভ রয়েছে, কিন্তু এসব লাভ শুধু জামাতে সালাত পড়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ নয় বরং কোন ব্যক্তি যদি জামাতে সালাত আদায়ের প্রতিজ্ঞা করে, জামাতে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদে আগমন করে, (যদিও সে জামাত পায়নি) জামাতের উদ্দেশ্যে মসজিদে অপেক্ষা করতে থাকে, এমনকি সালাত আদায়কারী জামাতে নামাজ আদায় শেষে বাড়ি ফেরা পর্যন্ত সে ছাওয়াব পেতে থাকবে।
নিম্নে এর বিশদ আলোচনা করা হল:
নিম্নে এর বিশদ আলোচনা করা হল:
যে ব্যক্তি মসজিদে জামাতে সালাত আদায় করাকে বেশি বেশি ভালোবাসে আল্লাহ তাআলা কেয়ামত দিবসে আরশের নীচে তাকে ছায়াদান করবে, যেদিন আল্লাহর আশ্রয় ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।
রাসূল সা. বলেন :
سبعة يظلهم الله في ظله يوم لا ظل إلا ظله الإمام العادل وشاب نشأ في عبادة الله ورجل قلبه بالمساجد ورجلان تحابا في الله اجتمعا عليه وتفرقا عليه ورجل طلبته إمرأة ذات منصب وجمال فقال إني أخاف الله ورجل تصدق بصدقة أخفى حتى لا تعلم شماله ما تنفق يمينه ورجل ذكر الله خاليا ففاضت عيناه . رواه أبوداود )
‘‘সাত ব্যক্তিকে কেয়ামত দিবসে আল্লাহর আরশের নীচে ছায়া দেয়া হবে, যেদিন আল্লাহর ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া অবশিষ্ট থাকবে না—
১-ন্যায় পরায়ণ বাদশা।
২-ঐ যুবক যে তার যৌবন আল্লাহর এবাদতে কাটিয়েছেন।
৩-যে লোকের অন্তর সর্বদা মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত থাকে।
৪-দুই ব্যক্তি একে অপরকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসে, আল্লাহর জন্য পৃথক হয়।
৫-একজন ক্ষমতাবান সুন্দরী রমণী তাকে আহবান করলে, উত্তরে সে বলল নিশ্চয়ই আমি আল্লাহকে ভয় করি।
৬-এক ব্যক্তি এমন গোপনে দান খয়রাত করল, তার বাম হাত জানে না ডান হাতে কি দান করল।
৭-যে নির্জনে আল্লাহর স্মরণ করল, এবং তার চক্ষুদ্বয় হতে অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগল।
রাসূল সা. বলেন :
سبعة يظلهم الله في ظله يوم لا ظل إلا ظله الإمام العادل وشاب نشأ في عبادة الله ورجل قلبه بالمساجد ورجلان تحابا في الله اجتمعا عليه وتفرقا عليه ورجل طلبته إمرأة ذات منصب وجمال فقال إني أخاف الله ورجل تصدق بصدقة أخفى حتى لا تعلم شماله ما تنفق يمينه ورجل ذكر الله خاليا ففاضت عيناه . رواه أبوداود )
‘‘সাত ব্যক্তিকে কেয়ামত দিবসে আল্লাহর আরশের নীচে ছায়া দেয়া হবে, যেদিন আল্লাহর ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া অবশিষ্ট থাকবে না—
১-ন্যায় পরায়ণ বাদশা।
২-ঐ যুবক যে তার যৌবন আল্লাহর এবাদতে কাটিয়েছেন।
৩-যে লোকের অন্তর সর্বদা মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত থাকে।
৪-দুই ব্যক্তি একে অপরকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসে, আল্লাহর জন্য পৃথক হয়।
৫-একজন ক্ষমতাবান সুন্দরী রমণী তাকে আহবান করলে, উত্তরে সে বলল নিশ্চয়ই আমি আল্লাহকে ভয় করি।
৬-এক ব্যক্তি এমন গোপনে দান খয়রাত করল, তার বাম হাত জানে না ডান হাতে কি দান করল।
৭-যে নির্জনে আল্লাহর স্মরণ করল, এবং তার চক্ষুদ্বয় হতে অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগল।
বর্ণিত সওয়াব একমাত্র ঐ ব্যক্তি পাবে যে জামাতে নামাজ আদায় করার জন্যই ঘর হতে বের হয়। এ বিষয় বর্ণিত হাদিস :—
من خرج من بيته متطهرا إلي صلاة مكتوبة فأجره كأجر الحاج المحرم . ( رواه أبوداود :৪৭১)
‘‘যে ব্যক্তি পবিত্র অবস্থায় ফরজ সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে ঘর হতে বের হয়, তার সওয়াব এহরাম বেঁধে হজের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সমপরিমাণ। (আবুদাউদ:৪৭১)
রাসূল সা: বলেন—
بشر المشائين في الظلم إلي المساجد بالنور التام يوم القيامة . ( رواه أبوداود :৪৭৪)
গভীর অন্ধকারেও মসজিদে আগমনকারীদেরকে কেয়ামত দিবসে পরিপূর্ণ নুরের সুসংবাদ প্রদান করুন। (আবুদাউদ:৪৭৪)
রাসূল সা: আরো বলেন:—
من غدا إلي المسجد أو راح أعدالله له نزله من الجنة كلما غدا أو راح . ( رواه البخاري :৬২২ )
‘‘যে ব্যক্তি সকাল ও বিকালে মসজিদে গমন করে আল্লাহ তাআলা প্রতিবারই তার জন্য জান্নাতে মেহমানদারীর ব্যবস্থা করেন।’’ (বোখারি:৬২২)
من خرج من بيته متطهرا إلي صلاة مكتوبة فأجره كأجر الحاج المحرم . ( رواه أبوداود :৪৭১)
‘‘যে ব্যক্তি পবিত্র অবস্থায় ফরজ সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে ঘর হতে বের হয়, তার সওয়াব এহরাম বেঁধে হজের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সমপরিমাণ। (আবুদাউদ:৪৭১)
রাসূল সা: বলেন—
بشر المشائين في الظلم إلي المساجد بالنور التام يوم القيامة . ( رواه أبوداود :৪৭৪)
গভীর অন্ধকারেও মসজিদে আগমনকারীদেরকে কেয়ামত দিবসে পরিপূর্ণ নুরের সুসংবাদ প্রদান করুন। (আবুদাউদ:৪৭৪)
রাসূল সা: আরো বলেন:—
من غدا إلي المسجد أو راح أعدالله له نزله من الجنة كلما غدا أو راح . ( رواه البخاري :৬২২ )
‘‘যে ব্যক্তি সকাল ও বিকালে মসজিদে গমন করে আল্লাহ তাআলা প্রতিবারই তার জন্য জান্নাতে মেহমানদারীর ব্যবস্থা করেন।’’ (বোখারি:৬২২)
রাসূল সা: বলেন:—
أحدكم ما قعد ينتظر الصلاة في صلاة ما لم يحدث تدعوا له الملائكة اللهم اغفرله اللهم ارحمه . ( رواه مسلم :১০৬৩)
তোমাদের কেউ সালাতের অপেক্ষা করতে থাকলে, যতক্ষণ পর্যন্ত তার ওজু নষ্ট না হয়, সে সালাতের সওয়াব পেতে থাকবে। আর ফেরেশতারা তার জন্য এ বলে দোয়া করবে-
হে আল্লাহ তাকে মাফ কর; তাকে রহম কর; ও দয়া কর ; (মুসলিম:১০৬৩)
أحدكم ما قعد ينتظر الصلاة في صلاة ما لم يحدث تدعوا له الملائكة اللهم اغفرله اللهم ارحمه . ( رواه مسلم :১০৬৩)
তোমাদের কেউ সালাতের অপেক্ষা করতে থাকলে, যতক্ষণ পর্যন্ত তার ওজু নষ্ট না হয়, সে সালাতের সওয়াব পেতে থাকবে। আর ফেরেশতারা তার জন্য এ বলে দোয়া করবে-
হে আল্লাহ তাকে মাফ কর; তাকে রহম কর; ও দয়া কর ; (মুসলিম:১০৬৩)
এ ফজিলত বিশেষ করে ঐ ব্যক্তি পাবে যে জামাতে সর্বাগ্রে উপস্থিত হয় এবং প্রথম কাতারে অংশগ্রহণ করে। প্রথম কাতারের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস :
لو يعلم الناس ما في النداء والصف الأول ثم لم يجدوا إلا أن يستهموا عليه لاستهموا . ( رواه البخارى :৫৮০ )
লোকেরা প্রথম কাতার ও আজানের ফজিলত কি তা যদি জানতো, আর তা লটারি ছাড়া লাভ করা সম্ভব না হত তবে তারা লটারিতেও অংশ গ্রহণ করত। (বোখারি:৫৮০ )
لو يعلم الناس ما في النداء والصف الأول ثم لم يجدوا إلا أن يستهموا عليه لاستهموا . ( رواه البخارى :৫৮০ )
লোকেরা প্রথম কাতার ও আজানের ফজিলত কি তা যদি জানতো, আর তা লটারি ছাড়া লাভ করা সম্ভব না হত তবে তারা লটারিতেও অংশ গ্রহণ করত। (বোখারি:৫৮০ )
من توضأ للصلاة فأسبغ الوضوء ثم مشى إلى الصلاة المكتوبة فصلاها مع الناس أو مع الجماعة أو فى المسجد غفر الله له ذنوبه . ( رواه مسلم :৩৪১ )
যে ব্যক্তি পরিপূর্ণভাবে সালাতের ওজু করে তারপর ফরজ নামাজের উদ্দেশ্যে পথ চলে এবং মসজিদে জামাতে সালাত আদায় করে আল্লাহ তাআলা তার যাবতীয় গুনাহ ক্ষমা করে দেন (মুসলিম:৩৪১)
যে ব্যক্তি পরিপূর্ণভাবে সালাতের ওজু করে তারপর ফরজ নামাজের উদ্দেশ্যে পথ চলে এবং মসজিদে জামাতে সালাত আদায় করে আল্লাহ তাআলা তার যাবতীয় গুনাহ ক্ষমা করে দেন (মুসলিম:৩৪১)
রাসূল সা: বলেন:—
من صلى أربعين يوما في جماعة يدرك التكبيرة الأولي كتب له براءتان : براءة من النار و براءة من النفاق . ( رواه الترمذي :২২৪ )
যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন যাবৎ প্রথম তাকবীরের সাথে জামাতে সালাত আদায় করে আল্লাহ তাকে দুটি পুরস্কার প্রদান করেন—এক-দোজখের আগুন হতে মুক্তি। দুই-নেফাক হতে নিষ্কৃতি (তিরমিযি:২২৪)
من صلى أربعين يوما في جماعة يدرك التكبيرة الأولي كتب له براءتان : براءة من النار و براءة من النفاق . ( رواه الترمذي :২২৪ )
যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন যাবৎ প্রথম তাকবীরের সাথে জামাতে সালাত আদায় করে আল্লাহ তাকে দুটি পুরস্কার প্রদান করেন—এক-দোজখের আগুন হতে মুক্তি। দুই-নেফাক হতে নিষ্কৃতি (তিরমিযি:২২৪)
উল্লেখিত সকল ফজিলত ছাড়াও ইশা ও ফজরের নামাজ জামাতে আদায়কারীর জন্য বিশেষ ফজিলত হাদিসে বর্ণনা করা হয়। এর কারণ, এ দুই সালাতের সময় সাধারণত বিশ্রাম, গভীর অন্ধকার ও ভয়-ভীতির সম্ভাবনা থাকে। এ দুই সালাত মুনাফেকদের জন্য ঈমানের বিলুপ্তির কারণ হয় আর মোমিনদের জন্য কারণ হয় ঈমান বৃদ্ধি এবং অধিক সওয়াব লাভের। রাসূল সা: বলেন:—
ولو يعلمون ما في العتمة ( أي العشاء ) والصبح لأتوهما ولو حبوا . ( رواه البخاري :৫৮০ )
‘‘যদি এশা ও ফজরের সালাতের ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারতো তাহলে তারা হাতে পায়ে ভর করে হলেও সালাতে অংশ গ্রহণ করতো।’’ (বোখারি:৫৮০)
এবং রাসূল সা: বলেন:—
من صلى الصبح فى جماعة فهو في ذمة الله فمن أخفر ذمة الله كبه الله فى النار لوجهه . ) رواه الطبراني )
যে ব্যক্তি ফজরের সালাত জামাতে আদায় করে, সে আল্লাহর জিম্মায়-দায়িত্বেই থাকে, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর জিম্মা-দায়িত্ব বিনষ্ট করে আল্লাহ তাকে উপুর করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। (তিবরানী )
ولو يعلمون ما في العتمة ( أي العشاء ) والصبح لأتوهما ولو حبوا . ( رواه البخاري :৫৮০ )
‘‘যদি এশা ও ফজরের সালাতের ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারতো তাহলে তারা হাতে পায়ে ভর করে হলেও সালাতে অংশ গ্রহণ করতো।’’ (বোখারি:৫৮০)
এবং রাসূল সা: বলেন:—
من صلى الصبح فى جماعة فهو في ذمة الله فمن أخفر ذمة الله كبه الله فى النار لوجهه . ) رواه الطبراني )
যে ব্যক্তি ফজরের সালাত জামাতে আদায় করে, সে আল্লাহর জিম্মায়-দায়িত্বেই থাকে, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর জিম্মা-দায়িত্ব বিনষ্ট করে আল্লাহ তাকে উপুর করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। (তিবরানী )
এক—জামাতে ফজরের সালাত আদায়ে অলসতা করা। ফলে আল্লাহর মাঝে যে চুক্তি তা ভঙ্গ হয়ে যায়।
দুই—যে সব ব্যক্তি জামাতে সালাত আদায়ের ফলে আল্লাহর জিম্মার অন্তর্ভুক্ত হল, তাদের কোন ধরনের কষ্ট দেয়া।
এ ছাড়াও ফজর এবং এশার সালাত জামাতে আদায় সম্পর্কে যে সকল হাদিস বর্ণিত আছে তন্মধ্যে একটি হাদিসে বলা হয়, এশার সালাত জামাতে আদায় করা অর্ধেক রাত জাগ্রত থেকে এবাদত করার সমান, আর ফজরের সালাতও যদি জামাতে পড়া হয় তা হলে সারা রাত ক্বিয়ামুললাইল এর-সমতুল্য ছাওয়াব পাওয়া যাবে। এ ছাড়াও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, ফজর ও আছরের সালাতে ফেরেশতাদের উভয় দল দুনিয়াতে একত্রিত হয়।
দুই—যে সব ব্যক্তি জামাতে সালাত আদায়ের ফলে আল্লাহর জিম্মার অন্তর্ভুক্ত হল, তাদের কোন ধরনের কষ্ট দেয়া।
এ ছাড়াও ফজর এবং এশার সালাত জামাতে আদায় সম্পর্কে যে সকল হাদিস বর্ণিত আছে তন্মধ্যে একটি হাদিসে বলা হয়, এশার সালাত জামাতে আদায় করা অর্ধেক রাত জাগ্রত থেকে এবাদত করার সমান, আর ফজরের সালাতও যদি জামাতে পড়া হয় তা হলে সারা রাত ক্বিয়ামুললাইল এর-সমতুল্য ছাওয়াব পাওয়া যাবে। এ ছাড়াও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, ফজর ও আছরের সালাতে ফেরেশতাদের উভয় দল দুনিয়াতে একত্রিত হয়।
এক-জামাতে সালাত আদায়ের ফলে সালাতের পাবন্দী করা সহজ হয়। শয়তান মানুষকে সালাত আদায় হতে দুরে সরানোর হাজারো চেষ্টা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট সময়ে সালাত আদায় সহজ হয়। কারণ, শয়তানের ষড়যন্ত্র হল, সে প্রথমে মানুষকে জামাতে সালাত আদায় হতে বিরত রাখে। তারপর সে যে কোন সুন্নত ও নির্ধারিত সুন্নত গুলি আদায়ে বিঘ্ন ঘটায়। তারপর নির্দিষ্ট সময়ে পার করায়, এমনকি অনেক সময় সালাতের ওয়াক্ত পার করে দেয়, ফলে সালাত আদায় করাই হয় না তারপর দেখা যায় সে একত্রে দুই ওয়াক্ত সালাত আদায় করে। এভাবে চলতে চলতে দেখা যাবে, এক সময় এরকম আসবে তখন সে একেবারেই সালাত আদায় করবে না। রাসূল সা: শয়তানের ষড়যন্ত্র ও তা হতে মুক্তির পদ্ধতি সম্পর্কে বলেন :—
إن الشيطان ذئب الإنسان كذئب الغنم يأخذ من الشاة القاصية والناحية فإياكم والشعاب وعليكم بالجماعة والعامة والمسجد . ( رواه احمد :২১০২০)
নিশ্চয় ছাগলের জন্য যেমন বাঘ রয়েছে, তেমনিভাবে মানুষের জন্যও বাঘ রয়েছে। আর মানুষের বাঘ হল শয়তান। বাঘ বকরির পাল হতে বিচ্যুত ও বিচ্ছিন্নটিকেই আক্রমণ করে। সাবধান ! তোমরা বিচ্ছিন্ন হওয়া থেকে বিরত থাক। তোমরা জামাতবদ্ব থাক, মুসলমানদের দলভুক্ত হও এবং মসজিদ মুখী হও। (আহমদ:২১০২০)
দুই-জামাত কল্যাণ, খোদাভীতি, নেক কাজের প্রতি আগ্রহ এবং কল্যাণকর আমলের দিকে ছুটে যাওয়ার একটি উপযুক্ত ক্ষেত্র। এছাড়াও উত্তম আদর্শ অনুসরণের একটি অভিনব মিলন মেলা। কারণ, মসজিদে জ্ঞানীরাও আসে এবং মূর্খরাও আসে : শিক্ষক ও আসে আবার শিক্ষার্থীরাও আসে। সালাতের পর যে সব ওয়াজ নসিহত এবং শরিয়তের বিধান আলোচনা করা হয়, চরিত্র সংশোধন ও নৈতিকতা সস্পর্কিত সব বিষয় ভিত্তিক আলোচনা করা হয় অথবা বিষয় ভিত্তিক ভাষণ দেয়া হয়, বা দরস দেয়া হয়—যাবতীয় সব কিছুতেই রয়েছে কল্যাণ ও শিক্ষা। এ কারণেই বলা হয় জামাতে সালাত একটি দ্বীনি কেন্দ্র ও মাদরাসা। এছাড়াও একজন ভাই তার অপর ভাইকে ব্যক্তিগতভাবে উপদেশ দিতে পারে। এবং ইমাম সাহেব মোক্তাদির সহযোগিতা করে। মোক্তাদিরাও একে অপরের সহযোগী হিসাবে এমন সব কাজ আঞ্জাম দিতে পারেন যা একজন মানুষ একা একা করতে সক্ষম হয় না।
তিন-জামাত মুসলমানদের স্বকীয়তা এবং তাদের অস্তিত্ব রক্ষার কারণ। মুসলমানদের—বিশেষ করে, অমুসলিম সমাজে মুসলমানদের দুর্বল হয়ে থাকা, তাদের ব্যক্তিত্ব খর্ব করা এবং ঐতিহ্যকে বিনষ্ট করা হতে হেফাজত করে। এর বাস্তব নমুনা আমরা বিভিন্ন মুসলিম সংখ্যালঘু দেশে স্বচক্ষে দেখতে পাই।
জামাতে নামাজ আদায়ের কারণে একজন মুসলমান তার দ্বীনি ভাই ও প্রতিবেশীর সাথে পরিচিত হয়, তাদের খোঁজ খবর নেয়, এবং তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানে যথাসম্ভব ভূমিকা রাখতে পারে, তাদের নিজেদের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হয়। তাদের পরস্পরের মাঝে লেনদেন ও মত-বিনিময় হয়। ফলে মুসলমানদের পারস্পরিক সম্পর্কের ভীত মজবুত। তাদের মাঝে ঈমানী বন্ধন সুদৃঢ় হয়, আপোশে মিল মহববত বৃদ্ধি পায়। এতে নেক ও কল্যাণের কাজে সহযোগিতা হয় এবং আল্লাহর আনুগত্যে প্রত্যয়ী হতে সহযোগিতা করে। ফলে মুসলমানদের পারস্পরিক একটি মহা ঐক্য গড়ে উঠে, তারা সমাজে একটি শক্তিশালী অবস্থানে থাকতে সক্ষম হয়, এতে করে তাদের শক্ররা তাদের ভয়ে আতঙ্কিত থাকতে বাধ্য হয়। তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিতে তারা হাজারো হিসাব নিকাশ কষে থাকে।
৪-মুসলমানরা যখন জামাতে সালাত আদায়ের পরিপূর্ণ আনুগত্য করে তা মূলতঃ অমুসলিম ভাইদের প্রতি ইসলামের দাওয়াতেরই নামান্তর। কারণ, জামাতে সালাত আদায়ের কারণে মুসলমানদের যে সব বৈশিষ্ট্য ও গুনাবলী ফুটে উঠে তা একজন অমুসলিম ভাইয়ের হৃদয়ংগম করা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। জামাতে উপস্থিত হওয়ার জন্য আজানের সুউচ্চ আওয়াজ, মুসলমানদের দলে দলে মসজিদে গমন, নামাজে সুশৃংখলভাবে কাতার বন্দি হওয়া, এক ইমামের পিছনে সকল মানুষ একই ধরনের কার্যাদি একই নিয়মে অত্যন্ত বিনয় ও একাগ্রতার সাথে সম্পাদন—ইত্যাদি ইসলামের দাওয়াত বৈ আর কিছুই নয়।
আল্লাহ মোমিনদের নির্দেশ দেন তারা যেন সালাতে খুব সুন্দর অবস্থায় হাজির হয়। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা মোমিনদের ওজু করার নির্দেশ দেন।
إن الشيطان ذئب الإنسان كذئب الغنم يأخذ من الشاة القاصية والناحية فإياكم والشعاب وعليكم بالجماعة والعامة والمسجد . ( رواه احمد :২১০২০)
নিশ্চয় ছাগলের জন্য যেমন বাঘ রয়েছে, তেমনিভাবে মানুষের জন্যও বাঘ রয়েছে। আর মানুষের বাঘ হল শয়তান। বাঘ বকরির পাল হতে বিচ্যুত ও বিচ্ছিন্নটিকেই আক্রমণ করে। সাবধান ! তোমরা বিচ্ছিন্ন হওয়া থেকে বিরত থাক। তোমরা জামাতবদ্ব থাক, মুসলমানদের দলভুক্ত হও এবং মসজিদ মুখী হও। (আহমদ:২১০২০)
দুই-জামাত কল্যাণ, খোদাভীতি, নেক কাজের প্রতি আগ্রহ এবং কল্যাণকর আমলের দিকে ছুটে যাওয়ার একটি উপযুক্ত ক্ষেত্র। এছাড়াও উত্তম আদর্শ অনুসরণের একটি অভিনব মিলন মেলা। কারণ, মসজিদে জ্ঞানীরাও আসে এবং মূর্খরাও আসে : শিক্ষক ও আসে আবার শিক্ষার্থীরাও আসে। সালাতের পর যে সব ওয়াজ নসিহত এবং শরিয়তের বিধান আলোচনা করা হয়, চরিত্র সংশোধন ও নৈতিকতা সস্পর্কিত সব বিষয় ভিত্তিক আলোচনা করা হয় অথবা বিষয় ভিত্তিক ভাষণ দেয়া হয়, বা দরস দেয়া হয়—যাবতীয় সব কিছুতেই রয়েছে কল্যাণ ও শিক্ষা। এ কারণেই বলা হয় জামাতে সালাত একটি দ্বীনি কেন্দ্র ও মাদরাসা। এছাড়াও একজন ভাই তার অপর ভাইকে ব্যক্তিগতভাবে উপদেশ দিতে পারে। এবং ইমাম সাহেব মোক্তাদির সহযোগিতা করে। মোক্তাদিরাও একে অপরের সহযোগী হিসাবে এমন সব কাজ আঞ্জাম দিতে পারেন যা একজন মানুষ একা একা করতে সক্ষম হয় না।
তিন-জামাত মুসলমানদের স্বকীয়তা এবং তাদের অস্তিত্ব রক্ষার কারণ। মুসলমানদের—বিশেষ করে, অমুসলিম সমাজে মুসলমানদের দুর্বল হয়ে থাকা, তাদের ব্যক্তিত্ব খর্ব করা এবং ঐতিহ্যকে বিনষ্ট করা হতে হেফাজত করে। এর বাস্তব নমুনা আমরা বিভিন্ন মুসলিম সংখ্যালঘু দেশে স্বচক্ষে দেখতে পাই।
জামাতে নামাজ আদায়ের কারণে একজন মুসলমান তার দ্বীনি ভাই ও প্রতিবেশীর সাথে পরিচিত হয়, তাদের খোঁজ খবর নেয়, এবং তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানে যথাসম্ভব ভূমিকা রাখতে পারে, তাদের নিজেদের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হয়। তাদের পরস্পরের মাঝে লেনদেন ও মত-বিনিময় হয়। ফলে মুসলমানদের পারস্পরিক সম্পর্কের ভীত মজবুত। তাদের মাঝে ঈমানী বন্ধন সুদৃঢ় হয়, আপোশে মিল মহববত বৃদ্ধি পায়। এতে নেক ও কল্যাণের কাজে সহযোগিতা হয় এবং আল্লাহর আনুগত্যে প্রত্যয়ী হতে সহযোগিতা করে। ফলে মুসলমানদের পারস্পরিক একটি মহা ঐক্য গড়ে উঠে, তারা সমাজে একটি শক্তিশালী অবস্থানে থাকতে সক্ষম হয়, এতে করে তাদের শক্ররা তাদের ভয়ে আতঙ্কিত থাকতে বাধ্য হয়। তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিতে তারা হাজারো হিসাব নিকাশ কষে থাকে।
৪-মুসলমানরা যখন জামাতে সালাত আদায়ের পরিপূর্ণ আনুগত্য করে তা মূলতঃ অমুসলিম ভাইদের প্রতি ইসলামের দাওয়াতেরই নামান্তর। কারণ, জামাতে সালাত আদায়ের কারণে মুসলমানদের যে সব বৈশিষ্ট্য ও গুনাবলী ফুটে উঠে তা একজন অমুসলিম ভাইয়ের হৃদয়ংগম করা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। জামাতে উপস্থিত হওয়ার জন্য আজানের সুউচ্চ আওয়াজ, মুসলমানদের দলে দলে মসজিদে গমন, নামাজে সুশৃংখলভাবে কাতার বন্দি হওয়া, এক ইমামের পিছনে সকল মানুষ একই ধরনের কার্যাদি একই নিয়মে অত্যন্ত বিনয় ও একাগ্রতার সাথে সম্পাদন—ইত্যাদি ইসলামের দাওয়াত বৈ আর কিছুই নয়।
আল্লাহ মোমিনদের নির্দেশ দেন তারা যেন সালাতে খুব সুন্দর অবস্থায় হাজির হয়। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা মোমিনদের ওজু করার নির্দেশ দেন।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন