hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে সালাতের গুরুত্ব

লেখকঃ জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের

জামাত ওয়াজিব হওয়ার প্রমাণ :
১-আল্লাহ রুকুকারীদের সাথে রুকু করার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন:—

وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآَتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ ( سورة البقرة :৪৩)

‘‘তোমরা সালাত কায়েম কর, জাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু কর।’’

অর্থাৎ- সালাত আদায়কারীর সাথে সালাত আদায় কর।

২- আল্লাহ তাআলা ভীষণ ভয়ের সময় জামাতে সালাত পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তার নবীকে বলেন:—

وَإِذَا كُنْتَ فِيهِمْ فَأَقَمْتَ لَهُمُ الصَّلَاةَ فَلْتَقُمْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ مَعَكَ وَلْيَأْخُذُوا أَسْلِحَتَهُمْ فَإِذَا سَجَدُوا فَلْيَكُونُوا مِنْ وَرَائِكُمْ وَلْتَأْتِ طَائِفَةٌ أُخْرَى لَمْ يُصَلُّوا فَلْيُصَلُّوا مَعَكَ وَلْيَأْخُذُوا حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ . . . ( النساء :১০২) .

এবং যখন তুমি তাদের মাঝে থাক, তখন তাদের জন্য নামাজ প্রতিষ্ঠিত কর, যেন তাদের একদল তোমার সাথে দন্ডায়মান হয় এবং স্ব-স্ব অস্ত্র গ্রহণ করে: অতঃপর যখন সেজদা সম্পন্ন করে তখন যেন তারা তোমার পশ্চাদ্বর্তী হয় এবং অন্যদল, যারা নামাজ পড়েনি, তারা যেন অগ্রসর হয়ে তোমার সাথে নামাজ পড়ে এবং স্ব-স্ব সতর্কতা এবং অস্ত্র গ্রহণ করে। (সুরা নিসা:১০২)

উল্লেখিত আয়াতটি صلاة الخوف সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। এ বিষয়ে ইজমা বিদ্যমান আছে।

আর এ কথা নি:সন্দেহে বলা যায় যে, ভয়ের সময় যদি জামাত ওয়াজিব হয়, তবে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যের সময় ওয়াজিব হওয়া অধিক যুক্তিযুক্ত।

৩-নবী করিম সা: জামাতে সালাত আদয়ের নির্দেশ দেন তিনি বলেন—

إذا كانوا ثلاثة فليؤمهم أحدهم واحقهم بالإمامة أقرأهم ) رواه مسلم : ১০৭৭)

‘‘যখন তারা তিন জন হবে তখন তাদের একজন ইমামতি করবে আর তাদের মাঝে যিনি ভাল পড়তে পারবে সেই ইমাম হওয়ার জন্য অধিক বিবেচ্য।’’ (মুসলিম:১০৭৭ )

৪- অন্ধ সাহাবি আব্দুলহ ইবনে উম্মে মাকতুম রা. জামাতে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকার অনুমতি চাইলে রাসূল সা: তাকে অনুমতি দেননি। তিনি রাসূলের দরবারে এসে বলেন:—

يا رسول الله إني رجل ضرير البصر شاسع الدار ولي قائد لا يلائمني فهل لي رخصة أصلي في بيتي قال هل تسمع النداء قال نعم قال لا أجد لك رخصة . ( رواه أبوداود :৪৬৫)

ইয়া রাসুলুল্লাহ ! আমি একজন অন্ধ মানুষ, আমার বাড়িও অনেক দূরে এবং আমার একজন পথচালক আছে সে আমার পছন্দনীয় নয়। আমার জন্য ঘরে সালাত পড়ার অনুমতি আছে কি ? রাসূল সা: বললেন তুমি কি আজান শুন ? বললেন হ্যাঁ। তার পর রাসূল সা. বললেন, তাহলে আমি তোমার জন্য জামাতে অনুপস্থিত থাকার কোন অনুমতি দিচ্ছি না। (আবুদাউদ:৪৬৫)

অন্যান্য বর্ণনায় বর্ণিত আছে তার বাড়ি ও মসজিদের মাঝে খেজুরের বাগান ও অন্যান্য গাছের বাগান বিদ্যমান। শহরটিতে অধিক হারে হিংস্র পশু, কীট, পতঙ্গ বসবাস করত। তিবরানীর বর্ণনায় এসেছে—

إنه قال له ( ما أجد لك رخصة ولو يعلم هذا المتخلف عن الصلاة في الجماعة ما لهذا الماشي إليهالأتوها ولو حبوا ( الطبراني )

তিনি বলেন আমি তোমার জন্য অনুমতি দিতে পারছি না। জামাতে সালাত পড়া হতে বিরত ব্যক্তি যদি বুঝতে পারতো জামাতে সালাত পড়ার কি গুরুত্ব, তাহলে সে নিতম্ব, দুই হাত ও দুই পায়ে চড়ে হলেও সালাতে উপস্থিত হত। (তিবরাণী)

৫-কোন প্রকার অপারগতা ছাড়া জামাত হতে বিরত থাকলে তার সালাতই হয় না। রাসূল সা: বলেন-

من سمع النداء فلم يأته فلا صلاة له إلا من عذر )) رواه ابن ماجة :৭৮৫)

যে ব্যক্তি আজান শ্রবণ করার পর সালাতে উপস্থিত হয় না তার সালাতই হয় না। (ইবনে মাজাহ:৭৮৫ )

৬-জামাতে সালাত হতে বিরত থাকা মুনাফেকের নিদর্শন। রাসূল সা: বলেন—

ليس صلاة أثقل علي المنا فقين من الفجر والعشاء ولو يعلمون ما فيهما لأتوهما ولو حبوا ( رواه البخاري :৫৮০)

মুনাফেকের জন্য ফজর আর এশার সালাত যত কষ্টকর অন্য আর কোন সালাত অনুরূপ কষ্টকর নয়, তারা যদি এ দুটি সালাতের সওয়াব সম্পর্কে জানতো, তাহলে নিতম্বে ভর করে হলেও এ দুই সালাতে উপস্থিত হত। (বোখারি:৫৮০)

৭-জামাত বাদ দেয়া বান্দার উপর শয়তানের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার কারণ। রাসূল সা: বলেন:

مامن ثلاثة في قرية ولابدو لا تقام فيهم الصلاة إلا قد استحوذ عليهم الشيطان فعليك بالجماعة فإنما يأكل الذئب من الغنم القاصية ( رواه أبوداود :৮৩৮)

‘‘কোন গ্রাম বা উপত্যকায় তিন জন লোক বিদ্যমান, অথচ সেখানে জামাতে সালাত হয় না তাদের উপর শয়তান প্রাধান্য বিস্তার করবে। সুতরাং, তুমি জামাতকে জরুরি মনে কর। কারণ, বাঘ সাধারণত পাল হতে বিচ্ছিন্ন বকরিটাকেই আক্রমণ করে।’’ (আবু দাউদ:৮৩৮)

৮-জামাত ত্যাগ করা আল্লাহর ক্রোধের কারণ হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

لينتهين أقوام عن ودعهم الجماعة أو ليختمن الله على قلوبهم ثم ليكونن من الغافلين . ( رواه ابن ماجة :৭৮২ )

সম্প্রদায়ের লোকেরা হয় জামাত ত্যাগ করা হতে বিরত থাকবে, অন্যথায় আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেবেন অত:পর তারা গাফেল লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (ইবনে মাজাহ:৭৮৬)

৭- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জামাতে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত লোকদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছা করেছেন। তিনি বলেন :—

لقد هممتت أن أمر المؤذن فيقيم ثم أمر رجلا يؤم الناس ثم أخذ شعلا من النار فأحرق على من لا يخرج إلى الصلاة بعد . ( رواه البخاري :৬১৭ )

‘‘আমার ইচ্ছা হয় মুয়াজ্জিনকে নির্দেশ দিই সে সালাতের একামত বলে আর একজনকে আদেশ করি সে সালাত পড়াবে অত:পর একটি অগ্নিকুন্ড নিয়ে বের হই এবং যারা সালাতে উপস্থিত হয়নি তাদের বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দিই।’’ (বোখারি:৬১৭)

হাদিসে রাসূল ঐ সকল লোকদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছা করেছেন, যারা মসজিদে আসেনি, তারা ঘরে সালাত পড়ুক, অথবা নাই পড়ুক।

জামাতে সালাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য এটাই সব চেয়ে বড় দলিল। আর যদি জামাত মোস্তাহাব হত তাহলে এ ধরনের পুড়িয়ে দেয়ার মত সংকল্প করা কোনভাবেই সম্ভব হত না। ছলফে ছালেহীন জামাতের সালাতকে সীমাহীন গুরুত্ব দেন। এমনকি জামাত তরক করাকে মুনাফেকের নিদর্শন হিসাবে গণ্য করেন।

আব্দুহ বিন মাসঊদ (রা:) বলেন—

من سره أن يلقى الله غدا مسلما فليحافظ علي هؤلاء الصلوات حيث ينادي بهن فإن الله شرع لكم سنن الهدى ولو أنكم صليتم في بيوتكم كما يصلي هذا المتخلف في بيته لتركتم سنة نبيكم ولوتركتم سنة نبيكم لضللتم .... ثم يقول و لقدرأيتنا وما يتخلف عنها إلا منافق معلوم النفاق و لقد كان الرجل يؤتي به يهادي بين الرجلين حتي يقام في الصف . ) رواه مسلم :১০৪৬)

যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে সে আগামী দিন আল্লাহর সাথে একজন মুসলমান হিসাবে সাক্ষাৎ করবে, সে যেন সালাত সংরক্ষণ করে, যখন তার প্রতি আহবান করা হয়। কারণ, আল্লাহ তোমাদের নবীর জন্য হেদায়াতের পদ্ধতি চালু করেছেন, আর সালাত তার অন্যতম, যদি তোমরা পশ্চাৎগামী লোকটির ন্যায় ঘরে সালাত আদায় কর, তবে তোমরা তোমাদের নবীর আদর্শকে ত্যাগ করলে। আর যদি তোমরা তোমাদের নবীর আদর্শকে ছেড়ে দাও, তাহলে তোমরা পথভ্রষ্ট হবে। অত:পর তিনি বলেন, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যুগে দেখেছি নামাজে উপস্থিত হওয়া থেকে একমাত্র পরিচিত মুনাফেক ছাড়া আর কেউ বিরত থাকতো না, এমনকি কোন কোন লোককে দেখা যেত দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর করে তাকে নিয়ে আসা হত তারপর তাকে সালাতের কাতারে দাঁড় করানো হত। (মুসলিম:১০৪৬)

এবং ইবনে ওমর রা. বলেন :—

كنا إذا فقدنا الرجل في صلاة العشاء و صلاة الفجر أسأنا به الظن . رواه ابن أبي شيبة

আমরা যখন দেখতাম কোন লোক ফজর ও এশার নামাজে অনুপস্থিত তখন তার প্রতি আমরা খারাপ ধারণা করতাম। (ইবনু আবীশাইবা )

ইব্রাহীম তাইমী (রহ:) বলেন:—

যখন দেখবে কোন ব্যক্তি নামাজে প্রথম তাকবীরকে গুরুত্ব দেয় না তুমি তার থেকে হাত ধুয়ে নাও। অর্থাৎ তাকে এড়িয়ে যাও।

সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাহ বলেন:—

সালাতের সুন্নত হল সালাতে ইকামত দেয়ার পূর্বেই উপস্থিত হওয়া।

আদি বিন হাতিম (রা:) বলেন:—

ইসলাম গ্রহণ করার পর যখনই সালাতের ইকামত হত, আমি ওজু অবস্থায় থাকতাম। ইব্রাহীম বিন মাইমুন—তিনি রঙের কাজ করতেন,—তার অভ্যাস ছিল, যদি তিনি তুলি উঠানো অবস্থায় আজান শুনতেন তুলিটি ফিরিয়ে নিতেন না বরং তা ঐ অবস্থায় নিক্ষেপ করে দিতেন এবং সালাতে দাঁড়াতেন।

বশার বিন হাসান, পঞ্চাশ বৎসর পর্যন্ত প্রথম কাতার ছাড়েননি এমন কি তার নামও ছফ্ফী (কাতারবন্দী) হয়ে যায়।

সুলাইমান বিন মাহরান সত্তুর বৎসর জীবিত থাকেন কিন্তু একবার ও তার তাকবীরে উলা-প্রথম তাকবীর -ছুটেনি।

অনুরূপ আমাশ (র:) সাইদ বিন আব্দুল আজীজ (রহ:) যখন জামাতে সালাত ছুটে যেত কান্নাকাটি করতেন।

ইবনে ওমর রহ:-এর যখন এশার সালাতের জামাত ছুটে যেত, তিনি অবশিষ্ট রাত ঘুমাতেন না, সারা রাত এবাদত বন্দেগিতে কাটিয়ে দিতেন।

সাহাবিরা যে কোন ধরনের প্রতিকুল অবস্থা-অসুস্থতা, ভয়—ইত্যাদি সত্ত্বেও জামাতে উপস্থিত হওয়ার জন্য আকাংখা করতেন।

আবু আব্দুর রহমান আসসুলামী মসজিদে রওয়ানা দিলে পথ মাঝে তার মৃত্যু উপস্থিত হলে লোকেরা তাকে বাড়ি নিয়ে আসতে চাইলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন, যাতে তার রূহ ক্ববজ করার সময় তাকে নামাজের প্রতীক্ষা অবস্থায় পাওয়া যায়।

সাহাবিরা তাদের সন্তানদেরও নামাজের জামাতের জন্য উৎসাহ দিতেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেন এবং অলসতার দরুন তাদের শাস্তি দিতেন।

খুলাফায়ে রাশেদীনও জামাতের বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। যারা জামাতে উপস্থিত হতেন না তাদেরকে হুমকি দিতেন। তৎকালে অক্ষম প্রতিবন্দিদের জন্য একজন লোক নিয়োগ করা হত যিনি জামাতে উপস্থিত হতে তাদের সাহায্য করতেন। যেমন ওমর রা: হতে বর্ণিত, তিনি একজন অন্ধকে সালাতে নিয়ে আসার জন্য একজন গোলাম নিয়োগ করেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন