HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

উপার্জন ইসলামী দৃষ্টিকোণ

লেখকঃ হাবীবুল্লাহ মুহাম্মাদ ইকবাল

৪.২ হালাল উপার্জনের সম্ভাব্য কিছু মাধ্যম
উপার্জন হল মানুষের সম্পদ লাভের প্রক্রিয়া। ইসলাম নির্দেশিত পথে মানুষ যে উপার্জন করে সেটিকে আমরা হালাল উপার্জন বলবো। পৃথিবীতে নানা উৎসে সম্পদরাজিকে আল্লাহ ছড়িয়ে রেখেছেন। মানুষকে অর্জন করতে হয় এই অর্জন প্রক্রিয়ায় নানাবিধ মাধ্যম। ইসলাম হালাল উপার্জন করার জন্য কী কী মাধ্যম হতে পারে তার স্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছে। মাধ্যমগুলো হলো কৃষি, শিল্প, ব্যবসা ও চাকুরি। এ মাধ্যমগুলোকে কীভাবে কাজে লাগানো যাবে তার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে।

ক. কৃষি

সৃষ্টিকূলের খাদ্যের উৎস কৃষি। মহান রাব্বুল আলামীন মানুষের কৃষি কাজের সুবিধার্থে পৃথিবীর মাটি ও ভূমিকে উৎপাদন ও ফসল ফলানোর উপাযোগী বানিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ فَلۡيَنظُرِ ٱلۡإِنسَٰنُ إِلَىٰ طَعَامِهِۦٓ ٢٤ أَنَّا صَبَبۡنَا ٱلۡمَآءَ صَبّٗا ٢٥ ثُمَّ شَقَقۡنَا ٱلۡأَرۡضَ شَقّٗا ٢٦ فَأَنۢبَتۡنَا فِيهَا حَبّٗا ٢٧ وَعِنَبٗا وَقَضۡبٗا ٢٨ وَزَيۡتُونٗا وَنَخۡلٗا ٢٩ وَحَدَآئِقَ غُلۡبٗا ٣٠ وَفَٰكِهَةٗ وَأَبّٗا ٣١ مَّتَٰعٗا لَّكُمۡ وَلِأَنۡعَٰمِكُمۡ ٣٢ ﴾ [ عبس : ٢٤، ٣٢ ]

‘‘মানুষের কর্তব্য তার খাদ্যের প্রতি দৃষ্টি দেয়া-চিন্তা করা। আমিই বৃষ্টি বর্ষণ করি, পরে জমি বিস্ময়করভাবে দীর্ণ করি। আর তাতে শস্য, আঙ্গুর, শাক-সবাজি, তরি-তরকারি, যয়তুন, খেজুর, বিশিষ্ট উদ্যানসমূহ, ফল এবং গবাদি-খাদ্য উৎপাদন করি, তোমাদের ও তোমাদের পশুর ভোগের জন্য’’। [. সূরা ‘আবাসা: ৮০:২৪-৩২।]

আলো-বাতাস, পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল, নদী-নালা, সাগর-মহাসাগর, সমভূমি-মরুভূমি সর্বত্র মহান আল্লাহ তাঁর সৃষ্টজীবের জীবিকার অসীম উপকরণ রেখে দিয়েছেন- যার অংশ বিশেষও কিয়ামত পর্যন্ত নিঃশেষিত হবে না। আলকুরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তার সহজসাধ্যতার উপায়-উপকরণের দিকে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, যেন মানুষ তা আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। আর এ পৃথিবীতে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আল্লাহ তা‘আলার এ নিয়ামাত যে ব্যক্তি বা জাতি নিয়মিত ও পরিমিতভাবে আহরণ করতে পারে, সে ব্যক্তি বা জাতি তো সমৃদ্ধশালী হবেই।

খ. শিল্প

মানুষের জীবন যাপনের চাহিদা মেটানোর জন্য কৃষি যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন শিল্পোন্নয়ন। অনেক কৃষিজাত দ্রব্য শিল্পের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী না করলে তা থেকে মানুষ উপকার লাভ করে না। ইসলাম কৃষি কাজের উৎসাহ দিয়েছে। তবে সকলে এ কাজে মগ্ন থাকা থাকতে হবে এমনটি নয়। কেননা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতীয় বিপদ-আপদের মোকাবেলা কেবল মাত্র কৃষি দ্বারা সম্ভব নয়। এ জন্য কৃষি কাজের সাথে সাথে শিল্প পেশার কাজ করাও জরুরী। এ আকাশ-বাতাস, বন-জঙ্গল, পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর, মাটি-বালি ও তার তলদেশে মহান আল্লাহ তা‘আলা যে সম্পদ সৃষ্টি করে রেখেছেন, তার সদ্ব্যবহারের জন্য শিল্পোন্নয়ন জরুরী। শিল্পক্ষেত্রে বিশেষ সমৃদ্ধি ছাড়া জাতীয় আয়বৃদ্ধি করা যায় না। শিল্পকর্মের প্রতি পবিত্র কুরআনে ইঙ্গিত রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ وَعَلَّمۡنَٰهُ صَنۡعَةَ لَبُوسٖ لَّكُمۡ لِتُحۡصِنَكُم مِّنۢ بَأۡسِكُمۡۖ فَهَلۡ أَنتُمۡ شَٰكِرُونَ ٨٠ ﴾ [ الانبياء : ٨٠ ]

‘‘আর আমরা তাকে বর্ম তৈরি করার শিল্পবিদ্যা শিক্ষা দিয়েছিলাম যেন তা যুদ্ধে তোমাদের প্রতি রক্ষা করতে পারে তাহলে তোমরা কি শোকর আদায় করবে।’’ [. সূরা আল-আম্বিয়া: ৮০।] সোলাইমান (আ.)-এর উঁচু উঁচু প্রাসাদ, বড় বড় পানি সঞ্চয় পাত্র এবং নূহ (আ.) এর নৌকা তৈরি বর্ণনা পবিত্র কুরআনে উদ্ধৃত হয়েছে। তাছাড়া অধিকাংশ নবীই শিল্পকাজে জড়িত ছিলেন। যাকারিয়্যাহ আলাইহিস সালাম ছিলেন কাঠমিস্ত্রি তাও আমরা হাদীস থেকে জানতে পারি।

গ. ব্যবসা

ব্যবসা-বাণিজ্য একটি সম্মানজনক পেশা। জীবিকা অর্জনের এটি একটি অন্যতম উপায়। যাদের উপর আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ রয়েছে তারা এই পেশা অবলম্বন করে। যে জনপদের উপর আল্লাহ তা‘আলার রহমত রয়েছে যে জনপদে ব্যবসা-কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। আল-কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَأَحَلَّ ٱللَّهُ ٱلۡبَيۡعَ وَحَرَّمَ ٱلرِّبَوٰاْۚ ﴾ [ البقرة : ٢٧٥ ]

‍‍ ‘‘এবং আল্লাহ বেচা-কেনা হালাল করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন।’’ [. সূরা আল-বাকারাহ: ২৭৫।]

ব্যবসায়ীরা সাধারণ উদ্বৃত্ত অঞ্চলের সামগ্রী ঘাটতি অঞ্চলে পৌঁছিয়ে দিয়ে উদ্বৃত্ত অঞ্চলের অপচয় রোধ করে আর ঘাটতি অঞ্চলের দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ করে মানব সমাজের সে সেবা করছে তা সৎকাজের অন্তর্ভুক্ত। এজন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহ অনেক নবী-রাসূল, তাছাড়া অনেক সাহাবী যেমন আবু বকর, উমার, উসমান, আবদুর রহমান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহুম ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন।

ঘ. চাকুরি

জীবিকা অর্জনের আরেকটি অন্যতম উপায় হচ্ছে চাকরি। চাকরির মাধ্যমে জীবিকা অর্জন করা ইসলামী আইনে বৈধ। তবে তাকে দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ সক্ষম হতে হবে। ইসলামে চাকরি লাভের অন্যতম শর্ত হচ্ছে যোগ্যতা অর্জন। যথাযথ যোগ্যতা অর্জন ছাড়া কোনো পদের জন্য আবেদন করা ঠিক নয়। হারাম কাজ জনগণের ক্ষতিকারক কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা ইসলাম অনুমোদন করে না। এক্ষেত্রে আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে এসেছে যে,

«قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلَا تَسْتَعْمِلُنِي قَالَ فَضَرَبَ بِيَدِهِ عَلَى مَنْكِبِي ثُمَّ قَالَ يَا أَبَا ذَرٍّ إِنَّكَ ضَعِيفٌ وَإِنَّهَا أَمَانَةُ وَإِنَّهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ خِزْيٌ وَنَدَامَةٌ إِلَّا مَنْ أَخَذَهَا بِحَقِّهَا وَأَدَّى الَّذِي عَلَيْهِ فِيهَا»

‘‘আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আমাকে কোনো দায়িত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিবেন না ! একথা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাত আমার কাঁধের উপর রেখে বললেন, হে আবু যার! তুমি বড় দুর্বল ব্যক্তি। আর এ পদ হচ্ছে কঠিন আমানতের ব্যাপার। কিয়ামতের দিন তা-ই হবে লজ্জা ও লাঞ্ছনার কারণ, তবে যে লোক এ দায়িত্বপূর্ণ যোগ্যতার সাথে সে দায়িত্ব গহণ করে এবং দক্ষতা ও সততার সাথে যথাযথভাবে তা পালন করবে তার বেলায় নয়। [. ইমাম মুসলিম, সহীহ, খ- ৬, পৃ. ৬, হাদিস নং ৪৮২৩।]

চাকরির ক্ষেত্রে ইসলামী আইন হচ্ছে উপযুক্ততা ও পরোপকারিতা। চাকুরিজীবিগণ স্ব স্ব দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমে জীবিকা অর্জন করবে এবং পরোপকারের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জন করবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন