HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুহররম মাসে শিয়া সম্প্রদায়ের মাতম বিষয়ক বিদয়াত

লেখকঃ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আযিয আহমদ আত-তুয়াইজিরী

আশুরার দিন নাসিবিয়্যাহ সম্প্রদায়ের উদ্ভাবিত বিদআতসমূহ
এতক্ষণ আমরা আশু রার দিনে শিয়া-রাফেযিদের মাতম-মর্সিয়া ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করলাম। এ অধ্যায়ে শিয়া বিরোধী কতক গোড়া পন্থীদের কীর্তি-কলাপ নিয়ে আলোচনা করব। যারা শিয়া-রাফেযিদের বিপরীতে আশু রার দিন উৎসবের ঘোষণা করে। এরা হুসাইন এবং রসুল সা. এর পরিবারের ব্যাপারে সমালোচনায় সিদ্ধহস্ত। এদের সব চেয়ে বড় মূর্খতা হলো, এরা বা-তেলকে বাতিল, মিথ্যাকে মিথ্যা, খারাপকে খারাপ আর এক বেদআতকে অন্য বেদআতের মাধ্যমে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। তারা আনন্দ, বিনোদনের জন্য আশু রার দিন হরেক রকম সাজ-সজ্জা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। যেমন, চোখে সুরমা লাগানো, দাঁড়িতে খেজাব দেয়া, পরিবারের জন্য ভালো খাবার -দাবারসহ স্বাভাবিক

নিয়মের ব্যতিক্রম কিছুর ব্যবস্থা করা। যা সাধারণত: ঈদ, আনন্দ অনুষ্ঠানের সময় করা হয়। তারা মূলত: আশুরাকে ঈদে পরিণত করেছে।

এর সূচনা রসুল সা. এর যুগেই হয়েছিল। যার সূত্রপাত আবু সাঈদ খুদরি রা এর বর্ণনা মতে এমন ছিল: আলী রা. রসুল সা. এর নিকট সামান্য স্বর্ণ পাঠান। রসুল সা. সেগুলো চার জন ব্যক্তির মাঝে বণ্টন করে দেন। অর্থাৎ ১. আকরা ইবনে হাবেস আল-হান্জালী, আল-মুজাশেয়ী, ২. উয়াইনাহ ইবনে বদর আল-ফাজারী, ৩. জায়েদ আত্তায়ী, ৪. আলকামা ইবনে আলাসাহ আল-আমেরী। যার প্রেক্ষিতে কুরাইশ এবং আনসারগণ অসন্তুষ্ট হল। তারা বলল, নজদের নেত্রী পর্যায়ের লোকদের দেয়, আর আমাদের বিমুখ করে! রসুল বললেন, আমি তাদের মন-জয় করার চেষ্টা করি মাত্র। ইতোমধ্যে চোখ খাঁদে, ভরা গাল, উঁচু ললাটের এক ব্যক্তি অগ্রসর হয়ে বলল, মুহাম্মদ! আল্লাহকে ভয় কর (রসুল বললেন, আমি যদি আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ করি, তবে আল্লাহর আনুগত্য করবে কে? আল্লাহ আমাকে দুনিয়ার বিশ্বস্ত জানেন, আর তোমরা আমাকে বিশ্বস্ত মনে করো না) একজন সাহাবি তাকে হত্যা করার অনুমতি প্রার্থনা করল - আমার ধারণায় খালেদ ইবনে ওলিদ - তিনি তাকে বিরত রাখলেন। যখন সে প্রস্থান করল, রসুল সা. বললেন, এর বংশে/পশ্চাতে একটি সম্প্রদায় রয়েছে, যারা কুরআন পড়বে কিন্তু তাদের গলার নীচ পর্যন্ত অতিক্রম করবে না। একটি তীর স্বীয় লক্ষ্য ভেদ করে যে রূপ বের হয়ে যায়, তারাও সে রূপ দ্বীন থেকে বের হয়ে যাবে। তারা মুসলমানদের হত্যা করবে, মূর্তিপূজকদের ছেড়ে দেবে। আমি তাদের পেলে আদ সম্প্রদায়ের ন্যায় হত্যা করব।

মুসলিমের একটি বর্ণনায় আছে, রসুল সা. কিছু বণ্টন করতে ছিলেন, আমরা তার নিকটেই ছিলাম। এমতাবস্থায় বনু তামিমের খুওয়াইসারা নামক এক ব্যক্তি তার নিকট এসে বলল, আল্লাহর রসুল; ইনসাফ করুন! (রসুল সা. বললেন, নিপাত যাও তুমি, আমি যদি ইনসাফ না করি তবে আর কে করবে ইনসাফ? আমি ইনসাফ না করলে, তুমি ধ্বংস ও নিশ্চিত ক্ষতিগ্রস্ত হতে ) ওমর রা. বললেন, আল্লাহর রসুল, তাকে হত্যার অনুমতি দিন। রসুল সা. বললেন, (ছেড়ে দাও তাকে, তার এমন কিছু সাথি-সঙ্গী রয়েছে, যাদের নামাজের সাথে তোমাদের নামাজ, যাদের রোজার সাথে তোমাদের রোজা তুচ্ছ মনে করবে। তারা কুরআন তিলাওয়াত করবে, অথচ তাদের কণ্ঠনালি অতিক্রম করবে না। তীর লক্ষ্য ভেদ করে যেমন বের হয়ে যায়, তারাও ইসলাম থেকে সে রূপ বের হয়ে যাবে। অগ্রভাগ দেখা হবে, পিষ্ট দেশ দেখা হবে, মেরুদন্ড দেখা হবে এবং সম্মুখ পানে তাকানো হবে, কোথাও বিন্দু মাত্র চিহ্ন পাওয়া যাবে না, নাড়ি-ভুঁড়ি আর রক্ত এ ভাবেই ভেদ করে যাবে। তাদের আলামত হল, এদের ভিতর এক ব্যক্তি কালো, যার এক হাত নারীর স্তনের ন্যায়। অথবা গোস্তের টুকরার ন্যায় দরফর করবে। মানুষের অপ্রস্ত্তত আর অন্যমনস্কতার মধ্যেই তারা বের হবে।

আবু সাইদ রা. বলেন : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, রাসূল সা. থেকে এটি শুনেছি, আর আলী ইবনে আবু তালেব রা. তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন, আমিও তার সাথে উপস্থিত ছিলাম। তিনি সে ব্যক্তিকে উপস্থিত করার আদেশ করলে তাকে ধরে আনা হলো। আমি লোকটিকে রাসূল সাললহু আলাইহি ওয়া সালমের বর্ণনা অনুযায়ী পেলাম।

শায়খুল ইসলাম ইবনে তাই-মিয়া রাহ. বলেন : কুফা নগরীতে শিয়াদের একটি গোষ্ঠী ছিল, যারা হুসাইন রা. এর পক্ষের লোক ছিল। তাদের নেতা ছিল মোখতার ইবনে উবাইদ আল-কাজ্জাব। সেখানে আলী রা. ও তাঁর ছেলেদের বিদ্বেষী নাসেবা গোত্রের একদল লোক ছিল। তাদের মধ্যে ছিল হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ সাকাফী। সহি বুখারি বর্ণিত, রাসূল সাললহু আলাইহি ওয়া সালম বলেন :

سيكون في ثقيف كذاب ومبير . ( رواه الترمذي :6146)

‘‘ অচিরেই সাকীফ গোত্রে একজন মিথ্যাবাদী ও একজন নাশকতা সৃষ্টিকারীর আবির্ভাব ঘটবে।’’

মোক্ষতার ইবনে উবাইদ ছিল কাজ্জাব তথা মিথ্যাবাদী। আর নাসেবী গোত্রের লোকটি ছিল মুবীর তথা নাশকতা সৃষ্টিকারী।

ওরা শোক প্রকাশ প্রথার সূচনা করেছে আর এরা খুশি উৎসব প্রথার হাওয়া চালু করেছে। হুসাইন রা. এর বিরুদ্ধে যা করা হয়েছে তা-ও বিদয়াত, আর তাঁর পক্ষে যা করা হয়েছে তাও বিদয়াত।

প্রতিটি বিদয়াতই ভ্রষ্টতা। চার ইমামের কেউই ইহা - উহা কোনটিই সমর্থন করেননি। এগুলো পছন্দ করার শরয়ি কোন দলিল নেই।

নাসেবী ও রাফেযীরা বিদয়াতপন্থী ও সুন্নত বহির্ভূত হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। রাসূল সাললহু আলাইহি ওয়া সালম বলেন :

عليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين المهديين، تمسكوا بها، وعضوا عليها بالنواجذ، وإياكم ومحدثات الأمور، فإن كل محدثة بدعة، وكل بدعة ضلالة . ( رواه أبو داود 3991)

তোমরা আমার সুন্নত ও আমার পরবর্তী খলিফাগণের সুন্নত আঁকড়ে ধর। সেগুলো তোমরা মজবুত ভাবে আঁকড়ে ধর। আর তোমরা দ্বীনের ব্যাপারে যে কোন নব আবিষ্কার থেকে বিরত থাক। কেননা প্রত্যেক নব আবিষ্কারই বিদয়াত, আর প্রতিটি বিদয়াতই ভ্রষ্টতা।

আশুরা উপলক্ষে রাসূল সাললহু আলাইহি ওয়া সালম অথবা তাঁর খলিফাগণ উল্লেখিত আমলের কোনটিই চালু করেননি। কোনরূপ দুঃখ-বেদনার প্রতীকও রেখে যাননি অথবা খুশি কিংবা উল্লসের প্রতীকও চালু করে যাননি।

কিন্তু রাসূল সাললহু আলাইহি ওয়া সালম যখন মদিনায় আসেন তখন দেখতে পেলেন ইহুদিরা আশুরা দিবসে রোজা পালন করে। তিনি তাদেরকে বললেন : এ দিনের রোজাটি কি জন্যে ? উত্তরে তারা বলল : এটি একটি মহান দিবস, যে দিবসে মুসা আ. কে আল্লহ তা-আলা দরিয়ায় ডুবে যাওয়া থেকে হেফাজত করেছেন। তাই আমরা এদিন রোজা রাখি। একথা শুনে রাসূল সাললহু আলাইহি ওয়া সালম বললেন : আমরাই মুসা আ. এর অনুসরণের বেশি উপযুক্ত। অতঃপর রাসূল সাললহু আলাইহি ওয়া সালম ঐ দিনটিতে রোজা রাখলেন এবং অন্যদেরকেও তা করার আদেশ করলেন।

কুরাইশরাও জাহেলী যুগে এ দিবসটির সম্মান ও শ্রদ্ধা করত। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রাসূল সাললহু আলাইহি ওয়া সালম সাহাবীগণকে আশুরা উপলক্ষে একটি রোজারই আদেশ করেছেন। কেননা তিনি মদিনায় এসেছেন রবিউল আউয়াল মাসে। এর পরবর্তী বছর তিনি আশু রার রোজা পালন করলেন এবং সাহাবিগণকে রোজা পালনের আদেশ করলেন। অতঃপর উক্ত বছরই রমজানের রোজা ফরজ হল, এবং আশু রার ওয়াজিব রহিত হল।

আশু রার রোজা ওয়াজিব ছিল, না-কি মুস্তাহাব ছিল এ ব্যাপারে আলেমগণের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। প্রসিদ্ধ দু’টি অভিমতের মধ্যে সঠিক হলো- রোজা ওয়াজিব ছিল । পরবর্তীতে মুস্তাহাবে রূপান্তরিত হয়, এখন যার ইচ্ছা রাখবে, আর যার ইচ্ছা রাখবে না। তখন আর রাসূল সাললহু আলাইহি ওয়া সালম লোকজনকে ঐ দিনে রোজা পালনের আদেশ করতেন না। তিনি আরো বলেন:

هذا يوم عاشوراء، وأنا صائم فيه، فمن شاء صام . متفق عليه . ( رواه البخاري :1864)

এটি আশুরা দিবস, আমি এতে রোজা রেখেছি। যার ইচ্ছা রোজা রাখতে পারে। (বুখারি, মুসলিম)

তিনি আরো বলেন :

صوم يوم عاشوراء يكفر سنة، وصوم يوم عرفة يكفر سنتين .

আশুরা দিবসের রোজা এক বছরের এবং আরাফা দিবসের রোজা দুই বছরের গুনাহ ক্ষমা করিয়ে দেয়।

রাসূল সাললহু আলাইহি ওয়া সালম জীবনের শেষ ভাগে এসে যখন শুনলেন ইয়াহুদীরাও এ দিনটি উদযাপন করে থাকে তখন তিনি বললেন :

لئن عشت إلى قابل لأصومن التاسع . ( رواه مسلم :1917)

যদি আমি আগামীতে বেঁচে থাকি তাহলে নয় তারিখেও একটি রোজা রাখব - যাতে করে ইয়াহুদীদের সাথে মিল না থাকে ।

সাহাবাদের মাঝে আবার কেউ কেউ আশু রার রোজা পালন করতেন না। বরং তারা আশুরা উপলক্ষে একটিমাত্র রোজা রাখা মাকরূহ মনে করতেন। কোন কোন আলেমও আশু রার রোজা মুস্তাহাব মনে করেন না। তবে সঠিক অভিমত অনুযায়ী রোজাটি মুস্তাহাব এবং সাথে নয় তারিখে রোজা রাখাও মুস্তাহাব। কেননা এটিই ছিল রাসূল সাললদু আলাইহি ওয়া সালম এর এ সম্পর্কে শেষ কথা -

لئن عشت إلى قابل لأصومن التاسع . ( رواه مسلم :১৯১৭)

এটিই রাসূল সাললদু আলাইহি ওয়া সালম এর সুন্নত।

এদিকে আশুরাকে কেন্দ্র করে অন্যান্য যে সকল কাজের আবিষ্কার করা হয়েছে- যেমন- নতুন কোন খাদ্য অথবা বস্ত্র তৈরি, সেদিন সংসারে বেশি খরচ করা, সারা বছরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র খরিদ করা, নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ইবাদত করা, সুরমা লাগানো, খেজাব লাগানো, গোসল করা, মুসাফা হা করা, বিভিন্ন মসজিদ কিংবা গুরুত্বপূর্ণ স্থান যিয়ারত ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলো সবই বিদয়াত। রাসূল সাললহু আলাইহি ওয়া সালম অথবা সাহাবাগণ এর কোনটিই চালু করেননি বা করতে বলেননি। কোন ইমামও এগুলো সমর্থন করেননি।

অতএব, প্রত্যেক মুসলমানের উচিত আলহ ও রাসূলের আনুগত্য করা, দ্বীন ও ধর্মের ব্যাপারে দলিল-প্রমাণের অনুসরণ করা। দ্বীন ইসলামের নিয়ামতের জন্যে আলহর প্রশংসা করা। এরশাদ হচ্ছে ,

لَقَدْ مَنَّ اللَّهُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ إِذْ بَعَثَ فِيهِمْ رَسُولًا مِنْ أَنْفُسِهِمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آَيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِنْ كَانُوا مِنْ قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُبِينٍ ﴿ آل عمران 164﴾

আলহ তা-আলা মুমিনদের মধ্য থেকে নির্বাচন করে রাসূল প্রেরণ করে তাদের উপর অনুগ্রহ করেছেন, তিনি তাদেরকে আয়াত পাঠ করে শুনান, তাদের আত্মশুদ্ধির চেষ্টা করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন। যদিও তারা ইতিপূর্বে প্রকাশ্য ভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত ছিল।

রাসূল সাললহু আলাইহি ওয়া সালম বলেন :

إن خير الكلام كلام الله، وخير الهدي هدي محمد، وشر الأمور محدثاتها، وكل بدعة ضلالة . ( رواه البخاري :3735)

নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী আলহর বাণী, আর সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মদ সা. এর আদর্শ, সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হচ্ছে দ্বীনি ব্যাপারে নব আবিষ্কারসমূহ, আর প্রতিটি বিদয়াতই ভ্রষ্টতা।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন