HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মূর্তি বনাম ভাস্কর্য সমকালীন বিতর্ক

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

যদি পূজা উপাসনার জন্য মূর্তি নির্মিত না হয় তবুও ?
অনেকেই ফতোয়া দিয়ে বসেন, এ ছবি, এ প্রতিকৃতি, এ ভাস্কর্যতো পূজার জন্য নয়। এতে দোষের কী? দোষের কিছু আছে কিনা তা জানতে প্রশ্ন করা দরকার, আপনি ছবিটা কেন টানাবেন, অর্থ, শ্রম, সময় ও মেধা খরচ করে ভাস্কর্যটা কেন নির্মাণ করবেন? এর উত্তর হতে পারে একাধিক। যেমন-

(ক) মূর্তিটি যার বা প্রতিকৃতিটি যার, তাকে স্মরণীয় করে রাখতে এ কাজটি আমরা করে থাকি। ভাল কথা, সে ভাল মানুষ, তাকে স্মরণীয় করে রাখা হোক এটা ইসলাম অনুসারীরাও চায়। কিন্তু তাকে স্মরণীয় করে রাখতে এ পদ্ধতি ব্যতীত অন্য কোনো পদ্ধতি আছে কিনা? যদি বিকল্প থাকে, তাহলে যা ইসলাম পছন্দ করে না এমন পদ্ধতি অবলম্বন করতে আমরা বাধ্য কেন? কে আমাদের বাধ্য করে? কে আমাদের প্ররোচিত করে?

এ পদ্ধতিতে তাকে স্মরণীয় করে রাখতে অন্য মানুষের কোনো কল্যাণ আছে কি না? যদি না থাকে তাহলে আমরা এমন অনর্থক কাজ কেন করব যা মৃত মানুষকে কোনো কল্যাণ দেয় না। যা জীবিত মানুষের কোনো উপকারে আসে না? তার নামে একটি হাসপাতাল, একটি ইয়াতিমখানা, একটি নলকূপ, একটি রাস্তা, একটি স্কুল নির্মাণ ইত্যাদি জনহিতকর কাজ করেও তাকে স্মরণীয় করে রাখা যায়। এতে তারও কল্যাণ, আর অন্যান্য মানুষেরও কল্যাণ। এ ভাল পদ্ধতি বাদ দিয়ে আমরা খারাপ পদ্ধতি গ্রহণ করব কার নির্দেশে?

(খ) মূর্তিটি যার তাকে সম্মান ও ভালোবাসা জানাতে তার ভাস্কর্য নির্মাণ করে থাকি। ভাল কথা, তার প্রতি সম্মান জানাতে ইসলাম অনুসারীরাও চায়। কিন্তু এ সম্মানের পদ্ধতিটা ইসলাম বিরোধী হতে হবে কেন? সম্মান প্রদর্শনের ব্যবস্থা এমন পদ্ধতিতে হওয়া দরকার যাতে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলে এতে অংশ নিতে পারে। আর মূর্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শনই হল মূর্তি পূজা। যারা মূর্তিকে পূজা করে, তারাও তো এ সাকার মূর্তির মাধ্যমে অনুপস্থিত সত্তার সম্মান করে। মূর্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শনতো একটি বিশেষ ধর্মীয় রীতি।

যদি বলা হয়, আসলে মূর্তির প্রতি আমাদের সম্মান নয়। শ্রদ্ধা প্রদর্শন নয়। তার প্রতি আমাদের ভালোবাসা নেই। বরং এটা হল যার মূর্তি তারই জন্য। তাহলে বলব, যে মূর্তির প্রতি আপনাদের কোনো শ্রদ্ধা নেই, ভালোবাসা নেই, কেউ সে মূর্তিটা ভাঙ্গতে চাইলে আপনাদের ব্যথা লাগে কেন? এ ব্যথা লাগার অনুভূতিই প্রমাণ করে আসলে আপনাদের ভালোবাসা ও সম্মান মূর্তির জন্য নিবেদিত। এটাই তো স্পষ্ট মূর্তিপূজা। ভাবতে আশ্চর্য লাগে, কত বড় মূর্খতা ও জাহেলিয়াত। একটি মূর্তি যা মানুষের কোনো কল্যাণে আসে না বরং পরোক্ষভাবে অকল্যাণই করে, তার প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে জীবিত, সমাজে সমাদৃত মানুষগুলোকে অপমান করা হয়। এর চেয়ে মূর্তি পূজার বড় দৃষ্টান্ত আর কী হতে পারে?

ইবরাহিম আ. তার পিতা ও সম্প্রদায়কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা এ মূর্তিগুলোর সামনে অবস্থান কর কেন?’ তারা বলল, ‘আমাদের পূর্বপুরুষদের এ রকম করতে দেখেছি।’ ইবরাহিম বলল, ‘যদি তোমরা ও তোমাদের বাপ-দাদারা স্পষ্ট ভ্রান্তিতে থাকে তবুও তাদের অনুসরণ করবে?’ (আম্বিয়া : ৫২-৫৪)

যারা এখন এগুলো করে তাদের কাছে এ কাজের সমর্থনে এর চেয়ে ভাল কোনো জওয়াব নেই।

(গ) বলা হতে পারে মূর্তির প্রতি সম্মান বা ভালোবাসা প্রদর্শন উদ্দেশ্য নয়। উদ্দেশ্য হল আমাদের জাতীয় পরিচয়, দেশজ সংস্কৃতি তুলে ধরা। ভাল কথা, জাতীয় পরিচয়, দেশজ সংস্কৃতি তুলে ধরতে সকল জাতির ও সব দেশের লোকেরাই চায়। এটা দেশ প্রেম সন্দেহ নেই। কিন্তু বাংলাদেশিদের সংস্কৃতি মূর্তির মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে এটা কোন সংস্কৃতির প্রকাশ। আমাদের সংস্কৃতিতে মূর্তি গড়ার সংস্কৃতি কোথায়? এটা ভারতের সংস্কৃতি হতে পারে বাংলাদেশের নয়। কাজেই যা আমাদের নয়, তা আমাদের বলে চালিয়ে দেয়া তো অন্যায় কাজ। আলোচিত লালন মূর্তির নির্মাতা মৃণাল হককে বিবিসি থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ওটা নির্মাণ করতে বিমান বন্দর চত্বর কেন বেছে নিলেন? তিনি উত্তরে বললেন, ‘বাহির থেকে মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করেই যেন আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে যায়। এ জন্য ওই স্থানটিকে বেছে নেয়া।’

কত চমৎকার জওয়াব! বাহির থেকে মানুষ এসেই যেন ধারণা করে বাংলাদেশি সমাজ ও সংস্কৃতি হল একটি পৌত্তলিক সংস্কৃতি। এরা শুধু একতারা দোতারা সেতারা নিয়েই ব্যস্ত থাকে। মৃণালের কথায় প্রমাণ, এটা ছিল বাংলাদেশি জাতির ওপর চাপিয়ে দেয়া একটি সাংস্কৃতিক আগ্রাসন।

কিন্তু তারা এতটুকু ভাবল না, এ দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মপ্রাণ মানুষ যতবার এটা দেখবে ততবার অভিশাপ দেবে। এ স্থান থেকে হাজার হাজার হজ যাত্রী পৌত্তলিকতা ও মূর্তি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে দিতে মূর্তিমুক্ত পবিত্র মক্কার উদ্দেশ্যে হজ করতে যায়, উমরা করতে যায়। আবার এ পথেই ফিরে আসে। এটি তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করবে মারাত্মকভাবে।

একটি ভাস্কর্য যতই সুন্দর হোক, তা যদি ইসলামি সংস্কৃতির কোনো পরিচয় বহন করে তাহলে তা ভারত বা আমেরিকা তাদের দেশের উন্মুক্ত স্থানে স্থাপন করতে দেবে না। তারা বলবে, ‘এটি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’ বাংলাদেশে কেন এমন ভাস্কর্য স্থাপিত হবে, যা এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে? যা একশ ভাগই একটি পৌত্তলিক গোষ্ঠীর সংস্কৃতির অংশ।

বলা হচ্ছে, ইরানে মূর্তি আছে, ইরাকে আছে, লিবিয়াতে মূর্তি আছে, ইন্দোনেশিয়াতে মূর্তি আছে। আরো অনেক মুসলিম দেশে আছে। তাহলে আমাদের দেশে থাকলে ক্ষতি কী? ভাল কথা। মুসলিম দেশে কোনো খারাপ বস্ত্ত থাকলে সেটা গ্রহণ করা যায়, কিন্তু কোনো ভাল বিষয় থাকলে তা গ্রহণ করা যায় না?! অনেক মুসলিম দেশে শরিয়া আইন চালু আছে। আছে ইসলামি পারিবারিক আদালত আছে। কিংবা সেখানে সুদি কারবার নিষিদ্ধ। অনেক মুসলিম দেশে সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা নেই। অথচ মুসলিম দেশে যদি ইসলাম পরিপন্থী কিছু থাকে তাহলে সেটা আমাদের অনুসরণ করতে হবে! আপনাদের ব্যাপারে কী তাহলে আল্লাহর সে বাণীই প্রযোজ্য, যেখানে তিনি বলেছেন- ‘তারা সঠিক পথ দেখলেও তাকে পথ হিসাবে গ্রহণ করবে না। আর ভ্রান্ত পথ দেখলে পথ হিসাবে গ্রহণ করবে। এটা এ জন্য যে, তারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছে এবং সে সম্পর্কে তারা ছিল অমনোযোগী।’ (নিসা : ১১৫)

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন