HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আমরা কিভাবে কুরআন বুঝব

লেখকঃ ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী

কুরআন কেন আমাদের বুঝতে হবে?
কুরআন বুঝার পন্থা সম্পর্কে আলোকপাত করার আগে আমাদের বুঝতে হবে কুরআন বুঝার কেন এত গুরুত্ব। সেটিই নিচে তুলে ধরা হল :

কুরআন হচ্ছে দ্বীনের সকল জ্ঞানের উৎস এবং মৌলভিত্তির আধার। দ্বীন, দুনিয়া ও আখিরাতের সকল কল্যাণ এর মাধ্যমেই শুধু অর্জিত হয়। কুরআন নাযিল হয়েছে এর বিধান অনুযায়ী আমল করার জন্য। আমলের জন্য বোঝা ও উপলব্ধির প্রয়োজন। না বুঝে আমল করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। যে ব্যক্তি কুরআন পড়ে অথচ বুঝে না তার উদাহরণ হল - যেমন একদল লোকের কাছে তাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি নির্দেশিকা আসল, যাতে লিখা আছে কি করা যাবে আর কি করা যাবে না, কিসে তাদের মঙ্গল হবে এবং কিভাবে ভুলপথে চললে শত্রু তাদেরকে পাকড়াও করবে, তারা সে নির্দেশিকা মাথায় রেখে খুবই সম্মান দেখাল এবং সুন্দর সূরে তা পড়ল কিন্তু বুঝার চেষ্টা না করে ভুল পথে চলল, ফলে অনিবার্যরূপেই তারা শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হল।

কুরআনের অর্থ না বুঝার মানেই হল দ্বীনের সঠিক জ্ঞান ও ধারণা না থাকা। আবুদ্দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলাম, তিনি আকাশের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললেন, ‘‘এটা সে সময় যখন মানুষের কাছ থেকে জ্ঞান উঠিয়ে নেয়া হবে, ফলে তারা তা অর্জন করতে সক্ষম হবে না।’’ তখন যিয়াদ ইবন লাবিদ আল-আনসারী বললেন, কিভাবে জ্ঞান আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া হবে অথচ আমরা কুরআন পড়েছি? আল্লাহর কসম! আমরা অবশ্যই কুরআন পড়ব, আর আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদেরকে কুরআন পড়াব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘‘হে যিয়াদ তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক (তোমার মৃত্যু হোক) [এটা কোন বদদোয়া নয়, বরং আরবী বাকরীতি। অপছন্দনীয় কিংবা সঠিক নয় এমন কথা বলা হলে আরবগণ এ বাক্য কিংবা ‘ওয়াইলাক’ (তোমার ধ্বংস) ব্যবহার করে থাকে।], আমি তো তোমাকে মদীনাবাসী ফাকীহদের মধ্যে গণ্য করতাম।এ তাওরাত এবং ইনজিল ইয়াহুদ ও নাসারাদের কাছে আছে। কিন্তু তা তাদের কি কাজে এসেছে?’’ জুবায়ের বললেন, এরপর আমরা উবাদাহ ইবন আস-সামিতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম। আমি বললাম, তুমি কি শুনেছ তোমার ভাই আবুদ্দারদা কি বলছে? আর আবুদ্দারদা কি বলেছে তা তাকে অবহিত করলাম। তিনি বললেন, আবুদ্দারদা সত্য বলেছে, তুমি চাইলে আমি তোমার কাছে সে ইলম সম্পর্কে বলব যা সর্বপ্রথম উঠিয়ে নেয়া হবে, তা হল খুশূ ও বিনয়। তুমি হয়ত কোন মাসজিদে প্রবেশ করে সেখানে কোন বিনয়ী লোক পাবে না। [সুনান তিরমিযী, কিতাবুল ইলম, বাব: ইলম উঠে যাওয়া প্রসঙ্গে যা এসেছে, হাদীস নং ২৬৫৩, তিরমিযী বলেন, ‘এটি হাসান গরীব হাদীস’। আলবানী বলেন, ‘সহীহ’।]

অতএব বুঝা গেল যে, ইলম ও জ্ঞান উঠে যাওয়ার কারণই হল এমন ব্যক্তিগণের অভাব ও অনুপস্থিতি যারা ইলমকে ধারণ করবেন এবং সঠিকভাবে উপলব্ধি করবেন ও আমল করবেন।

কুরআন বুঝা ও কুরআন নিয়ে চিন্তা-গবেষণার বিপুল সাওয়াব রয়েছে। উকবা ইবন আমের আল-জুহানী বলেন, আমরা আহলে সুফফার সাথে থাকাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার আমাদের কাছে এসে বললেন, ‘‘তোমাদের কোন্ ব্যক্তির এটা পছন্দ যে, সে আল্লাহর অবাধ্যতা ছাড়াই এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট না করে বুতহান অথবা আকীক প্রান্তরে [মদীনার দু’টো উপত্যকা।] গিয়ে দু’টো বিশালকায় উট নিয়ে আসবে?’’ আমরা বললাম, আমাদের সবারই তা পছন্দ। তিনি বললেন, তোমাদের কেউ প্রতিদিন মাসজিদে গিয়ে কিতাবুল্লার দু’টো আয়াত শেখা কিংবা পড়া দু’ উটের চেয়েও তার জন্য উত্তম। আর তিনটি আয়াত তিনটি উটের চেয়ে এবং চারটি আয়াত চারটি উটের চেয়ে উত্তম। আর যতগুলো আয়াত সে অধ্যয়ন করবে তা সমসংখ্যক উটের চেয়ে উত্তম।’’ [সহীহ মুসলিম, কিতাব : মুসাফিরদের সালাত ও এর কসর, বাব : কুরআন শেখা ও সালাতের মধ্যে কুরআন অধ্যয়নের ফযীলত, হাদীস নং ১৯০৯।] যদি জ্ঞানার্জন সবচেয়ে উত্তম ও মর্যাদাকর কাজ হয়ে থাকে তাহলে এর অগ্রভাগে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে আল্লাহর কালাম জানা, বুঝা ও উপলব্ধি করা। কেননা জ্ঞানের মর্যাদা জ্ঞানগত বিষয়ের মর্যাদার উপর নির্ভর করে। কিতাবুল্লাহ হচ্ছে জগতের সবচেয়ে সম্মানিত বিষয়; সুতরাং এর জ্ঞানার্জনই হল সবচেয়ে সম্মানিত ও মর্যাদাকর কাজ।

মুসলমানদের অনৈক্য, ভুল বুঝাবুঝি ও হানাহানি দূর করে ভালবাসা, সম্প্রীতি ও হৃদ্যতা আনয়নের বিশুদ্ধ উপকরণই হল আল-কুরআনকে সঠিকভাবে বুঝা ও হৃদয়ঙ্গম করা। কুরআনকে সঠিকভাবে না বুঝাই হল যত অনৈক্যের মূল। ইবরাহীম আত-তাইমী বলেন, ‘উমার রা. একদিন একাকী ছিলেন, তিনি স্বগতোক্তি করে বললেন, কিভাবে এ উম্মতের মধ্যে বিভেদ থাকতে পারে, অথচ তাদের নবী এক এবং কিবলা এক!? এরপর তিনি ইবন আববাস রা.কে ডেকে পাঠালেন ও জিজ্ঞাসা করলেন, এ উম্মত কিভাবে বিভক্ত হতে পারে অথচ তাদের নবী এক ও কিবলা এক? ইবন আববাস বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন, আমাদের উপর কুরআন নাযিল হয়েছে এবং আমরা তা অধ্যয়ন করেছি এবং জেনেছি কোন ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। আর আমাদের পর একদল লোক আসবে যারা কুরআন পড়বে অথচ জানবে না কোন্ ব্যাপারে কুরআন নাযিল হয়েছে। ফলে সে ব্যাপারে তারা নিজস্ব মতামত দেবে। আর যখন তাদের নিজস্ব মতামত হবে তারা মতভেদ করবে এবং এভাবে মতভেদ করতে করতেই তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হবে...।’’ [ইবরাহীম ইবন মূসা ইবন মুহাম্মাদ আশ-শাতিবী, আল-মুয়াফাকাত ফী উসূলিল ফিকহ, তাহকীক : মাশহুর হাসান সালমান, দার আফফান, ১৯৯৭, ৪/২০০.]

কুরআন শেখা ও তা সঠিকভাবে বুঝা থেকে যারা বিরত থাকে ও মুখ ফিরিয়ে রাখে তারা মূলত কুরআনী জীবন যাপন থেকে সরে গিয়ে অন্য জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। আল্লাহ মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের মাধ্যমে জানিয়েছেন, যাদের কাছে কুরআনের জ্ঞান এসেছে অথচ সে জ্ঞান থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ও তা পরিত্যাগ করেছে, তাদেরকে তিনি জ্ঞানের আলোতে উদ্ভাসিত করেননি, বরং অজ্ঞানতার মধ্যেই তারা হাবুডুবু খেয়েছে। তিনি ইয়াহুদদের সম্পর্কে বলেন,

﴿وَلَمَّا جَاءَهُمْ رَسُولٌ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ مُصَدِّقٌ لِمَا مَعَهُمْ نَبَذَ فَرِيقٌ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ كِتَابَ اللَّهِ وَرَاءَ ظُهُورِهِمْ كَأَنَّهُمْ لا يَعْلَمُونَ (101) وَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُوا الشَّيَاطِينُ عَلَى مُلْكِ سُلَيْمَانَ ﴾

‘‘আর যখন তাদের নিকট আল্লাহর কাছ থেকে একজন রাসূল এল, তাদের সাথে যা আছে তা সমর্থন করে, তখন আহলে কিতাবের একটি দল আল্লাহর কিতাবকে তাদের পেছনে ফেলে দিল, (এভাবে যে,) মনে হয় যেন তারা জানে না। আর তারা অনুসরণ করেছে, যা শয়তানরা সুলায়মানের রাজত্বে পাঠ করত।’’ [সূরা আল-বাকারাহ : ১০১-১০২]

ইয়াহুদদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে কিতাব আসার পর তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল বলে আল্লাহ তাদেরকে এমন এক নিকৃষ্ট গ্রন্থের ফিতনায় তাদেরকে আক্রান্ত করেছিলেন যা সুলায়মান আলাইহিস সালামের রাজত্বে শয়তান তিলাওয়াত করতো। [আবদুর রহমান ইবন সা‘দী, আল-কাওয়ায়েদ আল-হিসান, ৩৪নং ধারা।]

আল্লাহ কুরআন থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখার শাস্তি সম্পর্কে বলেন,

﴿وَمَنْ أَعْرَضَ عَنْ ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنْكاً وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَى﴾

‘‘আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জন্য হবে নিশ্চয় এক সংকুচিত জীবন এবং আমি তাকে কিয়ামত দিবসে উঠাব অন্ধ অবস্থায়।’’ [সূরা ত্বহা : ১২৪]

তিনি আরো বলেন,

﴿وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ ذُكِّرَ بِآياتِ رَبِّهِ ثُمَّ أَعْرَضَ عَنْهَا إِنَّا مِنَ الْمُجْرِمِينَ مُنْتَقِمُونَ﴾

‘‘আর তার চেয়ে বড় যালিম আর কে, যাকে স্বীয় রবের আয়াতসমূহের মাধ্যমে উপদেশ দেয়ার পর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়? নিশ্চয় আমি অপরাধীদের কাছ থেকে প্রতিশোধগ্রহণকারী।’’ [সূরা আস-সাজদাহ : ২২]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন