hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

চার ইমামের আকীদাহ

লেখকঃ একদল অভিজ্ঞ আলেম

৩৩
প্রশ্ন: যখন তোমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, نواقض الإسلام বা ইসলাম ভঙ্গকারী বিষয়গুলো কী কী?
উত্তর: বল, আরবী শব্দ “ الناقض ” অর্থ বাতিলকারী ও বিনষ্টকারী। এটি যখন কোনো বস্তুর ওপর আপতিত হয় তখন বস্তুকে ধ্বংস ও বিনষ্ট করে দেয়। যেমন অযু ভঙ্গের কারণসমূহ। যে তা করবে তার অযু বাতিল হয়ে যাবে এবং তাকে পুনরায় অযু করতে হবে। ইসলাম ভঙ্গকারী বস্তুগুলোও অনুরূপ। বান্দা যখন তা করবে, তার ইসলাম ভঙ্গ ও বিনষ্ট হবে এবং সে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের হয়ে কুফরীতে প্রবেশ করবে। আলেমগণ রিদ্দা ও মুরতাদের হুকুম সম্পর্কিত অধ্যায়ে বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করেছেন, যেগুলোর কারণে মুসলিম তার দীন থেকে বের হয়ে মুরতাদে হয়ে যায় এবং তার জীবন ও সম্পদ হালাল হয়ে যায়। আলেমগণ যেগুলোর ওপর ঐকমত হয়েছেন এমন ইসলাম ভঙ্গকারী বিষয় দশটি। এগুলো হচ্ছে, ১) আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতে শির্ক করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغۡفِرُ أَن يُشۡرَكَ بِهِۦ وَيَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُۚ ١١٦﴾ [ النساء : ١١٦ ]

“নিশ্চয় আল্লাহ্ তাঁর সাথে অংশীদার করাকে ক্ষমা করেন না এবং এ ছাড়া যাকে চান ক্ষমা করেন”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১১৬] তিনি আরো বলেন, ﴿إِنَّهُۥ مَن يُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ حَرَّمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِ ٱلۡجَنَّةَ وَمَأۡوَىٰهُ ٱلنَّارُۖ وَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِنۡ أَنصَارٖ ٧٢﴾ [ المائ‍دة : ٧٢ ] “নি:সন্দেহে যে আল্লাহর সাথে শির্ক করবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন এবং তার আবাস জাহান্নাম। আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই”। [সূরা আল-মায়িদা, আয়াত: ৭২] এরূপ আরো কয়েকটি শির্ক হচ্ছে, গায়রুল্লাহকে ডাকা, তাদের নিকট ফরিয়াদ করা ও তাদের আশ্রয় প্রার্থনা করা। অনুরূপভাবে তাদের জন্যে মান্নত ও জবেহ করা। যেমন কেউ কল্যাণ অর্জন কিংবা অকল্যাণ দূর করার জন্য জিন অথবা কবর অথবা জীবিত কিংবা মৃত অলীর জন্য পশু জবেহ করল। যেমন চরম মিথ্যুক গোমরাহদের বানানো মিথ্যা ও সন্দেহপূর্ণ কাজ দ্বারা ধোকাপ্রাপ্ত মূর্খরা করে থাকে।

২) যে তার নিজের ও আল্লাহর মাঝে মধ্যস্থতাকারী নির্ধারণ করে তাদেরকে আহ্বান করে, তাদের নিকট সুপারিশ চায় এবং দুনিয়া ও আখিরাতের উদ্দেশ্য ও আশা হাসিল করার জন্য তাদের ওপর ভরসা করে, সে আলেমদের ঐকমতে কাফির। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿قُلۡ إِنَّمَآ أَدۡعُواْ رَبِّي وَلَآ أُشۡرِكُ بِهِۦٓ أَحَدٗا ٢٠﴾ [ الجن : ٢٠ ] “বল, আমি তো কেবল আমার রবকেই ডাকি এবং তার সাথে কাউকে শরীক করি না”। [সূরা আল-জিন, আয়াত: ২০]

৩) যে মুশরিকদের কাফির বলে না অথবা তাদের কুফরীতে সন্দেহ করে অথবা তাদের মাযহাবকে শুদ্ধ আখ্যায়িত করে, সে কাফির। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আর ইহুদীরা বলে, উযাইর আল্লাহর পুত্র এবং নাসারারা বলে, মাসীহ আল্লাহর পুত্র। এটা তাদের মুখের কথা। তারা সেসব লোকের কথার অনুরূপ বলছে যারা ইতিপূর্বে কুফরি করেছে। আল্লাহ তাদের ধ্বংস করুন, এদেরকে কোথায় ফেরানো হচ্ছে?” [সূরা তাওবা, আয়াত: ৩০] কারণ কুফরির প্রতি সন্তুষ্ট থাকাও কুফরি। ইসলাম ব্যতীত অন্য দীন বাতিল এ কথার বিশ্বাস করার মাধ্যমে তাগুতকে অস্বীকার করা, তাকে ঘৃণা করা, তা ও তার অনুসারীদের থেকে মুক্ত হওয়া এবং সাধ্যানুসারে তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা ব্যতীত দীন সঠিক হয় না।

৪) যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ থেকে অপরের আদর্শ পূর্ণতম অথবা তার ফয়সালার চেয়ে অপরের ফয়সালা বেশী সুন্দর বলে বিশ্বাস করে। যেমন কেউ তাগূতদের ফয়সালা ও মানব রচিত আইন-কানুনকে আল্লাহ ও তার রাসূলের ফয়সালার ওপর প্রাধান্য দিলো। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤۡمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيۡنَهُمۡ ثُمَّ لَا يَجِدُواْ فِيٓ أَنفُسِهِمۡ حَرَجٗا مِّمَّا قَضَيۡتَ وَيُسَلِّمُواْ تَسۡلِيمٗا ٦٥﴾ [ النساء : ٦٥ ] “অতএব তোমার রবের কসম, তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক মানে, তারপর তুমি যে ফয়সালা দেবে সে ব্যাপারে নিজদের অন্তরে কোন দ্বিধা অনুভব না করে এবং পূর্ণ সম্মতিতে মেনে নেয়”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬৫] আর যে পথভ্রষ্ট পীরদের তরীকাসমূহ, তাদের বানানো কুসংস্কার ও বিদআতসমূকে সহীহ সুন্নাতের ওপর প্রাধান্য দেয়। অথচ সে জানে নিশ্চয় এটি নববী সুন্নাত। যে এরূপ করবে সে আলেমদের ঐকমতে কাফির।

৫) যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনিত কোনো বস্তুকে ঘৃণা করল, সে কুফরি করল; যদিও সে তার ওপর আমল করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ كَرِهُواْ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأَحۡبَطَ أَعۡمَٰلَهُمۡ ٩ ﴾ [ محمد : ٩ ]

“তা এ জন্য যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তারা তা অপছন্দ করে। অতএব তিনি তাদের আমলসমূহ বিনষ্ট করে দিয়েছেন”। [সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ৯]

৬) যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দীনের কোনো বিষয় নিয়ে উপহাস করল, যেমন তার কোনো হুকুম, বিধান, সুন্নত অথবা তার সংবাদসমূহ নিয়ে ঠাট্টা করল অথবা আল্লাহ তা‘আলা আনুগত্য-কারীদের জন্য যে ছওয়াব এবং অবাধ্যদের জন্যে যে শাস্তি প্রস্তুত করেছেন, সে বিষয়ে আল্লাহ ও তার রাসূল যে সংবাদ দিয়েছেন তা নিয়ে উপহাস করল, সে কুফরি করল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, قُلْ أَبِاللّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنتُمْ تَسْتَهْزِؤُونَ لاَ تَعْتَذِرُواْ قَدْ كَفَرْتُم بَعْدَ إِيمَانِكُمْ “বল, আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমূহ ও তার রাসূলের সাথে কি তোমরা বিদ্রূপ করছিলে? তোমরা ওযর পেশ কর না। তোমরা ঈমানের পর কুফরি করেছ”। [সূরা তাওবা, আয়াত: ৬৫-৬৬]

৭) যাদু করা। এটি জিন ও শয়তানকে ব্যবহার এবং তাদেরকে আল্লাহর সাথে শরীক করা ও তাদের সন্তুষ্টি অর্জনে কুফরি কাজ করা ছাড়া সম্পন্ন হয় না। মানুষের আবেগ-অনুভূতিতে প্রভাব বিস্তারকারী সারফ ও আতফ (স্বামী থেকে স্ত্রীকে ফিরানো ও স্ত্রীর ওপর স্বামীকে আসক্ত করার মন্ত্র) যাদুর অন্তর্ভুক্ত। এ কাজ যে করল অথবা তাতে রাজি হল সে কুফরি করল। প্রমাণ আল্লাহর বাণী: ﴿وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنۡ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَآ إِنَّمَا نَحۡنُ فِتۡنَةٞ فَلَا تَكۡفُرۡۖ ١٠٢﴾ [ البقرة : ١٠٢ ] “আর তারা কাউকে শেখাত না যে পর্যন্ত না বলত যে, আমরা তো পরীক্ষা। সুতরাং তোমরা কুফরি করো না”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১০২]

৮) মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের পক্ষপাতিত্ব এবং তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করা কুফরি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَتَّخِذُواْ ٱلۡيَهُودَ وَٱلنَّصَٰرَىٰٓ أَوۡلِيَآءَۘ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِيَآءُ بَعۡضٖۚ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمۡ فَإِنَّهُۥ مِنۡهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّٰلِمِينَ ٥١﴾ [ المائ‍دة : ٥١ ]

“আর তোমাদের থেকে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। নিশ্চয় আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে হিদায়েত করেন না”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৫১]

৯) যে বিশ্বাস করে যে, কতক লোকের জন্য মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শরীয়তের বাইরে থাকার সুযোগ আছে, যেমন খিযির আলাইহিস সালামের জন্য মূসা আলাইহিস সালামের শরীআতের বাইরে থাকার সুযোগ ছিল, সে কাফির। কারণ আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

﴿وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥﴾ [ ال عمران : ٨٥ ]

“যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্ম গ্রহণ করবে তার কোনো আমল গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে”। [সূরা আল-ইমরান, আয়াত: ৮৫]

১০) আল্লাহর দীন থেকে বিমুখ হওয়া; তা শেখে না ও সে অনুযায়ী আমল করে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّن ذُكِّرَ بِ‍َٔايَٰتِ رَبِّهِۦ ثُمَّ أَعۡرَضَ عَنۡهَآۚ إِنَّا مِنَ ٱلۡمُجۡرِمِينَ مُنتَقِمُونَ ٢٢﴾ [ السجدة : ٢٢ ]

“যে ব্যক্তিকে আল্লাহর আয়াতসমূহ দ্বারা উপদেশ প্রদান করা হয়, অতঃপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার চেয়ে যালিম আর কে হতে পারে? নিশ্চয় আমি অপরাধীদেরকে শাস্তি দেব”। [সূরা আস-সাজদাহ, আয়াত: ২২] এখানে আল্লাহর দীন থেকে বিমুখ হওয়া অর্থ হচ্ছে, দীনের আবশ্যিক বিষয়গুলো না শেখা, যে গুলো দীনের মূলনীতি হওয়ায় সেগুলো সম্পর্কে জানা ছাড়া দীন বিশুদ্ধ হয় না।

ইসলাম ভঙ্গের কারণগুলো উল্লেখ করার পর দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবাণীর আলোচনা করা ভালো মনে করছি।

১) ইসলাম ভঙ্গকারী এসব বস্তু উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হলো তা থেকে সতর্ক থাকা ও মানুষকে সাবধান করা। কারণ, শয়তান ও তার পথভ্রষ্ট, বিকারগ্রস্ত সাঙ্গ-পাঙ্গরা মুসলিমদের ক্ষতি করার অপেক্ষায় থাকে। ফলে তারা তাদের কতকের অসতর্কতা ও মূর্খতাকে হকের গণ্ডি থেকে বের করে বাতিলের দিকে এবং জান্নাতের পথ থেকে বিচ্যুত করে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ মনে করে।

২) ইসলাম ভঙ্গকারী এসব বিষয়াবলী বাস্তবতার ওপর প্রয়োগ করা বিজ্ঞ আলেমদের কাজ। কেননা তারাই মানুষের ওপর বিধান আরোপ করার জন্য দলীল-প্রমাণসমূহ, হুকুম-আহকাম ও নীতিমালাসমূহ জানেন। এটা প্রত্যেকের জন্যে বৈধ নয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন