HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদ

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমদ

প্রথমত : দুনিয়াবী সুফল :
তাওহীদের বদৌলতে আমরা বিস্তর-বেহিসাব, সুফল-কল্যাণ অর্জন করে থাকি। তার উল্লেখযোগ্য উদাহরণ নিম্নরূপ :

১. তাওহিদ মানে সত্য ও সততাকে আঁকড়ে ধরে ন্যায় ও ইনসাফের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা। সঠিক ও সরল পথে পরিচালিত হওয়া। মূর্খতা, কুসংস্কার, ধারণাব্রতীতা ও ভ্রান্তির ঊর্ধ্বে থাকা। এরশাদ হচ্ছে—

ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ الْبَاطِلُ . ( سورة لقمان :৩০)

‘এ দ্বারাই প্রমাণ যে, আল্লাহ তাআলাই সত্য এবং আল্লাহ তাআলা ব্যতীত তারা যাদের পূজা করে সব মিথ্যা।’

২. তাওহিদ মানে জান-মালের পূর্ণ নিরাপত্তা অর্জন করা। অবৈধভাবে কারো উপর অত্যাচার বা সীমা-লঙ্ঘন করা হতে সম্পূর্ণ রূপে বিরত থাকা। রাসূল সা. বলেন—

أمرت أن أقاتل الناس، حتى يقولوا لا إله إلا الله، فإذا قالوها عصموا مني دماءهم وأموالهم إلا بحقها .

‘আমি মানুষের সাথে জেহাদ করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি—যতক্ষণ পর্যন্ত তারা لاإله إلا الله না বলবে। যখন তারা لاإله إلا الله বলবে, আমার থেকে তাদের জান-মাল নিরাপদ করে নিবে। তবে শরিয়তের বিধি মোতাবেক—শাস্তির উপযুক্ত—হলে ভিন্ন কথা।’

৩. তাওহিদ মানে উৎকৃষ্ট জীবন ও প্রভূত কল্যাণ অর্জন করা। এরশাদ হচ্ছে—

مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً . ( سورة النحل :৯৭)

‘যে সৎকর্ম সম্পাদন করে সে ঈমানদের পুরুষ হোক বা নারী আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব।’

পক্ষান্তরে তাওহিদ প্রত্যাখ্যান করে যে নিমজ্জিত থাকে শিরকের অন্ধকারের অতল গহবরে—সে খুবই ভাগ্যহত, আল্লাহ তাআলার রহমত হতে বিতাড়িত এবং সংকীর্ণতার দুর্বিষহ জীবন যাপনে বাধ্য। এরশাদ হচ্ছে—

وَمَنْ أَعْرَضَ عَنْ ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنْكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَى .( سورة طه :১২৪)

‘এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কেয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব।’

৪. তাওহিদ মানে সাম্য-মৈত্রী ও ন্যায়-ইনসাফের বাস্তব অনুশীলন। কারণ তাওহিদ অনুসারীদের সামনে থাকে এক পরম ও অভীষ্ট লক্ষ, মহৎ উদ্দেশ্য—যার জন্য সে দুর্গম পথ অতিক্রম করছে। অর্থাৎ আল্লাহ সুবহানাহু ও তায়ালার অপার সান্নিধ্য। তদুপরি তার থাকে সঠিক ও নির্ভুল দিক নির্দেশনা যার উপর দিয়ে সে নির্বিঘ্নে পথ চলে ; অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার কিতাব, রাসূল সা. এর সুন্নত। সে উভয়ের মাঝে সামঞ্জস্য বিধান করে পারংগমতার সাথে স্বীয় ব্রত পালন করে। এরশাদ হচ্ছে—

إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ . ( الحجرات :১৩)

‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলার নিকট সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেজগার।’ রাসূল সা. বলেন—

إن الله لاينظر إلى صوركم وأجسامكم، ولكن ينظر إلى قلوبكم وأعمالكم .

‘আল্লাহ তাআলা তোমাদের চেহারা ও শরীর পর্যবেক্ষণ করেন না। তিনি পর্যবেক্ষণ করেন তোমাদের অন্তর ও আমল সমূহ।’

৫. তাওহিদ মানে মানুষকে মানুষের দাসত্ব হতে মুক্ত ও স্বাধীন করা। কারণ তাওহিদ বা একত্ববাদ-এর অর্থ একমাত্র আল্লাহ তাআলার বশ্যতা, অধীনতা ও দীনতা স্বীকার করা। তার সৃষ্টি জীবের আনুগত্য ও পূজ্যতা পরিহার করা। তদুপরি তাওহিদ মানুষের বিবেক-বুদ্ধি ও বোধশক্তিকে বিশ্বজগৎ ও এর ভিতর সৃষ্ট যাবতীয় বস্ত্ত—জীব-উদ্ভিদ সম্পর্কে মুশরিক বা পৌত্তলিকদের আবিষ্কৃত-অনুসৃত কুসংস্কার ও বানোয়াট কল্প-কাহিনী হতে মুক্ত ও পরিশুদ্ধ করে। মানুষের চিত্ত ও চেতনাকে পরাক্রমশালী আল্লাহ ব্যতীত সকলের সামনে হীনতা নীচতা ও আত্মসমর্পণ হতে বিরত রাখে। সর্বোপরি মানুষের জীবন চক্রকে সীমা-লঙ্ঘনে অভ্যস্ত, প্রভুত্বের দাবিদার ও নববী আহবানের সাথে যুদ্ধ ঘোষণাকারীদের আধিপত্য হতে মুক্ত করে।

৬. তাওহিদ মানে ভারসাম্যপূর্ণ পরিশীলিত, পরিমার্জিত ব্যক্তিত্ব গঠন করা। কারণ তাওহিদ সৃষ্টি কুলের সামনে এমন এক লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও গন্তব্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছে—যা আল্লাহমুখী ও তার সন্তুষ্টির জিম্মাদার। তাওহিদে বিশ্বাসী ব্যক্তি মন-মস্তিষ্ক ও সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে—যা তার অন্তরে প্রশান্তি, হৃদয়ে অবিচলতা ও আত্মায় অনাবিল সুখ সযত্নে নিয়ে আসে। পক্ষান্তরে মূর্তিপূজকদের উপাস্য-হাজারো প্রভু তাদের অন্তরসমূহকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন বহুধা বিভক্ত করে রাখে। তারা সর্বদাই নানান পদ্ধতিতে তাদের উপাস্য-প্রভুদের সন্তুষ্ট করার নিমিত্তে কিংকর্তব্যবিমূঢ় থাকে। আল্লাহ তাআলা ইউসুফ আ.-এর উপদেশ উল্লেখ করেন—

يَا صَاحِبَيِ السِّجْنِ أَأَرْبَابٌ مُتَفَرِّقُونَ خَيْرٌ أَمِ اللَّهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ . ( سورة يوسف :৩৯)

‘হে কারাগারের সঙ্গীরা! পৃথক পৃথক অনেক উপাস্য ভাল, না পরাক্রমশালী এক আল্লাহ?’ অন্যত্র বলেন—

ضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا رَجُلًا فِيهِ شُرَكَاءُ مُتَشَاكِسُونَ وَرَجُلًا سَلَمًا لِرَجُلٍ هَلْ يَسْتَوِيَانِ مَثَلًا الْحَمْدُ لِلَّهِ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ . ( سورة الزمر :২৯)

‘আল্লাহ তাআলা এক দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন : এক লোকের উপর বিরোধী ক’জন মালিক রয়েছে, আরেক ব্যক্তির প্রভু মাত্র একজন—তাদের উভয়ের অবস্থা কি সমান ? সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার। কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।’

৭. তাওহিদ আস্থাশীল দৃঢ় অন্তকরণ তৈরি করে। কারণ, তাওহিদ কানায় কানায় পূর্ণ করে দেয় মানুষের অন্তকরণকে আল্লাহ তাআলার আস্থা ও তার উপর নির্ভরতা দ্বারা। সে তার নিঃসঙ্গতা ও গোপনীয়তায় একমাত্র আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না। যেহেতু সে জানে আল্লাহ তাআলা ছাড়া এ বিশ্ব পরিমন্ডলে কেউ হস্তক্ষেপের অধিকার রাখে না। কিংবা উপকার বা অপকার কিছুই করতে পারে না। আল্লাহ তাআলা ছাড়া মানবজাতি যাদের এবাদত-উপাসনা করে তারা স্বয়ং নিজেদের লাভ ক্ষতির যোগ্যতা রাখে না। অন্যদের কল্যাণ-অকল্যাণ করার কোন প্রশ্নই আসে না। আল্লাহ তাআলার ওলীগণ নির্বিঘ্ন অন্তর ও আস্থাশীলতার অধিকারী হয়ে থাকেন, যার বাস্তব নমুনা আল্লাহ তাআলার নবী নূহ আ.। তিনি তার সম্প্রদায়কে বলেছেন—

يَا قَوْمِ إِنْ كَانَ كَبُرَ عَلَيْكُمْ مَقَامِي وَتَذْكِيرِي بِآَيَاتِ اللَّهِ فَعَلَى اللَّهِ تَوَكَّلْتُ فَأَجْمِعُوا أَمْرَكُمْ وَشُرَكَاءَكُمْ ثُمَّ لَا يَكُنْ أَمْرُكُمْ عَلَيْكُمْ غُمَّةً ثُمَّ اقْضُوا إِلَيَّ وَلَا تُنْظِرُونِ . ( سورة يونس :৭১)

‘হে আমার সম্প্রদায়, যদি তোমাদের মাঝে আমার অবস্থান এবং আল্লাহ তাআলার আয়াতসমূহের মাধ্যমে নসিহত করা ভারী বলে মনে হয়ে থাকে, তবে আমি আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা করছি। এখন তোমরা সবাই মিলে নিজেদের কর্ম সাব্যস্ত কর এবং এতে তোমাদের শরিকদেরকে সমবেত করে নাও। যাতে তোমাদের মাঝে নিজেদের কাজের ব্যাপারে কোন সন্দেহ-সংশয় না থাকে। অতঃপর আমার সম্পর্কে যা কিছু করার করে ফেল এবং আমাকে অবকাশ দিয়ো না।’

এর উত্তম নমুনা আল্লাহ তাআলার নবী ইব্রাহীম আ.। যখন তার সম্প্রদায় মূর্তি নিয়ে সংঘটিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে শাসাচ্ছিল ও ভীতি প্রদর্শন করছিল। তখন তিনি বলেছেন—

وَلَا أَخَافُ مَا تُشْرِكُونَ بِهِ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ رَبِّي شَيْئًا وَسِعَ رَبِّي كُلَّ شَيْءٍ عِلْمًا أَفَلَا تَتَذَكَّرُونَ ﴿80﴾ وَكَيْفَ أَخَافُ مَا أَشْرَكْتُمْ وَلَا تَخَافُونَ أَنَّكُمْ أَشْرَكْتُمْ بِاللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ عَلَيْكُمْ سُلْطَانًا فَأَيُّ الْفَرِيقَيْنِ أَحَقُّ بِالْأَمْنِ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ ﴿81﴾ الَّذِينَ آَمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ أُولَئِكَ لَهُمُ الْأَمْنُ وَهُمْ مُهْتَدُونَ . ( سورة الأنعام :৮০-৮২)

‘তোমরা যাদেরকে শরিক কর, আমি তাদেরকে ভয় করি না—তবে আমার পালনকর্তাই যদি ভিন্ন কিছু ইচ্ছা করেন (তবে ভিন্ন কথা)। আমার পালনকর্তাই প্রত্যেক বস্ত্তকে স্বীয় জ্ঞান দ্বারা বেষ্টন করে আছেন। তোমরা কি চিন্তা কর না ? যাদেরকে তোমরা আল্লার তাআলার সাথে শরিক করে রেখেছ, তাদেরকে কীরূপে ভয় করব, অথচ তোমরা ভয় করোনা যে তোমরা আল্লাহ তাআলার সাথে এমন বস্ত্তকে শরিক করছ, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। অতএব, উভয় সম্প্রদায়ের মাঝে শাস্তি লাভের অধিক যোগ্য কে, যদি তোমরা জ্ঞানী হয়ে থাক ? যারা ঈমান আনে এবং স্বীয় বিশ্বাসকে শেরেকীর সাথে মিশ্রিত করে না, তাদের জন্যই শান্তি এবং তারাই সুপথগামী।’ আরো নমুনা নবী হুদ আ.। যখন তাকে বলা হয়েছিল—

إِنْ نَقُولُ إِلَّا اعْتَرَاكَ بَعْضُ آَلِهَتِنَا بِسُوءٍ . ( سورة هود :৫৪)

‘বরং আমরা তো বলি যে আমাদের কোন দেবতা তোমার উপরে শোচনীয় ভূত চাপিয়ে দিয়েছে।’ তিনি এর উত্তরে বলেনে—

إِنِّي أُشْهِدُ اللَّهَ وَاشْهَدُوا أَنِّي بَرِيءٌ مِمَّا تُشْرِكُونَ ﴿54﴾ مِنْ دُونِهِ فَكِيدُونِي جَمِيعًا ثُمَّ لَا تُنْظِرُونِ ﴿55﴾ إِنِّي تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ رَبِّي وَرَبِّكُمْ مَا مِنْ دَابَّةٍ إِلَّا هُوَ آَخِذٌ بِنَاصِيَتِهَا إِنَّ رَبِّي عَلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ ﴿سورة هود : 54-56﴾

‘হুদ বললেন- আমি আল্লাহ তাআলাকে সাক্ষী করেছি আর তোমরাও সাক্ষী থাক যে, আমার কোন সম্পর্ক নাই তাদের সাথে যাদেরকে তোমরা শরিক করছ: তাকে ছাড়া, তোমরা সবাই মিলে আমার অনিষ্ট করার প্রয়াস চালাও, অতঃপর আমাকে কোন অবকাশ দিয়ো না। আমি আল্লাহ তাআলার উপর নিশ্চিত ভরসা করেছি যিনি আমার এবং তোমাদের পরওয়ারদেগার। পৃথিবীর বুকে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নেই যা তার পূর্ণ আয়ত্তাধীণ নয়। আমার পালনকর্তার সরল পথে সন্দেহ নেই।’

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন