hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আদর্শ মুসলিম পরিবার

লেখকঃ জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের

২৪
জ্ঞান ও অনুভূতির সম্পর্ক:
একথা সর্বজন স্বীকৃত যে জ্ঞান-বিজ্ঞানের কোনো শেষ নেই। প্রতিদিন নিত্য নতুন জ্ঞান বিজ্ঞানের আবিষ্কার, উন্নতি অগ্রগতি আর অগ্রযাত্রা চলছে। পৃথিবীর মানুষ আজীবন জ্ঞান বিজ্ঞানের পিছনে লেগেই আছে, আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের অনুসন্ধান চলছেই। এজন্যই বলা হয় ‘জন্ম থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞানের অনুসন্ধান করতে হবে’। কিন্তু মানুষের আবেগ অনুভূতি ও বিবেকের রয়েছে একটি সীমারেখা ও পরিধি। মানুষের বয়সের স্তর অনুযায়ী তার আবেগ-অনুভূতি ও বিবেক হয়ে থাকে। এ জন্য মানুষের আবেগ অনুভূতি আর বিবেকটাই জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং তা‘লীম-তরবিয়তের মূলভিত্তি হয়ে থাকে। এমনকি তার আখলাক-চরিত্র, আকিদা-বিশ্বাস ও মূল্যবোধ নির্ভর করে তার বিবেক ও আবেগ অনুভূতির ওপর। এজন্য জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও বিবেকের সাথে একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাই শিশুদের তা‘লীম-তরবিয়ত ও শিক্ষা-দীক্ষার ক্ষেত্রে এ বিষয়টির প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। এমনকি কুরআন শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে এ বিষয়ের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। শিশুদের বয়সের স্তর অনুযায়ী এবং তাদের আত্মিক ও মানসিক যোগ্যতা-নুযায়ী তা‘লীম- তরবিয়ত ও শিক্ষা-দীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্যই বলা হয় ‘স্থান ও কাল অনুযায়ী বক্তব্য হয়ে থাকে’ ।

মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও বিবেকের সাথে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সম্পর্ককে বাস্তব একটি উদাহরণের সাথে ব্যাখ্যা করতে পারি যে, কীভাবে মানুষের অনুভূতির ওপর তার অর্জিত বা তার ওপর পতিত জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিক্ষা-দীক্ষা প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন, আমাদের সমাজের ধর্মীয় জ্ঞান-প্রদানের অবস্থা বা পদ্ধতি হচ্ছে শিশুদেরকে কুরআন শিক্ষা দেওয়ার সময় প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। প্রথমেই তাকে কুরআনের ৩০তম পারাকে এলোমেলো ও অপরকল্পিতভাবে শিখতে দেওয়া হয়। তারা মনে করে ৩০তম পারার সূরাগুলো ছোট ছোট হওয়ার কারণে সহজেই শিশুরা মুখস্ত ও আত্মস্থ করতে পারবে। অথচ তারা অন্য দিকটি খেয়াল করে নি যে, শিশুর আবেগ-অনুভূতি ও বিবেক কতটুকু হয়েছে, সে ভালোভাবে কথাই বলতে পারছে না। আর কুরআনের ৩০তম পারার অধিকাংশ সূরা ইলমে গায়েব ও আকীদা সংক্রান্ত মক্কী সূরা, সেগুলো কীভাবে শিশুরা তার ক্ষুদ্র বিবেক দিয়ে অনুধাবন করতে পারবে। এজন্য শিশুদেরকে তার বিবেক অনুযায়ী সঠিক পদ্ধতিতে পবিত্র কুরআন ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করতে হবে।

পবিত্র কুরআনের ৩০তম পারার মক্কী সূরাগুলোতে অধিকাংশ আয়াতেই কাফির, মুশরিক, সীমা লঙ্ঘনকারী হঠকারী ও আল্লাহ রাসূল ও কুরআন তথা অদৃশ্য জ্ঞানের অস্বীকারকারীদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাদের অস্বীকার ও হঠকারিতার ইহকালীন পরিণাম আল্লাহর ‘আযাব, গযব ও শাস্তি এবং পরকালীন ভয়াবহ পরিণাম জাহান্নামের কঠিন শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অত্যন্ত সাবলীল ও অলংকৃত ভাষার মাধ্যমে তাদের হঠকারিতা আর সীমালঙ্ঘনের প্রতি ধমক ও ভীতিপ্রদর্শন করা হয়েছে। যেগুলো একজন বিবেকবান ব্যক্তির জন্যও সহজসাধ্য নয়। প্রাপ্ত বয়স্কদেরকে শিক্ষা প্রদানের প্রয়োজন, তাদের সামনে কাফির মুশরিক ও সীমালঙ্ঘনকারীদের পরিণাম তুলে ধরার প্রয়োজন। যাতে তারা সে বিষয়গুলো সঠিকভাবে অনুধাবন করে সেখানে গভীর চিন্তা, ধ্যান-ধারণা ও গবেষণা করতে পারে। নিজেকে এ ভয়াবহ পরিণাম আল্লাহর ‘আযাব, গযব ও শাস্তি থেকে বাঁচাতে পারে। নিজেদের কল্যাণের পথ বেছে নিতে পারে।

কিন্তু যদি কুরআনের বর্ণিত কাফির মুশরিক ও সীমালঙ্ঘন কাফেরদের অবস্থা, তাদের শাস্তি, আযাব ও গযব এবং তাদের সম্পর্কে ভয়-ভীতি ও আতঙ্কের বক্তব্যটি ছোট শিশুদের অনুধাবন তো দূরের কথা, যে ভালোভাবে কথা বলতে পারছে না, সে কীভাবে কুরআনের এ বক্তব্যটি অনুধাবন করতে পারবে, কীভাবে আল্লাহর এ ডাকে সাড়া দিবে। বরং তার সামনে এ বক্তব্যটি তুলে ধরলে বা শিক্ষা দিলে শিশুর হৃদয়ে ভয়-ভীতি আর ত্রাসের সঞ্চার হবে। তার আত্মিক ও মানসিক অনুভূতি হ্রাস পাবে। তার বিবেক বুদ্ধি, বীরত্ব ও সাহসিকতা ধ্বংস হয়ে যাবে। তার ভেতরে চেতনা ও উদ্ভাবনী শক্তি জন্মাবে না। তার পুরো জীবনটাই ভীতির সন্মুখীন হয়ে যাবে। সে না পারবে সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করতে, না পারবে স্বয়ং আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে। না পারবে পরকালে মুক্তির জন্য পুঁজি সংগ্রহ করতে, অথচ আল্লাহ মুমিনদেরকে সৃষ্টি করেছেন জান্নাতে যাওয়ার জন্য। যদিও সে চুরি করে, ব্যভিচার করে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আবূ দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ قَالَ : لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، دَخَلَ الْجَنَّةَ " قَالَ : قُلْتُ : وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ : " وَإِنْ زَنَى، وَإِنْ سَرَقَ " قُلْتُ : وَإِنْ زَنَى، وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ : " وَإِنْ زَنَى، وَإِنْ سَرَقَ " قُلْتُ : وَإِنْ زَنَى، وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ : " وَإِنْ زَنَى، وَإِنْ سَرَقَ عَلَى رَغْمِ أَنْفِ أَبِي الدَّرْدَاءِ»

“যে ব্যক্তি আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দিল, তার সাথে কাউকে শরীক করল না, সে ব্যক্তি জান্নাতে যাবে। আবূ দারদা বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, যদি চুরি করে এবং যদি সে ব্যভিচার করে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, যদিও সে চুরি করে, যদিও সে ব্যভিচার করে। আমি আবারও বললাম, যদিও সে চুরি করে, যদিও সে ব্যভিচার করে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদিও সে চুরি করে, যদিও সে ব্যভিচার করে। আমি আবার বললাম, যদিও সে চুরি করে, যদিও সে ব্যভিচার করে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদিও সে চুরি করে যদিও সে ব্যভিচার করে। যদিও আবূ দারদার তা অপছন্দ”। [মুসনাদে ইমাম আহমদ, হাদীস নং ২৭৪৯১।] কারণ, আল্লাহ তার বান্দার আমলসমূহ সামগ্রিকভাবে বিচার করবেন। শুধুমাত্র পাপের বিচারই করবেন না, বরং পাপ-পুণ্য উভয়ের হিসাব নিবেন।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ কুরআনে বলেন,

﴿إِنَّ ٱلۡحَسَنَٰتِ يُذۡهِبۡنَ ٱلسَّيِّ‍َٔاتِۚ ذَٰلِكَ ذِكۡرَىٰ لِلذَّٰكِرِينَ ١١٤﴾ [ هود : ١١٤ ]

“পূণ্যকাজ অবশ্যই পাপ দূর করে দেয়, যারা স্মরণ রাখে তাদের জন্য এটা এক মহা স্মারক”। [সূরা হূদ, আয়াত: ১১৪]

হতে পারে অমুক মানুষেরই তার পাপ কর্ম পুণ্য কাজের চেয়ে বেশি হয়ে যাবে, সে শাস্তি ভোগ করবে। হতে পারে অনেক মানুষেরই পুণ্য কাজ পাপ কর্মের চেয়ে বেশি হয়ে যাবে। সে জান্নাতে শান্তিতে বসবাস করবে। এজন্য শিশুদেরকে শিশু বয়সে কুরআনের এ ধরনের ভীতিমূলক বক্তব্য ও তা‘লীম-তরবিয়ত প্রদান তার দায়িত্ব-অনুভূতি হ্রাস করে পাপ কাজের প্রতি ধাবিত করে ফেলতে পারে। এজন্য শিশুদেরকে এ ধরনের ভীতিমূলক নেতিবাচক বক্তব্য শিক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তাদেরকে কাফির মুশরিক আর সীমালঙ্ঘনকারীদের ‘আযাব-গযব আর শাস্তির কথা এবং তাদের সম্পর্কে ধমক ও ভীতির কথা শোনানোর প্রয়োজন নেই, বরং তাদের বয়সের স্তর ও বিবেক-অনুভূতি অনুযায়ী তা‘লীম-তরবিয়ত প্রদান ও ধর্মীয় জ্ঞান শিক্ষা দিতে হবে।

সুতরাং বাবা-মা অভিভাবক ও মুরব্বীদের উচিৎ ও কর্তব্য হচ্ছে যে, তাদের সন্তান-সন্ততিদের তা‘লীম-তরবিয়ত ও জ্ঞান শিক্ষার ব্যাপারে আল-কুরআনের দৃষ্টিভঙ্গি ও রাসূলের আদর্শ ও দিক নির্দেশনাকে অনুসরণ করতে হবে। সে মূলনীতি ও দিক নির্দেশনার আলোকে তাদের সন্তানদের বয়সের স্তর ও বিবেক-অনুভূতি অনুযায়ী জ্ঞান শিক্ষা প্রদান করতে হবে। এ হিসেবে শিশুদের সামনে ধর্ম ও আল কুরআনের সেসব অংশ ও আয়াত শিখাতে হবে, যেসব আয়াত ও অংশ তাদের অনুভূতি ও বিবেক সমর্থন করতে পারে, অনুধাবন করতে পারে। তাদের আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, আল্লাহ ও তার রাসূলের ঈমান, বিশ্বাস এবং ইসলাম ও রাসূলের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করে, সেসব আয়াত প্রথমে তাদেরকে শিখাতে হবে। তারপর যখন শিশু তার বয়সের দ্বিতীয় স্তরে পৌঁছে যাবে, মোটামুটি ভালোমন্দ পার্থক্য করতে পারবে, তখন তাকে ভালো কাজের আদেশ, খারাপ কাজের নিষেধ এবং সাধারণ ছোটখাটো পাপ করা যেমন মিথ্যা বলা, অন্যের সাথে খারাপ ব্যবহার করা ইত্যাদি থেকে দূরে থাকা ও ভালো কাজের অনুপ্রেরণা দানকারী আয়াত ও সূরাসমূহ শিক্ষা দিতে হবে, যাতে তার হৃদয়ে কোনো ভয়ভীতির সঞ্চার না হয়ে ভালো কাজের প্রতি নিজেকে অভ্যস্ত করতে পারে। তারপর যখন বয়সের তৃতীয় স্তরে পৌঁছাবে, তখন তাকে বড় বড় পাপ কাজ ও অশালীন আচার ব্যবহার থেকে বিরত রাখা, নিজের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কীয় আয়াত এবং কোনো কারণে ভুল হয়ে গেলে আল্লাহর কাছে মা প্রার্থনা, তাওবা-ইস্তেগফার ও আল্লাহর রহমত কামনামূলক আয়াতগুলো শিক্ষা দিতে হবে; যাতে তার মধ্যে কোনো সন্ত্রাসমূলক প্রভাব বিস্তার না হয় এবং তার দায়িত্বের প্রতি সচেতন হতে পারে। তারপর যখন শিশু প্রাপ্ত বয়সে পরিণত হবে, তখন তার সামনে তার দায়িত্ব-কর্তব্য ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কীয় আয়াত এবং দায়িত্ব অনুভূতিতে ফাঁকি দিলে বা যথাযথভাবে আদায় না করলে তার পরিণতি ও আল্লাহর ভয়াবহ শাস্তি ‘আযাব গযব ইত্যাদি সম্পর্কীয় আয়াত ও সূরাগুলো শিক্ষা দিতে হবে; যাতে একটি শিশু সার্বিক দিক দিয়ে তার দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতি সচেতনতামূলক মনোভাব নিয়ে গড়ে উঠতে পারে। যেমনি-ভাবে গড়ে তুলেছিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবিদেরকে তথা গোটা আরব জাতিকে। তারা তাদের নিজেদেরকে গঠন করে তাদের শক্তি-সামর্থ্য ও যোগ্যতা দিয়ে যথাযথভাবে বীরত্বের সাথে দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়েছিলেন।

শিশুদের তা‘লীম-তরবিয়ত, শিক্ষা-দীক্ষা, সভ্যতা-সংস্কৃতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যাপক একটি বিষয়, যার মাধ্যমে শিশুদেরকে সঠিক ইমান আকিদা, আখলাক-চরিত্র, ধর্ম-বিশ্বাস এবং আত্মিক-মানসিক ও জৈবিক বিকাশ সাধন করা যায়। এজন্য শিশুদের আত্মিক ও মানসিক বিকাশ এবং তা‘লীম-তরবিয়ত ও জ্ঞান-বিজ্ঞানসহ সর্বক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোমল ও হৃদয়গ্রাহী বক্তব্যকে মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী তাদেরকে জ্ঞান শিক্ষা দিতে হবে। তাহলেই তাদের থেকে ভয়ভীতি, ত্রাসসহ সকল প্রকার নেতিবাচক প্রভাব দূরীভূত হয়ে সম্মান-মর্যাদা, বীরত্ব, ইতিবাচক প্রভাব ও কোমল মনোভাব নিয়ে বেড়ে ওঠবে এবং সমাজের দায়-দায়িত্ব যথাযথভাবে আদায় করবে।

এজন্য আমাদেরকে অবশ্যই শিশুদের তা‘লীম-তরবিয়তের ক্ষেত্রে তাদের বিবেক অনুভূতির সাথে জ্ঞানের সম্পর্ককে যথাযথভাবে অনুধাবন করতে হবে। এমনকি কুরআন শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে সে বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখা। তার বয়সের স্তর অনুযায়ী এবং আত্মিক ও মানসিক যোগ্যতা ও বিবেক অনুপাতে প্রথমে আল্লাহ ও তার রাসূলের ভালোবাসা, দেশ-জাতির মহব্বত, ইমান-বিশ্বাস, আকিদা সম্পর্কীয় আয়াত ও সুরাগুলো শিক্ষা দেওয়া। তারপর তাকে উত্তম আমল-আখলাক, ভালো-মন্দ ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা দিতে হবে। তারপর তাকে তার ওপর অর্পিত দায়-দায়িত্ব ও কর্তব্য বিষয়ে শিক্ষা দিতে হবে এবং দায়িত্ব কর্তব্য অনাদায়ে তাদের জন্য নির্ধারিত শাস্তি, গযব সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শনমূলক আয়াত ও সূরাগুলো শিক্ষা দিতে হবে। তাহলে একটি শিশু তার আত্মিক ও মানসিক যে কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রভাব এবং ভয়ভীতি থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়ে নিজেকে একজন যোগ্যতাসম্পন্ন সঠিক মুমিন মুসলিম হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে। দেশ জাতি ও মুসলিম উম্মাহ সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারবে।

এভাবে যদি প্রতিটি বিষয়ে তা‘লীম-তরবিয়ত, সভ্যতা-সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, চিন্তা-চেতনা ও জ্ঞান-বিজ্ঞান-সহ সবকিছুই শিশুদের বয়সের স্তর অনুযায়ী এবং তাদের বিবেক-বুদ্ধি-অনুভূতি শক্তি অনুযায়ী প্রদান করা হয় তাহলে প্রতিটি শিশু আত্মিক ও মানসিকসহ সার্বিক বিষয়ে ইতিবাচক যোগ্যতা ও প্রভাব নিয়ে বেড়ে উঠবে। এটিই হচ্ছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদর্শিত শিশু শিক্ষা ও তা‘লীম-তরবিয়তের মূল ভিত্তি ও লক্ষ্য। সে বিষয়টি আমাদেরকে ভালো ও গভীরভাবে অনুধাবন করতে হবে। শিশু-শিক্ষা তথা আমাদের তা‘লীম-তরবিয়তের কারিকুলাম ও সিলেবাস দেশ-জাতি, গোত্র-বংশ নির্বিশেষে সকলের জন্য বাস্তবায়ন করতে হবে। এখানে নারী-পুরুষ, জাতি-গোষ্ঠী উত্তম, অধম ইত্যাদির কোনো ভেদাভেদ নেই, সকলেই ভাই ভাই একই আদমের সন্তান, সকলেই মুসলিম উম্মাহ ও ইসলামের সৈনিক।

এজন্য মুসলিম উম্মাহ ও সকল জাতি গোষ্ঠীর অভিভাবক, মুরুব্বী, চিন্তাবিদ গবেষক, শিক্ষক, সংস্কারক ও পরিশোধকদের ব্যক্তিগতভাবে ও যৌথভাবে এবং সংগঠন ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিশু বিষয়ক তা‘লীম-তরবিয়ত ও শিক্ষা-দীক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। মুসলিম উম্মাহ ও জাতির শিশুদের আত্মিক মানসিক ও মৌলিক বিকাশ ঘটিয়ে তাদের শক্তিশালী করে মুসলিম উম্মাহ ও জাতির ভিত্তি মজবুত ও পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সর্ব মহলে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

তেমনিভাবে মুসলিম উম্মাহ ও জাতির মুরুব্বী চিন্তাবিদ, সাংস্কৃতিবিদ, সংস্কারক, সংস্কারক ও চিন্তাবিদদেরকে সাধারণ শিক্ষক, সাধারণ প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদরাসা-মক্তব ও পরিবারকে গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের জন্য সঠিক ঈমান আকিদা, সভ্যতা, সংস্কৃতি, আমল-আখলাক ইত্যাদি বিষয়ে বই পুস্তক প্রকাশসহ আদব-শিষ্টাচারের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। সঠিকভাবে ইসলামী শিক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তি গঠনের ব্যবস্থা করতে হবে। একজন ব্যক্তিকে যখন সঠিক ঈমান আকিদা-আখলাক-চরিত্র ও সভ্যতা-সংস্কৃতির মাধ্যমে সংশোধন করা যাবে, সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনসহ গোটা সমাজ এমনিতেই সংশোধন হয়ে যাবে। ইসলামের ভিত্তি মজবুত হয়ে যাবে। সকলেই তখন সঠিক ইসলামী মূল্যবোধ, মূলনীতির প্রতি ইতিবাচক সাড়া দিবে।

এমনকি তখন মানুষের কথার সাথে কাজের মিল থাকবে। তাদের চিন্তা-চেতনার সাথে বাস্তবতার সম্পর্ক থাকবে। সকলেই একযোগে সাহায্য সহযোগিতা আর পরামর্শ-ভিত্তিক সামাজিক কাজ শুরু করে দেবে। তখনই বলিষ্ঠ, যোগ্যতাসম্পন্ন, সম্মানিত মুমিন মুসলিম নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠবে। আল্লাহ আমাদের এক সাথে কাজ করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন