মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
“হে মুমিনগণ, তোমাদের জন্য হালাল নয় যে, তোমরা জোর করে নারীদের ওয়ারিছ হবে। আর তোমরা তাদেরকে আবদ্ধ করে রেখো না, তাদেরকে যা দিয়েছ তা থেকে তোমরা কিছু নিয়ে নেওয়ার জন্য, তবে যদি তারা প্রকাশ্য অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়। আর তোমরা তাদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস কর। আর যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ তাতে অনেক কল্যাণ রাখবেন”। [সূরা আন-নিসা: ১৯]
সুতরাং প্রত্যেক পুরুষের উপর অবশ্য কর্তব্য হচ্ছে স্ত্রীর অধিকারসমূহ যথাযথভাবে আদায় করা। অবশ্য এই অধিকার প্রদানের পরও নারীদের থেকে কোনো কোনো সময় বক্রতা লক্ষ্য করা যায়। কোনো অবস্থাতেই তাদেরকে পুরাপুরিভাবে বশে আনা সম্ভব নয়। এজন্য পুরুষকে ধৈর্যশীল হতে হবে। তাদেরকে সর্বদা সদুপদেশ প্রদান করতে হবে। তাই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা নারীদেরকে উত্তম উপদেশ দিবে। কেননা নারী জাতিকে পাঁজরের হাড় দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে। আর পাঁজরের হাড়গুলোর মধ্যে উপরের হাড়টি অধিক বাঁকা। তুমি যদি তা সোজা করতে যাও, তাহলে তা ভেঙ্গে ফেলবে আর যদি ছেড়ে দাও, তাহলে সব সময় তা বাঁকাই থেকে যাবে। কাজেই নারীদের সাথে কল্যাণ করার উপদেশ গ্রহণ কর”। [বুখারী: হাদীস নং ৩৩১, মুসলিম: হাদীস নং ১৪৬৮।]
অন্য বর্ণনায় রয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের হাড় থেকে। তোমার পছন্দমত পথে সে কখনই সোজা হয়ে চলবে না। তুমি যদি তার থেকে উপকৃত হতে চাও তো এই বক্র অবস্থাতেই উপকৃত হও। কিন্তু এই বক্রতা সোজা করতে গেলে তাকে ভেঙ্গে দিবে। আর ভেঙ্গে দেওয়া মানেই তাকে তালাক প্রদান করা”। [মুসলিম: হাদীস নং ১৪৬৮।]
নারীদের মধ্যে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বক্রতা থাকলেই যে তাকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে এমন নয়; বরং তার মধ্যে অনেক ভাল গুণও আছে। কোন বিষয় হয়তো আপনি অপছন্দ করছেন কিন্তু তাতেই রয়েছে আপনার জন্য প্রভূত কল্যাণ যা আপনি জানেনই না। এজন্যই আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন,
“আর তোমরা তাদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস কর। আর যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ তাতে অনেক কল্যাণ রাখবেন”। [সূরা আন-নিসা: ১৯]
অতঃএব, স্ত্রীর নিকট থেকে কোনো বিরোধিতা বা অপছন্দনীয় বিষয় প্রকাশ পেলে দ্রুত তাকে উপদেশ দিবে নসীহত করবে। আল্লাহর কথা স্মরণ করাবে, তাঁর শাস্তির ভয় দেখাবে। তার আবধ্যতা ও গোঁড়ামীর পরিণতি যে ভয়াবহ সে সম্পর্কে সতর্ক করবে। কিন্তু এরপরও যদি স্ত্রীর মধ্যে অবাধ্যতা, হঠকারিতা ও অসৎ চরিত্র লক্ষ্য করা যায়, তবে তার বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রেও সীমারেখা রয়েছে যা লঙ্ঘন করা থেকে সাবধান থাকতে হবে। কুরআনুল কারীম এবং সুন্নাতে নববীতে এর একটি সীমারেখা নির্ধারণ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ্ বলেন,
“পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সুতরাং পুণ্যবতী নারীরা অনুগত, তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে হিফাযাতকারিনী ঐ বিষয়ের যা আল্লাহ হিফাযাত করেছেন। আর তোমরা যাদের অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, বিছানায় তাদেরকে ত্যাগ কর এবং তাদেরকে (মৃদু) প্রহার কর। এরপর যদি তারা তোমাদের আনুগত্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমুন্নত মহান”। [সূরা আন-নিসা: ৩৪]
এই আয়াতে অবাধ্য স্ত্রীকে সংশোধন করার জন্য যে নীতিমালা প্রদান করা হয়েছে তা নিম্নরূপ:
প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে: উপদেশ দেওয়া: এ সম্পর্কে পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে যে, তাকে ভদ্র ও নম্রভাবে বুঝাতে হবে, বিরোধীতা ও হঠকারিতার পরিণাম সম্পর্কে জ্ঞান দান করতে হবে। স্বামী যে সত্য সত্যই স্ত্রীর কল্যাণকামী এ বিষয়টি যেন তার কাছে প্রকাশ পায় এমন ভাষা ব্যবহার করতে হবে। রাগতঃ ভাষায় কর্কষ কন্ঠের কথা কখনো উপদেশ হতে পারে না। স্ত্রীকে সংশোধন করার জন্য কখনই কঠিন ও শক্ত ভাষা ব্যবহার করে উপদেশ দেয়ার চেষ্টা করবেন না। কেননা অন্যায়কে অন্যায় দিয়ে প্রতিহত করা যায় না।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: বিছানায় পরিত্যাগ করাঃ একই বিছানায় তার থেকে আলাদাভাবে শয়ন করা। এমন কথা নয় যে, তাকে ঘরের বাইরে রাখা বা অন্য ঘরে রাখা বা পিতা-মাতার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াতে নির্দেশিত বিছানায় পরিত্যাগ করার ব্যাখ্যায় বলেছেন,
হাকীম ইবন মু‘আবিয়া রহ. তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করি, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! স্বামীদের উপর স্ত্রীদের কী হক? তিনি বলেন, “যা সে খাবে তাকেও (স্ত্রী) খাওয়াবে, আর সে যা পরিধান করবে তাকেও তা পরিধান করাবে। আর তার (স্ত্রীর) চেহারার উপর মারবে না এবং তাকে গালাগাল করবে না। আর তাকে ঘর হতে বের করে দিবে না”। [আবু দাউদ: হাদীস নং ২১৪২।]
‘বিছানায় আলাদা করে রাখা’র অর্থ সম্পর্কে আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, তার সাথে তার বিছানাতেই শুইবে কিন্তু তার সাথে সহবাস করবে না। তার দিকে পিঠ ঘুরিয়ে শয়ন করবে। অন্য বর্ণনা মতে ইবনু আব্বাস বলেন, ‘তার সাথে স্বাভাবিক কথা ছাড়া আর কিছু বলবে না।’ [তাফসীর ইবন কাসীর, সূরা নিসার ৩৪ নং আয়াতের তাফসীর।]
ইমাম কুরতুবী এই পদক্ষেপের উপকারিতা সম্পর্কে বলেন, স্বামীর প্রতি যদি স্ত্রীর ভালোবাসা থাকে তাহলে এ অবস্থা তার কাছে খুবই অসহনীয় ও কষ্টকর হবে, ফলে সে সংশোধন হবে। কিন্তু ভালোবাসায় ত্রুটি থাকলে বা মনে ঘৃণা থাকলে নিজ অবাধ্যতার উপর সে অটল থাকবে- সংশোধনের পথে অগ্রসর হবে না।’ [তাফসীরে কুরতুবী, সূরা নিসার ৩৪ নং আয়াতের তাফসীর।]
সংশোধনের এই দ্বিতীয় নীতি ফলপ্রসু না হলে তৃতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। আর তা হচ্ছে:
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রহার করাঃ এটি হচ্ছে সর্বশেষ পদক্ষেপ। আল্লাহ্ বলেন, وَاضْرِبُوهُنَّ ‘এবং তাদেরকে প্রহার করবে।’ এর তাফসীরে হাফেয ইবন কাসীর রহ. বলেন, ‘যদি উপদেশ প্রদান ও আলাদা রাখার পরও কোনো কাজ না হয়, স্ত্রীগণ সংশোধনের পথে ফিরে না আসে, তবে হালকা করে তাদেরকে প্রহার করবে।
জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বিদায় হজ্জের ঐতিহাসিক ভাষণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“তোমরা স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। কেননা আল্লাহর আমানতে তোমরা তাদেরকে গ্রহণ করেছ। আল্লাহর বাণী সাক্ষী রেখে তোমরা তাদের সাথে সহবাস করা বৈধ করেছো। তাদের উপর তোমাদের অধিকার হচ্ছে, তারা তোমাদের গৃহে এমন লোককে প্রবেশ করতে দিবে না যাকে তোমরা পছন্দ কর না। কিন্তু তারা যদি নির্দেশ লঙ্ঘন করে এরূপ করে ফেলে তবে, তাদেরকে প্রহার কর। কিন্তু প্রহার যেন কঠিন ও কষ্টদায়ক না হয়। তোমাদের উপর তাদের অধিকার হচ্ছে, তোমরা সঠিকভাবে নিয়ম মাফিক তাদের খানা-পিনা ও কাপড়ের ব্যবস্থা করবে।” [মুসলিম, হাদীস নং ১২১৮।]
হাসান বাসরী রহ. এই প্রহারের ব্যাখ্যায় বলেন, প্রহার যেন এমন না হয় যার কারণে শরীরে কোন চিহ্ন দেখা যায় বা শরীর ফুলে-ফুটে যায়। ‘আত্বা রহ. বলেন, ইবন আব্বাসকে প্রশ্ন করা হল, উক্ত প্রহার কিরূপ হবে? তিনি বললেন, ‘মেসওয়াক বা অনুরূপ বস্তু দ্বারা প্রহার হতে হবে। (তাফসীরে কুরতুবী)।
অন্য হাদীসে প্রহারের ক্ষেত্রে হালকাভাবে হলেও মুখমন্ডলে প্রহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।
পরিশেষে বলব, একজন আদর্শ স্বামী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিতি করতে চাইলে পারিবারিক জীবনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শই আপনার আদর্শ হতে হবে। আপনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মত স্ত্রীকে ভালোবাসলেই আপনার স্ত্রী নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে করবেন। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মত একজন আদর্শ স্বামী হিসেবে কবুল করুন। আমীন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/518/14
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।