মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
দলবিভক্তির একটি মন্দ দিক আছে। যা অত্র হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। যা জাতির জন্য অভিশাপ স্বরূপ। বনু ইস্রাঈলগণ তাওহীদের দাবীদার হওয়া সত্ত্বেও শিরকী বিশ্বাস ও হঠকারী আচরণের ফলে তারা অভিশপ্ত হয়েছে ও দলে দলে বিভক্ত হয়েছে। মুসলিম উম্মাহর অবস্থা যেন তেমনটি না হয়, সেজন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সাবধান করে গেছেন। ভবিষ্যতে এরূপ হতে পারে, সেজন্য উম্মতকে সতর্ক করে গেছেন। যেন তারা দলাদলি ও হিংসা-হানাহানিতে লিপ্ত না হয়।
কিন্তু মুসলিম উম্মাহ উক্ত সতর্কবাণী উপেক্ষা করে। ফলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর পূর্বোক্ত ভবিষ্যদ্বাণী হযরত ওছমান (রাঃ)-এর মর্মান্তিক শাহাদাতের প্রাক্কাল থেকেই কার্যকর হতে শুরু করে এবং পরবর্তীতে হযরত আলী ও মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর রাজনৈতিক দলাদলিকে যুক্তিসিদ্ধ প্রমাণ করতে গিয়ে সৃষ্টি হয় উছূলী বিভক্তি। এভাবে দলাদলির শিকার হয়ে জীবন দিতে হয়েছে হযরত আলী (রাঃ)-কে এবং তৎপুত্র হযরত হোসায়েন, আশারায়ে মুবাশশারাহর সদস্য হযরত যোবায়ের, হযরত তালহা এবং পরে হযরত আব্দুল্লাহ বিন যোবায়ের (রাঃ) প্রমুখ খ্যাতনামা ছাহাবীগণকে। এরপর উমাইয়া শাসনামলে তাদের বিরোধী গণ্য করে খ্যাতনামা তাবেঈ সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িব, মুহাম্মাদ ‘নফসে যাকিইয়াহ’ (পবিত্রাত্মা) সহ শত শত বিদ্বান সরকারী নির্যাতন ও সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন। বনু ইস্রাঈল তাদের হাযার হাযার নবীকে হত্যা করেছে। মুসলমানরা উম্মতের উপরোক্ত সেরা ব্যক্তিবর্গকে হত্যা করেছে, যারা ছিলেন উম্মতের নক্ষত্রতুল্য। এরপর হিজরী দ্বিতীয় শতক থেকে অদ্যাবধি বিভিন্ন বিদ‘আতী ও ভ্রান্ত দলের পন্ডিতবর্গ প্রাণান্ত কোশেশ করে যাচ্ছেন কুরআন-হাদীছের শব্দ বা মর্ম পরিবর্তন কিংবা সেখানে কিছু যোগ-বিয়োগ করার জন্য। কিন্তু আহলেহাদীছ বিদ্বানগণের আপোষহীন ভূমিকার কারণে তারা সর্ব যুগে ব্যর্থ হয়েছেন, এখনও হচ্ছেন, ভবিষ্যতেও হবেন এবং সেটা হ’তেই হবে। কেননা আল্লাহ স্বয়ং কুরআন ও হাদীছের হেফাযতের দায়িত্ব নিয়েছেন (হিজর ১৫/৯; ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৬-১৯)। তথাপি বিদ‘আতী আলেমদের এই অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে ও থাকবে, যা ইহূদী-নাছারাদের তাওরাত-ইঞ্জীল বিকৃতির চেষ্টার সাথে অনেকটা তুলনীয়।
দল বিভক্তির অন্য দিকটি হ’ল আশীর্বাদ স্বরূপ। যা জাতির জন্য কল্যাণময়। যেমন ইবরাহীম (আঃ)-এর বংশধর মক্কার কুরায়েশরা যখন তাওহীদ বিচ্যুত হয়ে শিরকে নিমজ্জিত হয়েছিল ও কা‘বাগৃহকে মূর্তিগৃহে পরিণত করেছিল, তখন তাদেরই সন্তান মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাদেরকে শিরক থেকে তাওহীদের পথে ফিরে আসার আহবান জানান। ফলে তাদের শিরকী জামা‘আত বিভক্ত হয় এবং আবুবকর, আলী, ওছমান, ইবনু মাসঊদ, ওমর, হামযাহ প্রমুখের মত তাওহীদপন্থী বিশ্বসেরা মানুষের একটি দল সৃষ্টি হয়। এই দল ছিল মানবতার জন্য আশীর্বাদ স্বরপ। এরাই ছিলেন তখন ফের্কা নাজিয়াহ। যদিও আবু জাহলদের দৃষ্টিতে এরা ছিলেন ‘জামা‘আত বিভক্তকারী’ ও সমাজে অনৈক্য সৃষ্টিকারী। যুগে যুগে এরূপ ঘটবে এবং বাতিল থেকে হক পৃথক হয়ে যাবে। আর এটা আল্লাহরই বিধান। যেমন তিনি বলেন, مَا كَانَ اللهُ لِيَذَرَ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى مَا أَنْتُمْ عَلَيْهِ حَتَّى يَمِيزَ الْخَبِيثَ مِنَ الطَّيِّبِ ‘আল্লাহ এরূপ নন যে, তোমরা যে অবস্থায় রয়েছ সে অবস্থার উপর মুমিনদের ছেড়ে দিবেন যতক্ষণ না নাপাককে পাক থেকে (অর্থাৎ শিরককে তাওহীদ থেকে) পৃথক করেন’ (আলে ইমরান ৩/১৭৯)। বস্ত্ততঃ উক্ত বিধানের ধারাবাহিকতায় মুসলমানদের বাতিল ফের্কাসমূহ থেকে নাজী ফের্কা সর্বদা পৃথক হয়ে যাবে।
আলোচ্য হাদীছটি পবিত্র কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতদ্বয়ের ব্যাখ্যা বলা যায়। যেখানে আল্লাহ বলেন, وَلاَ تَكُوْنُوْا كَالَّذِيْنَ تَفَرَّقُوْا وَاخْتَلَفُوْا مِنْ بَعْدِ مَا جَاءهُمُ الْبَيِّنَاتُ وَأُوْلَـئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ عَظِيْمٌ - ‘আর তোমরা তাদের মত হয়ো না (অর্থাৎ ইহূদী-নাছারাদের মত হয়ো না), যারা তাদের নিকটে (আল্লাহর) স্পষ্ট প্রমাণাদি এসে যাওয়ার পরেও নিজেরা ফের্কায় ফের্কায় বিভক্ত হয়ে গেছে এবং পরস্পরে মতবিরোধ করেছে। বস্ত্ততঃ তাদের জন্য রয়েছে ভয়ংকর আযাব’ (আলে ইমরান ৩/১০৫)।
অন্য আয়াতে আল্লাহ দলাদলিকে দুনিয়াবী শাস্তির স্বাদ আস্বাদন হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَى أَن يَّبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَاباً مِّنْ فَوْقِكُمْ أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ أَوْ يَلْبِسَكُمْ شِيَعاً وَيُذِيْقَ بَعْضَكُمْ بَأْسَ بَعْضٍ انْظُرْ كَيْفَ نُصَرِّفُ الْآيَاتِ لَعَلَّهُمْ يَفْقَهُونَ - ‘(হে নবী!) তুমি বলে দাও, তিনি এ ব্যাপারে ক্ষমতাবান যে, তিনি তোমাদের উপরে কোন আযাব উপর থেকে বা তোমাদের পায়ের নীচ থেকে প্রেরণ করবেন অথবা তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে ও উপদলে বিভক্ত করে সবাইকে মুখোমুখি করে দিবেন এবং পরস্পরকে আক্রমণের স্বাদ আস্বাদন করাবেন। দেখ কিভাবে আমরা আয়াত সমূহ ব্যাখ্যা করে দিচ্ছি, যাতে তারা হৃদয়ঙ্গম করে’ (আন‘আম ৬/৬৫)।
( حَتَّى إِنْ كَانَ مِنْهُمْ مَنْ أَتَى أُمَّهُ عَلاَنِيَةً لَكَانَ فِيْ أُمَّتِيْ مَنْ يَصْنَعُ ذَلِكَ ) ‘এমনকি তাদের মধ্যে যদি কেউ এমনও থাকে, যে তার মায়ের সাথে প্রকাশ্যে যেনা করেছে, তাহ’লেও আমার উম্মতের মধ্যে তেমন লোকও পাওয়া যাবে, যে এমন কাজ করবে’। একথার মাধ্যমে একটি চূড়ান্ত অসম্ভব বিষয়কে উদাহরণ হিসাবে পেশ করা হয়েছে বিগত অভিশপ্ত উম্মত বনু ইস্রাঈলের অবস্থার সঙ্গে তুলনা করার জন্য। এখানে ‘মা’ বলতে ‘পিতার স্ত্রী’ বুঝানো হয়েছে, নিজের গর্ভধারিণী মা নয়। এর মধ্যে ইঙ্গিত রয়েছে যে, অভিশপ্ত ইহূদী ও পথভ্রষ্ট খ্রিষ্টানদের ন্যায় অবস্থা মুসলমানদেরও হবে।
( وَإِنَّ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ تَفَرَّقَتْ عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِيْنَ مِلَّةً ) ‘আর বনু ইস্রাঈল ৭২টি ফের্কায় বিভক্ত হয়েছিল’। হযরত ‘আওফ বিন মালেক (রাঃ) হ’তে ইবনু মাজাহ বর্ণিত অপর হাদীছে এসেছে, ইহূদীরা ৭১টি ফের্কায় বিভক্ত হয়েছিল। সবাই জাহান্নামী ছিল এবং একটি মাত্র ফের্কা জান্নাতী ছিল। নাছারাগণ ৭২টি ফের্কায় বিভক্ত হয়েছিল। সবাই জাহান্নামী ছিল, একটি মাত্র ফের্কা জান্নাতী ছিল’।[1] একই মর্মে হাদীছ এসেছে হযরত আনাস, আবু হুরায়রা, আবু উমামাহ, আবুদ্দারদা, ওয়াছেলা ইবনুল আসক্বা‘ ও ইবনু মাসঊদ (রাঃ) সহ অন্যান্য ছাহাবী হ’তে।[2]
( مِلَّةٌ ) ‘মিল্লাত’ অর্থ তরীকা বা পথ-পন্থা। কিন্তু প্রায়োগিক অর্থ হ’ল ‘আহলে মিল্লাত’ বা তরীকার অনুসারী একটি দল। অর্থাৎ كل فعل وقول اجتمع عليه جماعة حقا كان أو باطلا ‘হক হেŠক বা বাতিল হৌক, মিল্লাত বলা হয় ঐসব কাজ ও কথাকে, যার উপরে একদল লোক একত্রিত হয়’। আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) এখানে ইহূদী-নাছারাদের আবিষ্কৃত বিভিন্ন তরীকা ও রীতি-পদ্ধতিকে ‘মিল্লাত’ বলে অভিহিত করেছেন বিস্তৃত অর্থে। কেননা তাদের এইসব তরীকার অনুসারী বিরাট বিরাট দল মওজুদ ছিল। যেমন এখনকার খ্রিষ্টান বিশ্ব রোমান ক্যাথলিক, প্রটেষ্ট্যান্ট ও অর্থডক্স নামে বড় বড় তিনটি দলে বিভক্ত।
‘মিল্লাত’-এর পারিভাষিক অর্থ হ’ল : مَا شَرَعَ اللهُ لِعِبَادِهِ عَلَى أَلْسِنَةِ أَنْبِيَاءِهِ لِيَتَوَصَّلُوْا بِهِ إِلىَ قُرْبَتِهِ ‘ঐ সকল বিধি-বিধান, যা আল্লাহ স্বীয় নবীগণের যবানে স্বীয় বান্দাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। যার মাধ্যমে তারা আল্লাহর নৈকট্য হাছিলে সমর্থ হয়’। এর দ্বারা পূর্ববর্তী ও বর্তমান সকল এলাহী শরী‘আতকে বুঝানো হয়। পরবর্তীতে এই শব্দটি বিস্তৃত অর্থে ভাল ও মন্দ সকল দলকে বুঝানো হয়েছে। যেমন বলা হয়ে থাকে, الْكُفْرُ مِلَّةٌ وَاحِدَةٌ ‘কাফের সবাই এক দলভুক্ত’। অর্থাৎ আল্লাহ্কে অস্বীকারের মূল প্রশ্নে কাফের সবাই এক দলভুক্ত। অনুরূপভাবে ছাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের বুঝের বাইরে আক্বীদা ও আমলের ক্ষেত্রে মুসলমানদের মধ্যকার ভ্রান্ত ও বিদ‘আতী ফের্কাগুলি সবাই মূলতঃ এক দলভুক্ত। যেমন বলা হয়, أَهْلُ الْبِدْعِ مِلَّةٌ وَاحِدَةٌ ‘বিদ‘আতী সবাই এক দলভুক্ত’।
( وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِيْ عَلَى ثَلاَثٍ وَّسَبْعِيْنَ مِلَّةً ) ‘আর আমার উম্মত ৭৩ ফের্কায় বিভক্ত হবে’। এখানে ‘উম্মত’ বলতে أمة الإجابة অর্থাৎ ইসলাম কবুলকারী উম্মত বুঝানো হয়েছে أمة الدعوة নয়। অর্থাৎ ইসলাম কবুল করুক বা না করুক শেষনবী (ছাঃ)-এর আগমনের পর থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষ তাঁর উম্মত। যারা তাঁর দাওয়াত কবুল করে, তারা ‘মুসলিম’ ( أمة الإجابة )। আর যারা ইসলাম কবুল করেনি, তারাও তাঁর উম্মতের অন্তর্ভুক্ত ( أمة الدعوة )। যাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়া মুসলিম উম্মাহর প্রধান দায়িত্ব (আলে ইমরান ৩/১১০)। অতএব একই ক্বিবলার অনুসারী ৭৩ ফের্কাভুক্ত সকল মুসলমান একই উম্মতের অন্তর্ভুক্ত। যদিও এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যা তাকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়। যেমন ঈমানের ৬টি স্তম্ভের* কোন একটিতে মিথ্যারোপ করা, অস্বীকার করা, সন্দেহ করা, এড়িয়ে চলা; আল্লাহ, রাসূল, কুরআন প্রভৃতি বিষয়ে ব্যঙ্গ করা, কটূক্তি করা ইত্যাদি।
[1]. ইবনু মাজাহ হা/৩৯৯২।
[2]. মির‘আত ১/২৭৬-৭৭।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/53/5
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।