hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নয়টি প্রশ্নের উত্তর

লেখকঃ মুহাম্মাদ নাছেরুদ্দীন আলবানী (রহঃ)

প্রশ্ন-৭ : আল্লাহ বলেন, وَجَعَلْنَا عَلَى قُلُوْبِهِمْ أَكِنَّةً أَن يَّفْقَهُوْهُ وَفِيْ آذَانِهِمْ وَقْراً ‘আমরা তাদের অন্তরের উপর আবরণ টেনে দিয়েছি যাতে ওরা কুরআন বুঝতে না পারে এবং ওদের কানে বধিরতা এঁটে দিয়েছি’... (আন‘আম ৬/২৫; কাহ্ফ ১৮/৫৭)। অনেকে এ আয়াতের মধ্যে জাবরিয়া মতবাদের গন্ধ পান। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি?
উত্তর : এখানে ‘আমরা তাদের অন্তরের উপর আবরণ টেনে দিয়েছি’ অর্থ তাদের অন্তরে লুকানো কুফরী ও অবাধ্যতার ‘প্রাকৃতিক আবরণ টেনে দিয়েছি’ ( جعل كوني )। এটা বুঝার জন্য ‘আল্লাহর ইচ্ছা’ ( الإرادة الإلهية ) কথাটির তাৎপর্য ভালভাবে অনুধাবন করা আবশ্যক। ‘আল্লাহর ইচ্ছা’ দু’প্রকারের: ‘বিধানগত ইচ্ছা’ ( إرادة شرعية ) ও ‘প্রাকৃতিক ইচ্ছা’ ( إرادة كونية )। ‘বিধানগত ইচ্ছা’ হ’ল, যা আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপরে বিধিবদ্ধ করেছেন এবং তাদেরকে ফারায়েয-ওয়াজিবাত, সুন্নাত-নফল প্রভৃতি বিধান সমূহ বাস্তবায়নে উৎসাহিত করেছেন। অতঃপর ‘প্রাকৃতিক ইচ্ছা’ হ’ল, কখনো কখনো ঐ সকল বিষয়ে যা আল্লাহ বিধিবদ্ধ করেননি, কিন্তু তিনি তা নির্ধারণ করেছেন। এইসব ইচ্ছাকে ‘প্রাকৃতিক ইচ্ছা’ ( إرادة كونية ) বলা হয়। যেমন আল্লাহ বলেন, إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئاً أَنْ يَّقُوْلَ لَهُ كُنْ فَيَكُوْنُ ‘তিনি যখন কোন কিছু করতে ইচ্ছা করেন, তখন তাকে কেবল বলেন, ‘হও’ ব্যস হয়ে যায়’ (ইয়াসীন ৩৬/৮২)। এখানে কোন কিছু ( شيئاً ) অনির্দিষ্ট বাচক বিশেষ্য, যা ভাল-মন্দ সব ধরনের কাজকে শামিল করে। আর এটা হয়ে থাকে কেবল ‘কুন’ আদেশসূচক শব্দ দ্বারা। অর্থাৎ তাঁর ইচ্ছায়, তাঁর সিদ্ধান্তে, তাঁর নির্ধারণে। এটা বুঝার পরে আমরা ফিরে যাব ‘ক্বাযা ও ক্বদরের’ বিষয়টির দিকে। আল্লাহ যখনই কোন কাজের জন্য ‘কুন’ বলেন, তখনই সেই কাজটি পূর্বনির্ধারিত হিসাবে গণ্য হয়। আর আল্লাহর নিকটে সকল বস্ত্তই পূর্বনির্ধারিত। যা ভাল ও মন্দ সব বিষয়কে শামিল করে।

এক্ষণে জিন ও ইনসান যারা আল্লাহর বিধান সমূহ মানতে বাধ্য ও আদিষ্ট- আমরা দেখব যে, আমাদের সম্পর্কিত বিষয়গুলি কি স্রেফ আমাদের ইচ্ছা ও এখতিয়ারে হয়ে থাকে, নাকি আমাদের ইচ্ছার বাইরেও হয়ে থাকে? দ্বিতীয় বিষয়টির সাথে আনুগত্য বা অবাধ্যতার কোন সম্পর্ক নেই এবং এর পরিণাম ফল হিসাবে জান্নাত বা জাহান্নামের কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু প্রথমটির বিষয়ে যেখানে শরী‘আতের বিধান সমূহ রয়েছে, তার প্রতি আনুগত্য বা অবাধ্যতার ফলাফল হিসাবে জান্নাত বা জাহান্নাম নির্ধারিত আছে। অর্থাৎ মানুষ যেটা ইচ্ছাকৃতভাবে করে এবং তার জন্য স্বেচ্ছায় চেষ্টা-তদবির করে, সে কাজটির হিসাব নেওয়া হবে। ভাল কাজ হ’লে ভাল ফল পাবে, মন্দ কাজ হ’লে মন্দ ফল পাবে। আর মানুষ তার কর্মসমূহের সিংহভাগ নিজ ইচ্ছায় করে থাকে। এটিই হ’ল বাস্তব কথা। যার মধ্যে শরী‘আত ও যুক্তি কোন দিক দিয়েই ঝগড়ার কোন অবকাশ নেই। শরী‘আতের দিক দিয়ে ঝগড়ার অবকাশ নেই একারণে যে, কুরআন ও সুন্নাহে অবিরত ধারায় ঐসব দলীল মওজুদ রয়েছে যে, মানুষ কেবল ঐসমস্ত কাজ করবে, যা তাকে হুকুম করা হয়েছে এবং ঐসকল কাজ ছাড়বে, যা তাকে নিষেধ করা হয়েছে। এইসব দলীল এত বেশী যে তা বর্ণনার অতীত।

অতঃপর যুক্তির দিক দিয়ে ঝগড়ার কোন অবকাশ নেই একারণে যে, একথা অত্যন্ত পরিষ্কার যে, মানুষ যখনই কোন কথা বলে, চলাফেরা করে, খায় বা পান করে কিংবা যখনই কোন কাজ করে যা তার এখতিয়ারাধীন, তখন সে কাজে সে স্বাধীন ইচ্ছার মালিক এবং মোটেই বাধ্য নয়। আমি যদি ইচ্ছা করি যে, এখন আমি কথা বলব, তাহ’লে কেউ নেই যে আমাকে এই স্বাভাবিক অবস্থায় বাধ্য করে। কিন্তু এটি তাক্বদীরে পূর্বনির্ধারিত। অর্থাৎ পূর্বনির্ধারিত হওয়ার সাথে সাথে এটি আমারই কথা। আরও সরলার্থ হ’ল, আমি যা বলব এবং যেসব কথা বলব তার এখতিয়ার সহ এটি পূর্ব নির্ধারিত। কিন্তু ঐ ক্ষমতা সহকারে যে আমি চুপ থাকব ঐ ব্যক্তির জন্য যে ব্যক্তি আমার কথায় সন্দেহ পোষণ করে। আমি এ ব্যাপারে স্বাধীন।

এক্ষণে মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির বিষয়টি বাস্তবে এমন যে, এতে কোন ঝগড়া-বিসম্বাদের সুযোগ নেই। যে ব্যক্তি এতে বিতন্ডা করে, সে ব্যক্তি একটি স্পষ্ট বিষয়ে সন্দেহ আরোপ করে মাত্র। মানুষ যখন এই স্তরে পৌঁছে যায়, তখন তার সাথে কথা বন্ধ হয়ে যায়। মানুষের কাজকর্ম দু’ধরনের হয়ে থাকে। স্বেচ্ছাকৃত ও বাধ্যগত। বাধ্যগত বিষয়ে আমাদের কোন কথা নেই। না শরী‘আতের দিক দিয়ে, না বাস্তবতার দিক দিয়ে। শরী‘আত হ’ল স্বেচ্ছাকৃত কর্মসমূহের সাথে সম্পৃক্ত। আর এটাই হ’ল মূল কথা। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখার পর এবার আমরা বুঝতে সক্ষম হবো পূর্বের আয়াতটি وَجَعَلْنَا عَلَى قُلُوْبِهِمْ أَكِنَّةً ‘আর আমরা তাদের অন্তরের উপরে আবরণ টেনে দিয়েছি’ (আন‘আম ৬/২৫)। এখানে ‘আবরণ টেনে দেওয়ার’ অর্থটি ‘প্রকৃতিগত’ ( جعل كوني )। অনুরূপ আরেকটি আয়াত আমরা মনে করিয়ে দিই, যা ইতিপূর্বে বলা হয়েছে إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئاً ‘তিনি যখন কোন কিছু করতে ইচ্ছা করেন’ (ইয়াসীন ৩৬/৮২)। এখানে ‘ইচ্ছা করা’ বিষয়টিও প্রকৃতিগত ( الإرادة الكونية )। কিন্তু ‘আল্লাহর ইচ্ছা’ কথাটি এবং ‘তাদের অন্তরে আবরণ টেনে দেওয়া’ কথাটি এক নয়।

বস্ত্তগত দিক দিয়ে এর উদাহরণ হ’ল, যেমন মানুষ যখন ভূমিষ্ট হয়, তখন তার দেহের মাংস থাকে নরম তুলতুলে। তারপর সে যত বড় হ’তে থাকে, তার গোশত ও হাড্ডি তত শক্ত হ’তে থাকে। কিন্তু সকল মানুষ এব্যাপারে সমান নয়। অনুরূপভাবে মানুষ লেখাপড়া করে, তাতে তার জ্ঞান পুষ্ট হয় ও মস্তিষ্ক শক্তিশালী হয় যে বিষয়ে সে গবেষণায় লিপ্ত থাকে এবং তার পূর্ণ প্রচেষ্টা নিয়োজিত করে। কিন্তু শারীরিক দিক দিয়ে দেখা যায় যে, তার দেহ আর শক্তিশালী হয় না বা তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সমূহ আর বৃদ্ধি পায় না।

এর সম্পূর্ণ বিপরীত দিক হ’ল একজন ব্যক্তি তার দৈহিক সামর্থ্য বাড়ানোর জন্য সারাদিন অনুশীলনে ব্যস্ত থাকে, যেমন তারা আজকাল বলে থাকে। এতে তার পেশীসমূহ শক্ত হয় এবং দেহ শক্তিশালী হয়। এইসব বাহাদুরদের ছবি আমরা মাঝে-মধ্যে দেখি। অথচ ঐ ব্যক্তি কি ঐভাবে জন্মগ্রহণ করেছিল? নাকি তার নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে ঐরূপ স্বাস্থ্য গঠিত হয়েছে? নিঃসন্দেহে এটি হয়েছে তার চেষ্টায় ও তার ইচ্ছায়।

এটিই হ’ল ঐ ব্যক্তির উদাহরণ, যে ব্যক্তি পথভ্রষ্টতা, অবাধ্যতা, কুফরী ও নাস্তিকতার মধ্যে লালিত-পালিত হয়েছে। যা পরে মরিচা ধরার পর্যায়ে এবং আবরণ টেনে দেয়ার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যা আল্লাহ তার অন্তরে করে দিয়েছেন। এটা আল্লাহ তার উপরে ফরয করেননি বা তাকে বাধ্য করেননি। এটা হয়েছে তার নিজস্ব অর্জন ও স্বেচ্ছাকৃত কর্মের ফলে। আর এটাই হ’ল প্রাকৃতিক ক্রিয়া ( الجعل الكوني ) যা ঐ কাফের লোকেরা উপার্জন করেছে। অতঃপর তা ঐ কালিমা চিহ্নে পৌঁছে গেছে, যাকে মূর্খরা ভেবেছে যে, এটাই তাদের উপরে ফরয করা হয়েছে। অথচ এটি তাদের কর্মের ফল। বস্ত্ততঃ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপরে যুলুমকারী নন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন