মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষাক্রম ও বর্তমান শিক্ষাক্রমের একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা
লেখকঃ ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
৩
প্রথমত: শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে পার্থক্যঃ
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/590/3
আল-কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে দুটি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন। প্রথম শ্রেণীর মানুষের মূল লক্ষ্য হলো আখিরাতের সাফল্য অর্জন এবং দুনিয়ায় সেজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ। এরা দুনিয়ার কর্তৃত্ব, নেতৃত্ব ও উন্নয়নের জন্য যত কাজই করে সেটি করে আখিরাতের সাফল্য অর্জনের সোপান হিসেবে। শুধু দুনিয়া অর্জনই এদের মূল লক্ষ্য নয়।
দ্বিতীয় শ্রেণীর মানুষ দুনিয়ার ভোগ-বিলাস এবং নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব লাভকেই নিজেদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হিসেবে স্থির করে নিয়েছে। আর তা উপার্জনের প্রচেষ্টায় পরিচালিত হয় তাদের জীবনের সকল কর্মকান্ড ও আন্দোলন।
এ দু শ্রেণীর লোকদের প্রতি ইঙ্গিত করে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
‘‘মানুষের মধ্যে এমন লোক রয়েছে যারা বলে, ‘‘হে আমাদের রব! আমাদের দুনিয়ার (প্রভাব-প্রতিপত্তি ও নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব) দান করুন।’’ এদের জন্য আখিরাতে কোন অংশই থাকবে না। আর মানুষের মধ্যে এমন অনেক লোকও রয়েছে যারা বলে, ‘‘হে আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়ার কল্যাণ প্রদান করুন এবং আখিরাতেও কল্যাণ প্রদান করুন। আর জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদের রক্ষা করুন।’’ এদের জন্য (আখিরাতে) রয়েছে একটা অংশ তারা যা অর্জন করেছে সে জন্য।’’ [সূরা আল-বাকারাহঃ ২০০-২০2]
কোন সন্দেহ নেই যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবাগণ ছিলেন প্রথম শ্রেণীভূক্ত। কেননা আখিরাতের প্রশ্ন তাঁদের সকলের কাছে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, তাঁরা সব সময় এ ভেবেই তটস্থ থাকতেন যে, আখিরাতে কিভাবে আল্লাহর কাছে আমি নাজাত পাব এবং পুরষ্কৃত হব?
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের বহু ক্ষেত্রে আমরা এ ব্যাপারটি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করি। এর কিছু দৃষ্টান্ত আমরা এখানে উল্লেখ করেছি-
১। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন প্রকাশ্য দাওয়াতী কার্যক্রম শুরু করেন তখন তিনি এ ঘোষণাও প্রদান করেন যে, ইসলাম গ্রহণের লক্ষ্য কি হওয়া উচিত। হাদীসের ভাষায় সে লক্ষ্যটি হলো জাহান্নামের অগ্নি থেকে নিজেকে রক্ষা করা। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘‘যখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হলো, ‘আর আপনি আপনার নিকট আত্মীয়দেরকে সতর্ক করুন’ [সূরা আশ-শু’আরাঃ ২১৪] তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণ ও খাস সব লোককে ডেকে বললেন, ‘হে কুরাইশ সম্প্রদায়! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে বাঁচাও। হে নবী কা’ব সম্প্রদায়! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে বাঁচাও। হে ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ! তুমি নিজেকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে বাঁচাও। আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোন কাজেই আসব না।’’ [সহীহ বুখারী, হাদীস নং- ২৫৪৮, ৪৩৯৮, সহীহ মুসলিম হাদীস নং- ৩০৫, আর-রহীক, আল-মাখতুম, পৃঃ ৬৯]
২। সহল ইবনু সা’দ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা খন্দকের যুদ্ধে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলাম। সাহাবাগণ তখন মাটি থেকে খোঁড়ার কাজ করছিলেন। আমরা আমাদের কাঁধে মাটি বহন করছিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘হে আল্লাহ! আখিরাতের জীবন ছাড়া আর কোন জীবন নেই। সুতরাং আপনি আনসার ও মুহাজিরদের ক্ষমা করুন।’’ [সহীহ বুখারী, আল-মাগাযী, হাদীস নং ৬৪১৪ ]
৩। জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি লাভ ও জান্নাতে প্রবেশের আমল সম্পর্কে সাহাবাদের জিজ্ঞাসা ও জানার আগ্রহ প্রমাণ করে যে, এটা তাদের ভাল কাজে লিপ্ত হওয়ার এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকার মৌলিক লক্ষ্য।
মুয়ায ইবনু জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন আমল সম্পর্কে অবহিত করুন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে।’ ....... [মুসনাদ আহমাদঃ ৫/২৩০, সুনাম তিরমিযী, হাদীস নং- ২৬১৬]
জাবের ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদীসে এসেছে, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করল, ‘‘আমি যদি ফরয সালাতসমূহ আদায় করি, রমদানের সাওম পালন করি, হালালকে হালাল এবং হারামকে হারাম বলি, আর এর অতিরিক্ত আর কোন আমল না করি, তাহলে কি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব?’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ।’’ [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ১৫]
এভাবে দেখা যায় যে, ইসলামের প্রথম প্রজন্ম তথা সাহাবাদের আগ্রহ, কামনা-বাসনা সবই ছিল আখিরাতমুখী। তাঁদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিজ্ঞাসা ছিল একটাই, ‘‘কিভাবে জাহান্নাম থেকে নাজাত পাব এবং জান্নাত লাভ করতে পারব?’’ এ জিজ্ঞাসার উত্তরের মধ্যেই নিহিত ছিল তৎকালীন শিক্ষাদান, শেখা ও শিখন ফল তথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষাক্রমের প্রকৃত অবয়ব।
আল্লাহ তায়ালা যখন আদম আলাইহিস সালামকে জান্নাত থেকে দুনিয়ায় পাঠালেন তখন তাঁকে ও তাঁর পরবর্তী বংশধরকে শিক্ষাক্রমের এমনই দিক নির্দেশনা দিয়ে বলেছিলেন,
‘‘আর আমার পক্ষ হতে তোমাদের কাছে হিদায়াত এলে যারা সে হিদায়াতের অনুসরণ করবে তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।’’ [সূরা আল-বাকারাহঃ ৩৮]
আয়াতটিতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর আযাব থেকে মুক্তি ও আখিরাতে সফলতার পূর্বশর্ত হলো আল্লাহর হিদায়াতের অনুসরণ। আর হিদায়াত তো শুধু অহীর মাধ্যমে অর্জন করা যায়। অনুরূপভাবে অহীর জ্ঞান ভালভাবে না বুঝলে তা অনুসরণ করা যায় না এবং একমাত্র শিক্ষাদান ও শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমেই সে জ্ঞান মানুষ অনুধাবন করতে পারে। এজন্যই ইসলাম শিক্ষার প্রতি চূড়ান্ত গুরুত্বারোপ করেছে এবং একে ফরয বলে ঘোষণা করেছে। ইসলাম দ্বীন ও দুনিয়ার কল্যাণকর সকল জ্ঞান অর্জনের প্রতিই গুরুত্ব দিয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে দুনিয়া হলো আখিরাতের সফলতা লাভের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার কর্মক্ষেত্র। সে প্রস্ত্ততি গ্রহণের জন্য আল্লাহর হিদায়াত ও guidance -কে সঠিকভাবে বোঝা, উপলদ্ধি করা ও আমল করার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ সাধন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষাক্রমের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল।
আমাদের দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় দু’টি ধারা বহমান। একটি হলো সাধারণ শিক্ষা ও অপরটি হলো মাদরাসা শিক্ষা। সাধারণ শিক্ষাক্রমের মূল লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে সকল প্রকার জাগতিক উন্নতি সাধন। এ লক্ষ্যেই বার বার ঢেলে সাজানো হয়েছে আমাদের সকল স্ত্তরের শিক্ষাক্রমকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়সমূহেও খোলা হয়েছে আধূনিক সব বিষয়। পার্থিব উন্নয়নে সরাসরি অবদান রাখছে না বলে ধর্মীয়, বিশেষ করে ইসলাম শিক্ষাকে ধীরে ধীরে সাধারণ শিক্ষাক্রম থেকে বিলুপ্ত করার চেষ্টা চলছে। এ Common objective -এর পাশাপাশি আমরা দেখি যে, দেশের শাসকশ্রণী, কর্তৃত্বলোভী বহিঃশক্তি, রাজনৈতিক দলসমূহ, এনজিওসমূহ, পরিবার, শিক্ষক ও ছাত্র প্রত্যেকেরই শিক্ষা বিষয়ে নিজ নিজ বিশেষ লক্ষ্য রয়েছে। বিদেশী শক্তি আমাদের শিক্ষাক্রমে তার সংস্কৃতি চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। শাসক শ্রেণী তথাকথিত ‘‘সৎ নাগরিক’’ গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে শিক্ষাক্রমকে নিজেদের মনমত সাজিয়ে নিচ্ছে, রাজনৈতিক দলসমূহ নিজেদের চিন্তা-চেতনা ও আদর্শকে প্রচার করার জন্য শিক্ষাক্ষেত্রকে উপযোগী ময়দান হিসেবে গ্রহণ করছে, শিক্ষকগণ একে অর্থোপর্জনের হাতিয়ার মনে করছেন, পরিবার শিক্ষাকে তার সন্তানের ভবিষ্যতের গ্যারান্টি মনে করছে এবং শিক্ষা লাভ করে একজন ছাত্র ভাল কোন পদে চাকরি করাকেই লক্ষ্য হিসেবে স্থির করছে।
মাদরাসার শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য যদিও ইসলামী চিন্তা-চেতনাসম্পন্ন মানুষ গড়ে তোলা, কিন্তু সেখানে পার্থিব শিক্ষার সাথে যথেষ্ট সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। মাদরাসাসমূহ সত্যিকার ভাল আলেম ও ‘ইনসান কামেল’ উপহার দিতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে এ ধারণা যে কারো জন্মাতে পারে যে, শিক্ষার এ ধারায় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণে আধুনিক যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম আজো তৈরি করা হয়নি।
লক্ষ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষাক্রম ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষাক্রমের মধ্যে পার্থক্য উপরোক্ত আলোচনায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/590/3
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।