মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ফলবতী গাছকে আমরা দেখি মাটির দিকে নুয়ে আসতে, কিন্তু ডিগ্রির বস্তা কাঁধে নুয়ে আসা মানুষগুলোকে বৃথা আস্ফালনে উদ্ধত হতে দেখি কেন? কথায় কথায় অহংকার, চলাফেরা কিংবা পোশাক-আশাকই বাদ যাবে কেন। সবখানেই গর্ব, মেকি আভিজাত্য আর অহংকারের ছাপ। লৌকিকতা, বাগাড়ম্বর ও অপরের প্রতি হেয় ভাব।
ধরুন কোনো বিদ্যালয়ের সামনে একটি দুর্ঘটনায় কোনো শিক্ষার্থী আহত বা নিহত হলো, তারপর কি হবে তা বুঝি সচেতন কোনো নাগরিককেই বলে দিতে হবে না। তুমুল ভাংচুর শুরু হয়ে যাবে। ওই রাস্তা দিয়ে যতগুলো যানবাহন যাবে সবগুলোকেই এ দুর্ঘটনার জন্য শাস্তি পেতে হবে। লাখো কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হবে। একটি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনিচ্ছায় সংঘটিত ঘটনার দায় নিয়ে হাজার হাজার যাত্রীকে এর জন্য দুর্ভোগ সইতে হবে। শুধু দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন হয়? কোনো শিক্ষকের সামান্য ভুল বা বিচ্যুতি হলেও তাদের ভাগ্যে সন্তানতুল্য শিক্ষার্থী কর্তৃক নানা লাঞ্ছনা ও অবমাননাকর উক্তি বা আচরণ বরদাশত করতে হয়।
সংবাদপত্রের পাতা ওল্টালেই রোজ দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তপনার নিত্যনতুন কৌশলের খবর দেখি। ডিজিটাল যুগে ফাইল আটকানো, মানুষকে ঠকানো ও প্রতারিত করার নানা কলা-কৌশল আবিষ্কৃত হয়েছে। ডিজিটাল সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, সুদ-ঘুষ, নারী নির্যাতন, পুরুষ পীড়ন আর কটু-কাটব্য তো এনালগ যুগের মানুষদের দিয়ে হচ্ছে না। হচ্ছে আধুনিক শিক্ষিত সুটেড-বুটেড ভদ্রলোকদের দিয়েই। কৃতিত্বের সঙ্গে এদের উৎরে আসা বিদ্যালয়গুলোর দেয়াল বা দরজায় কি শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের কথা অঙ্কিত ছিল না?
যখন কোনো আধুনিক নির্মাণ সামগ্রী ছিল না, উচ্চতর প্রযুক্তি ছিল না, তখনকার বানানো তাজমহল, পিরামিডগুলো যুগযুগান্তরের বিস্ময় হয়ে এখনো টিকে আছে। অথচ যথারীতি শিক্ষা ও ট্রেনিংপ্রাপ্ত আধুনিক নির্মাণ কৌশল ও সামগ্রী সজ্জিত এ যুগের স্থাপত্যবিদদের বানানো দালান ভেঙে পড়ে ফি বছর মানুষকে জীবন দিতে হয়। এভারেস্টকে পদানত করা, ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী রোগকে জয় করা এবং মহাকাশে যাত্রা করা মানুষগুলোই পারে না পাশের বাড়ির মানুষকে, পেছনে দৌড়াতে থাকা ইতর প্রাণীটিকে সুখী করতে?
একদিন এক দূরপাল্লার গাড়িতে ভদ্রবেশি যুবক কন্ডাক্টরকে দেখলাম সাদামাটা একজন গ্রাম্য মুরুব্বির সঙ্গে অভব্য ভাষায় তর্ক করতে। মনে মনে ভাবছিলাম অশিক্ষিত দারিদ্রক্লিষ্ট হেলপার কন্ডাক্টরের ভাষা এর চেয়ে ভালো আর কী হবে? কিন্তু খানিক বাদেই সে পাশের সিটের এক যুবক যাত্রীর সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে জানালো সে ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে! গাড়িটি তার নিজের। ছুটির দিন ছিল বলে সে নিজেই এসেছে কন্ডাক্টরকে রেখে। অকস্মাৎ ওই গ্রাম্য মুরুব্বির তীর্যক মন্তব্য শুনতে পেলাম। ‘বাবা, আমি নিজে অশিক্ষিত হলেও ছেলেটাকে শিক্ষিত করার জন্য কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ ঢালছি। কিন্তু এই কি সেই শিক্ষিত মানুষের ভাষা? এর চেয়ে তো আমার মতো চাষাদের আচার-ব্যবহারও ভালো।’ এমন ওজস্বী বাক্য শুনে আমিসহ আশপাশের সিটের ভদ্রলোকেরা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম।
পাশের বাসার ক্লাস নাইনে পড়ুয়া এক মেয়ের কিছু কথা শুনে অনেকদিন পর ওই গ্রাম্য মুরুব্বির কথা আবার মনে পড়ল। রাজধানী ঢাকার একটি শীর্ষস্থানীয় নামকরা স্কুলের সাধারণ একজন কর্মকর্তা মাকে সে মুখের ওপর বলে দেয়, ‘আমার স্কুলে আপনি গিয়ে আপনার পরিচয় দেবেন না। আমি তাতে সবার কাছে ছোট হয়ে যাব। আপনি সবার সামনে আমাদের পরীক্ষার হলে স্যারদের ফুটফরমাশ খাটবেন দেখলে আমার মাথা হেঁট হয়ে যাবে।’ নিজের গর্ভধারিনী মাকে এমন কথা বলেছে জেনেই তাকে মন্দ ঠাওরালে অন্যায় হবে। একটু পেছনের ইতিহাসও সংক্ষেপে জানতে হবে। মনুষ্যত্বের পাঠ নিয়ে আমরা কত বড় অমানুষ হচ্ছি তা বুঝাতে এর উল্লেখই যথেষ্ট হতে পারে।
মেয়েটির বাবা মারা গেছেন এক ছেলে এক মেয়ে রেখে। তিনি ছিলেন হাইকোর্টের একজন ডাকসাইটে এ্যাডভোকেট। যুবতী মা তখন এতিম দুই সন্তানকে নিয়ে অথৈ সাগরে পড়ে যান। দেবর-ভাসুররা অস্বীকার করেন এতিম দুই ভাইপো ভাইজিকে তাদের পিতার হিস্যা দিতে। শ্বশুর মহোদয়ও মুখের ওপর বলে দেন, ‘তোমাকে কিছু দেয়া নিরাপদ নয়, না জানি কবে কার সঙ্গে ভেগে চলে যাও।’ জনমদুখী এই মাকে তখন তাঁরই গর্ভধারিনী মা বলেন, ‘দেখ সন্তানদের দিকে তাকিয়ে তোর জীবনসংগ্রামে নামার দরকার নাই। আজকালকার যা ছেলে-মেয়ে, ওরা তোর জন্য কিছু করবে না। বুড়োকালের কথা কল্পনা কর হলেও তুই আমাদের দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তাবে সম্মতি দে।’ কিন্তু এতিম দুই সন্তানের কথা ভেবে মা জননী অন্য কারও মায়াজালে জড়ান নি।
ঢাকায় এসে বহু কষ্টে দেশের সেরা ওই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর একজন সাধারণ কর্মচারী হিসেবে বৈধব্য জয়ের মিশনে নামেন। নিজে খেয়ে না খেয়ে সন্তানদের নামি-দামি স্কুলে ভর্তি করান। সুবহে সাদিকের আগে উঠেন। ওদের জন্য সারাদিনের খাবার তৈরি করে কাকডাকা ভোরেই ছোটেন কর্মস্থলে। সন্ধ্যায় কর্মক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরে রোজই তাকে চেচামেচি করতে হয় ওদের পেছনে। নাওয়া-খাওয়ার ঠিক নাই। পড়াশোনাতেই নেই মন। স্টাফের সন্তান হিসেবে বিশেষ বিবেচনায় ভর্তির সুযোগ থাকলেও ছেলেটি নিজের মান-সম্মান যাবে ভেবে মায়ের সেই নামী স্কুলে ভর্তি হয়নি। আর মেয়েটির হয়েছে ভিন্ন গতি। একই ক্লাসে এবার তার দ্বিতীয় পরীক্ষা। এবার এ বার্ষিক পরীক্ষায় ফেলও তার মোটামুটি নিশ্চিত। পড়াশোনার খবর নেই। টিভি দেখা আর প্রসাধন চর্চা চলছে অবিরাম।
পাশের স্কুলে পড়ে বলে মা সহজেই স্যারদের কাছ থেকে মেয়ের পরীক্ষার খাতার খবর নিতে পারেন। ওই স্কুলের অনেক খাতা তাঁর স্কুলের স্যারদেরও অনেক সময় দেখতে হয়। তিনি ভেবেছিলেন মেয়ের পরিচয় দিলে হয়তো কোনো স্যার দয়ার্দ্র হয়ে তাকে পাশ নাম্বার দেবেন। সে বিবেচনায় কেবল মেয়েকে বললেন, ‘মা, আমি কি তোর খাতার খোঁজ-খবর নিয়ে স্যারের কাছে সুপারিশ করব?’ অমনি সে দুধ-কলা দিয়ে পোষা জীবনহরণকারী সাপের মতো ফণা তুলে ওই উত্তর দেয়। আমার স্ত্র্রী মারফত জেনেছি ওই দুখীনি মা সারাদিন কষ্টে কিছু খেতে পারেন নি। লজ্জা, বেদনা ও অপমানে তিনি সারাদিন কেবলই বোবা কান্নায় অতীত হাতড়েছেন।
আশা করি আর বলার দরকার নেই, সন্তানের জনক-জননী বলতেই ওই ব্যথিত মায়ের করুণ রোদন শুনতে পারছেন। হায় আল্লাহ, এ কেমন মনুষ্যত্বের নমুনা! এ কেমন অকৃতজ্ঞতা! এমন কৃতঘ্নতা দেখে পশুরাও বুঝি লজ্জা না পেয়ে পারে না।
পাঠক, এতক্ষণে বুঝি আমাকে আধুনিক শিক্ষাবিরোধী কিংবা প্রযুক্তিবিমুখ সেকেলে ভেবে নিশ্চিত হয়েছেন। আসলে তা নয়। ব্যক্তিগতভাবে আমি শিক্ষানুরাগী এবং প্রযুক্তিনির্ভর মানুষ। বিদ্যা আহরণেই কাটে আমার দিনমান। আর প্রযুক্তির সঙ্গেই আমার দিবসরাতি। সত্যকে পাশ কাটানোর সুযোগ নেই বলেই এসব ঘটনার অবতারণা। সবার অনুভূতিকে জাগ্রত করতেই এ মৃদু করাঘাত। সত্যটা হলো মানুষ যত শিক্ষিতই হোক না কেন, নৈতিকতার উন্মেষ এবং আল্লাহভীতির জাগরণ না ঘটানো গেলে সে শিক্ষা মানুষকে শিক্ষিতই বানাতে পারে; মানুষ নয়। এভাবে চলতে থাকলে অবস্থার শুধু অবনতিই ঘটবে; উন্নতি নয়।
সহজে কথাটি ব্যাখ্যা করা যাক। চৌদ্দশ বছর আগে ফিরে যাওয়া যাক। মনুষ্যত্ব হারানো আর মানবিক মূল্যবোধ থেকে সরে যাওয়া সে যুগটাকে বিশ্ব ইতিহাসে জাহিলিয়া বা বর্বরতার যুগ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। মানুষকে কোনো জঘন্য কাজে প্রবৃত্ত হতে দেখলে এখনো মানুষ তাকে জাহেল বর্বর বলে নিন্দা জানায়। কিন্তু সে যুগেরই একদল লোক সহসা বদলে যান। শুধু বদলে যাওয়া কেন, বলতে গেলে পুরো দুনিয়াতেই বদলে দেন। তাঁদের সৌজন্যে মানবেতিসই লিখতে হয় নতুন করে। ধূলির ধরা হয়ে ওঠে অদেখা জান্নাত। তাঁদের ইতিহাস পড়ে এখনো মানুষ বিস্ময়ে থ হয়ে যায়। তাঁদের মনুষ্যত্ব বোধ ও আত্মদানের উপমা তুলে ধরে এখনো মানুষ মানবতা ও মহানুভতার পাঠ গ্রহণ করে।
কিন্তু তা কিসের বদৌলতে? কোন পরশ পাথরের ছোঁয়ায় এ রূপান্তর? সেটি কিন্তু এ শিক্ষার বদৌলতেই সাধিত হয়েছিল। শিক্ষার আলোই তাড়িয়ে দিয়েছিল সব আঁধারকে। তবে সে শিক্ষা যতটা না ছিল ভোগের। তারচে বেশি ছিল ত্যাগের। জাগতিকতা ও বস্তুর আসক্তি শেখায় নি তা। অক্ষম জড়বস্তুর পূজা ত্যাগ করে তা শিখিয়েছিল শক্তির আধার, সব কিছুর একক স্রষ্টা ও নিয়ন্তা আল্লাহর দাস হতে। আর তা ছিল ইসলামী শিক্ষা বা ইলমে ওহী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/596/10
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।