hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বাংলাদেশে নাস্তিক্যবাদী অপতৎপরতা প্রতিরোধের উপায়

লেখকঃ আলী হাসান তৈয়ব

নাস্তিক্যবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতায় সমাবেশ :
নাস্তিক্যবাদী তৎপরতার আরেকটি বড় দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করা যাক। বাংলাদেশে সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের কিছু নেতার ফাঁসির দাবিতে রাজধানী শাহবাগ চত্বরে বাম ও নাস্তিকদের নেতৃত্বে কথিত গণজাগরণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। একদল দলনিরপেক্ষ তরুণের হাতে শাহবাগ চত্বরে জামায়াতে ইসলামীর নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে আন্দোলনের সূচনা। গোড়ায় তাদের দাবিগুলোও ছিল অরাজনৈতিক। আয়োজকরা যদিও রাজনীতিকদের বক্তব্য না দেবার যুক্তি দেখিয়ে বলবেন, শুরুর মতো শেষ পর্যন্ত আন্দোলন তার নিরপেক্ষ চরিত্র বজায় রেখেছে। তবে বাস্তবতা হলো, পরবর্তীতে ক্রমেই এ আন্দোলন দলীয় লোকদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। সরকার নিজেই এই আন্দোলনের পৃষ্ঠপোষকতা দিতে শুরু করে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন পত্রিকায় তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এদিকে দেশের বাম অধ্যুষিত ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়াগুলো এ আন্দোলন থেকে তাদের আদি স্বার্থ উদ্ধারে মরিয়া হয়ে ওঠে। ফলে দাবির তালিকায় একে একে যোগ হয় নানা অগণতান্ত্রিক, ইসলামবিদ্বেষী ও দেশবিরোধী ধারা।

দাবি হতে পারত অপরাধীদের ফাঁসি চাই যদি সত্যিই তারা দোষী হয়ে থাকেন। অথচ এখন কথিত সব রাজাকারেরই ফাঁসি দাবি করা হচ্ছে। তাতেও সমস্যা ছিল না যদি প্রকৃতই সবাই রাজাকার হতেন। এখন রাজাকার বলতেই ইঙ্গিত করা হচ্ছে একটি সম্প্রদায় কিংবা নির্বিচারভাবে টুপি-দাড়িওয়ালাদের দিকে। আরও ভয়ঙ্কর প্রবণতা হলো, বামদের মতলবি শ্লোগানে গলা না মেলালেই তাকে বলা হচ্ছে রাজাকার! স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াও রাজাকার! বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতে নির্ভয় ও অকুণ্ঠ প্রতিবাদকারী মুক্তিযুদ্ধের অনন্য বীর কাদের সিদ্দিকীও রাজাকার! বলি, আন্দোলনের ফলে যদি একশ রাজাকারের যোগ্য শাস্তি হয় আর ফাঁসি হয় মাত্র একজন নির্দোষ ব্যক্তির তবে কি লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে না? আইনশাস্ত্রের ভাষায় তো দশজন অপরাধীর শাস্তির চেয়ে একজন নিরপরাধীকে বাঁচানো উত্তম।

সন্দেহ নেই নিরপেক্ষ পটভূমিতে দাঁড়িয়ে যে কোনো অপরাধীর ন্যায্য ও প্রাপ্য শাস্তি দাবি করা একটি প্রশংসনীয় কাজ। এ কাজে আর সবার মতো আমারও সমর্থন প্রশ্নাতীত। কিন্তু তাই বলে কি এ আন্দোলনের প্রতি সমর্থনকে দেশের প্রতি ভালোবাসার অপরিহার্য শর্ত মনে করা যায়? কোনো কারণে এ আন্দোলনে সমর্থন না করতে পারলে কি তার দেশপ্রেম মিথ্যে হয়ে যাবে? সাধারণ মানুষ আড়ালের অনেক খবর জানেন না। মিডিয়ার কারসাজি আর পুতুলখেলা অনেকেই বুঝতে পারেন না। কিন্তু যিনি অন্তরালের খবর রাখেন, মিডিয়ার ভেতরের অবস্থা যার নখদর্পনে তিনি তো ভিন্নমত দিতেই পারেন। এমতাবস্থায় দেশপ্রেমিক হিসেবে তার দায়িত্ব নয় কি অন্যদেরও প্রতারিত হওয়া থেকে সাবধান করা? অন্যের স্বার্থ হাসিলের গুটি হওয়া থেকে সতর্ক করা?

একটি শান্তিপূর্ণ গণজমায়েতে কেন ইসলাম ও মুসলমানের পক্ষে দাঁড়ানো আমার দেশ ও নয়াদিগন্ত পোড়ানো হবে? কেন ভিন্নমত প্রকাশ করায় গণমাধ্যমকে হুমকি দেয়া হবে? দলীয় ব্যক্তির অপরাধে কেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হবে? ভিন্নমত পোষণ করলেই কেন তার নাগরিকত্ব বাতিলের দানবীয় হুমকি প্রদান করা হবে? কেন শাহবাগে অনুষ্ঠিত ইসলাম ও দেশীয় সংস্কৃতিবিরোধী কর্মকাণ্ডের খবর তুলে ধরায় একটি দৈনিকের সম্পাদকের শাস্তি, কারাদণ্ড ও মৃত্যু কামনা করা হবে? কেন রাজাকারের শাস্তি চাওয়ার নামে টুপি-দাড়িসহ সব ইসলামী পোশাককে হেয় করা হবে। ইসলাম চর্চাকারীদের চরিত্র হনন করা হবে? একটি ভালো কাজের ছুতোয় কি দশটি মন্দ কাজকে প্রশ্রয় দেয়া যায়? আজ যারা দেশপ্রেমে গদগদ হয়ে পথে নেমেছেন ফেলানীর লাশ যখন তিনদিন পর্যন্ত ভারতের কাঁটাতারে ঝুলেছিল তখন তারা কোথায় ছিলেন? পদ্মাসেতু, শেয়ারবাজার আর হলমার্কের কুমির-দস্যুদের অপরাধ দেখে তাদের দেশপ্রেম কেন জেগে উঠল না? ব্রাক হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক ধর্ষিতা হয়ে খুন হলে কেন তারা জাগলেন না? প্রতিদিন কত অসহায় নারী ধর্ষিতা ও খুন হচ্ছেন তাদের নির্যাতনে জড়িতদের বিচার চেয়ে কেন তারা পথে নামেন নি? মসজিদের মাইকে আযানের সুরে যারা রোগীদের কষ্টের কথা বলেন, তারা কেন বারডেম ও পিজি হাসপাতালের পাশে মাসের পর মাস এত চিৎকার-চেচামেচিতে রোগীদের কষ্ট অনুধাবন করেন না? মিডিয়া এদের পেছনে হাওয়া দিতে থাকায় অসহায় রোগী কিংবা হাসপাতাল দুটির চিকিৎসকরা এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার সাহস পাচ্ছেন না।

নিরপরাধ মানুষকে যারা হত্যা করেছে, নিরীহ মা-বোনকে যে নরপশুরা ধর্ষণ করেছে তাদের মৃত্যুদণ্ড দাবি তো কুরআনেরই দাবি। কিন্তু এদের ফাঁসির দাবির সঙ্গে কণ্ঠ মেলাবার পর শাহবাগে আর যা হচ্ছে একজন মুসলিম হিসেবে তার ক’টি কাজ আমরা সমর্থন করতে পারি? নাচ-গান, নারী-পুরুষের খোলামেলা ঘেঁষাঘেঁষি, মঞ্চে তরুণীদের উদ্বাহু নৃত্য কিংবা গলা ফাটানো গান ও শ্লোগান, মানুষের চেহারা বিকৃতি, প্রাণীর ছবি অঙ্কন ইত্যাদি- সবগুলোই ইসলামের দৃষ্টিতে চরম গর্হিত কাজ। কোনো মুসলিম এসব সমর্থন করতে পারেন না। প্রকৃত অপরাধীর শাস্তির দাবি প্রতিটি মুসলিমেরই করা উচিত। কিন্তু এসবের কোনোটার সঙ্গে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী কেউ জড়িত হতে পারেন না। আন্দোলন থেকে যে কর্মসূচিগুলো ঘোষিত হচ্ছে তার মধ্যেও তো আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির কোনো ছাপ নেই। বিজাতীয় মোম প্রজ্বলন আর মৌনব্রত রীতি চর্চা কেন আমাদের প্রতিবাদের ভাষা হবে?! জাহানারা ইমামের প্রতিকৃতি স্থাপন আর তার সামনে খ্রিস্টীয় পদ্ধতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে কোন দুঃখে?!

শাহবাগের আন্দোলন তার কুমারিত্ব হারিয়েছে। অবশ্য আন্দোলনের অনেক অগ্নিকন্যা তাদের মূল্যবান সে জিনিসটি হারিয়েছেন অনেক আগেই। বয়ফ্রেন্ডদের সঙ্গে আড্ডা আর ঘনিষ্ট হবার এমন সুযোগ রাজধানীর কোন জুটিই বা লুফে নিতে চাইবে না। অদূরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাঁকা হলও অনেকের জন্য সুবর্ণ সুযোগ বয়ে এনেছে। আর সরকারের প্রত্যক্ষ সাহায্য-সহযোগিতা এবং বামদলগুলোর নেতৃত্বও এ আন্দোলনের সতীত্ব হরণ করেছে। প্রকাশ্যে সাপের মতো করে মানুষ হত্যাকারী সন্ত্রাসীদের মঞ্চে অবস্থানও একে কলঙ্কিত করেছে। কাদিয়ানী ও রাজাকার নুরুল ইসলাম আজ দল বদলেছেন বলে তিনি হয়ে গেছেন স্বাধীনতার স্বপক্ষের লোক! হায় পরিহাস, রাজাকার নুরুল ইসলামও এখন ফাঁসির দাবির মঞ্চে কণ্ঠ মেলাচ্ছেন! বলি, বন্ধুরা আমাকে ক্ষমা করো। সম্ভব হলে আমার প্রশ্নগুলোর সত্যনিষ্ঠ উত্তর তালাশ করো।

সময় হয়েছে শাহবাগ তথা নাস্তিক্যবাদীদের সীমালঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার। শাহবাগে যা হচ্ছে তার ভালো-মন্দ বিশ্লেষণ করার। ইতোমধ্যে অবশ্য সে আওয়াজ ধীরে ধীরে বিভিন্ন দিক থেকে উঠতেও শুরু করেছে। পত্রিকার ভাষ্য মতে, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠকেও শাহবাগ উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকারে থাকা প্রতাপশালী বাম নেতৃত্বের প্রভাবে তা হয়ে উঠছে না। এখনই যদি শুভ বোধসম্পন্ন লোকেরা এর ইতি-নেতি নিয়ে আওয়াজ না তোলেন তবে দেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে। এ দেশের নিরাপত্তা ও অস্তিত্ব হুমকির পড়বে। বিপক্ষ মত দমন আর একদলীয় লেজুড়বৃত্তির ফ্যাসিবাদী মনোভাব প্রতিষ্ঠা পাবে। আজ আপনারা যদি কথা না বলেন, তবে কালকে এরা মুক্তিযোদ্ধা কোটার মতো শাহবাগ কোটা বরাদ্দের দাবি তুলবে সরকারি পদে। ইমাম সাহবেগণ যদি এর বিরুদ্ধে মুসল্লীদের সজাগ না করেন তবে এ দেশে ইসলাম বিপন্ন হয়ে পড়বে। আপনার মিম্বারের বিরুদ্ধেও শ্লোগান উঠবে। আজ এরা ত- তে তুই রাজাকার বলতে বলতে ই- তে তুই ইসলাম তুই রাজাকারও বলে বসেছে!

দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশের সর্বশ্রেণীর মানুষ যখন এই নাস্তিক ব্লগারদের ঘৃষ্টতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ভালোবাসার অপরিহার্য শর্ত পূরণে দগ্ধ হৃদয়ে পথে নেমে এদের শাস্তি দাবি করেন, তখন বাংলাদেশের নাস্তিক্যবাদপ্রভাবিত মিডিয়াগুলো এটাকে একটি দলের পক্ষের দালালি আন্দোলন বলে নির্জলা মিথ্যা প্রচারণা চালাতে থাকে। উপরন্তু মিডিয়াগুলো শাহবাগ ও নাস্তিকদের পক্ষে নির্লজ্জ মিথ্যাচার ও হলুদ সাংবাদিকতা চালিয়ে যায়।

আজ কয়েকদিন মনটা বড়ই ভারাক্রান্ত। কেবলই মিডিয়ার হলুদ সাংবাদিকতার বলি হচ্ছে আমাদের সবার প্রিয় মাতৃভূমি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যারা শহীদ হলেন আর যারা গুলি চালিয়েছেন- উভয় পক্ষ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসেন। সমমনা দুই দল মানুষ কেন একজন আরেকজনকে হত্যা করতে উদ্যত হবে?! হলো শুধু নির্লজ্জ, বিবেক ও প্রকৃত দেশপ্রেমহীন মিডিয়াগুলোর কারণে। দলকানারা ছাড়া শাহবাগের আন্দোলন সমর্থন বা প্রত্যাখ্যানকারী উভয় শ্রেণীর কেউই রাসূলকে অসম্মানকারীর সমর্থক হতে পারেন না। হলেন কেবল মিডিয়ার চাতুরির শিকার হয়ে। একশ্রেণীর মিডিয়া নবীর সঙ্গে বেয়াদবি করার প্রতিবাদকে বানাচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর ষড়যন্ত্র, আরেক শ্রেণীর মিডিয়া শাহবাগের আন্দোলনকে বলছে ইসলাম ধ্বংসের ষড়যন্ত্র। উভয়পক্ষ কিছু বাগাড়ম্বর করেছেন নিজেদের স্বার্থে। অথচ তারা দেশের প্রতি তাকান নি।

শাহবাগের আন্দোলন নিয়ে আমাদের মাথাব্যথার কিছু ছিল না, যদি না সেখানে রাসূলকে কটাক্ষকারী কেউ আহ্বায়ক সংগঠক হতেন। আমার রাসূলকে গালি দেবেন আর উহ পর্যন্ত করতে দেবেন না, তা তো হয় না। রাজনীতিবিদদের বলি, আপনাদের গদি আপনাদেরই থাকুক, আমাদের ফিরিয়ে দিন শুধু ঈমানের যিন্দেগী আর ইসলামের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের অধিকার। আমরা রাসূলের ভালোবাসার জায়গায় কোনো আপস করতে পারি না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন