HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কীভাবে করবো বর্ষবরণ

লেখকঃ খালেদ ইবন হুসাইন ইবন আবদুর রহমান

দ্বিতীয় প্রকার:
কাজের পর আত্মপর্যালোচনা, এটা তিন প্রকার:

প্রথম প্রকার: আনুগত্য নিয়ে আত্মসমালোচনা। আনুগত্যে আল্লাহর অধিকারে ত্রুটি হলে যথাযথ আনুগত্য হয় নি। আনুগত্যে আল্লাহর অধিকার ছয়টি, তাহলো:

ইখলাস।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুকরণ।

সদুপদেশ আল্লাহর জন্য হওয়া।

আনুগত্যে অনুগ্রহের দৃশ্য উপস্থিত থাকা।

আনুগত্যের তাওফীক হাসিলে আপনার ওপর আল্লাহর অনুগ্রহের কথা বিবেচনায় থাকা।

আনুগত্যে আপন অক্ষমতাকে প্রত্যক্ষ করা।

বান্দা আত্মপর্যালোচনা করবে, সে যে আনুগত্য করছে, এর মধ্যে আনুগত্যের ঐ সকল স্তর উপস্থিত আছে কি? নেই।

দ্বিতীয় প্রকার: আত্মপর্যালোচনা করা ঐ সকল কাজে যা পরিহার করা উত্তম ছিল।

তৃতীয় প্রকার: বৈধ অথবা অভ্যাসগত কোনো কাজ কেন সে করল এর জন্য আত্মসমালোচনা করা, এতে কি আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পরকাল উদ্দেশ্য? তাহলে তা হবে লাভজনক, নাকি দুনিয়ায় নগদ উপার্জন উদ্দেশ্য? তাহলে কল্যাণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং এ কাজের সফলতা অর্জিত হবে না।

ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম রহ. আত্মসমালোচনার যে পদ্ধতি বর্ননা করেছেন তা এই-

ফরযসমূহ দিয়ে কাজ শুরু করবে, যদি তাতে কোনো ত্রুটি দেখ সংশোধন করবে।

অতঃপর নিষিদ্ধ কাজসমূহ, যখন সে জানতে পারবে কোনো নিষিদ্ধ কাজে সে জড়িত হয়েছে তাহলে তাওবা ইস্তেগফার এবং গোনাহ মোচনীয় নেককাজের মাধ্যমে সংশোধন করে নিবে।

অবহেলার জন্য আত্মসমালোচনা করা এবং এর প্রতিকার করা আল্লাহর দিকে মনোযোগ দেওয়া, আল্লাহকে স্মরণ করা।

অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ব্যবহার- কথা বলা, চলাফেরা, হাতের ব্যবহার, চোখের দৃষ্টি, কানের শ্রবণ ইত্যাদি ব্যবহারের ওপর আত্মসমালোচনা করা, এগুলোর ব্যবহার দ্বারা আপনার উদ্দেশ্য কী ছিল? কার জন্যে করেছেন? কোন পদ্ধতিতে করেছেন?.

প্রিয় ভাই! আত্মসমালোচনা কঠিন কাজ, তবে আল্লাহ যার জন্যে সহজ করেন। কতিপয় বস্তু আছে যা বান্দার আত্মোসমালোচনায় সহায়ক। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো-

এটা উপলব্ধি করা যে, বান্দা আল্লাহর নিরীক্ষণে আছে এবং আল্লাহ তার ভুল-ত্রুটি সম্পর্কে অবগত, বান্দা যখন তা জানবে, তখন সে মনোযোগী হবে, নিদ্রা থেকে জাগবে এবং আত্মোসমালোচনায় তার ইচ্ছা ও প্রচেষ্টা শক্তিশালী হবে।

বান্দার জানা থাকা যে, আত্মোসমালোচনায় আজকে পরিশ্রম করা মানে আগামী কাল আরাম লাভ, আর আজকে অবহেলা মানে আগামী কালের হিসাব জটিল করা।

কিয়ামত দিবসে পরাক্রমশীল আল্লাহর সম্মুখে প্রশ্ন এবং মহা হিসাবকে স্মরণ করা, যখন সে জানবে আল্লাহর সামনে জাওয়াব দিতে হবে, তখন সে প্রস্তুত করবে প্রত্যেক প্রশ্নের উত্তর। এতে করে বান্দা আত্মসমালোচনায় যত্নবান হবে।

বান্দা কর্তৃক আত্মসমালোচনার উপকারিতা জানা এবং তা পর্যবেক্ষণ করা, উপকারিতাগুলো হলো জানাতুল ফিরদাউসে অবস্থান, আল্লাহর পবিত্র দীদার লাভ, নবী, নেককার এবং উচ্চমর্যদাশালীগণের সঙ্গলাভ; আর আত্মসমালোচনা না থাকলে এসব কিছু সে খোয়াবে, হারাবে এবং এগুলো হারানোর মতো আর কোনো বড় লোকসান কিছু হতে পারে না।

আত্মসমালোচনা পরিহারের ক্ষতির দিকে দৃষ্টি রাখা, যা হলো ধ্বংস, বরবাদি, আগুনে প্রবেশ, আল্লাহর দীদার লাভে প্রতিবন্ধকতা, কাফের, গোমরাহ, অপবিত্র শ্রেণির সঙ্গ হওয়া।

ভালো মানুষের সাহচর্য গ্রহণ, যারা আত্মসমালোচনা করে এবং নিজের দোষ-ত্রুটি অনুসন্ধান করে এবং বিপরীত শ্রেণির সাহচর্য পরিহার করা।

সীরাতে মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামের জীবনীতে দৃষ্টি দেওয়া, আমাদের সালফে সালেহীনদের মাঝে যারা আত্মপর্যালোচনা, আত্ম পর্যবেক্ষণ করতেন তাদের জীবনী জানা।

কবর যিয়ারত করা এবং মৃতদের মধ্যে যারা আত্মসমালোচনা করে নি তাদের অবস্থা চিন্তা করা, অথবা তাদের হাতছাড়া হয়ে যাওয়া নি‘আমতসমূহ অনুভব করা।

আলেম ওলামাদের মজলিসে, ওয়াজ মাহফিলে উপস্থিত হওয়া। কারণ, এটা আত্মসমালোচনায় সহায়ক।

কিয়ামুললাইল, চিন্তা, একাগ্রতার মাধ্যমে কুরআন পাঠ এবং নানা প্রকার ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন।

প্রমোদ, গাফলতি এবং অশ্লীলতার স্থানগুলো পরিহার করা। কারণ, এগুলো মানুষকে মুহাসাবাতুন্নাফস বা আত্মপর্যালোচনা ভুলিয়ে দেয়।

আল্লাহর স্মরণ করা, প্রার্থনা করা, যেন তিনি আপনাকে মুহাসিবীন ও মুরাকিবীনদের অন্তর্ভুক্ত করেন।

নিজের ওপর খারাপ ধারণা পোষণ করা, কারণ যে নিজের ওপর ভালো ধারণা করে সে আত্মসমালোচনা ভুলে যায় অথবা একে উপেক্ষা করে, কখনোও বা নিজের ওপর ভালো ধারণার ফলে মনে করে তার গুনাহ ও নেকী সমান, এটা তাকে আত্মসমালোচনা না করার দিকে আহ্বান করে থাকে।

প্রিয় বন্ধু! উল্লিখিত বস্তুগুলোতে যে গুরুত্ব দিবে সে আল্লাহর ফযলে মুহাসাবাতুন্নাফসের ফল উপভোগ করবে দুনিয়া অথবা পরকালে। মহাসাবাতুন্নাফসে অনেক লাভ যা নিম্নে উদাহারণস্বরূপ কয়েকটি বর্ণিত হলো:

আত্মার অপরাধ ও ক্ষতি সম্পর্কে অবগত হওয়া, বস্তুত যে আত্মার অপরাধ সম্পর্কে অবগত নয় তার পক্ষে এগুলো অপসারণ করা সম্ভব নয়।

তাওবা করা, লজ্জিত হওয়া, উপযুক্ত সময়ে হারানো বস্তু বিষয় উপলব্ধি হওয়া।

আল্লাহর অধিকার জানা, কারণ মুহাসাবার মূল হলো আল্লাহর অধিকার আদায়ে শৈথিল্য প্রদর্শনে হিসাব-নিকাশ করা।

আল্লাহর কাছে নত হওয়া।

বান্দার ওপর আল্লাহর অনুগ্রহ, দয়া এবং ক্ষমা সম্পর্কে জানা, বান্দা এতো এতো গুনাহ এবং বিরোধিতা করার পরও আল্লাহ তার জন্য তড়িৎ কোনো ব্যবস্থা নেন নি।

আত্মাকে ঘৃণা করা, দোষারোপ করা এবং অহংকার, লৌকিকতা থেকে মুক্তি লাভ।

ইবাদত বন্দেগিতে অধিক মেহনত করা, গুনাহ পরিত্যাগ করা যেন মুহাসাবাহ করা সহজ হয়।

অপরের হক ফেরৎ দান, বিদ্বেষ ভুলে যাওয়া, উত্তম আচরণ করা, এগুলো হলো বড় মুহাসাবাহ।

প্রিয় ভাই! বুদ্ধিমান এবং আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসীর উচিৎ আত্মসমালোচনায় সে অবহেলা করবে না এবং আত্মার সকল নড়াচড়া, চলাফেরা, অবস্থান, পদক্ষেপকে দাবিয়ে রাখা। জীবনের প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাস একেকটি মূল্যবান হিরকখণ্ড তুল্য, এর মাধ্যমে ধনভাণ্ডার ক্রয় করা যায়, যার নি‘আমত কখনো শেষ হওয়ার নয়। এ মূল্যবান বস্তুকে নষ্ট করা অথবা এর মাধ্যমে এমন বস্তু ক্রয় করা যা মহা ধ্বংসকে ডেকে আনে এটা শুধু মুর্খ-নির্বোধ করে থাকবে, তার এ মহা ক্ষতির হাকীকত প্রকাশ পাবে কিয়ামত দিবসে।

“সে দিন প্রত্যেক ব্যক্তি সৎকর্ম হতে যা করেছে তা মজুদ পাবে এবং সে যে মন্দ করেছে তাও পাবে। তখন সে ইচ্ছা করবে যে, যদি তার মধ্যে ও ঐ দুষ্কর্মের মধ্যে সুদূর ব্যবধান হতো এবং আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে স্বীয় পবিত্র অস্তিত্বের ভয় প্রদর্শন করেছেন এবং আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের প্রতি স্নেহশীল।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩০]

এ ঈমানী শক্তি এবং সজিবাত্মা নিয়েই আমরা নতুন হিজরি সালকে স্বাগত জানাব। আমরা সকলেই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হারানো বস্তুর প্রতিকারে এবং সকল অবস্থায় আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে কাজ করার।

দুরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নবীর ওপর এবং আহলে বাইত ও সাহাবায়ে কেরামের ওপর।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন