মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
“স্বপ্নের যেভাবে ব্যাখ্যা করা হয় সেভাবে তা বাস্তবায়িত হয়। যখন তোমাদের কেউ স্বপ্ন দেখবে তখন আলেম অথবা কল্যাণকামী ব্যতীত কারো কাছে তা বর্ণনা করবে না”। [হাকেম, মুসতাদরাক, হাদীস নং ৮১৭৭। শাইখ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
আবূ দাউদ, তিরমিযী, ইবন মাজাহ আবূ রাযীন আল-উকাইলী থেকে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“স্বপ্ন হলো, উড়ন্ত পায়ের মতো। (যা ভালো ও খারাপ উভয়ের সম্ভাবনা রাখে) যতক্ষণ না তার ব্যাখ্যা করা হয়। যখন একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয় তখন তা বাস্তবায়িত হয়”। [ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩৯১৪; আবূ দাউদ, হাদীস নং ৫০২০]
হাদীসে আরো এসেছে: আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“মদীনার অধিবাসী এক মহিলার স্বামী ছিল ব্যবসায়ী। ব্যবসায়িক কাজে বিভিন্ন দেশে আসা যাওয়া করত সে। যখনই তার স্বামী বিদেশে যেত তখনই সে নারী স্বপ্ন দেখত। আর তার স্বামী সর্বদা তাকে গর্ভবতী রেখে যেত। একদিন সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, আমার স্বামী সফরে গেছে। আমি গর্ভবতী। আমি স্বপ্ন দেখলাম, আমার ঘরের চৌকাঠ ভেঙ্গে গেছে। আর আমি একটি এক চোখ কানা সন্তান প্রসব করেছি।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: ভালো স্বপ্ন দেখেছো। ইনশাআল্লাহ তোমার স্বামী তোমার কাছে সহীহ-সুস্থ অবস্থায় ফিরে আসবে আর তুমি একটি সুস্থ-সুন্দর সন্তান প্রসব করবে।
এভাবে সে দুবার বা তিনবার স্বপ্ন দেখেছে। আর প্রতিবারই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসেছে। তিনি প্রতিবার এরকম ব্যাখ্যাই দিয়েছেন। আর প্রতিবার সে রকমই বাস্তবায়িত হয়েছে।
একদিন মহিলা আগের মতই আসল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন অনুপস্থিত ছিলেন। সে স্বপ্ন দেখেই এসেছে। আমি তাকে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর বান্দী! তুমি রাসুলুল্লাহর নিকট কী জিজ্ঞেস করবে? সে বলল, আমি একটি স্বপ্ন প্রায়ই দেখি। অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসি। তিনি সুন্দর ব্যাখ্যা দেন। সেটাই বাস্তবে পরিণত হয়।
আমি বললাম, তুমি আমাকে বল, কী স্বপ্ন দেখেছো? সে বলল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসুক, তারপর বলব। আমি তাকে বারবার অনুরোধ করতে লাগলাম স্বপ্নটি বলার জন্য- যেমনটি আমার অভ্যাস। অবশেষে সে আমাকে স্বপ্নের কথা বলতে বাধ্য হল। আমি বললাম, আল্লাহর কসম! তোমার স্বপ্ন যদি সত্যি হয়, তাহলে তোমার স্বামী মারা যাবে। আর তুমি একটি অপূর্ণাঙ্গ বা অসুস্থ ছেলে প্রসব করবে।
তখন মহিলাটি বসে কাঁদতে লাগল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে বললেন: হে আয়েশা! এর কী হয়েছে? আমি পুরো ঘটনা ও স্বপ্ন সম্পর্কে আমার দেওয়া ব্যাখ্যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানালাম।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: হে আয়েশা, এটা কী করলে? যখন কোনো মুসলমানের স্বপ্নের ব্যাখ্যা করবে তখন সুন্দর ও কল্যাণকর ব্যাখ্যা দেবে। মনে রাখবে স্বপ্নের যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, বাস্তবে তাই সংঘটিত হয়। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আল্লাহ তা‘আলার কী ইচ্ছা জানি না। মহিলাটির স্বামী মারা গেল আর দেখলাম সে একটি অসুস্থ অপূর্ণাঙ্গ ছেলে প্রসব করল”। [দারামী, ইবন হাজার রহ. হাদীসটিকে হাসান বলে অভিহিত করেছেন।]
হাদীস থেকে শিক্ষা ও জ্ঞাতব্য:
এক. স্বপ্ন বর্ণনা করার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যাকে তাকে স্বপ্নের কথা বলা উচিত নয়।
দুই. সর্বদা আলেম, শুভাকাঙ্ক্ষীর কাছে স্বপ্নের কথা বলবে। যে শুভাকাঙ্ক্ষী নয় তার কাছে কোনো ধরনের স্বপ্নের কথা বলবে না।
তিন. স্বপ্ন একটি উড়ন্ত পায়ের মতো। এ কথার অর্থ হল শূন্যে ঝুলিয়ে রাখা পা যেমন যে কোনো সময় মাটিতে রাখা যায় আবার নীচে আগুন থাকলে তাতেও রাখা যায়। স্বপ্ন এমনই, এর ব্যাখ্যা ভালো করা যায় আবার খারাপও করা যায়। যে ব্যাখ্যাই করা হোক, সেটিই সংঘটিত হবে।
চার. মদীনার এই মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে আসতেন। স্বপ্নটি বাহ্যিক দৃষ্টিতে খারাপ হলেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভালো ও সুন্দর ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন। তাই স্বপ্ন দ্রষ্টার পরিচিতদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে ভালো আলেম তার কাছে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া উচিত।
পাঁচ. প্রশ্ন হতে পারে, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা কেন এ ধরনের ব্যাখ্যা দিলেন? এর উত্তর হলো:
(ক) এ মহিলার স্বপ্নের ব্যাখ্যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কীভাবে করেছেন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা তা জানতেন না। তাই তিনি নিজের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা করেছেন।
(খ) আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা স্বপ্নের বাহ্যিক দিক সামনে রেখে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ঘরের চৌকাঠ দ্বারা স্বামী বুঝেছেন। আর এক চোখ অন্ধ সন্তান দ্বারা অপূর্ণাঙ্গ সন্তান বুঝেছেন।
(গ) স্বপ্নের খারাপ বা অশুভ ব্যাখ্যা করা অনুচিত। স্বপ্ন ব্যাখ্যার এ মূলনীতির কথা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা আগে থেকে জানতেন না। এ ঘটনার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জানিয়েছেন। ফলে তিনি বিষয়টি জানতে পেরেছেন।
(ঘ) এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা এভাবে করা যেত, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করতেন। তাহল ঘরের চৌকাঠ ভেঙ্গে যাওয়ার অর্থ হলো, ঘর প্রশস্ত হবে। প্রাচুর্য ও সচ্ছলতা আসবে। আর এক চোখ কানা সন্তানের অর্থ হল, সন্তানটি তার চোখ দিয়ে শুধু ভালো বিষয় দেখবে। এটা হলো দূরবর্তী ব্যাখ্যা। আর আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা করেছেন নিকটবর্তী ব্যাখ্যা।
ছয়. যার কাছে স্বপ্নের ব্যাখ্যা চাওয়া হবে, তিনি যদি জানেন, এর ব্যাখ্যা খারাপ তবে তিনি তা বলবেন না। যথাসম্ভব ভালো ব্যাখ্যা করে দেবেন। নয়তো চুপ থাকবেন। অথবা বলবেন, আল্লাহ ভালো জানেন।
সায়ীদ ইবন মানসূর বর্ণনা করেন, আতা রহ. সব সময় বলতেন: স্বপ্নের ব্যাখ্যা যা দেওয়া হয়, সেটাই সংঘটিত হয়। [ফাতহুল বারী]
প্রশ্ন হতে পারে তাহলে তাকদীরের ব্যাপারটা কী হবে? উত্তর সোজা। তাকদীরে এভাবেই লেখা আছে যে, অমুক ব্যক্তি এভাবে ব্যাখ্যা করবে। আর তাই সংঘটিত হবে। কিন্তু আমাদের কর্তব্য হবে, কখনো খারাপ বা অশুভ ব্যাখ্যা না দেওয়া। তাকদীরে কী আছে আমরা তা জানি না। এ জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে কোনো মানুষের কাছে স্বপ্নের কথা বলতে নিষেধ করেছেন। স্বপ্নের কথা শুধু তাকে বলা যাবে যে আলেম, বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী ও কল্যাণকামী। এ ছাড়া অন্য কারো কাছে নয়।
আরেকটি ঘটনা:
এক মহিলা একটি দুগ্ধপোষ্য শিশুকে নিয়ে ইমাম ইবন সীরীন রহ.র শিক্ষার মজলিসে আসল। তিনি ইমামের ছাত্রদের কাছে জিজ্ঞেস করলেন, ইমাম সাহেব কোথায়? ইমাম সাহেবের একজন বোকা ছাত্র বলল, আপনি তার কাছে কেন এসেছেন?
মহিলাটি বলল, আমি এ ছেলেটির ব্যাপারে একটি স্বপ্ন দেখেছি, তার ব্যাখ্যা জানার জন্য এসেছি। ছাত্রটি বলল, কী স্বপ্ন দেখেছেন? মহিলাটি বলল, আমি দেখেছি আমার এ ছেলেটি সাগর থেকে পানি পান করছে।
ছাত্রটি তাড়াতাড়ি ব্যাখ্যা দিল, বলল, তাহলে তো সে পেট ফুলে মারা যাবে। তৎক্ষণাৎ শিশুটির পেট ফুলে উঠল। আর চিৎকার করে মারা গেল। মহিলাটি কাঁদা শুরু করল। এরই মধ্যে ইমাম সাহেব এসে পড়লেন। ঘটনা শুনে তিনি বললেন: যদি তুমি স্বপ্নের ব্যাখ্যা না করে ছেড়ে দিতে তাহলে ছেলেটি এ দেশের সবচেয়ে বড় আলেম ও বিদ্বান হত।
সাগরের অর্থ শুধু পানের অযোগ্য নোনা পানিই নয়। সাগরের ব্যাখ্যা হল, মনি-মুক্তা, হীরা, প্রবাল। কাজেই যিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যা করবেন তিনি সব সময় ইতিবাচক ও কল্যাণকর ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করবেন। [আল কাওয়ায়েদুল হুসনা ফী তাবীলির রুইয়া: শাইখ আব্দুল্লাহ ইবন মুহাম্মাদ আস সাদহান]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/754/12
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।