HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পর সম্মিলিত মুনাজাত

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

তৃতীয় দলের প্রমাণ:
তৃতীয় দল যারা ফরয সালাতের পর সম্মিলিত ভাবে (জামাআতের সাথে) মুনাজাত করেন তাদের দলিল হলো ঐ সকল হাদীস যাতে সালাত শেষে দো‘আ কবুলের কথা বলা হয়েছে এবং দো‘আ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। এ সকল হাদীস ছাড়া তাদের এ কাজের সমর্থনে হাদীস থেকে সরাসরি অন্য কোনো প্রমাণ নেই। এমন কোনো হাদীস তারা পেশ করতে পারবেন না যাতে দেখা যাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক সালাত জামা‘আতের সাথে আদায় শেষে সকলকে নিয়ে সর্বদা হাত তুলে মুনাজাত করেছেন।

তারা যে সকল হাদীস প্রমাণ হিসেবে পেশ করতে চান তার শিরোনাম হলো,

الدُّعَاءُ عَقِيْبَ الصَّلَوَاتِ، اَلدُّعَاءُ دُبُرَ الصَّلَوَاتِ

তারা মনে করে নিয়েছেন আকীবাস সালাত ও দুবুরাস সালাত অর্থ সালাম ফিরানোর পর। আসলে তা নয়। এর অর্থ হলো সালাতের শেষ অংশে। এ সকল হাদীসে সালাতের শেষ অংশে অর্থাৎ শেষ বৈঠকে দুরূদ পাঠ করার পর সালামের পূর্বে দো‘আ করার কথা বলা হয়েছে। পরিভাষায় যা দো‘আয়ে মাছুরা হিসেবে আমাদের কাছে পরিচিত। সালাত শেষে দো‘আ কবুল সম্পর্কে যত হাদীস এসেছে তা সবগুলো দো‘আ মাছুরা সম্পর্কে। যার সময় হলো সালাম ফিরানোর পূর্বে। আর দো‘আ মাছুরা শুধু একটা নয়, অনেক। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে সালাতের শেষে দো‘আ সংক্রান্ত এ সকল হাদীসে ‘বা’দাস সালাত’ বলা হয়নি। হাদীস গ্রন্থে এ সকল দো‘আকে

اَلْأَدْعِيَاءُ دُبُرَ الصَّلَوَاتِ أو الدُّعَاءُ عَقِيْبَ الصَّلَوَاتِ

(সালাত শেষের দো‘আ) অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে দুটো বিষয়: একটা হলো সালাত শেষের দো‘আ। দ্বিতীয়টা হলো সালাত শেষের যিকির। প্রথমটির স্থান হলো সালাম ফিরানোর পূর্বে। আর দ্বিতীয়টির স্থান হলো সালাম ফিরানোর পর।

ইমাম ইবন তাইমিয়্যাহ, ইবনুল কাইয়্যেম প্রমুখ উলামায়ে কেরামের মত এটাই।

এ মতটি কুরআন ও হাদীসের আলোকে বেশি যুক্তি গ্রাহ্য। বান্দা যখন সালাতে থাকে তখন সে আল্লাহর নিকটে অবস্থান করে। দো‘আ মুনাজাতের সময় তখনই। যখন সালাতের সমাপ্তি ঘোষিত হলো তখন নয়। তখন সময় হলো আল্লাহর যিকিরের, যেমন আল্লাহ বলেন,

﴿فَإِذَا قَضَيۡتُمُ ٱلصَّلَوٰةَ فَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ قِيَٰمٗا وَقُعُودٗا وَعَلَىٰ جُنُوبِكُمۡۚ ﴾ [ النساء : ١٠٣ ]

“যখন তোমরা সালাত শেষ করলে তখন দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করবে।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১০৩]

এ সম্পর্কিত হাদীসগুলোর ভাষা এবং সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আমলসমূহ গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে এ বিষয়টিই বুঝে আসে যে, সালাম ফিরানোর পরের সময়টা দো‘আ করার সময় নয়, যিকির করার সময়।

তারপরও প্রশ্ন থেকে যায় যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরয সালাতের পর কখনো কি দো‘আ করেন নি? হা করেছেন। তবে তা সম্মিলিতভাবে নয়।

যেমন হাদীসে এসেছে, আল-বারা ইবন আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا خَلْفَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَحْبَبْنَا أَنْ نَكُونَ عَنْ يَمِينِهِ، يُقْبِلُ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ، قَالَ : فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ : «رَبِّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ »

“আমরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে সালাত আদায় করতাম। আমরা তার ডান দিকে সালাত আদায় করতে পছন্দ করতাম। তিনি আমাদের দিকে মুখ করতেন। আল-বারা বলেন, তখন তাকে বলতে শুনতাম, ‘‘হে আল্লাহ! আপনার শাস্তি থেকে আমাকে বাঁচান, যে দিন আপনি আপনার বান্দাদের উঠাবেন।’’ [. সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭০৯]

জামা‘আতের সাথে তিনি মুসল্লীদের নিয়ে দো‘আ করেছেন, এমন কোনো বর্ণনা নেই। যা আছে তা তার বিপরীত। যেমন বর্ণিত হাদীসটির প্রতি লক্ষ্য করুন! সেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবচন শব্দ ব্যবহার করেছেন। বলেছেন ‘‘আমাকে বাঁচান...।’’ সকলকে সাথে নিয়ে দো‘আটি করলে বলতেন ‘‘আমাদেরকে বাঁচান।’’

আরেকটি হাদীসের প্রতি লক্ষ্য করুন। মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত ধরে বলেন,

«يَا مُعَاذُ، وَاللَّهِ إِنِّي لَأُحِبُّكَ، وَاللَّهِ إِنِّي لَأُحِبُّكَ» ، فَقَالَ : أُوصِيكَ يَا مُعَاذُ لَا تَدَعَنَّ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ تَقُولُ : اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَى ذِكْرِكَ، وَشُكْرِكَ، وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ»

“হে মু‘আয! আল্লাহর কসম, আমি তোমাকে ভালোবাসি, আল্লাহর কসম আমি তেমাকে ভালোবাসি। তারপর তিনি বলেন, তুমি অবশ্যই প্রত্যেক সালাতের পর বলবে, হে আল্লাহ! আপনার যিকির, আপনার শোকর ও আপনার জন্য উত্তম ইবাদত করতে আমাকে সাহায্য করুন।’’ [. সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ১৫২২]

দেখুন! প্রখ্যাত সাহাবী মু‘আয ইবন জাবাল কাওমের ইমাম ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ইয়েমেনের গভর্নর, শিক্ষক ও ইমাম হিসেবে পাঠিয়েছিলেন। তিনি সালাতে ইমামতি করতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এ দো‘আটি সকলকে নিয়ে করার নির্দেশ দিতে পারতেন; কিন্তু তিনি তা দেন নি। তিনি তাকে একা একা দো‘আটি করার জন্য বলেছেন। হাদীসের ভাষাই তার প্রমাণ।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম ফিরানোর পর তিনবার ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি) বলেছেন। তিনি যদি এটা সকলকে নিয়ে করতেন তাহলে ‘নাস্তাগফিরুল্লাহ’ (আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি) বলতেন।

যারা ফরয সালাত শেষে কোনো যিকির-আযকার না করে উঠে গেল তারা একটা সুন্নত (মুস্তাহাব) ছেড়ে দিল। আবার যারা সালাত শেষে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করে উঠে গেল তারা একটা সুন্নত বাদ দিয়ে সে স্থানে অন্য একটি বিদ‘আত আমল করল।

তাই সারকথা হলো, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের পর সব সময় জামা‘আতের সাথে মুনাজাত করা একটি বিদআত। যা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেন নি, সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেঈগণ করেছেন বলে কোনো প্রমাণ নেই।

তবে যদি কেহ জামা‘আতে সালাত আদায়ের পর একা একা দো‘আ মুনাজাত করেন তা সুন্নতের খেলাপ হবে না। এমনিভাবে ইমাম সাহেব যদি সকলকে নিয়ে বিশেষ কোনো পরিস্থিতিতে কোনো কোনো সময় দো‘আ-মুনাজাত করেন তবে তা নাজায়েয হবে না।

ইমাম ইবন তাইমিয়্যাহ, ইবনুল কাইয়্যেম ও মুফতীয়ে আজম ফয়জুল্লাহ রহ.-সহ অনেক আলেম-উলামা এ মত ব্যক্ত করেছেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন