আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস ইবনু নাওফাল আল-হাশিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল মুত্তালিব ইবনু রবী’আহ আল-হারিস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব তাকে জানান যে, তার পিতা রবী’আহ ইবনুল হারিস এবং ‘আব্বাস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) ‘আবদুল মুত্তালিব ইবনু রবী’আহ ও ফাদল ইবনু ‘আব্বাসকে বলেন, তোমরা দু’জনে রাসূলুল্লাহ র (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট গিয়ে বলো, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে, আমাদের বয়স হয়েছে। আমরা বিবাহ করতে চাই। হে আল্লাহর রাসুল! আপনি সকলের চেয়ে অধিক কল্যাণকামী এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী। আমাদের উভয়ের পিতার সামর্থ্য নেই যে, মোহরানা আদায় করে আমাদের বিবাহ করাবে। হে আল্লাহর রাসূল! আমাদেরকে সদাক্বাহ’র কর্মচারী নিয়োগ করুন। অপরাপর কর্মচারীরা আপনাকে যা দেয় আমরাও আপনাকে তাই দিবো এবং সদাক্বাহ থেকে আমরা নির্ধারিত অংশ (বেতন স্বরূপ) পাবো। ‘আবদুল মুত্তালিব ইবনু রবী’আহ বলেন, আমরা এ আলোচনায় করছিলাম এমন সময় ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) এসে আমাদের নিকট উপস্থিত হন। তিনি আমাদের বললেন, আল্লাহর শপথ! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের মধ্য হতে কাউকে সদাক্বাহ বিভাগে নিয়োগ দিবেন না। রবী’আহ তাকে বললেন, এটা আপনি নিজের মত বলছেন। আপনি তো রাসূলুল্লাহ র (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জামাতা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। আমরা আপনার প্রতি হিংসা রাখি না। একথা শুনামাত্র ‘আলী (রাঃ) তার গায়ের চাঁদর বিছিয়ে তাতে শুয়ে পড়েন। অতঃপর তিনি বলেন, আমি হাসানের পিতা যার সিদ্ধান্তকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। আল্লাহর শপথ! যে উদ্দেশ্যে তোমরা তোমাদের পুত্রদ্বয়কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট প্রেরন করছো, তারা এতে নিরাশ হয়ে তোমাদের নিকট না ফেরা পর্যন্ত আমি এখান থেকে যাবো না। ‘আবদুল মুত্তালিব বলেন, আমি ও ফাদল বের হলাম। পৌঁছে দেখি যুহরের সলাত আরম্ভ হচ্ছে। আমরা লোকদের সাথে সালাত আদায় করি। অতঃপর আমি এবং ফাদল জলদি করে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হুজরার দরজার নিকট যাই। তখন তিনি যাইনাব বিনতু জাহশের ঘরে অবস্থান করেছিলেন। আমরা দরজার কাছে দাঁড়িয়ে রইলাম। ইতিমধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে আমার ও ফাদলের কান ধরে বললেনঃ তোমাদের মতলবটা কি বলতো? এ বলে তিনি ঘরে ঢুকলেন এবং আমাকে ও ফাদলকে প্রবেশের অনুমতি দিলেন। আমরা ভিতরে ঢুকে একে অন্যকে কথা শুরু করতে বলি। অতঃপর আমি বা ফাদল তাঁর কাছে বললাম- যেজন্য আমাদের উভয়ের পিতা আমাদের আদেশ করেছেন। আমাদের কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছুক্ষন নীরব থাকলেন। তিনি ঘরের ছাদের দিকে তাকালেন এবং দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকলেন। মনে হলো তিনি আমাদের কথার জবাব দিবেন না। এমন সময় দেখি, যাইনাব (রাঃ) পর্দার আড়াল থেকে হাতের ইশারায় আমাদেরকে বললেন, তাড়াহুড়া করো না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার মাথা নিচু করে আমাদেরকে বললেনঃ এ সদাক্বাহ হচ্ছে মানুষের (সম্পদের) আবর্জনা। এটা মুহাম্মাদ এবং মুহাম্মাদের পরিবারের জন্য হালাল নয়। নাওফাল ইবনুল হারিসকে আমার কাছে ডেকে আনো। তাকে ডেকে আনা হলে তিনি বললেনঃ হে নাওফাল! ‘আবদুল মুত্তালিবকে বিবাহ করাও (তোমার কন্যাকে তার কাছে বিয়ে দাও)। অতঃপর নাওফাল আমাকে বিবাহ করালেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ মাহমিয়্যাহ ইবনু জাযইকে আমার কাছে ডেকে আনো। সে ছিলো যুবাইদ গোত্রীয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে এক-পঞ্চমাংশ আদায়ের কাজে নিযুক্ত করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাহমিয়্যাহকে বললেনঃ ফাদলকে (তোমার মেয়ের সাথে) বিয়ে দাও। ফলে তিনি তাকে বিয়ে দিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাহমিয়্যাহকে বললেনঃ উঠো! উভয়ের পক্ষ হতে এক-পঞ্চমাংশ তহবিল থেকে এতো এতো সম্পদ মোহর বাবদ দিয়ে দাও। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস আমার নিকট মোহরের পরিমান উল্লেখ করেননি।
সহীহঃ ইরওয়া (৮৭৯)।