সালামাহ ইবনু কুহাইল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যায়িদ ইবনু ওয়াহ্ব আল্-জুহানী (রহঃ) জানিয়েছেন যে, তিনি ‘আলী (রাঃ) -এর সঙ্গে সেই সৈন্যদলের সঙ্গে ছিলেন যারা খারিজীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। 'আলী (রাঃ) বলেন, হে জনতা! আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ আমার উম্মাতের মধ্য হতে এমন একটি গোত্রের আত্নপ্রকাশ ঘটবে যাদের কুরআন পাঠের সামনে তোমাদের তিলওয়াত কিছুই নয়, তোমাদের সলাত তাদের সলাতের তুলনায় কিছুই নয় এবং তোমাদের সিয়াম তাদের সিয়ামের তুলনায় কিছুই নয়। তারা কুরআন পড়বে নেকী লাভের আশায়, কিন্তু পরিণতি হবে তার বিপরীত। তাদের সলাত তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তীর যেভাবে ধনুক হতে বেরিয়ে যায়, তারাও ঠিক সেভাবে ইসলাম হতে দূরে সরে যাবে। যেসব সৈন্য তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে তারা যদি সেই সওয়াবের কথা জানতে পারে যা তাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ মুখে তাদের জন্য বলেছেন, তাহলে তারা অন্যান্য আমল করা ছেড়ে দিবে এবং এরই উপর নির্ভর করে বসে থাকবে। এই দলের নিদর্শন হলো, তাদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি থাকবে যার বাহু থাকেব কিন্তু হাত থাকবে না এবং তার বাহুর উপর স্তনের বোঁটার ন্যায় একটি বোঁটা থাকবে এবং তার উপর সাদা লোম থাকবে। তোমরা কি তোমাদের ছেলেমেয়ে ও ধন-সম্পদ এদের আয়ত্তে রেখে মু’আরিযাহ ও সিরিয়াবাসীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যেতে চাও? আল্লাহর কসম! আমার ধারনা যে, এরাই সেই গোত্রের। কেননা, এরা হারামভাবে রক্ত প্রবাহিত করছে এবং চারনভূমি হতে মানুষের পশু লুট করছে। অতএব, তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে বের হও।
সালামাহ ইবনু কুহাইল (রহঃ) বলেন, আমার কাছে যায়িদ ইবনু ওয়াহ্ব খারিজীদের নিকট গমনের ঘটনা পর্যায়ক্রমে বর্ণনা করে বলেন, অবশেষে আমরা একটি পুল অতিক্রম করে যখন দুই দল মুখোমুখি হলাম, আর খারিজীদের সেনাপ্রধান ছিলো ‘আবদুল্লাহ ইবনু ওয়াহ্ব আর-রাসিবী। সে তাদেরকে বললো, তোমরা বল্লম ছুঁড়ো এবং খাপ থেকে তরবারি বের করো। এমন যেনো না হয় যে, তারা তোমাদেরকে ওয়াদা দিয়ে বলবে যেমন হারুরার দিবসে তারা ওয়াদা দিয়েছিলো। তিনি বলেন, অতঃপর তারা বল্লম নিক্ষেপ করতে লাগলো ও খাপ থেকে তরবারি বের করলো এবং মুসলিমরা বল্লম ছুঁড়ে তাদেরকে প্রতিরোধ করলো এবং একের পর এক তারা নিহত হতে থাকলো। তিনি বলেন, ঐদিন ‘আলী (রাঃ)-এর পক্ষের দুই ব্যক্তি শহীদ হলো। ‘আলী (রাঃ) বলেন, তোমরা নিহতদের মধ্যে ছোট হাতবিশিস্ট ব্যক্তিকে খোজঁ করো ; কিন্তু তারা তাকে পেলো না। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর 'আলী (রাঃ) নিজে উঠে পরস্পরের উপর পরে থাকা লাশের নিকট এসে বললেন, এদেরকে বের করো। তারা তাকে ভুলুন্ঠিত অবস্হায় পেয়ে গেলে তিনি আল্লাহু আকবার উচ্চারণ করে বললেন, আল্লাহ সত্য বলেছেন এবং তাঁর রাসুলও। এরপর ‘উবাইদাহ আস্-সালমানী তার নিকট দাঁড়িয়ে বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! সেই আল্লাহর কসম যিনি ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই! আপনি কি একথা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট শুনেছেন? তিনি বললেন, হাঁ, সেই আল্লাহর কসম! যিনি ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই। ‘উবাইদাহ তিনবার কসম করে তার নিকট প্রশ্ন করলে তিনিও তিনবার কসম করে একই জবাব দেন।