নুআইম ইবনে কানাব (র) থেকে বর্ণিতঃ
আমি আবু যার (রাঃ)-এর নিকট এসে তাকে ঘরে পেলাম না। আমি তার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম, আবু যার (রাঃ) কোথায়? তিনি বলেন, কোন কাজে বাইরে গিয়েছেন, এখনই আপনার সাক্ষাতে এসে যাবেন। অতএব আমি তার অপেক্ষায় বসে থাকলাম। তিনি দু’টি উটসহ আসলেন, যার একটির পিছনে অপরটি বাধা এবং প্রতিটির ঘাড়ে ছিল একটি করে মশক। তিনি সেই দু’টি নামালেন, অতঃপর এলেন। আমি বললাম, হে আবু যার! যাদের সাথে আমি দেখা-সাক্ষাত করি তাদের মধ্যে আমার কাছে আপনার চেয়ে অধিক প্রিয় কেউ নাই। আবার তাদের মধ্যে আপনার চেয়ে অধিক অপ্রিয়ও আমার কাছে কেউ নাই। তিনি বলেন, তোমার পিতা আল্লাহর জন্য কোরবান হোক। এই দু’টি বিপরীত জিনিস একত্র হলো কি করে। তিনি বলেন, আমি জাহিলী যুগে একটি কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দিয়েছি। আমার আশংকা হয় যে, আমি আপনার সাথে সাক্ষাত করলেই আপনি বলবেন, তোমার তওবা করার বা নিস্কৃতি লাভের কোন সুযোগ নাই। কিন্তু আমি আকাঙ্খা করতাম যে, আপনি বলবেন, তোমার তওবা করার ও নিস্তার লাভের উপায় আছে। তিনি বলেন, তুমি কি এটি জাহিলী যুগে করেছিলে? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বলেন, অতীতের গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করেছেন। তিনি তার স্ত্রীকে বলেন, আমাদের জন্য খাবার নিয়ে এসো। মহিলা অসম্মত হলো। তিনি পুনরায় তাকে আদেশ করলে এবারও সে অস্বীকার করলো। শেষে দু’জনের কথা কাটাকাটির স্বর উচ্চ মাত্রায় পৌঁছলো। তিনি বলেন, এই যে! তোমরা তো রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর বক্তব্য গণায় ধরো না। আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাদের সম্পর্কে কি বলেছেন? তিনি বলেছেনঃ “নিশ্চয় নারী হচ্ছে পাঁজরের বাঁকা হাড়। তুমি যদি তা সোজা করতে চাও তবে তাকে খানখান করে ফেলবে। আর তুমি যদি তাদের সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করে যাও, তবুও তাদের বাঁকা স্বভাব বিদ্যমান থাকবেই”। মহিলাটি চলে গেলো এবং সারীদ (ঝোলে ভিজানো রুটি) নিয়ে বিড়ালের মত চুপিসারে ফিরে এলো। আবু যার (রাঃ) আমাকে বলেন, তুমি খাও, আমার কথা চিন্তা করো না। আমি রোযা আছি। অতঃপর তিনি নামাযে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং ধীরেসুস্থে নামায পড়লেন। নামায শেষে তিনি আহার করলেন। আমি বললাম, ইন্না লিল্লাহ! আমি কখনও আশংকা করিনি যে, আপনি আমাকে মিথ্যা কথা বলবেন! তিনি বলেন, তোমার পিতা আল্লাহর জন্য কোরবান হোক! তুমি সাক্ষাত করার সময় থেকে আমি তোমাকে কোন মিথ্যা কথা বলিনি। আমি বললাম, আপনি কি আমাকে বলেননি যে, আপনি রোযাদার? তিনি বলেন, হাঁ, আমি এই মাসে তিন দিন রোযা রেখেছি। আমার জন্য তার সওয়াব লেখা হয়েছে এবং আমার জন্য খাদ্য গ্রহণ হালাল হয়ে গেছে। (নাসাঈ, দারিমী, আহমাদ হা/২১৬৬৫)