HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
উমরা আদায়ের পদ্ধতি
লেখকঃ মুহাম্মদ শামসুল হক সিদ্দিক
এহরাম পরা অবস্থায় [াম পরা অবস্থায় عيحج স الإحرام তালবিয়া পড়ে-পড়ে পবিত্র কাবার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হোন। পবিত্র কাবার চার পাশে দাঁড়িয়ে আছে মসজিদুল হারামের উঁচু বিল্ডিং। এ বিল্ডিংটির যে কোনো দরজা দিয়ে মসজিদুল হারামে প্রবেশ করুন। প্রথমে ডান পা এগিয়ে দিন। আল্লাহ যেন আপনার জন্য তাঁর রহমতের সকল দরজা খুলে দেন সে আকুতি নিয়ে মসজিদে প্রবেশের দোয়াটি পড়ুন। সম্ভব হলে নীচের দোয়াটি পড়ুন।
بِسْمِ اللهِ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلى رَسُوْلِ اللهِ ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوْبِيْ، وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ .
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহ ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলা রাসূলিল্লাহ, আল্লাহুম্মাগফির লি যুনুবি ওয়াফতাহ লি আবওয়াবা রাহমাতিক্।
অর্থ: আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। সালাত ও সালাম রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ওপর। হে আল্লাহ আপনি আমার জন্য আপনার রহমতের সকল দরজা উন্মুক্ত করে দিন।
এরপর আপনার কাজ হবে তাওয়াফ শুরু করা। বায়তুল্লাহ শরীফ দেখামাত্র দু’হাত উঠানোর ব্যাপারে যে একটি কথা আছে তা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। [ - والحاصل أنه ليس في الباب ما يدل على مشروعية رفع اليدين عند رؤية البيت وهو حكم شرعي لا يثبت إلا بدليل (শাওকানী: নাইলুল আওতার, পৃ: ৯৬০)] তবে বায়তুল্লাহ শরীফ দৃষ্টির আওতায় এলে দোয়া করার অনুমতি রয়েছে। ওমর (রাঃ) যখন বায়তুল্লাহর দিকে তাকাতেন তখন নীচের দোয়াটি পড়তেন—
اللّهُمَّ أنْتَ السَّلامُ وَمِنْكَ السَّلامُ فَحَيِّنَا رَبَّنَا بِالسَّلامِ [- শাওকানী : নাইলুল আওতার, পৃ: ৯৬০]
যথার্থভাবে তাওয়াফ সম্পন্ন করার জন্য নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলোর প্রতি নজর রাখুন—
ছোট-বড় সকল প্রকার নাপাকি থেকে পবিত্র হয়ে তাওয়াফ করা।
তাওয়াফের শুরুতে মনে মনে নিয়ত করা। এ ক্ষেত্রে সাধারণভাবে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেই চলবে। বিভিন্ন পুস্তকে তাওয়াফের যে নিয়ত লেখা আছে তা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
সতর ঢাকা অবস্থায় তাওয়াফ করা।
হাজরে আসওয়াদ ইস্তিলাম (চুম্বন-স্পর্শ) অথবা ইশারা করে তাওয়াফ শুরু করা এবং হাজরে আসওয়াদ বরাবর এসে তাওয়াফ শেষ করা।
হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করতে না পারলে হাজরে আসওয়াদের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে শুধুমাত্র ডান হাত উঠিয়ে ইশারা করা ও بِسْمِ اللهِ اللهُ أَكْبَرُ বলা।
হাতিমের বাইরে দিয়ে তাওয়াফ করা।
হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে য়ামানি ব্যতীত কাবার অন্য কোনো অংশ তাওয়াফের সময় স্পর্শ না করা। হাঁ, তাওয়াফ শেষ হলে বা অন্য কোনো সময় মুলতাযামের জায়গায় হাত-বাহু-গন্ডদেশ ও বক্ষ রাখা যেতে পারে।
মাকামে ইব্রাহীম স্পর্শ না করা।
পুরুষদের ক্ষেত্রে যথাসম্ভব পবিত্র কাবার কাছ দিয়ে তাওয়াফ করা।
নারীদের ক্ষেত্রে পুরুষদের থেকে একপাশ হয়ে তাওয়াফ করা।
খুশুখুজুর সাথে তাওয়াফ করা ও অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা না বলা।
রুকনে য়ামানি ও হাজরে আসওয়াদের মাঝে
رَبَّنَا آَتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآَخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
-এই দোয়া পড়া।
প্রত্যেক তাওয়াফে ভিন্ন ভিন্ন দোয়া আছে এরূপ বিশ্বাস না করা।
সাত চক্করে তাওয়াফ শেষ করা।
তাওয়াফ করার সময় নারীদের স্পর্শ থেকে যথাসম্ভব বেঁচে থাকা।
তাওয়াফ শেষে মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু’রাকাত সালাত আদায় করা। জায়গা না পেলে অন্য কোথাও আদায় করা।
সালাত শেষে যমযমের পানি পান করা ও মাথায় ঢালা।
بِسْمِ اللهِ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلى رَسُوْلِ اللهِ ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوْبِيْ، وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ .
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহ ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলা রাসূলিল্লাহ, আল্লাহুম্মাগফির লি যুনুবি ওয়াফতাহ লি আবওয়াবা রাহমাতিক্।
অর্থ: আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। সালাত ও সালাম রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ওপর। হে আল্লাহ আপনি আমার জন্য আপনার রহমতের সকল দরজা উন্মুক্ত করে দিন।
এরপর আপনার কাজ হবে তাওয়াফ শুরু করা। বায়তুল্লাহ শরীফ দেখামাত্র দু’হাত উঠানোর ব্যাপারে যে একটি কথা আছে তা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। [ - والحاصل أنه ليس في الباب ما يدل على مشروعية رفع اليدين عند رؤية البيت وهو حكم شرعي لا يثبت إلا بدليل (শাওকানী: নাইলুল আওতার, পৃ: ৯৬০)] তবে বায়তুল্লাহ শরীফ দৃষ্টির আওতায় এলে দোয়া করার অনুমতি রয়েছে। ওমর (রাঃ) যখন বায়তুল্লাহর দিকে তাকাতেন তখন নীচের দোয়াটি পড়তেন—
اللّهُمَّ أنْتَ السَّلامُ وَمِنْكَ السَّلامُ فَحَيِّنَا رَبَّنَا بِالسَّلامِ [- শাওকানী : নাইলুল আওতার, পৃ: ৯৬০]
যথার্থভাবে তাওয়াফ সম্পন্ন করার জন্য নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলোর প্রতি নজর রাখুন—
ছোট-বড় সকল প্রকার নাপাকি থেকে পবিত্র হয়ে তাওয়াফ করা।
তাওয়াফের শুরুতে মনে মনে নিয়ত করা। এ ক্ষেত্রে সাধারণভাবে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেই চলবে। বিভিন্ন পুস্তকে তাওয়াফের যে নিয়ত লেখা আছে তা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
সতর ঢাকা অবস্থায় তাওয়াফ করা।
হাজরে আসওয়াদ ইস্তিলাম (চুম্বন-স্পর্শ) অথবা ইশারা করে তাওয়াফ শুরু করা এবং হাজরে আসওয়াদ বরাবর এসে তাওয়াফ শেষ করা।
হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করতে না পারলে হাজরে আসওয়াদের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে শুধুমাত্র ডান হাত উঠিয়ে ইশারা করা ও بِسْمِ اللهِ اللهُ أَكْبَرُ বলা।
হাতিমের বাইরে দিয়ে তাওয়াফ করা।
হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে য়ামানি ব্যতীত কাবার অন্য কোনো অংশ তাওয়াফের সময় স্পর্শ না করা। হাঁ, তাওয়াফ শেষ হলে বা অন্য কোনো সময় মুলতাযামের জায়গায় হাত-বাহু-গন্ডদেশ ও বক্ষ রাখা যেতে পারে।
মাকামে ইব্রাহীম স্পর্শ না করা।
পুরুষদের ক্ষেত্রে যথাসম্ভব পবিত্র কাবার কাছ দিয়ে তাওয়াফ করা।
নারীদের ক্ষেত্রে পুরুষদের থেকে একপাশ হয়ে তাওয়াফ করা।
খুশুখুজুর সাথে তাওয়াফ করা ও অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা না বলা।
রুকনে য়ামানি ও হাজরে আসওয়াদের মাঝে
رَبَّنَا آَتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآَخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
-এই দোয়া পড়া।
প্রত্যেক তাওয়াফে ভিন্ন ভিন্ন দোয়া আছে এরূপ বিশ্বাস না করা।
সাত চক্করে তাওয়াফ শেষ করা।
তাওয়াফ করার সময় নারীদের স্পর্শ থেকে যথাসম্ভব বেঁচে থাকা।
তাওয়াফ শেষে মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু’রাকাত সালাত আদায় করা। জায়গা না পেলে অন্য কোথাও আদায় করা।
সালাত শেষে যমযমের পানি পান করা ও মাথায় ঢালা।
গায়ের চাদরের মধ্যভাগ ডান বগলের নীচে রেখে ডান কাঁধ খালি রাখুন। চাদরের উভয় মাথা বাঁ কাঁধের ওপর রেখে দিন, অর্থাৎ ইযতিবা করুন। মনে-মনে তাওয়াফের নিয়ত করুন। হাজরে আসওয়াদ সোজা মুখোমুখী দাঁড়ান। ভিড় না থাকলে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করে তাওয়াফ আরম্ভ করুন। হাজরে আসওয়াদ চুম্বনের পদ্ধতি হল এই-হাজরে আসওয়াদের ওপর দু’হাত রাখুন। বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে আলতোভাবে চুম্বন করুন। আল্লাহর জন্য হাজরে আসওয়াদের উপর সিজদাও করুন। [- দেখুন : মুসনাদ আদ-তায়ালিসি : ১/২১৫-২১৬] চুম্বন করা দুষ্কর হলে, ডান হাত দিয়ে হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করুন এবং হাতের যে অংশ দিয়ে স্পর্শ করেছেন সে অংশ চুম্বন করুন। বর্তমানে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন ও স্পর্শ উভয়টাই অত্যন্ত কঠিন ও অনেকের পক্ষেই দুঃসাধ্য। বোখারির বিবরণ মতে, সে হিসেবে দূরে দাঁড়িয়ে ডান হাত উঁচু করে, ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে হাজরে আসওয়াদের দিকে এক হাত দ্বারা ইশারা করুন। যেহেতু হাত দিয়ে হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করা সম্ভব হয়নি তাই হাতে চুম্বনও করতে হবে না। [- বোখারি শরীফে ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে এক বর্ণনায় এসেছে.‘ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উটের ওপর আরোহণ করে তরয়াফ করেন। তিনি যখনই রুকনের বরাবর এসেছেন হাতে-থাকা কোনো কিছু দিয়ে উহার দিকে ইশারা করেছেন, ও আল্লাহ আকবার বলেছেন (বোখারি : হাদিস নং ১৬০৭)] পূর্বে হাজরে আসওয়াদ বরাবর একটি খয়েরি রেখা ছিল বর্তমানে তা উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই হাজরে আসওয়াদ সোজা মসজিদুল হারামের কার্নিশে থাকা সবুজ বাতি দেখে হাজরে আসওয়াদ বরাবর এসেছেন কি-না তা নির্ণয় করুন।
হাজরে আসওয়াদ স্পর্শের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, ‘হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে য়ামানি মাসেহ (স্পর্শ) গুনাহ-অন্যায় সমূলে বিলুপ্ত করে দেয়। [ - مسح الحجر والركن اليماني يحط الخطايا حطا (ইবনু খুযায়মাহ : ২৭২৯; হাদিসটি সহিহ সনদে উল্লেখ হয়েছে)] তাই হাজরে আসওয়াদ চুম্বন-স্পর্শের বিষয়টি কখনো অগুরুত্বপূর্ণ মনে করবেন না। তবে অন্যদের যেন কষ্ট না হয় সে বিষয়টি নজরে রাখতে হবে।
হাজরে আসওয়াদ চুম্বন, স্পর্শ অথবা ইশারা করার পর কাবা শরীফ হাতের বায়ে রেখে তাওয়াফ শুরু করুন। পুরুষদের ক্ষেত্রে কাবা শরীফের কাছ দিয়ে তাওয়াফ করতে পারলে ভাল। রামলবিশিষ্ট তাওয়াফ হলে প্রথম তিন চক্করে রামল করুন। ছোট কদমে কাঁধ হেলিয়ে বীর-বিক্রমে চলুন। অবশিষ্ট চার চক্করে চলার গতি স্বাভাবিক রাখুন। প্রত্যেক তাওয়াফে ভিন্ন ভিন্ন দোয়া পড়তে হবে এ ব্যাপারে হাদিসে কিছু পাওয়া যায় না। যখন যে ধরনের আবেগ আসে সে ধরনের দোয়া করুন। আল্লাহর প্রশংসা করুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ওপর দরুদ পড়ুন। যে ভাষা আপনি ভাল করে বোঝেন ও আপনার মনের আকুতি সুন্দরভাবে প্রকাশ পায় সে ভাষাতেই দোয়া করুন। রুকনে য়ামানি অর্থাৎ হাজরে আসওয়াদের আগের কোণের কাছে এলে তা স্পর্শ করুন। রুকনে য়ামানি স্পর্শ করার পর হাত চুম্বন করতে হয় না। সরাসরি রুকনে য়ামানিকে চুম্বন করাও শরিয়তসম্মত নয়। রুকনে য়ামানি থেকে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
-‘হে আমাদের প্রতিপালক আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন, ও পরকালেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন’ পড়তেন। [ - عن عبد الله بن السائب قال : سمعت النبي صلى الله عليه وسلم وهو يقول بين الركن والحجر : ربنا آتنا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار ، أخرجه أحمد وأبوداود والنسائي وعبد الزراق وابن خزيمة والحاكم وصححه الحاكم في شرط مسلم ووافقه الذهبي ] সে হিসেবে আমাদের জন্য এ জায়গায় উক্ত দোয়া পড়া সুন্নত। হাজরে আসওয়াদ বরাবর এলে ডান হাত উঁচু করে আবার তাকবির বলুন। এভাবে সাত চক্কর শেষ করুন। শেষ চক্করেও হাজরে আসওয়াদ বরাবর এলে তাকবির দিন। অর্থাৎ সাত চক্করে তাকবির হবে ৮ টি।
তাওয়াফ শেষ হলে, ডান কাঁধ ঢেকে ফেলুন, যা ইতোপূর্বে খোলা রেখেছিলেন। এবার মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু’রাকাত সালাত আদায় করুন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক বলেছেন,
‘ وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى
-মাকামে ইব্রাহীমকে তোমরা সালাতের স্থল হিসেবে সাব্যস্ত করো। [- সূরা আল বাকারা : ১২৫] জায়গা না পেলে মসজিদুল হারামের যে কোনো স্থানে সালাত আদায় করুন। [- এই সালাতটি হানাফি মাযহাবে ওয়াজিব, অন্যান্য মাযহাবে সুন্নত।] মাকরুহ সময় হলে এ দু’রাকাত সালাত পরে আদায় করে নিন। সালাতের পর হাত উঠিয়ে দোয়া করার বিধান নেই। এ সালাতের প্রথম রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সূরা ‘কাফিরুন’ - قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ - ও দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সূরা ইখলাস -قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ পড়া সুন্নত। [- তিরমিযী : হাদিস নং ৮৬৯] সালাত শেষ করে যমযমের পানি পান করুন, ও মাথায় ঢালুন।
হাজরে আসওয়াদ স্পর্শের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, ‘হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে য়ামানি মাসেহ (স্পর্শ) গুনাহ-অন্যায় সমূলে বিলুপ্ত করে দেয়। [ - مسح الحجر والركن اليماني يحط الخطايا حطا (ইবনু খুযায়মাহ : ২৭২৯; হাদিসটি সহিহ সনদে উল্লেখ হয়েছে)] তাই হাজরে আসওয়াদ চুম্বন-স্পর্শের বিষয়টি কখনো অগুরুত্বপূর্ণ মনে করবেন না। তবে অন্যদের যেন কষ্ট না হয় সে বিষয়টি নজরে রাখতে হবে।
হাজরে আসওয়াদ চুম্বন, স্পর্শ অথবা ইশারা করার পর কাবা শরীফ হাতের বায়ে রেখে তাওয়াফ শুরু করুন। পুরুষদের ক্ষেত্রে কাবা শরীফের কাছ দিয়ে তাওয়াফ করতে পারলে ভাল। রামলবিশিষ্ট তাওয়াফ হলে প্রথম তিন চক্করে রামল করুন। ছোট কদমে কাঁধ হেলিয়ে বীর-বিক্রমে চলুন। অবশিষ্ট চার চক্করে চলার গতি স্বাভাবিক রাখুন। প্রত্যেক তাওয়াফে ভিন্ন ভিন্ন দোয়া পড়তে হবে এ ব্যাপারে হাদিসে কিছু পাওয়া যায় না। যখন যে ধরনের আবেগ আসে সে ধরনের দোয়া করুন। আল্লাহর প্রশংসা করুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ওপর দরুদ পড়ুন। যে ভাষা আপনি ভাল করে বোঝেন ও আপনার মনের আকুতি সুন্দরভাবে প্রকাশ পায় সে ভাষাতেই দোয়া করুন। রুকনে য়ামানি অর্থাৎ হাজরে আসওয়াদের আগের কোণের কাছে এলে তা স্পর্শ করুন। রুকনে য়ামানি স্পর্শ করার পর হাত চুম্বন করতে হয় না। সরাসরি রুকনে য়ামানিকে চুম্বন করাও শরিয়তসম্মত নয়। রুকনে য়ামানি থেকে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
-‘হে আমাদের প্রতিপালক আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন, ও পরকালেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন’ পড়তেন। [ - عن عبد الله بن السائب قال : سمعت النبي صلى الله عليه وسلم وهو يقول بين الركن والحجر : ربنا آتنا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار ، أخرجه أحمد وأبوداود والنسائي وعبد الزراق وابن خزيمة والحاكم وصححه الحاكم في شرط مسلم ووافقه الذهبي ] সে হিসেবে আমাদের জন্য এ জায়গায় উক্ত দোয়া পড়া সুন্নত। হাজরে আসওয়াদ বরাবর এলে ডান হাত উঁচু করে আবার তাকবির বলুন। এভাবে সাত চক্কর শেষ করুন। শেষ চক্করেও হাজরে আসওয়াদ বরাবর এলে তাকবির দিন। অর্থাৎ সাত চক্করে তাকবির হবে ৮ টি।
তাওয়াফ শেষ হলে, ডান কাঁধ ঢেকে ফেলুন, যা ইতোপূর্বে খোলা রেখেছিলেন। এবার মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু’রাকাত সালাত আদায় করুন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক বলেছেন,
‘ وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى
-মাকামে ইব্রাহীমকে তোমরা সালাতের স্থল হিসেবে সাব্যস্ত করো। [- সূরা আল বাকারা : ১২৫] জায়গা না পেলে মসজিদুল হারামের যে কোনো স্থানে সালাত আদায় করুন। [- এই সালাতটি হানাফি মাযহাবে ওয়াজিব, অন্যান্য মাযহাবে সুন্নত।] মাকরুহ সময় হলে এ দু’রাকাত সালাত পরে আদায় করে নিন। সালাতের পর হাত উঠিয়ে দোয়া করার বিধান নেই। এ সালাতের প্রথম রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সূরা ‘কাফিরুন’ - قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ - ও দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সূরা ইখলাস -قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ পড়া সুন্নত। [- তিরমিযী : হাদিস নং ৮৬৯] সালাত শেষ করে যমযমের পানি পান করুন, ও মাথায় ঢালুন।
যমযমের পানি পবিত্রতম পানি। পৃথিবীর বুকে সর্বোত্তম পানি। [ - خير ماء على وجه الأرض ماء زمزم (তাবরানী, ইবনে হিববান)] রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যমযমের পানি পান করেছেন ও বলেছেন, এটা মুবারক পানি, এটা ক্ষুধা নিবারক খাদ্য, ও রোগের শেফা। [ - ان رسول الله شرب من ماء زمزم ، وأنه قال : إنها مباركة . إنها طعام طعم وشفاء سقم (বোখারি ও মুসলিম )]
কেবলামুখী হয়ে তিন নিশ্বাসে যমযমের পানি পান করতে হয়। পান করার শুরুতে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে হয়। পেট ভরে পান করতে হয়। [- রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আমাদের মাঝে ও মোনাফেকদের মাঝে পার্থক্য এই মোনাফেকরা পেটভরে ভরে পানি পান করে না। (ইবনে মাযাহ, দারা কুতনী)] পান করা শেষ হলে আল্লাহর প্রশংসা করতে হয়। [- দলিল, ইবনে আববাস (র) এর একটি বর্ণনা। তিনি বলেন,‘ إذا شربت منها فاستقبل القبلة ، و اذكر الله ، وتنفس ثلاثا ، وتضلع منها ، فإذا فرغت فاحمد الله . - যখন তুমি যমযমের পানি পান করবে, কেবলামুখী হবে, আল্লাহকে স্মরণ করবে, ও তিন বার নিশ্বাস নিবে। তুমি তা পেট পুড়ে খাবে ও শেষ হলে আল্লাহর প্রশংসা করবে।] ইবনে আববাস (রাঃ) যমযমের পানি পানের পূর্বে এই দোয়া পড়তেন,
‘ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ عِلْمًٍا نَافِعًا ، وَرِزْقًا وَاسِعًا ، وَشِفَاءً مِنْ كُلِّ دَاءٍ .
- হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে উপকারী জ্ঞান, বিস্তৃত সম্পদ, ও সকল রোগ থেকে শেফা কামনা করছি’। [- দারা কুতনী] পানি পান করার পর মাথায়ও কিছু পানি ঢালুন। কেননা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরূপ করতেন। [কিতাবুল মুগনি ফিল হাজ্জি ওয়াল উমরাহ : ৩১০] যমযমের পানি পান করে সাঈ করার জন্য প্রস্ত্ততি নিন।
‘ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ عِلْمًٍا نَافِعًا ، وَرِزْقًا وَاسِعًا ، وَشِفَاءً مِنْ كُلِّ دَاءٍ .
- হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে উপকারী জ্ঞান, বিস্তৃত সম্পদ, ও সকল রোগ থেকে শেফা কামনা করছি’। [- দারা কুতনী] পানি পান করার পর মাথায়ও কিছু পানি ঢালুন। কেননা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরূপ করতেন। [কিতাবুল মুগনি ফিল হাজ্জি ওয়াল উমরাহ : ৩১০] যমযমের পানি পান করে সাঈ করার জন্য প্রস্ত্ততি নিন।
সাঈ করার নিয়ত বা প্রতিজ্ঞা করা।
হাজরে আসওয়াদ ইস্তিলাম (চুম্বন-স্পর্শ) করে সাঈর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া।
ওজু অবস্থায় সাঈ করা।
তাওয়াফ শেষ করার সাথে সাথে সাঈ করা।
সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে আরোহণ করে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে, হাত উঠিয়ে, দীর্ঘক্ষণ দোয়া করা।
পুরুষদের জন্য সবুজ বাতির মধ্যবর্তী স্থানে একটু দৌড়ে অতিক্রম করা।
সবুজ বাতির মধ্যবর্তী স্থানে পড়বে—
رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ ، إِنَّكَ أَنْت َالأَعَزُّ الأَكْرَمُ .
হে আল্লাহ ! ক্ষমা করে দাও, নিশ্চয় তুমি মহা পরাক্রমশালী ও মহা দয়াবান। [তাবরানি : ৮৭০]
সাত চক্কর পূর্ণ করা।
সাফা ও মারওয়ার মধ্যবর্তী পূর্ণ দূরত্ব অতিক্রম করা।
সাফা মারওয়া বরাবর মধ্যবর্তী স্থানে সাঈ করা। মাসআ অর্থাৎ সাঈ করার সুনির্ধারিত স্থানের বাইরে দিয়ে চক্কর লাগালে সাঈ হবে না।
দুই চক্করের মাঝে বেশি বিলম্ব না করা।
উল্লিখিত পয়েন্টগুলো অনুপুঙ্খভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করুন। তাহলে আপনার সাঈ শত ভাগ শুদ্ধ হবে। এর কোনোটায় ত্রুটি থেকে গেলে বিজ্ঞ আলেমের পরামর্শ নিন।
হাজরে আসওয়াদ ইস্তিলাম (চুম্বন-স্পর্শ) করে সাঈর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া।
ওজু অবস্থায় সাঈ করা।
তাওয়াফ শেষ করার সাথে সাথে সাঈ করা।
সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে আরোহণ করে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে, হাত উঠিয়ে, দীর্ঘক্ষণ দোয়া করা।
পুরুষদের জন্য সবুজ বাতির মধ্যবর্তী স্থানে একটু দৌড়ে অতিক্রম করা।
সবুজ বাতির মধ্যবর্তী স্থানে পড়বে—
رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ ، إِنَّكَ أَنْت َالأَعَزُّ الأَكْرَمُ .
হে আল্লাহ ! ক্ষমা করে দাও, নিশ্চয় তুমি মহা পরাক্রমশালী ও মহা দয়াবান। [তাবরানি : ৮৭০]
সাত চক্কর পূর্ণ করা।
সাফা ও মারওয়ার মধ্যবর্তী পূর্ণ দূরত্ব অতিক্রম করা।
সাফা মারওয়া বরাবর মধ্যবর্তী স্থানে সাঈ করা। মাসআ অর্থাৎ সাঈ করার সুনির্ধারিত স্থানের বাইরে দিয়ে চক্কর লাগালে সাঈ হবে না।
দুই চক্করের মাঝে বেশি বিলম্ব না করা।
উল্লিখিত পয়েন্টগুলো অনুপুঙ্খভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করুন। তাহলে আপনার সাঈ শত ভাগ শুদ্ধ হবে। এর কোনোটায় ত্রুটি থেকে গেলে বিজ্ঞ আলেমের পরামর্শ নিন।
সাঈ করতে যাচ্ছেন এই মর্মে প্রতিজ্ঞা করুন। সাঈর পূর্বে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন-স্পর্শ করুন। চুম্বন-স্পর্শ সম্ভব না হলে, এ ক্ষেত্রে হাজরে আসওয়াদের দিকে ইশারা করার কোনো বিধান নেই। [- কেননা রাসূলুল্লাহ (স) এর হজের বর্ণনায় সাঈর পূর্বে ( استلام ) ইস্তিলাম এর কথা আছে। আর ইস্তিলাম শব্দের অর্থ চুম্বন বা স্পর্শ। ইশারা করাকে ইস্তিলাম বলা হয়না। (দেখুন : লিসানুল আরব: খন্ড ১২, পৃ:২৯৭)] এরপর সাফা পাহাড়ের দিকে আগান। সাফা পাহাড়ের নিকটবর্তী হলে, রাসূলুল্লাহ (স) এর অনুসরণে বলুন—
إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ، أَبْدَأُ بِمَا بَدَأَ اللهُ بِهِ .
উচ্চারণ: ইন্নাস্সাফা ওয়াল মারওয়াতা মিন শাআয়িরিল্লাহ। আব্দায়ু বিমা বাদায়াল্লাহু বিহি
অর্থ: নিশ্চয়ই সাফা মারওয়া আল্লাহর নিদর্শন। আমি শুরু করছি আল্লাহ যা দিয়ে শুরু করেছেন। [ইমাম মুসলিম কর্তৃক জাবের রা. হতে বর্ণিত হাদিস : কিতাবুল মুগনি : ৩১০]
এরপর সাফা পাহাড়ে ওঠে বায়তুল্লাহর দিকে মুখ করে দাঁড়াবেন এবং আল্লাহর একত্ববাদ, বড়ত্ব ও প্রশংসার ঘোষণা দিয়ে বলবে—
اللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، لَا إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ اْلَحمْدُ وَهَوُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ، لَا إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، أَنْجَزَ وَعْدَهُ ، وَنَصَرَ عَبْدَهُ ، وَهَزَمَ الْأَحْزَابَ وَحْدَهُ .
উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার। লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু লাহুল্মুল্কু ওয়ালাহুল হাম্দু ইউহয়ী ওয়া ইয়ুমীতু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু আনজাযা ওয়াদাহু, ওয়া নাছারা আব্দাহু ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহ্।
অর্থ: আল্লাহ সুমহান, আল্লাহ সুমহান, আল্লাহ সুমহান ! [নাসায়ি : ২/ ৬২৪] আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই, এবং আল্লাহ মহান। আল্লাহ ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই, তিনি এক। তাঁর কোনো অংশীদার নেই। রাজত্ব তাঁরই। প্রশংসাও তাঁর। তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন, ও সকল বিষয়ের ওপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই, তিনি এক। তাঁর কোনো শরিক নেই। তিনি তাঁর অঙ্গীকার পূর্ণ করেছেন, ও তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং একাই শত্রুদেরকে পরাজিত করেছেন। [- আলবানী : সহিহুন্নাসায়ী, ২/২২৪ ও মুসলিম : ২/২২২] এবং উভয় হাত উঠিয়ে দোয়া করবে। [আবু দাউদ : ১/৩৫১] উপরোক্ত দোয়া এবং ইহ-পরকালের জন্য কল্যাণকর অন্যান্য দোয়া সামর্থ্য অনুযায়ী তিন বার পড়বে। পদ্ধতি এমন হবে যে, উক্ত দোয়াটি একবার পাঠ করে তার সাথে সামর্থ্য অনুযায়ী অন্যান্য দোয়া পড়বে। অত:পর পুনরায় উক্ত দোয়াটি পাঠ করবে এবং তার সাথে অন্যান্য দোয়া পাঠ করবে। এভাবে তিন বার করবে। [মুসলিম : হাদিসে জাবের : ২১৩৭]
দোয়া শেষ হলে মারওয়ার দিকে রওয়ানা হোন। যেসব দোয়া আপনার মনে আসে পড়ুন। সাফা থেকে নেমে কিছু দূর এগোলেই ওপরে ও ডানে-বামে সবুজ বাতি জ্বালানো দেখবেন। এই জায়গাটুকু, পুরুষ হাজিগণ, দৌড়ানোর মত করে দ্রুত গতিতে হেঁটে চলুন। পরবর্তী সবুজ বাতির আলামত এলে চলার গতি স্বাভাবিক করুন। তবে নারীদের ক্ষেত্রে সর্বাবস্থায় চলার গতি থাকবে স্বাভাবিক। সবুজ দুই আলামতের মাঝে চলার সময় নীচের দোয়াটি পড়ুন-
رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ ، إِنَّكَ أَنْت َالأَعَزُّ الأَكْرَمُ .
উচ্চারণ: রাবিবগ্ফির্ ওয়ার্হাম্, ইন্নাকা আন্তাল্ আয়া’য্যুল আকরাম্
অর্থ: হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা করুন রহম করুন। নিশ্চয়ই আপনি সমধিক শক্তিশালী ও সম্মানিত।
মারওয়া পাহাড়ে পৌঁছার পূর্বে, সাফায় পৌঁছার পূর্বে যে আয়াতটি পড়েছিলেন, তা পড়তে হবে না। মারওয়ায় উঠে সাফার মতো পবিত্র কাবার দিকে মুখ করে একই কায়দায় হাত উঠিয়ে মোনাজাত করুন। মারওয়া থেকে সাফায় আসার পথে সবুজ বাতির এখান থেকে আবার দ্রুত গতিতে চলুন। দ্বিতীয় সবুজ আলামতের এখানে এলে চলার গতি স্বাভাবিক করুন। সাফায় এসে কাবা শরীফের দিকে মুখ করে আবার মোনাজাত ধরুন। সাফা মারওয়া উভয়টা দোয়া কবুলের জায়গা। কাজেই তাড়াতাড়ি সাঈ সেরে নিয়ে বাসায় চলে যাওয়ার চিন্তা করবেন না। ধীরে সুস্থে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যেখানে যা করেছেন সেখানে সেটা সেভাবেই করার চেষ্টা করুন। কতটুকু করলে ফরজ আদায় হয়ে যাবে, এই চিন্তা মাথায় আনবেন না। বরং এটা টারগেট বানাবেন যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কোথায় কোন কাজ কীভাবে ও কত সময় করেছেন, আমিও ঠিক সেভাবেই করব।
একই নিয়মে সাঈর বাকি চক্করগুলোও আদায় করুন। সাঈ করার সময় সালাত দাঁড়িয়ে গেলে কাতারবন্দি হয়ে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করুন। সাঈ করার সময় ক্লান্ত হয়ে পড়লে বসে আরাম করে নিন। এতে সাঈর কোনো ক্ষতি হবে না।
আপনার শেষ সাঈ—অর্থাৎ সপ্তম সাঈ—মারওয়াতে গিয়ে শেষ হবে। শেষ হওয়ার পর মাথা মুন্ডন বা চুল খাটো করতে যাবেন। মারওয়ার পাশেই চুল কাটার সেলুন রয়েছে। সেখানে গিয়ে মাথা মুন্ডন অথবা চুল ছোট করে নিন। যদি হজের জন্য মাথা মুন্ডানোর সময় পর্যন্ত অর্থাৎ ১০ জিলহজ এর পূর্বে আপনার মাথার চুল গজাবে না এরূপ আশঙ্কা হয় তবে উমরার পর চুল ছোট করা উত্তম। বিদায় হজের সময় তামাত্তুকারী সাহাবাগণ কসর - চুল ছোট-করেছিলেন। [ - فحل الناس كلهم وقصروا (হাদিসে জাবের: মুসলিম)] কেননা তাঁরা হজের পাঁচ দিন পূর্বে উমরা আদায় করেছিলেন। তবে অন্যসব ক্ষেত্রে মাথা মুন্ডন করা উত্তম।
মনে করিয়ে দেয়া ভাল যে, পবিত্র কুরআনে ‘হলক’ এবং’কসর’ এর কথা এসেছে। মাথার চুল গোড়া থেকে কেটে ফেলাকে হলক বলে আর ছোট করাকে বলে কসর। কারও কারও মতে এক আঙুল চুল ছেঁটে ফেলাকে কসর বলে। তাই মাথায় যদি একেবারেই চুল না থাকে তাহলে সত্যিকার অর্থে হলক ও কসর কোনোটাই বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। মুন্ডিত মাথায় নতুন করে ক্ষুর চালালে এটাকে কেউ মাথা মুন্ডন বলে না, বরং এটা হবে تمرير الموسى (ক্ষুর সঞ্চালন) যা কেবল টাক-মাথা ওয়ালাদের জন্য প্রযোজ্য।
মাথা মুন্ডন বা চুল ছোট করার পর গোসল করে স্বাভাবিক সেলাই করা কাপড় পরে নেবেন। ৮ জিলহজ পর্যন্ত হালাল অবস্থায় থাকবেন। এহরাম বাঁধতে হবে না। এখন আপনার কাজ হবে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতের সাথে আদায় করা, ও হজের ব্যাপারে পড়াশোনা করে খুব সুন্দরভাবে বড় হজের জন্য প্রস্ত্ততি নেয়া। সাধ্য-মত বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করা।
إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ، أَبْدَأُ بِمَا بَدَأَ اللهُ بِهِ .
উচ্চারণ: ইন্নাস্সাফা ওয়াল মারওয়াতা মিন শাআয়িরিল্লাহ। আব্দায়ু বিমা বাদায়াল্লাহু বিহি
অর্থ: নিশ্চয়ই সাফা মারওয়া আল্লাহর নিদর্শন। আমি শুরু করছি আল্লাহ যা দিয়ে শুরু করেছেন। [ইমাম মুসলিম কর্তৃক জাবের রা. হতে বর্ণিত হাদিস : কিতাবুল মুগনি : ৩১০]
এরপর সাফা পাহাড়ে ওঠে বায়তুল্লাহর দিকে মুখ করে দাঁড়াবেন এবং আল্লাহর একত্ববাদ, বড়ত্ব ও প্রশংসার ঘোষণা দিয়ে বলবে—
اللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، لَا إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ اْلَحمْدُ وَهَوُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ، لَا إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، أَنْجَزَ وَعْدَهُ ، وَنَصَرَ عَبْدَهُ ، وَهَزَمَ الْأَحْزَابَ وَحْدَهُ .
উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার। লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু লাহুল্মুল্কু ওয়ালাহুল হাম্দু ইউহয়ী ওয়া ইয়ুমীতু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু আনজাযা ওয়াদাহু, ওয়া নাছারা আব্দাহু ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহ্।
অর্থ: আল্লাহ সুমহান, আল্লাহ সুমহান, আল্লাহ সুমহান ! [নাসায়ি : ২/ ৬২৪] আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই, এবং আল্লাহ মহান। আল্লাহ ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই, তিনি এক। তাঁর কোনো অংশীদার নেই। রাজত্ব তাঁরই। প্রশংসাও তাঁর। তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন, ও সকল বিষয়ের ওপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই, তিনি এক। তাঁর কোনো শরিক নেই। তিনি তাঁর অঙ্গীকার পূর্ণ করেছেন, ও তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং একাই শত্রুদেরকে পরাজিত করেছেন। [- আলবানী : সহিহুন্নাসায়ী, ২/২২৪ ও মুসলিম : ২/২২২] এবং উভয় হাত উঠিয়ে দোয়া করবে। [আবু দাউদ : ১/৩৫১] উপরোক্ত দোয়া এবং ইহ-পরকালের জন্য কল্যাণকর অন্যান্য দোয়া সামর্থ্য অনুযায়ী তিন বার পড়বে। পদ্ধতি এমন হবে যে, উক্ত দোয়াটি একবার পাঠ করে তার সাথে সামর্থ্য অনুযায়ী অন্যান্য দোয়া পড়বে। অত:পর পুনরায় উক্ত দোয়াটি পাঠ করবে এবং তার সাথে অন্যান্য দোয়া পাঠ করবে। এভাবে তিন বার করবে। [মুসলিম : হাদিসে জাবের : ২১৩৭]
দোয়া শেষ হলে মারওয়ার দিকে রওয়ানা হোন। যেসব দোয়া আপনার মনে আসে পড়ুন। সাফা থেকে নেমে কিছু দূর এগোলেই ওপরে ও ডানে-বামে সবুজ বাতি জ্বালানো দেখবেন। এই জায়গাটুকু, পুরুষ হাজিগণ, দৌড়ানোর মত করে দ্রুত গতিতে হেঁটে চলুন। পরবর্তী সবুজ বাতির আলামত এলে চলার গতি স্বাভাবিক করুন। তবে নারীদের ক্ষেত্রে সর্বাবস্থায় চলার গতি থাকবে স্বাভাবিক। সবুজ দুই আলামতের মাঝে চলার সময় নীচের দোয়াটি পড়ুন-
رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ ، إِنَّكَ أَنْت َالأَعَزُّ الأَكْرَمُ .
উচ্চারণ: রাবিবগ্ফির্ ওয়ার্হাম্, ইন্নাকা আন্তাল্ আয়া’য্যুল আকরাম্
অর্থ: হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা করুন রহম করুন। নিশ্চয়ই আপনি সমধিক শক্তিশালী ও সম্মানিত।
মারওয়া পাহাড়ে পৌঁছার পূর্বে, সাফায় পৌঁছার পূর্বে যে আয়াতটি পড়েছিলেন, তা পড়তে হবে না। মারওয়ায় উঠে সাফার মতো পবিত্র কাবার দিকে মুখ করে একই কায়দায় হাত উঠিয়ে মোনাজাত করুন। মারওয়া থেকে সাফায় আসার পথে সবুজ বাতির এখান থেকে আবার দ্রুত গতিতে চলুন। দ্বিতীয় সবুজ আলামতের এখানে এলে চলার গতি স্বাভাবিক করুন। সাফায় এসে কাবা শরীফের দিকে মুখ করে আবার মোনাজাত ধরুন। সাফা মারওয়া উভয়টা দোয়া কবুলের জায়গা। কাজেই তাড়াতাড়ি সাঈ সেরে নিয়ে বাসায় চলে যাওয়ার চিন্তা করবেন না। ধীরে সুস্থে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যেখানে যা করেছেন সেখানে সেটা সেভাবেই করার চেষ্টা করুন। কতটুকু করলে ফরজ আদায় হয়ে যাবে, এই চিন্তা মাথায় আনবেন না। বরং এটা টারগেট বানাবেন যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কোথায় কোন কাজ কীভাবে ও কত সময় করেছেন, আমিও ঠিক সেভাবেই করব।
একই নিয়মে সাঈর বাকি চক্করগুলোও আদায় করুন। সাঈ করার সময় সালাত দাঁড়িয়ে গেলে কাতারবন্দি হয়ে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করুন। সাঈ করার সময় ক্লান্ত হয়ে পড়লে বসে আরাম করে নিন। এতে সাঈর কোনো ক্ষতি হবে না।
আপনার শেষ সাঈ—অর্থাৎ সপ্তম সাঈ—মারওয়াতে গিয়ে শেষ হবে। শেষ হওয়ার পর মাথা মুন্ডন বা চুল খাটো করতে যাবেন। মারওয়ার পাশেই চুল কাটার সেলুন রয়েছে। সেখানে গিয়ে মাথা মুন্ডন অথবা চুল ছোট করে নিন। যদি হজের জন্য মাথা মুন্ডানোর সময় পর্যন্ত অর্থাৎ ১০ জিলহজ এর পূর্বে আপনার মাথার চুল গজাবে না এরূপ আশঙ্কা হয় তবে উমরার পর চুল ছোট করা উত্তম। বিদায় হজের সময় তামাত্তুকারী সাহাবাগণ কসর - চুল ছোট-করেছিলেন। [ - فحل الناس كلهم وقصروا (হাদিসে জাবের: মুসলিম)] কেননা তাঁরা হজের পাঁচ দিন পূর্বে উমরা আদায় করেছিলেন। তবে অন্যসব ক্ষেত্রে মাথা মুন্ডন করা উত্তম।
মনে করিয়ে দেয়া ভাল যে, পবিত্র কুরআনে ‘হলক’ এবং’কসর’ এর কথা এসেছে। মাথার চুল গোড়া থেকে কেটে ফেলাকে হলক বলে আর ছোট করাকে বলে কসর। কারও কারও মতে এক আঙুল চুল ছেঁটে ফেলাকে কসর বলে। তাই মাথায় যদি একেবারেই চুল না থাকে তাহলে সত্যিকার অর্থে হলক ও কসর কোনোটাই বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। মুন্ডিত মাথায় নতুন করে ক্ষুর চালালে এটাকে কেউ মাথা মুন্ডন বলে না, বরং এটা হবে تمرير الموسى (ক্ষুর সঞ্চালন) যা কেবল টাক-মাথা ওয়ালাদের জন্য প্রযোজ্য।
মাথা মুন্ডন বা চুল ছোট করার পর গোসল করে স্বাভাবিক সেলাই করা কাপড় পরে নেবেন। ৮ জিলহজ পর্যন্ত হালাল অবস্থায় থাকবেন। এহরাম বাঁধতে হবে না। এখন আপনার কাজ হবে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতের সাথে আদায় করা, ও হজের ব্যাপারে পড়াশোনা করে খুব সুন্দরভাবে বড় হজের জন্য প্রস্ত্ততি নেয়া। সাধ্য-মত বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করা।
পবিত্র কুরআনে, হজ ও উমরা উভয়টির কথা এসেছে। এরশাদ হয়েছে, وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ তোমরা হজ ও উমরা আল্লাহর জন্য পরিপূর্ণ করো’ []
এ’তেমার اعتمار )) শব্দ থেকে উমরা ( عمرة ) উৎকলিত। এর শাব্দিক অর্থ,যিয়ারত করা। পারিভাষিক অথে,র্ পবিত্র কাবার যিয়ারত তথা তাওয়াফ, সাফা মারওয়ার সাঈ ও মাথা মুন্ডন (হলক) ও চুল ছোট করা (কসর) কে উমরা বলা হয়।
এ’তেমার اعتمار )) শব্দ থেকে উমরা ( عمرة ) উৎকলিত। এর শাব্দিক অর্থ,যিয়ারত করা। পারিভাষিক অথে,র্ পবিত্র কাবার যিয়ারত তথা তাওয়াফ, সাফা মারওয়ার সাঈ ও মাথা মুন্ডন (হলক) ও চুল ছোট করা (কসর) কে উমরা বলা হয়।
হাদিসে এসেছে, ‘রমজান মাসে উমরা করা এক হজের সমান’ [ - عمرة في رمضان تعدل حجة (তিরমিযী: হাদিস নং ৮৬১ ; ইবনে মাজাহ : হাদিস নং ২৯৮২ )] ‘এক উমরা থেকে অন্য উমরা, এ-দুয়ের মাঝে কৃত পাপের, কাফফারা।’ [ - عمرة إلى عمرة كفارة لما بينها والحج المبرور ليس له جزاء إلا الجنة (বোখারি : হাদিস নং ১৬৫০)] ‘যে ব্যক্তি এই ঘরে এলো, অতঃপর যৌনতা ও শরিয়ত-বিরুদ্ধ কাজ থেকে বিরত রইল, সে মাতৃ-গর্ভ থেকে ভূমিষ্ট ‘হওয়ার দিনের মত হয়ে ফিরে গেল।’ ইমাম ইবনে হাজার আসকালানির মতানুসারে এখানে হজকারী ও উমরাকারী উভয় ব্যক্তিকেই বুঝানো হয়েছে। [- ফাতহুল বারী : ৩/৩৮২]
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং সাহাবায়ে কেরাম এক সফরে একাধিক উমরা করেননি। শুধু তাই নয় বরং তামাত্তু হজকারীদেরকে উমরা আদায়ের পর হালাল অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে। [ - وأقيموا حلالا (মুসলিম)] তাই উত্তম হল এক সফরে একাধিক উমরা না করা। একাধিক উমরা থেকে বরং বেশি বেশি তাওয়াফ করাই উত্তম। তবে যদি কেউ উমরা করতেই চায় তাহলে হজের পরে করা যেতে পারে, যেমনটি করেছিলেন আয়েশা (রাঃ) ; তবে, রাসূল তাকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন—এমন কোন প্রমাণ নেই। বরং, নিরুৎসাহিত করেছেন এমন বর্ণনা হাদিসে পাওয়া যায়। [বিস্তারিত দেখুন : যাদুল মাআদ : খন্ড : ২, পৃষ্ঠা : ৯২-৯৫]
এক বর্ণনা অনুসারে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জীবনে মোট চার বার উমরা করেছেন। প্রথমবার: হুদায়বিয়ার উমরা, যা পথে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় সম্পন্ন করতে পারেননি। বরং সেখানেই মাথা মুন্ডনের মাধ্যমে হালাল হয়ে যান। দ্বিতীয় বার: উমরাতুল কাজা। তৃতীয় বার : জিয়িররানা থেকে। চতুর্থবার: বিদায় হজের সাথে। তবে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উমরার উদ্দেশ্যে হেরেমের এরিয়ার বাইরে বের হয়ে উমরা করেছেন বলে কোন প্রমাণ নেই। [বিস্তারিত দেখুন : যাদুল মাআদ : খন্ড : ২, পৃষ্ঠা : ৯২-৯৫]
সাহাবায়ে কেরামের উমরা আদায়ের পদ্ধতি থেকে অবশ্য হজের সময় ব্যতীত অন্য সময়ে বছরে একাধিকবার উমরা করার বৈধতা প্রমাণিত হয়। মক্কায় ইবনে যুবায়ের (রাঃ) এর শাসনামলে ইবনে উমর বছরে দুটি করে উমরা করেছেন। আয়েশা (রাঃ) বছরে তিনটি পর্যন্ত উমরাও করেছেন। [- সাইয়িদ সাবিক : ফেকহুস্সুন্নাহ , খন্ড : ৭ , পৃ: ৭৪৯] এক হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা বার বার হজ ও উমরা আদায় করো। কেননা এ দুটি দারিদ্র্য ও গুনাহ বিমোচন করে দেয়।’ [- আলবানী : সহিহুন্নাসায়ী : হাদিস নং ৫৫৮] সাহাবায়ে কেরামের ক্ষেত্রে দেখা যেত, এক উমরা আদায়ের পর তাদের মাথার চুল কাল হয়ে যাওয়ার আবার উমরা করতেন, তার আগে করতেন না। [বিস্তারিত দেখুন : যাদুল মাআদ : খন্ড : ২, পৃষ্ঠা : ৯০-৯৫]
সাহাবায়ে কেরামের উমরা আদায়ের পদ্ধতি থেকে অবশ্য হজের সময় ব্যতীত অন্য সময়ে বছরে একাধিকবার উমরা করার বৈধতা প্রমাণিত হয়। মক্কায় ইবনে যুবায়ের (রাঃ) এর শাসনামলে ইবনে উমর বছরে দুটি করে উমরা করেছেন। আয়েশা (রাঃ) বছরে তিনটি পর্যন্ত উমরাও করেছেন। [- সাইয়িদ সাবিক : ফেকহুস্সুন্নাহ , খন্ড : ৭ , পৃ: ৭৪৯] এক হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা বার বার হজ ও উমরা আদায় করো। কেননা এ দুটি দারিদ্র্য ও গুনাহ বিমোচন করে দেয়।’ [- আলবানী : সহিহুন্নাসায়ী : হাদিস নং ৫৫৮] সাহাবায়ে কেরামের ক্ষেত্রে দেখা যেত, এক উমরা আদায়ের পর তাদের মাথার চুল কাল হয়ে যাওয়ার আবার উমরা করতেন, তার আগে করতেন না। [বিস্তারিত দেখুন : যাদুল মাআদ : খন্ড : ২, পৃষ্ঠা : ৯০-৯৫]
উমরা শুরু করলে তা পূর্ণ করা ওয়াজিব। তবে হজের মত উমরা আদায় আবশ্যিক কি-না সে ব্যাপারে ইমামদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্মল (রাঃ) এর নিকট উমরা করা ওয়াজিব। প্রমাণ: পবিত্র কুরআনের বাণী ‘ وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ -তোমরা আল্লাহর জন্য হজ ও উমরা পূর্ণ কর।’ [- সূরা আল বাকারা : ১৯২] এই অভিমতের পক্ষে বেশ কিছু হাদিসও রয়েছে তন্মধ্যে কয়েকটি হল নিম্নরূপ—
এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এসে বললেন আমার পিতা খুব বৃদ্ধ। তিনি হজ-উমরা করতে অপারগ, এমনকী সফরও করতে পারেন না। উত্তরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ‘তোমার পিতার পক্ষ থেকে হজ ও উমরা পালন করো। [ - أتى رجل فقال : إن أبي شيخ كبير لا يستطيع الحج ولا العمرة ولا الظعن ، فقال : حج عن أبيك واعتمر (আবু দাউদ : হাদিস নং ১৮১০; তিরমিযী : হাদিস নং ৯৩০)]
কোনো কোনো বর্ণনায় হাদিসে জিব্রিলের একাংশে এসেছে ( وأن تحج وتعتمر -তুমি হজ করবে ও উমরা করবে) [-ইবনে হিববান : হাদিস নং ১৭৩ ; দারা কুতনী : ২/২৮২)]
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, নারীর ওপর কি জিহাদ ফরজ? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তাদের ওপর জিহাদ আছে যে জিহাদে কিতাল (যুদ্ধ) নেই। আর তা হল হজ ও উমরা। [- আহমদ : ২/১৬৫ ; ইবনে মাজাহ : হাদিস নং ২৯০১]
হাদিসে এসেছে, ‘হজ ও উমরা দুটি ফরজ কর্ম। এতে কিছু যায় আসে না যে তুমি কোনটি দিয়ে শুরু করলে।’ [ - إن الحج والعمرة فريضتان لا يضرك أيهما بدأت (দারা কুতনী : হাদিস নং ২১৭ )]
ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এর মতানুসারে উমরা করা সুন্নত। প্রমাণ, জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিস: উমরা করা ওয়াজিব কি-না রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। উত্তরে তিনি বলেছেন, না; তবে যদি উমরা করো তা হবে উত্তম। [ - أن النبي صلى الله عليه وسلم سئل عن العمرة ، أ واجبة هي ، فقال : لا ، و أن تعتمروا أفضل (আহমদ, তিরমিযি )]
উভয়পক্ষের দলিল প্রমাণ পর্যালোচনা করলে যারা ওয়াজিব বলেছেন তাদের কথাই প্রাধান্যপ্রাপ্ত বলে মনে হয়।
এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এসে বললেন আমার পিতা খুব বৃদ্ধ। তিনি হজ-উমরা করতে অপারগ, এমনকী সফরও করতে পারেন না। উত্তরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ‘তোমার পিতার পক্ষ থেকে হজ ও উমরা পালন করো। [ - أتى رجل فقال : إن أبي شيخ كبير لا يستطيع الحج ولا العمرة ولا الظعن ، فقال : حج عن أبيك واعتمر (আবু দাউদ : হাদিস নং ১৮১০; তিরমিযী : হাদিস নং ৯৩০)]
কোনো কোনো বর্ণনায় হাদিসে জিব্রিলের একাংশে এসেছে ( وأن تحج وتعتمر -তুমি হজ করবে ও উমরা করবে) [-ইবনে হিববান : হাদিস নং ১৭৩ ; দারা কুতনী : ২/২৮২)]
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, নারীর ওপর কি জিহাদ ফরজ? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তাদের ওপর জিহাদ আছে যে জিহাদে কিতাল (যুদ্ধ) নেই। আর তা হল হজ ও উমরা। [- আহমদ : ২/১৬৫ ; ইবনে মাজাহ : হাদিস নং ২৯০১]
হাদিসে এসেছে, ‘হজ ও উমরা দুটি ফরজ কর্ম। এতে কিছু যায় আসে না যে তুমি কোনটি দিয়ে শুরু করলে।’ [ - إن الحج والعمرة فريضتان لا يضرك أيهما بدأت (দারা কুতনী : হাদিস নং ২১৭ )]
ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এর মতানুসারে উমরা করা সুন্নত। প্রমাণ, জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিস: উমরা করা ওয়াজিব কি-না রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। উত্তরে তিনি বলেছেন, না; তবে যদি উমরা করো তা হবে উত্তম। [ - أن النبي صلى الله عليه وسلم سئل عن العمرة ، أ واجبة هي ، فقال : لا ، و أن تعتمروا أفضل (আহমদ, তিরমিযি )]
উভয়পক্ষের দলিল প্রমাণ পর্যালোচনা করলে যারা ওয়াজিব বলেছেন তাদের কথাই প্রাধান্যপ্রাপ্ত বলে মনে হয়।
হজের মীকাতের বর্ণনা আগেই গিয়েছে। উমরাকারী যদি এই মীকাতের বাইরে থেকে আসে তাহলে মীকাত থেকে এহরাম বেঁধে আসতে হবে। [- দেখুন মুসলিম : হাদিস নং ১১৮১] উমরাকারী যদি হেরেমের অভ্যন্তরে থাকে তাহলে হেরেম এর এরিয়া থেকে বাইরে যেতে হবে। হিল্ল থেকে এহরাম বাঁধতে হবে। সবচেয়ে নিকটবর্তী হিল্ল হল তানয়ীম, যেখানে বর্তমানে মসজিদে আয়েশা রয়েছে।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন