মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আর যে পরম করুণাময়ের জিকির থেকে বিমুখ থাকে আমি তার জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করি, ফলে সে হয়ে যায় তার সঙ্গী। (সূরা যুখরুফ : ৩৬)
হাদীসে এসেছে -
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : يعقد الشيطان على قافية رأس أحدكم إذا هو نام ثلاث عقد ، يضرب كل عقدة مكانها : عليك ليل طويل فارقد ، فإن استيقظ فذكر الله انحلت عقدة ، فإن توضأ انحلت عقدة ، فإن صلى انحلت عقده كلها ، فأصبح نشيطا طيب النفس ، وإلا أصبح خبيث النفس كسلان . رواه البخاري ومسلم واللفظ للبخاري
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেহ যখন ঘুমিয়ে যায় শয়তান তখন তার মাথার কাছে বসে তিনটি গিরা লাগায়। প্রতিটি গিরা দেয়ার সময় একটি কথা বলে: তোমার সামনে আছে দীর্ঘ রাত, তুমি ঘুমাও। যখন সে নিদ্রা থেকে উঠে আল্লাহর জিকির করে তখন একটি গিরা খুলে যায়। এরপর যখন সে অজু করে তখন আরেকটি গিরা খুলে যায়। এরপর যখন নামাজ পড়ে তখন শেষ গিরাটি খুলে যায়। ফলে সে সারাদিন কর্মতৎপর ও সুন্দর মন নিয়ে দিন কাটায়। আর যদি এমন না করে, তাহলে সারাদিন তার কাটে খারাপ মন ও অলসভাব নিয়ে। (বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম)
এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হল:
(১) ঠিকমত অজু করলে, নামাজ আদায় করলে শয়তানের চড়াও থেকে মুক্ত থাকা যায়।
(২) খারাপ মন নিয়ে থাকা ও অলসতা শয়তানের কুমন্ত্রণার ফল।
(৩) রীতিমত নামাজ আদায় করলে শরীর ও মন প্রফুল্ল থাকে। কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি পায়। অলসতা দূর হয়ে যায়।
(৪) ঘুম থেকে উঠার সাথে সাথে অজু গোসল করার আগেই আল্লাহর জিকির করা উচিত। ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার নির্দিষ্ট দুআ আছে। এটি পাঠ করা সুন্নত। এতে শয়তানের কুপ্রভাব দূর হয়ে যায়।
من قال إذا خرج من بيته بسم الله توكلت على الله ولا حول ولا قوة إلا بالله، يقال له : كفيت ووقيت وهديت و تنحى عنه الشيطان
যে ব্যক্তি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বলবে, বিছমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি অলা হাওলা অলা কুওআতা ইল্লা বিল্লাহি (আল্লাহরই নামে আল্লাহর উপর নির্ভর করে বের হলাম। আর তার সামর্থ ব্যতীত পাপ থেকে বাচাঁর উপায় নেই এবং তার শক্তি ব্যতীত ভাল কাজ করা যায় না) তখন তাকে বলা হয়, তোমার জন্য এটা যথেষ্ট, তোমাকে সুরক্ষা দেয়া হল এবং তোমাকে পথের দিশা দেয়া হল। আর শয়তান তার থেকে দূরে চলে যায়। (বর্ণনায়: আবু দাউদ ও তিরমিজী)
তিন. পেশাব পায়খানাতে যাওয়ার সময় দুআ পাঠ করা:
হাদীসে এসেছে-
كان النبي صلى الله عليه وسلم إذا دخل الخلاء قال : اللهم إني أعوذ بك من الخبث والخبائث
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন পেশাব পায়খানায় প্রবেশ করতেন, তখন বলতেন আল্লাহুম্মা ইন্নী আউজুবিকা মিনাল খুবুছি ওয়াল খাবায়িছ (হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে জিন নর ও জিন নারী থেকে আশ্রয় নিচ্ছি) (বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : এ সকল পেশাব পায়খানার স্থানে জিন শয়তান থাকে। অতএব তোমাদের কেহ যখন এখানে আসে সে যেন বলে, আল্লাহুম্মা ইন্নী আউজু বিকা মিনাল খুবুছি ওয়াল খাবায়িছ। (বর্ণনায় : ইবনে হিব্বান)
চার. প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় এ দুআটি তিনবার পাঠ করা
(আউজু বিকালি মাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাকা) অর্থ: আমি আল্লাহ তাআলার পরিপূর্ণ বাক্যাবলীর মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির সকল অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় নিচ্ছি। (বর্ণনায় : মুসলিম, তিরমিজী, আহমাদ)
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
جاء رجل إلى النبي صلى الله عليه وسلم فقال : يا رسول الله ! ما لقيت من عقرب لدغتني البارحة . قال " أما لو قلت حين أمسيت : أعوذ بكلمات الله التامات من شر ما خلق ، لم تضرك " .
এক ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে বলল, গত রাতে আমাকে একটি বিচ্ছুতে দংশন করেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, আমি কি তোমাকে বলিনি যখন সন্ধ্যা হবে তখন তুমি বলবে, আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাকা। তাহলে তোমাকে কোন কিছু ক্ষতি করতে পারত না। (বর্ণনায় : মুসলিম, হাদীস নং ২৭০৯)
অন্য আরেকটি বর্ণনায় এসেছে- একটি জিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে আছর করতে চেয়েছিল। তার সাথে আরেকটি জিন ছিল। জিব্রাইল এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আপনি এ বাক্যটি বলুন তাহলে ওরা আপনাকে কিছু করতে পারবে না। (বর্ণনায় : ইবনে আবি হাতেম)
এমনিভাবে কেউ যখন কোন স্থানে যায় আর এ দুআটি পাঠ করে তাহলে তাকে কোন কিছু ক্ষতি করতে পারবে না।
من نزل منزلا ثم قال : أعوذ بكلمات الله التامات من شر ما خلق ، لم يضره شيء ، حتى يرتحل من منزله ذلك
যে ব্যক্তি কোন স্থানে অবতরণ করল অতঃপর বলল: আউজু বিকালি মাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাকা (আমি আল্লাহ তাআলার পরিপূর্ণ বাক্যাবলীর মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির সকল অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় নিচ্ছি) তখন তাকে কোন কিছু ক্ষতি করতে পারবে না, যতক্ষণ সে ওখানে অবস্থান করবে। (বর্ণনায় : মুসলিম, খাওলা বিনতে হাকীম থেকে)
পাঁচ. প্রতিদিন নিদ্রা গমনকালে আয়াতুল কুরসী পাঠ করা
হাদীসে এসেছে -
عن أبي هريرة رضي الله عنه وكلني رسول الله صلى الله عليه وسلم بحفظ زكاة رمضان ، فأتاني آت ، فجعل يحثو من الطعام ، فأخذته وقلت : والله لأرفعنك إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم ، قال : إني محتاج وعلي عيال ولي حاجة شديدة ، قال : فخليت عنه ، فأصبحت فقال النبي صلى الله عليه وسلم : ( يا أبا هريرة ما فعل أسيرك البارحة ) . قال : قلت : يا رسول الله ، شكا حاجة شديدة ، وعيالا فرحمته فخليت سبيله ، قال : ( أما إنه قد كذبك ، وسيعود ) . فعرفت أنه سيعود ، لقول رسول الله صلى الله عليه وسلم : ( إنه سيعود ) . فرصدته ، فجاء يحثو من الطعام ، فأخذته فقلت : لأرفعنك إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم ، قال : دعني فإني محتاج وعلي عيال ، لا أعود ، فرحمته فخليت سبيله ، فأصبحت فقال لي رسول الله صلى الله عليه وسلم : ( يا أباهريرة ما فعل أسيرك ) . قلت : يا رسول الله شكا حاجة شديدة وعيالا ، فرحمته فخليت سبيله ، قال : ( أما إنه كذبك ، وسيعود ) . فرصدته الثالثة ، فجاء يحثو من الطعام ، فأخذته فقلت : لأرفعنك إلى رسول الله ، وهذا آخر ثلاث مرات تزعم لا تعود ، ثم تعود ، قال : دعني أعلمك كلمات ينفعك الله بها ، قلت ما هو ؟ قال : إذا أويت إلى فراشك ، فاقرأ آية الكرسي : { الله لا إله إلا هو الحي القيوم } . حتى تختم الآية ، فإنك لن يزال عليك من الله حافظ ، ولا يقربنك شيطان حتى تصبح ، فخليت سبيله فأصبحت ، فقال لي رسول الله صلى الله عليه وسلم : ( ما فعل أسيرك البارحة ) . قلت : يا رسول الله ، زعم أنه يعلمني كلمات ينفعني الله بها فخليت سبيله ، قال : ( ما هي ) . قلت : قال لي : إذا أويت إلى فراشك ، فاقرأ آية الكرسي من أولها حتى تختم : { الله لا إله إلا هو الحي القيوم } . وقال لي : لن يزال عليك من الله حافظ ، ولا يقربك شيطان حتى تصبح - وكانوا أحرص شيء على الخير - فقال النبي صلى الله عليه وسلم : ( أما إنه قد صدقك وهو كذوب ، تعلم من تخاطب منذ ثلاث ليال يا أبا هريرة ) . قال : لا ، قال : ذاك شيطان .
( رواه البخاري في كتاب الوكالة، باب إذا وكل رجلا فترك الوكيل شيئا فأجازه الموكل فهو جائز )
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রমজান মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে যাকাতের সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব দিলেন। দেখলাম, কোন এক আগন্তুক এসে খাদ্যের মধ্যে হাত দিয়ে কিছু নিতে যাচ্ছে। আমি তাকে ধরে ফেললাম। আর বললাম, আল্লাহর কসম! আমি অবশ্যই তোমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে নিয়ে যাবো। সে বলল, আমি খূব দরিদ্র মানুষ। আমার পরিবার আছে। আমার অভাব মারাত্নক। আবু হুরাইরা বলেন, আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকাল বেলা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসলাম, তখন তিনি বললেন, কী আবু হুরাইরা! গত রাতের আসামীর খবর কি? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে তার প্রচন্ড অভাবের কথা আমার কাছে বলেছে। আমি তার উপর দয়া করে তাকে ছেড়ে দিয়েছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, অবশ্য সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে। দেখবে সে আবার আসবে।
আমি এ কথায় বুঝে নিলাম সে আবার আসবেই। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সে আবার আসবে। আমি অপেক্ষায় থাকলাম। সে পরের রাতে আবার এসে খাবারের মধ্যে হাত দিয়ে খুঁজতে লাগল। আমি তাকে ধরে ফেললাম। আর বললাম, আল্লাহর কসম আমি অবশ্যই তোমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে নিয়ে যাবো। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দাও। আমি খুব অসহায়। আমার পরিবার আছে। আমি আর আসবো না। আমি এবারও তার উপর দয়া করে তাকে ছেড়ে দিলাম। সকাল বেলা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসলাম, তিনি বললেন, কী আবু হুরাইরা! গত রাতে তোমার আসামী কী করেছে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে তার চরম অভাবের কথা আমার কাছে বলেছে। তার পরিবার আছে। আমি তার উপর দয়া করে তাকে ছেড়ে দিয়েছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, অবশ্য সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে। দেখো, সে আবার আসবে।
তৃতীয় দিন আমি অপেক্ষায় থাকলাম, সে আবার এসে খাবারের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে খুঁজতে লাগল। আমি তাকে ধরে ফেললাম। আর বললাম, আল্লাহর কসম আমি অবশ্যই তোমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে নিয়ে যাবো। তুমি তিন বারের শেষ বার এসেছ। বলেছ, আসবে না। আবার এসেছ। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দাও। আমি তোমাকে কিছু বাক্য শিক্ষা দেবো যা তোমার খুব উপকারে আসবে। আমি বললাম কী সে বাক্যগুলো? সে বলল, যখন তুমি নিদ্রা যাবে তখন আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাকে একজন রক্ষক পাহাড়া দেবে আর সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না। আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকাল বেলা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসলাম, তখন তিনি বললেন, কী আবু হুরাইরা! গত রাতে তোমার আসামী কী করেছে? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে আমাকে কিছু উপকারী বাক্য শিক্ষা দিয়েছে, তাই আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তোমাকে সে কী শিক্ষা দিয়েছে? আমি বললাম, সে বলেছে, যখন তুমি নিদ্রা যাবে, তখন আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাকে একজন রক্ষক পাহাড়া দেবে আর সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না।
আর সাহাবায়ে কেরাম এ সকল শিক্ষণীয় বিষয়ে খুব আগ্রহী ছিলেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে তোমাকে সত্য বলেছে যদিও সে মিথ্যাবাদী। হে আবু হুরাইরা! গত তিন রাত যার সাথে কথা বলেছো তুমি কি জানো সে কে?
আবু হুরাইরা বলল, না, আমি জানি না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে হল শয়তান। (বর্ণনায় : বুখারী)
এ হাদীস থেকে আমরা যা শিখতে পেলাম তা হল:
(১) জনগণের সম্পদ পাহাড়া দেয়া ও তা রক্ষা করার জন্য আমানতদার দায়িত্বশীল নিয়োগ দেয়া কর্তব্য। আবু হুরাইরা রা. ছিলেন একজন বিশ্বস্ত আমানতদার সাহাবী।
(২) আবু হুরাইরা রা. দায়িত্ব পালনে একাগ্রতা ও আন্তরিকতার প্রমাণ দিলেন। তিনি রাতেও না ঘুমিয়ে যাকাতের সম্পদ পাহাড়া দিয়েছেন।
(৩) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এটি একটি মুজেযা যে, তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকেও আবু হুরাইরার কাছে বর্ণনা শুনেই বুঝতে পেরেছেন শয়তানের আগমনের বিষয়টি।
(৪) দরিদ্র অসহায় পরিবারের বোঝা বাহকদের প্রতি সাহাবায়ে কেরামের দয়া ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দয়াকে স্বীকৃতি দিলেন। তিনি আবু হুরাইরা রা. কে বললেন না, তাকে কেন ছেড়ে দিলে? কেন দয়া দেখালে?
(৫) সাহাবায়ে কেরামের কাছে ইলম বা বিদ্যার মূল্য কতখানি ছিল যে, অপরাধী শয়তান যখন তাকে কিছু শিখাতে চাইল তখন তা শিখে নিলেন ও তার মূল্যায়নে তাকে ছেড়েও দিলেন।
(৬) খারাপ বা অসৎ মানুষ ও জিন শয়তান যদি ভাল কোন কিছু শিক্ষা দেয় তা শিখতে কোন দোষ নেই। তবে কথা হল তার ষড়যন্ত্র ও অপকারিতা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে তোমাকে সত্য বলেছে, তবে সে মিথ্যুক। এ বিষয়টিকে শিক্ষার একটি মূলনীতি হিসাবে গ্রহণ করা যায়।
(৭) জিন শয়তান মানুষের খাদ্য-খাবারে হাত দেয়। তা থেকে গ্রহণ করে ও নষ্ট করে।
(৮)আয়াতুল কুরসী একটি মস্তবড় সুরক্ষা। যারা আমল করতে পারে তাদের উচিত এ আমলটি ত্যাগ না করা। রাতে নিদ্রার পূর্বে এটি পাঠ করলে পাঠকারী সকল প্রকার অনিষ্টতা থেকে মুক্ত থাকবে ও জিন শয়তান কোন কিছু তার উপর চড়াও হতে পারবে না।
(৯) আয়াতুল কুরসী হল সূরা আল বাকারার ২৫৫ নং এই আয়াত :
অর্থ: আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সুপ্রতিষ্ঠিত ধারক। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করে না। তাঁর জন্যই আসমানসমূহে যা রয়েছে তা এবং যমীনে যা আছে তা। কে সে, যে তাঁর নিকট সুপারিশ করবে তাঁর অনুমতি ছাড়া? তিনি জানেন যা আছে তাদের সামনে এবং যা আছে তাদের পেছনে। আর তারা তাঁর জ্ঞানের সামান্য পরিমাণও আয়ত্ব করতে পারে না, তবে তিনি যা চান তা ছাড়া। তাঁর কুরসী আসমানসমূহ ও যমীন পরিব্যাপ্ত করে আছে এবং এ দুটোর সংরক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না। আর তিনি সুউচ্চ, মহান।
ছয়. খাবার সময় বিসমিল্লাহ বলা ও ঘরে প্রবেশের সময় দুআ পাঠ করা :
হাদীসে এসেছে
إذا دخل الرجل بيته ، فذكر الله عند دخوله وعند طعامه ، قال الشيطان : لا مبيت لكم ولا عشاء . وإذا دخل فلم يذكر الله عند دخوله ، قال الشيطان : أدركتم المبيت . وإذا لم يذكر الله عند طعامه ، قال : أدركتم المبيت والعشاء . رواه مسلم، رقم الحديث 2018
যখন কোন ব্যক্তি ঘরে প্রবেশ করার সময় ও খাবার গ্রহণের সময় আল্লাহর জিকির করে তখন শয়তান বলে, তোমাদের সাথে আমার খাবার নেই ও রাত্রি যাপনও নেই। আর যখন ঘরে প্রবেশের সময় আল্লাহর জিকির করে না, তখন শয়তান বলে, তোমার সাথে আমার রাত যাপন হবে। আর যখন খাবার সময় আল্লাহর জিকির করে না, তখন শয়তান বলে, তোমাদের সাথে আমার রাত যাপন ও খাবার দুটোরই ব্যবস্থা হল। (বর্ণনায় : মুসলিম হাদীস নং ২০১৮)
ঘরে প্রবেশের সময় নির্দিষ্ট দুআ আছে সেটি পাঠ করবে। দুআ মুখস্থ না থাকলে কমপক্ষে বিছমিল্লাহ . . বলে ঘরে প্রবেশ করবে। এমনিভাবে খাবার সময় বিছমিল্লাহ . . বলে খাওয়া শুরু করবে।
যখন তোমাদের কেউ হাই তোলে তখন সে যেন তার মুখে হাত দিয়ে বাধা দেয়। কারণ হাই তোলার সময় শয়তান প্রবেশ করে। (বর্ণনায় : মুসলিম ও আবু দাউদ)
আট. পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করা :
খারাপ জিন শয়তান অপবিত্র ও নাপাক স্থানে বিচরণ করে থাকে। জিনের আছর থেকে বাঁচতে সর্বদা অপবিত্র ময়লাযুক্ত স্থান থেকে দূরে থাকতে হবে। বাচ্চাদের ময়লা আবর্জনা ও নোংড়া অবস্থা থেকে সর্বদা পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
যেমন :
في حديث زيد بن أرقم ان رسول الله صلي الله علية وسلم قال : إن هذه الحشوش محتضرة فاذا اتي أحدكم الخلاء فليقل : اللهم إني أعوذ بك من الخبث والخبائث " رواه أبو داود
যায়েদ ইবনে আরকাম থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এ সকল প্রস্রাব পায়খানার নোংড়া স্থানগুলোতে শয়তানরা উপস্থিত থাকে। যখন তোমাদের কেহ এখানে আসবে তখন যেন সে বলে, আল্লাহুম্মা ইন্নী আউজুবিকা মিনাল খুবুছি ওয়াল খাবায়িছ (হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে জিন নর ও জিন নারী থেকে আশ্রয় নিচ্ছি) বর্ণনায় : আবু দাউদ
অতএব আমরা এ হাদীস থেকে
বুঝলাম জিন, ভূত, শয়তান নোংড়া স্থানে অবস্থান করে। এ সকল নোংড়া স্থান থেকে সকলের দূরে থাকা উচিত।
قال شيخ الإسلام ابن تيميه : وغالب ما يوجد الجن في الخواب والفوات في مواضع النجاسات كالحمامات والحشوش والمزايل والمقامين والمقابر
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, সাধারণত জিনেরা ময়লা আবর্জনা, মল-মুত্র ত্যাগের স্থান ডাষ্টবিন ও কবর স্থানে অবস্থান করে। (মজমুআল ফাতাওয়া)
নয়. ঘরে আল কুরআন তেলাওয়াত করা বিশেষ করে সূরা আল বাকারা পাঠ করা :
لا تجعلوا بيوتكم مقابر . إن الشيطان ينفر من البيت الذي تقرأ فيه سورة البقرة . رواه مسلم 780
তোমরা ঘর-কে কবরে পরিণত করো না। যে ঘরে সূরা আল বাকারা তেলাওয়াত করা হয় শয়তান সে ঘর থেকে দূরে থাকে। (বর্ণনায়: মুসলিম, হাদীস নং ৭৮০)
এ হাদীস থেকে আমরা ঘরে আল কুরআন তেলাওয়াত করার নির্দেশ জানলাম। ঘরকে কবরে পরিণত করবে না, এর মানে হল ঘরে কুরআন তেলাওয়াত করবে। আর সূরা আল বাকারা ঘরে তেলাওয়াত করলে শয়তান ঘর থেকে পালিয়ে যায়। আমরা জানি সূরা আল বাকারাতেই রয়েছে আয়াতুল কুরসী।
দশ. কোন গর্তে পেশাব-পায়খানা না করা:
হাদীসে এসেছে -
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم نهى أن يبال في الجحر . قيل لقتادة : ما يكره من البول في الجحر ؟ قال : كان يقال : إنها مساكن الجن .
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম গর্তে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন। কাতাদাহ রা. কে জিজ্ঞস করা হল এ নিষেধের কারণ কি? তিনি বললেন, বলা হয়ে থাকে গর্ত হল জিনদের থাকার জায়গা। (বর্ণনায় : আবু দাউদ)
এগার. ঘরে কোন সাপ দেখলে তা মারতে তাড়াহুড়ো না করা :
যদি ঘরে কোন সাপ দেখা যায় তবে সাথে সাথে তাকে না মেরে সতর্কবাণী উচ্চারণ করা। তাকে ঘর ছেড়ে যেতে বলা। তারপর যদি না যায় তাহলে মেরে ফেলা।
হাদীসে এসেছে -
عن أبي السائب مولى هشام بن زهرة ، أنه قال : دخلت على أبي سعيد الخدري ، فوجدته يصلي ، فجلست أنتظره حتى قضى صلاته ، فسمعت تحريكا تحت سرير في بيته ، فإذا حية ، فقمت لأقتلها ، فأشار أبو سعيد أن اجلس ، فلما انصرف أشار إلى بيت في الدار ، فقال : أترى هذا البيت ؟ فقلت : نعم ، قال : إنه قد كان فيه فتى حديث عهد بعرس ، فخرج مع رسول الله صلى الله عليه وسلم إلى الخندق ، فبينا هو به إذ أتاه الفتى يستأذنه ، فقال : يا رسول الله ! ائذن لي أحدث بأهلي عهدا ، فأذن له رسول الله صلى الله عليه وسلم ، وقال : خذ عليك سلاحك ، فإني أخشى عليك بني قريظة ، فانطلق الفتى إلى أهله ، فوجد امرأته قائمة بين البابين ، فأهوى إليها بالرمح ليطعنها ، وأدركته غيرة ، فقالت : لا تعجل حتى تدخل وتنظر ما في بيتك ، فدخل فإذا هو بحية منطوية على فراشه ، فركز فيها رمحه ، ثم خرج بها فنصبه في الدار ، فاضطربت الحية في رأس الرمح ، وخر الفتى ميتا ، فما يدري أيهما كان أسرع موتا ، الفتى أم الحية ؟ فذكر ذلك لرسول الله صلى الله عليه وسلم فقال : إن بالمدينة جنا قد أسلموا ، فإذا رأيتم منهم شيئا فآذنوه ثلاثة أيام ، فإن بدا لكم بعد ذلك فاقتلوه ، فإنما هو شيطان . رواه مسلم في كتاب قتل الحيات وغيرها .
হিশাম ইবনে যাহরার মুক্ত দাস আবু সায়েব থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু সায়ীদ খুদরি রা. এর সাথে দেখা করার জন্য গেলাম। তাকে নামাজ পড়া অবস্থায় পেলাম। আমি তার নামাজ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকলাম। এমন সময় তার ঘরের খাটের নীচে কিছু একটা নড়াচড়া করার শব্দ পেলাম। চেয়ে দেখি একটি সাপ। আমি সেটাকে মেরে ফেলতে উঠে দাঁড়ালাম। আবু সায়ীদ রা. আমাকে বসতে ইশারা দিলেন। যখন নামাজ শেষ করলেন তখন আমাকে বাড়ীর একটি ঘরের দিকে ইশারা করে বললেন, তুমি কি এ ঘরটি দেখছো? আমি বললাম হ্যাঁ, দেখছি। তিনি বললেন, এ ঘরে বসবাস করত একজন যুবক। সে নববিবাহিত ছিল। একদিন সে খন্দকের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে যোগ দিল। যেহেতু সে নব বিবাহিত যুবক, তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে অনুমতি চেয়ে বলল, হে রাসূল! আমি নববিবাহিত। আমাকে আমার স্ত্রীর কাছে যাওয়ার অনুমতি দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে অনুমতি দিলেন, আর বললেন, সাথে অস্ত্র নিয়ে যেও। আমি তোমার উপর বনু কুরাইযার হামলার আশঙ্কা করছি। যুবকটি তার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হল। ঘরে পৌছে দেখল, তার স্ত্রী ঘরের বাহিরে দরজার দু পাটের মাঝে দাঁড়ানো। এ অবস্থা দেখে তার আত্নসম্মান বোধে আঘাত লাগল। সে বর্শা দিয়ে তাকে আঘাত করতে উদ্যত হল। স্ত্রী বলল, তাড়াহুড়ো করো না। আগে ঘরে প্রবেশ করে দেখ তোমার ঘরের মধ্যে কি? সে ঘরে ঢুকে দেখল, তার বিছানায় একটি সাপ গোল হয়ে শুয়ে আছে। যুবকটি বর্শা দিয়ে সাপের গায়ে আঘাত করল। এরপর এটাকে ঘরের বাহিরে নিয়ে আসল। সাপটি বর্শার মাথায় ছটফট করছিলো। আর যুবকটি তখন মরে পড়ে গেল। কেহ জানে না, কে আগে মরেছে, যুবকটি না সাপটি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এ ঘটনা বর্ণনা করা হল। তিনি বললেন, মদীনাতে কিছু জিন আছে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে। যদি তোমাদের কেহ তাদের কাউকে দেখে তাহলে তাকে তিন দিনের সময় দেবে। তিন দিনের পরও যদি তাকে দেখা যায় তাহলে তাকে হত্যা করবে। কারণ, সে শয়তান। (বর্ণনায় : মুসলিম, সাপ হত্যা অধ্যায়।)
এ হাদীস থেকে আমরা যা শিখতে পেলাম তা হল:
১- সাহাবায়ে কেরাম অন্যকে ইসলামী বিধি-বিধান ও নবী কারীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাত শিক্ষা দিয়েছেন অত্যন্ত যত্ন সহকারে।
২- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবায়ে কেরাম ও উম্মতের প্রতি কত দয়াশীল ছিলেন যে, যুদ্ধকালীন সময়ে কেউ স্ত্রীর কাছে যাওয়ার অনুমতি চাইলে তা তিনি সাথে সাথে দিয়ে দিতেন। কখনো দেখা গেছে তিনি তার সাহাবীদের নিজের পক্ষ থেকেই জিজ্ঞেস করতেন, কত দিন হল তুমি বিবাহ করেছ? তোমার বাড়ীতে কে আছে? তোমাকে ছুটি দিলাম তুমি বাড়ীতে স্ত্রীর কাছে যাও।
৩- ঘরে কোন সাপ দেখলে সাথে সাথে হত্যা করতে নেই। হতে পারে সে জিন। তবে যদি সাপ দেখে বা এর আচার-আচরণ, আলামত দেখে বুঝে আসে এটা জিন নয়, সাপ। তখন হত্যা করা দোষণীয় নয়। আলোচ্য হাদীসে দেখুন, সাপটি বিছানার উপর শুয়ে ছিল। যদি সে সাপ হয়, তাহলে বিছানার উপর তার কী প্রয়োজন? সে ইঁদুর বা পোকা-মাকর খুঁজবে।
৪- ঘরে এ রকম সন্দেহ জনক সাপ দেখলে তাকে উচ্চস্বরে ঘর ছেড়ে যেতে বলবে। এভাবে তিন দিন বলার পরও সে না গেলে তাকে হত্যা করে ফেলবে।
৫- বনে জঙ্গলে, পাহাড়ে-পর্বতে, রাস্তায় কোন সাপ দেখলে জিন মনে করার কোন কারণ নেই। তাকে মেরে ফেলতে হবে। শুধু ঘরের সাপকে জিন বলে সন্দেহ করা যায়। একটি সহীহ হাদীসে এটি স্পষ্ট বলা আছে।
৬- সাপটি জিন ছিল বিধায় সে নিজেকে হত্যা করার অপরাধে হত্যাকারীকে আঘাত করে হত্যা করেছে। কিন্তু সাপটি কিভাবে যুবকটিকে আঘাত করল তা কেউ দেখেনি।
৭- সাপটি মুসলিম জিন ছিল বলে রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কথায় ইশারা পাওয়া যায়। সে শুরুতেই তাকে আঘাত করেনি। বা তার স্ত্রীর কোন ক্ষতি করেনি।
৮- রাসূলুল্লা সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন রহমাতুললিল আলামীন বা সৃষ্টিকুলের জন্য করুণা। তাই তিনি জিনের প্রতিও করুণা-রহমত দেখিয়েছেন। এ হাদীসটি ছাড়াও অন্যান্য অনেক হাদীস রয়েছে এ বিষয়ে।
৯- কারণ সে শয়তান রাসলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এ কথার অর্থ হল, সে জিন নয়, সে প্রাণীদের মধ্যে দুষ্ট ও ক্ষতিকর। তাকে হত্যা করো।
لو أن أحدهم إذا أراد أن يأتي أهله قال : بسم الله ، اللهم جنبنا الشيطان ، وجنب الشيطان ما رزقتنا ، فإنه إن يقدر بينهما ولد في ذلك لم يضره شيطان أبدا .
তোমাদের কেহ যখন নিজ স্ত্রীর সাথে মিলিত হতে ইচ্ছে করে তখন যদি বলে, বিছমিল্লাহ, আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইতান, অজান্নিবিশ শাইতান মা রাযাকতানা (আল্লাহর নামে আমরা মিলিত হচ্ছি, হে আল্লাহ আমাদের শয়তান থেকে দূরে রাখুন আর আমাদের যে সন্তান দান করবেন তাকেও শয়তান থেকে দূরে রাখুন) তাহলে এ মিলনে সন্তান জন্ম নিলে সে সন্তানকে শয়তান কখনো ক্ষতি করতে পারবে না। (বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম)
তের. সন্ধ্যার সময় বাচ্চাদেরকে বাহিরে বের হতে না দেয়া:
إذا كان جنح الليل، أو أمسيتم ، فكفوا صبيانكم ، فإن الشياطين تنتشر حينئذ ، فإذا ذهبت ساعة الليل فخلوهم ، وأغلقوا الأبواب واذكروا اسم الله ، فإن الشيطان لا يفتح باباً مغلقاً .
যখন রাত্রি ডানা মেলে অথবা তোমরা সন্ধ্যায় উপনীত হও, তখন সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখবে। বাহিরে যাওয়া থেকে বিরত রাখবে। কারণ, তখন শয়তানেরা ছড়িয়ে পড়ে। যখন রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হয়ে যায় তখন তাদের ছেড়ে দিতে পারো। আর দরজা বন্ধ করে দেবে। আল্লাহর নাম স্মরণ করবে। জেনে রাখো, শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। (বর্ণনায় : বুখারী)
এ হাদীস থেকে আমরা নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলো জানতে পারলাম :
১- সন্ধ্যার সময় বাচ্চাদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেয়ার নির্দেশ।
২- সন্ধ্যার আগে বাচ্চাদের ঘরে আসার জন্য বলতে হবে। তখন তাদের ঘর থেকে বের হতে বারণ করবে।
৩- সন্ধ্যার কিছু পরে এ আশঙ্কা থাকে না। তখন বাচ্চাদের বের হতে বারণ নেই।
৪- সন্ধ্যার সময় ঘরের দরজা বন্ধ করার নির্দেশ।
৫- আর একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এ হাদীস থেকে জানা গেল যে, জিন বা শয়তান ঘরের বন্ধ দরজা খুলতে পারে না।
৬- দরজা খোলা ও বন্ধের সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
চৌদ্দ. জিনদের কাছে আশ্রয় চাওয়া বা তাদের সাহায্য না নেয়া:
মানুষ যদি জিনদের কাছে কোন কিছু চায় বা তাদের সাহায্য গ্রহণ করে তাহলে তাদের ঔদ্ধত্য বেড়ে যায়। তারা মানুষের উপর চড়াও হতে উৎসাহ পায়। যেমন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন-
আর নিশ্চয় কতিপয় মানুষ কতিপয় জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা তাদের অহংকার বাড়িয়ে দিয়েছিল। (সূরা আল জিন : ৬)
অনেক ওঝা ফকীর-কে দেখা যায় তারা তাবীজ-তদবীরের ক্ষেত্রে জিনের সাহায্য নেয়। এটা অন্যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/189/11
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।