hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে ব্যভিচার ও সমকামিতার ভয়াবহ পরিণতি

লেখকঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইবন আব্দুল আযীয আল-মাদানী

২৯
সংক্ষিপ্তাকারে প্রস্তাবিত চিকিৎসাসমূহঃ:
১. প্রথমে আল্লাহ তা‘আলার নিকট উক্ত গুনাহ থেকে খাঁটি তাওবা করে নিন। কারণ, কেউ আল্লাহ তা‘আলা নিকট একমাত্র তাঁরই সন্তুষ্টি পাওয়ার জন্য অথবা তাঁরই কঠিন শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য তাওবা করে নিলে আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই তা কবুল করবেন এবং তাকে সেভাবেই চলার তাওফীক দিবেন।

২. আল্লাহ তা‘আলার প্রতি দৃঢ় একনিষ্ঠ হোন। আর এটিই হচ্ছে এর একান্ত মহৌষধ। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবী ইউসুফ আলাইহিস সালামকে এ একনিষ্ঠতার কারণেই ’ইশ্ক্ব এবং প্রায় নিশ্চিত ব্যভিচার থেকে রক্ষা করেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿كَذَٰلِكَ لِنَصۡرِفَ عَنۡهُ ٱلسُّوٓءَ وَٱلۡفَحۡشَآءَۚ إِنَّهُۥ مِنۡ عِبَادِنَا ٱلۡمُخۡلَصِينَ﴾ [ يوسف : ٢٤ ]

“তাকে (ইউসুফ আলাইহিস সালামকে) মন্দ কাজ ও অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখার জন্যই এভাবে আমি আমার নিদর্শন দেখালাম। কারণ, তিনি তো ছিলেন আমার একান্ত একনিষ্ঠ বান্দাহ্দের অন্যতম”। [সূরা ইউসুফ, আয়াত: ২৪]

৩. ধৈর্য ধরুন। কারণ, কোনো অভ্যাসগত কঠিন পাপ ছাড়ার জন্য ধৈর্যের একান্তই প্রয়োজন। সুতরাং ধৈর্য ধারণের বার বার কসরত করতে হবে। এমনিভাবেই ধীরে ধীরে এক সময় ধৈর্য ধারণ অভ্যাসে পরিণত হবে।

আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«وَمَنْ يَّتَصَبَّرْ يُصَبِّرْهُ اللهُ ، وَمَا أُعْطِيَ أَحَدٌ عَطَاءً خَيْراً وَأَوْسَعَ مِنَ الصَّبْرِ»

“যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করার চেষ্টা করবে আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই তাকে ধৈর্য ধারণ করার শক্তি দিবেন। আল্লাহ তা‘আলা কাউকে এমন কিছু দেন নি যা ধৈর্যের চাইতেও উত্তম এবং বিস্তর কল্যাণকর”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪৬৯, ৬৪৭০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৫৩]

এ কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, মনের কোনো চাহিদা পূরণ করা থেকে ধৈর্য ধারণ করা যে কারোর জন্য অবশ্যই অনেক সহজ তা পূরণ করার পর যে কষ্ট, শাস্তি, লজ্জা, আফসোস, লাঞ্ছনা, ভয়, চিন্তা ও অস্থিরতা পেয়ে বসবে তা থেকে ধৈর্য ধারণ করার চাইতে। তাই একেবারে শুরুতেই ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

৪. মনের বিরোধিতা করতে শিখুন। যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মনের বিরোধিতা করবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে অবশ্যই সঠিক পথে পরিচালিত করবেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَٱلَّذِينَ جَٰهَدُواْ فِينَا لَنَهۡدِيَنَّهُمۡ سُبُلَنَاۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَمَعَ ٱلۡمُحۡسِنِينَ ٦٩﴾ [ العنكبوت : ٦٩ ]

“যারা আমার উদ্দেশ্যে সংগ্রাম করে আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করবো। আল্লাহ তা‘আলা নিশ্চয় সৎকর্মশীলদের সাথেই রয়েছেন”। [সূরা আল-‘আনকাবূত, আয়াত: ৬৯]

৫. আল্লাহ তা‘আলা যে সর্বদা আপনার কর্মকাণ্ডের প্রতি দৃষ্টিপাত করেই আছেন তা অনুভব করতে শিখুন। সুতরাং উক্ত কাজ করার সময় মানুষ আপনাকে না দেখলেও আল্লাহ তা‘আলা যে আপনার প্রতি দেখেই আছেন তা ভাবতে হবে। এরপরও যদি আপনি উক্ত কাজে লিপ্ত থাকেন তখন অবশ্যই এ কথা ভাবতে হবে যে, আল্লাহ তা‘আলার সম্মান ও মর্যাদা আপনার অন্তরে নেই। তাই আল্লাহ তা‘আলা আপনার উক্ত কর্ম দেখলেও আপনার এতটুকুও লজ্জা হয় না। আর যদি আপনি এমন বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ তা‘আলা আপনার কর্মকাণ্ড দেখছেনই না তা হলে তো আপনি নিশ্চয় কাফির।

৬. জামা‘আতে সালাত পড়ার প্রতি বিশেষভাবে যত্নবান হোন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّ ٱلصَّلَوٰةَ تَنۡهَىٰ عَنِ ٱلۡفَحۡشَآءِ وَٱلۡمُنكَرِۗ﴾ [ العنكبوت : ٤٥ ]

“নিশ্চয় সালাত অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে”। [সূরা আল-‘আনকাবূত, আয়াত: ৪৫]

৭. বেশি বেশি নফল সাওম পালন করতে চেষ্টা করুন। কারণ, সাওমের মধ্যে বিশেষ ফযীলতের পাশাপাশি উত্তেজনা প্রশমনেরও এক বাস্তবমুখী ব্যবস্থা রয়েছে। তেমনিভাবে সাওম আল্লাহভীরুতা শিক্ষা দেওয়ার জন্যও এক বিশেষ সহযোগী।

আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ ! مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمُ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ، وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ ، فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ»

“হে যুবকরা! তোমাদের কেউ স্ত্রী সঙ্গমে সক্ষম হলে সে যেন দ্রুত বিবাহ করে নেয়। কারণ, বিবাহ তার চোখকে নিম্নগামী করবে এবং তার লজ্জাস্থানকে হিফাযত করবে। আর যে বিবাহ করতে সক্ষম নয় সে যেন রোযা রাখে। কারণ, সাওম তার জন্য একান্ত যৌন উত্তেজনা প্রতিরোধক”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৫, ৫০৬৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪০০]

৮. বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করুন। কারণ, কুরআন হচ্ছে সর্ব রোগের চিকিৎসা। তাতে নূর, হিদায়াত, মনের আনন্দ ও প্রশান্তি রয়েছে। সুতরাং উক্ত রোগে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির জন্য বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত, মুখস্থ ও তা নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করা অবশ্যই কর্তব্য যাতে তার অন্তর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে যায়।

৯. বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করুন। কারণ, আল্লাহ তা‘আলার যিকিরে অন্তরের বিরাট একটা প্রশান্তি রয়েছে এবং যে অন্তর সর্বদা আল্লাহর যিকিরে ব্যস্ত থাকে শয়তান সে অন্তর থেকে বহু দূরে অবস্থান করে। সুতরাং এ জাতীয় ব্যক্তির জন্য যিকির অত্যন্ত উপকারী।

১০. আল্লাহ তা‘আলার সকল বিধি-বিধানের প্রতি যত্নবান হোন। তা হলে আল্লাহ তা‘আলাও আপনার প্রতি যত্নবান হবেন। আপনাকে জিন্ন ও মানব শয়তান এবং অন্তরের কুপ্রবৃত্তি থেকে রক্ষা করবেন ‘আলা আপনার ধার্মিকতা, সততা, মানবতা এবং সম্মানও রক্ষা করবেন।

১১. অতি তাড়াতাড়ি বিবাহ কার্য সম্পাদন করুন। তা হলে যৌন উত্তেজনা প্রশমনের জন্য সহজেই আপনি একটি হালাল ক্ষেত্র পেয়ে যাবেন।

১২. জান্নাতের হুরের কথা বেশি বেশি স্মরণ করুন। যাদের চোখ হবে বড় বড় এবং যারা হবে অতুলনীয়া সুন্দরী লুক্কায়িত মুক্তার ন্যায়। নেককার পুরুষদের জন্যই আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং তাদেরকে পেতে হলে দুনিয়ার এ ক্ষণিকের অবৈধ স্বাদ পরিত্যাগ করতেই হবে।

১৩. শ্মশ্রুবিহীন সে প্রিয় ছেলেটি থেকে খুব দূরে থাকুন যাকে দেখলে আপনার অন্তরের সে লুক্কায়িত কামনা-বাসনা দ্রুত জাগ্রত হয়। এমন দূরে থাকবেন যে, সে যেন কখনো আপনার চোখে না পড়ে এবং তার কথাও যেন আপনি কখনো শুনতে না পান। কারণ, বাহ্যিক দূরত্ব অন্তরের দূরত্ব সৃষ্টি করতে অবশ্যই বাধ্য।

১৪. তেমনিভাবে উত্তেজনাকর সকল বস্তু থেকেও দূরে থাকুন যেগুলো আপনার লুক্কায়িত কামনা-বাসনাকে দ্রুত জাগ্রত করে। অতএব মহিলা ও শ্মশ্রুবিহীন ছেলেদের সাথে মেলামেশা করবেন না। বিশ্রী ছবি ও অশ্লীল গান শুনবেন না। আপনার নিকট যে অডিও ভিডিও ক্যাসেট, ছবি ও চিঠি রয়েছে সবগুলো দ্রুত নস্যাৎ করে দিন। উত্তেজনাকর খাদ্যদ্রব্য আপাতত বন্ধ রাখুন। তা কিছু দিনের জন্য গ্রহণ করবেন না। ইতিঃপূর্বে যেখানে উক্ত কাজ সম্পাদিত হয়েছে সেখানে আর যাবেন না।

১৫. লাভজনক কাজে ব্যস্ত থাকুন। কখনো একা ও অবসর থাকতে চেষ্টা করবেন না। পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পারেন। আত্মীয়-স্বজনের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেন। ইত্যবসরে ঘরের প্রয়োজনসমূহ পূরণ করতে পারেন। কুর‘আন শরীফ মুখস্থ করতে পারেন অথবা অন্ততপক্ষে বেচাকেনা নিয়েও ব্যস্ত হতে পারেন ইত্যাদি ইত্যাদি।

১৬. সর্বদা শয়তানের ওয়াসওয়াসা প্রতিরোধ করতে চেষ্টা করুন। কোনো কুমন্ত্রণাকে এতটুকুর জন্যও অন্তরে স্থান দিবেন না।

১৭. নিজের মনকে দৃঢ় করুন। কখনো নিরাশ হবেন না। কারণ, এ ব্যাধি এমন নয় যে তার কোনো চিকিৎসা নেই। সুতরাং আপনি নিরাশ হবেন কেন?

১৮. উচ্চাকাঙ্খী হোন। উচ্চাভিলাসের চাহিদা হচ্ছে এই যে, আপনি সর্বদা উন্নত গুণে গুণান্বিত হতে চাইবেন। অরুচিকর অভ্যাস ছেড়ে দিবেন। লাঞ্ছনার স্থানসমূহে কখনো যাবেন না। সমাজের সম্মানি ব্যক্তি সেজে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব হাতে নিবেন।

১৯. অভিনব বিরল চিকিৎসাসমূহ থেকে দূরে থাকুন। যেমন, কেউ উক্ত কাজ ছাড়ার জন্য এভাবে মানত করলো যে, আমি যদি এমন কাজ আবারো করে ফেলি তা হলে আল্লাহ তা‘আলার জন্য ছয় মাস সিয়াম পালন করা অথবা দশ হাজার রিয়াল সাদাকা করা আমার ওপর বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে। তেমনিভাবে এ বলে কসম খেলো যে, আল্লাহর কসম! আমি আর এমন কাজ করবো না। শুরুতে কসমের কাফফরার ভয়ে অথবা মানত ওয়াজিব হওয়ার ভয়ে উক্ত কাজ করা থেকে বেঁচে থাকলেও পরবর্তীতে তা কাজে নাও আসতে পারে।

কখনো কখনো কেউ কেউ কোনো অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই যৌন উত্তেজনা প্রশমনকারী কোনো কোনো ঔষুধ সেবন করে। তা একেবারেই ঠিক নয়। কারণ, তাতে হিতে বিপরীতও হতে পারে।

২০. নিজের মধ্যে প্রচুর লজ্জাবোধ জন্ম দেওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ, লজ্জাবোধ একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। যা কল্যাণই কল্যাণ এবং তা ঈমানেরও একটি বিশেষ অঙ্গ বটে। লজ্জাবোধ মানুষকে ভালো কাজ করতে উৎসাহ যোগায় এবং খারাপ কাজ থেকে দূরে রাখে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন