মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে, সুদের রয়েছে অনেক বড় বড় অপকারিতা এবং মারাত্মক শাস্তি। ইসলাম মানুষকে যা-ই করতে বলে তার মাঝে তার সৌভাগ্য এবং দুনিয়া-আখিরাতের সম্মান নিহিত থাকে। তেমনি ইসলাম এমন জিনিস থেকেই বারণ করে যার মাঝে তার দুর্ভাগ্য এবং উভয় জগতের ক্ষতি রয়েছে। হ্যা, সুদেরও আছে অনেক অকল্যাণকর দিক। তার মধ্য হতে কয়েকটি। যেমন-
সুদের আত্মিক-চারিত্রিক ক্ষতি : সুদ ভক্ষণেচ্ছা যাদের রয়েছে তাদের চরিত্র নিয়ে ভাবলেই বুঝা যায় এর ক্ষতি কতটুকু। কারণ, সমাজে আমরা তাদেরকেই সুদী কারবার করতে দেখি যাদের অন্তরে কৃপণতা, নির্দয়তা, অর্থলিপ্সা এবং বস্ত্ত লোলুপতা প্রভৃতি বদগুণ স্থান করে নিয়েছে।
সুদের সামাজিক ক্ষতি : যে সমাজে সুদী লেনদেন হয় সেটা ভ্রষ্ট, অন্তসার শূন্য সমাজ। যেখানে একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে আসে না। কেউ কারো সামান্য উপকার করে না স্বার্থ ছাড়া। এ সমাজের বিত্তশালীরা নিঃস্বদের ঘৃণা করে। বলাবাহুল্য যে, এমন সমাজে কখনো ঐক্য-স্থিতি টিকে থাকতে পারে না। এর সদস্যরা অনৈক্য ও অশান্তির দিকে ঝুঁকে থাকে সদা সর্বদা।
সুদের অর্থনৈতিক ক্ষতি : সুদ সমাজ জীবনের সকল লেনদেনের সঙ্গে নানাভাবে সম্পর্ক রাখে। কারণ সমাজের সবাই কমবেশি কর্জ দেয়া-নেয়া করে।
আর কর্জ কয়েক প্রকার : যথা-
(ক) এমন কর্জ যেটা অভাবী শ্রেণী তাদের ব্যক্তিগত প্রয়োজন পূরণের অভিপ্রায়ে গ্রহণ করে। ঋণের এই সনাতনী ধারাকে অবলম্বন করেই সুদী কারবার সবচে বেশি প্রসারতা লাভ করেছে। এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এই সুদী ব্যবসা যার রাহুগ্রাস থেকে খুব কম সংখ্যক দেশই নিরাপদ আছে। যে ব্যক্তিই এ সুদী চক্রের কব্জায় একবার এসেছে আমৃত্যু সে এর নাগপাশ থেকে মুক্তি পায় না।
(খ) এমন কর্জ যেটা ব্যবসায়ী, নির্মাতা এবং ভূ-স্বামীগণ গ্রহণ করে থাকে তাদের সফল প্রকল্পগুলোয় কাজে লাগানোর জন্য।
(গ) এমন ঋণ যা কোনো দেশ অন্য দেশের অর্থবাজার থেকে গ্রহণ করে থাকে তার প্রয়োজন মেটাবার নিমিত্তে।
ঋণের সবগুলো প্রকারই সমাজের প্রভুত দুর্দশা ও অকল্যাণ বয়ে আনে। চাই ঋণ নেয়া হোক ব্যবসা বা কারখানার জন্য, চাই ঋণ গ্রহণ করুক গরিব রাষ্ট্র ধনী রাষ্ট্রের কাছ থেকে। কারণ সবগুলোই এমন ব্যাপক অনিষ্ট ডেকে আনে যা থেকে ওই সমাজ বা রাষ্ট্র সহজে পরিত্রাণ পায় না। এটা হচ্ছে শুধু ইসলামি পদ্ধতির অনুসরণ না করার ফলেই। যে ইসলাম মানুষকে সব রকম কল্যাণের দিকে আহবান জানায়। নির্দেশ দেয় গরিব, মিসকিন ও অভাবীদের প্রতি দয়া, অনুগ্রহ ও সহমর্মিতা দেখাতে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- ‘সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা কর। মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে পরস্পরের সহযোগিতা করো না।’ [. মায়িদা : ০২] তেমনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন মুসলমানদের পরস্পর দয়া, সহানুভূতি দেখাতে এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকতে। তিনি ইরশাদ করেন- ‘মুসলমান মুসলমানের জন্য প্রাচীরের মতো যার এক অংশ অপর অংশের সঙ্গে বাঁধা আছে। এ বলে তিনি তাঁর এক হাতের আঙ্গুল অপর হাতের মধ্যে ঢুকিয়ে দেখালেন। [. বুখারি : ৪৮১, মুসলিম : ২৫৮৫] তিনি আরও বলেন, পরস্পর ভালোবাসা, সৌহার্দ্য এবং একতার দিক দিয়ে মুমিনদের দৃষ্টান্ত এক দেহের ন্যায়। যখন তার কোনো অঙ্গ অসুস্থ হয় তখন তার সব অঙ্গই জ্বর বা জাগরণের মাধ্যমে সাড়া দেয়। [. বুখারি : ৬০১১, মুসলিম : ২৫৮৬]
সুতরাং বুঝা গেল, বিপদ থেকে বাঁচতে হলে, কল্যাণ ও মুক্তি নিশ্চিৎ করতে হলে ইসলাম ও ইসলামি আদর্শের কোনো বিকল্প নেই।
সুদ মানুষের কর্ম-শক্তিকে অকার্যকর বানিয়ে দেয়। কেননা সুদ থেকে যখন চাহিদা মেটাতে পারে সুদী কারবারি তখন বেকারত্ব ওপরই সন্তুষ্ট থাকে।
ইসলামি সমাজগুলো পর্যন্ত সুদের দাবানল থেকে মুক্ত থাকতে পারছে না।
মানুষের কাছে অলস বেকার টাকা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অর্থনীতি বিকৃত ও ভ্রান্ত পথে হাঁটতে শুরু করেছে।
মুসলমানদের সম্পদ তাদের শত্রুদের হাতে চলে যাচ্ছে। এটা মুসলমানদের জন্য খুবই উদ্বেগজনক ব্যাপার। কারণ তারা তাদের উদ্বৃত্ত সম্পদ কাফেরদের ব্যাংকগুলোয় জমা রাখছে। এর দ্বারা তারা যেমন আমাদের বিরুদ্ধে আমাদেরই টাকা নিয়ে শক্তিশালী হচ্ছে তেমনি সে টাকা দিয়ে আমাদেরকেই দুর্বল বানানোর চেষ্টা করছে। তাছাড়া তাদের কাছে টাকা গচ্ছিত রাখার কারণে মুসলমানরা উপকরণ সল্পতারও শিকার হচ্ছে।
সুদ আল্লাহর দুশমন অভিশপ্ত ইহুদিদের স্বভাব-আমল। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘আর তাদের সুদ গ্রহণের কারণে, অথচ তা থেকে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল।’ [. নিসা : ১৬১]
সুদ বর্বরযুগের লোকদের স্বভাব। যে সুদী কারবার করে যে বর্বরদের গুণে গুণান্বিত হয়।
সুদখোরকে কিয়ামতের দিন পাগল হিসেবে পুনরুত্থিত করা হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-‘ যারা সুদ খায়, তারা তার ন্যায় (কবর থেকে) উঠবে, যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল বানিয়ে দেয়। এটা এ জন্য যে, তারা বলে, বেচা-কেনা সুদের মতই। অথচ আল্লাহ বেচা-কেনা হালাল করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতএব, যার কাছে তার রবের পক্ষ থেকে উপদেশ আসার পর সে বিরত হল, যা গত হয়েছে তা তার জন্যই ইচ্ছাধীন। আর তার ব্যাপারটি আল্লাহর হাওলায়। আর যারা ফিরে গেল, তারা আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে।’ [. বাকারা : ২৭৫]
আল্লাহ তাআলা সুদের মাধ্যমে আহরিত সম্পদ ধ্বংস ও নির্মূল করেন। ইরশাদ হয়েছে- ‘আল্লাহ সুদকে মিটিয়ে দেন এবং সদাকাকে বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ কোন অতি কুফরকারী পাপীকে ভালবাসেন না।’ [. বাকারা : ২৭৬] ইবনে মাসউদ রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- সুদ যদিও সম্পদ বাড়ায় কিন্তু শেষ পরিণামে তা কমায়। [. মুসনাদে আহমদ : ৪২৪]
সুদী কারবার বান্দাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ করে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- ‘হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যা অবশিষ্ট আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা মুমিন হও। কিন্তু যদি তোমরা তা না কর তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা নাও, আর যদি তোমরা তাওবা কর, তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই থাকবে। তোমরা যুলম করবে না এবং তোমাদের যুলম করা হবে না।’ [. বাকারা : ২৭৮-২৭৯]
সুদ ভক্ষণ খোদাভীতি, তাকওয়া শূন্যতা এবং দুর্বলতার প্রমাণ বহণ করে। যা মানুষকে দুনিয়া ও আখিরাতে ব্যর্থ ও হতভাগ্য মানুষে পরিণত করে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- ‘হে মুমিনগণ, তোমরা সুদ খাবে না বহুগুণ বৃদ্ধি করে। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফল হও। আর তোমরা আগুনকে ভয় কর, যা কাফিরদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।’ [. আলে ইমরান : ১৩০-১৩২]
সুদ খেলে মানুষ লালত ও অভিশাপের ভাগী হয়। দূরে চলে যায় আল্লাহর রহমত থেকে। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘সুদদাতা, গ্রহীতা, সুদ-চুক্তির লেখক ও সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ দিয়েছেন।’ তিনি বলেছেন, ‘তারা সবাই সমান অপরাধী।’ [. মুসলিম : ১৫৯৭]
সুদখোরকে মৃত্যুর পর রক্তের নদীতে সাঁতরানোর শাস্তি দেয়া হবে। সে সাঁতরাবে আর তাকে পাথর ছুড়ে নদীর মাঝখানে পৌঁছে দেয়া হবে। সামুরা রা. থেকে বর্ণিত দীর্ঘ হাদিসের শেষে বলা হয়েছে ‘আমি যাকে নদীর মাঝে দেখেছি সে হলো সুদখোর। [. বুখারি : ২০৮৫]
সুদ মানুষকে মারাত্মকভাবে ধ্বংসকারী বিষয়গুলোর অন্যতম। আবু হোরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- ‘ধ্বংসকারী সাতটি জিনিস থেকে বেঁচে থাক। সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, সেগুলো কী কী? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, শিরক করা, যাদু করা, অনুমোদিত কারণ ছাড়া কাউকে হত্যা করা, সুদ খাওয়া, এতিমের মাল ভক্ষণ করা, জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা এবং মুমিনা সরলা সতী নারীকে ব্যভিচারের অপবাদ দেয়া। [. বুখারি : ২৬১৫, মুসলিম : ৮৯]
সুদ খাওয়া শাস্তি ও ধ্বংসের কারণ হয়। ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- ‘যখন এলাকায় সুদ ও ব্যভিচার প্রকাশ পাবে তখন বুঝতে হবে তারা নিজেদের ওপর আল্লাহর শাস্তি হালাল করে নিয়েছে।’ [. মুসতাদরাকে হাকেম : ২/৩৭]
নিকৃষ্টতম কাজের মধ্যে তিয়াত্তরটি স্তর রয়েছে এই সুদের। যেমন-আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- ‘সুদের তিয়াত্তরটি স্তর রয়েছে। সর্বনিম্নটি হলো নিজের মায়ের সঙ্গে জেনা করার মতো। আর অপর ভাইয়ের সম্মান নষ্ট করা সবচে’ নিকৃষ্ট সুদ। [. মুস্তাদরাকে হাকেম : ২/৩৭]
সুদ খাওয়ার অর্থ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিরুদ্ধাচারণ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- ‘অতএব যারা তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করে তারা যেন তাদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসা অথবা যন্ত্রণাদায়ক আযাব পৌঁছার ভয় করে।’ [. নূর : ৬৩] ‘আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক আযাব।’ [. নিসা : ১৪] আল্লাহ তাআলা আরও বলেন- ‘আর আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূল কোন নির্দেশ দিলে কোন মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার করার অধিকার থাকে না; আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে। [. আহযাব : ৩৬] আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাতে তারা চিরস্থায়ী হবে।’ [. জিন : ২৩]
সুদখোরকে জাহান্নামের ভয় দেখানো হয়েছে যদি সে তওবা না করে। আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘অথচ আল্লাহ বেচা-কেনা হালাল করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতএব, যার কাছে তার রবের পক্ষ থেকে উপদেশ আসার পর সে বিরত হল, যা গত হয়েছে তা তার জন্যই ইচ্ছাধীন। আর তার ব্যাপারটি আল্লাহর হাওলায়। আর যারা ফিরে গেল, তারা আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে।’ [. বাকারা : ২৭৫]
আল্লাহ তাআলা সুদের অর্থ দিয়ে সদকা করলে সেটা গ্রহণ করেন না। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- ‘আল্লাহ তাআলা পবিত্র তিনি শুধু পবিত্র মালই গ্রহণ করেন।’ [. মুসলিম : ১০১৪]
সুদখোরের দুআ কবুল হয় না। আবু হোরায়রা রা. বর্ণিত হাদিসে আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওই ব্যক্তির কথা বলেন, যে প্রায়শই দীর্ঘ ভ্রমণে থাকে। তার কেশ এলোমেলো আর বেশ আলুথালু। আকাশ পানে হাত প্রসারিত করে সে বলে, হে রব, হে রব, অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং ভরণপোষণও হারাম তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, এর দুআ কীভাবে কবুল হবে? (তার দুআ কবুল করা হয় না।)
সুদ খেলে অন্তর কঠোর হয় এবং তাতে মরচে পড়ে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘কখনো নয়, বরং তারা যা অর্জন করত তা-ই তাদের অন্তরসমুহকে ঢেকে দিয়েছে।’ [. মুতাফ্ফিফিন : ১৪] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- ‘তোমরা জেনে নাও নিশ্চয় দেহের মধ্যে একটি মাংসপিন্ড আছে যদি তা ঠিক তাহলে সারা দেহ সুস্থ, যখন তা অসুস্থ হয় সারা দেহ অসুস্থ হয়ে পড়ে। [. বুখারি : ৫২, মুসলিম : ১৫৯৯]
সুদ খাওয়া হালাল রিজিক থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ হয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- ‘সুতরাং ইয়াহূদীদের যুলমের কারণে আমি তাদের উপর উত্তম খাবারগুলো হারাম করেছিলাম, যা তাদের জন্য হালাল করা হয়েছিল এবং আল্লাহর রাস্তা থেকে অনেককে তাদের বাধা প্রদানের কারণে। আর তাদের সুদ গ্রহণের কারণে, অথচ তা থেকে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল।’ [. নিসা : ১৬০-১৬১]
সুদ খাওয়া জুলুম বা অন্যায় আর সকল জুলুম কিয়ামতের দিন ঘোর তমসা ডেকে আনবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- ‘আর যালিমরা যা করছে, আল্লাহকে তুমি সে বিষয়ে মোটেই গাফেল মনে করো না, আল্লাহ তো তাদের অবকাশ দিচ্ছেন, ঐ দিন পর্যন্ত যে দিন চোখ পলকহীন তাকিয়ে থাকবে। তারা মাথা তুলে দৌড়াতে থাকবে, তাদের দৃষ্টি নিজদের দিকে ফিরবে না এবং তাদের অন্তর হবে শূন্য।’ [. ইবরাহিম : ৪২-৪৩]
সুদখোর কল্যাণ আহরণের যাবতীয় উপলক্ষ্য থেকে বঞ্চিত হয়। তাই সে উত্তম ঋণ দেয় না, অভাবীর প্রতি লক্ষ্য করে না এবং দুর্দশাগ্রস্থ ব্যক্তির কষ্ট দূর করে না। কারণ তার পক্ষে বোধগম্য স্বার্থ ছাড়া অর্থ নিয়োগ কঠিন হয়ে পড়ে। অথচ আল্লাহ তাআলা যে ব্যক্তি তার মুমিন ভাইকে সাহায্য করে এবং তার বিপদ দূর করে তার ফজিলত বলে দিয়েছেন। হাদিসগ্রন্থগুলোয় এসেছে-
আবু হোরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি দুনিয়ায় তার মুমিন ভাইয়ের বিপদ দূর করবে আল্লাহ তাআলা তার বিপদ দূর করবেন দুনিয়া ও আখিরাতে। যে ব্যক্তি কোনো অভাবীকে ছাড় দিবে আল্লাহ তাআলা তাকে দুনিয়া-আখিরাতে ছাড় দিবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ গোপন করবে আল্লাহ তাআলা উভয় জগতে তার দোষ গোপন করবেন। আর বান্দা যতক্ষণ তার ভাইয়ের সহযোগিতায় থাকে আল্লাহ ততক্ষণ তার সাহায্যে থাকেন। [. মুসলিম : ২৬৯৯]
আব্দুল্লাহ বিন উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- মুসলমান মুসলমানের ভাই- তার ওপর জুলুম করে না; তাকে একাকী ছেড়েও দেয় না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের কষ্ট লাঘব করবে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার কষ্ট লাঘব করবেন। আর যে তার মুসলিম ভাইয়ের দোষ গোপন রাখবে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার দোষ গোপন রাখবেন। [. বুখারি : ২৪৪২, মুসলিম : ২৫৮০]
তেমনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত যে, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি অভাবী লোককে সুযোগ দিবে অথবা তার প্রাপ্য মাফ করে দিবে আল্লাহ তাআলা তাকে নিজ ছায়াতলে স্থান দিবেন। [. মুসলিম : ৩০০৬]
সুদ মানুষের সৌহার্দ্য-সহানুভূতির চেতনাকে গলা টিপে হত্যা করে। কারণ ঋণী ব্যক্তির সকল সম্পদ হাতছাড়া হতে দেখেও সুদখোরের অন্তরে মায়া জাগে না। এ জন্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- ‘দয়া-মায়া তার অন্তর থেকেই ছিনিয়ে নেয়া হয় যে হতভাগার দলে যোগ দিয়েছে।’ [. আবু দাউদ : ৪৯৪২, তিনমিযি : ১৯২৩] তিনি আরও বলেন, ‘আল্লাহ তার ওপর দয়া দেখান না যে মানুষকে দয়া করে না।’ [. বুখারি : ৭৩৭৬, মুসলিম : ২৩১৯] অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘দয়াকারীদের ওপর দয়াবান-রহমান দয়া করেন। তোমরা জমিনবাসীদের ওপর দয়া করো; আসমানবাসী তোমাদের ওপর দয়া করবেন। [. আবু দাউদ : ১৯৪১, তিরমিযি : ৯২৪]
সুদ ব্যক্তি এবং দলের মাঝে হিংসা ও শত্রুতা সৃষ্টি করে। অনৈক্য এবং বিশৃংখলা উস্কে দেয়। [. তাওযিহুল আহকাম ফি বুলুগিল মারাম : ৪/০৭]
সুদ মানুষকে এমন সব কাজে উদ্বৃদ্ধ করে যার ফলাফল তার সহ্য ক্ষমতার বাইরে।
এ ছাড়াও সুদের অনেক ক্ষতি রয়েছে যা গণনা করে শেষ করা যাবে না। তবে আমাদের জন্য এতটুকু মনে রাখাই যথেষ্ট যে, আল্লাহ তাআলা সেটাই হারাম করেন যার মাঝে শুধু অনিষ্ট ও অকল্যাণই রয়েছে। যার লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি। পরিশেষে আমি নিজের এবং সকল মুসলমানের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রত্যাশা করছি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/203/33
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।