HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আমরা কি উদযাপন করব

লেখকঃ মদীনাস্থ সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধকারী সরকারী সংস্থার অফিস থেকে প্রকাশিত

জন্মদিন পালনে ইসলামের বিধান
এতক্ষণ যে আলোচনা হলো তার মাধ্যমে এটাই জোর পেল যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও উত্তম যুগের মানুষদের আদর্শ অনুসরণ করার মধ্যেই যাবতীয় কল্যাণ। যে ব্যক্তি আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য এমন ইবাদত করে যার প্রচলন ঐ বরকতময় যুগে ছিল না তার ইবাদত প্রত্যাখ্যাত হয়ে তার দিকেই ফিরে আসবে এবং ঐ কাজের গুনাহ-পাপ সব তাকেই বহন করতে হবে যদিও সে এটি নিষ্ঠার সাথে করে এবং এতে সবচেয়ে বেশি শ্রম ও শক্তি ব্যয় করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিন উদযাপনে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো কি লক্ষ্য করেছেন:-

১. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তার সত্যপথগামী খলীফাগণ এবং অন্যান্য কোনো সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম, উত্তম যুগে ইহসানের সাথে তাদেরকে অনুসরণকারী (তাবে‘ঈ)দের কেউ এটি পালন করতেন না। অথচ পরবর্তীদের থেকে তারা সুন্নত সম্পর্কে বেশি জানেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি তাদের ভালোবাসা পরিপূর্ণ এবং তাঁর শরীয়ত অনুসরণ সম্পূর্ণরূপে তারাই করেন। যদি এটি ভালোই হত তাহলে তারাই তো আমাদের আগে করতেন।

২. আপনি নিশ্চয় জেনেছেন যে, হিজরীর চতুর্থ শতকে সর্বপ্রথম এর উপর আমল করেছে দুরাচার ফাতেমী সম্প্রদায়।

৩. এটির মাধ্যমে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য হয়ে যায় কেননা তারা মসীহ ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মদিন উদযাপন করে। অথচ তাদের সদৃশ হতে এবং বিভিন্ন উৎসবে তাদের অনুসরণ করতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে।

৪. মিলাদুন্নবীর মত এ রকম অন্যান্য জন্মদিন পালন করার অর্থ হচ্ছে, এটা মনে করা যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা এই উম্মতের জন্য দ্বীনকে পরিপূর্ণ করেন নি, রাসূলুল্লাহ আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম উম্মতের যা করা উচিত তা সম্পূর্ণ পৌঁছিয়ে দেন নি আর উত্তম যুগের মানুষেরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যথাযথ সম্মান, মহব্বত ও মর্যাদা দেন নি যেরূপ দিয়েছে পরবর্তী যুগের মানুষেরা। আর এই ধরণের কথা দুরাচার দ্বীনভ্রষ্ট ছাড়া কেউ বলতে পারে না। অথচ রাসূলুল্লাহ আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম বলেন,

«مَا بَعَثَ اللَّهُ مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا كَانَ حَقًّا عَلَيْهِ أَنْ يَدُلَّ أُمَّتَهُ عَلَى خَيْرِ مَا يَعْلَمُهُ لَهُمْ»

“আল্লাহ যে নবীকেই প্রেরণ করেছেন তার উপরই আবশ্যক হয়ে গেছে যে, সে তার উম্মতের ভালোর জন্য যা জানে তা সে তাদেরকে জানিয়ে দিবে।” [সহীহ মুসলিম]

আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন নবীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বশেষ ও সবচেয়ে উত্তম অবহিতকারী ও কল্যাণকামী। যদি মিলাদুন্নবী পালন করা দ্বীনের অংশই হত তবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা বর্ণনা করতেন অথবা নিজের জীবনে করতেন অথবা তার সাহাবীরা (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) অন্তত তা করত।

কোনো ব্যক্তি এটা বলতে পারবে না যে, রাসূল আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম সেটা বিনয়ের কারণে করেন নি কেননা তা (বলা) রাসূল আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামের অবমাননার শামিল।

কেননা এর দ্বারা প্রতীয়মান হয়, উম্মতের কল্যাণ রয়েছে এমন বিষয় তিনি গোপন রেখেছেন অথবা খাটো করে দেখেছেন; বস্তুত তিনি এর থেকে মুক্ত, তার জন্য আমার মাতা-পিতা উৎসর্গ হোন। আর এর দ্বারা সাহাবীগণ- যাদেরকে তাদের রব আল্লাহ নিজেই পরিশুদ্ধ করেছেন- তাদেরকেও অবমাননা করা হয়, যে তারা এই উৎসব উদযাপন করতে কার্পণ্য করেছেন এবং তারা এটি উপলব্ধি করতে পারেন নি; (এ জাতীয় কথা কখনো বলা যাবে না, কারণ) তারা কতই না উত্তম ব্যক্তি এবং সম্মানিত অনুসারী। হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান —রাদিয়াল্লাহু আনহু— “যে সব ইবাদত আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীরা করেন নি সেগুলো তোমরা করো না; কেননা পূর্ববর্তীরা পরবর্তীদের জন্য বলার কোনো কিছু বাদ দেন নি। আর আল্লাহকে ভয় কর হে পড়ুয়ারা! তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের পথই অনুসরণ কর।”

৫. এই রাতকে সঞ্জীবিত রাখলেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি মহব্বত প্রমাণিত হয় না। আপনি তো কত মানুষকেই দেখবেন আর শুনবেন যারা এই উৎসবগুলো সঞ্জীবিত করে অথচ নিজেরা মুস্তাফা আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামের আদর্শ থেকে বহু দূরে; আর এদের অধিকাংশই হলো ঐ সব পাপী ব্যক্তি যারা সুদ খায়, নামাযের ব্যাপারে অবহেলা করে, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য উভয় প্রকার সুন্নত ছেড়ে দেয় এবং পাপ ও গুনাহের কাজ, অশ্লীল ও ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হয়।

বরঞ্চ আমাদের নেতা প্রিয় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি প্রকৃত মহব্বতের প্রমাণ হলো যে রকম আমাদের প্রভু তাবারাকা ওয়া তা‘আলা বলেছেন,

﴿ قُلۡ إِن كُنتُمۡ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِي يُحۡبِبۡكُمُ ٱللَّهُ ... [ ال عمران : ٣١ ]

“বলুন, ‘তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাস তবে আমাকে অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন...” [আলে ইমরান: ৩১]

রাসূলুল্লাহ আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম বলেছেন,

«كُلُّ أُمَّتِي يَدْخُلُونَ الجَنَّةَ إِلَّا مَنْ أَبَى»، قَالُوا : يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَمَنْ يَأْبَى؟ قَالَ : «مَنْ أَطَاعَنِي دَخَلَ الجَنَّةَ وَمَنْ عَصَانِي فَقَدْ أَبَى»

“আমার উম্মতের অমান্যকারী বাদে সবাই জান্নাতে প্রবেশ করবে।” সাহাবীরা বলল, কে অমান্য করে? তিনি বললেন, “যে আমার (সুন্নতের) আনুগত্য করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে আর যে আমার অবাধ্যতা করবে সেই তো অমান্য করল।” [সহীহ বুখারী]

সুতরাং, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনুসরণ, তার গোপন-প্রকাশ্য আদর্শকে নিজের মধ্যে ধারণ, তার পথনির্দেশ অনুকরণ, কথা-কাজে ও স্বভাব-চরিত্রে তাকে দৃষ্টান্তরূপে গ্রহণ করার মাধ্যমেই প্রকৃত মহব্বত করা সম্ভব। আর বলা হয়ে থাকে:

তার প্রতি যদি হত তোমার ভালোবাসা সত্যি তবে আনুগত্যই করতে

কেননা প্রেমিক যা ভালবাসে তার প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে

৬. এগুলোর পাশাপাশি পরবর্তী যুগের অনেক আলেমই এই ধরণের মিলাদ অনুষ্ঠানে সংঘটিত হয় এমন বহু অনিষ্ট ও ভয়ানক ইসলামবিরোধী কাজ হয়ে থাকে বলেছেন। আর স্বীকারও করেছে আধুনিক যুগের কোনো কোনো ব্যক্তি যারা এগুলোতে অংশগ্রহণ করেছিল এবং উপস্থিত হয়েছিল কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা পরবর্তীতে তাদেরকে এ থেকে বিরত থাকার তৌফিক দিয়েছেন। (বেশ কিছু অডিও এর সাক্ষী) এ সব ইসলাম বিরোধী কাজের মধ্যে অন্যতম হলো, রাসূলুল্লাহর ব্যাপারে কিছু শির্কী কথাবার্তা বলা, বাড়াবাড়ি করা, এমন কিছু হারাম কবিতা বানানো যার মাধ্যমে তার কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা চাওয়া হয় আর এটা ভাবা যে তিনি গায়েব জানেন যেমনটি বুসীরির কবিতায় নিম্নোক্ত পরিদৃষ্ট হয়,

হে সেরা সৃষ্টি! সর্বব্যাপী দুর্ঘটনা যখন ছড়িয়ে পড়বে তখন আপনার কাছে ছাড়া আর কার কাছে সাহায্য চাইব,

কারণ, আপনার কাছেই দুনিয়ার মহত্ত্ব ও লোকসান আর আপনারই রয়েছে লাওহে মাহফুয ও কলমের জ্ঞান।

তাছাড়া এসব অনুষ্ঠানে নারী-পুরুষের মিশ্রণ ঘটে, গান ও বাদ্যযন্ত্র ব্যবহৃত হয়, মদ খাওয়া হয়, যুবকদের দিকে তাকানো হয়, ওলীদের নিয়ে বাড়াবাড়ি হয় এবং আরও অনেক খারাপ কাজ করা হয় যা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ার কারণে সীমাবদ্ধ করা কঠিন; এমনকি অনেকে এই রাত্রিকে কদরের রাত্রির চেয়ে বেশি মর্যাদা দেয় এবং এ রাতে কদরের রাতের থেকেও বেশি শ্রম ব্যয় করে। অবস্থা এমনও পৌঁছায় যে, তাদের কেউ মীলাদুন্নবীর অনুষ্ঠান ত্যাগকারীকে কাফের বলে আখ্যায়িত করে। (নাউযুবিল্লাহ)

৭. যে দিনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মগ্রহণ করেছেন ঐদিনেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন আর তা হলো ১২ই রবিউল আউয়াল যেরূপ রাসূলের জীবনীগ্রন্থে প্রমাণ পাওয়া যায়। সুতরাং, এ দিনে আনন্দিত হওয়া দুঃখ পাওয়ার চেয়ে উত্তম নয়। যদি দ্বীন ‘রায়’ তথা মতের উপর প্রতিষ্ঠিত হত তাহলে এই দিনকে ঈদ ও অনুষ্ঠানের দিন হিসেবে নেওয়ার চেয়ে শোক ও মাতম দিবস হিসেবে নেওয়াই উত্তম হত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন