HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নববর্ষ উদযাপন করার বিধান

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমদ

নববর্ষ ও আমাদের সতর্কতা:
আমরা বছরের অন্যান্য দিনের ন্যায় নববর্ষের দিনকে গণ্য করব। এতে কোন ধরণের অনুষ্ঠান করব না ও তাতে অংশ নেব না। আমাদের সন্তানদের প্রতি গভীর দৃষ্টি রাখব, যেন তারা বিজাতীয় উৎসবে অংশ গ্রহণ না করে। ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالْأَمِيرُ رَاعٍ، وَالرَّجُلُ رَاعٍ عَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ، وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ عَلَى بَيْتِ زَوْجِهَا وَوَلَدِهِ، فَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ» .

“তোমরা সবাই জিম্মাদার এবং তোমাদের সবাইকে তার জিম্মাদারি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। আমির জিম্মাদার, অনুরূপ ব্যক্তি তার পরিবারে জিম্মাদার। নারী তার স্বামীর ঘর ও সন্তানের জিম্মাদার। অতএব তোমরা সবাই জিম্মাদার এবং সবাইকে তার জিম্মাদারি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে”। [বুখারি: (৪৮২৬), মুসলিম: (৩৪১৪)] অতএব যার অধীনে যারা রয়েছে তাদের দেখা-শুনা করা, দীন ও দুনিয়ার কল্যাণের পথ বাতলানো এবং তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করা তার দায়িত্ব। যে নিজ দায়িত্ব আঞ্জাম দিবে, তার জন্য রয়েছে বড় প্রতিদান, আর যে নিজ দায়িত্বে অবহেলা করবে, কিয়ামতের দিন তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।

নববর্ষ কিংবা এ জাতীয় উৎসবে আমরা মুসলিম অমুসলিম কারো সাথে উপহার আদান-প্রদান করব না, বিশেষ করে ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মদিন ও ইংরেজি নববর্ষে। আমরা এতে ছুটি কাটাব না, না স্কুল-কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করব। এ দিনের সংস্কৃতি হিসেবে কারো যোগাযোগ করব না।

প্রিয় পাঠক, সন্তান কিংবা পরিবারের কোন সদস্যের আবদার রক্ষার্থে আল্লাহর নির্দেশ উপেক্ষা করে তাদের উৎসব উদযাপন করা যাবে না। ইমাম যাহাবি রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “যদি কেউ বলে: আমরা এগুলো ছোট বাচ্চা ও নারীদের জন্য করি, তাকে বলা হবে: সবচেয়ে হতভাগা সে ব্যক্তি যে আল্লাহর গোস্বার বস্তু দ্বারা পরিবার ও সন্তানকে সন্তুষ্ট করে। অতঃপর তিনি বলেন: আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

«مَنْ تَنَافَى أَرْضَ الأَعَاجِمِ فَصَنَعَ نَيْرُوزَهُمْ وَمَهْرِجَانِهِمْ حُشِرَ مَعَهُمْ»

“যে অনারব দেশ বিচরণ করে, অতঃপর তাদের নওরোজ ও মেহেরজান উৎযান করে, তাদের সাথে তাকে উঠানো হবে”। [ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহুর বাণী নকল করেছেন বায়হাকি রহ., ইব্‌ন তাইমিয়াহ রহ. তার সনদকে সহি বলেছেন।] তার এ কথার দাবি এসব কর্ম কবিরা গুনা এবং এ জাতীয় অল্প অপরাধ অধিক অপরাধের দিকে ধাবিত করে। তাই মুসলিমের কর্তব্য এ জাতীয় কর্মের পথ একেবারে বন্ধ করা এবং পরিবার ও সন্তানের অন্তরে তার প্রতি ঘৃণার সৃষ্টি করা। বিদআত থেকে বিরত থাকা ইবাদত। কেউ বলবেন না: এর দ্বারা বাচ্চাদের আনন্দ দেই! আপনি কি বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য আল্লাহর গোস্বা ও শয়তানের সন্তুষ্টির বস্তু ব্যতীত কিছু পেলেন না! এগুলো কুফরির আলামত ও সীমালঙ্ঘন বৈ কিছু নয়?! আপনি খারাপ অভিভাবক, বস্তুত আপনি গড়ে উঠেছেন এভাবে”। [দেখুন: হাফেজ জাহাবি রহ. কর্তৃক রেসালাহ: تشبه الخسيس بأهل الخميس ]



মুসলিম ভাই, আসুন কাফেরদের অনুসরণ ত্যাগ করে আমরা পূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশ করি। আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিচ্ছেন:

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱدۡخُلُواْ فِي ٱلسِّلۡمِ كَآفَّةٗ وَلَا تَتَّبِعُواْ خُطُوَٰتِ ٱلشَّيۡطَٰنِۚ إِنَّهُۥ لَكُمۡ عَدُوّٞ مُّبِينٞ ٢٠٨﴾ [ البقرة : ٢٠٨ ]

“হে মুমিনগণ, তোমরা ইসলামে পূর্ণরূপে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের জন্য স্পষ্ট শত্রু”। [সূরা বাকারা: (২০৮)]

অভিধানে ইসলাম শব্দের অর্থ দু’টি: (ক). আত্মসমর্পণ করা ও আনুগত্য স্বীকার করা। (খ). আল্লাহর জন্য ইবাদত একনিষ্ঠ করা। প্রথম অর্থের সমর্থনে আল্লাহ তাআলার বাণী:

﴿أَفَغَيۡرَ دِينِ ٱللَّهِ يَبۡغُونَ وَلَهُۥٓ أَسۡلَمَ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ طَوۡعٗا وَكَرۡهٗا وَإِلَيۡهِ يُرۡجَعُونَ ٨٣﴾ [ ال عمران : ٨٣ ]

“তারা কি আল্লাহর দীনের পরিবর্তে অন্য কিছু তালাশ করছে? অথচ আসমানসমূহ ও যমীনে যা আছে তা তারই আনুগত্য করে ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় এবং তাদেরকে তারই নিকট প্রত্যাবর্তন করা হবে”। [সূরা আলে-ইমরান: (৮৩)] আরো ইরশাদ হচ্ছে:

﴿فَلَمَّآ أَسۡلَمَا وَتَلَّهُۥ لِلۡجَبِينِ ١٠٣﴾ [ الصافات : ١٠٣ ]

“অতঃপর তারা উভয়ে যখন আত্মসমর্পণ করল এবং সে তাকে কাত করে শুইয়ে দিল”। [সূরা সাফফাত: (১০৩)] এ দুই আয়াতে ইসলাম অর্থ আত্মসমর্পণ ও আনুগত্য করা।

দ্বিতীয় অর্থ সমর্থনে আল্লাহ তাআলার বাণী:

﴿وَمَن يُسۡلِمۡ وَجۡهَهُۥٓ إِلَى ٱللَّهِ وَهُوَ مُحۡسِنٞ فَقَدِ ٱسۡتَمۡسَكَ بِٱلۡعُرۡوَةِ ٱلۡوُثۡقَىٰۗ وَإِلَى ٱللَّهِ عَٰقِبَةُ ٱلۡأُمُورِ ٢٢﴾ [ لقمان : ٢٢ ]

“আর যে ব্যক্তি একনিষ্ঠ ও বিশুদ্ধচিত্তে আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করে, সে তো শক্ত রশি আঁকড়ে ধরে। আর সকল বিষয়ের পরিণাম আল্লাহরই কাছে”। [সূরা লুকমান: (২২)] আরো ইরশাদ হচ্ছে:

﴿وَمَن يَرۡغَبُ عَن مِّلَّةِ إِبۡرَٰهِ‍ۧمَ إِلَّا مَن سَفِهَ نَفۡسَهُۥۚ وَلَقَدِ ٱصۡطَفَيۡنَٰهُ فِي ٱلدُّنۡيَاۖ وَإِنَّهُۥ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ لَمِنَ ٱلصَّٰلِحِينَ ١٣٠ إِذۡ قَالَ لَهُۥ رَبُّهُۥٓ أَسۡلِمۡۖ قَالَ أَسۡلَمۡتُ لِرَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ١٣١﴾ [ البقرة : ١٣٠، ١٣١ ]

“আর যে নিজেকে নির্বোধ বানিয়েছে, সে ছাড়া কে ইবরাহিমের আদর্শ থেকে বিমুখ হতে পারে? আর অবশ্যই আমি তাকে দুনিয়াতে বেছে নিয়েছি এবং নিশ্চয় সে আখিরাতে নেককারদের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। যখন তার রব তাকে বললেন: ‘তুমি আত্মসমর্পণ কর’। সে বলল, ‘আমি সকল সৃষ্টির রবের কাছে নিজেকে সমর্পণ করলাম’। [সূরা বাকারা: (১৩০-১৩১)] এ দুই আয়াতে ইসলামের অর্থ শিরক মুক্ত হয়ে আল্লাহর জন্য সকল প্রকার ইবাদত উৎসর্গ করা। তাই মুসলিম হতে হলে আমাদের দু’টি কাজ করতে হবে: এক. আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করা। দুই. সকল প্রকার ইবাদত একনিষ্ঠভাবে তাকে উৎসর্গ করা। মাখলুকের নিকট প্রেরিত আল্লাহর সকল রেসালাতের শিক্ষা এটাই ছিল। এ ইসলাম আল্লাহর একমাত্র দীন। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿إِنَّ ٱلدِّينَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلۡإِسۡلَٰمُۗ ١٩﴾ [ ال عمران : ١٩ ]

“নিশ্চয় আল্লাহর নিকট দীন হচ্ছে ইসলাম”। [সূরা আলে-ইমরান: (১৯)] নুহ আলাইহিস সালাম তার কওমকে বলছেন:

﴿فَإِن تَوَلَّيۡتُمۡ فَمَا سَأَلۡتُكُم مِّنۡ أَجۡرٍۖ إِنۡ أَجۡرِيَ إِلَّا عَلَى ٱللَّهِۖ وَأُمِرۡتُ أَنۡ أَكُونَ مِنَ ٱلۡمُسۡلِمِينَ ٧٢﴾ [ يونس : ٧٢ ]

“অতঃপর তোমরা যদি বিমুখ হও, তবে আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো কেবল আল্লাহর দায়িত্বে। আর আমি আদিষ্ট হয়েছি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার”। [সূরা ইউনুস: (৭২)] ইবরাহিম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে ইরশাদ হচ্ছে:

﴿مَا كَانَ إِبۡرَٰهِيمُ يَهُودِيّٗا وَلَا نَصۡرَانِيّٗا وَلَٰكِن كَانَ حَنِيفٗا مُّسۡلِمٗا وَمَا كَانَ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ ٦٧﴾ [ ال عمران : ٦٧ ]

“ইবরাহিম ইহুদি ছিল না, নাসারাও ছিল না, বরং সে ছিল একনিষ্ঠ মুসলিম। আর সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না”। [সূরা আলে-ইমরান: (৬৭)] কাবা নির্মাণের সময় ইবরাহিম ও ইসমাঈল নিজেদের ও সন্তানের জন্য মুসলিম হওয়ার দোয়া করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿رَبَّنَا وَٱجۡعَلۡنَا مُسۡلِمَيۡنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَآ أُمَّةٗ مُّسۡلِمَةٗ لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبۡ عَلَيۡنَآۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِيمُ ١٢٨﴾ [ البقرة : ١٢٨ ]

“হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরের মধ্য থেকে আপনার অনুগত জাতি বানান। আর আমাদেরকে আমাদের ইবাদতের বিধি-বিধান দেখিয়ে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”। [সূরা বাকারা: (১২৮)] ইয়াকুব আলাইহিস সালামের মৃত্যুর সময় তার সন্তানেরা তাকে মুসলিম হিসেবে বেচে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿أَمۡ كُنتُمۡ شُهَدَآءَ إِذۡ حَضَرَ يَعۡقُوبَ ٱلۡمَوۡتُ إِذۡ قَالَ لِبَنِيهِ مَا تَعۡبُدُونَ مِنۢ بَعۡدِيۖ قَالُواْ نَعۡبُدُ إِلَٰهَكَ وَإِلَٰهَ ءَابَآئِكَ إِبۡرَٰهِ‍ۧمَ وَإِسۡمَٰعِيلَ وَإِسۡحَٰقَ إِلَٰهٗا وَٰحِدٗا وَنَحۡنُ لَهُۥ مُسۡلِمُونَ ١٣٣﴾ [ البقرة : ١٣٣ ]

“নাকি তোমরা সাক্ষী ছিলে, যখন ইয়াকূবের নিকট মৃত্যু উপস্থিত হয়েছিল? যখন সে তার সন্তানদেরকে বলল, ‘আমার পর তোমরা কার ইবাদত করবে? তারা বলল, ‘আমরা ইবাদত করব আপনার ইলাহের, আপনার পিতৃপুরুষ ইবরাহিম, ইসমাঈল ও ইসহাকের ইলাহের, যিনি এক ইলাহ। আর আমরা তারই অনুগত”। [সূরা বাকারা: (১৩৩)] মুসা আলাইহিস সালাম মুসলিম হওয়ার শর্তে তার কওমকে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করতে বলেছেন। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿وَقَالَ مُوسَىٰ يَٰقَوۡمِ إِن كُنتُمۡ ءَامَنتُم بِٱللَّهِ فَعَلَيۡهِ تَوَكَّلُوٓاْ إِن كُنتُم مُّسۡلِمِينَ ٨٤﴾ [ يونس : ٨٤ ]

“আর মুসা বলল, ‘হে আমার কওম, তোমরা যদি আল্লাহর প্রতি ঈমান এনে থাক, তবে তারই উপর তাওয়াক্কুল কর, যদি তোমরা মুসলিম হয়ে থাক”। [সূরা ইউনুস: (৮৪)] ইউসুফ আলাইহিস সালাম মুসলিম হিসেবে মৃত্যু বরণের জন্য আল্লাহ নিকট দোয়া করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿رَبِّ قَدۡ ءَاتَيۡتَنِي مِنَ ٱلۡمُلۡكِ وَعَلَّمۡتَنِي مِن تَأۡوِيلِ ٱلۡأَحَادِيثِۚ فَاطِرَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ أَنتَ وَلِيِّۦ فِي ٱلدُّنۡيَا وَٱلۡأٓخِرَةِۖ تَوَفَّنِي مُسۡلِمٗا وَأَلۡحِقۡنِي بِٱلصَّٰلِحِينَ ١٠١﴾ [ يوسف : ١٠٠ ]

“হে আমার রব, আপনি আমাকে রাজত্ব দান করেছেন এবং স্বপ্নের কিছু ব্যাখ্যা শিখিয়েছেন। হে আসমানসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা, দুনিয়া ও আখিরাতে আপনিই আমার অভিভাবক, আমাকে মুসলিম অবস্থায় মৃত্যু দিন এবং নেককারদের সাথে আমাকে যুক্ত করুন”। [সূরা ইউসুফ: (১০১)] ঈসা আলাইহিস সালামের সাথীগণ নিজেদের ইসলামের উপর ঈসা আলাইহিস সালামকে সাক্ষী বানিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿فَلَمَّآ أَحَسَّ عِيسَىٰ مِنۡهُمُ ٱلۡكُفۡرَ قَالَ مَنۡ أَنصَارِيٓ إِلَى ٱللَّهِۖ قَالَ ٱلۡحَوَارِيُّونَ نَحۡنُ أَنصَارُ ٱللَّهِ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَٱشۡهَدۡ بِأَنَّا مُسۡلِمُونَ ٥٢﴾ [ ال عمران : ٥٢ ]

“অতঃপর যখন ঈসা তাদের পক্ষ হতে কুফরি উপলব্ধি করল, তখন বলল: ‘কে আল্লাহর জন্য আমার সাহায্যকারী হবে’? হাওয়ারীগণ বলল, ‘আমরা আল্লাহর সাহায্যকারী। আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি। আর তুমি সাক্ষী থাক যে, নিশ্চয় আমরা মুসলিম”। [সূরা আলে-ইমরান: (৫২)]

আমরা দেখছি সকল নবী ও রাসূলগণ ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিলেন এবং তারা স্বীয় কওমকে তার দিকে আহ্বান করতেন, যার অর্থ আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ কর এবং সকল ইবাদত একনিষ্ঠভাবে তাকে উৎসর্গ কর। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর নাযিলকৃত দীনের নাম হয় ইসলাম এবং তার অনুসারীদের নাম হয় মুসলিম। তাদের এ নামকরণ করেছেন ইবরাহিম আলাইহিস সালাম। আল্লাহ তাআলা বলেন:

﴿وَجَٰهِدُواْ فِي ٱللَّهِ حَقَّ جِهَادِهِۦۚ هُوَ ٱجۡتَبَىٰكُمۡ وَمَا جَعَلَ عَلَيۡكُمۡ فِي ٱلدِّينِ مِنۡ حَرَجٖۚ مِّلَّةَ أَبِيكُمۡ إِبۡرَٰهِيمَۚ هُوَ سَمَّىٰكُمُ ٱلۡمُسۡلِمِينَ مِن قَبۡلُ ٧٨﴾ [ الحج : ٧٨ ]

“আর তোমরা আল্লাহর পথে জিহাদ কর যেভাবে জিহাদ করা উচিৎ। তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করেছেন। দীনের ব্যাপারে তিনি তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। এটা তোমাদের পিতা ইবরাহিমের দীন। তিনিই তোমাদের নাম রেখেছেন ‘মুসলিম’ পূর্বে”। [সূরা হজ: (৭৮)] আল্লাহ তাআলা এ দীন ব্যতীত কোন দীন গ্রহণ করবেন না। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥﴾ [ ال عمران : ٨٥ ]

“আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দীন চায়, তবে তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে”। [সূরা আলে-ইমরান: (৮৫)] আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য ইসলামকে পছন্দ করেছেন এবং আমাদের জন্য আমাদের দীনকে পূর্ণ করে দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿ٱلۡيَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِينَكُمۡ وَأَتۡمَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ نِعۡمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ ٱلۡإِسۡلَٰمَ دِينٗاۚ ٣﴾ [ المائ‍دة : ٣ ]

“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নিআমত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম ইসলামকে”। [সূরা মায়েদাহ: (৩)] আল্লাহ যাকে হিদায়েত দেয়ার ইচ্ছা করেন ইসলামের জন্য তার অন্তর খুলে দেন। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿فَمَن يُرِدِ ٱللَّهُ أَن يَهۡدِيَهُۥ يَشۡرَحۡ صَدۡرَهُۥ لِلۡإِسۡلَٰمِۖ ١٢٥﴾ [ الانعام : ١٢٥ ]

“সুতরাং যাকে আল্লাহ হিদায়াত করতে চান, ইসলামের জন্য তার বুক উন্মুক্ত করে দেন”। [সূরা আনআম: (১২৫)] আল্লাহ তাআলা মুসলিম না হয়ে মৃত্যু বরণ করতে নিষেধ করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِۦ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسۡلِمُونَ ١٠٢﴾ [ ال عمران : ١٠٢ ]

“হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যথাযথ ভয়। আর তোমরা মুসলিম হওয়া ছাড়া মারা যেও না”। [সূরা আলে-ইমরান: (১০২)] আমি মুসলিম, আমার আত্মসমর্পণ আল্লাহর সমীপে, তার সকল বিধান মেনে নিলাম, এ ছাড়া বিধর্মী সকল বিধান, উৎসব ও ইবাদত প্রত্যাখ্যান করলাম। আমার সকল ইবাদত একমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য উৎসর্গ। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿قُلۡ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحۡيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ١٦٢ لَا شَرِيكَ لَهُۥۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرۡتُ وَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلۡمُسۡلِمِينَ ١٦٣﴾ [ الانعام : ١٦٢، ١٦٣ ]

“বল, ‘নিশ্চয় আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু আল্লাহর জন্য, যিনি সকল সৃষ্টির রব। তার কোন শরীক নেই এবং আমাকে এরই নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আর আমি মুসলিমদের মধ্যে প্রথম”। [সূরা আনআম: (১৬২-১৬৩)]

মুসলিম ভাই, পৃথিবীতে দু’প্রকার দীন রয়েছে: (ক). মানব রচিত দীন (খ). আসমানী বা ওহী নির্ভর দীন। (ক). মানব রচিত দীন যেমন হিন্দু, বৌদ্ধ ও অগ্নিপূজক ইত্যাদি। (খ). আসমানী দীন যেমন ইহুদি, খৃস্টান ও ইসলাম। মানব জাতির হিদায়েত ও কল্যাণের জন্য আল্লাহ তাআলা সকল নবী ও রাসূলকে এ দীনসহ প্রেরণ করেছেন। ইহুদি-খৃস্টানদের দীন আজ বিকৃত, রহিত ও মানব রচিত দীনের ন্যায় প্রত্যাখ্যাত। আল্লাহর নিকট তার কোন মূল্য নেই। আল্লাহ আমাদেরকে সর্বোত্তম দীন, সর্বোত্তম কুরআন এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল দান করেছেন। আসুন আমরা দীন ইসলাম ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শকে আঁকড়ে ধরি, পরিপূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশ করি এবং কাফের মুশরিকদের সঙ্গ ত্যাগ করি, তাদের কৃষ্টি-কালচার পরিহার করি। আল্লাহ আমাদেরকে তার নিকট আত্মসমর্পণকারী ও একনিষ্ঠভাবে সকল ইবাদত উৎসর্গকারী হিসেবে কবুল করুন। আমীন।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন