hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বিদআত দর্পণ

লেখকঃ আবদুল হামীদ ফাইযী আল মাদানী

২৮
প্রচলিত কিছু বিদআতের নমুনা
পূর্বে আলােচিত বিদআত সৃষ্টির বিভিন্ন কারণেই মুসলিমদের মাঝে বহু বিদআত ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করেছে, যার কিছু তাে কুফ মহাপাপ এবং কিছু বিদআত আছে যা করলে সাধারণ বিরুদ্ধাচরণের পাপ করা হয়। সেই প্রচলিত কিছু বিদআতের নমুনা সংক্ষেপে পেশ করা উচিত মনে করছি। অবশ্য শুরুতেই খেয়াল রাখা উচিত যে, উল্লেখিত কর্মগুলি শরীয়ত বা বিধেয় কর্ম ভেবে করলে তবেই তা বিদআত বলে গণ্য হবে, নচেৎ তা সাধারণ ভুল অথবা নিষিদ্ধ কর্মরূপে বিবেচিত হবে।

কুরআন বিষয়ক বিদআত

কুরআন প্রসঙ্গে সে সমস্ত বিদআত প্রচলিত আছে, যেমন এমন ঢঙ্গে টেনে পড়া যাতে কুরআনের শব্দবিন্যাস বিনষ্ট হয়ে যায়। তেলাঅত শেষে ‘সাদাকাল্লাহুল আযীম’ পাঠ। মুর্দার উপর, কবরের উপর কুরআন পাঠ। সেহরীর আযানের পরিবর্তে কুরআন পড়ে জাগ্রতকরণ। জুমআর দিনে প্রয়োজনে খুতবার আযানের পূর্বে আর এক আযান দেওয়ার পরিবর্তে কুরআন (সূরা  জুমআহ) পাঠ করে ডাকা হাঁকা।

শবীনা পাঠ, কুলখানী, ফাতেহাখানী, আয়াতের নক্সা বানিয়ে দেওয়ালে লিখা বা বাঁধিয়ে টাঙ্গানো। মুসহাফ নিয়ে কপালে, চোখে বা বুকে ঠেকানো, স্পর্শ করে গায়ে মাখা, চুম্বন করা। খতমের বাঁধা দুআ।

নবী বিষয়ক বিদআত

নবী (সা.)-কে কেন্দ্র করে যে সব বিদআত আকীদায় এসেছে, যেমন এই বিশ্বাস। করা যে, তিনি মানুষ ছিলেন না, তিনি গায়েব জানতেন, তাঁর দেহের ওজন ও ছায়া ছিল না। তাঁর মল-মূত্র পবিত্র ছিল। তিনি আল্লাহর নুর থেকে সৃষ্টি ছিলেন এবং তাঁর নুর থেকে জগৎ সৃষ্টি। তিনি হাযির ও নাযির; তিনি মীলাদ মাহফিলে হাযির হন। তিনি পার্থিব জীবনের ন্যায় জীবিত আছেন। কিছু চাইলে তিনি দিতে পারেন। তাঁর কবর যিয়ারত করলে পাপ ক্ষয় হয় ইত্যাদি।

আওলিয়া বিষয়ক বিদআত

ওলী-আওলিয়া নিয়ে প্রচলিত বিদআত যেমন, তাঁরা পার্থিব জীবনের ন্যায় জীবিত আছেন মনে করা। তাঁরা আহবানকারী ভক্তের আশা পূর্ণ করতে পারেন, রোগ ও বিপদ মুক্ত করতে পারেন, ধন ও সন্তান দান করতে পারেন, তাঁরা অদৃশ্যের (গায়বী) খবর জানেন ইত্যাদি বিশ্বাস করা; যাতে মানুষ মুশরিক হয়ে যায়। কোন ওলীর ত্যক্ত বস্তুর মাধ্যমে তাবারুক (বরকত) গ্রহণ। জীবিত, প্রকৃত অথবা কম্পিত ওলির এঁটো বা ব্যবহৃত কোন জিনিস ব্যবহার করে বর্কত ও কল্যাণের আশা করা ইত্যাদি।

মসজিদ বিষয়ক বিদআত

মসজিদ বিষয়ক বিদআত যেমন; মসজিদ অধিক সৌন্দর্য-খচিত ও রঙচঙে করা। মসজিদে কারো কবর দেওয়া। মসজিদে সাংসারিক ও বৈষয়িক গল্পগুজব করা। কলরব, অট্টহাসি, অবৈধ সমালোচনা করা। মসজিদের দেওয়াল, মিম্বর বা ধূলা স্পর্শ করে গায়ে মেখে বর্কত বা আরোগ্যলাভের আশা করা ইত্যাদি।

আযান বিষয়ক বিদআত

আযানের বিদআত যেমন; জুমআর দ্বিতীয় আযান মিম্বরের গোড়ায় নিমস্বরে দেওয়া। আযানের পর উচ্চরবে দরূদ ও দুআ পাঠ করা। অসীলার দুআয়। ‘অদদারাজাতুর রাফীআহ’ বৃদ্ধি করা। আযানের পর পুনরায় নামাযের জন্য আহবান করা। আশহাদু আন্না মুহাম্মাদ-- শুনে চোখে আঙ্গুল বুলিয়ে তা চুম্বন। করা। আসসালাতু খায়রুম মিনান নাওম’-এর উত্তরে সাদাকতা ওয়া বারারতা’ বলা। কাদক্বা-মাতিস সালাহ’ শুনে ‘আক্বামাহাল্লাহু আদামাহা’ বলা। আযানের শেষে হাত তুলে দুআ পড়া।

নামায বিষয়ক বিদআত

নামায সম্পর্কিত বিদআত যেমন, ফজরের নামাযে কুনুত, কুনুতের পরিবর্তে ‘কুল’ পাঠ। তকবীরে তাহরীমার সময় হাত তুলে কান স্পর্শ করা। এই সময় উপর দিকে মাথা তোলা। বাঁধা-গড়া নিয়ত পড়া। নিয়ত (যে কোন ভাষাতে) মুখে উচ্চারণ করা। সমস্বরে উচ্চরবে ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলা। দুই সিজদাহর মাঝের বৈঠকে অনুরূপভাবে দুআ পড়া। সালাতুত তাহফীয (কুরআন হিফয সহজে হবে নিয়তে বিশিষ্ট) নামায পড়া। সালাতুত তাসবীহ জামাআত করে পড়া। মা-বাপের নামে বিশিষ্ট নামায পড়া। শবেবরাতের বিশেষ নামায পড়া। নামাযের পর আয়াতুল কুরসী পড়ে বুকে ফুক দেওয়া, সালাম ফিরে মাথায় হাত রেখে বিশেষ দুআ পাঠ শেষ রাকআতের শেষ সিজদাহ লম্বা করা।

জুমআহ বিষয়ক বিদআত

জুমআহ সংক্রান্ত বিদআত যেমন, জুমার দিন সফর করতে নেই মনে করা। এই দিনে কোন কাজ করতে নেই ভাবা। জুমআর জন্য পাপ (যেমন দাড়ি চাচা, সোনা বা রেশম ব্যবহার) দ্বারা সৌন্দর্য ধারণ করা। মসজিদে মুসাল্লা বিছিয়ে স্থান দখল করা। তিন সিড়ির অধিক মিম্বর। জুমআর দিন মিম্বরকে কার্পেটাদি দ্বারা সুসজ্জিত করা। জুমআহ বা ঈদের নামাজের জন্য বিশেষ করে পাগড়ী বাঁধা। দ্বিতীয় আযান। মসজিদের ভিতর খতীবের সামনে দেওয়া। প্রথম আযানের পরিবর্তে কুরআন পাঠ ও ডাক-হাঁক। জুমআর (নামাযীদের নামায পড়ার) সময় মসজিদের উচ্চরবে কুরআন পাঠ। জুমআর পুর্বে নির্দিষ্ট রাকআত কাবলাল জুমআহ’ সুন্নত পড়া। খুতবায়ে হাজাহ (আলহামদু লিল্লাহহি নাহমাদুহু--) পাঠ বর্জন করা। সূরা  ক্বাফ দ্বারা উপদেশ না দেওয়া।

সুর করে খুতবা পাঠ। নবীর নাম শুনে (দরূদ না পড়ে) আঙ্গুল দ্বারা চক্ষু স্পর্শ করে তা চুম্বন করা। দুই খুতবার মাঝে কোন দুআ বা সূরা পাঠ। ইমাম বসা কালে হাত তুলে মুনাজাত। খুতবাহ চলাকালীন তাহিয়্যাতুল মসজিদ দুই রাকআত নামায ত্যাগ। দুই খুতবার কোন একটিকে নসীহত থেকে বাদ দেওয়া। (ইস্তিস্কা ছাড়া) খুতবায় ইমামের হাত তুলে দুআ করা এবং মুক্তাদীদের হাত তুলে ‘আমীন-আমীন’ বলা। “ইন্নাল্লাহা ইয়ামুরু বিল আদলে--” আয়াত দ্বারা খুতবা শেষ করাকে অভ্যাস বানানো।

খুতবাহ লম্বা এবং নামায ছোট ও সংক্ষিপ্ত করা। একই স্থানে বড় মসজিদ থাকতে ছোট মসজিদে জুমআহ পড়া। কাতার সোজা না হওয়ার পূর্বেই ইমামের নামায শুরু করে দেওয়া। নামাযের পর ‘তাকাব্বাল্লাহ---’ বলে পরস্পর মুসাফাহ করা। মসজিদের গেটে পানি হাতে দাঁড়িয়ে থেকে মুসল্লীদের ফুক অথবা থুথুর বর্কত নেওয়া ও রোগ মুক্তির আশা রাখা।

রমযান বিষয়ক বিদআত

তারাবীহতে বিদআত; যেমন, মাঝে ও শেষে হাত তুলে জামাআতী দুআ করা ও দরূদ পড়া। মাগরেবের মত বিতর পড়া। দুআ কুনুত পড়ার সময় রফএ-ইদাইন (অর্থাৎতাহরীমার মত কান বরাবর হাত তোলা)। তারাবীহর পর মিষ্টান্ন বিতরণ। শবে কদরে বিশেষ করে মিষ্টি বিতরণ। কেবল খাওয়া-দাওয়া ও জলসার মাধ্যমে রাত্রি জাগরণ।।

সালাম বিষয়ক বিদআত

সালামে বিদআত যেমন, দুই হাতে মুসাফাহ করা এবং বুকে হাত ফিরানো। সালামের পরিবর্তে ‘হেলো ‘আহলান’ গুডমর্নিং’ ইত্যাদি বলা। সালামের সময় প্রণত হওয়া। ঝুকে পা স্পর্শ করে সালাম করা। কদমবুসী করা। সিজদা করা (কুফর)।

দুআবিষয়ক বিদআত

দুআর প্রচলিত বিদআত যেমন; উচ্চস্বরে দুআ করা, ফরয নামাযের পর, বিবাহ বন্ধনের পর, ইফতারের পূর্বে, ঈদের নামাযের পর, জানাযার নামাযের পর বা দাফনের পর, জালসার শেষে, দর্সের শেষে একত্রে হাত তুলে জামাআতী দুআ করা ও ‘আমীন আমীন বলা’ হাত তুলে দুআর পর মুখে হাত বুলানো বা বুক স্পর্শ করা অথবা হাত চুমা।

সফর বিষয়ক বিদআত

সফর ও ভ্রমণের বিদআত যেমন; সফর মাসে সফর করতে নেই ভাবা। অনুরূপ জুমআর দিনে সফর না করা। ঘর হতে কেউ বের হওয়ার পর ঝাড়ু না দেওয়া। আম্বিয়া ও আওলিয়াদের কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করা।

হজ্জ বিষয়ক বিদআত

হজ্জ সংক্রান্ত বিদআত যেমন; তাওয়াক্কুলের নাম নিয়ে সম্বল ছাড়া হজ্জে বের হওয়া। হাজীদের নিকট হতে ট্যাক্স নেওয়া। ইহরাম বাঁধার সময় বিশিষ্ট নামায পড়া। ইহরাম বাঁধার পর থেকেই সর্বদা ইযত্বিবা (ডান কাঁধ বের) করে রাখা। মসজিদে হারাম ছাড়া অন্যান্য মসজিদের যিয়ারত করা। বিভিন্ন পাহাড় যেমন, গারে হিরা, সওর প্রভৃতি ভ্রমণে বর্কতের আশা করা। মসজিদে আয়েশা (বা অন্যান্য মসজিদে) সওয়াবের উদ্দেশ্যে নামায পড়তে যাওয়া। হজ্জ বা উমরাহকারীর কা’বার মসজিদে প্রবেশ করে তাওয়াফ না করে তাহিয়্যাতুল মসজিদ নামায পড়া। নামাযে হাত তোলার মত তুলে হাজরে আসওয়াদের প্রতি ইশারা করা। পাথর চুম্বনের জন্য ভিড় করা। চুম্বনের সময় আল্লাহুম্মা ঈমানাম বিকা--- দুআ পড়া। চুম্বন করার জন্য নামায পড়ে (ইমামের সালাম ফিরার পুর্বেই) সালাম ফিরে ছুটে পাথরের নিকট যাওয়া। রুকনে ইয়ামানী চুম্বন করা এবং স্পর্শ করতে না পারলে ইশারা করা।

স্পর্শের সময় বিশিষ্ট দুআ পড়া। কা’বার রুকনে শামী বা অন্যান্য দেওয়াল, গেলাফ, মাকামে ইব্রাহীম স্পর্শ করে তাবারুক গ্রহণ। কাবার দরজার বিপরীত দিকে দেওয়ালের এক উঁচু জায়গা ‘উরওয়া বুসকা’ ধরে তাবারুক গ্রহণ, বৃষ্টি হলে অতিরিক্ত সওয়াব বা বর্কতের আশায় তওয়াফ করা। মীযাবের পানি গায়ে মেখে তাবারুক গ্রহণ। যমযমের পানি দ্বারা গোসল। বৰ্কতের আশায় যমযমের পানিতে টাকা পয়সা ভিজানো। যমযম পানি পান করার সময় কেবলা মুখ করে বিশিষ্ট দুআ পাঠ। তওয়াফ ও সাঈতে প্রতি চক্রে নির্দিষ্ট দুআ পড়া।

আরাফায় নির্দিষ্ট দুআ পড়া। জাবালে রহমতে চড়া, মুযদালিফায় পৌঁছে প্রথমে নামায আদায় না করে পাথর সংগ্রহ করা। মুযদালিফায় রাত্রি জাগরণ করা। মুযদালিফা থেকে পাথর নেওয়া সুন্নত বা জরুরী ভাবা, পাথর মারার পূর্বে পাথর ধৌত করা। পাথর মারার সময় তকবীর পড়ার সাথে অন্যান্য দুআ (যেমন রাজমাল। লিশশায়াত্বীন’ ইত্যাদি) পড়া। পাথর মারার জন্য হাত বা আঙ্গুলের নির্দিষ্ট আকার বা ভঙ্গিমা করা। পাথর মেরে জুতা ইত্যাদি মারা।। কুরবানী না করে তার মূল্য সদকাহ করা। যবেহ করার আগে কুরবানীর পশুকে তেল দেওয়া অথবা তার অন্য কোন প্রকার তোয়া করা।

হাজীর বাম দিক হতে মাথার চুল কামানো। কিছু নেড়া করে কিছু পরে নেড়া করার জন্য চৈতন রাখার মত কিছু চুল ছেড়ে রাখা। নেড়া করার সময় কেবলা মুখ করা, এই সময় বিশিষ্ট দুআ পড়া। | যে হজ্জের ফরয আদায় করে আসে তাকে হাজী’ বা ‘আলহাজ্জ’ বলা। বিদায়ী তওয়াফে পর মসজিদ থেকে উল্টা পায়ে বের হওয়া। একই সফরে বার বার উমরা করা। মক্কার মাটি বর্কতের আশায় সঙ্গে আনা।

দরূদ ও যিক বিষয়ক বিদআত

দরূদে বিদআত যেমন; বাঁধাগড়া দরূদ পাঠ, দরূদ পড়তে কিয়াম করা, সমস্বরে উচ্চরবে দরূদ পড়া।।

যিকরের প্রচলিত বিদআহ যেমন, জামাআতী যিকর, শরীয়তে নির্দিষ্ট সংখ্যায় যিকর করা। হু-হু বা হুয়া-হুয়া’ অথবা কেবল আল্লাহ-আল্লাহ’ করে যিকর করা। কলেমা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’কে ভেঙ্গে যিকর করা; অর্থাৎ, নির্দিষ্ট সংখ্যায় ‘লা ইলাহা বলা এবং পরে আবার নির্দিষ্ট সংখ্যায় ‘ইল্লাল্লাহ’ বলা বা ইল-ইল’ বলে যিকর হাঁকা। ইয়া মুহাম্মাদ’ বা ‘ইয়া আলী’র যিকর হাঁকা। উচ্চস্বরে যিকর, হেলেদুলে যিকর, নেচে হাততালি দিয়ে যিকর। কোন ওলীর নামে যিকর। তসবীহ দানা ব্যবহার (যাতে রিয়ার আশঙ্কাও থাকে)। কিছু (চিঠি) লিখার পূর্বে ‘বিসমিল্লাহ’র। পরিবর্তে এলাহি ভরসা’, ‘আল্লাহ মহান’ ইত্যাদি লিখা অথবা ৭৮৬ লিখা।

পবিত্রতা বিষয়ক বিদআত

ওযুর মধ্যে বিদআত যেমন, গর্দান মাসাহ। ওযুর পর আকাশের দিকে তাকিয়ে। ‘ইন্না আনযালনা বা অন্য কোন সূরা  পাঠ। প্রত্যেক অঙ্গ ধৌতের সময় এক এক নির্দিষ্ট দুআ। গোসল করার (ডুব দেওয়ার) সময় কেবলা মুখ করা। গোসল (ডুব দেওয়ার পর বাঁধা হিয়ালি পড়া।

মৃত্যু ও জানাযা বিষয়ক বিদআত

মৃত্যু ও জানাযায় বিভিন্ন বিদআত যেমন; মরণাপন্ন ব্যক্তির শিথানে কুরআন শরীফ রাখা, সূরা  ইয়াসিন পড়া, মুমূর্ষকে কেবলামুখ করা। নবী ও আহলে বায়তের ইমামগণের নাম নিয়ে ‘তালকীন’ করা। তার নিকট হতে ঋতুবতী, অপবিত্রা, প্রসূতি ও অন্যান্য অপবিত্র মানুষদিগকে দূর করা। রাতে মৃতব্যক্তির পাশে সকাল পর্যন্ত কোন ভয়ে বাতি রাখা। মৃতব্যক্তির নিকট গোসল না দেওয়া পর্যন্ত কুরআন পড়া। ধূপ ইত্যাদি দিয়ে (অপ্রয়োজনে) সুগন্ধময় করে রাখা। দম যাওয়ার স্থানে। লাতা ও ধূপবাতি দেওয়া। দাফন না হওয়া পর্যন্ত মড়া ঘরের কোন মানুষের পানাহার না করা।

মৃতব্যক্তির পা তুলে দাঁড়াতে নেই মনে করা অথবা দাঁড়াতে ভয় করা। মৃত্যুর খবর ব্যাপকভাবে (যেমন মাইক ও পত্রিকায় প্রচার করা (অবশ্য আশেপাশের লোককে মৃত্যুর খবর জানিয়ে জানাযার প্রস্তুতির কথা বলা দোষাবহ নয়।) মৃতব্যক্তির তাহারতের (পবিত্রতার) জন্য ব্যবহৃত খিরকা (বস্ত্রখন্ড) ইত্যাদি দূরে ফেলতে গিয়ে কোন বিপদের আশঙ্কায়) সঙ্গে লোহা রাখা।

গোসল দেওয়ার সময় প্রত্যেক অঙ্গে পানি ঢালার সময় বার বার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বা অন্য যিকর অথবা বাংলায় বাঁধা হিয়ালি পড়া। লোয়ানো পানি ডিঙ্গাতে নেই মনে করা। লাশ উঠানো ও নামানোর সময় এবং পথে নিয়ে যাবার সময় উচ্চস্বরে সকলের “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র যিকর।।

মহিলার চুল চুটি গেঁথে বুকের উপর খোলা ফেলে রাখা। বর্কতের আশায় বা আযাব মাফ হওয়ার আশায় কোন পীর বা ওলীর-সুপারিশ নামা (!) বা শাজারানামা অথবা তার অন্য কিছু অথবা কুরআনী আয়াত বা দুআ কাফনের ভিতরে রাখা। কোন ওলীর কবরের পাশে কবর দেওয়ার জন্য দূর থেকে লাশ বহন করা। মুর্দার গোসলে ব্যবহৃত সাবান, দাফন কাজে ব্যবহৃত অতিরিক্ত বাঁশ ও দাফনে ব্যবহৃত অতিরিক্ত কাপড় ব্যবহার করতে নেই মনে করা অথবা ব্যবহার করতে ভয় করা।

এই বিশ্বাস রাখা যে, মুর্দারা সকলে নিজ নিজ সুন্দর কাফন নিয়ে গর্ব করে। কাফনের উপর কোন আয়াত বা দুআ লিখা। জানাযার খাটকে ফুল ইত্যাদি দ্বারা সঞ্জিত করা। সৌন্দর্যখচিত বা কালেমা অথবা আয়াত লিখিত মখমলের চাদর দ্বারা লাশ ঢাকা। লাশের উপর বা কবরের উপর ফুল দেওয়া। পুষ্পমাল্য দ্বারা শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া। জানাযার সাথে পতাকা বহন করা। কোন খাদ্যদ্রব্য বা পয়সা ছিটানো।

এই বিশ্বাস রাখা যে, মৃত ব্যক্তি নেক হলে তার লাশ হাল্কা অথবা ভারী হয়। জানাযা বের হওয়ার সাথে সাথে সদকা করা। চল্লিশ কদম মাত্র জানাযা বহন করে নির্দিষ্ট সওয়াবের আশা করা। লাশ নিয়ে ধীরে চলা। লাশের উপর ভিড় জমানো। কোন বিশ্বাসে জানাযার নিকটবর্তী বা সম্মুখবর্তী না হওয়া। নীরবতা ত্যাগ করা। আপোসে তর্কাতর্কি ও বচসা করা। জানাযা সহ কোন ওলীর কবর তওয়াফ করা। মৃতের উপর জানাযা পড়া হয়েছে তা জানা সত্ত্বেও পুনরায় গায়েবানা জানাযা পড়া। জানাযার নামাযের কাতারে গোলাপ পানি ছিটানো। জানাযা পড়ার সময় লাশের বাধন খুলে দেওয়া। জুতার ময়লা নেই একীন সত্ত্বেও জানাযার নামাযের জন্য জুতা খুলে ফেলা অথবা খুলে তার উপর দাঁড়িয়ে নামায পড়া। নামাযে ইস্তিফতাহর দুআ পড়া। সূরা ফাতিহাসহ অন্য একটি সূরা  পাঠ ত্যাগ করা। নামায শেষে হাত তুলে জামাআতী দুআ করা।

দাফন করার সময় যিকর জোরে-শোরে পড়া। মাথার দিক থেকে লাশ নামানো। মুর্দার জন্য কবরে বালিশ তৈরী করা। কবরকে সুগন্ধিত করা। মাটি দেবার সম ‘মিনহা খালাকনাকুম’ আয়াত পড়া। (কবরে যে লাশ রাখে সে ছাড়া) সকলের ‘বিসমিল্লাহি অআলা মিল্লাতি রাসুলিল্লাহ’ দুআ পড়া। লাশের বুকে মাটি রাখা। কবর। এক বিদ্যার অধিক উচু করা। কবরের চার কোণে ও মাঝে খেজুর ডাল গাড়া। (অবশ্য পশুর নষ্ট করা থেকে বাঁচাতে কাটা ইত্যাদি রাখা দুষণীয় নয়।) কবর লোয়ানো। (অবশ্য ‘লহদ কবরে শুষ্ক মাটিকে ভিজিয়ে বসানোর জন্য পানি ঢালা উত্তম।) এই সময় সকলের “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়া। দাফন শেষে হাত তুলে দুআ-দরূদ পড়া। মাথার দিকে সূরা  ফাতিহা বা সূরা  বাক্বারার প্রথমাংশ এবং পায়ের দিকে সূরা  বাক্বারার শেষাংশ পাঠ করা। দাফনের পর তালব্দীন দেওয়া। কবরের পাশেই মাটির পাত্র (ব্যবহার যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও) ছেড়ে আসা। বিশ্বাস রাখা যে, কবরের মাটি বাড়লে হালে আবার কেউ মরবে!

দাফনের পর কবরের পাশে বাস করা ও (পাহারা দেওয়া। অবশ্য লাশের কোন। অঙ্গ অথবা কাফন চুরি হওয়ার আশঙ্কায় পাহারা দিলে ভিন্ন কথা।) আমাবশ্যার রাতে মরা খারাপ বা অশুভ মনে করা। দাফন করা থেকে ফিরে এসে হাত-মুখ না ধুয়ে বাড়ি প্রবেশ করতে বা কাউকে স্পর্শ করতে নেই ভাবা। কবরের পাশে কোন খাদ্য বিতরণ বা পশু যবেহ। মরা ঘরের যিয়াফত গ্রহণ করা। মরা ঘরে ভোজ করা। (আত্মীয় বা প্রতিবেশীর কেউ না খাওয়ালে সাধারণভাবে দূরের কুটুমদেরকে খাওয়ানো দোষের নয়)।

মরা ঘরের আত্মীয়-স্বজনকে দেখা করার জন্য এবং সান্ত্বনা দেবার উদ্দেশ্যে তাদের গৃহে জমায়েত হওয়া ও তার জন্য কোন দিন নির্দিষ্ট করা। কেবল শোকপালনের উদ্দেশ্যে দাড়ি-গোফ লম্বা করা। অভ্যাসমত ভালো খাওয়া। ত্যাগ করা। (মৃতব্যক্তির স্ত্রী ব্যতীত) অন্য কারো শোক পালনের উদ্দেশ্যে সৌন্দর্য ত্যাগ করা। বিধবার মৃত্যু অবধি সৌন্দর্য ত্যাগ করা। (গায়র মাহরামের নিকট সৌন্দর্য প্রকাশ হারাম)। পুনঃ বিবাহ করাকে মন্দ ও দূষণীয় জানা। (অথচ মন্দের পথে পা বাড়াতে এবং ব্যভিচার করতে ভয় করে না!)

মৃতের নামে কুরআনখানী, ফাতেহাখানি ও চল্লিশে (চালশে) করা। মুর্দার দম যাওয়ার স্থানে কয়েক দিন ধরে লাতা দেওয়া, বাতি ও ধূপ জ্বালিয়ে রাখা। এই বিশ্বাস যে বাড়িতে রূহ আসে। মৃত যা খেতে ভালোবাসতো তাই সদকাহ করা। মৃতের ব্যবহৃত পোশাকাদি সদকাহ করা। কারো মরার পুর্বেই কবর খনন করে রাখা। দাফনের পর কয়েকদিন সকালে কবর যিয়ারত করা। যিয়ারতের জন্য কোন দিন নির্ধারিত করা, কারো কবর যিয়ারতে তাবারুক বা নেকীর আশা করা। কবরের সামনে মুসল্লীর মত খাড়া হওয়া।

কোন যিয়ারতকারীর মাধ্যমে সালাম পাঠানো। নামায ও তেলাঅত দ্বারা ঈসালে সওয়াব করা। ঈসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে কোন অনুষ্ঠান করা। সালেহীনদের কবরের নিকট দুআ কবুল হয় এই বিশ্বাস রাখা এবং এই উদ্দেশ্যে যিয়ারত করা। কবরস্থানের গাছ-পালাকে পবিত্র মানা এবং তা কাটতে নেই মনে করা বা কাটতে ভয় করা। কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্যে দুর থেকে সফর করা। তাতে এত এত নেকী আছে মনে করা। কবর বাঁধানো, শিয়রদেশে পাথরের উপর নাম খোদাই করা, কোন আয়াত লিখা বা ‘জান্নাতী’ লিখা।

কবরের উপর দর্গা, মাযার ও বাগান তৈরী করা, মসজিদ ও গম্বুজ নির্মাণ করা, বাতি জ্বালানো, ধূপ-ধুনা দেওয়া। মাটির হাতি-ঘোড়া পেশ করা, ন্যর নিয়ায় পেশ করা, পশু যবেহ করা। কবরকে সিজদাহ করা, তার তওয়াফ করা, সম্মুখ করে কবরবাসীর ধ্যান করা, কবরের নিকট বসে বা স্পর্শ করে তাবারুক নেওয়া। কবর বা মাযার চুম্বন বা স্পর্শ করে গায়ে মাখা। কবরের দেওয়ালে বা মাযারে কপাল, গাল পিঠ বা পেট লাগিয়ে দুআ করা। সন্তান লাভের আশায় যোনি। দ্বারা স্পর্শ করা! তাযীম করে কবরের দিকে পিঠ না করা। কবরের প্রতি সম্মুখ করে। নামায পড়া।

কবরবাসীকে নাজাতের অসীলা বা বিপদে সুপারিশকারী মানা, তার অসীলায় দুআ করা। তার নামে আল্লাহর উপর কসম খাওয়া। তার নিকট সাহায্য, সন্তান, সম্পদ, সুখ ও বিপদ মুক্তি চাওয়া। কবরের পাশে ধ্যান ও যিক করা। কবর যিয়ারতের পর উল্টাপায়ে ও কবরকে সামনে করেই ফিরে আসা। মসজিদে কারো কবর দেওয়া। কবরের উপর উরস, মেলা প্রভৃতি পাপের মিলনক্ষেত্র অনুষ্ঠান করা, চাদর চড়ানো।

মদীনাবিষয়ক বিদআত

মদীনাবাসীর মসজিদে নববী প্রবেশ কালে প্রত্যেকবার নবীর কবর যিয়ারত করা। তাঁর কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্যে মদীনা সফর করা। নামাযীর মত বিনয় সহকারে কবরের প্রতি মুখ করে খাড়া হয়ে দরূদ ও দুআ পাঠ করা। তাঁর নিকট গোনাহর ইস্তিগফার চাওয়া।* তাঁর নিকট সাহায্য চাওয়া, তাঁকে অসীলা মানা, তাঁর নাম নিয়ে আল্লাহর উপর কসম খাওয়া, তাঁর নিকট শাফাআত চাওয়া। প্রয়োজন লিখে হুজরার বা তাঁর ধারে-পাশে নিক্ষেপ করা। তাঁর বা অন্য কারো কবরের উপর আতর ছড়ানো। হাজীদের সাথে সালাম পাঠানো, চিরকুট ও আতর পাঠানো। তাহিয়্যাতুল মসজিদ না পড়ে কবর যিয়ারত। লম্বা সময় ধরে হুজরার প্রতি মুখ করে নিজের জন্য দুআ করা। কারো মৃত্যু দিবস পালন করা। নবী (সা.) যিয়ারতকারীর সব প্রয়োজন জানেন মনে করা। তাঁর কবরকে সামনে করে ইচ্ছাকৃত নামায পড়া বা যিকর করা।

মদীনার যিয়ারতে মসজিদে নববী ও মসজিদে কুবা ছাড়া অন্যান্য মসজিদ সওয়াবের উদ্দেশ্যে যিয়ারত করা। মসজিদে নববীর মেহরাব, মিম্বার, হুজরার রেলিং ইত্যাদি স্পর্শ করে তাবারুক গ্রহণ। মদীনায় যিয়ারতে মসজিদে নববীতে চল্লিস ওয়াক্ত নামায পড়তেই হয় মনে করা। সবুজ গম্বুজ থেকে গড়িয়ে পড়া পানি দ্বারা তাবারুক গ্রহণ করা। প্রথম কাতার ছেড়ে আসল মসজিদে নামায। প্রত্যহ বাকী’র কবরস্থান যিয়ারত। মসজিদ থেকে উল্টা পায়ে বের হওয়া। নবী (সা.)-এর সমাধিক্ষেত্রকে আল্লাহর আরশ অপেক্ষা অধিক মর্যাদাপূর্ণ মনে করা!

(*) আল্লাহ তাআলা বলেন, “যখন তারা নিজেদের প্রতি মুলুম করে, তখন যদি তারা তোমার নবীর) নিকট আসত ও আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করত এবং রসূলও তাদের জন্য ক্ষমা চাইত, তবে নিশ্চয় তারা আল্লাহকে ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালুরূপে পেত।” (সূরা নিসা ৬৪ আয়াত) এই ইস্তিগফার তাঁর পার্থিব জীবনে জীবিতাবস্থার কথা। তাঁর মৃত্যুর পর এরূপ আশা নিছক ভুল ও বিদআত। সুতরাং তাঁর কবর যিয়ারত করলেই কারো পাপ ক্ষয় হয় না।

বিবাহ বিষয়ক বিদআত

বিবাহে প্রচলিত কুপ্রথা ও বিদআত যেমন, কন্যাপক্ষের নিকট হতে বরপক্ষের সেলামী, ঘুষ বা পণ গ্রহণ। কোর্টশিপ (ইউরোপীয় প্রথায় বিবাহের পূর্বে পাত্র-পাত্রীর মধ্যে হৃদয়ের আদান প্রদান)। বর, (মাহরাম অথবা কোন মহিলা) ছাড়া অন্য কারো বউ দেখা। বর কর্তৃক কনেকে পয়গামের অঙ্গুরী পরানো এবং ভবিষ্যতে তা তাদের দাম্পত্য-সুখের কারণ ভাবা ও খুলে ফেললে অমঙ্গলের আশঙ্কা করা, কোন নির্দিষ্ট দিনে বা মাসে বিয়ে শুভ বা অশুভ মনে করা। বিয়ের কথা (সম্বন্ধ) চলাকালীন কনে ডিম ভাঙ্গলে বিয়ে যাবে ভাবা। লগন ধরানো, গায়ে হলুদ। (অবশ্য এই সময়ে দেহের রঙ্গ উজ্জল করার উদ্দেশ্যে গায়ে হলুদ মাখলে ভিন্ন কথা।) হাতে সুতো রাখা। সাথে যাতি, কাজললতা বা কোন লোহা রাখা। কনের মাথায় শিবতেল ঢালা। টিকি মঙ্গলা। আলমতলায় লাতা ও সিন্দুর দেওয়া। বর-কনেকে আইবুড়ো বা থুবড়ো ভাত খাওয়ানো। (বিশেষ করে গম্য পুরুষের হাতে গম্যা নারীর এবং গম্য নারীর হাতে গম্য পুরুষের ভাত ও ক্ষীর খাওয়া অবৈধ।)

বরযাত্রী বা কনেযাত্রী দর-কষাকষি করে প্রয়োজনের অধিক গিয়ে অপরপক্ষের অসম্মতি সত্ত্বেও জবরদস্তি তার খেয়ে খরচ বৃদ্ধি করা। ছেলে বিয়ে করতে যাবার সময় গাড়িতে চড়লে পর্দা করে ছেলের পায়ে মায়ের তেল দিয়ে জিজ্ঞাসা করা, বাবা! কোথায় চললে?’ ছেলে বলে, ‘মা! তোমার জন্য দাসী আনতে চললাম। (এটি খুবই ধ্রুব সত্য কথা। ঘরে ঘরে বধু নির্যাতনই এর সাক্ষি।) ঐ বিদায়ের সময় মুখে দুধ ভাত দেওয়া। বর আগমন করে মহল্লার মসজিদে গিয়ে বিশিষ্ট কোন নামায আদায় করা। (অবশ্য বিয়ে মসজিদে পড়ানো হলে মসজিদে প্রবেশ করে বসার পুর্বে ২ রাকআত তাহিয়্যাতুল মসজিদ সকলকেই পড়তে হয়। মসজিদে বেনামাযী, অপবিত্র ও ধুমপায়ী ইত্যাদি বর বা কন্যোত্রী রেখে মসজিদের মান নষ্ট করা কোনক্রমেই বৈধ নয়।)

পীর তলায় (!) বরের সালাম করা। আলমতলায় (যেখানে বর-কনেকে বসানো হয় সেখানে) ঝুকে মাটি বা বিছানা ছুঁয়ে সালাম করা। দর্শককে বা উপস্থিত মজলিসকে ঐরূপ সালাম করা। (আসসালামু আলাইকুম বলে সালাম করাই সুন্নত। এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের অবাধ মিলামিশা ও গান-বাজনার কথা তো বলাই বাহুল্য। যাতে মুসলিম রুচিশীল গৃহকর্তার লজ্জা ও আল্লাহ-ভীতি হওয়া উচিত।) পানভোজনে অপচয় করা।

নামমাত্র মোহর বাঁধা ও আদায় না করা বা করার নিয়ত না রাখা। বিজোড় টাকার দেনমোহর বাঁধা। দেনমোহরের কিছু টাকা বাকি রাখতে হয়, (আর পণের টাকা কড়ায় কড়ায় আদায় করে দিতে হয়। মনে করা। দেনমোহরের গয়না ও কাপড়াদি কাঁসের থালায় আনা। বিয়ে পড়ানোর সময় ঐ থালায় দেন মোহরের জেওরাদির সাথে পান-সুপারি রাখা। কে কেবলা মুখে বসানো। কনের নিকট ইন বা বিবাহের অনুমতি নেওয়ার অনুষ্ঠান এবং অলী বর্তমান থাকা সত্ত্বেও অন্য কারো ইন। তলব। এই অনুষ্ঠানে কনেকে উল্টো করে সায়া-ব্লাউজ পরানো। বর্তমান প্রচলিত উকিল-সাক্ষী বানানোর প্রথা। (অথচ পাত্রীর মৌখিক অনুমতির উপর কোন সাক্ষীর প্রয়োজন নেই। এর জন্য তার তরফ থেকে (অনুমতি পেয়ে) অভিভাবকের অনুমতিই যথেষ্ট।

বরের স্বীকারোক্তির সময় কমপক্ষে দুই জন পুরুষ সাক্ষী জরুরী।) আকদের শেষে সকলের হাত তুলে জামাআতী দুআ। বরকে অর্ধ গ্লাস শরবত ও অর্ধ পান খেতে দেওয়া এবং অবশিষ্ট উচ্ছিষ্ট অর্ধ শরবত ও পান কনেকে খেতে দেওয়া। জামাই দেখতে নানা মাতামাতি ও ‘চিনি’ খেলা। বর-কনে একত্রিত করে সকলের সামনে গাঁটছড়া বাঁধা প্রভৃতি বিভিন্ন কীর্তি। বিয়ে বিদায় না হওয়া পর্যন্ত ঝাড়ু না দেওয়া। বধু ব্রণের সময় তেল-ফুল বা মিষ্টি ব্যবহার। নববধুকে প্রথম দিনেই শ্বশুর বাড়িতে খেতে নেই মনে করা। বাসর ঘরে একই প্লেটে স্বামী-স্ত্রী ভাত খেতে স্ত্রীর প্লেট ধরে থাকা। বধুর বিদায়কালে বড়দের পা ছুয়ে সালাম এবং মিষ্টান্ন বিতরণ। দুধ ইত্যাদি দিয়ে বাসর ঠান্ডা। বিবাহের পর হানিমুন’ ও বিবাহ বার্ষিকী পালন।

তালাকের বিদআত যেমন, স্ত্রীর মাসিক অবস্থায় তালাক, যে পবিত্রতায় সহবাস করা হয়েছে সেই পবিত্রতায় তালাক। তালাকের উপর কসম খাওয়া। এক মজলিসে তিন তালাক।

শিশু বিষয়ক বিদআত

শিশুর জন্ম সংক্রান্ত প্রচলিত বিদআত যেমন, গর্ভিনীকে সাত-ভাত ও পঁচভাজা খাওয়ানোর অনুষ্ঠান। প্রাণ নষ্ট হওয়ার ভয়ে বিভিন্ন তাবী-নোয়া বাধা। কোন শরয়ী বা বৈজ্ঞানিক হেতু বিনা অন্য কোন হেতু বা কারণে সন্তান অন্ধ বা বিকলাঙ্গ হবে ভাবা। প্রসব হতে কষ্ট হলে প্রসূতির জাঙ্গে কুরআনী (!) বা অন্য তাবীয বাঁধা। প্রসব হওয়ার সময় প্রসূতিগৃহে হেঁড়া জাল, মুড়ো ঝাটা, লোহা ইত্যাদি রাখা। দু কুড়ি দিন বা চল্লিশ দিনের পবিত্রতা অনুষ্ঠান। (যদিও প্রসূতি পূর্বেই পবিত্র হয়ে গেছে অথবা পরে হবে।) খতনার সময় (মুসলমানিতে) বিভিন্ন আড়ম্বর ও ক্ষীর খাওয়ানোর ঘটা।

নবজাত শিশুকে চল্লিশ দিন অতিবাহিত না হওয়ার পূর্বে ঘর হতে বের করতে নেই মনে করা। ন্যর লাগার ভয়ে শিশুর কপালের পাশে বা গালে কালির ফোঁটা দেওয়া বা আঙ্গুল কামড়ানো। কুলোতে বসে বাচ্চা ছিকলে অসুখ ছাড়ে না ভাবা। কন্যা শিশুর জন্মক্ষণে তার কানে (আযানের পরিবর্তে) বাটি বাজানো। লিঙ্গত্বকহীনভাবে কারো জন্ম হলে ফিরিস্তা খতনা করেছে ভাবা এবং পরে পান কাটা ও লিঙ্গের উপর খুর ফিরানো। শিশুর জন্ম বার্ষিকী বা 'হ্যাপি বার্থডে’ পালন।

ঈদ ও পরব বিষয়ক বিদআত

প্রচলিত পাল-পার্বনের বিদআত যেমন, নবী দিবস, ফাতেহা ইয়াযদহম, দোয়াযদহম, আখেরী চাহার শোম্বা, শবে মিরাজ, জুমআতুল বিদআহ, শবেবরাত, তার নামায-রোযা ও দীপাবলীসহ বিভিন্ন ঘটা। মহরম ও তার তা'যিয়া, নিশানা, মর্সিয়া, বাদ্য ও আত্মপ্রহার দ্বারা শোকপালন এবং অন্যান্য সমারোহ।* মহরমের চালশে করা। নবান্ন (!) এবং পৌষপার্বন (!) পালন।

ঈদের বিদআত যেমন, সমস্বরে ঈদের তকবীর পাঠ। অবৈধ জিনিস দ্বারা সাজসজ্জা এবং অবৈধ খেল-তামাশা দ্বারা খুশী করা। ঈদের নামায পড়ে কবর যিয়ারত।

ভোজের দাওয়াতে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে খরচে অতিরঞ্জন করা। দরিদ্র ছেড়ে কেবল ধনীদেরকে দাওয়াত দেওয়া। নতুন গৃহ নির্মাণের পর উদ্বোধন করা বা জিন-ভূত বিতাড়ণের উদ্দেশ্যে মীলাদ পড়ানো। (অবশ্য নতুন ঘরের খুশীতে পান-ভোজন করানো দূষণীয় নয়।) কোন প্রতিষ্ঠান উদ্বোধনে ফিতা কাটা প্রভৃতি অনুষ্ঠান।

(*) এ সবের মধ্যে মাতম করা জাহেলিয়াতের কুপ্রথা। প্রকাশ থাকে যে, আশুরার দিনে হুসাইন (রাঃ) শহীদ হয়েছেন বলে রোযা রাখা হয় না। বরং ঐ দিনে এবং এর আগে আর একদিন রোযা রাখা রসূল-এর সুন্নত ও নিদের্শ। হযরত হুসাইন (রাঃ)-এর জন্য ঐ দিনে অথবা আর কারো জন্য কোন দিনে শোক বা মৃত্যুদিবস পালন করা বিদআত। আশুরার দিনকে শোকপালনের দিনরূপে গ্রহণ করে শিয়ারা এবং ঐ দিনকে ঈদ বা খুশীর দিনরূপে গ্রহণ করে নাসেবীরা (যারা আলী (রাঃ) ও তাঁর বংশধরের প্রতি বিদ্বেষ রাখে।) সুন্নী বা আহলে সুন্নাহর নিকট ঐ দিন কেবল নবী (সা.)-এর সুন্নাহর অনুকরণে রোযা পালনের দিন।

বিবিধ বিদআত

খাবার সময় ডান গালে, বাম গালে এবং গিলে নেওয়ার পর নির্দিষ্ট যিকর বা দুআ, খেতে খেতে বিভিন্ন যিকর। ওষুধ খাওয়ার আগে আল্লাহু শাফী--’ বলা। কোন মসীবত বা পরাজয়ের সময় কালো কাপড় পরিধান করে বা কালো নিশানা উড়িয়ে শোক পালন। বদন্যর দূর করতে তাবীয, নোয়া, সুতো, ছেড়া জাল বা জুতো, মুড়ো ঝাঁটা, ভাঙ্গা হাঁড়ি প্রভৃতি ব্যবহার। এই উদ্দেশ্যে শিশুর পাশ কপালে বা গালে কালো ফোটা দেওয়া। গাছে ভাঙ্গা হাঁড়ি ও গাড়িতে ছেড়া জুতো বাঁধা। ফসলক্ষেতে মানুষের আকারে কোন মূর্তি গাড়া) তাবীয-গন্ডা, লোহা ও তামার তার, শঙ্খ ও জীবশাখ প্রভৃতি আরোগ্যের উদ্দেশ্যে ব্যবহার। কোন পাখীর হাড়, পালক, কোন পশুর চুল প্রভৃতির তাবীয বাঁধা। খাওয়ার সময় কেউ দেখলে পেটে লাগা বা ন্যর লাগার ভয়ে কিছু খাবার মাটিতে ফেলা।

কোন ব্যক্তি, ঐতিহাসিক স্থান কবর ইত্যাদি দ্বারা তাবারুক গ্রহণ। পীর বা মাযারের নামে পশু উৎসর্গ করা। গায়রুল্লাহর নামে গরু, খাসি প্রভৃতি ছাড়া বা মানত করা। সংসারত্যাগী বা বৈরাগী হওয়া। কাম দমনের উদ্দেশ্যে খাসি করা। দেহ পীড়নের সাথে কোন ইবাদত করা। (আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের উদ্দেশ্যে) কোন হালাল বস্তুকে হারাম করা। শরীয়তকে জ্ঞানের নিক্তিতে ওজন করা। দ্বীনে বিভিন্ন দল সৃষ্টি করা। তাসাউবুফ বা রাজনীতি দ্বারা ইসলামী দাওয়াত শুরু করা। অভিনয়, উপন্যাস-উপাখ্যান, গজল-গীতি, বায়াত ইত্যাদিকে দাওয়াতের অসীলা মানা। “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র অর্থ আল্লাহ ব্যতীত কোন শাসক, বিধানদাতা, প্রভু বা কর্তা নেই’ করা।)

ধর্মীয় প্রশ্নে বিদআত যেমন, আল্লাহ আরশে কিভাবে আসীন আছেন? আল্লাহর অবয়ব আছে কি না? তাঁর হাত-পা কেমন? আকাশে নেমে এলে আরশ খালি হয়। কিনা? ইত্যাদি।

অমূলক বিশ্বাস বিষয়ক বিদআত

অমূলক বিশ্বাস ও কুধারণার বিদআত যেমন, কোন বিশিষ্ট (যা শরীয়ত কর্তৃক নির্দেশিত নয় এমন) মাস, দিন, ক্ষণ বা স্থানে অযথা শুভাশভ আশা ও ধারণা রাখা। যেমন, অমাবশ্যায় অমুক হয়, রবিবারে বাঁশ কাটতে নেই জ্বর হয়। বৃহস্পতিবার অমুক করতে হয় বা তার বিকাল ও সন্ধ্যা অশুভ। অমুক মাসে বিয়ে নেই। মলমাসে কোন শুভ কাজ নেই। অমুক দিনে যাত্রা নেই ইত্যাদি মনে করা।

অমুকের মুখ, খালি কলসী, কালি হাঁড়ি বা অন্য কিছু দেখে, কারো নাম, কাক, কুকুর বা অন্য প্রাণীর ডাক শুনে অমঙ্গলের আশঙ্কা করা। পিছু ডাকলে, ডাইনের শিয়াল বয়ে গেলে যাত্রা অশুভ হয় অথবা কাজ সফল হয় না মনে করা। অমুক জিনিস রাত্রে বা সকালে বের করতে বা দিতে বা বেচতে নেই ইত্যাদি ভাবা। কোন রাশিচক্রকে মঙ্গলামঙ্গল বা বৃষ্টি-অনাবৃষ্টির কারণ ভাবা।

আরো হাস্যকর অসার (মেয়েলি) বিশ্বাস যেমন, কাস্তে দ্বারা মাটিতে আঁক দিলে দেনা হয়। শিশুর কান মললে তার হায়াত কমে যায়। শরকাঠি বা বাম হাত দ্বারা আঘাত করলে (আঘাত প্রাপ্ত শিশু) কৃশ হয়ে (শুকিয়ে) যায়। কোমরে পা ঠেকলে ব্যথা হয়। বালিশে পা পড়লে ঘাড়ে ব্যথা হয়। শাক ডিঙ্গালে জিভে ব্যথা হয়। ঘরে ভাঙ্গা আয়না রাখলে গরীব হতে হয়।

নাপাক অবস্থায় গাছে হাত দিলে গাছ মারা যায়। মুখে মিষ্টি নিয়ে কোন ফলগাছ লাগালে তার ফল তিক্ত হয় না। খেল (কাদা মাখামাখি) খেললে, আখের বোঝার উপর বসলে বা ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হয়। বাম চোখ লাফালে নোকসান ও ডান চোখ লাফালে লাভ হয়। বামের শিয়াল ডাইনে গেলে অথবা তার বিপরীত গেলে লাভ অথবা নোকসান হয়। গলায় খাদ্য বা পানীয় লাগলে কোন আত্মীয় স্মরণ করে। প্রথম ডিমে নোড়া বুলালে মুরগী নোড়ার মত বড় বড় ডিম দেয়। চালুন বুলালে তার। ছিদ্র সমান অসংখ্য ডিম পাড়ে। শিশুর ভাঙ্গা দাঁত পানিতে ফেললে অথবা ইদুরের গর্তে দিলে মাছ বা ইদুরের মত সরু সরু দাঁত হয়! ভালুকের লোম ব্যবহার করলে জ্বর যায়। যাত্রা পথে বাড়ি থেকে বের হতে কেউ পিছু ডাকলে যাত্রা শুভ হয় না বা কাজ সিদ্ধ হয় না ইত্যাদি অযৌক্তিক বিশ্বাস। নতুন গরু মহিষ ক্রয় করলে তার পা ধুয়ে তেল (!) দেওয়া।

গরুর পায়ে ঝাটা ঠেকাতে নেই মনে করা। গরু মারা গেলে তার মুখে দুর্বাঘাস রাখা। গাভিন গায়ের গলায় আমড়ার আঁটি, চাবিকাঠি, কড়ি, চামড়া ইত্যাদি বাধা। সদ্যজাত বাছুরের গলায় লাতাকানি বাঁধা, গরু পরবের (?) দিন গরু-ছাগলের গায়ে রঙ্গিন ছাপ দেওয়া। | কাপড় নিচোড়া পানি পায়ে নিলে অসুখ ছাড়ে না, তালপাতার পাখা ঘুরানোর সময়। কারো গায়ে লাগলে অসুখ হয়। (তার জন্য মাটিয়ে ঠেকাতে হয়।) কশে ঘা (শালকী) হলে শালিক পাখির পায়ের ধুলোয় ভাল হয়। মাথায় মাথায় ঠোকা গেলে এবং

দ্বিতীয়বার না ঠুকলে শিং গজায়! দুই হাঁটু গেড়ে ভাত খেলে মা-বাপের মাথা খাওয়া হয়, আমানিতে হাত ধুলে মরার সময় ছেলে নিজ মা-বাপের মুখ দেখতে পায় না। কোন কথা চালাকালীন কেউ হাঁচলে অথবা টিকটিকি আওয়াজ দিলে কথার সত্যায়ন হয়। দুই মুরগী মুখোমুখী হলে, হাত হতে (চিরুনী, বাটি বা অন্য) কিছু পড়লে অথবা গৃহের ছাদে বা চালে কাকে আদার খাওয়ালে বাড়িতে কুটুম আসে।

পায়ে মইদি মাখতে নেই (কারণ নবী সাহেব দাঁড়িতে লাগিয়েছিলেন তাই!) শাহাদৎ আঙ্গুলে চুন লাগাতে নেই, রাতে নখ কাটতে নেই, চুল আচড়াতে নেই, আয়না দেখতে নেই। রাতের বেলায় চাল চিবিয়ে খেতে নেই, রাতে আঙ্গুল ফোটাতে নেই। সন্ধ্যাবেলায় ভাত খেতে নেই। (কারণ সে সময় মওতারা খায়।) ভাদ্র মাসে। ঝাটা কিনতে নেই, গোয়ালে মাটি দিতে নেই। অগ্রহায়ন মাসে কুকুর-বিড়ালকে ছি করতে নেই। ঝুড়ি-ঝাটা বাইরে রাখতে নেই। ধানের ধুলো ঝাড়তে নেই। (আহা ধানের ধুলো পায় কে?) খাবার জিনিস ঝাঁটা করে ঝাড়তে নেই। (যেহেতু মা লক্ষ্মীকে ঝাঁটা মারা হয় তাই!) পরীক্ষা দিতে যাবার আগে ডিম খেতে নেই। (খেয়ে পরীক্ষা দিলে ডিমের মত নম্বর অর্থাৎ জিরো পাবে।) পিয়াজ রসুনের ছাল না পোড়ানো। ধানের রাস ও পাটার উপর খড়ের আঁটি রাখা। গোলার নীচে পুঁটে রাখা। মাপার শেষে কিছু চাল ফিরিয়ে নিয়ে বর্কতের আশা।

মাপার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বা এক বলার পরিবর্তে বর্কত বলা। কসাইদের গোশ্যে গোশু মেরে বকতের আশা। ধান-চাল পাছুরতে কুলো খালি না করা। ঘরের মুদুনী তুলতে সিন্দুর ব্যবহার। ছেলে ঘুমাবার সময় কাউকে কোদাল দিলে তাতে পানি দিয়ে। দেওয়া। ছেলে কোলে থাকলে কোদাল কুড়ুল হাতে বহন না করা। অন্ধকারে বসে বা দাঁড়িয়ে অথবা হাঁটতে হাঁটতে কিছু খেলে বা পান করলে, মৃতব্যক্তির পাশে আহার করলে, ভাঙ্গা পাত্রে আহার করলে, পরিহিত কাপড়ে হাত মুছলে, পরিহিত কাপড় সিলাই করলে, ভাঙ্গা আয়নায় মুখ দেখলে, ঝাড়ু দিয়ে ঘরের মধ্যে ময়লা জমা রাখলে, খাওয়া শেষে হাঁড়িকুড়ি না ধুয়ে রাখলে, ওযু করার সময় অহেতুক কথা বললে, হেঁটে হেঁটে দাঁতন করলে, তেলাঅতের সিজদায় দেরী করলে, ময়লা কাপড় বা ছেড়া জুতা-খরম ব্যবহার করলে, গুপ্তস্থানের লোম ৪০ দিনের বেশী ছেড়ে রাখলে অথবা তা কাঁচি দ্বারা পরিষ্কার করলে, পানিতে প্রস্রাব করলে, উলঙ্গ হয়ে গোসল করলে, জানাযার আগে আগে হাঁটলে, বিনা ওযুতে হাঁটতে হাঁটতে দরূদ শরীফ পড়লে পরিবারে ও জীবনে অশান্তি নেমে আসে ধারণা করা।

দাঁত দিয়ে নখ কাটলে, রাত্রিকালে একাকী ভ্রমণ করলে, বাম হাতে কোন জিনিস। আদান-প্রদান করলে হৃদয় পাষাণ হয়ে যায় ধারণা রাখা।

হেলান দিয়ে আহার করলে, ঘাড়ের পশম কামিয়ে ফেললে, উকুন পেয়ে জীবিত ছেড়ে দিলে স্মৃতিশক্তি লোপ পায় মনে করা।

উক্ত প্রকার বিশ্বাসগত অমূলক মেয়েলী বিদআত যা বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে এবং যার বেশীর ভাগ ‘বুড়ি’দের নিকট হতে ‘হিফয’ ও রেওয়ায়াত করা হয়ে থাকে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন