hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বিদআত দর্পণ

লেখকঃ আবদুল হামীদ ফাইযী আল মাদানী

বিদআতী প্রসঙ্গে মন্তব্য
বিদআতী বা মুবতাদে’ (যে বিদআত বা দ্বীনে কোন মান্য ও পালনীয় রীতি রচনা করে তা মানে ও পালন করে, তার প্রতি মানুষকে আহবান ও আকর্ষণ করে এবং তার উপর সম্প্রীতি ও বৈরিতা গড়ে সে) ফাসেকও হতে পারে আবার কাফেরও। যেমন এ কথা বিদআতের প্রকারভেদে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কিন্তু তার পুর্বে এখানে। একটি সতর্কতার বিষয় এই যে, নির্দিষ্টভাবে কোন মুসলিমকে চট করে চোখ বন্ধ করে ফাসেক, বিদআতী, কাফের ইত্যাদি বলে আখ্যায়ন করা উচিত নয়। কারণ, এ বিষয়ে শরীয়তে কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা ও সতর্কতা বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন, প্রিয়। নবী প্লঃ বলেন, “যে (মুসলিম) ব্যক্তি নিজের (মুসলিম) ভাইকে বলে, 'এ কাফের। অথচ সে প্রকৃতপক্ষে কাফের নয়, তবে সে কথা তার নিজের উপর বর্তায়।” (অর্থাৎ, সে নিজেকে কাফের করে।) (মুসলিম)

এর জন্য শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রঃ) বলেন, কোন মুসলিমকে কাফের বলার অধিকার কারো নেই, যদিও সে ভুল-ভ্রান্তি করে থাকে। যতক্ষণ পর্যন্ত

তার উপর হুজ্জত কায়েম (দলীলাদি দ্বারা কুফরী প্রমাণ) করা হয়েছে এবং স্পষ্ট সুপথ ও মত তার জন্য ব্যক্ত করা হয়েছে। যার ইসলাম নিশ্চয়তার সহিত প্রমাণিত হয়েছে তার ইসলাম’ কেবল কারো সন্দেহ নিরসনের পরই অপসৃত হতে পারে। (ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ ১২/৪৬৬) কিন্তু যে ব্যক্তি সরল পথ এবং সত্য দ্বীন হতে বহির্ভূত হবে, সে শরীয়ত পরিপন্থী বহু কর্মে আলিপ্ত হবে, তার অবস্থা হবে ভিন্ন। যেরূপ অবৈধ কর্মে সে লিপ্ত হবে ঠিক অনুরূপ মন্তব্য তার উপর করা হবে, স্পষ্ট কুফরী অথবা মুনাফিকী। এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, যে ব্যক্তি হেদায়াত ও দ্বীনে হক থেকে অপসৃত হয়, যে আবেদ, আলেম, ফকীহ, যাহেদ, দার্শনিক অথবা চিকিৎসক সেই সত্য হতে বাহির হয়ে যায়, যে সত্যের সহিত রসূল (সা.) প্রেরিত হয়েছেন, আল্লাহ তাঁর রসূল প্রমুখাৎ যে সব বিষয়ের সংবাদ প্রদান করেছেন তার সবটাকে যে বিশ্বাস ও স্বীকার করে না, আল্লাহ। ও তদীয় রসূল যা হারাম করেছেন তা হারাম বলে মানে না, যেমন, যে বিশ্বাস রাখে। যে, তার পীর তাকে রুজী দান করে, সাহায্য করে, বিপদে রক্ষা করে, অথবা সে তার । পীর বা গুরুর ইবাদত (সিজদা, ধ্যান, ন্যর ইত্যাদি) করে অথবা তাকে আল্লাহর

নবী (সা.)-এর উপর সম্যক প্রাধান্য দান করে অথবা সামান্য কোন বিষয়ে তার উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করে অথবা মনে করে যে, সে এবং তার পীর রসূলের আনুগত্যের মুখাপেক্ষী নয় (তাদের জন্য শরীয়তের অনুসরণ জরুরী নয়), তবে ঐ ধরনের সকল লোকই কাফের -যদি তাদের ঐ বিশ্বাস ও কর্ম প্রকাশ করে তাহলে। নচেৎ গোপন করলে তারা মুনাফেক।।

অতঃপর শাইখুল ইসলাম ঐ শ্রেণীর মানুষের আধিক্য হওয়ার কারণ দর্শিয়ে। বলেন, ইলম ও ঈমানের প্রতি আহবানকারী আলেমের সংখ্যা নগণ্য হওয়ার ফলে ওদের সংখ্যা অধিক বেড়ে গেছে। এ ছাড়া অন্য প্রকার বিদআতী যাদের উপর কোন মন্তব্য করার পুর্বে খুব বিচার-বিবেচনা ও দৃঢ় নিশ্চয়তার প্রয়োজন আছে। কারণ কুফর আকীদায় (বিশ্বাসে) হয় এবং আমলেও। আর উভয়ের জন্য শরীয়তে ভিন্ন ভিন্ন অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। আবার যে কথা’ কিতাব-সুন্নাহ ও ইজমা’ (সর্বসম্মতি)তে কুফর তার জন্য সাধারণভাবে বলা যায় যে, যে ব্যক্তি ঐ কথা বলবে সে কাফের হয়ে যাবে; যেমন। শরয়ী দলীলে তার সাক্ষ্য বহন করে। (কিন্তু নির্দিষ্টভাবে কোন ব্যক্তি বিশেষকে তা বলা যাবে না।)

ঈমান আল্লাহ ও তদীয় রসুলের নিকট হতে প্রাপ্ত ও লব্ধ বস্তু। অতএব তা কার আছে এবং কার নেই, সে মন্তব্য কেউ কারো খোয়ল-খুশী বা ধারণা। ও অনুমান দিয়ে করতে পারে না। তাই নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তি প্রসঙ্গে বলা যাবে না যে, অমুক ব্যক্তি ঐ কথা বলে তাই সে কাফের। কারণ কাউকে কাফের সাবস্ত করার জন্য কয়েকটি শর্ত পূরণ হতে হবে; যেমন, ঐ ব্যক্তি ঐ কথা বলা অবৈধ বা কুফরী তা জানবে, তা সজ্ঞানে বলবে, ঐ ‘কথা’ অবৈধ হওয়ার বিষয়ে তার নিকট দলীল পেশকৃত হবে। সে তা মনের ভুলে বলবে না, ঐ কথা অবৈধ হওয়ার ব্যাপারে তার মনে কোন সংশয় থাকবে না ইত্যাদি। (ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ ৩/৩৫৪)

উপযুক্ত শর্তাবলী যদি ঐ ব্যক্তির মাঝে পাওয়া যায়, তবেই তাকে কাফের বলা যাবে, তার পূর্বে নয়। সুতরাং যদি কেউ বলে যে, সুদ বা মদ হালাল, তবে সে কাফের হবে। কিন্তু কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির ক্ষেত্রে তা বলা যাবে না। কারণ, এমনও হতে পারে যে, ঐ ব্যক্তি কারো নিকট হতে কোন দিন শুনেনি যে, তা হারাম। অথবা শুনেছে; কিন্তু মস্তিষ্কবিকৃতির ফলে সে বলছে। অথবা সে মনে করে, তা হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোন শক্ত দলীল নেই। অথবা সে সব কিছু জানত, কিন্তু অসাবধানতায় বা মনের ভুলে তা হালাল বলে ফেলেছে অথবা ঐ বিষয়ে তার কোন সন্দেহ ও সংশয় আছে তাই হালাল মনে করেছে; যেমন অনেকে ব্যাংকের সুদকে হালাল মনে করে। কারণ ঐ সুদ কুরআনে নিষিদ্ধ জাহেলিয়াতের সুদ বটে কিনা, সে বিষয়ে তার সন্দেহ আছে, অথবা ভাবে যে, কেবল সেই সুদ হারাম যাতে গরীব শোষণ করা হয়; কিন্তু যে।

সুদ সরকারের নিকট হতে নেওয়া হয় যাতে কোন শোষণ হয় না (?) তা অবৈধ নয়। অথবা সন্দেহ করে যে, এটা বড় ব্যবসায় অংশগ্রহণ করে তার লভ্যাংশ উপভোগ করা অথবা দারূল কুফরে সুদ হালাল ইত্যাদি। এগুলির একটি পাওয়া গেলে ঐ ব্যক্তিকে কাফের বলা যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার এসব অযথা ও অযৌক্তিক সন্দেহ নিরসন হয়েছে এবং তা হারাম হওয়ার ব্যাপারে অকাট্য দলীল তার সামনে। পেশ করা হয়েছে। অতএব যদি কেউ অজান্তে সুদ খায়, তবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন, হারাম জানা সত্ত্বেও যদি অবহেলা করে খায় তবে সে মহাপাপী (ফাসেক), কোন সন্দেহের কারণে যদি তা হালাল মনে করে, তবে সেও মহাপাপী এবং যে ব্যক্তি নিঃসন্দেহে হারাম জেনেও হালাল ভেবে খায়, তবে সে সব কিছু জানার পর যেহেতু আল্লাহর হারামকৃত বস্তুকে অস্বীকার করে হালাল মনে করে, তাই সে কাফের হয়ে যায়।

তদনুরূপ কবর পূজা (কবরকে সিজদা করা, তওয়াফ করা, সেখানে মানত মানা, ন্যর মানা, নযর-নিয়ায পেশ করা ইত্যাদি) শির্ক ও কুফর। কিন্তু অমুক মিয়া কবর পুজে, তাই সে কাফের -তা চট করে বলতে পারি না। কারণ, হয় তো সে জানে না যে, কোন কবরের (মৃত মানুষের) নিকট সুখ-সমৃদ্ধি, সন্তান বা রুজী চাইলে, বা সিজদা করলে শির্ক বা কুফর হয় অথবা তা জানে, কিন্তু ঐ বিষয়ে তার কাছে কোন। সন্দেহ আছে। যদি এসব কিছু তার নিকট হতে দূর করে দেওয়া হয় এবং তা সত্ত্বেও সে হক ও ন্যায়ের প্রতি প্রত্যাবর্তন না করে, তবে তাকে কাফের বা মুশরিক বলা। হবে, তার পূর্বে নয়।

মোট কথা, যে বিদআতী সবকিছু জেনে-শুনে, নিঃসন্দেহে কোন এমন কাজ করে। (যেমন, কোন সৰ্ববাদিতসম্মত ওয়াজেব বা হারাম অস্বীকার করা, বা কোন সর্বসম্মত হারামকে হালাল বা তার বিপরীত মনে করা অথবা আল্লাহ, তাঁর রসুল ও কুরআন বিষয়ে এমন ধারণা রাখা, যা শরীয়ত খন্ডন করে ইত্যাদি) যাতে কাফের হতে হয়, তবে সে কাফের।

আর যদি এমন কাজ করে যাতে কেউ কাফের হয়ে যায় না; বরং পাপী হয় (যেমনঃ সমস্বরে যিকর করা, কিয়াম করা, নামাযের পর জামাআতী দুআ করা প্রভৃতি) তাহলে সে শরয়ী আইনে অবাধ্য হওয়ার ফলে কেবল পাপীই হবে; কাফের হবে না। এদের জন্য হেদায়াত প্রাপ্তির দুআ করা হবে।

মানুষ মাত্রেই ভুল করে থাকে। যাঁর সুন্দর আচরণ মন মুগ্ধ করে, যাঁর চলার পথ ও প্রণালী আহলে সুন্নাহর, যিনি শরয়ী যথার্থ জ্ঞানের অধিকারী, যাঁর ইমের সাথে ন্যায়পরায়ণতা ও সত্যনিষ্ঠতা প্রসিদ্ধ, যিনি অজ্ঞতা, খেয়াল-খুশী ও প্রবৃত্তির অনুসরণ হতে বহু দুরে, যাঁর কথা ও মতের দলীল কুরআন ও সুন্নাহ তাঁর কোন কোন বিষয়ে দু-একটি ইজতেহাদী ভুল ধর্তব্য নয়। সে ত্রুটি তাঁকে তাঁর মর্যাদা হতে চত করে না এবং তাঁর কোন মানহানিও ঘটায় না। তিনি যদি জীবিত থাকেন তবে তাঁর সেই ত্রুটির উপর শিষ্টতা, ভদ্রতা ও শ্রদ্ধার সহিত তাঁকে অবহিত ও সতর্ক করা উচিত। আপোসের সহৃদ বৈঠকে, শ্রদ্ধাপূর্ণ লেখন বা দুরালাপের মাধ্যমে সৎ ও মঙ্গলে পারস্পরিক সহায়তা করা ওয়াজেব।

যেহেতু দ্বীন তার অনুসারীদের পারস্পরিক হিতোপদেশ ও হিতৈষিতার মাধ্যমে পূর্ণ হয়। তাই প্রত্যেক অভিজ্ঞ আলেমের উচিত, তাঁর মান ও মর্যাদা খেয়াল রেখে, দলীলের সহিত, কোন প্রকার রুঢ়তা বা আত্মগর্ব প্রকাশ না করে, প্রজ্ঞা, যুক্তি ও সদুপদেশের সাথে ভুল ধরিয়ে দেবার চেষ্টা করা। যেমন তাঁরও উচিত, সেই ভুল স্বীকার করে সঠিক ও সত্য গ্রহণ করতে কোন লজ্জা, দ্বিধা ও সংকোচ না করা। এইরূপে ঐক্য, সৌহার্দ, সম্প্রীতি ও আল্লাহর জন্য ভ্রাতৃত্ব বজায় থাকবে এবং সকল মুসলিম ভাই ভাই হয়ে উঠবে - ইনশাআল্লাহ।

কিন্তু ত্রুটি করে যদি আলেম ইহলোক ত্যাগ করে থাকেন, তবে তাঁর জন্য ক্ষমা প্রার্থনার দুআ করতে হবে। কারণ, আম্বিয়াগণ ব্যতীত অন্য কেউই নিষ্পাপ, নিষ্কলুষ ও ত্রুটিমুক্ত নয়। তবে তাঁর সেই ভুল সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সতর্ক ও সাবধান অবশ্যই করতে হবে; যাতে কেউ তাঁর সেই ভুলের অনুসরণ না করে বসে। তবে ঐ। ভুল ও ত্রুটি বর্ণনায় যেন ঐ বিগত আলেমের প্রতি কোন অসমীচীন মন্তব্য অথবা তুচ্ছ ধারণা ও মানহানির ইচ্ছা না থাকে।

প্রত্যেক আলেমের উচিত, আহলে সুন্নার আকীদাহ ও বিশ্বাসকে চিরঞ্জীব রাখা, অপরের ইজতিহাদী (খেয়াল-খুশী বা প্রবৃত্তির বশবর্তী নয়, বিদ্বেষ বা ঈর্ষাজনিত নয় এমন) কথা, রায় বা মন্তব্যকে সমীহ ও শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখা এবং ঐ ধরনের বক্তাকে চোখ বুজে কাফের, বিদআতী ইত্যাদি না বলা। বরং মার্জিত আপোস সমঝােতায়। আল্লাহর দ্বীনকে এক হয়ে ধারণ করা সকলের মহান কর্তব্য।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন