মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সত্য এবং নিষ্ঠার সাথে এ মহান কালেমা পাঠ করলে এবং এর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য দাবি অনুযায়ী আমল করলে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে এ কালেমার এক বিশেষ সুফল প্রতিফলিত হবে। তম্মধ্যে নিকটবর্তী বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য:
(ক) এই কালেমা মুসলমানদের মধ্যে একতা সৃষ্টি করে। আর এর ফল স্বরূপ তারা আল্লাহর বলে বলীয়ান হয়ে বিজয় সূচিত করতে পারে আল্লাহ দ্রোহীদের উপর। কেননা তখন তারা একই দীনের অনুসারী এবং একই আকীদায় বিশ্বাসী হয়ে পড়ে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘‘তিনিই তোমাকে শক্তি যুগিয়েছেন আপন সাহায্যে ও মুমিনদের দিয়ে। আর তিনি প্রীতি সঞ্চার করেছেন তাদের অন্তরে। যমীনের সকল সম্পদ ব্যয় করলেও তুমি তাদের হৃদয়ে প্রীতি সঞ্চার করতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তাদের মনে পারস্পরিক প্রীতি সঞ্চার করেছেন, নিশ্চয়ই তিনি পরাক্রমশালী এবং প্রজ্ঞাময়।’’ (সূরা আল আনফাল-৬২-৬৩)
ইসলামী আকীদায় যদি অনৈক্য সৃষ্টি হয় তাহলে তা থেকে পরস্পরের মধ্যে বিভক্তি এবং ঝগড়া কলহের জন্ম নেয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
‘‘অতঃপর তারা তাদের কাজকে বহুধা বিভক্ত করে দিয়েছে প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে আনন্দিত।’’ (সূরা আল ম’মিনূন -৫৩)
অতএব মানুষের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টির একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে তাওহীদ ও ঈমানী আকীদার বন্ধনে একত্রিত হওয়া। আর এটাই " لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ " এর একমাত্র অর্থ। ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পূর্বে আরবদের অবস্থা এবং তাদের পরবর্তী অবস্থা বিবেচনা করলেই একথা সুস্পষ্ট বুঝা যাবে।
খ ) " لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ " এই কালেমার ভিত্তিতে গড়ে উঠা সমাজের মধ্যে ফিরে আসে শান্তি আর নিরাপত্তার গ্যারানিট। কেননা; এ ধরনের ঈমানের ফলে ঐ সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তিই আল্লাহ যা হালাল করেছেন তা গ্রহণ করে, আর যা হারাম করেছেন তাকে পরিহার করে। আর সকল মানুষ ফিরে আসে সীমা-লঙ্ঘন, অত্যাচার আর শক্রতার পথ থেকে। একে অপরের প্রতি বাড়িয়ে দেয় সহানুভূতি, ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের হাত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ
‘‘নিশ্চয়ই মুমিনরা একে অপরের ভাই।’’ (সূরা আল হুজুরাত, ১০ )
আর এই বাণীর অনুসরণে একে অপরকে জড়িয়ে নেয় প্রীতি আর ভালোবাসার জালে। এর বাস্তব নিদর্শন হলো আরবদের অবস্থা। তারা এ কালেমার ছায়াতলে একত্রিত হওয়ার পূর্বে একে অপরের চরম দুশমন ছিল। হত্যা, লুণ্ঠন আর রাহাজানির জন্য তারা গর্ববোধ করত। আর যখন তারা " لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ " এর ঝান্ডাতলে একত্রিত হলো তখন গড়ে উঠল তাদের মাঝে ভ্রাতৃত্বের সীসাঢালা প্রাচীর।
‘‘মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাথিরা হলেন কাফেরদের উপর কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল।’’ (সূরা আল-ফাত্হ, ২৯) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন :
‘‘আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর যা আল্লাহ তোমাদেরকে দান করেছেন। তোমরা পরস্পর শক্র ছিলে অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন, ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছ।’’ (সূরা আলে ইমরান: ১০৩)
(গ) এ কালেমার বন্ধনে একত্রিত হয়ে মুসলমানগণ লাভ করবে খেলাফতের দায়িত্ব এবং নেতৃত্ব দান করবে এ পৃথিবীর, আর তারা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে মোকাবিলা করবে সকল ষড়যন্ত্র ও বিভিন্ন মতবাদের। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
‘‘তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই সুদৃঢ় করবেন তাদের দ্বীনকে যে দ্বীনকে তিনি পছন্দ করেছেন তাদের জন্য এবং ভয়-ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদেরকে শান্তি দান করবেন, তারা একমাত্র আমারই ইবাদত করে এবং আমার সাথে কোন কিছুকে শরীক করে না।’’ (আন্ নুর-৫৫)
এখানে এই মহান সফলতা অর্জনের জন্য আল্লাহ তা‘আলা একমাত্র তাঁর ইবাদত করা এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করার শর্তারোপ করেছেন আর এটাই হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর দাবি ও অর্থ।
ঘ) যে ব্যক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" এর স্বীকৃতি দান করবে এবং এর দাবি অনুযায়ী আমল করবে তার হৃদয়ের মধ্যে খুঁজে পাবে এক অনাবিল প্রশান্তি। কেননা সে এক প্রতিপালকের ইবাদাত করে এবং তিনি কি চান এবং কিসে তিনি রাজি হবেন সে অনুপাতে কাজ করে এবং যে কাজে তিনি নারাজ হবেন তা থেকে বিরত থাকে। আর যে ব্যক্তি বহু দেব-দেবীর পূজা করে তার হৃদয়ে এমন প্রশান্তি আসতে পারে না, কারণ ঐ সমস্ত উপাস্যদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্য হবে ভিন্ন ভিন্ন এবং প্রত্যেকে চাবে তাকে ভিন্ন ভাবে পরিচালনা করার জন্য। আল্লাহ বলেন,
‘‘আল্লাহ একটি দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন, কোন একজন লোকের উপর পরস্পর বিরোধী কয়েকজন মালিক রয়েছে আরেক ব্যক্তির প্রভু মাত্র একজন তাদের উভয়ের উদাহরণ কি সমান?’’ (সূরা আয্ যুমার-২৯)
ইমাম ইব্নুল কাইয়েম রহ. বলেন, এখানে আল্লাহ একজন মুশরিক ও একজন একত্ববাদে বিশ্বাসী ব্যক্তির অবস্থা বুঝাবার জন্য এই উদাহরণ দিয়েছেন। একজন মুশরিকের অবস্থা হচ্ছে এমন একজন দাস বা চাকরের মত যার উপর কর্তৃত্ব রয়েছে একত্রে কয়েকজন মালিকের। আর ঐ সমস্ত মালিকরা হচ্ছে পরস্পর বিরোধী, তাদের সম্পর্ক হচ্ছে দা-কুমড়োর সম্পর্ক, একজন অপর জনের চির শক্র। আর আয়াতে বর্ণিত (মোতাশাকেছ) এর অর্থ হলো, ‘‘যে ব্যক্তির চরিত্র অত্যন্ত খারাপ।’’ আর মুশরিক যেহেতু বিভিন্ন উপাস্যের পূজা করে সেহেতু তার উপমা দেয়া হয়েছে ঐ দাস বা চাকরের সাথে, যার মালিক হচ্ছে একত্রে কয়েকজন ব্যক্তি যাদের প্রত্যেকই তার খেদমত পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করে। এমতাবস্থায় তার পক্ষে এসব মালিকদের সবার সন্তুষ্টি অর্জন করা অসম্ভব। আর যে ব্যক্তি শুধু এক আল্লাহর ইবাদত করে তার উদাহরণ হচ্ছে ঐ চাকরের মত যে শুধু একজন মালিকের অধীনস্থ। সে তার মালিকের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে অবগত থাকে এবং তার মনস্ত্তষ্টির পথ সে জানে।
তাই এ চাকরের জন্য বহু মালিকের অত্যাচার ও নিপীড়নের ভয় থাকে না। শুধু তাই নয়, নিজের মনিবের প্রীতি, ভালোবাসা, দয়া ও করুণা নিয়ে অত্যন্ত নিরাপদে সে তার নিকট বসবাস করে। এখন প্রশ্ন হলো এ দু’জন চাকরের অবস্থা কি এক?
(ঙ) এই কালেমা র অনুসারীরা দুনিয়া ও আখেরাতে সম্মান ও সুমহান মর্যাদা লাভ করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘‘যে আল্লাহর দিকে একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর সাথে শরীক না করে এবং যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে যেন আকাশ থেকে ছিটকে পড়ল, অতঃপর মৃতভোজী পাখি তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল অথবা বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে কোন দুরবর্তী স্থানে নিক্ষেপ করল।’’ (আল হাজ্জ-৩১)
এই আয়াতের অর্থ থেকে বুঝা-গেল যে, তাওহীদ হচ্ছে সুমহান উচ্চ-মর্যাদা সম্পন্ন এবং শিরক হচ্ছে নীচ, হীন।
আল্লামা ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, ঈমান এবং তাওহীদের সুমহান মর্যাদার কারণে এর উদাহরণ দেয়া হয়েছে সুমহান আকাশের সাথে আর ঐ আকাশ হচ্ছে তার ঊর্ধ্বলোকে উঠার সিঁড়ি এবং তাতেই সে অবতরণ করবে। আর ঈমান ও তাওহীদ পরিত্যাগকারীর উদাহরণ দেয়া হয়েছে আকাশ থেকে জমিনের অতল গহবরে পড়ে যাওয়ার সাথে যার ফলে তার হৃদয় মন হয়ে যাবে সংকুচিত, আর সে অনুভব করবে আঘাতের পর আঘাত এবং যে পাখি তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলো ছোঁ মেরে নিয়ে যাবে ও ছিন্ন-ভিন্ন করে দেবে। ঐ পাখির উদাহরণ দিয়ে বুঝান হয়েছে এমন শয়তানদের, যারা তার সহযোগী হবে এবং তাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য অস্থির ও বিব্রত করতে থাকবে। আর যে বাতাস তাকে দূরবর্তী সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করবে তা হলো তার মনের কামনা বাসনা, যা তাকে আকাশ থেকে মাটির অতল গহবরে নিক্ষেপ করতে প্রলুব্ধ করবে। ১.
(চ) এ কালেমা তার জীবন সম্পদ ও সম্মানের নিরাপত্তা দান করবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আমি আদিষ্ট হয়েছি মানুষের সাথে জিহাদ করার জন্য যে পর্যন্ত না তারা বলবে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ আর যখন তারা এ স্বীকৃতি দান করবে তখন আমার নিকট থেকে তাদের জীবন ও সম্পদকে নিরাপদ করবে। তবে তার - ইসলামের - কোন হক বা অধিকার লঙ্ঘন হলে-তা আর নিরাপদ থাকবে না।’’
এখানে তার অধিকার বলতে বুঝান হয়েছে তারা যখন এ কালেমার স্বীকৃতি এবং দাবি অনুযায়ী কাজ করা থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখবে, অর্থাৎ তাওহীদের উপর অবিচল থাকবে না, ইবাদতকে শিরক মুক্ত করবে না ও ইসলামের প্রধান প্রধান কাজগুলো আদায় করবে না, তখন ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’’ এর স্বীকৃতি তাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দান করবে না বরং এজন্য তাদের জীবন নাশ করা হবে, যেভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবাগণ করেছেন।
এছাড়া ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে ইবাদত, মোয়ামালাত, চরিত্র গঠন, আচার অনুষ্ঠান সবকিছুকেই প্রভাবিত করবে এ কালেমা।
পরিশেষে আল্লাহর তাওফীক কামনা করি, আল্লাহর পক্ষ থেকে সালাত ও সালাম আমাদের নবী মুহাম্মাদের উপর এবং তাঁর আহাল ও সাহাবায়ে কেরামদের উপরেও।
সমাপ্ত
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/27/11
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।