HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মানুষের প্রাণ বাঁচাতেই কিসাস বা প্রাণদণ্ড

লেখকঃ আলী হাসান তৈয়ব

ইসলামী রাষ্ট্র কি মৃত্যুদণ্ড বাতিল করতে পারে ?
আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلۡقِصَاصُ فِي ٱلۡقَتۡلَىۖ ٱلۡحُرُّ بِٱلۡحُرِّ وَٱلۡعَبۡدُ بِٱلۡعَبۡدِ وَٱلۡأُنثَىٰ بِٱلۡأُنثَىٰۚ فَمَنۡ عُفِيَ لَهُۥ مِنۡ أَخِيهِ شَيۡءٞ فَٱتِّبَاعُۢ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَأَدَآءٌ إِلَيۡهِ بِإِحۡسَٰنٖۗ ذَٰلِكَ تَخۡفِيفٞ مِّن رَّبِّكُمۡ وَرَحۡمَةٞۗ فَمَنِ ٱعۡتَدَىٰ بَعۡدَ ذَٰلِكَ فَلَهُۥ عَذَابٌ أَلِيمٞ ١٧٨ ﴾ [ البقرة : ١٧٨ ]

‘হে মুমিনগণ, নিহতদের ব্যাপারে তোমাদের উপর ‘কিসাস’ ফরয করা হয়েছে। স্বাধীনের বদলে স্বাধীন, দাসের বদলে দাস, নারীর বদলে নারী। তবে যাকে কিছুটা ক্ষমা করা হবে তার ভাইয়ের পক্ষ থেকে, তাহলে সততার অনুসরণ করবে এবং সুন্দরভাবে তাকে আদায় করে দেবে। এটি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে হালকাকরণ ও রহমত। সুতরাং এরপর যে সীমালঙ্ঘন করবে, তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।’ {সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৭৮}

কোনো বৈধ কারণ ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা অপরাধের ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ مِنۡ أَجۡلِ ذَٰلِكَ كَتَبۡنَا عَلَىٰ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ أَنَّهُۥ مَن قَتَلَ نَفۡسَۢا بِغَيۡرِ نَفۡسٍ أَوۡ فَسَادٖ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ ٱلنَّاسَ جَمِيعٗا وَمَنۡ أَحۡيَاهَا فَكَأَنَّمَآ أَحۡيَا ٱلنَّاسَ جَمِيعٗاۚ وَلَقَدۡ جَآءَتۡهُمۡ رُسُلُنَا بِٱلۡبَيِّنَٰتِ ثُمَّ إِنَّ كَثِيرٗا مِّنۡهُم بَعۡدَ ذَٰلِكَ فِي ٱلۡأَرۡضِ لَمُسۡرِفُونَ ٣٢ ﴾ [ المائ‍دة : ٣٢ ]

‘এ কারণেই, আমি বনী ইসরাঈলের উপর এই হুকুম দিলাম যে, যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করা কিংবা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। আর যে তাকে বাঁচাল, সে যেন সব মানুষকে বাঁচাল। আর অবশ্যই তাদের নিকট আমার রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে এসেছে। তা সত্ত্বেও এরপর যমীনে তাদের অনেকে অবশ্যই সীমালঙ্ঘনকারী।’ {সূরা আল-মায়িদা, আয়াত : ৩২}

অতএব যখন কোনো ইসলামী রাষ্ট্র মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে তখন তা তার একটি দায়িত্বই পালন করে মাত্র। ইসলামী রাষ্ট্র বা অন্য কোনো রাষ্ট্রের অধিকার নেই একটি জাতি বা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ যে বিধান পালন করে, তা বাতিল করে দেয়।

ওপরের আয়াতে যেমনটি আমরা লক্ষ্য করলাম, ইসলাম হকদারের হক রক্ষার্থে ক্ষমা করার অধিকার কেবল হকদার পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রেখেছে। এদিকে ইসলাম তাকে ক্ষমা করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হত্যাকারী যথেষ্ট শিক্ষা পাবার পর দণ্ড কার্যকরের প্রাক্কালে তাকে ক্ষমা করা হয়। ইচ্ছাকৃত হত্যা বা পরিকল্পিত হত্যা ক্ষমা করার বিধানও ইসলাম দিয়েছে যা বাকারার ১৭৮ নং আয়াতে অতি চমৎকারভাবে বর্ণিত হয়েছে। বলা হয়েছে যে, ক্ষমা করার অধিকারী নিহতের হকদারগণ, আর কেউ নয়। সে ক্ষমা হতে পারে রক্তপণ দিয়ে, কিংবা রক্তপণ ছাড়াও যদি ক্ষমা করা হয় তাহলে তাও গ্রহণযোগ্য। বাংলাদেশের প্রশাসন আগ থেকে তৎপর হলে যথেষ্ট রক্তপণ দিয়ে হয়ত সে সব হতভাগা যুবকদের প্রাণ রক্ষা করতে পারতো নিহতের হকদারদের রাজি করিয়ে। অতএব হত্যার শাস্তির এ ব্যবস্থার মধ্যে শাস্তি ও ক্ষমা পাওয়ার দুটো দিকই আজো কার্যকর রয়েছে।

এটিই কিন্তু ন্যায়সঙ্গত, এমনকি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাতেও। কেননা রাষ্ট্রের জন্য অধিকাংশ জনগণ বা সকল নাগরিকের পছন্দের বাইরের কোনো আইন বাস্তবায়ন সঙ্গত নয়। আরও জোর দিয়ে বললে, রাষ্ট্রের জন্য কোনো চোর চুরিকৃত পণ্যসহ গ্রেফতার হবার পর সেই দ্রব্যের মালিককে চুরি যাওয়া সম্পদের মালিকানা ছেড়ে দিতে বাধ্য করার অধিকার নেই।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনায় অভিযুক্তদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বা তার কিছু নাগরিক কর্তৃক হামলা ঘটানোর অভিযোগের ভিত্তিতেই পুরো একটি দেশকে শায়েস্তা করার অনুমতি দেয় জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ শুধু দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবার উদ্দেশ্যেই। যদিও এ অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে মানুষ নিশ্চিত নয়। এর প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে কেবল আল্লাহ তাআলাই অবগত।

সুতরাং নিরপরাধ মানুষকে স্বেচ্ছায় হন্তারকের অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড একটি কার্যকর প্রতিকার। আর বিনা অপরাধে অনেক নিরীহ ব্যক্তি হত্যার শিকার হওয়ার চেয়ে ন্যায়ানুগ বিচার ও যথোপযুক্ত তদন্ত-প্রমাণের পর কঠোর শর্তসাপেক্ষে ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে একজন অপরাধীকে হত্যার এখতিয়ার প্রদান করা অনেক উত্তম, যে অপরাধ স্বীকার করে নেয় খোদ অপরাধী বা তার দল।

আল্লাহ তা‘আলা এ বাস্তবতাকে সমর্থন করে বলেন,

وَلَكُمۡ فِي ٱلۡقِصَاصِ حَيَوٰةٞ يَٰٓأُوْلِي ٱلۡأَلۡبَٰبِ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٧٩ ﴾ [ البقرة : ١٧٨، ١٧٩ ]

‘আর হে বিবেকসম্পন্নগণ, কিসাসে রয়েছে তোমাদের জন্য জীবন, আশা করা যায় তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে।’ {সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৭৯}

অতএব কিসাস প্রকৃতপক্ষে অনেক নিরপরাধ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা প্রদান করে। অনেক সময় সীমালঙ্ঘনকারী ও অপরাধীরা যুলম বা সীমালঙ্ঘনবশত যাদের ওপর হাত ওঠায়। তেমনি তা অনেককে জীবন দান করে যারা অন্যের হত্যার ক্রোধ প্রকাশে অসংযত। কিসাস তাদেরকে সেই হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পূর্বে শতবার ভাবতে বাধ্য করে যে এর পরিণাম শেষ পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডতে গিয়ে দাঁড়াবে।

এ শাস্তির দ্বারা ইসলাম শান্তিপ্রিয় নিরীহ ব্যক্তিদের অবৈধ হত্যার ঝুঁকি ও হুমকি থেকে সাহায্য করে। এ কাজটি পুরোপুরি অধিকাংশ রাষ্ট্রই করে থাকে। এমনকি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো পর্যন্ত এ থেকে বিচ্ছিন্ন নয়।

তবে ইসলাম নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যার বৈধতা দেয় না। অনুমতি দেয় না অবৈধভাবে শান্তিপ্রিয় ব্যক্তিকে ভীতি প্রদর্শনের। যেমন ইসলাম মনে করে অপরাধীদের সহযোগিতা প্রদান কাউকে নিজের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনও কমিয়ে দেয় না। সুতরাং ইসলাম বিশ্বময় শান্তি রক্ষা ও প্রতিষ্ঠায় একে অন্যকে সাহায্য করতে উদ্বুদ্ধ করে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

﴿ وَتَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡبِرِّ وَٱلتَّقۡوَىٰۖ وَلَا تَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَٰنِۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلۡعِقَابِ ٢ ﴾ [ المائ‍دة : ٢ ]

‘সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা কর। মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে পরস্পরের সহযোগিতা করো না। আর আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয় তিনি কঠিন শাস্তিদাতা।’ {সূরা আল-মায়িদা: ০২}

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন