HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বিশ্বনবী প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রের আদর্শ

লেখকঃ সিরাজুল ইসলাম আলী আকবর

প্রেরিত পত্রাবলির প্রতিক্রিয়া
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রেরিত উক্ত দাওয়াতী পত্রসমূহ যে শূন্যগর্ভ উদ্দীপনায় ভরপুর ছিল না, তার বড় প্রমাণ হচ্ছে, পত্রসমূহ প্রাপক ব্যক্তিদের মধ্যে বিচিত্র ধরনের প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছিল। তাদের অনেককে এসব পত্র বিশ্রামের শয্যা থেকে তীব্র কষাঘাতে জাগিয়ে দিয়েছিল; অনেককে অন্ধত্ব ও নিষ্ক্রিয়তার গহবর থেকে বাহিরে তুলে এনেছিল। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেইসব দাওয়াত সম্পর্কে সকলেই কমবেশি ভাবিত হয়ে পড়েছিল। কেউ কেউ তাঁর নবুওয়াতকে অবনত মস্তকে মেনে নিয়েছিল- ঈমান এনেছিল তাঁর উপস্থাপিত দীনের প্রতি। কেউ কেউ মহামূল্যবান হাদিয়া লোক মারফত পৌঁছে দিয়েছিল রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে। এ পর্যায়ে সীরাতুন্নবী ও ইসলামের ইতিহাস পর্যায়ের প্রামাণ্য গ্রন্থাবলীতে বিস্তারিত বিবরণ উদ্ধৃত হয়েছে।

রোমান সম্রাট কাইজারের ভাই তাকে বলল, ফেলে দাও ওই চিঠি। তখন কাইজার স্বীয় ভাইকে লক্ষ্য করে বলল:

এমন ব্যক্তির চিঠি কি করে ফেলে দিতে পারি, যার নিকট সবচাইতে বড় ফিরিশতা (জিবরীল) যাতায়াত করেন। দরবারে উপস্থিত কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান কে সম্বোধন করে বলল:

তুমি যা বলেছ তা যদি সত্যি হয়, তাহলে কোনো সন্দেহ নেই, তিনি একজন নবী। তাঁর কর্তৃত্ব অবশ্যই আমার পায়ের তলার জমিন পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।

রোমান বিশপ পত্র পাঠান্তর গির্জায় পৌঁছে বহু লোকের সামনে বলল:

হে রোমান জনতা, আমাদের নিকট ‘আহমাদ’-এর একখানা পত্র এসেছে। তাতে তিনি আমাদেরকে আল্লাহর দিকে আহ্বান জানিয়েছেন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই এবং আহমাদ আল্লাহর রাসূল।

‘মুকাউকাস’ বলেছেন:

এই নবীর ব্যাপারটি নিয়ে আমি অনেক চিন্তা-ভাবনা করেছি। তিনি পরিত্যাজ্য কোনো কাজের আদেশ করেন না এবং মনের আগ্রহের কোনো জিনিস নিষেধও করেন না। তাঁকে পথভ্রষ্ট, জাদুকর রূপেও দেখতে পাই না- মিথ্যাবাদী গণক রূপেও না।

কাইজারের নিয়োজিত আম্মানের শাসনকর্তা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি একখানি পত্র পাঠিয়েছিলেন। তাতে তার ইসলাম গ্রহণের কথা অকপটে প্রকাশ করেছিলেন। অবশ্য কাইজার তা জানতে পেরে তাকে পাকড়াও করেছিল এবং ইসলাম ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তা মানতে তিনি অস্বীকার করলেন। তখন কাইজার তাকে হত্যা করার নির্দেশ দিল। তিনি যখন নিহত হচ্ছিলেন, তখন কবিতার একটি ছত্র পড়ে জানিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন: ‘মুসলিম সমাজকে জানিয়ে দাও, আমি একজন মুসলিম, আমার হাড় মাংস সবই আমার রব-এর প্রতি একান্ত অনুগত’।

ইয়ামামার রাজা হাওদা ইবন আলী রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট পত্র পাঠিয়ে জবাব দিয়েছিলেন; তাতে তিনি লিখেছিলেন ‘আপনি যে দীনের দাওয়াত দিচ্ছেন, তা কতই না সুন্দর, কতইনা উত্তম’।

বাহরাইনের শাসক মুনযির ইবন সাভী রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াত কবুল করেছিলেন এবং ইসলাম গ্রহণের কথাও তাতে প্রকাশ করেছিলেন।

হিময়ারের শাসকবর্গ ও নাজরানের পাদ্রীগণও ইতিবাচক জবাব দিয়েছিলেন।

ইয়ামেনে কিসরা কর্তৃক নিযুক্ত কর্মকর্তাবৃন্দ, হাযরা মাওত-এর শাসক, আইলার বাদশাহ ও ইয়াহূদীগণ ইসলাম গ্রহণ অথবা জিযিয়া আদায় করতে রাজি হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

হাবশার বাদশাহ নাজ্জাশী তার ঐতিহাসিক চিঠিতে ইসলাম কবুলের কথা এতটা দৃঢ়তার সঙ্গে প্রকাশ করেছিলেন যে, তার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম গায়েবানা নামাযও পড়েছিলেন। এখানে আমরা শুধু নমুনাস্বরূপ প্রেরিত পত্রসমূহের কয়েকটি মাত্র উল্লেখ করলাম। এ হচ্ছে বিপুলের মধ্যে অতি সামান্যে কয়েকটি কথা। এসব থেকে শুধু এটুকুই প্রমাণ করা আমাদের উদ্দেশ্য ছিল যে, নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের দীর্ঘ দাওয়াত এবং তাঁর মহান নবুওয়াত ছিল বিশ্বজনীন। কোনো একটি দেশ বা কোনো একটি এলাকা কিংবা নির্দিষ্ট কোনো জাতি ও গোষ্ঠীর জন্য একান্তভাবে নির্দিষ্ট ছিল না।

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রেরিত দীন কবুলের আহ্বান সম্বলিত দাওয়াতী পত্রাদির প্রতিক্রিয়া উল্লেখ প্রসঙ্গে পারস্য সম্রাট কিসরার প্রতিক্রিয়াটি অনুল্লেখিত থাকা ঠিক হবে না, বিধায় আমাদের স্মরণ করতে হচ্ছে যে, কিসরা তার পূর্ব বংশ সামানীদের উত্তরাধিকারী হিসেবেই সিংহাসনে আসীন হয়েছিল। সে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের দীন কবুলের দাওয়াত প্রত্যাখান করেছিল- একজন আরবের অধীনতা(?) মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। শুধু তাই নয়, দীন ইসলামের এই দাওয়াতকে সে তার নিজের জন্য ও সিংহাসনের জন্য বিপজ্জনক হুমকি মনে করেছিল।

এ কারণে সে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পত্রখানি টুকরো টুকরো করে ফেলেছিল। ইয়ামেনে নিযুক্ত তার শাসনকর্তা ‘বাযান’-কে লিখে পাঠাল যে, তুমি হিজাজের এই ব্যক্তির নিকট দু’জন লোক পাঠিয়ে দাও। তারা যেন তাকে গ্রেফতার করে আমার নিকট নিয়ে আসে। বস্তুতঃ এ হচ্ছে বিশ্বময় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের দীন কবুলের আহ্বানের এক ধরনের প্রতিক্রিয়া। এসব থেকে স্পষ্টত জানা যায় যে, তাঁর দাওয়াত ছিল বিশ্বজনীন, তিনি ছিলেন বিশ্বনবী, বিশ্বের সকল দেশের, সকল কালের, সকল মানুষের জন্য নবী ও রাসূল। কেননা যারা সে দাওয়াত কবুল করেছিলেন, তারা এ দীনকে মানুষের গ্রহণযোগ্য মনে করেই করেছিলেন। আর যারা প্রত্যাখান করেছিল তারাও তাকে তাই মনে করেই করেছিল। নতুবা কোনো জাতীয়তাবাদী ধর্ম অন্য জাতির লোকদের জন্য না গ্রহণের প্রশ্ন উঠে, না প্রত্যাখানের।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন