hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবদান

লেখকঃ ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী

১২
নারী অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায়
নারীর অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার বিষয়টি বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর একটি। নারী মুক্তির প্রবক্তা হিসাবে আমরা হয়ত কেট মিলে (Kate Millet), জার্মেন গ্রীয়ার (Germaine Greer) বা অ্যানী নূরাকীন (Anee Nurakin) প্রমুখের নাম জানি; এক্ষেত্রে আরো উল্লেখ করা হয় মেরী উলস্টন, অ্যানী বেসামন্ত, মার্গারেট সাঙ্গাঁর, সুলতানা রাজিয়া, বেগম সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ মহিলাদের সংগ্রামের ইতিহাস। কিন্তু মানব সভ্যতার ইতিহাসে নারীর অধিকার ও মর্যাদার জন্য যে ব্যক্তি প্রথম সোচ্চার হয়ে ওঠেন, নারীকে সংসার ও সমাজের অবিচ্ছেদ্য ও অপরিহার্য অংশ হিসাবে যে ব্যক্তি প্রথম স্বীকৃতি দেন, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে নারীর অধিকার পরিপূর্ণ আকারে যে ব্যক্তি প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন, সত্যিকার অর্থে যিনি নারী জাগরণ ও নারী মুক্তির প্রবক্তা, তিনি হচ্ছেন ‘একজন পুরুষ’ এবং তিনি আর কেউ নন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। একথা আদৌ অত্যুক্তি হবে না যে, জীবনে অন্য কিছু না করলেও শুধুমাত্র নারী জাগরণের ক্ষেত্রে তাঁর অবদানই বিশ্ব মনীষায় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সুউচ্চ আসনে সুদৃঢ়ভাবে অধিষ্ঠিত করবে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রথম পদক্ষেপ ছিল কন্যা শিশু হত্যা বন্ধ করা। তিনি বরং কন্যা শিশুর লালন-পালনকে নানাভাবে উৎসাহিত করেছেন এবং নিজেও তাঁর কন্যাদের লালন-পালন কালে সেটা করে দেখিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেন,

«خَيْرُ مَتَاعِ الدُّنْيَا الْمَرْأَةُ الصَّالِحَة»

‘‘(পুরুষদের জন্যে) দুনিয়ার সবচেয়ে বড় নেয়ামত হচ্ছে উত্তম স্ত্রী।’’ [মুসলিম, ১৪৬৭।]

অন্যদিকে নারীকে তিনি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পরে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশী মর্যাদার অধিকারী করেছেন। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : «جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ أَحَقُّ النَّاسِ بِحُسْنِ صَحَابَتِي قَالَ أُمُّكَ قَالَ ثُمَّ مَنْ قَالَ ثُمَّ أُمُّكَ قَالَ ثُمَّ مَنْ قَالَ ثُمَّ أُمُّكَ قَالَ ثُمَّ مَنْ قَالَ ثُمَّ أَبُوك»

‘‘আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! মানুষের মধ্যে কে আমার কাছে সর্বোত্তম সম্মান, মর্যাদা ও সদ্ব্যবহার পাবার যোগ্য? তিনি বললেন, তোমার মা। সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। আবারও জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সাহাবী আবারো জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? এবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার বাবা।’’ [আল-হাদীস, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৯৭১।] নারী মুক্তির দিশারী মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীকে শুধু বাঁচিয়ে রেখে মর্যাদা দিয়েই ক্ষান্ত হন নি, তিনি নারীকে যথাযথ অধিকার দিয়ে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। নারীকে তিনি অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষাগত, আইনগত এবং ধর্মীয় সব দিক দিয়ে তার অধিকার নিশ্চিত করেছেন। এক্ষেত্রে তাঁর বৈপ্লবিক সিদ্ধান্তসমূহকে সংক্ষেপে এভাবে উল্লেখ করা যায় :

ক. নারীকে পিতার সম্পত্তিতে, স্বামী, সন্তান ও মায়ের সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারী ধার্য করা হয়েছে।

খ. বিয়ের সময় নারীকে মোহরানা বা দেনমোহর প্রাপ্তি আবশ্যিক করেছেন এবং তা আদায় না করার বা তা থেকে জোর করে ব্যয় করার অধিকার স্বামী, পিতা বা ভাই কাউকে দেওয়া হয় নি।

গ. নারীকে স্বামী নির্বাচনের পূর্ণ অধিকার দেওয়া হয়েছে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে কোথাও বিয়ে দেওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে একজন অকর্মন্য, অত্যাচারী স্বামী থেকে বিবাহ বিচ্ছেদের পূর্ণ অধিকার নারীকে দেওয়া হয়েছে। একই সাথে বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা নারীকে ২য় বিবাহের বা পুনঃবিবাহের অধিকার দেওয়া হয়েছে।

ঘ. দেওয়ানী ও ফৌজদারী আইনে নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য করেন নি তিনি।

ঙ. বিদ্যাশিক্ষা করা বা জ্ঞানার্জন করার ব্যাপারে নারীকে পুরুষের মতই সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলিম (নরনারী) এর উপর ফরয বা অবশ্য কর্তব্য’’।

চ. অত্যাচার, অপমান, অশালীনতা ও অবমাননা থেকে নারীকে রক্ষার জন্যে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের পোশাক পরিধানে ও জনসমক্ষে চলাফেরার সময় একটি অনুসরণীয় পোষাক-বিধি (Dress Code) মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন।

মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে জীবনদর্শন, মানবিক মর্যাদার রূপরেখা, মানবাধিকারের পরিধি ও সীমা নির্দিষ্ট করেছেন তা মহান আল্লাহ তা‘আলারই অনুমোদিত জীবন বিধান। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই জীবন বিধান যা মানবাধিকারের প্রথম মৌলিক এবং পূর্ণাঙ্গ দিক নির্দেশনা হিসাবে স্বীকৃত তা কেবল কোনো দলীল লিখিত নয়, কোনো স্বাক্ষরিত চুক্তি নয়, কোনো অনুকল্প নয় (hypothesis) , বরং তা হচ্ছে কঠোর বাস্তবতা। নিজের শৈশব থেকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ৬৩ বছরের প্রত্যক্ষ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেকে আদর্শ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রত রেখে নিজের জীবদ্দশাতেই একটি ধ্বংসস্তুপ থেকে, একটি পুঁতিগন্ধময় অন্ধকার আস্তাকুড় থেকে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও মানবিক মুল্যবোধকে তুলে এনে এক সুষম, অনুসরণযোগ্য, সার্বজনীন কল্যাণকর সভ্যতা গড়ে তুলেছিলেন – মানবাধিকার, মানুষের মর্যাদা ও আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্যই ছিল যার ভিত্তি।

মানবতার মুক্তিদূত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনে এই অর্জন, এই স্পষ্ট সর্বজনগ্রাহ্য কল্যাণকর জীবন বিধান বিশ্বের অনেক গবেষক, সাহিত্যিক, দার্শনিক ও বিজ্ঞ ব্যক্তিদের দ্বারা শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি পেয়েছে। মাইকেল হার্ট ‘দ্য হানড্রেড’ গ্রন্থে একশ জন ব্যক্তির শ্রেষ্ঠত্বের ক্রম-বিন্যাস করেছেন। তালিকার প্রথমেই (অর্থাৎ ১ নম্বরে) মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নির্দ্বিধায় দাঁড় করিয়ে তিনি লিখেছেন: “My choice of Muhammad to lead the list of the world’s most influential persons may surprise some readers and may be questioned by others, but he was the only man in history who was supremely successful on both religious and secular levels.” [প্রাগুক্ত, পৃ.৫৫।] নির্দ্বিধায় তাই বলা যায়, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানব মর্যাদা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন