HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহর দিকে দাওয়াতের সম্বল

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমীন

প্রথম সম্বল: আল্লাহ পথের দা‘য়ীরা যে দিকে মানুষকে ডাকবে সে সম্পর্কে ইলম তথা জ্ঞান থাকা
কুরআন ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহের সঠিক জ্ঞান থাকা। কেননা এ দু’ প্রকার ইলম ব্যতীত অন্যান্য ইলমকে প্রথমে কুরআন ও সুন্নাহের কষ্টিপাথরে যাচাই করতে হয়, যাচাইয়ে পর তা হয়ত কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী হবে বা তা বিরোধী হবে। যদি কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী হয় তবে তা গ্রহণ করা হবে। আর কুরআন ও সুন্নার বিরোধী হলে তা যেই বলুক প্রত্যাখ্যান করা ফরয।

فقد ثبت عن ابن عباس رضي الله عنهما أنه قال : «يوشك أن تنزل عليكم حجارة من السماء أقول : قال رسول الله وتقولون : قال أبو بكر وعمر»

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “সম্ভবত তোমাদের উপর আকাশ থেকে পাথর নাযিল হলেও আমি বলব, এ কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অথচ তোমরা বলছ: আবু বকর ও উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা এরূপ বলেছেন।”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথার বিপরীত আবু বকর ও উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমার কথার ব্যাপারে যদি এরূপ সতর্কীকরণ করা হয় তবে যারা ইলম, তাকওয়া, রাসূলের সাহচর্য ও খিলাফতে তাদের চেয়ে অনেক কম মর্যাদাবান তাদের কথা গ্রহণের ক্ষেত্রে কিরূপ হবে?! অতএব তাদের কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কথা প্রত্যাখ্যান করা অধিক সমীচীন। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ فَلۡيَحۡذَرِ ٱلَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنۡ أَمۡرِهِۦٓ أَن تُصِيبَهُمۡ فِتۡنَةٌ أَوۡ يُصِيبَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٌ ٦٣ ﴾ [ النور : ٦٣ ]

“অতএব যারা তাঁর নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা যেন নিজদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসা অথবা যন্ত্রণাদায়ক আযাব পৌঁছার ভয় করে।” [সূরা : আন্-নূর: ৬৩]

ইমাম আহমদ রহ. বলেছেন, তুমি কি জান ফিতনা কি? এখানে ফিতনা হলো শিরক। সম্ভবত কারো অন্তরে যখন কোন বক্রতা উদয় হয় ও তা কুরআন সুন্নাহ ব্যতীত অন্য কিছুর দিকে প্রত্যাবর্তন করে তাহলে সে ধ্বংস হবে।

আল্লাহ পথের দা‘য়ীর প্রথম সম্বল হবে আল্লাহর কিতাব আল কুরআন ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহীহ ও গ্রহণযোগ্য হাদীসের ইলমের দ্বারা পাথেয় সংগ্রহ করা। ইলম ব্যতীত দাওয়াত অজ্ঞতাপূর্ণ দাওয়াত। আর অজ্ঞভাবে দাওয়াতের সুফলের চেয়ে কুফলই বেশি। কেননা একজন দা‘য়ী নিজে একজন পথপ্রদর্শক ও উপদেশ দাতা। আর সে দা‘য়ী যদি অজ্ঞ হয় তবে সে নিজে পথ ভ্রষ্ট হবে এবং অন্যদেরকেও পথ ভ্রষ্ট করবে। আল্লাহর কাছে আমরা এ কাজ থেকে পানাহ চাচ্ছি। তার অজ্ঞতা দু’টি অজ্ঞতাকে শামিল করে। আর যে অজ্ঞতা দু’টি অজ্ঞতাকে শামিল করে তা সাধারণ অজ্ঞতার চেয়ে মারাত্মক ও ক্ষতিকর। কেননা সাধারণ অজ্ঞতা ব্যক্তিকে কথা বলা থেকে বিরত রাখে, তবে শিক্ষার মাধ্যমে এ অজ্ঞতা দূরীভূত হয়। কিন্তু জাহলে মুরাক্কাব তথা না জেনে জানার ভান করাই হচ্ছে মারাত্মক ক্ষতিকর। কেননা এ ধরনের অজ্ঞরা কখনো চুপ থাকে না, বরং না জেনেও কথা বলতে থাকে। তখন তারা আলোকিত করার চেয়ে ধ্বংসই বেশি করে।

প্রিয় ভাই ও বোনেরা:

ইলম ছাড়া আল্লাহর পথে আহ্বান করা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার অনুসারীদের কাজের বিপরীত। আল্লাহ তাঁর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নির্দেশ দিয়ে যা বলেছেন তা শুনুন। আল্লাহ বলেছেন,

﴿ قُلۡ هَٰذِهِۦ سَبِيلِيٓ أَدۡعُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِۚ عَلَىٰ بَصِيرَةٍ أَنَا۠ وَمَنِ ٱتَّبَعَنِيۖ وَسُبۡحَٰنَ ٱللَّهِ وَمَآ أَنَا۠ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ ١٠٨ ﴾ [ يوسف : ١٠٨ ]

“বল, এটা আমার পথ। আমি জেনে-বুঝে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেই এবং যারা আমার অনুসরণ করেছে তারাও। আর আল্লাহ পবিত্র মহান এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই’’। [সূরা: ইউসুফ: ১০৮]

এখানে আল্লাহ বলেছেন,

﴿ أَدۡعُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِۚ عَلَىٰ بَصِيرَةٍ أَنَا۠ وَمَنِ ٱتَّبَعَنِيۖ ١٠٨ ﴾

“আমি জেনে-বুঝে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেই এবং যারা আমার অনুসরণ করেছে তারাও।” অর্থাৎ যারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ করে। সুতরাং আল্লাহর পথে দাওয়াত দিতে হলে জেনে বুঝে দাওয়াত দিতে হবে, নিজে অজ্ঞ হয়ে নয়।

হে আল্লাহর পথের দা‘য়ী!

তোমরা আল্লাহর এ বাণী ভালভাবে অনুধাবন করো।

﴿ عَلَىٰ بَصِيرَةٍ﴾

অর্থাৎ তিনটি বিষয়ে জেনে বুঝে দাওয়াত দাও।

প্রথমত: যে দিকে দাওয়াত দিবে সে ব্যাপারে দূরদর্শী হওয়া। যেমন: যে দিকে দাওয়াত দিবে সে ব্যাপারে শর‘য়ী জ্ঞান থাকে। কেননা সে হয়ত কোন কাজ ফরয ভেবে সেদিকে আহ্বান করবে কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল তা ফরয নয়। ফলে সে আল্লাহর বান্দাহর উপর অনাবশ্যকীয় জিনিসকে অত্যাবশ্যকীয় করে দিবে। আবার কখনও সে হারাম ভেবে তা থেকে বিরত থাকতে আহ্বান করবে, অথচ তা আল্লাহর দ্বীনে হারাম নয়, ফলে সে আল্লাহর হালালকৃত জিনিসকে হারাম করল।

দ্বিতীয়ত: দাওয়াতের অবস্থা সম্পর্কে দূরদর্শী হওয়া। এজন্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মু‘য়ায রাদিয়াল্লাহু আনহুকে ইয়ামানে প্রেরণ করেন তখন তাকে বলেছিলেন,

«إِنَّكَ سَتَأْتِي قَوْمًا أَهْلَ كِتَابٍ »

“তুমি আহলে কিতাবের এক সম্প্রদায়ের কাছে যাচ্ছ।” [বুখারী, হাদীস নং ১৪৯৬, মুসলিম, হাদীস নং ১৯।] তাদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে বলেছেন এবং এ জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। অতঃএব দা‘য়ী যাদেরকে দাওয়াত দিবে তাদের অবস্থা সম্পর্কে জানবে। তাদের ইলমী অবস্থা কি সে সম্পর্কে ভালভাবে জ্ঞাত হবে। তাদের তর্ক বিতর্ক করার দক্ষতা কি তাও জানবে যাতে প্রস্তুতি নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা ও বিতর্ক করা যায়। কেননা তুমি যখন এ ধরনের বিতর্কে লিপ্ত হবে তখন তোমাকে সত্যের বিজয়ের জন্য শক্তিশালী হতে হবে। কেননা সত্য বিজয় তখন তোমার দক্ষতার উপর নির্ভরশীল। তুমি কখনও এটা ভেবো না যে বাতিল শক্তি তোমার প্রতি সদয় হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «إِنَّكُمْ تَخْتَصِمُونَ إِلَيَّ، وَلَعَلَّ بَعْضَكُمْ أَنْ يَكُونَ أَلْحَنَ بِحُجَّتِهِ مِنْ بَعْضٍ، فَأَقْضِيَ لَهُ عَلَى نَحْوٍ مِمَّا أَسْمَعُ مِنْهُ »

“উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা মামলা মুকাদ্দমা নিয়ে আমার কাছে আস এবং তোমাদের একজন অপরজন অপেক্ষা অধিক বাকপটূ হয়ে যুক্তি তর্কের মাধ্যমে স্বীয় দাবী প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। আমি কথা শুনে তার অনুকুলে রায় প্রদান করি”। [বুখারী, হাদীস নং ২৬৮০, মুসলিম, হাদীস নং ১৭১৩।]

এ হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, বাদী বাতিল হলেও কখনও কখনও অন্যের চেয়ে অধিক বাকপটূ হয়ে যুক্তি তর্কের মাধ্যমে স্বীয় দাবী প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে, ফলে বিচারক তার কথা শুনে তার অনুকূলে ফয়সালা দিয়ে থাকে। তাই যাদেরকে দাওয়াত দিবে তাদের অবস্থা সম্পর্কে জানা আবশ্যক।

তৃতীয়ত: দাওয়াতের পদ্ধতি সম্পর্কে দূরদর্শী হওয়া। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ ٱدۡعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِٱلۡحِكۡمَةِ وَٱلۡمَوۡعِظَةِ ٱلۡحَسَنَةِۖ وَجَٰدِلۡهُم بِٱلَّتِي هِيَ أَحۡسَنُۚ ﴾ [ النحل : ١٢٥ ]

“তুমি তোমরা রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহবান কর এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর”। [সূরা: আন-নাহাল: ১২৫]

কিছু মানুষ খারাপ কাজ দেখেই তা বন্ধ করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে, কিন্তু ভবিষ্যতে তার ও তার মত অন্যান্য হকের প্রতি দা‘য়ীদের উপর কি ফলাফল বর্তাবে তা নিয়ে চিন্তা করে না। এজন্যই দা‘য়ীদের উচিত কোন আন্দোলনে নামার আগে তার ফলাফল কি হবে তা খেয়াল করা ও সে বিষয়ে অনুমান করা। সে সময় হয়ত তার প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে যা ইচ্ছা তা করল, কিন্তু পরবর্তীতে দা‘য়ী ও অন্যান্যদের প্রভাবের কারণে চিরতরে কাজটি নির্বাপিত হয়ে যেতে পারে। এটা হয়ত শীঘ্রই বাস্তবায়িত হবে। এজন্যই আমি দা‘য়ী ভাইদেরকে হিকমত ও ধীরস্থীরতার সাথে কাজ করতে উৎসাহিত করি। যদিও এতে কিছুটা বিলম্ব হয়, তথাপি শেষ পরিণাম হবে আল্লাহর ইচ্ছায় সুদূরপ্রসারী।

কুরআন ও সুন্নাহের সহীহ ইলমের সাহায্যে দা‘য়ীর পাথেয় সংগ্রহ করা যেমন শর‘য়ী বক্তব্যের চাহিদা তেমনি ভাবে এটা স্পষ্ট বিবেকেরও চাহিদা, যাতে কোন দ্বিধা সংশয় নেই। কেননা আপনার পথ জানা না থাকলে কিভাবে আল্লাহর পথে ডাকবেন? আপনি শরী‘য়ত সম্পর্কে কিছু জানেন না, তাহলে কিভাবে আপনি দা‘য়ী ইলাল্লাহ হবেন?

তাই মানুষের যদি ইলম না থাকে তবে সর্বপ্রথম তাকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত, তারপরে আল্লাহর পথে মানুষকে ডাকা উচিত।

কেউ হয়ত বলতে পারে, আপনার এ কথা কি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিন্মোক্ত বাণীর সাথে বিরোধপূর্ণ নয়? «بلغوا عني ولو آية»

“তোমার কাছে আমার একটা আয়াত পৌঁছলেও তা মানুষের কাছে পৌঁছে দাও।”

জবাবে বলব: এটা বিরোধপূর্ণ নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার পক্ষ থেকে পৌঁছে দাও। তাহলে আমরা যা পৌঁছাবো তা অবশ্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হতে হবে। এটাই আমরা উদ্দেশ্য করেছি। আমরা যখন বলি যে, দা‘য়ী ইলমের মুখাপেক্ষী, তখন আমাদের উদ্দেশ্য এটা নয় যে, তারা ইলম ছাড়াও অন্যান্য কিছু প্রচার করবে। বরং আমাদের উদ্দেশ্য হলো সে যা জানে তাই মানুষকে প্রচার করবে, যা জানে না সে সম্পর্কে কোন কথা বলবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন