মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
‘উক্ত দল হ’ল ‘আহলুল হাদীছ জামা‘আত’। যারা রাসূলের বিধানসমূহের হেফাযত করে ও তাঁর ইল্ম কুরআন ও হাদীছের পক্ষে প্রতিরোধ করে। নইলে মু‘তাযিলা, রাফেযী (শী‘আ), জাহমিয়া, মুরজিয়া ও আহলুর রায়দের নিকট থেকে আমরা সুন্নাতের কিছুই আশা করতে পারি না। বিশ্বপ্রভু এই বিজয়ী দলকে দ্বীনের পাহারাদার হিসাবে নিযুক্ত করেছেন এবং ছাহাবা ও তাবেঈনের সনিষ্ঠ অনুসারী হবার কারণে তাদেরকে হঠকারীদের চক্রান্তসমূহ হ’তে রক্ষা করেছেন। .. এরাই হ’লেন আল্লাহর সেনাবাহিনী। নিশ্চয়ই আল্লাহর সেনাদলই হ’ল সফলকাম’ (শারফ ৫)।
২. ইয়াযীদ ইবনে হারূণ (১১৮-২১৭ হিঃ) ও ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (১৬৪-২৪১হিঃ) বলেন, إِنْ لَّمْ يَكُوْنُوْا أَصْحَابَ الْحَدِيْثِ فَلاَ أَدْرِىْ مَنْ هُمْ ؟ ‘তাঁরা যদি আহলেহাদীছ না হন, তবে আমি জানি না তারা কারা’।[1] ইমাম বুখারীও এবিষয়ে দৃঢ়মত ব্যক্ত করেছেন’। ক্বাযী আয়ায বলেন, أَرَادَ أَحْمَدُ أَهْلَ السُّنَّةِ وَمَنْ يَّعْتَقِدُ مَذْهَبَ أَهْلِ الْحَدِيْثِ ‘ইমাম আহমাদ (রহঃ) একথা দ্বারা আহলে সুন্নাত এবং যারা আহলুল হাদীছ-এর মাযহাব অনুসরণ করে, তাদেরকে বুঝিয়েছেন’।[2] ইমাম আহমাদ (রহঃ) আরও বলেন, لَيْسَ قَوْمٌ عِنْدِىْ خَيْراً مِّنْ أَهْلِ الْحَدِيْثِ، لاَ يَعْرِفُوْنَ إِلاَّ الْحَدِيْثَ ‘আহলেহাদীছের চেয়ে উত্তম কোন দল আমার কাছে নেই। তারা হাদীছ ছাড়া অন্য কিছু চেনে না’।[3]
‘নাজী দল হ’ল আহলেহাদীছ জামা‘আত’।... লোকদের মধ্যে তারাই ছিরাতে মুস্তাক্বীম-এর উপর সর্বাপেক্ষা দৃঢ়’ (শারফ ১৫, ৩৩)।
৫. ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর প্রধান শিষ্য ইমাম আবু ইউসুফ (১১৩-১৮২ হিঃ) একদা তাঁর দরবার সন্মুখে কতিপয় আহলেহাদীছকে দেখে উল্লসিত হয়ে বলেন, مَا عَلَى الْأَرْضِ خَيْرٌ مِّنْكُمْ ‘ভূপৃষ্ঠে আপনাদের চেয়ে উত্তম আর কেউ নেই’ (শারফ ২৮)।
৬. আহমাদ ইবনু সারীহ বলতেন, أَهْلُ الْحَدِيْثِ أَعْظَمُ دَرَجَةً مِنَ الْفُقَهَاءِ لِاِعْتِنَائِهِمْ بِضَبْطِ الْأُصُوْلِ - ‘দলীলের উপরে কায়েম থাকার কারণে আহলেহাদীছগণের মর্যাদা ফক্বীহগণের চেয়ে অনেক উর্ধ্বে।[4]
৭. ইমাম আবুদাঊদ (২০২-২৭৫ হিঃ) বলেন, لَوْلاَ هَذِهِ الْعِصَابَةُ لَانْدَرَسَ الْإِسْلاَمُ يَعْنِىْ أَصْحَابَ الْحَدِيْثِ - ‘আহলেহাদীছ জামা‘আত যদি দুনিয়ায় না থাকত, তাহ’লে ইসলাম দুনিয়া থেকে মিটে যেত’ (শারফ ২৯ পৃঃ)।
৮. ওছমান ইবনু আবী শায়বা একদা কয়েকজন আহলেহাদীছকে হয়রান অবস্থায় দেখে মন্তব্য করেন যে, إنَّ فَاسِقَهُمْ خَيْرٌ مِنْ عَابِدِ غَيْرِهِمْ ‘আহলেহাদীছের একজন ফাসিক্ব ব্যক্তি অন্য দলের একজন আবিদের চেয়েও উত্তম’ (শারফ ২৭ পৃঃ)।
‘আমি মুসলমানদের চারটি দলের মধ্যে চারটি বস্ত্ত পেয়েছি : (ক) কুফরী সন্ধান করে পেয়েছি ‘জাহমিয়া’ (অদৃষ্টবাদী)-দের মধ্যে (খ) কূটতর্ক ও ঝগড়া পেয়েছি মু‘তাযিলাদের মধ্যে (গ) মিথ্যা খুঁজেছি ও সেটি পেয়েছি ‘রাফেযী’ (শী‘আ)-দের মধ্যে (ঘ) আমি ‘হক্ব’ খুঁজেছি এবং তা পেয়েছি ‘আহলেহাদীছ’দের মধ্যে’ (শারফ ৩১ পৃঃ)।
১০. ‘বড় পীর’ বলে খ্যাত শায়খ আবুদর ক্বাদির জীলানী আল-বাগদাদী (৪৭০-৫৬১ হিঃ) ‘নাজী’ দল হিসাবে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বর্ণনা দেওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে বিদ‘আতীদের ক্রোধ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,
‘জেনে রাখ যে, বিদ‘আতীদের কিছু নিদর্শন রয়েছে, যা দেখে তাদের চেনা যায়। বিদ‘আতীদের লক্ষণ হ’ল আহলেহাদীছদের গালি দেওয়া ও বিভিন্ন বাজে নামে তাদেরকে সম্বোধন করা। এগুলি সুন্নাতপন্থীদের বিরুদ্ধে তাদের দলীয় গোঁড়ামী ও অন্তর্জ্বালার বহিঃপ্রকাশ ভিন্ন কিছুই নয়। কেননা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অন্য কোন নাম নেই একটি নাম ব্যতীত। সেটি হ’ল ‘আহলুল হাদীছ’। বিদ‘আতীদের এই সব গালি প্রকৃত অর্থে আহলেহাদীছদের জন্য প্রযোজ্য নয়। যেমন মক্কার কাফিরদের জাদুকর, কবি, পাগল, মাথা খারাপ, গায়েবজান্তা প্রভৃতি গালি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য প্রযোজ্য ছিল না’।[5]
১১. আহমাদ ইবনু সিনান আল-ক্বাত্বান (মৃঃ ২৫৯ হিঃ) বলেন,
‘দুনিয়াতে এমন কোন বিদ‘আতী নেই, যে আহলেহাদীছের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে না। যখন কোন ব্যক্তি বিদ‘আত করে, তখন তার অন্তর থেকে হাদীছের স্বাদ ছিনিয়ে নেওয়া হয়’।[6]
‘যার কিছুটা অভিজ্ঞতা রয়েছে, তার এটা জানা কথা যে, আহলেহাদীছগণ হ’লেন, মুসলমানদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীসমূহের ও তাঁর ইল্মের অধিক সন্ধানী ও সে সবের অনুসরণের প্রতি অধিক আগ্রহশীল এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ হ’তে সর্বাধিক দূরে অবস্থানকারী, যার বিরোধিতা সে করে থাকে।... মুসলমানদের মধ্যে তাদের অবস্থান এমন মর্যাদাপূর্ণ, যেমন সকল জাতির মধ্যে মুসলমানদের মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান’।[7]
১৩. ছহীহ মুসলিম-এর শ্রেষ্ঠ ভাষ্যকার ইমাম ইয়াহইয়া ইবনু শারফ নববী আশ-শামী (৬৩১-৬৭৬ হিঃ) বলেন, ‘এই ফের্কা মুমিনদের মধ্যকার বীর মুজাহিদ, ফক্বীহ, মুহাদ্দিছ, যাহিদ (দুনিয়া থেকে নির্লিপ্ত ইবাদতকারী), নেকীর কাজের আদেশ দানকারী ও অন্যায় কাজের নিষেধকারী বিভিন্ন পর্যায়ের মুমিন হ’তে পারেন, যারা আল্লাহর বিধানকে প্রতিষ্ঠা দান করে থাকেন। এদের সবাইকে একস্থানে জমায়েত থাকা আবশ্যক নয়। বরং তাঁরা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকতে পারেন’।[8]
১৪. হাফেয ইমাদুদ্দীন ইসমাঈল ইবনু কাছীর (৭০১-৭৭৪ হিঃ) يَوْمَ نَدْعُوْا كُلَّ أُنَاسٍ بِإِمَامِهِمْ ‘যেদিন আমরা ডাকব প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তাদের নেতা সহ’ (ইসরা ৭১) আয়াতের ব্যাখ্যায় স্বীয় জগদ্বিখ্যাত তাফসীরে বিগত একজন মনীষীর উক্তি উদ্ধৃত করে বলেন, هَذَا أَكْبَرُ شَرَفٍ لِأَصْحَابِ الْحَدِيْثِ لِأَنَّ إِمَامَهُمْ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ ‘আহলেহাদীছদের জন্য এটাই সর্বোচ্চ মর্যাদা যে, তাদের একমাত্র ইমাম হ’লেন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’।[9]
নিঃসন্দেহে এই উচ্চ মর্যাদা ক্বিয়ামতের দিন কেবল তাদের জন্যই হবে, যারা দুনিয়াবী জীবনে সকল দিক ও বিভাগে যেকোন মূল্যে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের উপরে কায়েম থেকেছেন এবং অন্য কোন মতবাদ বা রায় ও ক্বিয়াসকে অগ্রাধিকার দেননি। হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে রাসূলের দেওয়া উপাধিধন্য সত্যিকারের ‘আহলেহাদীছ’ হওয়ার তাওফীক দাও ও তাদের দলভুক্ত করে নাও- আমীন!!
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।