মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
বর্তমান কম্পিউটার যুগে বিশ্বের পরিধি একেবারেই ছোট হয়ে গেছে। পৃথিবী নামক সৌরমন্ডলের এই ছোট্ট গ্রহটিকে যদি একটি ছোট্ট পুকুরের সঙ্গে তুলনা করি, তাহ’লে এর এক প্রান্তে একটা ঢিল পড়লেও অপর প্রান্তে গিয়ে তার ঢেউ লাগে। তাই নিজের দেশের পরিস্থিতিকে আর বিশ্ব পরিস্থিতি থেকে আলাদা করে দেখার উপায় নেই। মাত্র কয়েকদিন পূর্বে আশান্বিত বিশ্বকে হতাশ ও বিমূঢ় করে জাগতিক শক্তিতে বলিয়ান বর্তমান বিশ্বের দুই পরাশক্তি আয়োজিত রিগ্যান-গর্বাচেভ-এর ‘রিকজাভিক বৈঠক’ দুঃখজনক ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।৪ আর এর মধ্য দিয়েই ফুটে উঠেছে পাশ্চাত্যের মানবিক দেউলিয়াত্ব। অগণিত মারণাস্ত্রের গুদাম ছাড়া, বস্ত্তগত পাশবশক্তি ছাড়া মানবতার সামনে পেশ করার মত তাদের নিকটে কোন মূল্যবোধ আর অবশিষ্ট নেই। ফলে এক্ষণে শুরু হয়েছে দুই পরাশক্তির দেশী-বিদেশী ও
৪. আইসল্যান্ডের রিকজাভিক (REYKJAVIK) নগরীতে ১৯৮৬ সালের ১১, ১২ ও ১৩ই অক্টোবর তারিখে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ও সোভিয়েট প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভ-এর মধ্যে দূর ও মাঝারি পাল্লার অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তির উদ্দেশ্যে তিনদিনব্যাপী এই গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু অবশেষে এই বৈঠক ব্যর্থ হয়। এই ব্যর্থতার জন্য উভয় প্রেসিডেন্ট একে অপরকে দোষারোপ করে বক্তব্য রাখেন (বাংলাদেশ অবজারভার ১৪ই অক্টোবর ১৯৮৬)।
আমাদের স্বদেশী এজেন্টদের পারস্পরিক দোষারোপের পালা। শুরু হয়েছে ছাফাইয়ের মহড়া। এদের প্রচারযন্ত্রগুলো প্রাণান্ত কোশেশ অব্যাহত রেখেছে নিজেদের ভিতরকার দৈন্যদশা ঢাকবার জন্য। ফলে পৃথিবীর অধিকাংশ ভূখা-নাঙ্গা মানুষ যারা নিরাপদ অবস্থানে থেকে দূর থেকে এই মহড়া অবলোকন করছে, তাদের চোখে অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ে গেছে এই সব তন্ত্রমন্ত্রের হোতাদের নগ্ন চেহারা। সারা বিশ্ব এখন উন্মুখ হয়ে চেয়ে আছে ইসলামের দিকে। আল্লাহর ঐশী হেদায়াতের দিকে।
বন্ধুগণ!
আমাদের দেশসহ সমগ্র বিশ্ব আজ সর্বব্যাপী জাহেলিয়াতের মধ্যে নিমজ্জিত। এ জাহেলিয়াত সার্বভৌম ক্ষমতার চাবিকাঠি মানুষের হাতে ন্যস্ত করেছে এবং কতিপয় মানুষকে মানুষের জন্য রব-এর মর্যাদা দিয়েছে। বস্ত্তবাদী শক্তিগুলি তাদের স্ব স্ব দার্শনিক পন্ডিত ও রাজনৈতিক প্রভুদেরকে উক্ত আসনে বসিয়েছে। ধর্মীয় শক্তিগুলিও স্ব স্ব ধর্ম নেতাদেরকে নামে- বেনামে উক্ত মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছে।
ঠিক এমনই পরিস্থিতি ছিল রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর আগমনের প্রাক্কালে। বলতে গেলে প্রায় সারা বিশ্ব তখন রোমক ও ঈরানী (পারসিক) দুই পরাশক্তির করতলগত ছিল। মানুষ এদেরকেই আল্লাহর ছায়া৫ ভেবে নিয়েছিল। এই সুযোগে এরা ছিনতাই করে নিয়েছিল সার্বভৌম ক্ষমতার চাবিকাঠি। জনগণকে তারা তাদের স্বার্থের বলি হিসাবে ব্যবহার করত- যেমন আজও সর্বত্র করা হচ্ছে।
তৎকালীন ধর্মীয় নেতাদের অবস্থাও ছিল অনুরূপ। তাঁরা যা বলতেন, জনগণ সেটাকেই ‘দ্বীন’ ভেবে নিত। জগদ্বিখ্যাত দানবীর হাতেম ত্বাঈ-এর পুত্র ‘আদী ইবনে হাতেম তৎকালীন সময়ে খৃষ্টানদের নেতা ও যবরদস্ত আলেম ছিলেন। স্বীয় ভগ্নি ও সম্প্রদায়ের লোকদের উৎসাহে তিনি যখন ইসলাম গ্রহণের উদ্দেশ্যে মদীনায় এলেন, তখন তাঁর গলায় স্বর্ণ খচিত৬ ক্রুশ (+) চিহ্ন ঝুলন্ত
৫. যেমন জুম‘আর খুৎবায় বলা হয়ে থাকে, السلطان ظل الله في الأرض فمن أكرمه أكرمه الله ومن أهانه أهانه الله . ‘সুলতান বা শাসক পৃথিবীতে আল্লাহর ছায়া স্বরূপ। যে ব্যক্তি তাঁকে সম্মান করল, আল্লাহ তাকে সম্মানিত করবেন। আর যে ব্যক্তি তাঁকে অসম্মানিত করল, আল্লাহ তাকে অসম্মানিত করবেন’। বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হাদীছটির প্রথমাংশ মুনকার, যঈফ ও মওযূ এবং দ্বিতীয় অংশটি ‘হাসান’। -আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/১৬৬১-৬৪।
৬. কোন কোন বর্ণনায় এসেছে রৌপ্য খচিত (ইবনু কাছীর)।
ছিল। সে সময় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কুরআনে হাকীম-এর নিম্নোক্ত আয়াতটি পাঠ করছিলেন,
‘ইহুদী-নাছারাগণ আল্লাহ্কে ছেড়ে তাদের আলেম ও দরবেশগণকে ও ঈসা ইবনে মারিয়ামকে ‘রব’ হিসাবে গ্রহণ করেছে। অথচ তাদেরকে কেবলমাত্র এক আল্লাহর ইবাদত করতে আদেশ দেওয়া হয়েছিল। বস্ত্ততঃপক্ষে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি এদের এইসব শিরক হ’তে সম্পূর্ণ পবিত্র’ (তাওবাহ ৯/৩১)।
উক্ত আয়াত শোনার সাথে সাথে ‘আদী বিন হাতেম বলে উঠলেন, إِنَّا لَسْنَا نَعْبُدُهُمْ ‘আমরা তাদের ইবাদত করি না’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন,
‘আল্লাহ যা হালাল বা হারাম করেছেন, তারা কি তাকে হারাম বা হালাল করেনি? আর তোমরাও কি তাকে হারাম বা হালাল বলে গণ্য কর না? আদী বললেন, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তখন বললেন, فَتِلْكَ عِبَادَتُهُمْ ‘ব্যস ওটাই তো ওদের ইবাদত হ’ল’।৭
ছাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) ও যাহহাক বলেন, ইহুদী-নাছারাদের সমাজ ও ধর্মনেতাগণ তাদেরকে সিজদা করার জন্য বলেননি। বরং তারা আল্লাহর অবাধ্যতামূলক কাজে লোকদের হুকুম দিতেন এবং তারা তা মান্য করত। আর সেজন্যই আল্লাহ পাক ঐসব আলেম, সমাজ নেতা ও দরবেশগণকে ‘রব’ হিসাবে অভিহিত করেছেন’।৮
দেড় হাযার বছর পূর্বেকার ন্যায় বর্তমানেও চলছে সারা বিশ্বে নামে-বেনামে আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা ছিনতাই করার মহড়া। পাশ্চাত্যের গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র জনগণের নামে সার্বভৌম ক্ষমতা লুট করে তা কতিপয় ব্যক্তির হাতে সোপর্দ করেছে। জনগণের শাসনের নামে তারা পার্টির শাসন চালায়। গণ আদালতের দোহাই পেড়ে তারা আল্লাহর আদালতে জওয়াবদিহিতাকে এড়াতে চায়। তারা তাদের ইচ্ছামত আইন তৈরী করে ওটাকেই জনগণের আইন বলে চালিয়ে দেয়।
অন্যদিকে ধর্মনেতারা নিজেদের তৈরী করা মাযহাব ও তরীকার নিকট শরী‘আতের চাবিকাঠি ন্যস্ত করে নিশ্চিন্ত হয়েছেন। জায়েয ও নাজায়েয, সুন্নাত ও বিদ‘আত, শিরক ও তাওহীদ এমনকি হালাল-হারামও নির্ণীত হচ্ছে এদের নিজস্ব ফৎওয়ার উপরে। কখনও বা স্ব স্ব ফৎওয়ার পক্ষে জাল হাদীছ তৈরী করে শুনানো হচ্ছে। কখনওবা কুরআন ও ছহীহ হাদীছের অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কখনও বা নিজেদের স্বার্থে কোন হাদীছকে ‘মানসূখ’ (হুকুম রহিত) ঘোষণা করা হচ্ছে। কিন্তু যে কোন মূল্যে নিজের কিংবা স্ব স্ব মাযহাব ও তরীকার গৃহীত ফৎওয়াকে টিকিয়ে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রচলিত ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলিও মাযহাবী তাক্বলীদ ও পাশ্চাত্য গণতন্ত্র নামীয় বিভেদাত্মক জাহেলী মতবাদের চক্রান্তে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। পার্লামেন্টে ‘অধিকাংশের রায়ই চূড়ান্ত’ এবং ‘জনগণই সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস’- এলাহী সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে মূর্তিমান চ্যালেঞ্জ এই দুই শেরেকী মন্ত্রকে স্বীকার করে নিয়েই এরা রাজনীতিতে নেমেছেন। এরা ‘আল্লাহ’ এবং ‘ইসলামের’ নামেই জনগণের নিকট ভোট চাইছেন। এদের ভোট না দেওয়াকে ইসলামের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া বলে গণ্য করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়- বহু দলে বিভক্ত এই রাজনীতিকরা প্রত্যেকেই ভাবেন, তার দলটিকে ভোট দিলেই কেবল এদেশে সত্যিকারের ইসলাম প্রতিষ্ঠা সম্ভব, নইলে নয়।
ট্রাজেডী এই যে, পাশ্চাত্য গণতন্ত্রের শেরেকী বিষবৃক্ষের ফল খেয়েই এঁরা রাজনীতি করছেন এবং সেখানে ইসলামকে ব্যবহার করছেন। প্রশ্ন করলে বলা হয় ‘বৃহত্তর স্বার্থের খাতিরে কখনো কখনো শিরককেও বরদাশত করা চলে’ (নাঊযুবিল্লাহ)। আল্লাহর নিকট ঐসব যুক্তিবাদীরা কি কৈফিয়ত দিবেন সে প্রশ্ন না রেখেও একথা হলফ করে বলা চলে যে, ইসলামী সমাজ বিপ্লব কেবলমাত্র ইসলামী তরীকার মাধ্যমেই আসা সম্ভব, পাশ্চাত্য হ’তে আমদানী করা শেরেকী তরীকার মাধ্যমে নয়।
বন্ধুগণ! হতাশায় মুহ্যমান বিশ্ব যখন ইসলামের দিকে গভীর প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে আছে, তখন আমাদের উপরোক্ত অবস্থা কি দুঃখজনক নয়?
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/475/3
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।