মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে, তাকে আমি নিশ্চয়ই পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।”— (সূরা আন-নাহল: ৯৭)
সুতরাং যে ব্যক্তি ঈমান ও সৎ আমলের সমন্বয় সাধন করতে পারবে, তার জন্য আল্লাহ তা‘আলা ইহকালে পবিত্রময় জীবনের এবং ইহকালে ও পরকালে উত্তম প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আর এর কারণ সুস্পষ্ট। কেননা, মুমিনগণ আল্লাহর প্রতি বিশুদ্ধ ঈমানের ফলে সৎকাজ করে এবং দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য মন-মানসিকতা ও নৈতিক চরিত্রকে সংশোধন করে। তাদের সাথে মৌলিক নীতিমালা রয়েছে, যার দ্বারা তারা তাদের নিকট উপস্থাপিত সকল প্রকার হাসি-আনন্দ, অস্থিরতা ও দুঃখ-বেদনার কারণসমূহ উপলব্ধি করতে পারে।
এই নীতিমালা গ্রহণ, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও উপকারী ক্ষেত্রে তার যথাযথ ব্যবহার দ্বারা তারা রাগ-বিরাগ ও অন্যায়-অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারে। সুতরাং এই দৃষ্টিকোণ থেকে তারা যখন তার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করবে, তখন এর দ্বারা তাদের জন্য আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হবে, তার স্থায়িত্ব ও বরকতের ব্যাপারে আশা জাগবে এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারীদের সাওয়াবের প্রত্যাশা তৈরি হবে। এর ফলে সৃষ্ট এই আনন্দের কল্যাণ ও বরকতের দ্বারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রতিষ্ঠিত হবে।
আর তারা উপলব্ধি করতে পারবে দুঃখ-কষ্ট, ক্ষয়-ক্ষতি ও দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে। এ ক্ষেত্রে তাদের পক্ষে প্রতিরোধ করা সম্ভব হলে পরিপূর্ণ প্রতিরোধ করবে; তার কিছুটা লাঘব করা সম্ভব হলে লাঘব করবে এবং প্রতিরোধের কোন উপায় না থাকলে সর্বোত্তম ধৈর্য ধারণ করবে। আর এর দ্বারা তাদের দুঃখ-কষ্টের প্রভাব বলয় থেকে বের হয়ে আসার যথাযথ প্রতিরোধ গড়ে তোলার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও শক্তি-সামর্থ সঞ্চয় হবে। ধৈর্য এবং প্রতিদান ও সওয়াবের আশা পোষণ করা বড় মর্যাদাপূর্ণ কাজ, যার সাথে দুঃখ-কষ্ট মিশে আছে। আর তার থেকে উত্তরণের উপায় হল আনন্দে থাকা, উত্তম আশা-আকাঙ্খা পোষণ করা এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও সওয়াবের প্রত্যাশা করা। যেমন বিশুদ্ধ হাদিসে রয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“মুমিনের কর্ম-কাণ্ডে অবাক হওয়ার বিষয় হল তার সকল কাজই মঙ্গলজনক। সে সুখ-শান্তি লাভ করলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে; ফলে তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর দুঃখ-কষ্টে পতিত হলে সে ধৈর্য ধারণ করে; ফলে তাও তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর এই সুযোগ মুমিন ব্যতীত অন্য কারও ভাগ্যে জুটে না।”— (মুসলিম, যুহুদ, বাব-১৪, হাদিস নং-৭৬৯২)
সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়ে দিলেন যে, মুমিনের প্রাপ্তি ও কল্যাণ দিগুণ। হাসি-আনন্দ ও দুঃখ-কষ্ট সকল অবস্থায়ই সে তার কর্ম-কাণ্ডের সুফল ভোগ করবে। এ জন্যই আপনি দু’টি জিনিস পাবেন, যেগুলো কল্যাণ বা অকল্যাণের প্রতিনিধিত্ব করে। আবার উভয়ের অর্জন পদ্ধতির মধ্যে ব্যবধানও অনেক। আর এই ব্যবধানটি হবে ঈমান ও সৎকর্মের ক্ষেত্রে উভয়ের পার্থক্য অনুযায়ী। এই গুণের অধিকারী ব্যক্তি এ দু’টি গুণ দ্বারা কল্যাণ ও অকল্যাণ লাভ করে, যা আমরা আলোচনা করেছি; যেমন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, ধৈর্য ধারণ ইত্যাদি। এতে করে তার জন্য আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হবে; দূর হয়ে যাবে দুশ্চিন্তা, অস্থিরতা, হৃদয়ের সংকীর্ণতা ও জীবনের দুঃখ-কষ্ট এবং ইহজগতে তার জীবন হয়ে উঠবে অর্থবহ ও সুখময়।
আর অপর ব্যক্তি অপকর্ম, দাম্ভিকতা ও স্বেচ্ছাচারিতা দ্বারা অপরাধ প্রবণ হয়ে উঠে। ফলে তার নৈতিকতা বিনষ্ট হয় এবং অধৈর্য ও অতি লোভের কারণে তার নৈতিক চরিত্র পশুর চরিত্রের মত গড়ে উঠে। এতদ্ব সত্ত্বেও সে মানসিকাবে অশান্ত ও অস্হির। তার এই অস্থিরতার পিছনে বহুবিধ কারণ রয়েছে; যেমন তার প্রিয়াদেরকে হারানোর আশঙ্কা ও তাদের পক্ষ থেকে নতুন নতুন বহু দ্বন্দ্ব-সংঘাতের আশঙ্কা; আরও একটি কারণ হচ্ছে নফসের অস্থিরতা, যা অর্জন করুক আর নাই করুক সার্বক্ষণিক আরও কিছু পেতে আগ্রহবোধ করে। সে যদি নির্ধারিত অংশ পেয়েও যায়, তবুও সে উল্লেখিত কারণে (নতুন নতুন পেতে) অস্থির হয়ে উঠে। আর এসব উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, আতঙ্ক ও অসন্তুষ্টির কারণে সে দুঃখ-কষ্ট অনুভব করে। সুতরাং তার দুর্ভাগ্যময় জীবন, স্বজনপ্রীতি ও চিন্তারোগ এবং ভয়-ভীতি যা তাকে খারাপ অবস্থা ও বীভৎস কষ্টের দিকে ঠেলে দিয়েছে; তার এমন পরিণতি নিয়ে প্রশ্ন করো না। কারণ, সে সওয়াবের আশা করে না। আর তার নিকট ধৈর্যের মত এমন সম্পদও নেই যা তাকে শান্তনা ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য দেবে।
আর এ ধরনের প্রত্যেকটি বর্ণনাই অভিজ্ঞতালব্ধ বাস্তব উদাহরণ। যেমন এই শ্রেণীর একটি বিষয়কে নিয়ে যখন আপনি চিন্তা-ভাবনা করবেনে এবং তাকে মানুষের বাস্তব অবস্থার সম্মুখে উপস্থাপন করবেন, তখন ঈমানের দাবি অনুযায়ী আমলকারী মুমিন ব্যক্তি ও যে ব্যক্তি এমন কাজ করেনি তাদের উভয়ের মধ্যে অনেক বড় ব্যবধান দেখতে পাবেন। আর সে বিষয়টি হল, আল্লাহ প্রদত্ত রিযিক ও তিনি তাঁর বান্দাদেরকে বিভিন্ন প্রকারের যেসব অনুগ্রহ ও সম্মান দান করেছেন, তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকতে দীন-শরীয়ত অনেক বেশি উৎসাহ প্রধান করেছে।
সুতরাং মুমিন যখন অসুস্থতা অথবা দারিদ্র অথবা অনুরূপ কোন মান-সম্মান বিনষ্টকারী বিপদ-মুসিবত দ্বারা পরীক্ষার সম্মুখীন হয়, তখন তার ঈমান ও আল্লাহ প্রদত্ত রিযিকের প্রতি সন্তুষ্ট থাকার কারণে আপনি তার চোখে-মুখে আনন্দের ঝলক দেখতে পাবেন এবং সে আন্তরিকভাবে এমন কিছু চাইবে না, যা তার ভাগ্যে নেই। এ অবস্থায় সে তার চেয়ে খারাপ অবস্থাশালী ব্যক্তির দিকে তাকিয়ে শান্তনা অনুভব করে; তার চেয়ে ভাল অবস্থাশালী ব্যক্তির দিকে তাকায় না। কোন কোন সময় তার আনন্দ-ফুর্তি ও মনের প্রফুল্লতা আরও বৃদ্ধি পায় ঐ ব্যক্তির অবস্থা দেখে, যে ব্যক্তি দুনিয়াবী সকল উদ্দেশ্য হাসিল করেও পরিতৃপ্ত হতে পারেনি।
অনুরূপভাবে যে ব্যক্তির নিকট ঈমানের দাবি অনুযায়ী আমল নেই, তাকে যখন অভাব-অনটন দ্বারা অথবা দুনিয়াবী চাওয়া-পাওয়ার কিছু থেকে বঞ্চিত করার দ্বারা পরীক্ষায় ফেলা হয়, তখন তাকে আপনি দুঃখ-কষ্টে চরম বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে পাবেন।
অপর আরেকটি দৃষ্টন্ত হল: যখন ভয় ও আতঙ্কের কারণসমূহ প্রকাশ পায় এবং মানুষ নানান অসুবিধা দ্বারা কষ্ট অনুভব করে, তখন তার মধ্যে বিশুদ্ধ ঈমান, দৃঢ় মনোবল, মানসিক প্রশান্তি এবং উদ্ভূত এই সঙ্কট মোকাবিলায় চিন্তায়, কথায় ও কাজে সামর্থবান হওয়ার মত গুণাবলী বিদ্যমান থাকে, তবে সে নিজেকে এই সঙ্কটময় পরিস্থিতিতেও প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। আর এই পরিস্থিতি মানুষকে আনন্দ দেবে এবং তার হৃদয়কে মজবুত করবে।
অনুরূপভাবে আপনি ঈমান হারা ব্যক্তিকে পাবেন সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থায়। যখন সে ভয় ও আতঙ্কের অবস্থায় পতিত হবে, তখন তার হৃদয় অস্বস্তি অনুভব করবে; স্নায়ুতন্ত্রগুলো দুশ্চিন্তায় উত্তেজিত হয়ে উঠবে; তার অভ্যন্তরে বিরাজ করবে ভয় ও আতঙ্ক এবং তার মধ্যে বিরাজ করবে বাহ্যিক আতঙ্ক ও অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা। ফলে তার বাস্তব অবস্থা উদ্ঘাটন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। আর এ শ্রেণীর মানুষের যদি স্বভাবগত উপায়-উপকরণ বা উদ্দেশ্যসমূহ হাসিল না হয়, যা অর্জনে অনেক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন; তবে তাদের শক্তি-সামর্থ ভেঙ্গে পড়বে এবং স্নায়ুতন্ত্রগুলো উত্তেজিত হয়ে উঠবে। আর এরূপ হবে ঈমানের ঘাটতির কারণে, যা ধৈর্যধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রখে। বিশেষ করে সঙ্কটকালে ও দুঃখ-দুর্দশার সময়ে।
সুতরাং পুণ্যবান ও পাপী, মুমিন ও কাফির উভয়ে অর্জনীয় বীরত্ব অর্জনে অংশগ্রহণ করে। আরও অংশীদারিত্ব রয়েছে এমন স্বভাব-চরিত্রে, যা ভয়ানক পরিস্থিতিতে সদয় হয় এবং বষয়টিকে সহজ করে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মুমিন ব্যতিক্রম তার ঈমানী শক্তি, ধৈর্য, আল্লাহর উপড় ভরসা ও নির্ভরশীলতা এবং তার সওয়াবের প্রত্যাশার কারণে। এসব বিষয়ের কারণে তার সাহস ও বীরত্ব আরও বৃদ্ধি পেতে থাকে, আতঙ্কের চাপ কমতে থাকে এবং তার নিকট কঠিন কাজগুলো সহজ হতে থাকে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।