HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
আল্লাহর দর্শন
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন আল-আযহারী
৪
দুনিয়াতে স্বপ্নে আল্লাহর দীদার:দুনিয়ায় বসে স্বপ্নযোগে আল্লাহকে দেখা সম্ভব কি না? -এ ব্যাপারে ‘আলেমদের মত হলো, মানুষ স্বপ্নে আল্লাহকে দেখতে পারে; তবে সে যে আকৃতিতে আল্লাহকে দেখেছে তা আল্লাহর হাকীকী বা আসল রূপ নয়।
কিছু বিদ‘আতী ও ভ্রষ্ট সূফি ও রাফেযিরা (শিয়ারা) মনে করেন যে, দুনিয়াতে স্বপ্নে আল্লাহর দীদার সম্ভব নয়। তারা শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. এর দেওয়া মতের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করে থাকেন এবং বলেন যে, তার দেওয়া হাদীসের দলীলটি মওদু‘ তথা বানোয়াট; অথচ হাদীসটি সহীহ, যা নিম্নোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট হবে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে আল্লাহকে দেখেছেন। নিম্নোক্ত হাদীস থেকে একথা স্পষ্ট বুঝা যায়। উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর স্ত্রী উম্মে তুফাইল থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
«أَنَّهُ رَأَى رَبَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي النَّوْمِ فِي صُورَةِ شَابٍّ ذِي وَفْرَةٍ، قَدَمَاهُ فِي الْخُضْرَةِ، عَلَيْهِ نَعْلَانِ مِنْ ذَهَبٍ، عَلَى وَجْهِهِ فِرَاشٌ مِنْ ذَهَبٍ» .
“তিনি স্বপ্নে তার রবকে পরিপূর্ণ একজন যুবকের আকৃতিতে ঘন কেশ বিশিষ্ট অবস্থায় দেখেছেন। তাঁর পদপযুগল সবুজ কাপড়ে আবৃত ছিল। তিনি সোনার জুতা পরিহিত ছিলেন। তাঁর চেহারায় সোনার চাদর ছিল।” [রু’ইয়াতুল্লাহি, দারাকুতনী, হাদীস নং ২৮৬, ইমাম আবু যুর‘আহ রহ. বলেন, হাদিসের সনদের সব রাবী সুপরিচিত, মদীনায় তাদের প্রসিদ্ধ বংশ। মারওয়ান ইবন উসমান হলেন, মারওয়ান ইবন উসমান ইবন আবু সাঈদ মু‘আল্লা আল-আনসারী। আর ‘উমারাহ হলেন, ‘উমারাহ ইবন ‘আমের ইবন ‘উমার ইবন হাযম, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবী। ‘আমর ইবন হারিস ও সাঈদ ইবন আবূ হিলাল সম্পর্কে কেউ কোনো ধরনের দ্বিধা-সন্দেহ করে নি।]
অনুরূপভাবে আরো বর্ণিত হয়েছে, উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর স্ত্রী উম্মে তুফাইল থেকে। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
«أَنَّهُ رَأَى رَبَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، شَابًّا مُوَفَّرًا رِجْلَاهُ فِي الْخُضْرَةِ، عَلَيْهِ نَعْلَانِ مِنْ ذَهَبٍ، عَلَى وَجْهِهِ فِرَاشٌ مِنْ ذَهَبٍ» .
“তিনি স্বপ্নে তার রবকে পরিপূর্ণ উত্তম একজন যুবকের আকৃতিতে চুল বিশিষ্ট দেখেছেন। তার পদপযুগল সবুজ কাপড়ে আবৃত ছিল। এতে সোনার জুতা পরিহিত ছিল। তার চেহারায় সোনার চাদর ছিল”। [রু’ইয়াতুল্লাহি, দারাকুতনী, হাদীস নং ২৮৭, ইমাম হাইসামী রহ. হাদীসটিকে মাজমাউয যাওয়ায়েদে (৭/১৭৯) মুনকার বলেছেন, তিনি বলেন, رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ، وَقَالَ ابْنُ حِبَّانَ : إِنَّهُ حَدِيثٌ مُنْكَرٌ لِأَنَّ عُمَارَةَ بْنَ عَامِرِ بْنِ حَزْمٍ الْأَنْصَارِيَّ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ أُمِّ الطُّفَيْلِ، ذَكَرَهُ فِي تَرْجَمَةِ عُمَارَةَ فِي الثِّقَاتِ .]
মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«وَإِنِّي رَأَيْتُ رَبِّي عَزَّ وَجَلَّ فِي مَنَامِي، فَرَأَيْتُهُ فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، فَقَالَ لِي : يَا مُحَمَّدُ، قُلْتُ : لَبَّيْكَ رَبِّي، قَالَ : فِيمَ يَخْتَصِمُ فِيهِ الْمَلَأُ الْأَعْلَى؟ قُلْتُ : لَا أَدْرِي رَبِّي، ثُمَّ قَالَ لِي : يَا مُحَمَّدُ، قُلْتُ : لَبَّيْكَ رَبِّي، قَالَ : فِيمَا يَخْتَصِمُ فِيهِ الْمَلَأُ الْأَعْلَى؟ قُلْتُ : لَا أَدْرِي رَبِّ، فَوَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ، فَوَجَدْتُ بَرْدَ أَنَامِلِهِ بَيْنَ ثَدْيَيَّ، فَتَجَلَّى لِي كُلُّ شَيْءٍ، فَعَرَفْتُهُ» .
“আমি আমার রবকে স্বপ্নে উত্তম আকৃতিতে দেখেছি। তিনি আমাকে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম, লাব্বাইকা রাব্বী (আমি উপস্থিত হে আমার রব)। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান উর্ধ্বজগতের লোকজন (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদ) কী নিয়ে বিতর্ক করে? আমি বললাম, হে আমার রব! আমি জানি না। তিনি আবার বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম, লাব্বাইকা রাব্বী (আমি উপস্থিত হে আমার রব)। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান উর্ধ্বজগতের লোকজন (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদ) কী নিয়ে বিতর্ক করে? আমি বললাম, হে আমার রব! আমি জানি না। অতঃপর তিনি তাঁর হাতের তালু আমার দুই কাঁধের মাঝে রাখলেন। অর্থাৎ বুকে রাখলেন। এতে তার হাতের আঙ্গুলের ঠাণ্ডা আমার দু’স্তনের মাঝে অর্থাৎ বুকে অনুভব করতে লাগলাম। এতে আমার কাছে সব কিছু স্পষ্ট হয়ে গেল। ফলে আমি উর্ধ্বজগতে (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদ) কী হয় জানতে পারলাম”। [রু’ইয়াতুল্লাহি, দারাকুতনী, হাদীস নং ২২৭, পৃ. ৩০৯।]
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«أَتَانِي اللَّيْلَةَ رَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، قَالَ أَحْسَبُهُ فِي الْمَنَامِ فَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ هَلْ تَدْرِي فِيمَ يَخْتَصِمُ المَلَأُ الأَعْلَى؟ قَالَ : قُلْتُ : لَا، قَالَ : فَوَضَعَ يَدَهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَيَّ أَوْ قَالَ : فِي نَحْرِي، فَعَلِمْتُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ، قَالَ : يَا مُحَمَّدُ، هَلْ تَدْرِي فِيمَ يَخْتَصِمُ المَلَأُ الأَعْلَى؟ قُلْتُ : نَعَمْ، فِي الكَفَّارَاتِ، وَالكَفَّارَاتُ المُكْثُ فِي المَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَاةِ، وَالْمَشْيُ عَلَى الْأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ، وَإِسْبَاغُ الوُضُوءِ فِي المَكَارِهِ، وَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ، وَكَانَ مِنْ خَطِيئَتِهِ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ، وَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ، إِذَا صَلَّيْتَ فَقُلْ : اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الخَيْرَاتِ، وَتَرْكَ المُنْكَرَاتِ، وَحُبَّ المَسَاكِينِ، وَإِذَا أَرَدْتَ بِعِبَادِكَ فِتْنَةً فَاقْبِضْنِي إِلَيْكَ غَيْرَ مَفْتُونٍ، قَالَ : وَالدَّرَجَاتُ إِفْشَاءُ السَّلَامِ، وَإِطْعَامُ الطَّعَامِ، وَالصَّلَاةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ» .
“একবার রাতে সুমহান ও বরকতময় আমার রব আমার কাছে সুন্দরতম রূপে এসেছিলেন। (রাবী বলেন: যতদূর মনে পড়ে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘স্বপ্নে’ কথাটি বলেছিলেন।) তিনি বললেন: হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন, কী নিয়ে মালা’-এ-‘আলা (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদ)-এ বিতর্ক হচ্ছে? আমি বললাম: না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তখন তিনি আমার কাঁধের মাঝে তাঁর হাত রাখলেন। এমনকি এর স্নিগ্ধতা আমি আমার বুকেও অনুভব করলাম। এতে আসমান ও জমিনের যা কিছু আছে সব আমি জানতে পারলাম। তিনি বললেন: হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন, কী নিয়ে মালা’-এ ‘আলায় (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদ) আলোচনা হচ্ছে? আমি বললাম: হ্যাঁ, গুনাহের কাফফারা বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। সালাতের পর মসজিদে অবস্থান করাও কাফফারা, জামা‘আতে পায়ে হেঁটে যাওয়া, কষ্টের সময় পরিপূর্ণভাবে অযু করাও কাফফারা। যে ব্যক্তি এই কাজ করবে তার জীবন হবে কল্যাণময়, আর মৃত্যুও হবে কল্যাণময়। যেই দিন তাঁর মা তাকে ভূমিষ্ঠ করলেন গুনাহর ক্ষেত্রে তাঁর অবস্থা হবে সেই দিনের মতো। আমার রব বললেন: হে মুহাম্মাদ! সালাত শেষে বলবেন: হে আল্লাহ! আপনার কাছে আমি প্রত্যাশা করি ভালো কাজ করা এবং মন্দ কাজ পরিত্যাগের, দরিদ্রদের প্রতি ভালোবাসা পোষণের তাওফীক। আপনি যখন বান্দাদের বিষয়ে ফিতনা মসীবতের ইরাদা করবেন তখন আমাকে যেন ফিতনা মুক্ত অবস্থায় উঠিয়ে নেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদে আরো আলোচনা হচ্ছে) উচ্চ মর্যাদা লাভের বিষয়ে। তা হলো, সালামের প্রসার সাধন, আহার প্রদান এবং লোকেরা যখন নিদ্রাভিভূত, তখন রাতের নফল সালাতে (তাহাজ্জুদে) নিমগ্ন হওয়া।” [তিরমিযী, হাদীস নং ৩২৩৩, তিনি বলেছেন, বর্ণনাকারীগণ এই হাদীসটির সনদে আবূ কিলাবা ও ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমার মাঝে আরেক ব্যক্তির উল্লেখ করেছেন। কাতাদা রহ. এটিকে আবূ কিলাবা-খালিদ ইবন লাজলাজ-ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা সনদে বর্ণনা করেছেন। আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«أَتَانِي رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، فَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ، قُلْتُ : لَبَّيْكَ رَبِّي وَسَعْدَيْكَ، قَالَ : فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الأَعْلَى؟ قُلْتُ : رَبِّ لاَ أَدْرِي، فَوَضَعَ يَدَهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ فَوَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَعَلِمْتُ مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالمَغْرِبِ، فَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ، فَقُلْتُ : لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ، قَالَ : فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الأَعْلَى؟ قُلْتُ : فِي الدَّرَجَاتِ وَالكَفَّارَاتِ، وَفِي نَقْلِ الأَقْدَامِ إِلَى الجَمَاعَاتِ، وَإِسْبَاغِ الوُضُوءِ فِي الْمَكْرُوهَاتِ، وَانْتِظَارِ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ، وَمَنْ يُحَافِظْ عَلَيْهِنَّ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ، وَكَانَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ» .
“একবার রাতে সুমহান ও বরকতময় আমার রব আমার কাছে সুন্দরতম রূপে এসেছিলেন। (বর্ণনাকারী বলেন: যতদূর মনে পড়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘স্বপ্নে’ কথাটি বলেছিলেন।) তিনি বললেন: হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন, কী নিয়ে মালা-এ-আলা (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদ)-এ বিতর্ক হচ্ছে? আমি বললাম: না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তখন তিনি আমার কাঁধের মাঝে তাঁর হাত রাখলেন। এমনকি এর স্নিগ্ধতা আমি আমার বুকেও অনুভব করলাম। এতে আসমান ও জমিনের যা কিছু আছে সব আমি জানতে পারলাম। তিনি বললেন: হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন, কী নিয়ে মালা-এ ‘আলায় আলোচনা হচ্ছে? আমি বললাম: হ্যাঁ, গুনাহের কাফফারা বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। সালাতের পর মসজিদে অবস্থান করাও কাফফারা, জামা‘আতে পায়ে হেঁটে যাওয়া, কষ্টের সময় পরিপূর্ণভাবে অযু করাও কাফফারা। যে ব্যক্তি এই কাজ করবে তার জীবন হবে কল্যাণময়, আর মৃত্যুও হবে কল্যাণময়। যেদিন তার মা তাকে ভূমিষ্ঠ করলেন গুনাহর ক্ষেত্রে তার অবস্থা হবে সেদিনের মতো।” [তিরমিযী, হাদীস নং ৩২৩৪, তিনি হাদীসটিকে হাসান গরীব বলেছেন। আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«احْتُبِسَ عَنَّا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ غَدَاةٍ مِنْ صَلَاةِ الصُّبْحِ حَتَّى كِدْنَا نَتَرَاءَى عَيْنَ الشَّمْسِ، فَخَرَجَ سَرِيعًا فَثُوِّبَ بِالصَّلَاةِ، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَجَوَّزَ فِي صَلَاتِهِ، فَلَمَّا سَلَّمَ دَعَا بِصَوْتِهِ فَقَالَ لَنَا : «عَلَى مَصَافِّكُمْ كَمَا أَنْتُمْ» ثُمَّ انْفَتَلَ إِلَيْنَا فَقَالَ : " أَمَا إِنِّي سَأُحَدِّثُكُمْ مَا حَبَسَنِي عَنْكُمُ الغَدَاةَ : أَنِّي قُمْتُ مِنَ اللَّيْلِ فَتَوَضَّأْتُ فَصَلَّيْتُ مَا قُدِّرَ لِي فَنَعَسْتُ فِي صَلَاتِي فَاسْتَثْقَلْتُ، فَإِذَا أَنَا بِرَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، فَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ : لَبَّيْكَ رَبِّ، قَالَ : فِيمَ يَخْتَصِمُ المَلَأُ الأَعْلَى؟ قُلْتُ : لَا أَدْرِي رَبِّ، قَالَهَا ثَلَاثًا " قَالَ : " فَرَأَيْتُهُ وَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ أَنَامِلِهِ بَيْنَ ثَدْيَيَّ، فَتَجَلَّى لِي كُلُّ شَيْءٍ وَعَرَفْتُ، فَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ، قُلْتُ : لَبَّيْكَ رَبِّ، قَالَ : فِيمَ يَخْتَصِمُ المَلَأُ الأَعْلَى؟ قُلْتُ : فِي الكَفَّارَاتِ، قَالَ : مَا هُنَّ؟ قُلْتُ : مَشْيُ الأَقْدَامِ إِلَى الجَمَاعَاتِ، وَالجُلُوسُ فِي المَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ، وَإِسْبَاغُ الوُضُوءِ فِي المَكْرُوهَاتِ، قَالَ : ثُمَّ فِيمَ؟ قُلْتُ : إِطْعَامُ الطَّعَامِ، وَلِينُ الكَلَامِ، وَالصَّلَاةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ . قَالَ : سَلْ . قُلْتُ : اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الخَيْرَاتِ، وَتَرْكَ المُنْكَرَاتِ، وَحُبَّ المَسَاكِينِ، وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي، وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةً فِي قَوْمٍ فَتَوَفَّنِي غَيْرَ مَفْتُونٍ، وَأَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ، وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُ إِلَى حُبِّكَ " ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «إِنَّهَا حَقٌّ فَادْرُسُوهَا ثُمَّ تَعَلَّمُوهَا» .
“একদিন ভোরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাতে আসতে দেরি করলেন। এমনকি আমরা প্রায় সূর্য উঠে যাচ্ছে বলে প্রত্যক্ষ করছিলাম। এমন সময় তিনি দ্রুত বেরিয়ে আসলেন। সালাতের ইকামত দেওয়া হলো। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংক্ষিপ্তভাবে সালাত আদায় করলেন। সালাম শেষে তিনি উচ্চস্বরে ডাকলেন। আমাদের বললেন: যেভাবে তোমরা আছ সেভাবেই তোমাদের কাতারে বসে থাক। এরপর তিনি আমাদের দিকে ফিরলেন। বললেন: আজ ভোরে তোমাদের কাছে (যথা সময়ে বের হয়ে) আসতে আমাকে কিসে বিরত রেখেছিল সে বিষয়ে আমি তোমাদের বলছি। আমি রাতেই উঠেছিলাম। অযু করে যা আমার তাকদীরে ছিল সে পরিমাণ তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করলাম। আমি সালাতে তন্দ্রাভিভূত হয়ে পড়লাম। ঘুম ভারী হয়ে এল। হঠাৎ দেখি, মহান আল্লাহ তা‘আলা সুন্দরতম রূপে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি বললেন: হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম: রব আমার, বান্দা হাযির। তিনি বললেন: মালা-এ-আলায় কী নিয়ে আলোচনা হচ্ছে? আমি বললাম: হে আমার রব, আমি তো জানি না। আল্লাহ তা‘আলা তিন বার উল্লিখিত উক্তি করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আমি দেখলাম তিনি আমার কাঁধের দুই হাড্ডির মাঝে তাঁর হাত রাখলেন। আমার বুকে তাঁর অঙ্গুলীসমূহের শীতল ছোয়া অনুভব করলাম। এতে প্রতিটি বস্তু আমার সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠল। সব আমি চিনে নিলাম। তিনি বললেন: হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম রব আমার, বান্দা হাযির। তিনি বললেন: মালা-এ-আলায় কী নিয়ে আলোচনা হচ্ছে? আমি বললাম: গুনাহের কাফফারা নিয়ে। তিনি বললেন: সেগুলো কী? আমি বললাম: জামা‘আতের উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে যাওয়া, সালাতের পরও মসজিদে অবস্থান করা, কষ্টের সময়ও পরিপূর্ণভাবে অযু করা। তিনি বললেন: এরপর কি বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে? আমি বললাম: খাদ্য দান, নরম কথা, মানুষ যখন নিদ্রামগ্ন তখন রাতে সালাত (তাহাজ্জুদ) আদায় করা। তিনি বললেন: আমার কাছে চাও। আমি বললাম: হে আল্লাহ! আমি যাঞ্ছা করি কল্যাণকর কাজের, মন্দ কাজ পরিত্যাগ করার। মিসকীনদের প্রতি ভালবাসা, মাফ করে দিন আমাকে, রহম করুন আমার ওপর। কোনো সম্প্রদায়ের ওপর যখন ফিতনা-মসীবতের ইচ্ছা করেন তখন আমাকে আপনি ফিতনামুক্ত মৃত্যু দিন। আমি চাই আপনার প্রতি ভালোবাসা। আপনাকে যারা ভালোবাসেন তাদের ভালোবাসা এবং যেসব আমল আমাকে আপনার নিকট করবে সেসব আমলের ভালোবাসা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন: এ বিষয়টি সত্য তোমরা এটি পড় এবং তা শিখে নাও।” [তিরমিযী, হাদীস নং ৩২৩৫, তিনি হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন। সুনান দারেমী, হাদীস নং ২১৯৫। আল্লামা হুসাইন সুলাইম বলেন, হাদীসের সনদটি সহীহ, যদি আব্দুর রহমান ইবন ‘আয়েশ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সাহাবী হওয়াটা নিশ্চিত হয়। আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেছেন,
«إِنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى رَبَّهُ عَزَّ وَجَلَّ»
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহান ও সম্মানিত আল্লাহকে দেখেছেন।” [সুনান কুবরা লিন-নাসাঈ, হাদীস নং ১১৪৭৩।]
আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলতেন,
«إِنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، رَأَى رَبَّهُ مَرَّتَيْنِ : مُرَّةً بِبَصَرِهِ، وَمَرَّةً بِفُؤَادِهِ» .
“মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহকে দু’বার দেখেছেন। একবার স্বচক্ষে আরেকবার অন্তর দিয়ে।” [মু’জামুল আওসাত, হাদীস নং ৫৭৬১, ইমাম তবরানী রহ. বলেন, হাদীসটি মুজাহিদ থেকে তার পুত্র ইসমাঈল ছাড়া কেউ বর্ণনা করেন নি। ইমাম হাইসামী রহ. মাজমাউজ জাওয়ায়েদে (১/৭৯) বলেন, হাদীসটি ইমাম তাবরানী বর্ণনা করেছেন এবং এর সব বর্ণনাকারী সহীহ। رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ فِي الْأَوْسَطِ، وَرِجَالُهُ رِجَالُ الصَّحِيحِ، خَلَا جَهْوَرِ بْنِ مَنْصُورٍ الْكُوفِيِّ، وَجَهْوَرُ بْنُ مَنْصُورٍ ذَكَرَهُ ابْنُ حِبَّانَ فِي الثِّقَاتِ .]
উল্লিখিত হাদীসসমূহ থেকে এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে আল্লাহকে দুনিয়াতে দেখেছেন। হাফেয ইবন রজব হাম্বলী রহ. এ বিষয়ে একটি কিতাবও রচনা করেছেন। কিতাবটির নাম:
( اختيار الأولى في شرح حديث اختصام الملأ الأعلى ).
এসব আলোচনা থেকে বুঝা যায় যে, নবীগণ আল্লাহকে স্বপ্নে দুনিয়াতে দেখেছেন।
কিছু বিদ‘আতী ও ভ্রষ্ট সূফি ও রাফেযিরা (শিয়ারা) মনে করেন যে, দুনিয়াতে স্বপ্নে আল্লাহর দীদার সম্ভব নয়। তারা শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. এর দেওয়া মতের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করে থাকেন এবং বলেন যে, তার দেওয়া হাদীসের দলীলটি মওদু‘ তথা বানোয়াট; অথচ হাদীসটি সহীহ, যা নিম্নোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট হবে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে আল্লাহকে দেখেছেন। নিম্নোক্ত হাদীস থেকে একথা স্পষ্ট বুঝা যায়। উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর স্ত্রী উম্মে তুফাইল থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
«أَنَّهُ رَأَى رَبَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي النَّوْمِ فِي صُورَةِ شَابٍّ ذِي وَفْرَةٍ، قَدَمَاهُ فِي الْخُضْرَةِ، عَلَيْهِ نَعْلَانِ مِنْ ذَهَبٍ، عَلَى وَجْهِهِ فِرَاشٌ مِنْ ذَهَبٍ» .
“তিনি স্বপ্নে তার রবকে পরিপূর্ণ একজন যুবকের আকৃতিতে ঘন কেশ বিশিষ্ট অবস্থায় দেখেছেন। তাঁর পদপযুগল সবুজ কাপড়ে আবৃত ছিল। তিনি সোনার জুতা পরিহিত ছিলেন। তাঁর চেহারায় সোনার চাদর ছিল।” [রু’ইয়াতুল্লাহি, দারাকুতনী, হাদীস নং ২৮৬, ইমাম আবু যুর‘আহ রহ. বলেন, হাদিসের সনদের সব রাবী সুপরিচিত, মদীনায় তাদের প্রসিদ্ধ বংশ। মারওয়ান ইবন উসমান হলেন, মারওয়ান ইবন উসমান ইবন আবু সাঈদ মু‘আল্লা আল-আনসারী। আর ‘উমারাহ হলেন, ‘উমারাহ ইবন ‘আমের ইবন ‘উমার ইবন হাযম, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবী। ‘আমর ইবন হারিস ও সাঈদ ইবন আবূ হিলাল সম্পর্কে কেউ কোনো ধরনের দ্বিধা-সন্দেহ করে নি।]
অনুরূপভাবে আরো বর্ণিত হয়েছে, উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর স্ত্রী উম্মে তুফাইল থেকে। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
«أَنَّهُ رَأَى رَبَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، شَابًّا مُوَفَّرًا رِجْلَاهُ فِي الْخُضْرَةِ، عَلَيْهِ نَعْلَانِ مِنْ ذَهَبٍ، عَلَى وَجْهِهِ فِرَاشٌ مِنْ ذَهَبٍ» .
“তিনি স্বপ্নে তার রবকে পরিপূর্ণ উত্তম একজন যুবকের আকৃতিতে চুল বিশিষ্ট দেখেছেন। তার পদপযুগল সবুজ কাপড়ে আবৃত ছিল। এতে সোনার জুতা পরিহিত ছিল। তার চেহারায় সোনার চাদর ছিল”। [রু’ইয়াতুল্লাহি, দারাকুতনী, হাদীস নং ২৮৭, ইমাম হাইসামী রহ. হাদীসটিকে মাজমাউয যাওয়ায়েদে (৭/১৭৯) মুনকার বলেছেন, তিনি বলেন, رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ، وَقَالَ ابْنُ حِبَّانَ : إِنَّهُ حَدِيثٌ مُنْكَرٌ لِأَنَّ عُمَارَةَ بْنَ عَامِرِ بْنِ حَزْمٍ الْأَنْصَارِيَّ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ أُمِّ الطُّفَيْلِ، ذَكَرَهُ فِي تَرْجَمَةِ عُمَارَةَ فِي الثِّقَاتِ .]
মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«وَإِنِّي رَأَيْتُ رَبِّي عَزَّ وَجَلَّ فِي مَنَامِي، فَرَأَيْتُهُ فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، فَقَالَ لِي : يَا مُحَمَّدُ، قُلْتُ : لَبَّيْكَ رَبِّي، قَالَ : فِيمَ يَخْتَصِمُ فِيهِ الْمَلَأُ الْأَعْلَى؟ قُلْتُ : لَا أَدْرِي رَبِّي، ثُمَّ قَالَ لِي : يَا مُحَمَّدُ، قُلْتُ : لَبَّيْكَ رَبِّي، قَالَ : فِيمَا يَخْتَصِمُ فِيهِ الْمَلَأُ الْأَعْلَى؟ قُلْتُ : لَا أَدْرِي رَبِّ، فَوَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ، فَوَجَدْتُ بَرْدَ أَنَامِلِهِ بَيْنَ ثَدْيَيَّ، فَتَجَلَّى لِي كُلُّ شَيْءٍ، فَعَرَفْتُهُ» .
“আমি আমার রবকে স্বপ্নে উত্তম আকৃতিতে দেখেছি। তিনি আমাকে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম, লাব্বাইকা রাব্বী (আমি উপস্থিত হে আমার রব)। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান উর্ধ্বজগতের লোকজন (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদ) কী নিয়ে বিতর্ক করে? আমি বললাম, হে আমার রব! আমি জানি না। তিনি আবার বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম, লাব্বাইকা রাব্বী (আমি উপস্থিত হে আমার রব)। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান উর্ধ্বজগতের লোকজন (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদ) কী নিয়ে বিতর্ক করে? আমি বললাম, হে আমার রব! আমি জানি না। অতঃপর তিনি তাঁর হাতের তালু আমার দুই কাঁধের মাঝে রাখলেন। অর্থাৎ বুকে রাখলেন। এতে তার হাতের আঙ্গুলের ঠাণ্ডা আমার দু’স্তনের মাঝে অর্থাৎ বুকে অনুভব করতে লাগলাম। এতে আমার কাছে সব কিছু স্পষ্ট হয়ে গেল। ফলে আমি উর্ধ্বজগতে (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদ) কী হয় জানতে পারলাম”। [রু’ইয়াতুল্লাহি, দারাকুতনী, হাদীস নং ২২৭, পৃ. ৩০৯।]
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«أَتَانِي اللَّيْلَةَ رَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، قَالَ أَحْسَبُهُ فِي الْمَنَامِ فَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ هَلْ تَدْرِي فِيمَ يَخْتَصِمُ المَلَأُ الأَعْلَى؟ قَالَ : قُلْتُ : لَا، قَالَ : فَوَضَعَ يَدَهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَيَّ أَوْ قَالَ : فِي نَحْرِي، فَعَلِمْتُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ، قَالَ : يَا مُحَمَّدُ، هَلْ تَدْرِي فِيمَ يَخْتَصِمُ المَلَأُ الأَعْلَى؟ قُلْتُ : نَعَمْ، فِي الكَفَّارَاتِ، وَالكَفَّارَاتُ المُكْثُ فِي المَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَاةِ، وَالْمَشْيُ عَلَى الْأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ، وَإِسْبَاغُ الوُضُوءِ فِي المَكَارِهِ، وَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ، وَكَانَ مِنْ خَطِيئَتِهِ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ، وَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ، إِذَا صَلَّيْتَ فَقُلْ : اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الخَيْرَاتِ، وَتَرْكَ المُنْكَرَاتِ، وَحُبَّ المَسَاكِينِ، وَإِذَا أَرَدْتَ بِعِبَادِكَ فِتْنَةً فَاقْبِضْنِي إِلَيْكَ غَيْرَ مَفْتُونٍ، قَالَ : وَالدَّرَجَاتُ إِفْشَاءُ السَّلَامِ، وَإِطْعَامُ الطَّعَامِ، وَالصَّلَاةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ» .
“একবার রাতে সুমহান ও বরকতময় আমার রব আমার কাছে সুন্দরতম রূপে এসেছিলেন। (রাবী বলেন: যতদূর মনে পড়ে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘স্বপ্নে’ কথাটি বলেছিলেন।) তিনি বললেন: হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন, কী নিয়ে মালা’-এ-‘আলা (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদ)-এ বিতর্ক হচ্ছে? আমি বললাম: না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তখন তিনি আমার কাঁধের মাঝে তাঁর হাত রাখলেন। এমনকি এর স্নিগ্ধতা আমি আমার বুকেও অনুভব করলাম। এতে আসমান ও জমিনের যা কিছু আছে সব আমি জানতে পারলাম। তিনি বললেন: হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন, কী নিয়ে মালা’-এ ‘আলায় (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদ) আলোচনা হচ্ছে? আমি বললাম: হ্যাঁ, গুনাহের কাফফারা বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। সালাতের পর মসজিদে অবস্থান করাও কাফফারা, জামা‘আতে পায়ে হেঁটে যাওয়া, কষ্টের সময় পরিপূর্ণভাবে অযু করাও কাফফারা। যে ব্যক্তি এই কাজ করবে তার জীবন হবে কল্যাণময়, আর মৃত্যুও হবে কল্যাণময়। যেই দিন তাঁর মা তাকে ভূমিষ্ঠ করলেন গুনাহর ক্ষেত্রে তাঁর অবস্থা হবে সেই দিনের মতো। আমার রব বললেন: হে মুহাম্মাদ! সালাত শেষে বলবেন: হে আল্লাহ! আপনার কাছে আমি প্রত্যাশা করি ভালো কাজ করা এবং মন্দ কাজ পরিত্যাগের, দরিদ্রদের প্রতি ভালোবাসা পোষণের তাওফীক। আপনি যখন বান্দাদের বিষয়ে ফিতনা মসীবতের ইরাদা করবেন তখন আমাকে যেন ফিতনা মুক্ত অবস্থায় উঠিয়ে নেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদে আরো আলোচনা হচ্ছে) উচ্চ মর্যাদা লাভের বিষয়ে। তা হলো, সালামের প্রসার সাধন, আহার প্রদান এবং লোকেরা যখন নিদ্রাভিভূত, তখন রাতের নফল সালাতে (তাহাজ্জুদে) নিমগ্ন হওয়া।” [তিরমিযী, হাদীস নং ৩২৩৩, তিনি বলেছেন, বর্ণনাকারীগণ এই হাদীসটির সনদে আবূ কিলাবা ও ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমার মাঝে আরেক ব্যক্তির উল্লেখ করেছেন। কাতাদা রহ. এটিকে আবূ কিলাবা-খালিদ ইবন লাজলাজ-ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা সনদে বর্ণনা করেছেন। আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«أَتَانِي رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، فَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ، قُلْتُ : لَبَّيْكَ رَبِّي وَسَعْدَيْكَ، قَالَ : فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الأَعْلَى؟ قُلْتُ : رَبِّ لاَ أَدْرِي، فَوَضَعَ يَدَهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ فَوَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَعَلِمْتُ مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالمَغْرِبِ، فَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ، فَقُلْتُ : لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ، قَالَ : فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الأَعْلَى؟ قُلْتُ : فِي الدَّرَجَاتِ وَالكَفَّارَاتِ، وَفِي نَقْلِ الأَقْدَامِ إِلَى الجَمَاعَاتِ، وَإِسْبَاغِ الوُضُوءِ فِي الْمَكْرُوهَاتِ، وَانْتِظَارِ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ، وَمَنْ يُحَافِظْ عَلَيْهِنَّ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ، وَكَانَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ» .
“একবার রাতে সুমহান ও বরকতময় আমার রব আমার কাছে সুন্দরতম রূপে এসেছিলেন। (বর্ণনাকারী বলেন: যতদূর মনে পড়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘স্বপ্নে’ কথাটি বলেছিলেন।) তিনি বললেন: হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন, কী নিয়ে মালা-এ-আলা (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদ)-এ বিতর্ক হচ্ছে? আমি বললাম: না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তখন তিনি আমার কাঁধের মাঝে তাঁর হাত রাখলেন। এমনকি এর স্নিগ্ধতা আমি আমার বুকেও অনুভব করলাম। এতে আসমান ও জমিনের যা কিছু আছে সব আমি জানতে পারলাম। তিনি বললেন: হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন, কী নিয়ে মালা-এ ‘আলায় আলোচনা হচ্ছে? আমি বললাম: হ্যাঁ, গুনাহের কাফফারা বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। সালাতের পর মসজিদে অবস্থান করাও কাফফারা, জামা‘আতে পায়ে হেঁটে যাওয়া, কষ্টের সময় পরিপূর্ণভাবে অযু করাও কাফফারা। যে ব্যক্তি এই কাজ করবে তার জীবন হবে কল্যাণময়, আর মৃত্যুও হবে কল্যাণময়। যেদিন তার মা তাকে ভূমিষ্ঠ করলেন গুনাহর ক্ষেত্রে তার অবস্থা হবে সেদিনের মতো।” [তিরমিযী, হাদীস নং ৩২৩৪, তিনি হাদীসটিকে হাসান গরীব বলেছেন। আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«احْتُبِسَ عَنَّا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ غَدَاةٍ مِنْ صَلَاةِ الصُّبْحِ حَتَّى كِدْنَا نَتَرَاءَى عَيْنَ الشَّمْسِ، فَخَرَجَ سَرِيعًا فَثُوِّبَ بِالصَّلَاةِ، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَجَوَّزَ فِي صَلَاتِهِ، فَلَمَّا سَلَّمَ دَعَا بِصَوْتِهِ فَقَالَ لَنَا : «عَلَى مَصَافِّكُمْ كَمَا أَنْتُمْ» ثُمَّ انْفَتَلَ إِلَيْنَا فَقَالَ : " أَمَا إِنِّي سَأُحَدِّثُكُمْ مَا حَبَسَنِي عَنْكُمُ الغَدَاةَ : أَنِّي قُمْتُ مِنَ اللَّيْلِ فَتَوَضَّأْتُ فَصَلَّيْتُ مَا قُدِّرَ لِي فَنَعَسْتُ فِي صَلَاتِي فَاسْتَثْقَلْتُ، فَإِذَا أَنَا بِرَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، فَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ : لَبَّيْكَ رَبِّ، قَالَ : فِيمَ يَخْتَصِمُ المَلَأُ الأَعْلَى؟ قُلْتُ : لَا أَدْرِي رَبِّ، قَالَهَا ثَلَاثًا " قَالَ : " فَرَأَيْتُهُ وَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ أَنَامِلِهِ بَيْنَ ثَدْيَيَّ، فَتَجَلَّى لِي كُلُّ شَيْءٍ وَعَرَفْتُ، فَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ، قُلْتُ : لَبَّيْكَ رَبِّ، قَالَ : فِيمَ يَخْتَصِمُ المَلَأُ الأَعْلَى؟ قُلْتُ : فِي الكَفَّارَاتِ، قَالَ : مَا هُنَّ؟ قُلْتُ : مَشْيُ الأَقْدَامِ إِلَى الجَمَاعَاتِ، وَالجُلُوسُ فِي المَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ، وَإِسْبَاغُ الوُضُوءِ فِي المَكْرُوهَاتِ، قَالَ : ثُمَّ فِيمَ؟ قُلْتُ : إِطْعَامُ الطَّعَامِ، وَلِينُ الكَلَامِ، وَالصَّلَاةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ . قَالَ : سَلْ . قُلْتُ : اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الخَيْرَاتِ، وَتَرْكَ المُنْكَرَاتِ، وَحُبَّ المَسَاكِينِ، وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي، وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةً فِي قَوْمٍ فَتَوَفَّنِي غَيْرَ مَفْتُونٍ، وَأَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ، وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُ إِلَى حُبِّكَ " ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «إِنَّهَا حَقٌّ فَادْرُسُوهَا ثُمَّ تَعَلَّمُوهَا» .
“একদিন ভোরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাতে আসতে দেরি করলেন। এমনকি আমরা প্রায় সূর্য উঠে যাচ্ছে বলে প্রত্যক্ষ করছিলাম। এমন সময় তিনি দ্রুত বেরিয়ে আসলেন। সালাতের ইকামত দেওয়া হলো। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংক্ষিপ্তভাবে সালাত আদায় করলেন। সালাম শেষে তিনি উচ্চস্বরে ডাকলেন। আমাদের বললেন: যেভাবে তোমরা আছ সেভাবেই তোমাদের কাতারে বসে থাক। এরপর তিনি আমাদের দিকে ফিরলেন। বললেন: আজ ভোরে তোমাদের কাছে (যথা সময়ে বের হয়ে) আসতে আমাকে কিসে বিরত রেখেছিল সে বিষয়ে আমি তোমাদের বলছি। আমি রাতেই উঠেছিলাম। অযু করে যা আমার তাকদীরে ছিল সে পরিমাণ তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করলাম। আমি সালাতে তন্দ্রাভিভূত হয়ে পড়লাম। ঘুম ভারী হয়ে এল। হঠাৎ দেখি, মহান আল্লাহ তা‘আলা সুন্দরতম রূপে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি বললেন: হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম: রব আমার, বান্দা হাযির। তিনি বললেন: মালা-এ-আলায় কী নিয়ে আলোচনা হচ্ছে? আমি বললাম: হে আমার রব, আমি তো জানি না। আল্লাহ তা‘আলা তিন বার উল্লিখিত উক্তি করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আমি দেখলাম তিনি আমার কাঁধের দুই হাড্ডির মাঝে তাঁর হাত রাখলেন। আমার বুকে তাঁর অঙ্গুলীসমূহের শীতল ছোয়া অনুভব করলাম। এতে প্রতিটি বস্তু আমার সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠল। সব আমি চিনে নিলাম। তিনি বললেন: হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম রব আমার, বান্দা হাযির। তিনি বললেন: মালা-এ-আলায় কী নিয়ে আলোচনা হচ্ছে? আমি বললাম: গুনাহের কাফফারা নিয়ে। তিনি বললেন: সেগুলো কী? আমি বললাম: জামা‘আতের উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে যাওয়া, সালাতের পরও মসজিদে অবস্থান করা, কষ্টের সময়ও পরিপূর্ণভাবে অযু করা। তিনি বললেন: এরপর কি বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে? আমি বললাম: খাদ্য দান, নরম কথা, মানুষ যখন নিদ্রামগ্ন তখন রাতে সালাত (তাহাজ্জুদ) আদায় করা। তিনি বললেন: আমার কাছে চাও। আমি বললাম: হে আল্লাহ! আমি যাঞ্ছা করি কল্যাণকর কাজের, মন্দ কাজ পরিত্যাগ করার। মিসকীনদের প্রতি ভালবাসা, মাফ করে দিন আমাকে, রহম করুন আমার ওপর। কোনো সম্প্রদায়ের ওপর যখন ফিতনা-মসীবতের ইচ্ছা করেন তখন আমাকে আপনি ফিতনামুক্ত মৃত্যু দিন। আমি চাই আপনার প্রতি ভালোবাসা। আপনাকে যারা ভালোবাসেন তাদের ভালোবাসা এবং যেসব আমল আমাকে আপনার নিকট করবে সেসব আমলের ভালোবাসা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন: এ বিষয়টি সত্য তোমরা এটি পড় এবং তা শিখে নাও।” [তিরমিযী, হাদীস নং ৩২৩৫, তিনি হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন। সুনান দারেমী, হাদীস নং ২১৯৫। আল্লামা হুসাইন সুলাইম বলেন, হাদীসের সনদটি সহীহ, যদি আব্দুর রহমান ইবন ‘আয়েশ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সাহাবী হওয়াটা নিশ্চিত হয়। আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেছেন,
«إِنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى رَبَّهُ عَزَّ وَجَلَّ»
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহান ও সম্মানিত আল্লাহকে দেখেছেন।” [সুনান কুবরা লিন-নাসাঈ, হাদীস নং ১১৪৭৩।]
আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলতেন,
«إِنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، رَأَى رَبَّهُ مَرَّتَيْنِ : مُرَّةً بِبَصَرِهِ، وَمَرَّةً بِفُؤَادِهِ» .
“মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহকে দু’বার দেখেছেন। একবার স্বচক্ষে আরেকবার অন্তর দিয়ে।” [মু’জামুল আওসাত, হাদীস নং ৫৭৬১, ইমাম তবরানী রহ. বলেন, হাদীসটি মুজাহিদ থেকে তার পুত্র ইসমাঈল ছাড়া কেউ বর্ণনা করেন নি। ইমাম হাইসামী রহ. মাজমাউজ জাওয়ায়েদে (১/৭৯) বলেন, হাদীসটি ইমাম তাবরানী বর্ণনা করেছেন এবং এর সব বর্ণনাকারী সহীহ। رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ فِي الْأَوْسَطِ، وَرِجَالُهُ رِجَالُ الصَّحِيحِ، خَلَا جَهْوَرِ بْنِ مَنْصُورٍ الْكُوفِيِّ، وَجَهْوَرُ بْنُ مَنْصُورٍ ذَكَرَهُ ابْنُ حِبَّانَ فِي الثِّقَاتِ .]
উল্লিখিত হাদীসসমূহ থেকে এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে আল্লাহকে দুনিয়াতে দেখেছেন। হাফেয ইবন রজব হাম্বলী রহ. এ বিষয়ে একটি কিতাবও রচনা করেছেন। কিতাবটির নাম:
( اختيار الأولى في شرح حديث اختصام الملأ الأعلى ).
এসব আলোচনা থেকে বুঝা যায় যে, নবীগণ আল্লাহকে স্বপ্নে দুনিয়াতে দেখেছেন।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন