HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
আল্লাহর দর্শন
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন আল-আযহারী
৬
দুনিয়াতে আল্লাহর দীদার সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের ‘আলেমদের মতামত:১- ইমাম বায়হাকী রহ. নিম্নোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«رأيت ربي جعدا أمرد عليه حلة خضراء» .
“আমি আমার রবকে দাড়িবিহীন কোকড়ানো চুল বিশিষ্ট সবুজ কাপড় পরিহিত অবস্থায় দেখেছি”। [আসমা ওয়াসসিফাত লিলবাইহাকী, মাকতাবাতুস সুয়াদী, জিদ্দা, সৌদি আরব, ২/৩৩৬।]
তিনি বলেন, “আলেমগণ এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে আল্লাহকে এভাবে দেখেছেন।” তিনি এ কথার স্বপক্ষে নিম্নোক্ত হাদীস দ্বারা দলীল পেশ করেন:
উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর স্ত্রী উম্মে তুফাইল থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
«أَنَّهُ رَأَى رَبَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، شَابًّا مُوَفَّرًا رِجْلَاهُ فِي الْخُضْرَةِ، عَلَيْهِ نَعْلَانِ مِنْ ذَهَبٍ، عَلَى وَجْهِهِ فِرَاشٌ مِنْ ذَهَبٍ» .
“তিনি স্বপ্নে তাঁর রবকে পরিপূর্ণ উত্তম একজন যুবকের আকৃতিতে চুল বিশিষ্ট দেখেছেন। তাঁর পদপযুগল সবুজ কাপড়ে আবৃত ছিল। এতে সোনার জুতা পরিহিত ছিল। তাঁর চেহারায় সোনার চাদর ছিল।” [রু’ইয়াতুল্লাহি, দারাকুতনী, হাদীস নং ২৮৭, ইমাম হাইসামী রহ. হাদীসটিকে মাজমাউজ জাওয়ায়েদে (৭/১৭৯) মুনকার বলেছেন, তিনি বলেন, رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ، وَقَالَ ابْنُ حِبَّانَ : إِنَّهُ حَدِيثٌ مُنْكَرٌ لِأَنَّ عُمَارَةَ بْنَ عَامِرِ بْنِ حَزْمٍ الْأَنْصَارِيَّ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ أُمِّ الطُّفَيْلِ، ذَكَرَهُ فِي تَرْجَمَةِ عُمَارَةَ فِي الثِّقَاتِ .]
অতঃপর তিনি বলেন, “মানুষের স্বপ্নে বিভ্রম ও ভুলও কিছু দেখতে পারে। দর্শনকারী সৎ ও অসৎ ভেদে এর ব্যাখ্যা হতে পারে।” [আসমা ওয়াসসিফাত লিলবাইহাকী, ২/৩৬৮।]
২- ইমাম বাগভী রহ. বলেন, “স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা জায়েয। মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন,
«إني نعست فرأيت ربي» .
“আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় আমার রবকে দেখতে পেলাম।”
স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা তার কুদরতের প্রকাশ ঘটা, তার ন্যায় বিচার, বিপদাপদ দূর বা ভালো কিছু অর্জন ইত্যাদি হতে পারে। যেমন সে যদি দেখে যে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের ওয়াদা করেছেন বা ক্ষমা করেছেন বা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন। যেহেতু আল্লাহর কথা সত্য, তার ওয়াদাও সত্য। আবার যদি দেখে যে, আল্লাহ তার দিকে তাকিয়েছেন, তবে বুঝতে হবে যে, তিনি তার ওপর রহমত বর্ষণ করবেন। আর যদি তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে তা বান্দাহর জন্য গুনাহ থেকে সতর্কতা। কেননা আল্লাহ বলেছেন,
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ يَشۡتَرُونَ بِعَهۡدِ ٱللَّهِ وَأَيۡمَٰنِهِمۡ ثَمَنٗا قَلِيلًا أُوْلَٰٓئِكَ لَا خَلَٰقَ لَهُمۡ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ ٱللَّهُ وَلَا يَنظُرُ إِلَيۡهِمۡ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمۡ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٞ ٧٧﴾ [ ال عمران : ٧٧ ]
“নিশ্চয় যারা আল্লাহর অঙ্গীকার ও তাদের শপথের বিনিময়ে খরিদ করে তুচ্ছ মূল্য, পরকালে এদের জন্য কোনো অংশ নেই। আর আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না এবং কিয়ামতের দিন তাদের দিকে তাকাবেন না আর তাদেরকে পবিত্রও করবেন না এবং তাদের জন্যই রয়েছে মর্মন্তুদ ‘আযাব।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৭৭]
আর যদি তিনি স্বপ্নে তাকে দুনিয়ার কোনো সম্পদ দেন তবে বুঝতে হবে এটা তার জন্য বালা-মসীবত ও পরীক্ষা। শারীরিক অসুস্থতা দেখলে রোগ ব্যাধি হবে। ধৈর্যধারণ করলে বিনিময়ে অনেক প্রতিদান পাবে। বান্দা এ ব্যাপারে নানা পেরেশানীতে থাকবে, অবশেষে আল্লাহর রহমতপ্রাপ্ত হবে এবং শেষ পরিণতি উত্তম হবে।” [শরহে সুন্নাহ লিলবাগভী, আল-মাকতাব আল-ইসলামি, বৈরূত, ২য় সংস্করণ ১৯৮৩, খ. ১২, পৃ. ২২৭-২২৮।]
৩- শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. বলেছেন,
وَقَدْ اتَّفَقَ أَئِمَّةُ الْمُسْلِمِينَ عَلَى أَنَّ أَحَدًا مِنْ الْمُؤْمِنِينَ لَا يَرَى اللَّهَ بِعَيْنِهِ فِي الدُّنْيَا وَلَمْ يَتَنَازَعُوا إلَّا فِي النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَاصَّةً مَعَ أَنَّ جَمَاهِيرَ الْأَئِمَّةِ عَلَى أَنَّهُ لَمْ يَرَهُ بِعَيْنِهِ فِي الدُّنْيَا وَعَلَى هَذَا دَلَّتْ الْآثَارُ الصَّحِيحَةُ الثَّابِتَةُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالصَّحَابَةِ وَأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ . وَلَمْ يَثْبُتْ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ وَلَا عَنْ الْإِمَامِ أَحْمَدَ وَأَمْثَالِهِمَا : أَنَّهُمْ قَالُوا إنَّ مُحَمَّدًا رَأَى رَبَّهُ بِعَيْنِهِ بَلْ الثَّابِتُ عَنْهُمْ إمَّا إطْلَاقُ الرُّؤْيَةِ وَإِمَّا تَقْيِيدُهَا بِالْفُؤَادِ وَلَيْسَ فِي شَيْءٍ مِنْ أَحَادِيثِ الْمِعْرَاجِ الثَّابِتَةِ أَنَّهُ رَآهُ بِعَيْنِهِ وَقَوْلُهُ : { أَتَانِي الْبَارِحَةَ رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ } الْحَدِيثُ الَّذِي رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَغَيْرُهُ إنَّمَا كَانَ بِالْمَدِينَةِ فِي الْمَنَامِ هَكَذَا جَاءَ مُفَسَّرًا .
“সকল মুসলিম ‘আলেম এ কথায় একমত যে, দুনিয়াতে স্বচক্ষে কোনো মুমিনই আল্লাহকে দেখতে পাবে না। কিছু আলেম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপারে মতানৈক্য করেছেন, তিনি কি আল্লাহকে দেখেছেন না দেখেন নি? তবে জমহুর আলেমের মতে, তিনি আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখেন নি। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম, সাহাবী ও তাবেঈ থেকে অনেক সহীহ হাদীস ও আছার বর্ণিত আছে। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা ও ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল রহ. থেকে একথা সাব্যস্ত নেই যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সরাসরি স্বচক্ষে আল্লাহকে দেখেছেন; বরং তাদের থেকে সাধারণ দেখা বা অন্তরে দেখার কথা উল্লেখ আছে। মি‘রাজের হাদীসসমূহে একথা সাব্যস্ত নেই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম সরাসরি স্বচক্ষে আল্লাহকে দেখেছেন। ইমাম তিরমিযী বর্ণিত হাদীস,
«أَتَانِي الْبَارِحَةَ رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ» .
“গতরাতে আমার রব সুন্দরতম আকৃতিতে আমার কাছে এসেছেন”। [তিরমিযী, হাদীস নং ৩২৩৪, তিনি হাদীসটিকে হাসান গরীব বলেছেন। আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
হাদীসটি মদীনায় স্বপ্নে দেখার কথা বলা হয়েছে। এটা উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা। তাছাড়াও উম্মে তুফাইল, ইবন আব্বাস ও অন্যান্যদের বর্ণিত আল্লাহকে দেখা সম্পর্কিত হাদীস মক্কায় মি‘রাজের সময়কার বর্ণিত হাদীসের ব্যাখ্যা। [মাজমু‘উল ফাতাওয়া, ২/৩৩৫-৩৩৬।]
ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. আরো বলেন,
وَالنَّاسُ فِي رُؤْيَةِ اللَّهِ عَلَى ثَلَاثَةِ أَقْوَالٍ : - فَالصَّحَابَةُ وَالتَّابِعُونَ وَأَئِمَّةُ الْمُسْلِمِينَ عَلَى أَنَّ اللَّهَ يَرَى فِي الْآخِرَةِ بِالْأَبْصَارِ عِيَانًا وَأَنَّ أَحَدًا لَا يَرَاهُ فِي الدُّنْيَا بِعَيْنِهِ؛ لَكِنْ يَرَى فِي الْمَنَامِ وَيَحْصُلُ لِلْقُلُوبِ - مِنْ الْمُكَاشَفَاتِ وَالْمُشَاهَدَاتِ - مَا يُنَاسِبُ حَالَهَا . وَمِنْ النَّاسِ مَنْ تَقْوَى مُشَاهَدَةُ قَلْبِهِ حَتَّى يَظُنَّ أَنَّهُ رَأَى ذَلِكَ بِعَيْنِهِ؛ وَهُوَ غالط وَمُشَاهَدَاتُ الْقُلُوبِ تَحْصُلُ بِحَسَبِ إيمَانِ الْعَبْدِ وَمَعْرِفَتِهِ فِي صُورَةٍ مِثَالِيَّةٍ كَمَا قَدْ بُسِطَ فِي غَيْرِ هَذَا الْمَوْضِعِ . ( وَالْقَوْلُ الثَّانِي ) قَوْلُ نفاة الْجَهْمِيَّة أَنَّهُ لَا يَرَى فِي الدُّنْيَا وَلَا فِي الْآخِرَةِ . ( وَالثَّالِثُ ) قَوْلُ مَنْ يَزْعُمُ أَنَّهُ يَرَى فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ . وَحُلُولِيَّةُ الْجَهْمِيَّة يَجْمَعُونَ بَيْنَ النَّفْيِ وَالْإِثْبَاتِ فَيَقُولُونَ : إنَّهُ لَا يَرَى فِي الدُّنْيَا وَلَا فِي الْآخِرَةِ وَإِنَّهُ يَرَى فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ .
“আল্লাহকে দেখা না দেখার ব্যাপারে মানুষ তিনভাগে বিভক্ত। সাহাবী, তাবেঈ ও মুসলিম ইমামগণ মনে করেন যে, মুমিনরা আখেরাতে আল্লাহকে সরাসরি স্বচক্ষে দেখতে পাবে, দুনিয়াতে সরাসরি দেখতে পাবে না। তবে স্বপ্নে মানুষের অবস্থাভেদে ...এ রকম কিছু ঘটে থাকে। কোনো কোনো মানুষের অন্তরের ... শক্তি বেশি, ফলে সে ধারণা করে, সে স্বচক্ষে আল্লাহকে দেখেছেন। প্রকৃতপক্ষে এটা ভুল ধারণা। বান্দার ঈমান ও অনুরূপ জিনিস অবলোকন করার জ্ঞানের স্তর হিসেবে অন্তরের মুশাহাদারও পার্থক্য হয়। দ্বিতীয় মত হলো, জাহমিয়্যাহরা মনে করেন, আল্লাহকে দুনিয়া বা আখেরাতে কোনোভাবেই দেখা যাবে না। তৃতীয় দল মনে করেন যে, আল্লাহকে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতেই দেখা যায়। এরা হলো জাহমিয়্যাহ সম্প্রদায়ের হুলুল [যারা মনে করে, স্রষ্টা তার সৃষ্টির ভিতরে প্রবেশ করেন। নাউযুবিল্লাহ। [সম্পাদক]] বিশ্বাসে বিশ্বাসীগণ। এদের উভয় দলই বাড়াবাড়িতে রয়েছে। একদল মনে করেন, আল্লাহকে দুনিয়া ও আখেরাতে কখনও দেখা যাবে না। আবার আরেকদল মনে করেন, আল্লাহকে উভয় জগতেই দেখা যাবে।” [মাজমু‘উল ফাতাওয়া, ২/৩৩৬-৩৩৭।]
৪- ইবন হাজার আসকালানী রহ. বলেন, স্বপ্নবিশারদগণ স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা জায়েয বলেছেন। তবে সে যে রূপেই দেখুক তা আল্লাহর আসল রূপ নয়, কেননা আল্লাহর আকার আকৃতি মানুষের ধারণার বাইরে। স্বপ্নে আল্লাহর জাত কখনই দেখা সম্ভব নয়। [ফাতহুল বারী, সংক্ষেপিত, ১২/৩৮৮।]
৫- ইমাম ইবন জাওযী রহ. বলেন, কেউ যদি বলে আল্লাহকে দেখা সম্পর্কে আপনি কী বলেন? তাদেরকে বলব, আল্লাহকে তার হুবহু আকৃতিতে দেখা যায় না; বরং কোনো একটা উদাহরণস্বরূপ আকৃতিতে দেখা যায়। যাতে মানুষ বুঝতে পারে। যেমন, আল্লাহ কুরআনের উদাহরণ দিয়েছেন আসমান থেকে পানি বর্ষণের সাথে। এ পানি দ্বারা যেমন সবাই উপকৃত হয় তেমনি কুরআন দ্বারাও সবাই উপকৃত হয়। অতএব, এর দ্বারা স্পষ্ট হলো যে, দুনিয়াতে আল্লাহকে তার নিজস্ব আকৃতিতে দেখা যাবে না। আল্লাহ এসব আকৃতি থেকে পাক-পবিত্র। মানুষ তার আসল আকৃতি কল্পনা করতে পারে না। [সাইদুল খাতির, ইবনুল জাওযী, পৃ. ৪৪২।]
৬- শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল-উসাইমীন রহ.-কে এক অনুষ্ঠানে জিজ্ঞেস করা হলো, কোনো মুমিন আল্লাহকে দেখেছে বললে একথা কি সত্য? তিনি উত্তরে বলেছেন, দুনিয়াতে স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা যায় আর আখেরাতে যেহেতু ঘুম নেই, তাই সেখানে জাগ্রত অবস্থাতেই সরাসরি স্বচক্ষে আল্লাহকে দেখবে। আসমানে ফিরিশতাদের আলোচনা সভার হাদীস থেকে জানা যায় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে আল্লাহকে দেখেছেন। নবী ছাড়া অন্যদের দেখা সম্পর্কে আমার জানা নেই। তাদের ক্ষেত্রে বাস্তবে সংঘটিত হয়েছে কি হয় নি তা আমার জানা নেই। তবে ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল রহ.-এর ব্যাপারে বলা হয়ে থাকে যে, তিনি স্বপ্নে আল্লাহকে দেখেছেন। শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. বলেছেন, মানুষ স্বপ্নে আল্লাহকে দেখতে পারে, তাদের দীনদারীতা অনুসারে উদাহরণস্বরূপ কোনো একটা আকৃতিতে দেখে। অর্থাৎ সে একটা ভালো স্বপ্নে আল্লাহকে দেখে। [আল-লিকাউল মাফতুহ, ৩০/১৭।]
এভাবে অনেক আলেমই মত ব্যক্ত করেছেন যে, দুনিয়াতে স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা সম্ভব। সরাসরি স্বচক্ষে জাগ্রত অবস্থায় কোনো মানুষই আল্লাহকে দেখেন নি। এমনকি নবী রাসূলরাও দেখেন নি। তবে আখিরাতে আল্লাহকে দেখা যাবে। এটা শুধু মুমিনদের জন্য বিশেষ নি‘আমত।
«رأيت ربي جعدا أمرد عليه حلة خضراء» .
“আমি আমার রবকে দাড়িবিহীন কোকড়ানো চুল বিশিষ্ট সবুজ কাপড় পরিহিত অবস্থায় দেখেছি”। [আসমা ওয়াসসিফাত লিলবাইহাকী, মাকতাবাতুস সুয়াদী, জিদ্দা, সৌদি আরব, ২/৩৩৬।]
তিনি বলেন, “আলেমগণ এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে আল্লাহকে এভাবে দেখেছেন।” তিনি এ কথার স্বপক্ষে নিম্নোক্ত হাদীস দ্বারা দলীল পেশ করেন:
উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর স্ত্রী উম্মে তুফাইল থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
«أَنَّهُ رَأَى رَبَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، شَابًّا مُوَفَّرًا رِجْلَاهُ فِي الْخُضْرَةِ، عَلَيْهِ نَعْلَانِ مِنْ ذَهَبٍ، عَلَى وَجْهِهِ فِرَاشٌ مِنْ ذَهَبٍ» .
“তিনি স্বপ্নে তাঁর রবকে পরিপূর্ণ উত্তম একজন যুবকের আকৃতিতে চুল বিশিষ্ট দেখেছেন। তাঁর পদপযুগল সবুজ কাপড়ে আবৃত ছিল। এতে সোনার জুতা পরিহিত ছিল। তাঁর চেহারায় সোনার চাদর ছিল।” [রু’ইয়াতুল্লাহি, দারাকুতনী, হাদীস নং ২৮৭, ইমাম হাইসামী রহ. হাদীসটিকে মাজমাউজ জাওয়ায়েদে (৭/১৭৯) মুনকার বলেছেন, তিনি বলেন, رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ، وَقَالَ ابْنُ حِبَّانَ : إِنَّهُ حَدِيثٌ مُنْكَرٌ لِأَنَّ عُمَارَةَ بْنَ عَامِرِ بْنِ حَزْمٍ الْأَنْصَارِيَّ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ أُمِّ الطُّفَيْلِ، ذَكَرَهُ فِي تَرْجَمَةِ عُمَارَةَ فِي الثِّقَاتِ .]
অতঃপর তিনি বলেন, “মানুষের স্বপ্নে বিভ্রম ও ভুলও কিছু দেখতে পারে। দর্শনকারী সৎ ও অসৎ ভেদে এর ব্যাখ্যা হতে পারে।” [আসমা ওয়াসসিফাত লিলবাইহাকী, ২/৩৬৮।]
২- ইমাম বাগভী রহ. বলেন, “স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা জায়েয। মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন,
«إني نعست فرأيت ربي» .
“আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় আমার রবকে দেখতে পেলাম।”
স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা তার কুদরতের প্রকাশ ঘটা, তার ন্যায় বিচার, বিপদাপদ দূর বা ভালো কিছু অর্জন ইত্যাদি হতে পারে। যেমন সে যদি দেখে যে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের ওয়াদা করেছেন বা ক্ষমা করেছেন বা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন। যেহেতু আল্লাহর কথা সত্য, তার ওয়াদাও সত্য। আবার যদি দেখে যে, আল্লাহ তার দিকে তাকিয়েছেন, তবে বুঝতে হবে যে, তিনি তার ওপর রহমত বর্ষণ করবেন। আর যদি তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে তা বান্দাহর জন্য গুনাহ থেকে সতর্কতা। কেননা আল্লাহ বলেছেন,
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ يَشۡتَرُونَ بِعَهۡدِ ٱللَّهِ وَأَيۡمَٰنِهِمۡ ثَمَنٗا قَلِيلًا أُوْلَٰٓئِكَ لَا خَلَٰقَ لَهُمۡ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ ٱللَّهُ وَلَا يَنظُرُ إِلَيۡهِمۡ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمۡ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٞ ٧٧﴾ [ ال عمران : ٧٧ ]
“নিশ্চয় যারা আল্লাহর অঙ্গীকার ও তাদের শপথের বিনিময়ে খরিদ করে তুচ্ছ মূল্য, পরকালে এদের জন্য কোনো অংশ নেই। আর আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না এবং কিয়ামতের দিন তাদের দিকে তাকাবেন না আর তাদেরকে পবিত্রও করবেন না এবং তাদের জন্যই রয়েছে মর্মন্তুদ ‘আযাব।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৭৭]
আর যদি তিনি স্বপ্নে তাকে দুনিয়ার কোনো সম্পদ দেন তবে বুঝতে হবে এটা তার জন্য বালা-মসীবত ও পরীক্ষা। শারীরিক অসুস্থতা দেখলে রোগ ব্যাধি হবে। ধৈর্যধারণ করলে বিনিময়ে অনেক প্রতিদান পাবে। বান্দা এ ব্যাপারে নানা পেরেশানীতে থাকবে, অবশেষে আল্লাহর রহমতপ্রাপ্ত হবে এবং শেষ পরিণতি উত্তম হবে।” [শরহে সুন্নাহ লিলবাগভী, আল-মাকতাব আল-ইসলামি, বৈরূত, ২য় সংস্করণ ১৯৮৩, খ. ১২, পৃ. ২২৭-২২৮।]
৩- শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. বলেছেন,
وَقَدْ اتَّفَقَ أَئِمَّةُ الْمُسْلِمِينَ عَلَى أَنَّ أَحَدًا مِنْ الْمُؤْمِنِينَ لَا يَرَى اللَّهَ بِعَيْنِهِ فِي الدُّنْيَا وَلَمْ يَتَنَازَعُوا إلَّا فِي النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَاصَّةً مَعَ أَنَّ جَمَاهِيرَ الْأَئِمَّةِ عَلَى أَنَّهُ لَمْ يَرَهُ بِعَيْنِهِ فِي الدُّنْيَا وَعَلَى هَذَا دَلَّتْ الْآثَارُ الصَّحِيحَةُ الثَّابِتَةُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالصَّحَابَةِ وَأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ . وَلَمْ يَثْبُتْ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ وَلَا عَنْ الْإِمَامِ أَحْمَدَ وَأَمْثَالِهِمَا : أَنَّهُمْ قَالُوا إنَّ مُحَمَّدًا رَأَى رَبَّهُ بِعَيْنِهِ بَلْ الثَّابِتُ عَنْهُمْ إمَّا إطْلَاقُ الرُّؤْيَةِ وَإِمَّا تَقْيِيدُهَا بِالْفُؤَادِ وَلَيْسَ فِي شَيْءٍ مِنْ أَحَادِيثِ الْمِعْرَاجِ الثَّابِتَةِ أَنَّهُ رَآهُ بِعَيْنِهِ وَقَوْلُهُ : { أَتَانِي الْبَارِحَةَ رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ } الْحَدِيثُ الَّذِي رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَغَيْرُهُ إنَّمَا كَانَ بِالْمَدِينَةِ فِي الْمَنَامِ هَكَذَا جَاءَ مُفَسَّرًا .
“সকল মুসলিম ‘আলেম এ কথায় একমত যে, দুনিয়াতে স্বচক্ষে কোনো মুমিনই আল্লাহকে দেখতে পাবে না। কিছু আলেম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপারে মতানৈক্য করেছেন, তিনি কি আল্লাহকে দেখেছেন না দেখেন নি? তবে জমহুর আলেমের মতে, তিনি আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখেন নি। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম, সাহাবী ও তাবেঈ থেকে অনেক সহীহ হাদীস ও আছার বর্ণিত আছে। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা ও ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল রহ. থেকে একথা সাব্যস্ত নেই যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সরাসরি স্বচক্ষে আল্লাহকে দেখেছেন; বরং তাদের থেকে সাধারণ দেখা বা অন্তরে দেখার কথা উল্লেখ আছে। মি‘রাজের হাদীসসমূহে একথা সাব্যস্ত নেই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম সরাসরি স্বচক্ষে আল্লাহকে দেখেছেন। ইমাম তিরমিযী বর্ণিত হাদীস,
«أَتَانِي الْبَارِحَةَ رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ» .
“গতরাতে আমার রব সুন্দরতম আকৃতিতে আমার কাছে এসেছেন”। [তিরমিযী, হাদীস নং ৩২৩৪, তিনি হাদীসটিকে হাসান গরীব বলেছেন। আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
হাদীসটি মদীনায় স্বপ্নে দেখার কথা বলা হয়েছে। এটা উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা। তাছাড়াও উম্মে তুফাইল, ইবন আব্বাস ও অন্যান্যদের বর্ণিত আল্লাহকে দেখা সম্পর্কিত হাদীস মক্কায় মি‘রাজের সময়কার বর্ণিত হাদীসের ব্যাখ্যা। [মাজমু‘উল ফাতাওয়া, ২/৩৩৫-৩৩৬।]
ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. আরো বলেন,
وَالنَّاسُ فِي رُؤْيَةِ اللَّهِ عَلَى ثَلَاثَةِ أَقْوَالٍ : - فَالصَّحَابَةُ وَالتَّابِعُونَ وَأَئِمَّةُ الْمُسْلِمِينَ عَلَى أَنَّ اللَّهَ يَرَى فِي الْآخِرَةِ بِالْأَبْصَارِ عِيَانًا وَأَنَّ أَحَدًا لَا يَرَاهُ فِي الدُّنْيَا بِعَيْنِهِ؛ لَكِنْ يَرَى فِي الْمَنَامِ وَيَحْصُلُ لِلْقُلُوبِ - مِنْ الْمُكَاشَفَاتِ وَالْمُشَاهَدَاتِ - مَا يُنَاسِبُ حَالَهَا . وَمِنْ النَّاسِ مَنْ تَقْوَى مُشَاهَدَةُ قَلْبِهِ حَتَّى يَظُنَّ أَنَّهُ رَأَى ذَلِكَ بِعَيْنِهِ؛ وَهُوَ غالط وَمُشَاهَدَاتُ الْقُلُوبِ تَحْصُلُ بِحَسَبِ إيمَانِ الْعَبْدِ وَمَعْرِفَتِهِ فِي صُورَةٍ مِثَالِيَّةٍ كَمَا قَدْ بُسِطَ فِي غَيْرِ هَذَا الْمَوْضِعِ . ( وَالْقَوْلُ الثَّانِي ) قَوْلُ نفاة الْجَهْمِيَّة أَنَّهُ لَا يَرَى فِي الدُّنْيَا وَلَا فِي الْآخِرَةِ . ( وَالثَّالِثُ ) قَوْلُ مَنْ يَزْعُمُ أَنَّهُ يَرَى فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ . وَحُلُولِيَّةُ الْجَهْمِيَّة يَجْمَعُونَ بَيْنَ النَّفْيِ وَالْإِثْبَاتِ فَيَقُولُونَ : إنَّهُ لَا يَرَى فِي الدُّنْيَا وَلَا فِي الْآخِرَةِ وَإِنَّهُ يَرَى فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ .
“আল্লাহকে দেখা না দেখার ব্যাপারে মানুষ তিনভাগে বিভক্ত। সাহাবী, তাবেঈ ও মুসলিম ইমামগণ মনে করেন যে, মুমিনরা আখেরাতে আল্লাহকে সরাসরি স্বচক্ষে দেখতে পাবে, দুনিয়াতে সরাসরি দেখতে পাবে না। তবে স্বপ্নে মানুষের অবস্থাভেদে ...এ রকম কিছু ঘটে থাকে। কোনো কোনো মানুষের অন্তরের ... শক্তি বেশি, ফলে সে ধারণা করে, সে স্বচক্ষে আল্লাহকে দেখেছেন। প্রকৃতপক্ষে এটা ভুল ধারণা। বান্দার ঈমান ও অনুরূপ জিনিস অবলোকন করার জ্ঞানের স্তর হিসেবে অন্তরের মুশাহাদারও পার্থক্য হয়। দ্বিতীয় মত হলো, জাহমিয়্যাহরা মনে করেন, আল্লাহকে দুনিয়া বা আখেরাতে কোনোভাবেই দেখা যাবে না। তৃতীয় দল মনে করেন যে, আল্লাহকে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতেই দেখা যায়। এরা হলো জাহমিয়্যাহ সম্প্রদায়ের হুলুল [যারা মনে করে, স্রষ্টা তার সৃষ্টির ভিতরে প্রবেশ করেন। নাউযুবিল্লাহ। [সম্পাদক]] বিশ্বাসে বিশ্বাসীগণ। এদের উভয় দলই বাড়াবাড়িতে রয়েছে। একদল মনে করেন, আল্লাহকে দুনিয়া ও আখেরাতে কখনও দেখা যাবে না। আবার আরেকদল মনে করেন, আল্লাহকে উভয় জগতেই দেখা যাবে।” [মাজমু‘উল ফাতাওয়া, ২/৩৩৬-৩৩৭।]
৪- ইবন হাজার আসকালানী রহ. বলেন, স্বপ্নবিশারদগণ স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা জায়েয বলেছেন। তবে সে যে রূপেই দেখুক তা আল্লাহর আসল রূপ নয়, কেননা আল্লাহর আকার আকৃতি মানুষের ধারণার বাইরে। স্বপ্নে আল্লাহর জাত কখনই দেখা সম্ভব নয়। [ফাতহুল বারী, সংক্ষেপিত, ১২/৩৮৮।]
৫- ইমাম ইবন জাওযী রহ. বলেন, কেউ যদি বলে আল্লাহকে দেখা সম্পর্কে আপনি কী বলেন? তাদেরকে বলব, আল্লাহকে তার হুবহু আকৃতিতে দেখা যায় না; বরং কোনো একটা উদাহরণস্বরূপ আকৃতিতে দেখা যায়। যাতে মানুষ বুঝতে পারে। যেমন, আল্লাহ কুরআনের উদাহরণ দিয়েছেন আসমান থেকে পানি বর্ষণের সাথে। এ পানি দ্বারা যেমন সবাই উপকৃত হয় তেমনি কুরআন দ্বারাও সবাই উপকৃত হয়। অতএব, এর দ্বারা স্পষ্ট হলো যে, দুনিয়াতে আল্লাহকে তার নিজস্ব আকৃতিতে দেখা যাবে না। আল্লাহ এসব আকৃতি থেকে পাক-পবিত্র। মানুষ তার আসল আকৃতি কল্পনা করতে পারে না। [সাইদুল খাতির, ইবনুল জাওযী, পৃ. ৪৪২।]
৬- শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল-উসাইমীন রহ.-কে এক অনুষ্ঠানে জিজ্ঞেস করা হলো, কোনো মুমিন আল্লাহকে দেখেছে বললে একথা কি সত্য? তিনি উত্তরে বলেছেন, দুনিয়াতে স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা যায় আর আখেরাতে যেহেতু ঘুম নেই, তাই সেখানে জাগ্রত অবস্থাতেই সরাসরি স্বচক্ষে আল্লাহকে দেখবে। আসমানে ফিরিশতাদের আলোচনা সভার হাদীস থেকে জানা যায় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে আল্লাহকে দেখেছেন। নবী ছাড়া অন্যদের দেখা সম্পর্কে আমার জানা নেই। তাদের ক্ষেত্রে বাস্তবে সংঘটিত হয়েছে কি হয় নি তা আমার জানা নেই। তবে ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল রহ.-এর ব্যাপারে বলা হয়ে থাকে যে, তিনি স্বপ্নে আল্লাহকে দেখেছেন। শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. বলেছেন, মানুষ স্বপ্নে আল্লাহকে দেখতে পারে, তাদের দীনদারীতা অনুসারে উদাহরণস্বরূপ কোনো একটা আকৃতিতে দেখে। অর্থাৎ সে একটা ভালো স্বপ্নে আল্লাহকে দেখে। [আল-লিকাউল মাফতুহ, ৩০/১৭।]
এভাবে অনেক আলেমই মত ব্যক্ত করেছেন যে, দুনিয়াতে স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা সম্ভব। সরাসরি স্বচক্ষে জাগ্রত অবস্থায় কোনো মানুষই আল্লাহকে দেখেন নি। এমনকি নবী রাসূলরাও দেখেন নি। তবে আখিরাতে আল্লাহকে দেখা যাবে। এটা শুধু মুমিনদের জন্য বিশেষ নি‘আমত।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন