hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

যুব সমাজের অবক্ষয় ও তার প্রতিকার- জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের

লেখকঃ জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের

৩১
দ্রুত বিবাহ করার উপকারিতা:
দ্রুত বিবাহ করার অন্যতম উপকারিতা হল, সন্তান লাভ করা যা একজন মানুষের চোখের শীতলতা। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,

﴿وَٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ أَزۡوَٰجِنَا وَذُرِّيَّٰتِنَا قُرَّةَ أَعۡيُنٖ وَٱجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِينَ إِمَامًا٧٤ ﴾ [ الفرقان : ٧٤ ]

“আর যারা বলে, ‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন’। [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ৭৪]

আয়াত দ্বারা বুঝা যায় স্ত্রী সন্তানরা মানুষের চোখের শীতলতা। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দেন যে, বিবাহের দ্বারা চোখের শীতলতা লাভ হয়। এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা যুবকদের বিবাহ করার প্রতি উৎসাহ দেন এবং বিবাহ করার জন্য সাহস দেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরও বলেন,

﴿هَبۡ لَنَا مِنۡ أَزۡوَٰجِنَا وَذُرِّيَّٰتِنَا قُرَّةَ أَعۡيُنٖ وَٱجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِينَ إِمَامًا ٧٤﴾ [ الفرقان : ٧٤ ]

“আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন’। [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ৭৪]

অনুরূপভাবে আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿ٱلۡمَالُ وَٱلۡبَنُونَ زِينَةُ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَاۖ وَٱلۡبَٰقِيَٰتُ ٱلصَّٰلِحَٰتُ خَيۡرٌ عِندَ رَبِّكَ ثَوَابٗا وَخَيۡرٌ أَمَلٗا ٤٦﴾ [ الكهف : ٤٦ ]

“সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের শোভা। আর স্থায়ী সৎকাজ তোমার রবের নিকট প্রতিদানে উত্তম এবং প্রত্যাশাতেও উত্তম” [সূরা কাহাফ, আয়াত: ৪৬]।

সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য। আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয়, সন্তান দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য। আর মানুষ দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্যের প্রেমিক। একজন মানুষ যেভাবে ধন-সম্পদ তালাশ করে অনুরূপভাবে সে সন্তান-সন্ততিও তালাশ করে। কারণ, মাল যেমন দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য এমনিভাবে সন্তানও দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য। আর আখিরাতে নেক সন্তানের নেক আমলের সাওয়াব মাতা-পিতার উপরও বর্তাবে। যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِذَا مَاتَ الإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَمَلُهُ إِلَّا مِنْ ثَلَاثٍ : صَدَقَةٌ جَارِيَةٌ، وَعِلْمٌ يُنْتَفَعُ بِهِ، وَوَلَدٌ صَالِحٌ يَدْعُو لَهُ »

“যখন আদম সন্তান মারা যায় তখন তার তিনটি আমল ছাড়া সব আমলের সাওয়াব বন্ধ হয়ে যায়। উপকারী ইলম যা দ্বারা মানুষ উপকার লাভ করতে থাকে, সদকায়ে জারিয়া এবং নেক সন্তান যারা তাদের জন্য দু’আ করতে থাকে”। [তিরমিযি, হাদিস: ১৩৭৬, নাসায়ী হাদিস: ৩৬৫১] সুতরাং সন্তান-সন্ততির মধ্যে দুনিয়ার জীবন ও আখিরাতের জীবন উভয় জাহানের কল্যাণ নিহিত রয়েছে। অনুরূপভাবে যৌবনের শুরুতে বিবাহ করা দ্বারা যখন অধিক সন্তান লাভ হবে, তখন উম্মতে মুসলিমার সংখ্যা ও মুসলিম সমাজের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। আর মানুষ ইসলামী সমাজ গঠনের বিষয়ে অবশ্যই দায়িত্বশীল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«تَزَوَّجُوا الْوَدُودَ الْوَلُودَ فَإِنِّي مُكَاثِرٌ بِكُمُ الْأُمَمَ»

“তোমরা বিবাহ কর এমন স্ত্রীদের যারা অধিক মহব্বত করে এবং অধিক সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। কারণ কিয়ামতের দিন আমি তোমাদের আধিক্যকে নিয়ে গর্ব করব”। [আবু দাউদ, হাদিস:২০৫০, আহমদ: ১৩৫৬৯]

উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো ছাড়াও বিবাহ করাতে অনেক কল্যাণ নিহিত। যখন তুমি একজন যুবকের সামনে এ ধরনের বিষয়গুলো তুলে ধরবে, তখন তার সামনে বিবাহ হতে বিরত রাখে এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা ও বাধা দূর হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি বলে, দ্রুত বিবাহ করা দ্বারা পড়া লেখার ক্ষতি হয় বা উচ্চ ডিগ্রি লাভ করতে বাধা হয়, সে আসলে তোমাকে সঠিক কথা বলে নি। বরং সঠিক কথা হলো এর বিপরীত। কারণ, বিবাহ করার যে সব ফায়দা লাভ ও বৈশিষ্ট্যের কথা আমরা উপরে উল্লেখ করলাম, এগুলোর সাথে সাথে বিবাহ দ্বারা আরও যা লাভ হয়, তা হল, আত্মার প্রশান্তি, অন্তরের শান্তি ও চোখের শীতলতা। আর যখন কোনো মানুষের মন শান্ত থাকে, আত্মা পরিতৃপ্ত এবং চোখের শীতলতা থাকে, তখন তার জন্য সব কিছুই সহজ হয় এবং শিক্ষা লাভ করা সহজ হয়। আর বিবাহ বিলম্ব করা বা না করা দ্বারা মানুষের জীবনের উদ্দেশ্য তথা অধিক জ্ঞান অর্জন করাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয় না। কিন্তু যখন বিবাহ করে, তখন তার প্রবৃত্তি শান্ত হয় এবং সে একটি বিশ্রাম স্থল লাভে ধন্য হয় এবং এমন একজন স্ত্রী লাভে সক্ষম হয়, যে তাকে শিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে এবং বাড়ি ফিরলে তার খেদমত ও সেবা যত্ন করবে। সুতরাং, আল্লাহ তা‘আলা যখন তাড়াতাড়ি বিবাহ করার সুযোগ করে দেয়, তা অবশ্যই করা উচিত, কাল ক্ষেপণ করা কোনো ক্রমেই উচিত না। কারণ, এটি একজন ছাত্রকে তার জ্ঞান অর্জনে সহযোগিতা করে। আর বিবাহ করাতে পড়া লেখা ও জ্ঞান অর্জনে বিঘ্ন ঘটে এ ধরনের ধারণা সম্পূর্ণ অমূলক। অনুরূপভাবে তাড়াতাড়ি বিবাহ করার কারণে একজন ছাত্র বা যুবক স্ত্রী সন্তানের খরচ বহন করার দায়িত্ব নিতে হয় যার কারণে অতিরিক্ত চাপ বহন করতে হয়, এ ধরনের কথা বলাও অমূলক। কারণ, বিবাহ করা দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা বরকত ও কল্যাণ দান করবেন। বিবাহ হচ্ছে আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুকরণ ও আনুগত্য করা। আর এটি একটি সাওয়াবের কাজ ও উত্তম কাজ। যখন কোনো যুবক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদেশের অনুকরণ করার উদ্দেশ্যে বিবাহ করে, বিবাহ করাতে যে সব বরকতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তার অনুসন্ধান করে এবং তার নিয়ত খাটি হয়, তাহলে অবশ্যই এ বিবাহ তার জন্য কল্যাণের কারণ হবে। আর মনে রাখতে হবে, রিযকের মালিক আল্লাহ। আল্লাহ বলেন,

﴿۞وَمَا مِن دَآبَّةٖ فِي ٱلۡأَرۡضِ إِلَّا عَلَى ٱللَّهِ رِزۡقُهَا وَيَعۡلَمُ مُسۡتَقَرَّهَا وَمُسۡتَوۡدَعَهَاۚ كُلّٞ فِي كِتَٰبٖ مُّبِينٖ ٦ ﴾ [ هود : ٦ ]

“আর জমিনে বিচরণকারী প্রতিটি প্রাণীর রিযকের দায়িত্ব আল্লাহরই এবং তিনি জানেন তাদের আবাসস্থল ও সমাধিস্থল”। [সূরা হুদ, আয়াত: ৬] আল্লাহ তা‘আলা যাকে বিবাহ করার তাওফিক দেন তার জন্য ও তার স্ত্রী সন্তানের রিযকের ব্যবস্থা তিনিই করবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَا تَقۡتُلُوٓاْ أَوۡلَٰدَكُم مِّنۡ إِمۡلَٰقٖ نَّحۡنُ نَرۡزُقُكُمۡ وَإِيَّاهُمۡۖ ١٥١﴾ [ الانعام : ١٥١ ]

“আর তোমরা দারিদ্রের কারণে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না। আমিও তোমাদেরকে রিযক দেই এবং তাদেরকেও”। [সূরা আনআম, আয়াত: ১৫১]

সুতরাং, মনে রাখতে হবে, কোনো যুবককে তার ক্ষমতার অতিরিক্ত কোনো দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয় না। এটি নিছক একটি ধারনা বৈ আর কিছু নয়। কারণ, বিবাহের কারণে বরকত হয় এবং কল্যাণ নিশ্চিত হয়। বিবাহ মানুষের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত চিরন্তন একটি বিধান। বিবাহ করা মানুষের জন্য কোনো প্রকার আতঙ্ক বা দুঃখ কষ্টের কারণ নয়। যদি মানুষের নিয়ত ভালো হয়, তাহলে বিবাহ কল্যাণ লাভের মাধ্যমসমূহ হতে একটি অন্যতম মাধ্যম। আর বর্তমানে মানুষ বিবাহের ক্ষেত্রে যে সমস্যা ও অসুবিধার কারণ দেখায়, এগুলো সবই মানুষের –নিন্দনীয়- আবিষ্কার। কারণ, বিবাহতে এ ধরনের কোনো অসুবিধা বা সমস্যা বিবাহের সাথে সম্পৃক্ত নয়। যেমন, বড় অংকের মোহর নির্ধারণ করা, বড় করে অনুষ্ঠান করা, অনুষ্ঠান করতে গিয়ে অধিক টাকা পয়সার অপচয় করা ইত্যাদি যেগুলো বর্তমানে মানুষ করে থাকে, এগুলো করার বিষয়টি আল্লাহ তা‘আলার বিধানে নেই। বরং, বিবাহ শাদিকে সহজকরণই ইসলামী শরিয়তের মূল লক্ষ্য। বিবাহ শাদিতে যে সব অনৈতিক ও অনর্থক কাজ করা হয়ে থাকে, সে সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে যে, এ ধরনের কর্মকাণ্ড তাদের কোনো উপকারে আসে না বরং তা তাদের স্ত্রী সন্তানদের ক্ষতির কারণ হয়। সুতরাং, এগুলোর সংস্কার করতে হবে এবং বিবাহ শাদিতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড যাতে না হয়, বিবাহ যাতে সহজ হয়, বিবাহতে খরচ কমিয়ে আনা যায় তার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। আর অতিরিক্ত ব্যয়, অনুষ্ঠানাদি ইত্যাদি অনৈতিক ও অনর্থক বিষয়গুলো দূর করার উপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। যাতে বিবাহ শাদি তার আপন অবস্থা-সহজ পদ্ধতি কম খরচ-এর প্রতি ফিরে আসে। আল্লাহ তা‘আলার নিকট আমাদের কামনা তিনি যেন, আমাদের সবার প্রতি দয়া করেন এবং আমাদেরকে সঠিক পথের দিক হিদায়েত দেন। আর তিনি যেন, মুসলিমদের অবস্থা ও মুসলিম যুবকদের অবস্থা সংশোধন করে দেন। আরও কামনা করি আল্লাহ যেন মুসলিমদেরকে তাদের হারানো ইজ্জত, সম্মান ও গৌরবকে ফিরিয়ে দেন, তাদের অবস্থার উন্নতি দান করেন। আল্লাহর নিকট কামনা, আল্লাহ যেন, মুসলিমদের তাদের দ্বীনের বিষয়ে সাহায্য করেন এবং তাদেরকে তাদের দুশমনদের অনিষ্টতা থেকে হেফাযত করার ক্ষেত্রে তিনিই যথেষ্ট হন। আর সালাত ও সালাম নাযিল হোক আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তার পরিবার পরিজন ও তার সব সাথীদের উপর। আর যাবতীয় প্রশংসা মহান আল্লাহর, যিনি সমগ্র জগতের প্রতিপালক।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন