HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

যুব সমাজের অবক্ষয় ও তার প্রতিকার

লেখকঃ সালেহ ইবন্ ফাওযান আল-ফাওযান

যুবকদের প্রতি গুরুত্ব দেয়া
ইসলাম যুব সমাজকে তাদের বাল্যকাল থেকেই অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। কারণ, তারাই ভবিষ্যতের প্রাণ পুরুষ এবং বাপ-দাদা ও পিতা-মাতার উত্তরসূরি। যুবকরাই তাদের পূর্বসূরিদের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কর্মগুলো সম্পাদন করবে। যুবকদের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার কতক ইসলামী দিক নির্দেশনা আমরা নিম্নে আলোচনা করছি।

প্রথমত: নেককার স্ত্রী গ্রহণ করা। কারণ, স্ত্রীগণ হল, সন্তান উৎপাদনের উৎস এবং ফলাফল লাভের যথাযথ স্থান। স্ত্রীদের গর্ভেই সন্তান জন্ম হয় এবং তাদের পেট থেকে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। নেককার স্ত্রী গ্রহণের গুরুত্ব বিবেচনা করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নেককার স্ত্রী গ্রহণ করার প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদান করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ »

“তুমি দ্বীনদার নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে বিজয়ী হও, তোমার হাত বরকতময় হোক”।

কারণ, নেক স্ত্রী থেকে যখন আল্লাহ তোমাকে সন্তান দান করবে, সে তোমার সন্তানদের সঠিক দিক নির্দেশনা দেবে এবং বাল্য কাল থেকেই তাদেরকে সঠিক পথে পরিচালনা করবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এ বাণী বাচ্চাদের প্রতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা এবং তাৎপর্যপূর্ণ।

দ্বিতীয়ত: নবজাতকের প্রতি ইসলামের নির্দেশনা হল- যখন একটি শিশু জন্ম গ্রহণ করবে, তার পিতা-মাতা যেন তার জন্য একটি সুন্দর নাম নির্বাচন করে। কারণ, সুন্দর নাম নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পিতাদেরকে তার বাচ্চার সুন্দর নাম রাখা ও খারাপ নাম রাখা হতে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়াও অনুপযোগী অর্থ বিশিষ্ট কোন নাম যাতে না রাখে, সে বিষয়ে তিনি উম্মতকে সতর্ক করেছেন।

তৃতীয়ত: ইসলাম যুবকদের গুরুত্ব দেয়া বিষয়ে আরেকটি উদাহরণ হল, ইসলাম পিতাদেরকে তাদের পক্ষ হতে আকিকা করার দিক-নির্দেশনা দেন। অর্থাৎ- তাদের পক্ষ থেকে পশু যবেহ করার নির্দেশ দেন। শিশুদের পক্ষ থেকে আকীকাহ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। বলা বাহুল্য, শিশুদের পক্ষ থেকে আকীকাহ করার একটি প্রভাব বাচ্চাদের জীবনের উপর পড়ে। আকীকা শুধু গোস্ত খাওয়া বা আনন্দ করার নাম নয়। আকীকা ইসলামের একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। এ সুন্নতের প্রতি দিক নির্দেশনা দেয়া প্রমাণ করে ইসলাম যুবকদের প্রতি তাদের জন্ম লগ্ন থেকেই যত্নবান।

চতুর্থত: একজন শিশু যখন ভালো মন্দ বিচার করতে পারে এবং তাদের বুঝ হয়, তখন তাদের সু-শিক্ষা দেয়া এবং দ্বীনের বিধান পালনের প্রতি আদেশ দেয়ার প্রতি ইসলাম বিশেষ গুরুত্ব দেয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مُرُوا أَوْلَادَكُمْ بِالصَّلَاةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ، وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا، وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرٍ وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي الْمَضَاجِعِ»

“তোমাদের সন্তানদের বয়স যখন সাত বছর হয়, তখন তাদের সালাত আদায়ের আদেশ দাও। সালাত আদায় না করলে তোমরা তাদের প্রহার কর যখন তাদের বয়স দশ বছর হয়। আর তোমরা তখন তাদের বিছানাও আলাদা করে দাও।

হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় ইসলাম যুবকদের অধিক গুরুত্ব দেয়। যুবকদের বয়সের পরিবর্তনের সাথে তাদের নির্দেশনাও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। ক্ষমতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী ইসলাম যুবকদের দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى المِلَّةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ أَوْ يُنَصِّرَانِهِ أَوْ يُشَرِّكَانِهِ»

“প্রতিটি নবজাতক ইসলামী ফিতরাতের উপর জন্ম লাভ করে। কিন্তু তার পিতা-মাতা তাকে ইয়াহু-দী, খৃষ্টান অথবা মুশরিক বানায়”।

একজন নবজাতক-শিশু অবশ্যই ফিতরাত অর্থাৎ ইসলামী স্বভাবের উপর জন্ম লাভ করে। আর ফিতরাতকে যখন মাতা-পিতা গুরুত্ব দেয়, সংরক্ষণ করে এবং ভালো দিক পরিচালনা করে, তখন তা ভালো পরিচালনার কারণে ভালো দিকে পরিচালিত হয়, আর যখন মাতা-পিতা সন্তানকে লালন-পালন করতে গিয়ে, ভিন্ন পথে পরিচালনা করে, তখন সে নষ্ট হয়ে যায় এবং মাতা-পিতার কারণে সে খারাপ পথে চলে যায়। যদি মাতা-পিতা ইয়াহুদী হয় অথবা খৃষ্টান হয় অথবা মুজুছী হয়, তখন সন্তানও এ সব বাতিল ও ভ্রান্ত দ্বীনের অনুসারী হয় ফলে তার আসল ফিতরাত-স্বভাব নষ্ট হয়। আর যদি সন্তানের মাতা-পিতা ভালো হয়, তখন সে আল্লাহ তা’আলা সন্তানের মধ্যে যে ফিতরাতে ইসলামীকে আমানত রেখেছেন তারা তার সংরক্ষণ করে, তাকে লালন-পালন করে এবং তাকে যে কোন প্রকার বিকৃতি হতে হেফাজত করে।

পঞ্চমত: যুবকদের বিষয়টিকে ইসলাম তাদের জীবনের শুরু থেকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করেন। এর উপর আরও একটি প্রমাণ হল, আল্লাহ তা’আলা একজন যুবককে তার মাতা-পিতা বা তাদের উভয়ের মধ্যে জীবিত যে কোন একজনের প্রতি ভালো ব্যবহারের নির্দেশ দেন। আর তাকে স্মরণ করিয়ে দেন- তুমি যখন ছোট ছিলে, তখন কীভাবে তোমার মাতা-পিতা তোমাকে লালন-পালন করেছিল। আল্লাহ তা’আলা বলেন,

﴿ ۞وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعۡبُدُوٓاْ إِلَّآ إِيَّاهُ وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَٰنًاۚ إِمَّا يَبۡلُغَنَّ عِندَكَ ٱلۡكِبَرَ أَحَدُهُمَآ أَوۡ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَآ أُفّٖ وَلَا تَنۡهَرۡهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوۡلٗا كَرِيمٗا ٢٣ وَٱخۡفِضۡ لَهُمَا جَنَاحَ ٱلذُّلِّ مِنَ ٱلرَّحۡمَةِ وَقُل رَّبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا ٢٤ ﴾ [ الاسراء : ٢٣، ٢٤ ]

“আর তাদের উভয়ের জন্য দয়াপরবশ হয়ে বিনয়ের ডানা নত করে দাও এবং বল, হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া কর, যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন-পালন করেছেন। আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল”। [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ২৩, ২৪]

মাতা-পিতার জন্য তাদের সন্তানকে লালন-পালন করা সন্তানের জন্য অনেক বড় নেয়ামত ও অপার অনুগ্রহ। সুতরাং, সন্তান যখন বড় হবে সন্তানের উপর ওয়াজিব হল, সে তার মাতা-পিতার খেদমত করে তাদের সন্তুষ্টি অর্জন করতে চেষ্টা করবে। আর লালন পালন দ্বারা উদ্দেশ্য শুধু মাত্র দৈহিক লালন-পালন যেমন, খাওয়া দাওয়া, পোশাক পরিচ্ছেদ ইত্যাদি নয়। কারণ, খাওয়া দাওয়া বাসস্থানের ব্যবস্থার মাধ্যমে যে লালন-পালন তা জীব-জন্তুর লালন-পালন। কিন্তু আসল লালন-পালন হল, শিক্ষা-দীক্ষা প্রদান, সঠিক দ্বীনী স্বভাবের সংরক্ষণ, ভালো কাজের প্রতি দিক নির্দেশনা দেয়া, অন্তরে কল্যাণের বীজ বপন করা এবং ভালো কাজে অভ্যস্ত করে গড়ে তোলা। আর এ ধরনের উপকারী লালন-পালনের প্রভাব সন্তানের উপর চিরদিন বাকী থাকে এবং তারা সে অনুপাতে তাদের জীবনকে পরিচালনা করে। মাতা-পিতা থেকে যে শিক্ষা লাভ করে, সে শিক্ষা নিয়েই তারা বড় হতে থাকে এবং সে শিক্ষা তার জীবন চলার পাথেয় হয়। আর দৈহিক লালন-পালন কোন কোন সময় তার সংশোধন হওয়া বা ভালো হওয়ার তুলনায় তার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাই বেশি থাকে। আর মনে রাখবে, একজন সন্তানকে যখন খানা-পিনা ইত্যাদির মাধ্যমে লালন-পালন করা হয় এবং তার প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণ করা হয়, তখন অনেক সময় দেখা যায়, তাতে তার ক্ষতিই বেশি হয়, তার প্রকৃত লালন-পালন হয় না। কারণ, নৈতিক শিক্ষা দেয়া ছাড়া শুধু লালন-পালন করাতে একজন মানুষের মধ্যে জীব-জন্তুর স্বভাব তৈরি হয়। আর যদি মাতা-পিতা তাদের সন্তানকে উভয় প্রকার লালন করে অর্থাৎ, দৈহিক লালন- এটি হতে হবে, নির্ধারিত সীমানা ও শরীয়ত সম্মত গণ্ডির মধ্যে, যাতে কোন প্রকার অপচয় ও অপব্যয় না হয়- নৈতিক শিক্ষা-দীক্ষা দেয়ার মাধ্যমে লালন-পালন, তাহলে তা অবশ্যই অধিক উত্তম হবে এবং সন্তান যখন বড় হবে তখন সে তার প্রতি তার মাতা-পিতার অনুগ্রহের কথা স্মরণ করবে। যেমন সন্তানকে মা-বাবার জন্য দোয়া করার বিষয়টি আল্লাহ তা’আলা এভাবে শিখিয়ে দেন,

﴿رَّبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا ٢٤ ﴾ [ الاسراء : ٢٤ ]

“হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া কর, যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন-পালন করেছেন”।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন