hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বিপদে ধৈর্যধারণ দশটি উপদেশ

লেখকঃ সানাউল্লাহ বিন নজির আহমদ

১২
১০. আপত্তি অভিযোগ ও অস্থিরতা ত্যাগ করা
যে কোন বিপদাপদের সময় অসহিষ্ণুতা ও আপত্তি-অভিযোগ পরিহার করা। এটাই সান্ত্বনার শ্রেয়পথ। শান্তির উপায়-উপলক্ষ। যে এর থেকে বিরত থাকবে না, তার কষ্ট ও অশান্তি দ্বিগুন হবে। বরং সে নিজেই স্বীয় শান্তি বিনাশকারী-নিঃশেষকারী। কোন অর্থেই তার জন্য ধৈর্য্য প্রযোজ্য হবে না, মুসিবত থেকে নাজাতও পাবে না। কারণ ধৈর্য যদি হয় বিপদাপদ মূলোৎপাটনকারী, অধৈর্য্যতা তার পৃষ্ঠপোষকতা-দানকারী। যার বিশ্বাস আছে, নির্ধারিত বস্ত্ত নিশ্চিত হস্তগত হবে, নির্দিষ্ট বস্ত্ত নিশ্চিত অর্জিত হবে, তার ধৈর্য্য পরিহার করা নিরেট বিড়ম্বনা- আরেকটি মুসিবত। আল্লাহ তাআলা বলেন :

مَا أَصَابَ مِنْ مُصِيبَةٍ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي أَنْفُسِكُمْ إِلَّا فِي كِتَابٍ مِنْ قَبْلِ أَنْ نَبْرَأَهَا إِنَّ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ . لِكَيْ لَا تَأْسَوْا عَلَى مَا فَاتَكُمْ وَلَا تَفْرَحُوا بِمَا آَتَاكُمْ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُورٍ ﴿الحديد :২২-২৩﴾

‘‘যমীনে এবং তোমাদের নিজদের মধ্যে এমন কোন মুসীবত আপতিত হয় না, যা আমি সংঘটিত করার পূর্বে কিতাবে লিপিবদ্ধ রাখি না। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে খুবই সহজ। যাতে তোমরা আফসোস না কর তার উপর যা তোমাদের থেকে হারিয়ে গেছে এবং তোমরা উৎফুল্ল না হও তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তার কারণে। আর আল্লাহ কোন উদ্ধত ও অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না।’’ [হাদীদ : ২২-২৩]

বর্ণিত আছে, জনৈক যাযাবর শহরে প্রবেশ করে একটি বাড়িতে চিৎকারের আওয়াজ শোনে জিজ্ঞাসা করল, এটা কিসে আওয়াজ? তাকে বলা হল, তাদের একজন লোক মারা গেছে। সে বলল, আমার মনে হচ্ছে : তারা আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছে, তার সিদ্ধান্তে বিরক্তি প্রকাশ করছে এবং সওয়াব বিনষ্ট করছে।

মনে রাখা প্রয়োজন! অস্থিরতা হারানো বস্ত্ত ফিরিয়ে আনতে পারে না, বরং তা হিতকামনাকারীকে দুঃখিত ও অশুভ কামনাকারীকে আনন্দিত করে। সাবধান! মুসিবতের দুঃখের সাথে হতাশার নৈরাশ্য সংযোজন করো না। কারণ উভয়ের সঙ্গে ধৈর্যের সহাবস্থান হয় না। এমন বিপরীতধর্মী জিনিস অন্তরও গ্রহণ করে না। এ জন্য বলা হয়, ‘‘ধৈর্য্যের মুসিবত, সবচে’ বড় মুসিবত।’’ কথিত আছে, জনৈক দম্পতির খুব আদরের এক সন্তান মারা যায়, স্বামী স্ত্রীকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে, আল্লাহকে ভয় কর, ছওয়াবের আশা রাখ, ধৈর্য্যধারণ কর। সে উত্তরে বলে, আমি যদি ধৈর্য্যকে হতাশার মাধ্যমে নষ্ট করে দেই। তাহলে এটাই হবে সবচে’ বড় মুসিবত।

জনৈক বিদ্বান বলেছেন : ‘‘জ্ঞানী ব্যক্তি মুসিবতের সময় সে কাজ করে, যা আহমক একমাস পরে করে। অবশেষে যখন ধৈর্য ধরতেই হয় আর এতে মানুষ ভালও জানে না। তাহলে শুরুতেই তো ধৈর্য্যধারণ করা কত ভাল- যা নির্বোধেরা একমাস পর করে থাকে।’’ [উত্তাতুচ্ছাবিরীন পৃ : ৭৪]

সম্ভব ও সাধ্যের নাগালের জিনিস গ্রহণ করেই ধৈর্য্যধারণকারীদের মর্যাদা লাভ করা যায়। যেমন হাতাশা না করা, কাপড় না ছিড়া, গাল না চাপড়ানো, অভিযোগ না করা, মুসিবত প্রকাশ না করা, খাওয়া-দাওয়া ও পরিধানের অভ্যাস স্বাভাবিক রাখা, আল্লাহ তাআলার ফায়সালাতে সন্তুষ্ট থাকা- এ বিশ্বাস করে, যা ফেরত নেয়া হয়েছে, তা আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের কাছে আমানত ছিল। এবং সে পদ্ধতি গ্রহণ করা, যা হজরত উম্মে সুলাইম রা. গ্রহণ করেছিলেন।

বর্ণিত আছে : তাদের একটি ছেলে মারা গেলে, আপন স্বামী আবু তালহাকে তিনি এ বলে সান্ত্বতনা দেন যে, কোন সম্প্রদায় যদি কোন দম্পতির নিকট একটি আমানত রাখে, অতঃপর তারা তাদের আমানত ফেরৎ নিয়ে নেয়, তাহলে আপনি সেটা কোন দৃষ্টিতে দেখবেন? তাদের নিষেধ করার কোন অধিকার আছে কি? উত্তর দিলেন, না। বললেন, আপনার ছেলেকে সে আমানত গণ্য করুন। তাকে হারানো পূণ্য জ্ঞান করুন।

এ ঘটনা অবহিত হয়ে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :

بارك الله لكما في غابر ليلتكما . ( مسلم : ৪৪৯৬)

‘‘আল্লাহ তাআলা তোমাদের গত রাতে বরকত দান করুন।’’ [মুসলিম : ৪৪৯৬]

সর্বশেষ বলি, ধৈর্য্য ধৈর্য্যধারণকারীকে প্রশান্তি এনে দেয়, মুসিবতের পরিবর্তে পূণ্য এনে দেয়। অতএব স্বেচ্ছায় ধৈর্যধারণ করাই ভাল। অন্যথায় অযথা পেরেশান হয়ে, ধৈর্যধারণ করতে বাধ্য হবে। তাই বলা হয় ‘‘যে জ্ঞানীর মত ধৈর্যধারণ না করে, সে চতুষ্পদ জন্তুর মত যন্ত্রণা সহ্য করে।’’ হজরত আলী রা. বলেন :

إنك إن صبرت جرى عليك القلم وأنت مأجور، وإن جزعت جرى عليك القلم وأنت مأزور .

‘‘যদি তুমি ধৈর্যধারণ করো, তাহলে তোমার ওপর তকদির বর্তাবে, তবে তুমি নেকি লাভ করবে। পক্ষান্তরে যদি ধৈর্যহারা হও, তাহলেও তোমার উপর তকদির বর্তাবে, তবে তুমি গুনাহ্গার হবে।’’ [আদাবুদ দুনিয়া ওদ্দিন পৃ : ৪০৭]

হজরত ওমর রা. বলেন :

إنا وجدنا خير عيشنا الصبر .

‘‘আমরা উত্তম জীবনের বাহন হিসেবে ধৈর্যকেই পেয়েছি।’’

হজরত আলী রা. থেকে বর্ণিত:

اعلموا أن الصبر من الإيمان بمنزلة الرأس من الجسد . ألا إنه لا إيمان لمن لا صبر له .

‘‘স্মরণ রেখ মাথা যেমন শরীরের অংশ, তদ্রূপ ধৈর্যও ইমানের অংশ। আরো স্মরণ রাখ, যার ধৈর্য নেই, তার ইমানও নেই।’’

হজরত হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন:

ما تجرع عبد جرعة أعظم من جرعة حلم عند الغضب، وجرعة صبر عند المصيبة .

‘‘ক্রোধের সময় সহনশীলতার ঢোক এবং মুসিবতের সময় ধৈর্যের ঢোকের চেয়ে বড় ঢোক কেহ গলধকরণ করেনি।’’

উমর ইবনে আব্দুল আজিজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন :

ما أنعم الله على عبد نعمة فانتزعها منه، فعاضه مكانها الصبر إلا كان ما عوضه خيرا مما انتزعه .

‘‘আল্লাহ তাআলা যদি কাউকে নেয়ামত দিয়ে পুনরায় নিয়ে নেন এবং বিনিময়ে ধৈর্য দান করেন, তাহলে বলতে হবে, দানকৃত বস্ত্তই উত্তম, নিয়ে নেয়া বস্ত্ত থেকে।’’

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে প্রকৃত ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আমাদের জন্য তিনিই যথেষ্ট, তিনিই আমাদের অভিভাবক।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন