মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
৪. ঈসা মাসীহের ধর্ম ও সাধু পলের ধর্মের মধ্যে তুলনা
৪. ১. শরীয়ত পালন অথবা শরীয়ত লঙ্ঘন
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/605/24
ঈসায়ী ধর্ম ও পলীয় ধর্মের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য শরীয়ত পালন। ঈসা মাসীহ কঠোরভাবে শরীয়ত পালন করতেন, করতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং শরীয়ত পালন ছাড়া মুক্তি পাওয়া যাবে না বলে প্রচার করেছেন। পক্ষান্তরে দ্রুত অধিক সংখ্যক মুরিদ যোগাড় করার লক্ষ্যে সাধু পল শরীয়ত বর্জন করতে উৎসাহ দেন এবং শরীয়ত পালনের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে সকল পাপাচারের পথ উন্মুক্ত করে দেন। শরীয়তের বিরুদ্ধে তাঁর অনেক ঘৃণ্য বক্তব্য রয়েছে। ইঞ্জিলের মধ্যে বিদ্যমান প্রেরিত পুস্তকটি এবং পরবর্তী পত্রগুলি পাঠ করলে পাঠক দেখবেন যে, তাঁর এ সকল বক্তব্য হাওয়ারী ও প্রকৃত খৃস্টানদের (Judio Christians) মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও প্রতিরোধ তৈরি করে। তাঁরা তার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন। তিনিও হাওয়ারীদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার ও অপপ্রচার করতে থাকেন। ফিলিস্তিন ও পার্শবতী এলাকার শিক্ষিত মানুষদের মধ্যে ভাল ফল না পেয়ে তিনি দ্রুত এশিয়া মাইনর ও ইউরোপের গ্রীক-রোমান পৌত্তলিকদের মধ্যে তাঁর শরীয়তমুক্ত মারফতী ধর্মের দাওয়াত দিতে থাকেন। হাওয়ারী ও শরীয়ত পালনকারী খৃস্টানদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহণের জন্য তিনি অতিভক্তিমূলক অনেক নতুন নতুন আকীদা আবিষ্কার করেন। যেহেতু নতুন আকীদাও তাদের পুরাতন পৌত্তলিক আকীদার মতই এবং নতুন কোনো বিধিবিধান মানতে হবে না, শুধু বিশ্বাসই যথেষ্ট, সেহেতু দলে দলে মুর্খ ও পাপ-প্রেমিক মানুষেরা তার মুরিদ হতে লাগলেন।
‘ব্যবস্থা’ বা ‘শরীয়তের’ বিরুদ্ধে সাধু পলের দার্শনিক ও ‘মারফতী” বক্তব্য অনেক। মন শুদ্ধ হলেই হলো। নামায বা শরীয়ত তো বিশ্বাস ঠিক করার জন্য; বিশ্বাস ঠিক হলে আর কিছুই লাগে না। শরীয়তই পাপ করো না বলে পাপের কথা মনে করিয়ে দেয়; শরীয়ত তুলে দিলে আর পাপ থাকবে না!!! ইত্যাদি। সাধুর কয়েকটি বচন শুনুন:
“শরীয়ত পালনের জন্য আল্লাহ্ মানুষকে ধার্মিক বলে গ্রহণ করেন না, বরং ঈসা মসীহের উপর ঈমানের জন্যই তা করেন। ... শরীয়ত পালন করবার ফলে কাউকেই ধার্মিক বলে গ্রহণ করা হবে না।” (গালাতীয় ২/১৬) “ব্যবস্থার কার্য ব্যতিরেকে বিশ্বাস দ্বারাই মনুষ্য ধার্মিক গণিত হয়” (রোমীয় ৩/২৮। পুনশ্চ রোমীয় ১০/১০)। “ব্যবস্থা খৃস্টের কাছে আনিবার জন্য আমাদের স্কুল মাস্টার (our schoolmaster) যেন আমরা বিশ্বাস হেতু ধার্মিক গণিত হই।” (গালাতীয় ৩/২৪)। “শাস্ত্র সকলই পাপের অধীনতায় রুদ্ধ (the scripture hath concluded all under sin) (গালাতীয় ৩/২২)। “ব্যবস্থার কার্য দ্বারা কোন প্রাণী তাঁহার সাক্ষাতে ধার্মিক গণিত হইবে না; কেননা ব্যবস্থা দ্বারা পাপের জ্ঞান জন্মে” (রোমীয় ৩/২০)। “বাস্তবিক যাহারা ব্যবস্থার (শরীয়তের) ক্রিয়াবলম্বী, তাহারা সকলে শাপের অধীন।” (গালাতীয় ৩/১০-১৩)।
তাহলে শুধু মনের বিশ্বাস ও মুখের স্বীকারোক্তি মুক্তির জন্য যথেষ্ট, শরীয়ত শুধু বিশ্বাস পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য। শরীয়ত সকলকে পাপের মধ্যে আবদ্ধ করে, শরীয়তই পাপের উৎস, শরীয়ত পালন করে কেউ ধার্মিক হতে পারে না; বরং পাপী ও অভিশপ্ত হয়। অর্থাৎ ঈসা মাসীহ -সহ সকল নবী ও তাঁদের অনুসারীরা পাপী ও অভিশপ্ত!
তিনি দাবি করেন যে, শরীয়তই সকল শত্রুতা ও হানাহানির কারণ এবং যীশু শরীয়ত বিলোপ করতে এসেছিলেন: “শত্রুতাকে, অর্থাৎ বিধিবদ্ধ আজ্ঞাকলারূপ ব্যবস্থাকে, নিজ মাংসে লুপ্ত করিয়াছেন (abolished in his flesh the enmity, even the law of commandments contained in ordinances)।” (ইফিষীয় ২/১৫)
বিধিবদ্ধ আজ্ঞা বা শরীয়ত কী? শির্ক করিও না, ব্যভিচার করিও না, হত্যা করিও না... । পলীয় খৃস্টধর্মে এগুলি মান্য করা পাপ ও অভিশাপ! তাহলে শির্ক করা, ব্যভিচার করা, হত্যা করা... ইত্যাদিই পাপ ও অভিশাপ থেকে মুক্তির উপায়!
মাসীহের বক্তব্য সাধুর বচনের সাথে সাংঘর্ষিক। শুধু বিশ্বাসে মুক্তি মিলবে তা কখনোই মাসীহ বলেন নি। শত বিশ্বাস থাকলেও সামান্যতম শরীয়ত লঙ্ঘন করলে জান্নাত মিলবে না বলে তিনি প্রচার করেছেন। তিনি বলেন: “মনে করো না আমি তৌরাত কিতাব আর নবীদের কিতাব বাতিল করতে এসেছি। আমি সেগুলো বাতিল করতে আসি নি বরং পূর্ণ করতে এসেছি। ... মূসার শরীয়তের মধ্যে ছোট একটা হুকুমও যে কেউ অমান্য করে এবং লোককে তা অমান্য করতে শিক্ষা দেয় তাকে বেহেশতী রাজ্যে সবচেয়ে ছোট বলা হবে। কিন্তু যে কেউ শরীয়তের হুকুমগুলো পালন করে ও শিক্ষা দেয় তাকে বেহেশতী রাজ্যে বড় বলা হবে। আমি তোমাদের বলছি, আলেম ও ফরীশীদের ধার্মিকতার চেয়ে তোমাদের যদি বেশী কিছু না থাকে তবে তোমরা কোনমতেই বেহেশতী রাজ্যে ঢুকতে পারবে না।” (মথি ৫/১৭-২০)
সাধু পলের দাবি: যীশু শরীয়ত লোপ করতে এসেছিলেন। কিন্তু যীশু বললেন তিনি লোপ করতে নয়, পূর্ণ করতে এসেছিলেন। সাধু পল বললেন, শরীয়ত পালনকারী পাপী ও অভিশপ্ত। আর যীশু বললেন শরীয়তের ক্ষুদ্রতম বিধান লঙ্ঘনকারী পাপী ও অভিশপ্ত। খৃস্টান ভাইগণের প্রতি সবিনয় প্রশ্ন: আপনি কাকে বিশ্বাস ও মান্য করবেন?
মাসীহ বলেন: “যারা আমাকে ‘প্রভু প্রভু’ বলে তারা প্রত্যেকে যে বেহেশতী রাজ্যে ঢুকতে পারবে তা নয়। কিন্তু আমার বেহেশতী পিতার ইচ্ছা যে পালন করে সে-ই ঢুকতে পারবে। সেই দিন অনেকে আমাকে বলবে, ‘প্রভু প্রভু, তোমার নামে কি আমরা নবী হিসাবে কথা বলি নি? তোমার নামে কি ভূত ছাড়াই নি? তোমার নামে কি অনেক অলৌকিক কাজ করি নি? তখন আমি সোজাসুজিই তাদের বলব ‘আমি তোমাদের চিনি না। দুষ্টের দল! (হে অধর্মচারীরা: ye that work iniquity) আমার কাছ থেকে তোমরা দূর হও।’ (মথি ৭/২১-২৩)।
যারা তাকে ‘হে প্রভু হে প্রভু’ বলেন তারা অবশ্যই তাকে অন্তরে বিশ্বাস করেছেন এবং মুখে এভাবে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। উপরন্তু তার নামে পবিত্রআত্মার প্রেরণা লাভের দাবি করেছেন, ধর্মপ্রচার করেছেন এবং কারামতি দেখিয়েছেন। কিন্তু তারপরও তারা জান্নাত লাভ করবেন না; কারণ শত বিশ্বাস ও অতিভক্তি সত্ত্বেও যদি আল্লাহর শরীয়ত পালন বা “ধর্মাচারণ” না থাকে তাহলে মুক্তি মিলবে না।
ঈসা মাসীহ বারংবার বলেছেন যে, আজ্ঞা, বিধান বা শরীয়ত পালনই জান্নাতের একমাত্র পথ। “যে কেহ আমার এই সকল বাক্য শুনিয়া পালন করে... বুদ্ধিমান..। আর যে কেহ আমার এই সকল বাক্য শুনিয়া পালন না করে.. নির্বোধ (মথি ৭/২৪, ২৬)। “এক ব্যক্তি আসিয়া তাঁহাকে বলিল, ... অনন্ত (আখেরী) জীবন পাইবার জন্য আমি কিরূপ সৎকর্ম করিব? তিনি তাহাকে কহিলেন: ... তুমি যদি (আখেরী) জীবনে প্রবেশ করিতে ইচ্ছা কর তবে আজ্ঞা সকল পালন কর (মথি ১৯/১৬-১৭; লূক ১৮/১৮-১৯)
সাধু পল যীশুর এ সকল বক্তব্য প্রচারকারীদেরকে অভিশপ্ত বলে ঘোষণা করেছেন; কারণ তারা তার ইঞ্জিলের বিপরীত ইঞ্জিল প্রচার করেন (গালাতীয় ১/৮-৯)। এরপরও যীশুর অনেক বক্তব্য মানুষদের কাছে পৌঁছাত। এজন্য তিনি ও তাঁর অনুসারীরা অপব্যাখ্যার আশ্রয় নেন। যেমন, তিনি ইয়াহূদীদের ভয়ে বা মানুষে বুঝবে না বলে এগুলি বলেছিলেন। এভাবেই তাঁরা ঈসা মাসীহকে বুঝাতে অক্ষম বা মুনাফিক হিসেবে চিত্রিত করেন (নাউযূ বিল্লাহ)। এমনকি সাধু পল যীশুর শিক্ষাকে প্রাথমিক, আদিম ও পূর্ণতার পরিপন্থী বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন: “(RSV: let us leave the elementrary doctrine (teachings) of Christ and go on to maturity): অতএব আইস, আমরা খৃস্টের আদিম-প্রাথমিক নীতিমালা (শিক্ষা) পশ্চাতে ফেলিয়া পরিপক্কতার দিকে ধাবিত হই।” (ইব্রীয় ৬/১, বাংলা অনুবাদে কারসাজি বিদ্যমান)
ঈসা মাসীহের শিক্ষা প্রাথমিক ও অপরিপক্ক! তাঁর শিক্ষা প্রাইমারি আর পলের শিক্ষা হাইস্কুল! অবশ্য ত্রিত্ববাদীদের জন্য মাসীহের শিক্ষাকে অপরিপক্ক বলা ছাড়া উপায়ও নেই। তাদের ধর্মের একটি আকীদাও মাসীহের শিক্ষার মধ্যে সুস্পষ্ট নেই। কাজেই তাকে অপূর্ণ এবং সাধু পলকে পূর্ণ বলা ছাড়া তাদের উপায় নেই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/605/24
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।