মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
নারীর উপর জিহাদ ফরয নয়। কিন্তু প্রয়োজনে তারাও তাতে অংশ নিতে পারে বিভিন্নভাবে সহযোগী হিসাবে। যেমন-
(১) চিকিৎসা ও অন্যান্য সেবা দান। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, ওহোদ বিপর্যয়ের দিন আমি আয়েশা (রাঃ) ও (আমার মা) উম্মে সুলাইম (রাঃ)-কে পানির মশক পিঠে করে আহতদের নিকট গিয়ে গিয়ে পানি পান করাতে দেখেছি।[1] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, উম্মে সুলাইম ও তার সাথী আনছার মহিলাদের একটি দল যুদ্ধের ময়দানে সৈন্যদের পানি পান করিয়েছে এবং আহতদের চিকিৎসা করেছে’।[2] ওহোদ যুদ্ধে আহত রাসূল (ছাঃ)-এর যখম সমূহ কন্যা ফাতিমা (রাঃ) নিজ হাতে পরিষ্কার করেন। রক্ত বন্ধ না হওয়ায় চাটাই পোড়ানো ছাই দিয়ে তিনি তা বন্ধ করেন।[3] এছাড়াও রাসূল (ছাঃ)-এর নিহত হবার খবর শুনে মদীনা থেকে সম্মানিতা মহিলাগণ দলে দলে দৌড়ে ওহোদের ময়দানে চলে আসেন।[4] উম্মে সালীত্ব আনছারী (রাঃ) ওহোদ যুদ্ধে মুজাহিদদের জন্য পানির মশক সেলাই করে দিয়েছিলেন।[5] রুবাই‘ বিনতে মু‘আউভিয (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে যুদ্ধে যেতাম এবং লোকদের পানি পান করাতাম ও তাদের খেদমত করতাম। আহত ও নিহতদের মদীনায় নিয়ে আসতাম’। ইবনু হাজার আসক্বালানী বলেন, এতে প্রমাণিত হয় যে, যরূরী প্রয়োজনে মহিলাগণ বেগানা পুরুষের চিকিৎসা করতে পারেন।[6]
(২) আত্মরক্ষার জন্য। যেমন হযরত আনাস (রাঃ) বলেন যে, হুনাইনের যুদ্ধে (আমার মা) উম্মে সুলাইমের হাতে খঞ্জর অর্থাৎ দু’ধারী লম্বা ছুরি দেখে রাসূল (ছাঃ) তাকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, যদি কাফের সৈন্য আমার নিকটবর্তী হয়, তবে এ দিয়ে আমি তার পেট ফেড়ে ফেলব। জবাব শুনে রাসূল (ছাঃ) হেসে ফেলেন।[7]
(৩) সহযোগী যোদ্ধা হিসাবে। খ্যাতনামা ছাহাবী হযরত ‘উবাদা বিন ছামেত (রাঃ)-এর স্ত্রী উম্মে হারাম বিনতে মিলহান (রাঃ) মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর স্ত্রী ফাখেতাহ বিনতে ক্বারাযাহর সাথে হযরত ওছমান (রাঃ)-এর খেলাফতকালে (২৩-৩৫ হিঃ) মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর নেতৃত্বে ২৭ হিজরী সনে রোমকদের বিরুদ্ধে ইসলামের ইতিহাসের ১ম নৌযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ও সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।[8]
উপরের আলোচনায় বুঝা গেল যে, যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ না করলেও যুদ্ধে সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহিলাসহ যে কোন দুর্বল ও অপারগ মুমিন অংশগ্রহণ করতে পারবেন। বরং দুর্বলদের সহযোগিতাকে উৎসাহিত করে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, إِنَّمَا يَنْصُرُ اللهُ هَذِهِ الأُمَّةَ بِضَعِيفِهَا بِدَعْوَتِهِمْ وَصَلاَتِهِمْ وَإِخْلاَصِهِمْ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সাহায্য করেন এই উম্মতকে তার দুর্বল শ্রেণীর দ্বারা; তাদের দো‘আ ও দাওয়াতের মাধ্যমে এবং ছালাত ও খালেছ আন্তরিকতার মাধ্যমে’।[9] হযরত আবুদ্দারদা (রাঃ) বলেন, سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ابْغُونِى في الضُّعَفَاءَ فَإِنَّمَا تُرْزَقُونَ وَتُنْصَرُونَ بِضُعَفَائِكُمْ ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, তোমরা আমাকে দুর্বলদের মধ্যে সন্ধান কর। কেননা তোমরা রূযীপ্রাপ্ত হয়ে থাক এবং সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে থাক তোমাদের দুর্বলদের মাধ্যমে।[10]
এর অর্থ এটা নয় যে, মুসলমানদের সবাইকে দুর্বল হয়ে থাকতে হবে। বরং এর অর্থ হ’ল, মুসলিম উম্মাহর সকল সদস্য ও সদস্যার উপরে সর্বদা জিহাদ ফরয। তার মধ্যে কেউ সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে, কেউ সহযোগিতা করবে। কেউ দো‘আ করবে। কিন্তু কেউ জিহাদ হ’তে বিরত থাকার আন্তরিক ইচ্ছা পোষণ করলে সে মুনাফিক হয়ে মরবে।[11]
আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় জনগণের পক্ষ হ’তে সুশিক্ষিত ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিয়মিত সেনাবাহিনী সরাসরি যুদ্ধের দায়িত্ব পালন করবে এবং অন্যেরা তাদের সহযোগিতা করবে। নিয়ত খালেছ থাকলে ও যুদ্ধ আল্লাহর জন্য হ’লে সকলেই জিহাদের পূর্ণ নেকী লাভে ধন্য হবেন ইনশাআল্লাহ। এমনকি ‘জিহাদের জন্য অমুসলিমদের নিকট থেকেও সাহায্য গ্রহণ করা জায়েয আছে, যদি তাদের থেকে কোনরূপ ক্ষতির আশংকা না থাকে’।[12]
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।