hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বেলা ফুরাবার আগে

লেখকঃ আবু বকর সিরাজী

সৌন্দর্যের জন্য ভিক্ষা!
ইসলামে ভিক্ষার মাধ্যমে উপার্জন এবং অপরের গলগ্রহ হওয়ার কঠোর নিন্দা করা হয়েছে। ইসলাম মূলতই আত্মমর্যাদার ধর্ম। তাই ইসলাম তার অনুসারী কাউকে একেবারে লাচার হওয়া ছাড়া কারো কাছে হাত পেতে নিজের আত্মমর্যাদাবোধ বিসর্জন দেয়ার অনুমতি প্রদান করে না। বরং সর্বাবস্থায় নিজ হাতের উপার্জনকে উৎসাহিত করে এবং মর্যাদা প্রদান করে। তাই জীবিকার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে হালালপন্থা অবলম্বন করা এবং হারাম, সন্দেহজনক ও লজ্জাজনকপন্থা থেকে দূরে রাখা প্রতিটি মুমিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র দায়িত্ব। হাদীসে মানুষের গলগ্রহ না হয়ে বরং হালাল উপার্জনকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আবার কোনো কোনো হাদীসে ব্যবসা এবং হাতের কামাইকে সর্বোত্তম উপার্জন আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেমন-

«أفضلُ الكَسْبِ بَيْعٌ مَبْرُورٌ وَعَمَلُ الرَّجُلِ بِيَدِهِ»

‘মানুষের সর্বোত্তম উপার্জন হলো বৈধ ব্যবসা এবং হাতের কাজের উপার্জন।’ [ছহীহুল জামে‘ : ১১২৬, সহীহ]

শেষ যুগে হারামের ছড়াছড়ি এবং হালাল উপার্জনের ঘাটতি দেখা দেবে বলে হাদীসে ইরশাদ হয়েছে। এই প্রচেষ্টা নবীদেরই পবিত্র আখলাকের অন্যতম অংশ। যেমন, হাদীছে ইরশাদ হয়েছে-

«أُمِرَتِ الرُّسُلُ أنْ لا تَأْكُلَ إلاَّ طَيِّباً ولا تَعْمَلَ إلاَّ صالِحاً»

‘রাসূলগণকে একমাত্র হালাল ভক্ষণ এবং একমাত্র নেক কাজের আদেশ করা হয়েছে।’ [ছহীহুল জামে‘ : ১৩৬৭, হাসান]

আল্লাহ তা‘আলা অলস লোক পছন্দ করেন না। বস্তুত হালাল উপার্জনে সাধারণ পেশা অবলম্বন করা আদৌ দোষের বিষয় নয়। স্বয়ং নবী-রাসূলগণও সাধারণ পেশা অবলম্বন করতে লজ্জাবোধ করতেন না। আল্লাহর নবী মুসা ‘আলাইহিস সালাম কায়িক শ্রম করেছেন। আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামও শারীরিক পরিশ্রম করে উপার্জন করেছেন। তাই হালাল রুজির স্বল্পতায় বিচলিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছে-

«نَفَثَ رُوحُ الْقُدُسِ فِي رَوْعِي أَنَّ نفْسًا لَنْ تَخْرُجَ مِنَ الدُّنْيَا حَتَّى تَسْتَكْمِلَ أَجَلَهَا، وَتَسْتَوْعِبَ رِزْقَهَا، فَأَجْمِلُوا فِي الطَّلَبِ، وَلَا يَحْمِلَنَّكُمِ اسْتِبْطَاءُ الرِّزْقِ أَنْ تَطْلُبُوهُ بِمَعْصِيَةِ اللهِ، فَإِنَّ اللهَ لَا يُنَالُ مَا عِنْدَهُ إِلَّا بِطَاعَتِهِ»

‘পবিত্র প্রাণ (জিবরীল ফেরেশতা) আমার অন্তরে ফুঁকে দিয়েছেন যে, কোনো ব্যক্তি তার নির্দিষ্ট রিজিক পূর্ণ না করে মৃত্যুবরণ করবে না। সুতরাং তোমরা রিজিক অন্বেষণে সুন্দরপন্থা অবলম্বন করো। আর রিজিকপ্রাপ্তির বিলম্ব যেন তোমাদের কাউকে অবৈধপন্থা অবলম্বন করতে উৎসাহিত না করে। কেননা আল্লাহ তা‘আলার কাছে যা আছে তা তার আনুগত্য ছাড়া হাসিল হয় না।’ [জামে ছগীর : ২২৭৩, শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, বিস্তারিত দেখুন, সহীহুল জামি‘ আস-সাহীহ ওয়া যিয়াদাতুহু : ১/৪১৯]

অবৈধ বা সন্দেহজনকপন্থা পরিহার করে হালাল রুজির পন্থা অবলম্বন করাই একজন আলেমের বড় শান। হাদীছে এ ধরনের সাহসী লোকদের প্রশংসা করা হয়েছে। আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«التَّاجِرُ الْجَبَانُ مَحْرُومٌ وَالتَّاجِرُ الْجَسُورُ مَرْزُوقٌ»

‘ভীরু ব্যবসায়ী বঞ্চিত এবং সাহসী ব্যবসায়ী রিজিকপ্রাপ্ত হয়।’ [জামে ছগীর : ৩৩৯৫, হাসান]

দীনী দায়িত্বগুলো পালনের পাশাপাশি যদি বৈধ কোনো ব্যবসার সুযোগ এসে যায়, তবে তা হাতছাড়া করা ঠিক নয়। অন্যের গলগ্রহ হয়ে থাকা স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলাও অপছন্দ করেন। অন্যের কাছে হাত পাতার চেয়ে নিজে যে কোনো হালাল পন্থায় উপার্জন করা উচিত। হাদীসে ইরশাদ হয়েছে-

عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ : «الْيَدُ الْعُلْيَا خَيْرٌ مِنَ الْيَدِ السُّفْلَى، وَالْيَدُ الْعُلْيَا الْمُنْفِقَةُ، وَالسُّفْلَى السَّائِلَةُ»

‘ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, উচু হাত নিচু হাত থেকে উত্তম। খরচকারী হাত হলো উচু হাত আর নিচু হাত হলো প্রার্থনাকারী হাত।’ [মুসলিম : ১০৩৩]

ভিক্ষাবৃত্তির নিন্দা সম্পর্কে অনেকগুলো হাদীস উল্লেখ করলাম। সাধারণত মানুষ অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদির চাহিদা না মেটাতে পেরেই ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ে। তবে জীবনধারনের এসব মৌলিক কারণেও ভিক্ষাবৃত্তিতে লিপ্ত হওয়া নিন্দনীয়, ঘৃণিত। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিস্টিনা এনড্রিউ নামের এক ভিক্ষুক ভিক্ষাবৃত্তিতে নেমেছেন ভয়ঙ্কর এক উদ্দেশ্যে। নিজের স্তনের আকার বৃদ্ধির জন্য টাকা যোগার করতেই তিনি এখন জনে জনে ভিক্ষা চেয়ে বেড়াচ্ছেন ফ্লোরিডার রাস্তায়!

জানা যায়, ফ্লোরিডার এক ব্যস্ত রাস্তায় ভিক্ষারত ওই নারী ভিক্ষুক একটি প্ল্যাকার্ডে নিজের উদ্দেশ্যের কথা লিখে সবার কাছে অর্থ সাহায্য কামনা করছেন। তার প্ল্যাকার্ডে লেখা- ‘NO HOMELESS NEED BOOBS’ ‘আমার খাদ্য কিংবা আশ্রয়ের প্রয়োজন নেই। ‘শারিরীক সৌন্দর্য’ বৃদ্ধি করতে অর্থ প্রয়োজন।’

এ বিষয়ে ক্রিস্টিনা জানান, ফ্লোরিডার পেনসাকোলা রোডের কোণায় দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করে তিনি কিছু অর্থ জমিয়েছেন। ক্রিস্টিনা বলেন, ‘আমি শুধু চাই আমার বুক যেন উন্নত হয়। কারণ আমার যা আছে তাতে আমি খুশি নই। আর যেহেতু আমার টাকা নেই তাই এটাই ভালো পন্থা। মানুষ গৃহহীন চিহ্ন লাগিয়ে ভিক্ষা করে। আমি তা নই বরং তাদের চেয়ে সৎ। কারণ আমি সত্যি কথা বলছি।’

বিশ্বটা আজ কামনা-বাসনার জ্যান্ত খোঁয়াড়ে পরিণত হয়েছে। বিজ্ঞান, আধুনিকতা, উৎকর্ষ ও মানবিক ভাবনার এমন সমৃদ্ধ সমাজেও আমরা কেন যেন বিজ্ঞানময়, মানবিক ও শালীনতাবোধের সীমানায় অটল থাকতে পারছি না। যান্ত্রিক উৎকর্ষ মানবজীবনে যত দ্রুতগতিতে প্রবেশ করেছে তার চেয়ে তীব্র গতিতে মানবজীবন থেকে পালিয়ে যাচ্ছে মনুষ্যত্ব, শালীনতাবোধ ও চক্ষুলজ্জা। উৎকর্ষসিক্ত এই যান্ত্রিক জীবনযাত্রায় মানবতা ও মনুষ্যত্ব যেন অন্তসারশূন্য এক রঙিন প্রচ্ছদমাত্র। যেকোনো মূল্যে নিজের প্রবৃত্তি লালন ও বাসনাকে উচ্চমার্গে নিয়ে যাবার দুর্বার ইচ্ছা আজ মনুষ্যত্ব ও শালীনতাবোধের শেষ নিশানাটুকুও মিটিয়ে দিচ্ছে।

তাই কথিত আধুনিকসভ্যতায় যাপিত আমাদের এই জীবন ও মনুষ্যত্ব আজ শৃঙ্খলিত, বাক্যহীন, স্তব্ধ, বিমূঢ় এক ছায়াশক্তি। বিবেকবোধ ও শালীনতা আজ অধুনালুপ্ত। পৃথিবীটা যেন নির্জলজ্জার অগ্নিগোলকে পরিণত হচ্ছে, পরিণত হচ্ছে বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার রিপুর খোঁয়াড়ে। বলা যায় এই অনৈতিক ভাবনা স্পর্শ করেছে বিশ্বের অধিকাংশ নাগরিককে। বলতে গেলে প্রায় সব ধরনের প্রতিযোগিতা আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা আবর্তিত হচ্ছে অর্থ ও দেহকে কেন্দ্র করে। ফলে গড়ে উঠছে লালসা ও রিপুকেন্দ্রিক মানসিকতা। এরফলে প্রতিনিয়ত উজাড় হচ্ছে মনুষ্যত্বের সব্জ-শাদাব বাগিচা, ফুলেলবাগান। সমাজ ব্যবস্থায় যদি শালীনতাবোধ না থাকে তাহলে সেই সমাজ কত দিন টিকতে পারবে সেটা পরের কথা, সেই সমাজের চেহারা কতটা বিবর্ণ, কুৎসিত এবং কদাকর হতে পারে সেটাই আগে বিবেচনা করা দরকার।

এই বিবেচনাকর্মে আমরা রীতিমতো গলদঘর্ম! আমেরিকা-ইউরোপের রাষ্ট্রগুলো বিশ্ববাজারে শুধু মোড়লগিরি করেই বেড়ায় না; নিজেদেরকে পরম সভ্য বলেও দাবি করে। কিন্তু আজ অবধি ওরা তাদের কথিত সভ্যতার সংজ্ঞা দেয়নি, ভালো মানুষগিরির ব্যাখ্যাও দেয়নি। কিন্তু আমরা তাদের সভ্যতার যেসব নিদর্শন প্রতিনিয় প্রত্যক্ষ করি তা আমাদেরকে সভ্যতার সংজ্ঞা কিংবা সভ্যতার দাবিদারদের প্রতি তীব্র ঘৃণার উদ্রেক করে। কারণ, ইউরোপ-আমেরিকায় এমন সব ঘটনা সংঘটিত হতে দেখি যা কোনো সভ্য সমাজে তো দূরের কথা জংলি সমাজেও সম্ভব নয়।

একজন নারী কতটা নির্লজ্জ হলে প্রকাশ্যে রাজপথে ব্যানার টাঙিয়ে বক্ষবৃদ্ধির জন্য ভিক্ষা করতে পারে সেটা কল্পনা করা যায়? এরূপ একজন নারী যেদেশের নাগরিকত্বের প্রতিনিধিত্ব করে সেই দেশকে কীভাবে সভ্য দেশ বলা যায়? কিন্তু এটাই বাস্তব, টাকার জোরে, ক্ষমতার বলে আজ শুধু অন্যদেরকে দাবিয়েই রাখা হচ্ছে না; সভ্যতার টিকিট ক্রয় এবং তা ফেরিও করা হচ্ছে! ফলে এরা কখনও এসব অশ্লীল, গর্হিত ও শালীনতাবর্জিত কাজে বাঁধ সাধবে না। এই বাঁধ না সাধার আরো কারণ আছে- বাণিজ্য। এরা বাণিজ্যিক কারণেই নারীকে অশ্লীলতার প্রশিক্ষণ দেয় এবং অশালীন কাজে লিপ্ত হতে দেখে বাণিজ্যিক ফায়েদার হিসেব করে।

আমরা জ্ঞানী-দার্শনিক ও হাকিমদের হেকমত ও প্রজ্ঞাপূর্ণ কথা কেবল কর্ণের বিনোদন হিসেবে শ্রবণ করি কিংবা অতি রসিক হলে কেউ কেউ বাণীগুলো বাঁধিয়ে ঘরেরও সৌন্দর্য বর্ধন করি। কিন্তু কথাগুলো দিয়ে আমরা মন সাজাই না কিংবা মনটাকে ঘরের মতো সুন্দর করার জন্য বাঁধাই করি না। লং ফেলো নামের একজন মনস্তাত্ত্বিক দার্শনিক ছিলেন। তিনি বলতেন, ‘একজন মহিলা সুন্দর হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান হওয়া বেশি প্রয়োজন।’

লং ফেলো যদি আজ জীবিত থাকতেন তবে লজ্জায় হয়ত তার এই কথাটা উঠিয়ে নিতেন। যে সমাজের একজন নারী তার ‘শরীর’ উন্নত করতে প্রকাশ্যে ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়ে ভিক্ষা করতে পারে, সেই সমাজে আর যাই হোক এধরনের নীতিবাক্য মানায় না!

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন