মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা বানী আদামের জন্য যিনার একটা অংশ নির্ধারিত রেখেছেন। সে তাতে অবশ্যই জড়িত হবে। চোখের জিনা হলো দেখা, জিহ্বার জিনা হলো কথা বলা, কুপ্রবৃত্তি কামনা ও খাহেশ সৃষ্টি করা এবং যৌনাঙ্গ তা সত্য অথবা মিথ্যা প্রমাণ করে। [২১][মুসলিম ৪৬/৫, হাঃ ২৬৫৭, আহমাদ ৮২২২] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬৯৬)
[১]. আল্লামা খাত্তাবী (রহ.) এ হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেছেনঃ‘‘দেখা ও কথা বলাকে যিনা বলার কারণ এই যে, দু’টোই হচ্ছে প্রকৃত যিনার ভূমিকা- যিনার মূল কাজের পূর্ববর্তী স্তর। কেননা দৃষ্টি হচ্ছে মনের গোপন জগতের উদ্বোধক আর জিহবা হচ্ছে বাণী বাহক, যৌনাঙ্গ হচ্ছে বাস্তবায়নের হাতিয়ার- সত্য প্রমাণকারী।’’ মা‘আলিমুস সুনান ৩য় খন্ড ২২৩ পৃষ্ঠা)
হাফিয আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) লিখেছেনঃ‘‘দৃষ্টিই হয় যৌন লালসা উদ্বোধক, পয়গাম বাহক। কাজেই এ দৃষ্টির নিয়ন্ত্রণ ও সংরক্ষণ মূলত যৌন অঙ্গেরই সংরক্ষণ। যে ব্যক্তি দৃষ্টিকে অবাধ, উন্মুক্ত ও সর্বগামী করে সে নিজেকে নৈতিক পতন ও ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়। মানুষ নৈতিকতার ক্ষেত্রে যত বিপদ ও পদস্খলনেই নিপতিত হয়, দৃষ্টিই হচ্ছে তার সর্ব কিছুর মুল কারণ। কেননা দৃষ্টি প্রথমত আকর্ষণ জাগায়, আকর্ষণ মানুষকে চিন্তা-বিভ্রমে নিমজ্জিত করে, আর এ চিন্তাই মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করে লালসার উত্তেজনা। এ যৌন উত্তেজনা ইচ্ছা শক্তিকে উদ্বুদ্ধ করে, আর ইচ্ছা ও প্রবৃত্তি শক্তিশালী হয়ে দৃঢ় সংকল্পে পরিণত হয়। এ দৃঢ় সংকল্প অধিকতর শক্তি অর্জন করে বাস্তবে ঘটনা সংঘটিত করে। বাস্তবে যখন কোন বাধাই থাকে না, তখন এ বাস্তব অবস্থার সম্মুখীন না হয়ে কারো কোন উপায় থাকে না।’’ আল-জাওয়াব আলকাফী, পৃষ্ঠা ২০৪)
অনিয়ন্ত্রিত দৃষ্টি চালনার কুফল সম্পর্কে সতর্ক করতে গিয়ে নাবী কারীম ﷺ ইরশাদ করেছেনঃ النظرة سهم مسموم من سهام ابليس
এ দু’টো যেমন আলাদা আলাদা নির্দেশ, তেমনি প্রথমটির অনিবার্য পরিণতি হচ্ছে শেষেরটি অর্থাৎ দৃষ্টি নিয়ন্ত্রিত হলেই লজ্জাস্থানের সংরক্ষণ সম্ভব। অন্যথায় তাকে চরম নৈতিক অধঃপতনে নিমজ্জিত হতে হবে নিঃসন্দেহে।
নাবী কারীম ﷺ আলী -কে লক্ষ্য করে বলেছিলেনঃيَاعَلِيُّلَاتُتْبِعْالنَّظْرَةَالنَّظْرَةَفَإِنَّلَكَالأُولَىوَلَيْسَتْلَكَالآخِرَةُ
‘‘হে ‘আলী, একবার কোন পরস্ত্রীর প্রতি দৃষ্টি পড়লে পুনরায় তার প্রতি চোখ তুলে তাকাবে না। কেননা তোমার জন্যে প্রথম দৃষ্টিই ক্ষমার যোগ্য, দ্বিতীয়বার দেখা নয়।’’ আবূদাউদ ২১৪৯, হাসান, আলবানী)
এর কারণ সু্স্পষ্ট। আকস্মিকভাবে কারো প্রতি চোখ পড়ে যাওয়া আর ইচ্ছাক্রমে কারো প্রতি তাকানো সমান কথা নয়। প্রথমবার যে চোখ কারো উপর পড়ে গেছে, তার মূলে ব্যক্তির ইচ্ছার বিশেষ কোন যোগ থাকে না; কিন্তু পুনর্বার তাকে দেখা ইচ্ছাক্রমেই হওয়া সম্ভব। এ জন্যেই প্রথমবারের দেখায় কোন দোষ হবে না; কিন্তু দ্বিতীয়বার তার দিকে চোখ তুলে তাকানো ক্ষমার অযোগ্য। বিশেষত এ জন্য যে, দ্বিতীয়বারের দৃষ্টির পিছনে মনের কলুষতা ও লালসা পংকিল উত্তেজনা থাকাই স্বাভাবিক। আর এ ধরনের দৃষ্টি দিয়ে পরস্ত্রীকে দেখা স্পষ্ট হারাম।
তার মানে কখনো এ নয় যে, পরস্ত্রীকে একবার বুঝি দেখা জায়েয এবং এখানে তার অনুমতি দেয়া হচ্ছে। আসলে পরস্ত্রীকে দেখা আদতেই জায়েয নয়। এজন্যেই কুরআন ও হাদীসে দৃষ্টি নত করে চলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রসূলে কারীম ﷺ-কে জিজ্ঞেস করা হলঃ ‘পরস্ত্রীর প্রতি আকস্মিক দৃষ্টি পড়া সম্পর্কে আপনার কী হুকুম? তিনি বললেনঃ اصرف بصرك ‘‘তোমার চোখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নাও।’’ আবূ দাউদ ২১৪৮, সহীহ আলবানী)
দৃষ্টি ফেরানো কয়েকভাবে হতে পারে। উদ্দেশ্য হচ্ছে পরস্ত্রীকে দেখার পংকিলতা থেকে নিজেকে পবিত্র রাখা। আকস্মিক নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও যদি কারো প্রতি দৃষ্টি পড়ে যায়, তবে সঙ্গে সঙ্গেই চোখ নীচু করা, অন্যদিকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ঈমানদার ব্যক্তির কাজ।
নাবী কারীম ﷺ একবার নিকটে উপস্থিত লোকদের জিজ্ঞেস করলেনঃ ‘‘মেয়েলোকদের জন্য ভাল কী?’’
প্রশ্ন শুনে সকলেই চুপ মেরে থাকলেন, কেউ কোন জবাব দিতে পারলেন না। ‘আলী এখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বাড়ি এসে ফাতিমা -কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দিলেনঃ لا يراهن الرجال ভিন্ পুরুষরা তাদের দেখবে না। এটাই তাদের জন্যে ভাল ও কল্যাণকর)।
অপর বর্ণনায় ফাতিমা বললেনঃ لا يرين الرجال ولا يرون هن মেয়েরা পুরুষদের দেখবে না, আর পুরুষরা দেখবে না মেয়েদেরকে। দারকুতনী, বাযযার)
বস্ত্তত ইসলামী সমাজ জীবনের পবিত্রতা রক্ষার্থে পুরুষদের পক্ষে যেমন ভিন্ মেয়েলোক দেখা হারাম, তেমনি হারাম মেয়েদের পক্ষেও ভিন্ পুরুষদের দেখা। কুরআন মাজীদে এ সম্পর্কে যেমন পাশাপাশি দু’টো আয়াতে রয়েছে-পূর্বে উদ্ধৃত হয়েছে- তেমনি হাদীসেও এ দুটো নিষেধ বাণী একই সঙ্গে ও পাশাপাশি উদ্ধৃত রয়েছে। উম্মে সালামা বর্ণিত এক হাদীসের ভিত্তিতে আল্লামা শাওকানী লিখেছেনঃيحرمعلىالمرأةنظرالرجلكمايحرمعلىالرجلنظرالمرأة
পুরুষদেরকে দেখা মেয়েদের জন্য হারাম, ঠিক যেমন হারাম পুরুষদের জন্য মেয়েদের দেখা। নাইলুল আওত্বর ৬ষ্ঠ খন্ড ১৭৭ পৃষ্ঠা)
কেননা মেয়েলোক মানব জাতিরই অন্তর্ভুক্ত প্রজাতি। এজন্য পুরুষের মতই মেয়েদের জন্য তারই মত অপর প্রজাতি পুরুষদের দেখা হারাম করা হয়েছে। এ কথার যথার্থতা বোঝা যায় এ দিক দিয়েও যে, গায়র-মুহাররমের প্রতি তাকানো হারাম হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে যৌন বিপর্যয়ের ভয়। আর মেয়েদের ব্যাপারে এ ভয় অনেক বেশী। কেননা যৌন উত্তেজনা যেমন মেয়েদের বেশী, সে পরিমাণে বুদ্ধিমত্তা তাদের কম। আর পুরুষদের তুলনায় মেয়েদের কারণেই অধিক যৌন বিপর্যয় ঘটে থাকে।’’ নাইলুল আওত্বর ৬ষ্ঠ খন্ড ১৭৭ পৃষ্ঠা)
মোটকথা, গায়র মুহাররম স্ত্রী-পুরুষের পারস্পরিক দৃষ্টি বিনিময় কিংবা একজনের অপরজনকে দেখা, লালসার দৃষ্টি নিক্ষেপ ইসলামে নিষিদ্ধ। এতে করে পারিবারিক জীবনে শুধু যে পংকিলতার বিষবাষ্প জমে তাই নয়, তাতে আসতে পারে এক প্রলয়ঙ্কর ভাঙ্গণ ও বিপর্যয়। মনে করা যেতে পারে, একজন পুরুষের দৃষ্টিতে কোন পরস্ত্রী অতিশয় সুন্দরী ও লাস্যময়ী হয়ে দেখা দিল। পুরুষ তার প্রতি দৃষ্টি পথে ঢেলে দিল প্রাণ মাতানো মন ভুলানো প্রেম ও ভালবাসা। স্ত্রীলোকটি তাতে আত্মহারা হয়ে গেল, সেও ঠিক দৃষ্টির মাধ্যমেই আত্মসমর্পণ করল এই পর-পুরুষের কাছে। এখন ভাবুন, এর পরিণাম কী? এর ফলে পুরুষ কি তার ঘরের স্ত্রীর প্রতি বিরাগভাজন হবে না? হবে নাকি এই স্ত্রী লোকটি নিজের স্বামীর প্রতি অনাসক্তা, আনুগত্যহীনা। আর তাই যদি হয়, তাহলে উভয়ের পারিবারিক জীবনের গ্রন্থি প্রথমে কলংকিত ও বিষ-জর্জর এবং পরে সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হতে বাধ্য। এর পরিণামই তো আমরা সমাজে দিনরাতই দেখতে পাচ্ছি।
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সংকলক : শাইখ ইমামুল হুজ্জাহ আবু ‘আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইসমা’ঈল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ্ আল বুখারী আল-জু’ফী। মোট হাদীস সংখ্যা : ৭৫৬৩ টি। প্রকাশনী : ... See More
সহিহ বুখারী
সংকলক : শাইখ ইমামুল হুজ্জাহ আবু ‘আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইসমা’ঈল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ্ আল বুখারী আল-জু’ফী। মোট হাদীস সংখ্যা : ৭৫৬৩ টি। প্রকাশনী : তাওহীদ পাবলিকেশন্স। মৌলিক হাদীস গ্রন্থ হিসাবে সহীহুল বুখারী গ্রন্থটি হাদীসের কিতাবগুলির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। শুধু তাই নয় এর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগবের্গর সর্বজন স্বীকৃত মন্তব্য হলো : আল কুরআনের পরে মানব রচিত বা সংকলিত গ্রন্থের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব নিঃসন্দেহে সহীহুল বুখারী। বুখারী সংকলন করতে গিয়ে ইমাম বুখারী (রহঃ) কে যে কী পরিমাণ পরিশ্রম ও সাধনা করতে হয়েছে তা বর্ণনাতীত। মহান আল্লাহ তা’আলা তাঁর এই পরিশ্রমকে ক্ববুল করুন এবং এ মহান সাদাকায়ে যারিয়ার জন্য তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস-এর পুরষ্কারে ভুষিত করুন। - আমীন।
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।