উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি এ আয়াতের “তোমাদের রব যখন বাণী আদামের মেরুদণ্ড থেকে তাদের সন্তানদের বের করলেন”- (সুরাহ্ আ’রাফ ৭: ১৭২-১৭৩) এর তাফসীরে বলেন, আল্লাহ্ তা‘আলা আদাম সন্তানদের একত্রিত করলেন। তাদেরকে বিভিন্ন রকম করে গড়ার মনস্থ করলেন,এরপর তাদের আকার-আকৃতি দান করলেন। তারপর কথা বলার শক্তি দিলেন। এবার তারা কথা বলতে লাগল। অতঃপর তাদের কাছ থেকে ওয়া‘দা-অঙ্গীকার গ্রহণ করলেন এবং তাদের নিজের সাক্ষ্য গ্রহণ করলেন, ‘আমি কি তোমাদের রব নই’ ? আদাম সন্তানগণ বলল, হ্যাঁ, (নিশ্চয়ই আপনি আমাদের রব)। তারপর আল্লাহ্ তা‘আলা বললেন, আমি তোমাদের এ কথার উপর সাত আসমান ও সাত জমিনকে তোমাদের সম্মুখে সাক্ষী করছি এবং তোমাদের পিতা আদামকেও সাক্ষী বানাচ্ছি। তোমরা যেন ক্বিয়ামাতের দিন এ কথা বলার সুযোগ না পাও যে, আমরা তো এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। তাই এখন তোমরা ভাল করে জেনে নাও, আমি ছাড়া তোমাদের কোন মা‘বূদ নেই এবং আমি ছাড়া তোমাদের কোন প্রতিপালকও নেই। সুতরাং (সাবধান) আমার সাথে কাউকে শরীক করো না। আমি শীঘ্রই তোমাদের কাছে আমার রসূলগণকে প্রেরণ করব, যারা তোমাদেরকে আমার ওয়া‘দা-অঙ্গীকার স্মরণ করিয়ে দিবেন। অতঃপর তোমাদের উপর আমি আমার কিতাবসমূহ নাযিল করব। তখন এ কথা শুনে আদাম সন্তান বলল, আমরা এ কথার সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয়ই তুমি আমাদের রব ও আমাদের ইলাহ। তুমি ছাড়া আমাদের কোন রব নেই এবং তুমি ছাড়া আমাদের কোন ইলাহ নেই। বস্তুত আদাম সন্তানদের সকলে এ কথা স্বীকার করে নিল। আদাম (আঃ)-কে তাদের উপর উঠিয়ে ধরা হল। তিনি সকলকে প্রত্যক্ষ করলেন। তিনি দেখলেন, তাঁর সন্তানদের মধ্যে ধনী-দরিদ্রও আছে, সুন্দর-অসুন্দরও আছে, (এটা দেখে) তিনি বললেন, হে রব! তুমি তোমার বান্দাদের সকলকে যদি এক সমান করে বানাতে? আল্লাহ্ তা‘আলা বললেন, আমি চাই আমার বান্দারা আমার প্রতি কৃতজ্ঞতার মধ্যে থাকুক। এরপর আদাম (আঃ) নাবীদেরকে দেখলেন, তারা সকলেই যেন চেরাগের ন্যায়-তাদের উপর আলো ঝলমল করছিল। তাদের কাছ থেকে বিশেষ করে নাবূওয়াতের ও রিসালাতের দায়িত্ব পালনের বিশেষ শপথও নেয়া হয়েছে। আল্লাহ্ তা‘আলা বলছেন (অনুবাদ): “আমি নাবীদের নিকট হতে যখন তাদের ওয়া‘দা অঙ্গীকার গ্রহণ করলাম এবং আপনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), নূহ (আঃ), ইবরাহীম (আঃ), মূসা (আঃ), ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ) হতেও (অঙ্গীকার ও ওয়া‘দা) নেয়া হয়েছে”- (সূরাহ্ আহযাব ৩৩: ৭)। তিনি [উবাই (রাঃ)] বলেন, এ রূহ্দের মধ্যে ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম-এর রূহ্ (আত্না)-ও ছিল। অতঃপর আল্লাহ্ তা‘আলা এ রূহ্কেই মারইয়াম (আঃ)-এর প্রতি প্রেরণ করেছেন। উবাই বলেছেন, এ রূহ্ মারইয়াম (আঃ)-এর মুখ দিয়ে (তাঁর পেটে) প্রবেশ করেছে। [১] (আহ্মাদ)