মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইরাকের অধিবাসী এক ব্যক্তি তাকে বলল, আমার পক্ষ থেকে আপনি ‘উরওয়াহ্ ইবনু যুবায়র (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করুন যে, এক ব্যক্তি হাজ্জের ইহরাম বাঁধল, সে বায়তুল্লাহ ত্বওয়াফের পর ইহরাম খুলতে পারবে কিনা? তিনি যদি আপনাকে বলেন, সে ইহরাম খুলতে পারবে না- তবে তাকে বলুন, এক ব্যক্তি বলেছে, সে ইহরাম খুলতে পারবে। রাবী বলেন, অতএব আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি হাজ্জের ইহরাম বেঁধেছে, সে তা সমাধান না করা পর্যন্ত ইহরাম খুলতে পারবে না। আমি বললাম, কিন্তু এক ব্যক্তি তাই বলেছে। তিনি বললেন, সে যা বলছে তা দুঃখজনক।
ইরাকের লোকটি আমার সাথে পুনরায় সাক্ষাৎ করলে আমি তাকে উপরোক্ত কথা বললাম। সে বলল, আপনি তাকে বলুন, কিন্তু এক ব্যক্তি বলে যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাই করেছেন এবং আসমা (রাঃ) ও যুবায়র (রাঃ) অনুরূপ করেছেন কেন? রাবী বলেন, আমি তার নিকট গিয়ে এ বিষয় তাকে জানাই। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, লোকটি কে? আমি বললাম, জানি না। তিনি বললেন, তার কী হয়েছে যে, সে নিজে আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করছে না? আমার মনে হয়, সে ইরাকী। আমি বললাম, জানি না। তিনি বললেন, সে মিথ্যা বলেছে।
রসূলু্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাজ্জ সম্পর্কে ‘আয়িশা (রাঃ) আমাকে অবহিত করেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাক্কায় পৌঁছে সর্বপ্রথম যে কাজ করেছেন তা ছিল এই যে, তিনি ওযূ করেন, এরপর বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করেছেন, অতঃপর আবূ বকর (রাঃ) হাজ্জ করেছেন। তিনি (মাক্কায় পৌঁছে) সর্বপ্রথম বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করেছেন এবং এরপর ‘উমার (রাঃ)-ও অনুরূপ করেছেন। অতঃপর ‘উসমান (রাঃ) হাজ্জ করেছেন। আমি তাকে সর্বপ্রথম বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করতে দেখেছি এবং এছাড়া অন্য কিছু করেননি। অতঃপর মু’আবিয়াহ্ (রাঃ) ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-ও (অনুরূপ করেছেন)। এরপর আমি আমার পিতা যুবায়র ইবনুল ‘আও্ওয়াম (রাঃ)-এর সাথে হাজ্জ করেছি। তিনিও সর্বপ্রথম বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করেছেন। এছাড়া অন্য কিছু করেননি। অতঃপর আমি মুহাজির ও আনসারদের অনুরূপ করতে দেখেছি। এছাড়া তারা অন্য কিছু করেননি।
অতঃপর সর্বশেষে আমি যাকে অনুরূপ করতে দেখেছি, তিনি হচ্ছেন ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)। তিনি হাজ্জকে ‘উমরাহ্ দ্বারা ভঙ্গ করেননি। আর সে ইবনু ‘উমার (রাঃ) তো তাদের মধ্যে বর্তমান আছে। তারা কেন তাকে জিজ্ঞেস করছে না?
এভাবে যত লোক অতীত হয়েছে, তারা মাক্কায় পা রেখেই সর্বপ্রথম বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করতেন। অতঃপর তারা ইহরাম খুলতেন না। আর আমি, আমার মা [আসমা বিনতু আবূ বকর (রাঃ)] ও আমার খালা [‘আয়িশা (রাঃ)]-কেও দেখেছি যে, তারা মাক্কায় পৌঁছে প্রথমেই বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করেছেন। এরপরও ইহরাম খুলেননি। আমার মা (আসমা) আমাকে অবহিত করেছেন যে, তিনি তার বোন (‘আয়িশাহ), যুবায়র (রাঃ) এবং অমুক অমুক শুধুমাত্র ‘উমরার ইহরাম বেঁধে মাক্কায় এসেছেন এবং তারা (ত্বওয়াফ ও সা’ঈর পরে) রুকন (হাজারে আসওয়াদ) চুম্বন করার পর ইহরাম খুলেছেন। এ ব্যক্তি (ইরাকী) এ ব্যাপারে যা বলেছে, মিথ্যা বলেছে। (ই.ফা. ২৮৬৭ ই.সে. ২৮৬৬)